নিলার স্মৃতি – অনুভূতির গল্প

নিলার স্মৃতি – অনুভূতির গল্প: জানো আবির, আমি কিন্তু তোমায় মিথ্যা বলিনি। মনে আছে তোমায় বলেছিলাম তুমি আমার রক্তে মিশে গেছো।


মূলগল্প

নিলা চলে গেছে আজ পাঁচ বছর হলো। আমার মনে আছে পাঁচ বছর আগে হসপিটালের বেডে শুয়ে ছিল নিলা ওর বেডের পাশে চেয়ারে বসে ছিলাম আমি আর আমার সব বন্ধুবান্ধবরা। সেদিন নিলা কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলনা তবে ওর হাতের ওপর আমার হাত রাখতেই শক্ত করে শুধু ধরেছিল ওর বোঝানো শেষ কথা গুলো আমি বুঝতে পেরেছিলাম।

শুধু আমি না আমরা সবাই বুঝতে পেরেছিলাম ওর চোখ দিয়ে কয়েকফোটা পানি পড়ার পরই শেষ নিঃশ্বাস নিয়েছিল সাথে সাথে আকরে ধরা হাতটাও ছেরে দিয়েছিল।

আমাদের কারো আর বুঝার বাকি নেই যে নিলা আর আমাদের মাঝে নেই। হয়তো আমাদেরই অপেক্ষায় ছিল তাই আমাদের দেখেই শেষ নিঃশ্বাস নিয়েছিল।

তবে সব থেকে বেশী যার অপেক্ষায় ছিল অনেক চেষ্টা করেও তাকে আনতে পারিনী আমরা কেউ। কারন সে তার সুখের জন্য ৭বছর আগেই নীলাকে ছেরে তার বাবার বন্ধুর মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আমেরিকায় চলে গিয়েছে। নিলার মনের মৃত্যুতো ৭ বছর আগেই হয়েছে তবে দেহের মৃত্যু হয়েছে পাঁচ বছর আগে।

নিলা মারা যাওয়ার কিছুদিন পর আমরা সব ফ্রেন্ড ওদের বাসায় গিয়েছিলাম ওর মা কে দেখতে নিলা মারা যাওয়ার পর সেও অসুস্থ হয়ে পড়ে। নিলার বড় ভাই আমাদের সবাইকে আসতে বলে আনটি নাকি আমাদের বার বার যেতে বলছে আর কান্নাকাটি করছে।

সেদিন আমরা নিলার রুমে বসে ছিলাম আন্টি (নিলার মা) নিলার পড়ার টেবিল থেকে ডায়রির ভাজে থাকা একটা চিঠি বের করে দিয়েছিল আর বলেছিল এটা যার জন্য রেখে গেছে আমার নিলা মা তাকে তোমরা এটা দিও, আর তাকে বলে দিও আমার কলিজার টুকরাটাকেতো ফেরত দিতে পারবেনা শুধু ওর কবরের পাশে একটা বার আসতে বলো আমার নিলার যে শেষ ইচ্ছা ছিল একটা বার তাকে দেখা… বলেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ওনি আমরা সবাই নিরব সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও যে জানা ছিলনা।

যার জন্যে নিজের মেয়েকে হারালো তার প্রতি কোনো ঘৃনা না দেখিয়ে রাগ না দেখিয়ে অনুরুধ করছে কি করে পারে এরা জানতামনা শুধু এটা জানতাম তার সব ভুল তুচ্ছ চোখে দেখেছে নিলা তাইতো নিলার ভালোবাসাকে কেউ অসম্মান করতে চায়না অসম্মান করেওনি। করলে যে নিলার আত্মা কষ্ট পাবে।

সেদিনের পর থেকে শুরু হয়ে গেলো আবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা কোনোভাবেই আমরা পারছিলামনা যোগাযোগ করতে। নিলাকেও আমরা ভুলতে পারছিলামনা চোখের সামনে কাছের একজন চলে গেছে।

তার শেষ ইচ্ছাটাও পূরন করতে পারছিলামনা আবিরের উপর রাগ ঘৃনা ক্রমশ ও বাড়তে লাগলো আবিরের বেষ্ট ফ্রেন্ড সুমিত তো ওকে খুন করার জন্য ও প্রস্তুত তার একটাই কথা নিলার মতো এমন মেয়েকে কি করে ঠকাতে পারলো একটা জিবন শেষ করতেও ধিধা করলোনা ওকে পেলে জ্যান্ত পুতে ফেলবো।

এটাই ছিল সুমিতের মন্তব্য। তবে আমার ভাবনা ছিল জাস্ট একবার আবিরের মুখোমুখি হওয়া সেইভাবেই খুজ করতে লাগলাম আর ওরা সবাই আমাকে সহযোগিতা করছিল। একবছর পর নিলার কবর দেখতে গিয়েছিলাম আমরা। কবরের পাশে সবাই বসে দূয়া করছিলাম ফিরে আাসার আগে কবরের পাশে ঘাসের ওপর বসে ছিলাম সবাই।

হঠাৎ আদ্রিতা বললো এই মেঘলা তুই নিলার চঠিটা পড়েছিস কি আছে ওটাতে ওটাতো তোর কাছেই তুই পড়েছিসতো?

আমি বললাম না পড়িনি কি আছে সবতো জানিই কি পড়ব আর। কিন্তু আদ্রিতার জোড়াজোরিতে সেদিন চিঠিটা পরেছিলাম পড়ার পড় কারো চোখ শুকনো ছিলনা সবাই শুধু প্রতিশোধ নিতে চাইছিল তবে কেউ নিতে পারেনি শুধু মাএ নিলার জন্য ওর আত্মার শান্তির জন্য।

আজ আমি আর সুমিত যাচ্ছি আবিরের সাথে দেখা করতে এইতো পাঁচ মিনিট পরেই পৌছে যাব গোরস্থানে যেখানে নিলার কবর রয়েছে। আবির অনেক বার প্রশ্ন করেছে ওখানে কেনো আমি শুধু বলেছি তোর জন্য সারপ্রাইজ রাখা আছে তুই থাক।

হ্যা পৌছে গেছি আবির গোরস্থানের পাশের বড় গাছটাতে হেলান দিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে, বাহ বেশ দেখতে লাগছে আগের থেকে সাস্থ্য একটু বেড়েছে গায়ের শ্যমলা রংটা আরো উজ্জ্বল হয়ে গেছে, নিলাওতো কম ছিলনা ফরসা লম্বা শিক্ষিতা বেশতো মানাতো দুজনকে তাহলে সব এমন হলো কেন ভাবতে ভাবতে ওর কাছে গেলাম।

কিরে কেমন আছিস মেঘলা? কেমনআছিস সুমিত?

সুমিত কিছু বললোনা একরাশ ঘৃনা নিয়ে নিলার কবরের পাশে গিয়ে বসলো। আমি আবিরকে নিয়ে ওখানেই বসলাম। কিছু মনে করিসনা সুমিতের মন ভালো নেই।

হুম তাই এতোবছর পর দেখা হলো বাট কথা বললো না কি অদ্ভুত…
এতোবছর দেখাতো আমাদের চেষ্টাতেই হয়েছে তাইনা?
ইতস্তুত বোধ করে -হুম

আসলে দোস্ত….
আমি ওকে থামিয়ে বললাম কোনো জবাবাদিহিতা করতে হবেনারে।
শুধু বল কেমন আছিস?

ভালো। তোরা?
আমাদের টা না হয় পরেই শোন।

বিয়ে করেছিস আবির?
হুম করেছিলাম।
করেছিলি মানে?

বিয়ের ২বছর বাদে সে আমেরিকার এক ছেলের সাথে রিলেশন শিপে জরায় আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয় অনেক চেষ্টা করেও আটকাতে পারিনি। বিজনেসের জন্য এতোদিন ওখানে ছিলাম তবে এখন আর যাবনা দেশেই কিছু করবো।

আমি বাকা হেসে বললাম একেই বলে প্রকৃতির প্রতিশোধ….
মানে? (আবির)

কিছুনা…আমি করেছি তবে সংসার শুরু করিনি আমার বাড়িতেই থাকি তবে আজ আমার কাজটা সম্পন্ন হলে খুব তারাতারি সংসার শুরু করবো আর আল্লাহর কাছে নিলার মতো একটা ফুটফুটে মেয়ে চাইবো।

নিলার কথা শুনে আবিরের মুখটা চুপসে গেলো অপরাধ বোধ ফুটে ওঠলো মুখে।

কিরে এখনি এমন বানালি মুখটা এই নে এটা পড় ওকে… আমি একটু ওদিক থেকে আসি।
চিঠি কিসের?
পড়লেই বুঝবি।

আবির ভেবেছে নিলাই দিয়েছে
হয়তো, তাই চিঠিটা খুলল।

আবির চিঠিটা খুললো..
আবির আমি জানিনা এই চিঠিটা তোমার কেছে কবে পৌছাবে তবে এটুকু জানি এটা যেদিন তুমি পাবে সেদিন আমি তোমার থেকে অনেক দূরে।

আবির. কেমন আছো তুমি?
ভালো আছোতো যার জন্য আমায় ছেড়ে গিয়েছো সে তোমায় সুখে রেখেছেতো?

আবির অস্থির হয়ে ঘেমে গেছে চিঠি পড়ায় এতোই ব্যাস্ত যে আমি আর সুমিত ওর পাশে এসে বসেছি ও বুঝতেও পারেনি। শুধু চিঠি পরছে আর ওর চোখ লাল বর্ন ধারন করছে।

জানো আবির এখন রাত তিনটা বাজে তুমি চলে গেছ একবছর হলো একটা বছর অপেক্ষায় ছিলাম তুমি আসবে বলে এসে বলবে নিলা আই এম সরি, আর আমি চোখের পানি মুছে সব অভিমান ভুলে তোমায় আপন করে নিব সব দূরত্ব সরে যাবে আমাদের।

কিন্তু আমি বুঝে গেছি আবির তুমি ফিরবেনা। তবে যাওয়ার আগে একটা বার বলে যেতে পারতে একটা বার তোমায় শেষ দেখার সুযোগ দিতে, কেনো এইটুকু আমায় দিলে না আবির ? জানো আমি তোমার বাসায় গিয়েছিলাম তোমার বোন রুপা আমাকে তোমার বউ এর ছবি দেখালো কতো সুন্দর মানিয়েছে তোমাদের কতে সুখে আছো তোমার সুখ দেখে সেদিন খুশি মনে বাড়ি ফিরেছি।

তবে জানোতো রাত যখন গভীর হয় মনে হয় গলায় কিছু চেপে ধরে নিঃশ্বাস টা বন্ধ হয়ে যায়, তুমিতো জানতে তোমার সাথে কথা না বলে আমি একদিনও থাকতে পারতামনা।

এটাওতো তোমার জানা ছিল আমার নিঃশ্বাসটা চলেছে তোমার ভালোবাসায় যখন থেকে তোমার ভালবাসা পেলামনা তখন থেকে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাসটাও যে বন্ধ হওয়া শুরু করেছিলো। জানো আবির মা ভাইয়া বিয়ের কথা বলেছিলো কিন্তু আমিতো বিবাহিত।

মনে মনে তো তোমাকে স্বামী হিসেবে মেনেছি তাহলে দ্বিতীয় বার কি করে বিয়ে করব বলো? তাই মা কে না করে দিয়েছি। আমার শরীরের অবস্থা দেখে মা ও আর জোর করেনি।

হয়তো মা কিছু বুঝে ছিলো, অনেক কিছুই হয়তো মায়ের মনতো…

আমি জানিনা কতদিন আর বাঁচবো তবে মরার আগে একবার শুধু তোমাকে দুচোখ ভরে দেখতে চাই তোমার ওই হাতে শক্ত করে ধরতে চাই আমি জানি তুমি আমার নও।

তবুও একদিনতো তুমি নিজেই বলেছিলে তুমি আমার সেইদিনটার কথা মনে করেকি একটা বার দেখা করবে আমার সাথে? তোমার বউ কি করতে দিবে দেখা?

আবির. আমার যে অনেক কথা জমে গেছে, মনে আছে তোমার প্রতিদিনের সব কথা তোমায় আমি বলতাম তুমি চুপ করে সব শুনতে, কতরাত আমরা জেগে কাটিয়েছি নিজেদের স্বপ্ন সাজিয়েছি মনে আছে তোমার, তোমার স্বপ্ন তো তুমি পূরন করেছো শুধু মানুষটা বদলে গেছে।

খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। নিঃশ্বাসটা হয়তো আর বেশীদিন ধরে রাখতে পারবোনা। বাঁচার ইচ্ছাতো চলে গিয়েছে অনেক আগেই তবে তোমায় শেষ দেখার জন্য আশায় আছি। বুকের ব্যাথাটাও বড্ড বেড়েছে সেই সাথে জন্মেছে ভয় পারবোতো তোমায় শেষ দেখা দেখতে?

জানো গত পনেরো দিন ধরে খুব কাশি হচ্ছে পনেরো দিন যাবত কাশির সাথে রক্ত ও পড়ছে। কয়েকদিন আগে মেঘলাকে নিয়ে হসপিটাল গিয়েছিলাম ডক্টর কিছু টেস্ট দিয়েছিল সব টেস্ট করিয়েছি। আমি জানতাম আবির বিহীন আমি এই পৃথিবীতে খুব বেশীদিন টিকতে পারবোনা। তবে এতো তারাতারি যে সেই নোটিশ মহান আল্লাহ তায়ালা আমায় দিয়ে দিবে সেটা ভাবতে পারিনী।

দুদিন পরতো তোমার জন্মদিন সেদিন আমি অপেক্ষায় থাকবো যদি আমায় একটাবার ফোন দাও। জানো ওইদিন আমি তোমার দেওয়া নীল শাড়িটা পড়ব শাড়িটা পড়েতো তুমি দেখলেই না তার আগেইতো সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে। তোমার কাজিন যখন বললো তুমি বাইরে চলে গেছো আমি বিশ্বাস করিনি জানোতো, কারন আমার আবির যে আমায় মিথ্যা বলেনা। আমায় ঠকাবে সেটাও ভাবতে পারিনি।

আবির আমিতো তোমার কলিজা ছিলাম, তোমার কলিজা যে কষ্টে ছটফট করছে সেটা তাহলে কেনো বুঝতে পারছোনা?

জানো আবির, আমি কিন্তু তোমায় মিথ্যা বলিনি। মনে আছে তোমায় বলেছিলাম তুমি আমার রক্তে মিশে গেছো।

জানো খুব অবাক হয়েছি যে আমার কথাটা এতোটাই সত্যি। তুমি অনেক দূরে চলে গেছো আর তার সাথে সাথেই আমার শরীল থেকে ধীরে ধীরে সব রক্ত সরে যাচ্ছে জানো আমার কি মনে হয় তুমি দূরে যাওয়াতেই এটা হলো আমার। আামার বাড়ির কেউ জানেনা আমি ব্লাড ক্যানসারে ভুগছি তবে খুব তারাতারি জেনে যাবে।

আশায় রইলাম তোমার যদি নাইবা হয় আর দেখা তাবে আমার কবরের পাশে একটাবার যেও আমার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করবেতো? আমি জানি আমার আবির এতোটা মনিষত্বহীন না।
ভালো থেকো। সুখে থেকো।

তোমার রেখে যাওয়া ভালবাসা তোমার অতীত। (নিলা)
চিঠিটা পড়ে আবির আশে পাশে তাকিয়ে পাগলের মতো ছটফট করতে থাকে আর নিলা নিলা বলে চিৎকার করতে থাকে। মেঘলা মেঘলা চল নিলার কাছে যাবো আমার নিলার কাছে যাব আমি।

ও কোথায় ওর কি বিয়ে হয়ে গেছে? ওর ট্রিটমেন্ট ঠিকভাবে করিয়েছিস তোরা তাইনা। আমি জানিতো তোদের মতো বন্ধুরা পাশে থাকলে যে কেউ সেরে যাবে তোদের ভালবাসায় সব জানি আমি।

কি হলো সুমিত কি হলো মেঘলা আমার নিলার কাছে নিয়ে চল।সেদিন আমি ওকে না জানিয়ে গিয়েছিলাম বাধ্য হয়ে হয়তো পারতাম জানাতে তবে ওকে সামনে থেকে কষ্টে দেখতে চাইনি আমি ভেবেছিলাম আস্তে আস্তে মানিয়ে নিবে তবে এতোটা আঘাত পাবে বুঝিনিরে চল আজ আমার সব পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবো।

ওকে কষ্ট দিয়েতো আমিও হ্যাপি থাকতে পারিনি। ওর সব কষ্ট দূর করে দিব আমি। কিরে চল…

ঠাশ করে একটা থাপ্পড় দিল সুমিত ছিঃ এখন অভিনয় করছিস তাইনা একটা মেয়েকে শেষ করে এখন অভিনয় করছিস বলে আরেকটা থাপ্পর দিল। আমি থামিয়ে আবিরকে বললাম আবির ট্রিটমেন্ট করতে অনেক লেট হয়ে গিয়েছিল আর নিলা যে মানসিক রোগিও ছিল শারীরিক রোগ দূর হয় কিন্তু মানসিক রোগ কি করে ঠিক হয় ওরও যে বাঁচার ইচ্ছা ছিলনা তোকে ছারা।

এর জন্যতো তুই দায়ী কি হতো সেদিন বাবাকে বোঝালে তোদের তিন বছরের সম্পর্কে তো তুইও সিরিয়াস ছিলি আর নিলা ওতো তোকে পাগলের মতো ভালবাসতো আর তার প্রতিদানে কি দিলি তুই।
মেঘলা আমাকে নিলার কাছে নিয়ে চল।

হুম তুই বোধোয় ভুলে গেছিস তুই গোরস্থানে আছিস।

কিহ না এখানে এক মূহুর্ত থাকবোনা আমি নিলার বাড়ি যাচ্ছি।

পিছন থেকে হাত টেনে বললাম নিলার বাড়ি যাবি তাহলে আয় বলে নিলার কবরের পাশে নিয়ে দাড়ালাম আর বললাম নিলা এখানেই ঘুমিয়ে আছে।

আবির কথাটা শুনেই থ মেরে বসে পড়লো আর বির বির করে বললো আই এম সরি নিলা।

তিন বছর পর আমার দুবছরের মেয়ে ওর নাম নিলা নিলাকে নিয়ে যাচ্ছি আবিরকে দেখতে সুমিত আদ্রিতা ওরাও আসবে তিন বছর আগে আবির নিলার কবর দেখার পর থেকে কেমন নির্বাক হয়ে গেছে বির বির করে শুধু চারটা ওয়ার্ড বলে আই এম সরি নিলা।

আমরা সবাই আবিরের রুমে পুরো রুমে কাগজে ভর্তি লেখা আই এম সরি নিলা,দেয়ালে পেন্সিল দিয়ে লেখা আই এম সরি নিলা।

আমার পিচ্চি মেয়েটা গুটি গুটি পায়ে আবিরের কাছে গিয়ে বললো আবি মামা (আবির মামা) বলে কোলে বসলো আবির ও নিলাকে আদর করে চুমুতে ভরিয়ে দিলো।

পনের বছর পর-

নিলা মা চলো আজ তোমার আবির মামাকে নিয়ে সবাই তোমার নিলামনির কবর দেখতে যাব আজ তোমার আঠারো বছর পূর্ণ হলো। তাই সেখানে যেতেই হবে নিলা মারা যাওয়ার পর আমাদের সব বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে তুমিই প্রথম মেয়ে তাই তোমার নাম নিলা রেখেছি সবাই তুমিই তো আমাদের নিলার স্মৃতি।

লেখা – জান্নাতুল নাঈমা

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “নিলার স্মৃতি – অনুভূতির গল্প” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – তোমাতে আমি পূর্ণ – প্রথম প্রেমের গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *