একটা ভালোবাসার গল্প

হঠাৎ বৃষ্টি – একটা ভালোবাসার গল্প (Rain Love)

বৃষ্টির ভিতর প্রতিদিন আপনি ছাতা ছাড়া বের হোন কেন? বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে বুঝি? নাকি প্রতিদিন আপনাকে আমি ছাতা দিতে আসি এটাই আমার দোষ! মা ঠিকই বলে, কিছু মানুষের উপকার করতে নেই। তারা বারবার সেই উপকার হাসিল করতে চায়। কাল থেকে ছাতা নিয়ে বের হবেন বাসা থেকে৷ আমি আর আসবো না। যত্তসব!’

এক নিঃশ্বাসেই কথাগুলো বললো রিনি। তার চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলাম বেশ খানিক্ষন। কি সুন্দর চেহারা তার। আমি যতোবার তাকাই ততোবারই ‘মাশাআল্লাহ’ উচ্চারণ করে ফেলি। এই উচ্চারণ করাটা প্রতিবারই থাকে মনে মনে। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো পরশুদিন। সে নিয়মমাফিক আমার জন্য ছাতা নিয়ে তার বাসা থেকে নিচে নামে।

তখন তাকে দেখে একটু বড় স্বরেই বলে ফেলেছিলাম ‘মাশাআল্লাহ’। সে আমার এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে গেল। তারপর এদিক সেদিক তাকিয়ে চেহারায় গম্ভীর একটা ভাব এনে প্রস্থান করেছিলো। ভাগ্যিস আর বেশি কিছু বলেনি৷ নাহয় লজ্জায় তার সামনে এসে দাঁড়ানোর সেই দুঃসাহস আমার আর হতো না।
.
‘কি হলো চুপ আছেন কেন? মুখ থেকে কি শব্দ বের হচ্ছে না?’
রিনির কথায় আমি একটু নড়েচড়ে দাঁড়ালাম। আসলে এতক্ষণ তার চেহারার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। এভাবে কেউ কি কারো দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলাম। উত্তর মেলানোর চেষ্টায় আছি। হয়তো পারে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা যে সম্ভব নয় এটা শুধু আমি নই, ফ্রেন্ড সার্কেল থেকে শুরু করে বাড়ির সবাই জানে।
.
গত সপ্তাহে মেয়ে দেখতে গেছিলাম মা আর বাবার সাথে। আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য সাথে বড় ভাই আর ভাবীও ছিলেন। পাত্রী যখন চায়ের ট্রে নিয়ে আমার সামনে এসে চায়ের কাপ ধরলো তখন আমি পুরোপুরি ঘাবড়ে যাই। সে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বললো, ‘চা নিন।’

ব্যাস এইটুকুই। আর কোনো কথা বলার আগেই সে চায়ের কাপ আমার দিকে এগিয়ে দেয়। আমি হাতে বাড়িয়ে যেই নিতে যাবো ঠিক সেই মুহুর্তেই আমার হাত কাঁপতে শুরু করে দেয়। কি একটা লজ্জাকর অবস্থায় পড়ে গেছিলাম। মুহুর্তেই আমি সামনের দিকে তাকাতেই দেখলাম পাত্রীর মা আমার দিকে বেশ বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে রইলেন।

পাশ থেকে বড় ভাই বললেন, ‘কি করিস রে হারামজাদা, কাপটা নে হাতে। হাত কাঁপছে কেন রে এতো তোর?’
আমি বড় ভাইকে কিছু বলতে যাবো এমন সময় মা আমার দিকে তাকিয়ে আস্তে করে গলার স্বর চেপে বললেন, ‘বেইজ্জত করাবি নাকি আমাদের হতচ্ছাড়া! তোর হাত কাঁপছে কেন রে? তাড়াতাড়ি চায়ের কাপটা নে।’
আমি হাত আরেকটু বাড়াতেই যে চাইলাম, ঠিক সেই মুহুর্তে পাত্রী তার হাত গুটিয়ে নিয়েছে। চায়ের কাপ আবারো ট্রেতে রেখে দিলেন। আমি কেমন যেন লজ্জায় পড়ে গেলাম।

আমি হাত বাড়ালাম অথচ চায়ের কাপ নেই। ব্যাপারটা এমন ঘটলো যে বহুদিন অপেক্ষা করে থেকেছিলাম বৃষ্টির জন্য। যেই বৃষ্টি আসলো, আমি ভিজতে গেলাম ঠিকই কিন্তু বৃষ্টি উধাও হয়ে রোদে পরিণত হলো। বেশ খারাপ একটা অবস্থা।

আমি শিওর, আমার বামপাশে বড় ভাই আর ডানপাশে মা, দুইজনের পরিবর্তে যে-কোনো একপাশে যদি বাবা বসতেন, তাহলে নির্ঘাত এতক্ষণে আমার কান মলে দিতেন ধরে। শুধুই কান মলে দিয়ে তিনি ক্রান্ত হতেন না। এই কান মলে দেয়ার পাশাপাশি আমাকে অনেক বকাও দিতেন। এসবকে বকা বললে ভুল হবে। পারফেক্ট হবে যদি ‘গালি’ সম্বোধন করি।
.
‘আজব, আপনি কিছু বলছেন না কেন? বোবা হয়ে গেলেন নাকি? অবশ্য আপনি এটা ছাড়া আর পারেন কী!’
রিনির কথায় এবার একটা হাল্কা কাশি দিয়ে মুখের ধরণ বদলানোর চেষ্টা করলাম। এতক্ষণ চেয়ে থাকলাম ওর দিকে? ভাবতেও কেমন জানি লজ্জা লাগছে। এইবার মুখ খুললাম কিছু বলার জন্য। কিন্তু কোনোভাবেই কিছুই বলতে পারছি না। রিনির সামনে আসলে কেমন জানি আমার ভেতর থেকে কোনো শব্দ বের করতে পারি না। সবকিছু যেন গুলিয়ে বসি।
এইবার কোনোরকমে শব্দ করে কথা বলার চেষ্টা করলাম। ‘ইয়ে মানে আপনি যেন কী জিজ্ঞেস করেছিলেন?’
.
আমি যে হাত বাড়িয়েও চায়ের কাপ না পেয়ে আরেক লজ্জায় পড়লাম তা ঠিক সবাই বুঝতে পেরেছেন। বিশেষকরে পাত্রীর বাবা। তিনি পরিবেশকে স্বাভাবিক করে দিয়ে বললেন পাত্রীকে, ‘মা, আবার দাও চা চয়নকে।’
তিনি তার বাবার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বললেন, ‘আচ্ছা।’

আমার সমানে আবারো হাল্কা ঝুঁকে বললেন, ‘চা নিন।’ তার কণ্ঠটা এতো মধুর ছিলো যে আমি মুহুর্তেই যেন তার সেই মধুর কন্ঠে হারিয়ে যাচ্ছিলাম।
ধীরে ধীরে হাত বাড়ালাম। পাত্রীর হাত থেকে চায়ের কাপ নিচ্ছি এমন সময় দেখলাম আমার হাত আবারো কাঁপছে। কি একটা লজ্জাকর অবস্থায় যে পড়েছিলাম সেদিন! তা বলে বুঝানো মুশকিল।
বাবা বেশ রাগী চোখে আমার দিকে তাকালেন। তারপর পাত্রীর বাবার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘চয়ন একটু লাজুক টাইপের। ওর এই লজ্জার কারণে কখনো কোনো অনুষ্ঠানেও যেতে পারতো না। মানে মেয়েদের একটু লজ্জা বেশিই পায়।’

বাবা এসব আমার হয়ে সুপারিশ গাইলেও আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি যে উনি বিষয়টিকে স্বাভাবিক করে দেয়ার জন্য এসব বলছেন। এমন সময় যদি বাবা আমায় একা পেতেন, তখন কি হাল করতো আমার, তা ভেবেই ভয় ঢুকলো বুকের ভিতর।

সেই যাইহোক, আমার এমন অবস্থা দেখে পাত্রীর বাবা এসে আমার সামনে আরেকটা টি-টেবিল রাখলেন। উনার মেয়ের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এখানে রাখো।’
পাত্রী ঠিক সেই কাজ করলো। তার বাবার কথামতো চায়ের কাপ টেবিলে রেখে তার মায়ের পাশে গিয়ে বসলেন।
.
‘বলছি যে আপনি প্রতিদিন ছাতা ছাড়া বের হোন কেন? প্রতিদিন কী আমি এখানে থাকবো? হুট করে আমি না থাকলে যদি আপনি বৃষ্টিতে ভিজে যান! তখন কি হবে? আপনার জ্বর এসে যাবে না ঠান্ডা লেগে?’
‘আমি চাই যে আমার জ্বর আসুক।’ কথাটা অনেক কষ্টে পেট থেকে বের করলাম। আমার এমন প্রতুত্তরে রিনি যে অবাক হয়েছে বেশ, তা আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি। সে অবাক দৃষ্টিতে হা করে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ আমার দিকে। তারপর চোখ বড় করে বললেন, ‘আপনি কী ঠিক আছেন? মানে কিছু হয়নি তো আপনার?’

এসব বলতে বলতে আমার কপালে হাত দেয় রিনি। মুহুর্তেই আমার শরীরে বিদ্যুৎ চমকে গেল। প্রিয় মানুষের প্রথম স্পর্শে এমন হয় বুঝি? তারপর আমার কপাল থেকে হাত সরাতে সরাতে বললো, ‘কই না তো, জ্বর তো নেই শরীরে। তাও এমন কথা বের করতে পারলেন কীভাবে আপনার মুখ দিয়ে? মানে ঠিক আছেন তো আপনি? কেমন কেমন যেন লাগতেছে।’

আমি মুচকি হেঁসে বললাম, ‘আমি পুরোপুরি ঠিক আছি। আসলে আপনাকে বলবো বলে আপনার অনুপস্থিতে যতক্ষণ থাকি, ততক্ষণই কতো হাজার কথা ভাবি, কিন্তু আপনার সামনে আসলে যেন কিছুই বের করতে পারি না। হুট করে মনে হয় আমি বোবা হয়ে গেলাম না তো! কি অদ্ভুত কাণ্ড তাই না?’
আমার কথা শুনে রিনি তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো, ‘আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি! একটা চিমটি কাটেন তো! আমার যে বিশ্বাস ই হচ্ছে না আপনার বোবা মুখে বুলি ফুটেছে।’
.
ভাবী বাবা মায়ের কথাবার্তার এক পর্যায়ে গিয়ে বড় করে বললেন, ‘বাবা এদের বোধহয় একটু আলাদা কথা বলতে দেওয়া উচিত। তাদের কোনো সমস্যা থাকলে তা জানাতে পারবে। আর এখন তো এটা স্বাভাবিক। পরিবারের পছন্দ হলে পাত্র পাত্রীকে আলাদা কথা বলতে দেয়া।’

ভাবীর কোনো কথায় বাবা না করেন না। এইবারো তার ফল দেখলাম। বাবা পাত্রীর বাবাকে কে বললেন, ‘তাদেরও তো একটু বুঝাপড়া থাকতে পারে, কি বলেন ভাই!’
বাবার এমন কথায় পাত্রীর মায়ের দিকে তাকালেন পাত্রীর বাবা। তিনি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন। তারপর আমায় ছাদে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু ভয় করলো আমার। যেখানে হাত থেকে এক কাপ চা নিতে পারছি না সেখানে একা গিয়ে কথা বলবো কীভাবে? বড় ভাইকে ইশারা দিয়ে ডাকলাম।

বললাম, ‘আপনি সহ আসেন, আমার ভয় করছে।’ বড় ভাই মজা করলো সাথে যেতে বলাতে। রাগ হলো বেশ। ভাবীকে যেতে বলাতে তিনি জবাব দিলেন, ‘তোমরা স্বামী স্ত্রীর কতো পার্সোনাল কথা থাকতে পারে। তা কি আমার শোনা উচিত হবে? না ভাই, তুমিই যাও বরং।’

শেষমেশ একাই উঠতে হলো ছাদে। পাত্রীর মুখোমুখি দাঁড়ালম। কেন যেন ঘামতে শুরু করলাম। পুরো শার্ট ভিজে একাকার হয়ে গেছে।
আধ ঘন্টা পরে নিচে নামলাম। বাড়ি চলে আসার পরে ও বাড়ি থেকে বাবাকে কল করে বললো আমি যতোদিন না পাত্রীর সাথে ঠিকভাবে কথা বলতে পারছি, ততোদিন বিয়ে আঁটকে থাকবে। কথা বলতে যতো দেরি হবে, বিয়ে ততো পিছবে।
.
রিনির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বললাম, ‘আপনি সেদিন যতো প্রশ্ন করেছিলেন, সব প্রশ্নের উত্তর কিন্তু আমার জানা ছিলো। সেই মুহুর্তে আপনি ছাড়া অন্য কেউ থাকলে আমি ঠিকই প্রতুত্তরে সব প্রশ্নের জবাব দিতাম। কিন্তু আপনার সামনে কেমন যেন আমার কথা আঁটকে যাচ্ছিলো। আপনারর প্রতি এতোই দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম যে তা শুধু মনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তা আমার গলা অবধি এসে আটকেছে। যার কারণে কিছুই বলতে পারিনি। আমার কিন্তু প্রশ্ন গুলো সব মনে আছে।

আপনি প্রথমেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এক আকাশ পরিমাণ কী কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারে? যদি হ্যাঁ হয় তবে তার পক্ষে যুক্তি দেয়া লাগবে।’ এটা বলছি। আমার পৃথিবীটা বিশাল না। আমি, আমার পরিবার আর, এই আপনাকে ঘিরেই। আমার এই পৃথিবীর আকাশ যতটুকু ঘিরে, তার সবটুকুই আপনারা বিদ্যমান। ধরতে পারেন আপনারা আমার আকাশ। আপনাদের ছাড়া আমার এই আমি কল্পনা করা যায়না। কোনো ভাবেই না।

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিলো, ‘আমার চাচাতো বোনের প্রতি তার স্বামীর ভালোবাসা দেখেছি। আমি চাচাতো বোনের স্বামীর মতো স্বামী প্রার্থনা করতাম। কিন্তু কি জানেন? গতমাসে তাদের ডিভোর্স হয়। আচ্ছা এমন কেন বলতে পারেন? তাদের সেই ভালোবাসা হুট করে ফুরিয়ে গেল কীভাবে? আপনার কাছে কী এর আদৌও কোনো জবাব আছে?’

রিনি, আমরা কেমন জানেন? স্বার্থপর। আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবি। নিজেদের স্বপ্নের পিছনে ছুটি। আমার হাত যে ভরসা করে চেপে ধরেছে তার কথা মাঝেমধ্যে ভুলে যাই। তারপর আসে অবহেলা। ধীরে ধীরে ভালোবাসার কমতি শুরু হয়। আর যেই সম্পর্কে ভালোবাসার কমতি থাকে সেখানে সংসার মানেই একটা ঝামেলা।

হ্যাঁ, অনেকেই এই কমতি ভালোবাসা নিয়ে দিব্যি পুরো জীবন পার করে দেয়। এই পার করে দেয়াটা হচ্ছে কারণ বশত। বিভিন্ন কারণে তারা ডিভোর্সে যেতে পারে না। হয় সমাজ, নাহয় বাচ্চাকাচ্চার প্রতি মায়ামমতা। আপনাকে আমি এইটুকু ভরসা দিতে পারি৷ আমি ভালোবাসার ঘাটতি রাখবো না।’

আমার কথা শুনে রিনি অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তার দু-চোখে হাল্কা বৃষ্টি দেখা যাচ্ছে। আমি ছাতা ফেলে দিলাম। কাঁদলে মন হাল্কা হয়। তার এখন একটু কাঁদা উচিত। তাকে আটকানো ঠিক হবে না। এইবার আমি বললাম, ‘আমার এদিকে কোনো কাজ নেই মেয়ে। তোমাকে একটু দেখবো বলেই তোমাদের এইদিকে আসি। আমার ইচ্ছে করে এই বৃষ্টিতে তোমায় নিয়ে একটু ভিজি।

তোমার হাতে হাত রেখে একটু বৃষ্টির কান্না অনুভব করি।’
আমার কথায় মুচকি হেঁসে দিয়ে রিনি বললো, ‘তুমি কি ভাবছো আমি কিছুই বুঝিনি? না বুঝলে কি প্রতিদিন একই টাইমে বৃষ্টির অপেক্ষা করি? আর বৃষ্টি এলেই আমি ছাতা নিয়ে ব্যালকনিতে কি শুধু শুধুই আসি?’
রিনির কথায় আমি অবাক হলাম। তাও একটু হেঁসে ফেললাম, তারপর বললাম, ‘এই মেয়ে, আজকে কিন্তু তোমার চোখ মুছে দিবো না৷ যতো ইচ্ছে বৃষ্টি ঝড়াতে পারো। তবে কথা দিলাম, এমন বৃষ্টিতে তুমি আমি ভিজবো, কিন্তু তোমার চোখের বৃষ্টি ঝড়তে দিবো না। বুঝছো মেয়ে?’

ছোট গল্প – হঠাৎ বৃষ্টি (Rain Love Story)
লেখা – মুহাম্মদ নুরুল আজিম চয়ন।

আরো পড়ুন – ভালোবাসার স্পর্শ – পিচ্চি বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *