রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ১ | Love Story

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ১: হায় বন্ধুরা, আজ আমরা এমন একটি জটিল ভালবাসার গল্প জানব যা রোমান্টিক মনে হবে আবার কষ্টের ভালবাসার গল্প মনে হবে। এই গল্পটি তোমাদের মনকে আলোড়িত আর উত্তেজিত করবে। তাই ঠাণ্ডা মাথায় শান্ত হয়ে বস। এবার তাহলে শুরু করা যাক।

ভালবাসার গল্পের যাত্রা

আমাদের এই প্রেমের গল্পের নায়িকার নাম মাহি আর নায়কের নাম এখনই না বলি। মাহি তার মায়ের সাথে বিয়ে নিয়ে তর্ক করছে।

মা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। প্লিস, তোমরা একটু বুঝার চেষ্টা করো। বিয়ে করতে পারবি না মানে, বিয়েতো হয়েই গেছে। আমরা কি জোর করে তোকে বিয়ে দিয়েছি। তুই নিজ ইচ্ছায় করছিস। এখন তো আমরা সমাজের সামনে তোকে ধুমধাম করে তুলে দিচ্ছি আরকি।

ওওও! মা তুমিও জানো, কেন বিয়েটা আমাকে করতে হইছে? তারপরও বলো আমি ইচ্ছা করে করেছি। দেখো, যা হবার হয়েছে। তখন পরিস্থিতি অন্য ছিলো। তাই করতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু এখন আমি মন থেকে বিয়েটা কোন ভাবেই মানতে পারবো না। না তাকে স্বামী হিসেবে চিন্তা করতে পারবো।

দেখ মাহি, আমরাও চিন্তা করিনি এমন হবে। কিন্তু ভাগ্য কেউ পাল্টাতে পারেনা। জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে সব উপরওয়ালার হাতে। আর সে যদি তোর ভাগ্যে নাবীল কে লিখে রাখে তাহলে আমরা আর কি করতে পারি বল? বিয়েটার কথা আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী সবার কানে চলে গেছে। এখন তুই যদি বলিস তুই ওর সাথে সংসার করবি না, তাহলে চিন্তা কর তোর বাবা সমাজে মুখ দেখাবে কি করে। যে ব্যক্তি কারো কাছে কখনো নতো হয়নি তুই কি চাস আজ তোর বাবার সম্মান চলে যাক। সে নত হোক সবার কাছে। তুই বল?

ঠিক আছে। তোমাদের যা খুশি করো। আমি আর কিছুই বলবো না। আমার কপাল খারাপ, তা না হলে আমার সাথেই বা কেন এমন হলো। (এ কথা বলে মাহি চলে গেলো)

মা আর কিছু বললো না। কারণ আজ মাহির গায়ে হলুদ, সকাল থেকেই সবাই খুব ব্যস্ত। আত্মীয় স্বজন ও আসা শুরু করলো।

মাহির কিছু কাজিনরা তাকে গায়ে হলুদ এর জন্য তৈরি করলো। তারা অনেক চেষ্টা করেও মাহিকে পার্লারে নিতে পারলো না।

মাহিকে ওরা রুমে রেখে বাহিরে চলে গেলো। আর মাহি সেদিনগুলোর কথা চিন্তা করছে আর মনের অজান্তেই চোখ থেকে পানি পরছে।

ফিরে দেখা অতীত

তিন মাস আগে- (অতীত), মাহির সাথে পরিবারের কথোপকথন।

মাঃ মাহি! মাহি! এই মাহি। উফফ! এই মেয়েটা সবসময় পড়তে বসলে পড়ার টেবিলেই ঘুমিয়ে যায়।

মাহিঃ কি হলো মা? সবসময় এতো চেঁচামিচি করো কেন বলতো। আমাকে একটু শান্তি মতো ঘুমাতেও দেওনা। (মাহি ঘুম ঘুম চোখে)

মাঃ কি আমি তোকে ঘুমাতে দিইনা! দেখ মাহি, তুই প্রত্যেক বার অংকে খারাপ রেজাল্ট করিস। আমি যখনি তোকে অংক করতে বলি, তুই পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে পড়িস। কি সমস্যা তোর। (মা মাহির কান ধরে)

বড়ভাইঃ মা ও দিন দিন পড়া চোর হয়ে যাচ্ছে। পড়ালেখার প্রতি ওর একদম মন নেই। তুমি তাড়াতাড়ি ওর বিয়ে দিয়ে দাও। ওটাই ভালো ওর জন্য। (ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখতে দেখতে ওর ভাই কথাগুলো বলছিলো)

মাহিঃ মাহি দৌড় দিয়ে ড্রয়িংরুম এ আসে- কি বললি ভাইয়া তুই!

মাহি ওর ভাইকে খুব ভয় পায়। খুব ট্যারা টাইপ এর মানুষ তাই।

বড়ভাইঃ কি আর বলবো! তবে যা বলেছি সত্য বলেছি। এবার যদি খারাপ রেজাল্ট করিস তাহলে কিন্তু তোর বিয়ে দিয়ে দিব,মনে রাখিস।

মাহি নাক মুখ ফুলিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো। কারণ সে জানে, ভাইকে কিছু বলা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা।

ভাইয়ার বন্ধুর সাথে পরিচয়

বিকেলে মাহি সুন্দর করে সাজুগুজু করে নিলো। কারণ আজ সে রুহির বাসায় যাবে। রুহির ফুফাতো ভাই আবিরকে মাহির খুব পছন্দ। মাহি প্রথম যেদিন আবিরকে দেখেছিলো সেদিন থেকেই সে তার উপর ক্রাশ খেয়েছে। একদম চকলেট বয়ের মতো। মাহির তো মন চাইছিলো খেয়ে ফেলতে। এরপর আবির যখনি রুহিদের বাসায় আসে, মাহিও ওদের বাসায় চলে যায়।

আবির আর ওর মাঝে খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা ভালোবাসা কিনা তারা দুজনেই জানে না। তারা ফেসবুকে এমনকি লুকিয়ে লুকিয়ে ফোনেও অনেক কথা বলে। কারণ ওর ভাই জানতে পারলে ওর কপালে শনি আছে। এটা মাহি খুব ভালো করেই জানে। যাই হোক রুহির বাসায় আবিরের সাথে দেখা করতে যাবে। তাই সুন্দর করে সেজে যেই ড্রয়িংরুম এ পৌছালো মাহির চোখ কপালে উঠে গেলো।

ড্রয়িংরুম এ নাবীল আর শফিক ভাই বসে আছে। শফিক ওর নিজের ভাই আর নাবীল হলো শফিক ভাইয়ের বন্ধু। বলতে গেলে শফিক নাবীল কে মাহির থেকেও বেশি বিশ্বাস করে। নাবীল খুব রগচটা মানুষ, খুব জেদিও।

কিন্তু খুব হ্যান্ডসাম, উচা লম্বা টল ফিগার। উনার জন্য কলেজে অনেক মেয়েরাই পাগল ছিলো। কিন্তু উনার জেদ আর রাগের কারণে কেউ কাছে আসার সাহস পেতো না। ওনাকে দেখলে কেনো জানি আমার কলিজা শুকিয়ে যায়। ভাইকে বোকা বানাতে পারলেও নাবীলকে বোকা বানানো অত সহজ না। দুজনে সোফায় বসে কথা বলছে। আমি আস্তে করে তাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে ডাক পড়লো। আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হবার মতো। আমি মুখে হাসি রেখে পেছনে তাকালাম। দেখলাম তারা দুজনে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। একটু খেয়াল করে দেখলাম নাবীল ভাই তার চোখ দিয়ে আমায় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখলো। এরপর তিনি মোবাইল টিপতে লাগলো।

ভাইয়ার বন্ধুর সাথে প্রথম কথা

শফিক ভাইঃ কোথায় যাচ্ছিস, এই অবেলায়?

মাহিঃ ভাইয়া এইতো একটু রুহির বাসায়।
শফিক ভাইঃ কেনো?

মাহিঃ এইতো একটু কাজ ছিলো। ও কিছু নোট তৈরি করেছে, ওগুলো আনতে যাব।

নাবীল ভাইঃ তুই আর রুহি এক কলেজে পড়িস, তাই না। আর ক্লাসমেটও (এতক্ষণ পর নাবীল ভাই আমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ল)

আমি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকালাম। মন চাইছিলো একটা লাঠি এনে উনার মাথায় মারি।

শফিক ভাইঃ নাবীল কিছু জিগ্যেস করছে, উত্তর দিস না কেন?

মাহিঃ জি ভাইয়া, আমরা ক্লাসমেট।

তাহলেতো নোট কাল কলেজ থেকেও নিতে পারবি। এখন বাহিরে যাওয়ার কি দরকার? তার উপর এতো সেজেগুজে। বান্ধবীর বাসায় নোট আনতে এতো সাজার কি প্রয়োজন, বলতো আমাকে?

মাহিঃ কি আর বলবো? দাঁতে দাঁত চেপে বললাম- নোটগুলো খুব দরকার ছিলো ভাইয়া, তাই যাচ্ছি। আর এমনিতেই একটু সাজতে মন চাইলো, তাই সাজলাম। আর কিছু না। (শফিক ভাই তাকিয়ে আমার কথা শুনছে)

আমি ভয়ে আর কিছুই বলতে পারলাম না।

নাবীলঃ ঠিক আছে খুব বেশি দরকার হলে আমরা নিয়ে আসছি। তুই রুহিকে বলে দে। তোর যাবার দরকার নাই।

শফিক ভাইঃ কি বললো নাবীল, শুনোস নাই? যা ঘরে যা।

আমি রাগে মুখ ফুলিয়ে আবারো নিজের ঘরে চলে গেলাম। কারণ একবার যেহেতু নাবীল ভাই মানা করছে তাহলে আজ আর কোন ভাবেই আমার বাহিরে যাওয়া হবে না। কারণ নাবীল ভাইকে আমার পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে। তার কথার উপর আর কোন কথাই নাই। সে কিছু মানা করলে সেটা আমার বাবা-মাও করেনা, এতোটা ভালোবাসে তাকে। আর শফিক ভাই এর কথা কি বলবি, তার সাথে সাথে সব কথায় সায় দিবে। তাই সে মানা করার পরও খুব জোর করলে উনার সন্দেহ বেড়ে যাবে। তখন আমার কপালে কি হবে সেটা বলা মুশকিল।

আমি রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি রুহিকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম। তা না হলে খুব ভেজালে পরে যেতাম। চলবে… আগামী রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প পর্ব ২ দেখার আমন্ত্রণ রইল। নিচে লিঙ্ক পেয়ে যাবেন।

আরো পড়ুন: রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – ভাইয়ের বন্ধু বর পর্ব ২

সকল গল্পের ধারাবাহিক সব পর্ব এখানে গিয়ে খুঁজুন – ধারাবাহিক পর্বের গল্প

আমাদের ফেসবুক পেজ- ভালবাসার গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *