পাগলামি ভালোবাসা গল্প – bangla love story facebook

পাগলামি ভালোবাসা গল্প – bangla love story facebook: বাকিটা বলতে পারলো না। তার আগেই মেঘ ফারহার ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দেয়৷ পাচঁ মিনিট পর ঠোট জোড়া ছেড়ে দিয়ে মেঘ ফারহাকে কোলে তুলে নিয়ে বলে ওঠে, এখন আর কোনো কথা হবে না। জানপাখি, শুধু ভালোবাসা হবে, ভালোবাসা। বলে ফারহা কে নিয়ে বিছানার দিকে এগোতে…..


পর্ব ১

  • I want this girl। ছবি দেখিয়ে। (আশফি)
  • হুম but who is she। (জয়)
  • She is my heart (sorry dst তোকে মিথ্যা বলার জন্য)
  • ohh god at least তুই প্রেমে পরলি। (জয়)
  • হুম। এখন কথা না বারিয়ে মেয়ে টিকে খুজে বার কর as soon as possible। (আশফি)
  • হুম তা নাহ হয় আমার বেস্ট বাডির জন্য করলাম কিন্তু মেয়েটার নাম কি কোথায় দেখা তা তো বলবি না হলে আমি খুজে বের করবো কি করে? (জয়)
  • এই সিটি তে। (আশফি)
  • What? তাহলে তোর জন্য মেয়েটিকে খোজা খুব সহজ যখন মেয়ে টি লন্ডনে আছে। (জয়)
  • হুম হতে পারে বাট মেয়েটিকে দেখে তো মনে হয় না মেয়েটি লন্ডনে থাকে কিন্তু এই মেয়েটিকে আমার চাই At any cost।
  • ওকে ডান তুই পেয়ে যাবি এখন বল ততুই মেয়ে টার দেখা পেলি কি করে?
  • নাইট ক্লাবে i think কোনো ডিল এসেছিলো। (আশফি)
  • একমিনিট একমিনিট তুই কি ওই ক্লাব টার কথা বলছিস যে টায় আমরা অফিসের কন্ফিডিয়েন শিয়াল মিটিং গুলো করি। (জয়)
  • হ্যা কেনো
  • আরে গাধা ওই দিন তো আমাদের মিটিং এরেন্জ করা হয়েছিলো ক্লাব টায় তাই তো বলি কেনো এতো চেনা চেনা লাগছে মেয়েটাকে! (জয়)
  • তার মানে সে দিন যে ডিল টা যাদের সাথে আমাদের কম্পানি করেছে সেই কম্পানির একজন এমপ্লোই। (আশফ)
  • ইয়েস দোস্ত তুই যাষ্ট ফিফটিন মিনিটস দে মেয়েটার সব ডিটেইলস আমি এনে দিচ্ছি। (জয়)
  • ওকে আমি রুমে যাচ্ছি ফ্রেস হয়ে আসচ্ছি। (আশফি)
  • আফটার ফিফটিন মিনিটস।

আশফি কোথায় তুই (চিল্লিয়ে)

  • dont ‘t shout জয় তুই ভালো করেই জানিস আমার চিৎকার চেচামেচি একদম পছন্দ নয়
  • oh come on Asfi। excitement য়ের জন্য এমন করে ফেলেছি। (জয়)
  • কথা কম বলে যা ইনফরমেশন এনেছিস তা দিয়ে যা। (আশফি)
  • হুম তার জন্যই তো আমার এখানে আসা তাহলে শোন আমার হবু ভাবির নাম হচ্ছে ফারহা রহমান বাংলাদেশের Khan Group & Company er PA যে কম্পানির সাথে তোর কম্পানি Chowdhri Group & industry er ডিল হয়েছে। বাবা মা আর দুই বোন ভাবি বড়ো বোন আর তোর শশুর মশাই সরকারি চাকরি করে। কিন্তু দোস্ত ভাবি তো বি ডি তে থাকে লন্ডনে যাষ্ট ডিল টা ফাইনাল করতে এসেছিলো আর গতকাল বিকেলে বি ডি তে চলে গেছে।
  • That ‘s enough information for me, আর চলে গেছে তাতে কি (আশফি)
  • এখন কি করবি?
  • আজ তোর আমার বি ডি তে যাওয়ার জন্য টিকিট এরেন্জ কর।
  • বাট এখন কি করে পসিবল। ওয়েদার টা তো ভালো না আশফি আর আজ মনে হয় না প্লেন টেক অফ করবে। (জয়)
  • i don’ t know joy দরকার পরলে আমার পার্সোনাল প্লেনে যাবো বাট যেতেই হবে। (আশফি)
  • তুই তো দেখছি crazy lover হয়ে গেছিস। (জয়)
  • হুম আমার জানপাখির জন্য।
    এতোক্ষনে নিশ্চয় আপনারা বুঝে গেছেন এই আশফি আর জয় বেস্ট ফ্রেন্ড আর আশফি এই গল্পের Nayok আর নাইকা তাকে ও পেয়ে যাবে।
    *** দুঘন্টা পর জয় আর আশফি ওদের পার্সোনাল প্লেনে উঠে বসে বি ডি তে যাওয়ার জন্য।
  • উফফফ আম্মু আর একটু ঘুমাই না কি সুন্দুর স্বপ্ন দেখছিলাম দিলে তো ভেঙ্গে। (ফারহা)
  • ওরে নবাবজাদি বাপের লাই পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে নাচছে এখন কয়টা বাজে হুমম ঘড়ি দেখছোস তুই।
    আসরের নামাজ টা তো কায়জা করলি আর এখন মাগরিবের নামাজ টাও কায়জা করতে চাস হুমমম।
  • কিককক আজান দিয়ে দিয়েছে আগে কেনো আমাকে ডাকো নি উফফ বিরক্তি ভাব নিনে বিছানা থেকে উঠলাম। তারপর ওয়াস রুমে চলে গেলাম
  • আল্লাহ মাবুদ বলে কি এই মেয়ে সেই কখন থেকে কতো বার ডাক দিলাম কিন্তু একবার ও শুন লো না আর এখন বলে কি আমি আগে কেনো ডাকিনি।
  • আম্মু ফারিহা কোথায়। ওকে দেখছি না যে। (ওয়াস রুম থেকে বেরিয়ে)
  • আপনার ছোট বোন ওনি তো ছাদে আড্ডা দিচ্ছে ওর ফ্রেন্ডের সাথে কি কপাল গুনে মেয়ে দুটো পেয়েছি বড়ো মেয়ে একদিন অফিস ছুটি পেলে সারা দিন ঘুমাবে আর ছোট মেয়ে ছুটির দিনে বন্ধু বান্ধব নিয়ে বাসায় আড্ডা দিবে।
  • ওহহ কাম অন আম্মু তুমি তো জানো আমি কতোটা ঘুমোতে ভালোবাসি এতোদিন লন্ডনে কাজ কাজ করে একটু ভালোমতো ঘুমাতে পারি নি আর আজ দুদিন ছুটি পেয়ে ও একটু ঘুমাবো না। (মুখ কালো করে)
  • হয়েছে হয়েছে আর তৈল দিতে হবে না নামাজ টা পরে আয় নুডুলস চিকেন পাকোড়া আর চা বানিয়েছি ঝটপট খেয়ে পেল গরম গরম থাকতে।
  • এই টাই তো আমার কিউট আম্মু রাগ দেখানোর পরোক্ষনে গলে জল হয়ে যায় আর তার পর এত্তো গুলা ভালোবাসা। (মনে মনে)
    ওকে আম্মু তুমি ফারিহার ফ্রেন্ডের ও খেতে দেও আমি একটু পর আসছি।
  • হুম। যাই ছোট নবাবজাদি কে খাবার টা দিয়ে আসি।
  • আম্মু যাওয়ার পর নামাজ টা পরে নিলাম তারপর চুল গুলো চিরোনি করে খোলা চুলে ছাদে চলে গেলাম।
  • আপু তুই কখন আসলি রাতে আসলি তো আসলি রাতে + সারা দিন ঘুমিয়ে ও কি তোর ঘুম কমে নি। (ফারিহা)
  • যাষ্ট ছাদে পা দিলাম র ওমনি শুরু হয়ে গেলো ফারিহার আমার ঘুমের পিছুনে লাগা।

এই শেওড়া গাছের পেতনি তোর সমস্যা টা কোথায় রে সারাক্ষন আমার ঘুমের পিছুনে লাগা তাই না (দিলাম চুল টা টেনে)

  • উফফ আপু তুই সব সময় আমার চুল গুলো এমন করে টানিস কেনো যতো চাই আমার চুল গুলো তোর চুলের মতো লম্বা স্লিকি চুল করতে আর তুই আমার চুল গুলো টেনে টেনে ছোট করে দিচ্ছিস। (কাদো কাদো মুখ করে)
  • এতোক্ষন দুই বোনের কান্ড দেখছিলো ফারিহার ফ্রেন্ড গুলো ফারিহার শেষ কথা শুনে সবাই এক সাথে হি হা করে হেসে দিলো।
  • এই ছাগলি গুলা তোরা এই ভাবে হাসছিস কেনো? (ফারিহা)
  • কি করবো বল ফারহা আপু আর তোর কান্ড দেখে যে কেউ হেসে দিবে হিহিহিহি। (ফারিহার ফ্রেন্ড তানিশা)
  • তাই নাকি তানিশা। (গম্ভির ভাবে)
  • নাহ মানে আপু সরি (মাথা নিচু করে)
  • ইসস মেয়ে টা ভয় পেয়ে গেলো মনে হয় ;, তানিশা তোর জামায় টিকটিকি। (আমি)
  • কি আয়য়য়য়া আয়য়য়া টিকটিকি সরাও কেও (লাফিয়ে লাফিয়ে)
  • সবাই এক সাথে হেসে দিলো তানিশার কান্ড দেখে
  • এই তুই আগে লাফানো বন্ধ কর গাধি এখানে টিকটিকি আসবে কোথা থেকে। (ফারিহা)
  • হ্যা তাই তো কিন্তু ফারহা আপু যে বললো আমার জামায় টিকটিকি। (তানিশা)
  • আরে আপু তো যাষ্ট ফান করলো আর তুই লাফাতে শুরু করলি। (ফারিহা)
  • আপপপপু তুমি মিথ্যে বলছো। (জোড়ে চিৎকার দিয়ে)
  • হিহিহি ওই দেখো আম্মু খাবার নিয়ে এসেছে এক এক করে সবাই খাবার টা নিয়ে নেও। (আমি)
  • ফারহা তোমার খাবার টা আমি নিচে রেখে এসেছি তুমি নিচে যাও তোমার আব্বু নিচে তোমাকে ডাকছে। (আম্মু)
  • ওকে আম্মু, নিচে এলাম। দেখলাম আব্বু পেপার হাতে নিয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে পেপার টা নিচে নামিয়ে রাখলো।
  • এই তো মার প্রিন্সেস এসে গেছে তোমার আম্মুর কাছে শুনলাম তুমি রাতে ফিরে নাকি না খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছিলে? (আব্বু)
  • সরি আব্বু ওনেক টাইয়ার্ড ছিলাম তাই আর খাই নি।
  • এখন বসে তোমার ফেবারিট চিকেন নুডুলস টা খেয়ে শেষ করো। (আব্বু)
  • ওকে আব্বু।
  • প্রিন্সেস তোমার অফিস থেকে ফোন এসে ছিলো তোমার কাছে নাকি কিসের একটা ডিলের ফাইল আছে সেটা অফিসে পৌছে দিতে বলেছে। (আব্বু)
  • ওহ হ্যা ডিলের ফাইলটা তো আমার কাছে ওই টা স্যারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিলো আর আমি কিনা তা ভুলে গেছি। কোনো রকমে খেয়ে ফাইল নিয়ে স্যারের বাসার উদ্দ্যশ্যে বের হলাম কারন আজ অফিস অফ আর স্যার অনেক টা আব্বুর মতো আমাকে আদর স্নেহ করে ইভেন স্যারের ওয়াই মিসেস খান ওনি ও আমাকে ভিষন ভালোবাসে আর আজ ওনাদের বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ওই ঘুমের জন্য লেট সব সময়।

স্যারের বাসায় এসে কলিংবেল বাজাতেই নীলা দরজা টা খুলে দিলো। (নীলা স্যারের একমাএ মেয়ে ফারিহার বয়সি)

  • কি হলো নীলা ম্যাডামের আজ মন খারাপ নাকি হুম (আমি)
  • নাহ তোমার সাথে কথা নেই তোমার আসার কথা ছিলো দু ঘন্টা আগে আর তুমি লেট করে আসলে নিশ্চয় তোমার ঘুমের জন্য। তোমার ঘুম টাকে কবে যেনো আমি খুন করে ফেলি দেখো আপু। (নীলা)
  • হায় হায় দুনিয়ার সবাই কি আমার ঘুমটার দুঃমন
    **** নীলার সাথে কিছুক্ষন গল্প করে স্যারের সাথে ডিলটার বিষয় কিছু আলোচনা করে ফাইল টা দিয়ে চলে আসতেই মিসেস খান জোড় করে ডিনার টা করিয়ে ছাড়লে তারপর ড্রাইবার দিয়ে গাড়ি করে বাসায় পৌছে দিলো। বাসায় এসে একটা হট শাওয়ার নিয়ে দিলাম আবার লম্বা একটা ঘুম।
  • হায় হায় দেখো দেখো আম্মু তোমার বড়ো মেয়ে গোছল করে আবার ঘুম দিলো এতো ঘুম ওর কৈতন আসে আল্লাহ্ জানে। (ফারিহা)
  • তুই কথা কম বলে ঘুমিয়ে পর কাল তোর স্কুল আছে। (আম্মু)
  • হুমম সব সময় শুধু আমাকে ঝারি দেও (বলে ঘুমোতে চলে গেলো ফারিহা)
  • আম্মু কই তুমি। (জোড়ে চিৎকার করে)
  • কি হয়েছে কি এত্তো জোড়ে চিৎকার দেওয়া লাগে কেন। বাড়িতে কি ডাকাত পরছে(আম্মু)
  • তার থেকে ও বড়ো কিছু সকাল ৯ টা বাজে ১০ টায় অফিস আমাকে ডাকোনি কেনো। (আমি)
  • এই মেয়ে চুপ একদম বাজে কথা বলবে না সকাল ৭ টা থেকে ডেকে যাচ্ছি কানের কাছে এলাম টাও চালিয়ে রেখে ছিলাম তাও অফ করে ঘুমিয়েছিস আর এখন আমার দোষ হয়ে গেলো।
  • এমা আম্মু দেখি রেগে গেলো কথা না বাড়ি য়ে তারাতারি রেডি হয়ে নি। বিছানা থেকে উঠে একদৌর ওয়াশরুমে তারপর ঝটপট রেডি হয়ে না খেয়ে বেরিয়ে গেলাম রাস্তায় রিকসার জন্য দারাতেই একটা রিকসা পেয়ে গেলাম কিন্তু কিছু দুর যেতে সামনে দেখি ছোট একটা বাচ্চা মেয়ে রোডের মাঝ খানে দারিয়ে কাদছে আর উল্টো দিক থেকে একটা কালো গাড়ি ফুলস্পিডে বাচ্চাটির দিকে এগিয়ে আসছে আমি কোনো মতে রিকসা দার করিয়ে ছুটে গেলাম বাচ্চাটির কাছে কোলে নিয়ে দারাতে গাড়িটা একদম আমার সামনে এসে দারিয়ে পরলো আর আমি ভয়ে বাচ্চা মেয়ে টিকে জরিয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে দারিয়ে আছি।

পর্ব ২

(আশফির নাম টা চেন্জ করে মেঘ দেওয়া হয়েছে)

  • বাচ্চা মেয়েটিকে জরিয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে দারিয়ে আছি।
  • এই যে মিস মরার ইচ্ছে হলে অন্য কোনো গাড়ির সামনে যেয়ে মরুন আমার গাড়ির সামনে কেনো মরতে আসলেন।
  • কারো গলা শুনে তাকিয়ে দেখি একটা হ্যান্ডসাম বানর পুরো ব্লাক সুট পরা চুল গুলো স্পাইক করা চোখে সানগ্লাস পরা আমার দিকে তাকিয়ে যা তা বলে যাচ্ছে একে তো বাচ্চা মেয়েটিকে গাড়ির নিচে চাপাঁ দিয়ে দিতো তার কোনো অপরাধ বোধ নেই আসছে আমাকে বকা দিতে। সালা মনটাই ভেঙ্গে গেলো।
    এই যে মিস্টার ধলা চিকা mind you’re language,আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে এই সব ফালতু কথা বলার দরকার তো আপনাকে পুলিশে দেওয়া অন্ধলোক দের কেনো যে রাস্তায় গাড়ি চালাতে দেয় আল্লাহ্ জানে,
  • হেই স্টুপিড গার্ল আমি ব্লাইন্ড চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে, How dare you তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে blind বলার৷
  • এই যে মিস্টার ধলা চিকা স্টুপিড আমি না আপনি হুম আপনার গাড়ির সামনে বাচ্চা মেয়েটি ছিলো আর আপনি ফুল স্পিডে গাড়ি চালিয়ে মেয়ে টাকে মেরে ফেলতে চায়ছেন। বলতেই এক ভদ্র মহিলা দৌড়ে এসে মেয়ে টাকে কোলে নিয়ে চুমু দিলো।
  • ধন্যবাদ আপু আমার মেয়েটা কে প্রানে বাচানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
  • নাহ আপনাকে ধন্যবাদ দিতে হবে না আপনি আপনার মেয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন যেনো হাই ওয়ে তে না এসে পরে।
  • জ্বি অবশ্যই আসি আল্লাহ আপনার ভালো করুক।
  • এতোক্ষন দারিয়ে ঝগড়াটে মেয়ে আর বাচ্চা মেয়েটার কথা শুনলাম ইসস আর একটু দেরি করে গাড়িটা ব্রেক করলে হয়তো বাচ্চা মেয়েটি গাড়ির নিচে পরতো দোষ টা তো আমার।
  • এই মিস্টার ধলা চিকা দেখতে পেয়েছেন আপনি কিছুক্ষন আগে কি করতে গিয়েছিলেন?
  • এই যে মিস আমি blind না ওকে (চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে)ফারদার আমাকে blind বলবেন না ওকে।
  • ওয়াও আমি তো ক্রাস হ্যান্ডসামের চোখ দেখে। চোখটার মনি বেশ নীল দেখতে হেব্বি মাই ফাস্ট ক্রাস (মনে মনে

আপনি যতোই বলুন blind না তবুও বলবো আপনি blind খরুচ লোক আপনাকে তো ইচ্ছে করছে পচাঁ ডোবায় চুবিয়ে মারি। লেজ কাটা গরু, কান কাটা শিয়াল, লেজ কাটা হাতি, কালা ইদুর,সজারু, ফাজিল লোক একটা আপনি একটা। (আর বলতে পারলাম না তার আগেই এক ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলো)

  • Hay stop this nonsense। Are you have gone mad। কি বলছেন কি এই সব (oh my god মেয়ে টা পাগল নাকি কি সব বলছে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে)
  • What happen ফারদিন তুই রাস্তায় দারিয়ে ঝগড়া করছিস লাইক সিরিয়াসলি(আমি গাড়ি তে ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুম ভাঙ্গতেই দেখছি ফারদিন অচেনা মেয়েটির সাথে রাস্তায় দারিয়ে ঝগড়া করছে)
  • এই যে ভাইয়া আপনি এনার কি হন জানি না তবে প্লিজ এনাকে রাস্তায় গাড়ি চালাতে দিবেন না যেকোনো সময় মানুষদের গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলতে পারে।
  • What। ফারদিন মেয়েটা কি বলছে তুই কার রেস চেম্পিয়ন আর তোকে এই সব কথা বলছে!

but i must say মেয়েটার সাহস আছে বলতে হবে নয় তো ফারদিন চৌধুরির সাথে এমন ভাবে কথা বলে।

  • Just keep you’re mouth shut। । (দাতেঁ দাত চেপে)
    আর এই যে মিস তিতা,আমার ফ্রেন্ড জনির সাথে কথা বলে সামনে তাকিয়ে মেয়েটা কে কিছু বলতে যাবো কিন্তু তাকিয়ে দেখি কেউ নেই।
  • ফারদিন মেয়ে টা কি জানু জানে নাকি হঠাৎ করে কোথায় হাওয়া হয়ে গেলো আমার কিন্তু খুব

ভয় করছে।

  • Don’t talk rubbish জনি মেয়েটি কোথায় গেলো এটা আমার জানার কোনো প্রয়োজন নেই মেয়টার জন্য অলরেডি আমার লেট হয়ে গেছে ব্রো আমার জন্য ওয়েট করছে। Let ‘s go। এতোক্ষন খেয়াল করিনি হাই ওয়ে মাঝ রাস্তায় গাড়ি দার করিয়ে ঝগড়া করলাম পিছুন থেকে এক বিশাল গাড়ির জ্যাম হয়ে আছে আমার জন্য তা আমি খেয়ালই করি নি কেউ কেউ বার বার হর্ন দিচ্ছে আমি আর লেট না করে গাড়ি স্ট্রাট দিয়ে চলে আসলাম বাড়িতে।
  • may i coming sir?
  • yes ফারহা আজ এতো লেট করে অফিসে বাসায় সবাই ঠিক আছে তো। (বস)
  • জ্বি স্যার রাস্তায় জ্যাম থাকায় একটু লেট হয়ে গেলো Sorry sir (আমি ঘুম পাগলি থাকলেও আমার প্রত্যেকটা কাজের টাইম মেইনটেইন করে চলি কখনো লেট করার জন্য কারো কাছে কথা শুনতে হয়নি বাট আজ ওই খরুচ ব্যাটার জন্য অফিসে আসতে লেট হয়ে গেলো ব্যাটা কে হাতের কাছে পাই একদিন বুঝিয়ে দেবো এই ফারহা কি জিনিস)
  • ফারহা এই ফাইল গুলো চেক করে দেখো এগুলো আমাদের লন্ডনের ক্লাইন্ডের সাথে করা ডিলের কাগজ পএ সাথে প্রোডাক্টের ডিট্রেইলস সব টা একবার ভালো করে দেখে নিও ডিল টা আমাদের কম্পানির জন্য খুব ইমপ্রটেন্ট।
  • হ্যা স্যার আমি দেখছি ফাইল গুলো আপনি চিন্তা করবেন না আমি কেবিনে যাই তাহলে।
  • হ্যা যাও আর শোন ফারহা তোমার আন্টি তোমাকে অফিস শেষে বাড়িতে যেতে বলেছে।
  • বাট স্যার অফিসে এতো কাজ নতুন ডিল টা নিয়ে আর বাসায় আম্মকে তো বলা হয়নি।
  • তোমাকে ওই সব নিয়ে টেনশন করতে হবে না আমি ফারুক কে ফোন করে বলে দিবো ঠিক আছে।
  • (আমার আব্বু আর স্যার হলেন বেস্ট ফ্রেন্ড) ওকে স্যার। স্যারের কেবিন থেকে বের হয়ে আমার কেবিনে বসলাম দুঘন্টা বসে সব কাজ শেষ করে অফিস ক্যান্টিনে গিয়ে কফি অর্ডার করে বসতেই প্রিয়া সাজু ঐশি এসে পাশের চেয়ার গুলোয় বসলো।
  • কেমন আছো ফারহা তোমার লন্ডন ট্রিপটা কেমন হলো? (ঐশি)
  • লন্ডন ট্রিপটার কথা মনে আসতেই আমার সারা শরীল ভয়ে কেপেঁ উঠলো।
  • কি বেপার ফারহা ঐশি লন্ডন ট্রিপটার কথা জানতে চাইলো আর তোমার মুখটা এমন ভয়ে কালো হয়ে গেলো কেনো? (সাজু)
  • দেখো ফারহা এই দু বছরে আমরা কিন্তু খুব ভালো ফ্রেন্ড হয়ে গেছি ইভেন আমরা সব কথা শেয়ার করি একে ওপরের সাথে তোমার সাথে এমন কিছু ঘটে থাকলে বলো আমাদের,কি হয়ে ছিলো? । (প্রিয়া)
  • আমি কিছু না বলে ক্যানটিন থেকে চলে এলাম কেবিনে, আমি কি করে বলবো ওদের,ওই ভয়ঙ্কর রাতের কথা ওই রাতের কথা ভাবতেই ভয়ে আমার শরীল শিউরে উঠছে।
  • হেই ব্রো ওয়াটস আপ। জরিয়ে ধরে,(ফারদিন)
  • হুম কেমন আছিস তুই। (মেঘ)
  • গুড ব্রো আ’ ম রেইলি সার্প্রাইজড তুই এতো বছর পর দেশে ফিরলি। তুই তো দেশে আসতেই চাস না ড্যাড মম Accident death হওয়ার পর। (ফারদিন)
  • হুম দেশে ফিরেছি তবে কিছুদিনের জন্য আবার ব্যাক করবো লন্ডনে কিন্তু তোর তো আরো আগে আসার কথা ছিলো তাহলে এতো লেট কেনো? । (মেঘ)
  • আর বলিস না ব্রো রাস্তায় একটা ঝামেলা হয়েছিলো তারপর অফিসে যেতে হয়েছিলো তাই এতো লেট।
  • ওকে যা ফ্রেস হয়ে আয় লান্চটা একসাথে করবো।
  • ওকে ব্রো।
  • মেঘ ভাবির সাথে মিট করবি না ভাবির বাড়ির Address ফোন নাম্বার সবটাই তো তোর কাছে আছে তাহলে এতো দেরি করছিস কেনো?
  • জয় কাল একটা পার্টি এরেন্জ কর যে Company সাথে আমাদের Company ডিল টা ফাইনাল হয়েছে তাদের কে ইনভাইট কর তবে সবাই যেনো পার্টিতে আসে সেটা তুই দেখবি। (মেঘ)
  • Oh My God মেঘ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি তুই আসলেই খুব ক্লেভার তুই ভালো করেই জানিস এরকম পার্টিতে অফিসের সব স্টাফদের থাকা বাধ্যতা মূলক। (জয়)
  • (রহস্যময় হাসি দিয়ে)
  • (ফ্রেস হয়ে ব্রোর রুমে আসতেই দেখি ব্রো মুখে লেগে থাকা হাসি টা ওটাই আমায় ভাবাচ্ছে কারন ব্রো এই রকম তখনি হাসে যখন কারোর সর্বনাসের খেলায় নামে। )
  • কি হলো ফারদিন তুই দরজায় দারিয়ে কি করছিস ভিতরে আয়। (মেঘ)
  • দোস্ত তোরা দুই ভাই গল্প কর আমি ড্যাডের সাথে কথা বলে আসচ্ছি বি ডি তে আসার কথা ড্যাড কে বলা হয়নি।
  • ওকে আঙ্কেল কে জানিয়ে দে।
  • স্যার মিসেস খান কি জন্য আমাকে ডেকেছে?
  • ফারহা মামুনি অফিসে আমি তোমার স্যার বাইরে আঙ্কেল আর মিসেস খান নয় আন্টি বলবে এটা আমি কতোবার বলবো হুম।
  • সরি আঙ্কেল (মাথা নিচু করে)
  • ইটস ওকে মাই ডিয়ার এসে গেলাম ভিতরে চলো।
  • জ্বি স্যার না মানে আঙ্কেল।
  • হেসে দিয়ে হুম চলো।
  • আপু তুমি আজ ও লেজ করলে (গাল ফুলিয়ে)
  • সরি সোনা তোমার জন্য চকলেট কিনতেই তো আসতে লেট হয়ে গেলো। (চকলেট গুলো বের করে দিয়ে)
  • ওয়াও আপু উমমমমা তুমি খুব ভালো।
  • নীলা মামুনি ফারহা আপু কে বসতে দেও তার আগেই বায়না শুরু করে দিলে। (স্যার)
  • আঙ্কেল প্লিজ নীলা কে বকবেন না ও তো আমার আর একটা ছোট বোন।
  • ওকে ওকে তোমরা বোনেরা যা খুশি করো আমি কিছুই বলবো না (মুখে আঙ্গুল দিয়ে)
  • আঙ্কেলের কথা শুনে নীলা আর আমি খিল খিল করে হেসে উঠলাম।

**** সারা বিকেল আন্টি নীলার সাথে গল্প করলাম অনেক খাওয়া দাওয়া করলাম সন্ধায় আঙ্কেল আমাকে গাড়ি পযর্ন্ত এগিয়ে দিতে এলে হঠাৎ আঙ্কেলের ফোনে একটা মেসেজ আসলো। মেসেজ টা দেখে আঙ্কেলের মুখটা কালো হয়ে গেলো।

  • anything wrong uncle?
  • হ্যা ফারহা মামুনি আমাদের লাস্ট ডিল টার জন্য পার্টি দিচ্ছে আর আমাদের কিছু অফিস স্ট্রাফ দের ইনভাইট করেছে কিন্তু। (চিন্তিত মুখ নিয়ে)
  • আঙ্কেল পার্টি তো লন্ডনে হবে বাংলাদেশে তো নয় তাহলে এতো টেনশন কেনো করছেন?
  • নাহ ফারহা পার্টি টা বাংলাদেশে হচ্ছে আর Company মালিক বাংলাদেশে এসেছে গতকাল আর আগামি কাল সন্ধায় পার্টি হবে কিন্তু আমি তো পার্টিতে এটেন্ড করতে পারবো না তোমার আন্টিকে বিকেলে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে হবে তারপর রাতে আমার ভাইয়ের বাসায় যেতে হবে ও খুব অসুস্থ।
  • কোনো ব্যাপার না আঙ্কেল আমি তো আছি আমি সব টা সামলে নিবো।
  • Thank you ফারহা বাচাঁলে আমাকে।
  • আঙ্কেল আমাকে না আপনি মেয়ে বলেন তাহলে Thank you কেনো বলছেন। (মুখ কালো করে)
  • সরি মা ক্ষমা করো আমাকে আর হবে না।
  • হি হি হি হি ঠিক আছে আচ্ছা আঙ্কেল আসি তাহলে।
  • হ্যা এসো আর শোন কাল তোমার ছুটি অফিসে যেতে হবে না।
  • ওকে আঙ্কেল আসি। আসসালামু আলাইকুম।

* বাসায় এসে আম্মুর টক মিষ্টি বকা খেলাম লেট করে আসার জন্য রাতে খাওয়ার জন্য ডেকেছিলো কিন্তু আন্টি এতোকিছু জোর করে খাইয়ে ছিলো যে পেটে আর জায়গা না থাকার জন্য খেতে পারলাম না শাওয়ার নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।

  • আপু এই আপু উঠ না আর কতো ঘুমাবি বেলা এগারোটা বাজে উঠ না আপু।
  • কি হয়েছে ফারিহা এভাবে কানের কাছে চিল্লিয়ে ডাকছিস কেনো বাড়িতে কি ডাকাত পরেছে নাকি।
  • তুই না বিকেলে পার্টিতে যাবি?
  • তা তো বিকেলে এখন কি। (বিরক্তি নিয়ে)
  • উফফ ভুলে গেলি তোর না সপিং করবি বলেছিলে রাতে।
  • হা হা তাই তো ভুলেই গেছিলাম (শপিংয়ের কথা শুনে লাফিয়ে উঠলাম)
  • যা না আপু জলদি রেডি হয়ে আয় তারপর সপিং য়ে যাবো।
  • ওকে, একদৌরে ওয়াসরুম চলে গেলাম তার পর ঝটপট রেডি হয়ে নাস্তা করে ফারিহা কে নিয়ে সপিংয়ে চলে গেলাম।
    সন্ধায়
  • আপু ব্লাক শাড়িটায় তোকে জোস লাগছে কানের নিচে কাজল দিয়ে।
  • What ফারিহা কি করছিস।
  • নজর না লাগে তাই কালো টিকা দিয়ে দিলাম আমার আপু কে তো আজ রাত পরির থেকে কমকিছু লাগছে না। দেখিস ছেলেরা যেনো পিছু না নেয়। ইসস আমি ছেলে হলে না তোকে এখুনি প্রপোজ করেদিতাম।
  • ফাজিল মেয়ে যা এখান থেকে আয়য়য়য়া (জোড়ে চিৎকার করে)
  • কি হলো কানের কাছে চিৎকার কেনো দিলে।
  • লেট করে ফেললাম ঘড়িতে দেখ ওলরেডি ৬:৩০ বাজে।
  • ওহহ এই বেপার আমি ক্যাব বুক করে রেখেছি বাহিরে তুই তারা তারি বের হো।
  • উমমময়া লক্ষী বন আমার আর কথা না বারিয়ে চলে গেলাম ক্যাব নিয়ে স্যার আগেই Address টা মেসেজ করে দিয়েছিলেন তাই আর কষ্ট হয়নি বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে না তাকিয়ে সোজা ভিতরে চলে গেলাম সবাই কেমন যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে হঠাৎ প্রিয়া দৌরে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।
  • হেই ফারহা ইউ লুকিং সো গরজিয়াস দেখো সব ছেলেরা তোমার দিকে তাকিয়ে আছে কেমন করে।
  • প্রিয়ার কথা শুনে সামনে তাকিয়ে যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমার সারা শরীর ভয়তে কাপছেঁ আমি দারিয়ে থাকতে পারছি না।

পর্ব ৩

  • কি হয়েছে ফারহা তুমি এমন করে কাপছোঁ কেনো are you okay না।
  • হ্যা আমি ঠিক আছি ওয়াসরুম টা কোন দিকে বলতে পারো?
  • হ্যা কেনো না সোজা গিয়ে ডান দিকে বাট ফারহা কোনো হেলপ লাগলে বলো প্লিজ।
  • tnx প্রিয়া প্রয়োজন পরলে তোমাকে বলবো। ওখান থেকে সোজা ওয়াস রুমে এসে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে বের হতে যাবো তখনি কারোর সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যেতে নিলাম ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি।
  • এই যে মিস তিতা আপনি এখানে। (ওয়াসরুমের পাস থেকে যাচ্ছিলাম তখনি কেউ খুব তারাহুরা করে বের হতে গিয়ে আমার সাথে ধাক্কা লেগে পরে যাচ্ছিলো তখনি আমি সাথে সাথে ধরে ফেলি মেয়েটি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে ভালো করে তাকাতেই দেখি গতকাল যে মেয়েটার সাথে ঝগড়া হয়েছিলো সেই মেয়েটা। )
  • পরে যাওয়ার ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম যাতে ব্যাথা কম পাই কিন্তু এখনো কেনো পরলাম না আ কে বা আমাকে মিস তিতা বললো। ওহ মাই গড তারাতারি চোখ মেলে তাকাতেই দেখি গতকাল যে ছেলে টার সাথে মাঝ রাস্তায় ঝগড়া করলাম সেই ছেলেটি আমার কমর জড়িয়ে ধরে রেখেছে তার জন্যই আমি এখনো পরে যাইনি বাট ব্যাটা ৩২ পাটি দাত বের করে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে ওনাকে ছেড়ে সরে দারালাম।
  • এই যে মিস আপনি এখান কি করছেন?
  • আপনি কি সত্যি অন্ধ চোখে দেখেন না।
  • What। আবার আপনি আমাকে অন্ধ বললেন। আমি যদি অন্ধ হতাম তাহলে কি তাহলে কি আপনাকে চিনতে পারতাম। না আপনাকে পরে যাওয়া থেকে বাচাঁতাম।
  • আপনি যদি অন্ধ না হতেন তাহলে এই কথা কেনো জানতে চাইলেন যে এখানে আমি কি করছি মানুষ ওয়াস রুমে কি করে হুমম হা ডু ডু খেলে।
  • নাহ মানে আমি এটা জানতে চাই নি আমি বলতে চাইছি আপনি পার্টিতে।
  • এই যে মিস্টার ফারদিন না কি whatever আমি এই পার্টিতে ইনভাইটেড ওকে।
  • ওকে বাট মিস আমার নেম ইজ ফারদিন চৌধুরি।
  • দেখুন মিস্টার আপনি যেই হন না কেনো আই ডোন্ট কেয়ার ওকে সাইড প্লিজ।
  • মেয়েতো না ধানি লঙ্কা সরে দারিয়ে। (বাট মেয়ে টা সেই কালো শাড়ি চোখে গাড়ো কাজল ডার্ক রেড লিপষ্টিক গলায় চিকন হার হার ইয়ারিং পরা আর দু হাতে কাচের কালো চুড়ি যাষ্ট ওয়াও বুকে হাত দিয়ে। )
  • কিরে ফারদিন বুকে হাত দিয়ে ওই দিকে কি দেখছিস? (জনি)
  • রাতপরি কে। (আনমনে)
  • What রাতপরি কি বলছিস কি তুই মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি তোর? । (অবাক হয়ে)
  • নাহ কিছু না চল পার্টি তে।
  • ফারহা এখন কেমন লাগছে তোমার ইউ ফিল বেটার নাও?
  • হ্যা প্রিয়া আ’ম ওকে।
  • ওকে চলো বসের কড়া নির্দেশ আমাকে তোমার সাথে পার্টিতে থাকতে হবে আর ঠিক সময় মতো তোমাকে বাসায় পৌছে দিতে হবে।
  • What স্যার এই সব বলেছে আমি বাচ্চা যে আমাকে গার্ড করে রাখতে হবে। (মুখ কালো করে)
  • আরে ফারহা তুমি তো জানো বস তোমাকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসে তার উপর বসের বেস্ট ফ্রেন্ডের মেয়ে তোমার জন্য তো আলাদা ট্রিট করবেই তাই না।
  • নাহ সবাই যা ফ্যাছেলিটি পায় আমি ও তাই পেতে চাই তার বেশি নয়।
  • ওকে ওকে চলো কম্পানির M D সাথে দেখা করে আসি।
  • ওকে তার পর কিন্তু আমি চলে যাবো প্রিয়া।
  • কি যে বলো না ফারহা এত্তো সুন্দর পার্টি রেখে চলে যেতে ইচ্ছে করবে তোমার?
  • পারলে তো এখনি বেরিয়ে যেতাম পার্টি থেকে কিন্তু স্যারের সন্মানের কথা ভেবে যেতে পারছি না (মনে মনে)
    নাহ প্রিয়া আমার শরীল টা ভালো না তাই বেশিক্ষন থাকতে চাইছি না। (মিথ্যে বললাম)
  • ওকে যাষ্ট হাফ এন আওয়ার থাকি না প্লিজ।
  • ওকে চলো MD সাথে দেখা করে আসি।
    আমি আর প্রিয়া MD কাছে গেলাম MD স্যার অন্যদিকে ফিরে অন্য ক্লাইন্ডের সাথে কথা বলছিলো তখন প্রিয়া পিছন থেকে বললো। হ্যালো স্যার।
  • হুম হ্যালো পিছুনে ফিরে।
  • স্যার এটা আপনার জন্য(ফুলের বুকে) (প্রিয়া)
  • স্যার আমাদের MD একটি বিশেষ কারনে পার্টিটা এটেন্ড করতে পারেন নি। (আমি)
  • ইয়াহ আই নো ওনি পার্টিতে আসতে না পারার জন্য ফোনে বিশেষ ভাবে সরি বলেছে।
  • স্যার থাহলে আজ আমরা আসি।
  • What পার্টি তো মাএ ই শুরু হলো আর আপনারা এখনি চলে যেতে চাইছেন দ্যাটস নট ফেয়ার একি আপনাদের হাত খালি কেনো। ওয়েটার এনাদের ড্রিং সার্ব করো।
  • প্রিয়া একটা ড্রিং নিলো কিন্তু আমার এইসব খাই না তাই নিলাম না।
  • মিস ফারহা আপনার সাথে ডিলটার বিষয়ে কিছু কথা ছিলো আমার সাথে আসুন।
  • প্রিয়া তুমি ও আসো।
  • নাহ মিস প্রিয়া তো ডিলটা ফাইনাল হওয়ার সময় ছিলো না তাহলে উনি এসে কি করবে?
  • হ্যা ফারহা স্যার ঠিক বলছে আমি তো ডিলটার বিষয় কিছুই জানি না ওখানে গিয়ে আমি কি করব তার থেকে ভালো হয় আমি এখানে থেকে পার্টিটা ইনজয় করি।
  • কি আর করার এমনিতেই ওনাকে দেখার পর থেকে ভয়ে আমার হাত পা কাপঁছে যদি কোনো ভাবে আগে জানতে পারতাম যে যে কম্পানির সাথে ডিল টা হয়েছে ওই কম্পানি টা ওনার আর তারই সব দায়িত্ব আমার উপরে পরবে তাহলে সাথে সাথে চাকরি ছেড়ে দিতাম। (। একটা রুমে এসে। )
  • তো কি ভাবছেন মিস ফারহা। এতো তারাতারি ভুলে গেলে আমাকে (ফারহার দিকে এগোতে এগোতে)
  • স্যার আপনি আমার দিকে এভাবে এগুচ্ছেন কেনো (ভয় পেয়ে)
  • তুমি পিছাচ্ছো কেনো।
  • দেখুন স্যার ওই দিন আমার কোনো দোষ ছিলো না দোষ আপনার ছিলো।
  • Just stop it। (রেগে+চিল্লিয়ে)

তোমার সাহস কি করে হয় মেঘ চৌধূরির মুখে মুখে উওর দেওয়ার।

  • ভয়ে কিছু বলতে পারছি না কি কুলক্ষনে যে স্যারের প্রপোজালে রাজি হয়ে লন্ডন গেলাম যদি না যেতাম তাহলে ওই রাতে এমন বাজে একটা ঘটনা ঘটতো না। আল্লাহ্ নাহ ফারহা ভয় পেলে চলবে না একদম ভয় পাবি না (মনে মনে)

দেখুন আমি আপনার ঘড়ের বউ না না আমি আপনার অধিনে জব করি তাহলে কোন সাহসে আপনি আমার সাথে এমন মিসবিহেব করছেন। (রেগে)

  • তোমার মতো চিপ গার্ল এই মেঘ চৌধুরির বউ কেনো কাজের লোক হওয়ার যোগ্যতা রাখো না।
  • (মিস্টার চৌধুরি আমার দুই বাহু শক্ত করে ধরে কথা গুলো বললো নিজেকে খুব ছোট লাগছে ওনার এমন কথা শুনে। )
    মিস্টার চৌধুরি বিহেব ইউর সেলফ আপনি আমাকে ডিলটার বিষয় কথা বলবেন বলেছেন আর আপনি একা একটা মেয়ের সাথে এমন বিহেব করছেন ছাড়ুন আমাকে (জোড়ে ধাক্কা দিয়ে)
  • হাউ ডেয়ার ইউ তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে ধাক্কা দেওয়ার? (রেগে)
  • মিস্টার চৌধুরি আমি ওই রাতের জন্য আপনাকে সরি বলতে চেয়েছিলাম বাট আপনি সত্যি সরি পাওয়ার যোগ্য নন আপনার মতো নিচু মনের মানুষের সাথে আমি কথা কেনো এক মুহূর্ত থাকতে চাই না সামান্য ছোট্ট একটা বিষয় টা কেন্দ্র করে আপনি যা করলেন তাতে আপনার সাথে কথা বলতে আমার যাষ্ট ঘৃনা করছে শুনতে পেয়েছেন আপনি।

আর কিছু না বলে দৌড়ে রুম+ পার্টি থেকে বার হয়ে গেলাম চোখ থেকে অঝড়ে পানি পরছে আজ পর্যন্ত কেউ আমার সাথে এমন ব্যবহার করেনি কোথাও না দারিয়ে সোজা রাস্তায় হাটতে লাগলাম মেঘলা আকাশ আর হঠাৎ করেই ধুম বৃষ্টি শুরু হলো পুরো ভিজে গেলাম তারপর ও শাড়ি টার আচল গায়ে জরিয়ে নিলাম আর ভাবতে লাগলাম সেই রাতের কথা।

লন্ডনে সেই দিন ডিলটা ফাইনাল করার জন্য স্যারের সাথে আমি আর দুজন কলিগ ছিলাম আমি ভুলবসত ডিলের ফাইলটা হোটেলে রেখে আসায় ক্লাব থেকে আবার হোটেলে ফিরে যাই ফাইল টা নিতে হোটেল থেকে ফাইল টা নিয়ে হোটেলের গাড়িতে করে এসে ক্লাবে ডুকতেই ওখানকার কিছু ছেলে পিছুন থেকে আমার কমরে হাত দিতেই আমি পিছুন ফিরে এক থাপ্পোর দিয়ে দিলাম,তখনি পাশ থেকে এক মেয়ে বলে উঠলো hey,miss what are you doing he is not calpit। You have a big mistake,

  • What। মেয়েটার কথা শুনে ছেলেটার দিকে তাকাতেই দেখি 6’2। হাইট হবে এত্তো ফর্সা যে রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। রাগে ছেলে টি যে বাকি ছেলে গুলো আমাকে টিস করেছিলো সে ছেলে গুলো কে ইচ্ছে মতো পেটাতে থাকলো তখনি পুলিশ আসলো আর স্যার আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো।
  • ফারহা এখানে কি হচ্ছে আর তুমি এতো লেট করলে কেনো কতো বার কল দিয়েছি রিসিব করলে না কেনো ভিতরে সবাই ওয়েট করছে আমাদের জন্য।
  • সরি স্যার চলুন। তারপর ভিতরে যেয়ে ডিলটা ফাইনাল হলো কিন্তু ডিলটা ফাইনাল হওয়ার সময় ওই কম্পানির Md ছিলো না তিনি নাকি কোনো কাজে বিজি ছিলো তাই ওনার পি এ জয় আহমেদ ডিল টা সাইন করিয়ে আনে।

আমি ওনাকে সরি বলার জন্য ক্লাবের বাইরে যেতেই কে একজন আমার হাত ধরে টেনে ক্লাব রুমে নিয়ে গেলো আমি চিৎকার করতেই আমার মুখ চেপে ধরলো।

  • চুপ একদম চুপ আজ পযর্ন্ত কেউ এই মেঘ চৌধুরির গায় হাত তোলার সাহস হয় নি আর ইউ। You have to pay for this। Just mind it।
  • আমার মুখ চেপে ধরার জন্য কিছুই বলতে পারলাম না। কথা শেষ করেই মুখ ছেড়ে দিয়ে চলে গেলো আর আমি হ্যা হয়ে তাকিয়ে ভাবছি কি হলো এতোক্ষন আমার সাথে।
    কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম তখনি হঠাৎ আমাকে দেখে পাশ ঘেষে একটা ব্লাক কার দারালো একটু ভয় পেয়ে গেলাম তবে সাহস নিয়ে কার টার সাইট গ্লাস টা নগ করতে গ্লাস টা নামালো! ।
  • আপনি। (অবাক হয়ে)।

পর্ব ৪

  • আপনি, আপনি এখানে। (আমি)
  • হ্যা আমি গাড়িতে উঠুন গাড়ির (দরজা খুলে দিয়ে)
  • ধন্যবাদ মিস্টার ফারদিন চৌধুরি কিন্তু আমি একাই চলে যেতে পারবো আপনাকে কষ্ট করে আমাকে পৌছে দিতে হবে না।
  • দেখুন আমি আপনার ভালোর জন্য বলছি কারন আপনি অলরেডি বৃষ্টিতে কাক ভিজার মতো হয়ে গেছেন আর সামনে কি বিপদ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য তা কি আপনি যানেন?
  • আসলেই তো তখন রাগের মাথায় পার্টি থেকে বেরিয়ে আসলাম সাথে প্রিয়া কেও বলে আসি নি আর বৃষ্টিতে ভিজে পাতলা পিনপিনে শাড়িটা গায়ের সাথে এমন ভাবে লেগে আছে (আনমনে ভাবছিলাম)
  • এই যে মিস কি ভাবছেন জলদি গাড়িতে উঠুন আমি অনন্ত সময় এভাবে গাড়ি নিয়ে দারিয়ে থাকতে পারবো না।
  • এখন ভিষন লজ্জা লাগছে কারন কালো ভেজা শাড়িটা ভেত করে আমার পেট কোমর দেখা যাচ্ছে আর বেস ঠান্ডাও লাগছে তাই শাড়ি টা ভালো করে জড়িয়ে নিলাম। কি করবো ভাবছি গাড়িতে উঠবো কিনা কজ এই বৃষ্টিতে কোনো রিকসা ওটো ক্যাব কিছুই পাবো না আর আমার বাড়ি টাও বেশ দুরে তাহলে কি সাহায্য নিবো মিস্টার চৌধুরির।
  • বৃষ্টিতে ভেজার জন্য রাতপরির ফরসা পেট দেখা যাচ্ছে এটা বুজতে পেরে হয়তো ভয়ে লজ্জায় কুকরে আছে তাই আমার কোট টা খুলে রাতপরির দিকে এগিয়ে দিলাম, মিস কোট টা পরে নিন ঠান্ডা কম লাগবে।
  • কিছু না ভেবেই কোট টা নিয়ে পরে নিলাম কারন ভুলটা আমার এভাবে রাগ করে বার হওয়া উঠিত হয় নি আমার অন্তত প্রিয়া কে নিয়ে আসা উচিত ছিলো আর এতো রাতে একা কি করে যাবো লোকটার হেলপ নেবো!
  • দেখছি কোট টা পরে বৃষ্টিতে দারিয়ে কি যেনো ভেবে যাচ্ছে তাই এখন আর কিছু না বলে গাড়ির হর্ন টা বাজাতে লাগলাম।
  • গাড়ির হর্নের শব্দে ধ্যান ভাঙ্গলো আর কিছু না ভেবে গাড়িতে উঠে বসলাম।
  • লাগিয়ে বসুন।
  • মানে(বড় বড় চোখ করে)
  • আই মিন সিট বেল টা লাগিয়ে নিন! !
  • ওহ হ্যা তাই তো সিট বেলটা লাগিয়ে নিলাম। গাড়ি চলতে লাগলো আর আমি গাড়ির কাচ নামিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছি।
  • কি অদ্ভুত মায়া মেয়েটার ভিতর যেনো ওর মায়ায় বিভর হয়ে যাই কোনো দিক খেয়াল থাকে না, আচ্ছা আমি কি এই রাতপরির প্রেমে পরেছি!!! (গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবতে থাকে ফারদিন)
  • মেঘ ফারদিন তো ভাবি কে লিফ্ট দিলো মাএ আমাকে আমার লোক কল করে জানালো।
  • (চোয়াল শক্ত করে মেঘ বললো,),জয় প্যারিসের যে কম্পানি টা লন্জ করেছি কিছুদিন আগে ওই খানে ফারদিন কে পাঠা বল একমাস ওখানে থেকে সব টা সামলাতে।
  • কিন্তু ফারদিন কে কেনো পাঠাবি?
  • কেনো সেটা সময় হলেই জানতে পারবি।
  • মিস ফারহা,
  • হঠাৎ চমকে উঠলাম এভাবে আমার নাম বলাতে। আপনি কি করে আমার নাম জানলেন?
  • এটা কি স্বাভাবিক না আমাদের কম্পানির সাথে আপনাদের কম্পানি একসাথে কাজ করবে আর আমি সাধারনত এই টুকু জানবো না কারা আমাদের এই কাজের সাথে জরিয়ে আছে আপনাদের প্রত্যেক অফিস স্টাফদের ডিটেইলস আমার কাছে আছে।
  • ওহ,
  • সরি।
  • সরি ফর ওয়াট মিস্টার চৌধুরি?
  • সেই দিনটার জন্য আসলে আমার ভুল ছিলো ওভাবে গাড়ি চালানো টা ঠিক হয়নি আমার।
  • আপনি তো আপনার ভুল বুঝতে পেরেছেন তাহলে আর সরি বলতে হবে না এই এই সামনে রাখুন আমার বাড়ি চলে এসেছি।
  • রাতপরির কথা শুনে সাথে সাথে গাড়িটা ব্রেক করলাম, এসে গেলাম এতো তারা
    তারি।
  • গাড়ি থেকে নেমে আসলাম ততোক্ষনে বৃষ্টি থেমে গেছে। Thank you মিস্টার চৌধুরি আপনি লিফ্ট না দিলে হয়তো আজ অনেক বরো বিপদে পরতাম আমি Thank you।
  • প্লিজ এভাবে বার বার tnx দিয়ে আমাকে লজ্জা দিবেন না। শুধু তো সাহায্য করেছি তার থেকে তো বড়ো কিছু না।
  • আপনাদের ছোট ছোট সাহায্য গুলো অন্য ব্যাক্তির কাছে বিরাট। আচ্ছা বাইরে দারিয়ে কথা বলবেন চলুন ভিতরে এক কাপ চা খেয়ে যাবেন।
  • নাহ আজ হবে ন অলরেডি ১০ টা বাজে আমাকে যেতে হবে তবে আপনারো একটা tnx পাওনা আছে।
  • আমার আবার কিসের tnx পাওন আছে?
  • বলবো অন্য কোনো দিন আচ্ছা আমরা কি ফ্রেন্ড হতে?
  • ওনার কথা শুনে চমকে উঠলাম।
  • এভাবে চমকে ওঠার কি আছে। আমরা কি বন্ধু হতে পারি না?
  • নাহ মানে আপনি মালিক আর আমরা কর্ম চারি বন্ধুত্ব কি আমাদের মানায়! !! (তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে)
  • প্লিজ ফারহা শুধু তো ফ্রেন্ড হতে চাচ্ছি আর তো কিছু না।
  • সরি মিস্টার চৌধুরি আমি হুটহাট করে কারোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করি না।
  • ওকে ওকে নো প্রব্লেম তুমি ভাবো সরি আপনি। আমি আজ আসি তাহলে বাই।
  • বাই বলে চলে আসলাম মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেলো দুদিন মাএ হলো দেখা আর উনি আসছে ফ্রেন্ড হতে হাউ ফানি। এই সব ভাবতে ভাবতে চারবার কলিংবেল বাজালাম বাট কেউ খুল্লো না পরের বার বাজাতেই ফারিহা দরজা খুলে দিলো।
  • কিরে আপু এতো তারাতারি আসলি আমি তো ভেবেছিলাম রাত ১২ টার আগে আসতে পারবি না।
  • সামনে থেকে সর (ওকে সরিয়ে ভিতরে ডুকে সোজা ডাইনিংয়ে চলে গেলাম একে তো ওই রাক্ষস টার অপমানের রাগ। তারপর মিস্টার

চৌধুরির হঠাৎ করে ফ্রেন্ড হওয়ার প্রস্তাব রাখা আর লাস্ট ফারিহার দরজা খুলতে দেরি হওয়া সব মিলিয়ে রাগ টা চরমে পৌছে গেলো রাগে একজগ পানি খেয়ে ফেললাম।

  • আপু তুই করছিস টা কি এভাবে পানি খাচ্ছিস কেনো আর তুই এই ভাবে ভিজে বা গেলে কি করে। (অবাক হয়ে)
  • ফারিহার এতো প্রশ্ন শুনে রাগি চোখে তাকাতেই চুপ করে গেলো।
  • কি বেপার আপু এতোটা রেগে আছে কেনো যাওয়ার সময় তো সব টাই ঠিক ছিলো তাহলে?
  • ফারিহা আমি রুমে যাচ্ছি আমাকে বিরক্ত করতে একদম আসবি ওকে।
  • ওকে।
  • ফ্রিজ থেকে পচিঁশ টা চকলেট বের করে নিয়ে রুমে চলে এলাম।
  • যাক বাবা রাগ ও দেখাবে আর সব চকলেট গুলো একাই খাবে খাও আমি ও চকলেট তোর ড্রয়ার থেকে চুড়ি করে নিয়েছি হিহিহি এখন সে গুলো আমি খাবো 😂😂(বিশ্ব জয় করা হাসি দিয়ে)
  • কি ভেবেছে টা কি আমাকে যখন তখন অপমান করবে মানছি আমি ভুল করেছি তার জন্য তো সরি ও বলতে চেয়েছি কিন্তু রাক্ষস টা আমাকে বলতে দিলো কই, রাগে ফারহা অর্নামেন্টস এক একটা ছুরে ফেলছে আর মেঘ কে বকে যাচ্ছে।
  • মেঘ মেঘ where are you?
  • i’m there now tell me কি হয়েছে?
  • ভাবি ঠিক মতো বাসায় পৌছে গেছে আর তোর কথা মতো বাকি কাজ টাও করা শেষ আমার।
  • ওকে বাট সব কন্ডিশন মেনে নিয়েছে তো?
  • নিবে না মানে মেঘ চৌধুরির কথা না করার মতো কলিজা আজ পযর্ন্ত করো হয়নি। তবে!!!
  • তবে কি?
  • কিছু না দোস্ত। ফারদিনের ফ্লাইট পরশুদিন প্যারিসের অফিসের ম্যানেজারের সাথে আমার কথা হয়ে গেছে সব টাই ওকে করা আছে।
  • গুড।
  • ফারদিন তোর হয়েছি কি বলবি আমাকে সব কিছু এমন ভেঙ্গে চুরে ফেলছিস কেনো? (জনি)
  • You know what joni এই ফারদিন চৌধুরি জিবনে যা চেয়েছে তাই পেয়েছে কিন্তু কোনো দিন কোনো মেয়ে কে অসন্মান করি নি চোখ তুলে তাকাই নি কিন্তু আজ জিবনে ফাস্ট টাইম কোনো মেয়ে কে ভালো লাগলো কিন্তু।
  • কিন্তু কি বল?
  • কিন্তু সে আমাকে না বলে দিলো।
  • What মেয়েটার এতো বরো সাহস বল আমাকে ওই মেয়ে টা কোথায় থাকে আমি এখুনি তুলে নিয়ে আসবো।
  • নাহ একদম নাহ ওকে টাচ করার চিন্তা ভাবনা মনে আনবি না তাহলে তোকে আমি খুন করবো। (চোখ মুখ লাল করে)
  • ওহ মাই গড ফারদিন তো আগের মতো হয়ে যাচ্ছে যে করে হক ওই মেয়েটাকে ওর সাথে বিয়ে দিতে হবে নয় তো ও আবার আগের মতো সাইকো হয়ে যাবে আমি থাকতে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের কোনো ক্ষতি হতে আমি দিবো না(মনেমনে)
    ওকে ওকে তুই যা চাইবি তাই হবে এখন যা ফ্রেস হয়ে আয় মেঘ ভাইয়া তোকে ডেকেছে।
  • ওকে আমি ফ্রেস হয়ে আসছি তুই বস।
  • উফফ হট শাওয়ার টা নিয়ে এখন বেশ ভালো লাগছে আর রাগ টাও বেস কমে গেছে। চকলেট গুলো খেয়ে নি খুব খিদে পেয়েছে। বসে বসে চকলেট গুলো একটা একটা করে খেয়ে নিলাম কিন্তু আজ প্রথম কেনো যেনো মনে হচ্ছে কেউ আমার উপর নজর রাখছে হ্যা সেটা আমার রুমেই কিন্তু কেউ নেই রুমে তবে কেনো এমন ফিল করছি আমি। টেনশনে বাকি চকলেট গুলো খেয়ে নিয়ে কানে হেডফোন গুজে ঘুমিয়ে পরলাম।

Next Day

  • আম্মু আমার ঘড়ি কই। (জোড়ে চিৎকার করে)
  • এই মেয়েটা কে নিয়ে আর পারি না তোকে কতোবার বললো তোর ঘড়ি ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে থাকে কোনো কথা মনে থাকে না তোর তাই না মাথায় গাট্টা মেরে।
  • আম্মু সকাল সকাল মারছো আমাকে। (কান্না কান্না ভাব করে)
  • ওরে নবাবজাদি ঘড়ি দেখছেন কয়টা বাজে ১০:১০
  • কিককককক আগে বলবা না দিলে তো আমার দেরি করে।
  • চুপ একদম চুপ কতোবার ডেকেছি তোকে হুম তুই কি উঠছিস। এখন খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর তোর আব্বু সকাল ৮ টায় বার হয়েছে তোকে কতোবার ডেকেছে আর তুই মরার মতো ঘুমিয়ে ছিলি
  • সরি আম্মু আমি যাই অনেক লেট করে ফেলেছি টা টা আম্মু।
  • খাবারটা তো খেয়ে যা। (এই যা চলে গেলো না খেয়ে)
  • অফিস ক্যন্টিনে খেয়ে নিবো (জোড়ে চিতকার করে)
    বাড়ির গেটে আসতেই একটা রিকসা পেয়ে গেলাম কিছুক্ষনের ভিতর অফিসে পৌছে গেলাম কিন্তু ভিতরে ঢুকে আমি অবাক।

পর্ব ৫

  • হেই ফারহা কাল কখন পার্টি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলে। তোমাকে না বললাম এক সাথে যাবো । (রাগ দেখিয়ে)
  • সরি প্রিয়া আসলে আমার খুব খারাপ লাগছিলো আর তুমি তখন পার্টি টা বেশ ইনজয় ও করছিলে তাই তোমাকে কিছু বলি নি। (মিথ্যে বললাম)
  • ওয়াও সো সুইট অফ ইউ ফারহা।
  • হয়েছে এখন বলো অফিসে এই সব কি হচ্ছে এতো সাজাচ্ছে কেনো?
  • ওহ মাই গুডনেস তুমি জানো না স্যার তোমাকে কিচ্ছু জানায় নি!(অবাক চোখে)
  • না কেনো কি জানাবে কি হয়েছে হেয়ালি না করে বলবে আমাকে।
  • আরে আজ আমাদের কম্পানিতে নিউ। আর বলতে পারলাম না তার আগেই ঐশি এসে পরলো।
  • ফারহা তুমি এখানে আর আমি খুজছি সব জায়গায়। (ঐশি)
  • একটু অপেক্ষা করো প্রিয়া কি বলছিলে সেটা বলো।
  • ও কি বলছিলো পরে শুনো এখনি MD স্যারের রুমে যাও স্যার তোমাকে অনেকক্ষন আগে ডেকেছে।
  • ওকে ওকে যাচ্ছি, প্রিয়ার বাকি কথা না শুনে স্যারের সাথে দেখা করতে আসলাম। may i came in sir?
  • yes, Come in
  • স্যারের ক্যাবিনে ঢুকে। স্যার আপনি আমাকে ডেকেছেন?
  • হ্যা ফারহা চৌধুরি কম্পানির MD আজ থেকে তোমাদের আর এই কম্পানির নিউ MD ।
  • What। স্যার আপনি এই সব কি বলছেন উনি কেনো আমাদের কম্পানির মানে আপনার জায়গায় MD কিন্তু কেনো।
  • নাহ ফারহা আমি এখন তোমাকে কিছু বলতে পারবো না কিন্তু তুমি যেহেতু আমার পি এ তাই এখন থেকে মিস্টার চৌধুরির পিএ হয়ে থাকবে।
  • স্যার প্লিজ আমার একটা রিকুয়েস্ট রাখুন আমাকে অন্য কোনো পোষ্ট দিন আপনার জায়গায় আমি অন্য কারোর পিএ হতে চাই না।
  • সরি ফারহা আমার হাতে আর কিচ্ছু নেই তোমাকে মিস্টার চৌধুরির পিএ হয়েই থাকতে হবে।
  • ওকে স্যার তবে ওনার সব ইনফরমেশন আমাকে দিন।
  • সত্যি বলতে মিস্টার চৌধুরির কোনো ইনফরমেশন আমার কাছে নেই তবে যে টুকু জানি সেটুকু বলতে পারি।
  • ওকে স্যার তাহলে তাই বলুন!
  • মিস্টার চৌধুরির পুরো নেম মেঘ চৌধুরি তারা দুই ভাই ছোট ভাইয়ের নাম ফারদিন চৌধুরি বাবা আশরাফ চৌধুরি আর মা মোহনা চৌধুরি ওনেক বছর আগে রোড এক্রিডেন্টে মারা যায় তারপর থেকে মেঘ চৌধুরি লন্ডনে চলে যায় ওখানেই স্টাডি শেষ করে অল বিজনেস কন্ট্রল করে ওখান আর ছোট ভাই ফারদিন চৌধুরি বিডি তেই স্টাডি শেষ করে এখানকার বিজনেস সমলাচ্ছে। ব্যাস এই টুকুই জানি।
  • স্যার তাহলে আমাদের নিউ এম ডি হচ্ছে কি মেঘ চৌধুরি?
  • হ্যা তবে ফারহা তোমাকে বেস সামলে থাকতে হবে বিকজ এই মেঘ চৌধুরি খুব ডেন্জারাস লোক নিজের দিকে খেয়াল রাখবে ওকে।
  • জ্বি স্যার খেয়াল রাখবো কিন্তু আপনাকে খুব মিস করবো (কান্না করে)
  • আরে আমার পাগলি মেয়ে কাদছিস কেনো আর এখন তো আমি তোর আঙ্কেল শুধু অফিসের বস না ওকে তোর যখন মনে হবে আমার কথা বাড়িতে চলে আসবি এক সাথে আড্ডা দিবো।
  • ওকে আঙ্কেল। (হেসে দিয়ে)
  • স্যার নিউ বস এসে গেছে গাড়ি থেকে নামছে। (ঐশি)
  • ওকে সবাই ফুল নিয়ে রেডি থাকো আমরা আসছি।
  • ওকে স্যার (,ঐশি)
  • চলুন স্যার রাক্ষস টাকে ওয়েলকাম করে আসি।
  • কি বলছো ফারহা!। রাক্ষস ওয়েলকাম? ।
  • নাহ কিছু না চলুন নিউ এম ডি কে ওয়েলকাম করে আসি।
  • হ্যা চলো,
  • আঙ্কেল আর আমি ক্যাবিন থেকে বার হয়ে হাতে ফুল নিয়ে দারিয়ে আছি রাক্ষস টার অপেক্ষায়।
    হঠাৎ কিছু লোক হুট করে অফিসে ঢুকে গেলো কিছু বলার আগেই দেখলাম লোক গুলো দু ভাগ হয়ে দু দিক সরে গেলো আর তখনি মেঘ থুক্কু রাক্ষস টা ইন করলো আহা কি পার্ট নিয়ে ঢুকলো অফিসের বাকি মেয়ে গুলো কেমন হ্যা করে তাকিয়ে আছে মনে হয় জিবনে ছেলে দেখে নি ।
  • এই প্রিয়া দেখ না আমাদের নিউ এম ডি স্যার কি হ্যান্ডসাম উফফ আমি তো ক্রাস (ঐশি)
  • ওই তুই না আকাশ কে ভালোবাসিস আর এখন অন্য কাউ কে ক্রাস বলছিস (প্রিয়া)
  • দেখ প্রিয়া স্যার কে কি লাগছে না পুরো ব্লাক সুট পরে আমি তো ভাবছি আকাশের সাথে এই বার ব্রেকাপ করে ফেলবো।
  • তুই আর ঠিক হবি না (প্রিয়া আর ঐশি প্রায় পাচঁ বছর এ অফিসে কর্মরত আছে তার জন্যই দুজনে খুব ভালো বন্ধু)।
  • প্রিয়া ঐশি স্যারে মাথায় ফুল গুলো ঢেলে দেও না মানে ফুল ছিটিয়ে দিয়ে স্বাগতম জানাও আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসচ্ছি বলে কেটে পরলাম।
    নিজের কেবিনে এসে রিজাইন লেটার টা লিখে রাখলাম কারন এমন রাক্ষসের পিএ হতে আমি চাই না আল্লাহ মালুম এই কম্পানিতে এম ডি হয়ে এসে আমার উপর অর্তাচার করবে না এটা আমি কি করে বিশ্বাস করি। (টেনশনে ব্যাগে রাখা পাচটা চকলেট খেয়ে ফেললাম)
  • হেই ফারহা তুমি কেবিনে কি করছো স্যার তোমাকে খুজছে (ঐশি)
  • ওকে আমি আসছি তুমি যাও।
  • হুম বাট তোমার কি কোনো কারনে টেনশন হচ্ছে?
  • না কেনো। (কি করে বুঝতে পারলো আমার টেনশন হচ্ছে কি না)
  • নাহ তোমাকে তো দেখেছি খুব রাগ বা টেনশন হলে তুমি চকলেট খাও।
  • নাহ তেমন কিছু না আসলে সকালে কিছু খেয়ে আসি নি তাই খিদে পেয়েছিলো এই জন্য চকলেট গুলো খাচ্ছিলাম। আচ্ছা চলো স্যার নাকি আমাকে ডেকেছে।
  • ও হা তাই তো দেখলে ভুলেই গেলাম চলো।
  • ঐশি কে নিয়ে স্যারের রুমে সামনে চলে এলাম। দরজায় নক করে স্যার আমায় ডেকেছিলেন?
  • হ্যা ফারহা ভিতরে আসো। মিস্টার চৌধুরি এই হচ্ছে ফারহা রহমান আমার পি এ কিন্তু এখন থেকে আপনার পিএ।
  • রাক্ষস টার সামনে দারিয়ে কেনো যেনো আমার হাটু কাপেঁ সাথে ১০০ স্পিডে হার্ডবিট বেরে যায় কেনো যে এতো ভয় পাই আমি নিজেও জানি না কিন্তু রুমে আসা অবদি আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে রাক্ষসটা।
  • তো মিস ফারহা আপনার কি টাইম সেন্স বলতে কিছু নেই আপনি আমার পিএ নাকি আমি আপনার পিএ যে আপনাকে ওয়েলকাম করার জন্য আমাকে ওয়েট করতে হচ্ছে! (attitude নিয়ে)
  • (আসতে না আসতেই আমাকে অপমান করা শুরু করল তাই মনে সাহস এনে বললাম) সরি স্যার এই নিন রেজিকনেশন লেটার টা দিয়ে এগিয়ে দিয়ে)
  • সরি বলার জন্য কি এখন লেটার লিখে নিয়ে এসেছেন? (মেঘ)
  • জি না স্যার এটা আমার রেজিকনেশন লেটার আমি আপনার অফিসে জব করবো না তাই। (একদমে বলে ফেললাম) তবে হঠাৎ করে পাশে তাকিয়ে দেখি আঙ্কেল নেই রুমে শুধু রাক্ষস টা আর আমি তাই ভয়ে মনে মনে ইউনুস দোয়া পরতে লাগলাম।
  • মিস ফারহা আপনি এই কম্পানিতে কত বছর যাবত আছেন?
  • দু বছর কেনো স্যার?
  • তাহলে এটা আপনি নিশ্চয় জানেন জব ছাড়ার এক মাস আগে থেকে নোটিশ দিতে হয়।
  • হুম জানি কিন্তু একমাস আগেতো আর জানতাম না আপনার সাথে দেখা হবে আর আপনি এই কম্পানির একজন নিউ এম ডি হবেন। (রাগে বলে ফেললাম)
  • বাহ বেশ সাহস বেরেছে তোমার (বলে আসতে আসতে এগোতে থাকলাম ফারহার দিকে। )।
  • দে দেখুন স্যার আমি আপনার জব করবো না
    এভাবে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না (রাক্ষস টা আমার দিকে এগুতে থাকে আর আমি পিছিয়ে যেতে যেতে দেওয়ালের সাথে আটকে গেলাম তাই মনে সাহস নিয়ে কথা গুলো বলে চোখ বন্ধ করে ফেললাম)
  • উফফ মেয়েটা কেনো এতো ভয় পায় আমায় তবে ওর ভয় টাই আমাকে কাজে লাগাতে হবে (ডেভিল হাসি দিয়ে)

তো মিস ফারহা এই অফিস এখন আমার সো আমার করা রুলস চলবে আর আমার রুলস অনুযায়ী আপনাকে একমাস আগে থেকে জব ছাড়ার নোটিশ দিতে হবে বুঝতে পেরেছেন। (লেটার টা ছিড়ে ফারহার মুখে ছুড়ে মারলাম)

  • দেখবো আপনি কি করে আমাকে দিয়ে জব করান আমি ফারহা একবার যখন বলে দিয়েছি এই জব আমি করবো না তো করবো না যাষ্ট মাইন্ড ইট বলে কেবিন থেকে বার হতে যাবো ঠিক তখনি রাক্ষস টা আমার হাত টেনে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে।
  • কি করছেন কি ছাড়ুন বলছি না হলে কিন্তু আমি চিৎকার করবো। (রেগে আগুন হয়ে)
  • ওহ রেলি দেন কার জন্য ওয়েট করছো করো চিৎকার।
  • আমি চেচাতে লাগলাম প্রিয়া ঐশি আকাশ (জোড়ে চিল্লিয়ে)
  • ফারহার বাচ্চামি দেখে আমি মুখ টিপে হাসছি।
  • ক্লান্ত হয়ে উফফ ছাড়ুন না লাগছে আমার হাতে গলা টাও শুকিয়ে গেছে চিৎকার করতে করতে বাট ওরা কেউ শুনতে পেলো না কেনো স্যারের কেবিন টা তো সাউন্ড প্রুফ না তাহলে?
  • দেখছি আনমনে কি যেনো ভেবে যাচ্ছে ফারহা এই যে মিস ভাবনা শেষ হলে একটু মাথা খাটান এতো চিৎ কার করেও যখন কেউ শুনতে পেলো না তখন বুজতে হবে এটা এখন সাউন্ড প্রুফ রুম।
  • What। বাট এটা তো আগে সাউন্ড প্রুফ ছিলো না। (অবাক হয়ে)
  • হ্যা আগে ছিলো না কিন্তু এখন হয়েছে। আর কি বলছিলে যেনো জব তুমি করবে না আমি কিন্তু থাপ্পোরের কথা ভুলে যাইনি চুপচাপ আমার কথা শুনো নয় তো আমি কি করতে পারি বুঝতেই পারছো।
  • রাক্ষস টার কথা শুনে ভয়ে কাচুমাচু করছি। থাপ্পোরটার কথা এখনো ভুলে নি আজ সরি বলে দি। স্যার আমি সেই দিনের জন্য সরি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন আমি ভুল করে আপনাকে থাপ্পোর মেরেছি।
  • ভুল এটা ভুল তোমার জন্য আমি ফার্স্ট টাইম আমার ফ্রেন্ডের সামনে অপমানিত হয়েছি এই মেঘ চৌধুরি কে কেউ ফাস্ট টাইম গায় হাত তুল্লো আর তাকে আমি এমনি এমনি ছেড়ে দিবো। তোমাকে তো এর শাস্তি পেতেই হবে আর এমন শাস্তি দিবো যে কখনো কাউ কে মুখ দেখাতে পারবে না । (চোখ মুখ শক্ত করে)
  • রাক্ষসটার কথা শুনে আর কিছু বলতে পারলাম না চোখ থেকে অনবরত পানি পরছে।
  • এখনি চোখে পানি হাহাহাহা যত্ন করে রাখো এই চোখের পানি পরে কাজে দিবে। ইউ মে গো নাউ।
  • চোখ মুছে দরজা খুলে আমার কেবিনে চলে আসলাম বাট আমার কেবিনে শ্রাবন ও কি করছে?
    শ্রাবন তুমি আমার কেবিনে কি করছো?
  • কেনো তুমি জানো না আমাকে এই কেবিন টা দিয়েছে স্যার।
  • তাহলে আমার কেবিন!!
  • তোমার কেবিন টা স্যারের কেবিনের পাশে। (প্রিয়া)
  • What আমার কেবিন ওখানে কে দিতে বললো? (রেগে)
  • এটা মেঘ স্যারের অর্ডার ছিলো ফারহা আর আমরা সেই অর্ডার ফলো করলাম মাএ রো।
  • এখন আমার সত্যি খুব কান্না পাচ্ছে কেনো যে স্যারের কথায় রাজি হয়ে লন্ডন গেলাম যদি না যেতাম তাহলে এমন দিন আমাকে দেখতে হতো না।
    রেগে বেরিয়ে গেলো ফারহা মেঘের কেবিনের দিকে।
  • What।
  • হ্যা তোমাকে যেতে হবে এটাই তোমার ভাইয়ার আদের্শ। (জয়)
  • কিন্তু ভাইয়া এমন হঠাৎ আদের্শ বা করলো কেনো? (ফারদিন)
  • জানি না বাট তোমাকে কাল যেতে হবে এই নেও তোমার পার্সপোট আর ভিসা।

জয় ফারদিন কে পাসপোর্ট ভিসা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় আর ফারদিন ভাবছে কেনো মেঘ ওকে পুরো একমাসের জন্য প্যারিসে পাঠাচ্ছে অফিসের কোনো বিশেষ কারন থাকলে মেঘ তা ভালো করে হেন্ডেল করতে পারতো তাহলে আমাকে কেনো যেতে বলছে?


পর্ব ৬

  • ওগো শুনছো তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল (ফারহার মা রাজিয়া বেগম)
  • হুম শুনছি তার আগে আমার জন্য কড়া করে এককাপ চা নিয়ে আসোতো নয়তো তোমার কথা আমার মাথায় ডুকবে না (ফারহার বাবা রিয়াজুল রহমান)
  • ওহ এখন তো আমার কোনো কথাই তোমার মাথায় ডুকবে না ঠিক যেমন বাপ তেমনি বেটি জীবন টা আমার তেনা তেনা করে দিল এই বাপ বেটি।
    রাজিয়া তার স্বামী র কথা শুনে রাগে নিজের মনে বকা দিতে দিতে কিচেনে গেলো চা বানতে।
  • জনি ব্রো যেহেতু টিকিট রেডি রেখেছে তাহলে আমি প্যারিসে যাচ্ছি কাল তুই আমার সব কিছু গুছিয়ে রাখিস ওকে। (ফারদিন)
  • বাট দোস্ত তুই একা যাবি। মন খারাপ করে বলে জনি।
  • নাহ তুই ভাবলি কি করে তোকে ছাড়া আমি একা একাই চলে যাবো সন্ধার ভিতর তোর প্যারিসে যাওয়ার জন্য যাবতীয় ডকুমেন্ট এসে যাবে সো চিল।
  • দোস্ত তবে আমি এখনি তোর সাথে যেতে পারবো না দু সপ্তাহ পর যাবো তুই যানিস তো আমার ড্যাড কতো টা অসুস্ত ড্যাড কে সিডনি তে নিয়ে যেতে হয়ে চিকিৎসার জন্য তাই বলছিলাম দু সপ্তাহ পর আমি প্যারিসে যাওয়ার কথা।
  • ওকে আঙ্কেল সুস্ত হলে চলে আসিস প্রব্লেম নাই তবে এখন তুই আমার প্যাকিং গুলো করে ফেল আমি আসচ্ছি।

ফারদিন জনির সাথে কথা শেষ করে বাইরে যায় আর জনি ওর প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখতে থাকে বলা বাহল্য যে ছোট বেলা থেকে জয় আর মেঘ এক সাথে আছে ঠিক তেমনি জনি আর ফারদিন এক সাথে আছে ওরা একে অন্যের বেস্ট ফ্রেন্ড ।

  • ফারহা এতোটাই রেগে রয়েছে যে মেঘের পার্মিশন ছাড়াই মেঘের কেবিনে ডুকে পরলো। এক্সকিউজ মি স্যার।
  • ইয়েস মিস ফারহা।
    আমি ঠিক বুঝতে পেরেছি তুমি কেন আমার কাছে এসেছো হাহাহা মাএ ই তো তোমার শাস্তি শুরু হয়েছে তার আগেই এতোটা হাইপার হচ্ছো মিস ফারহা রহমান এখনো তো অনেক কিছু বাকি আছে তোমার লাইফ টা হেল করার জন্য (কথাগুলো মে মনে ভাবছে মেঘ)
  • স্যার আমার কেবিন চেন্জ করা হয়েছে কেনো আর আমার পার্মিশন ছাড়াই কেন বা চেন্জ করতে বললেন। (প্রচন্ড রেগে ধমকের সুরে কথা গুলো বল্লো ফারহা)
  • যাস্ট স্যাটআপ মিস ফারহা আপনি ভুলে যাচ্ছেন আপনি কার সাথে কথা বলচ্ছেন আর আপনার সাহস কি করে হয় এভাবে আমার সাথে কথা বলার আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি এই অফিসের এম ডি আর এই বিহেবিয়ারের জন্য আপনাকে সাস্তি পেতে হতে পারে এটা কি আপনি জানেন? ।
  • আমি কিচ্ছু ভুলছি না স্যার তবে আপনি ভুলে যাচ্ছেন যে আমি এই কম্পানির একজন এমপ্লয় সো একটু ভেবে কথা বলবেন আর কি বলছিলেন সাস্তি পেতে হতে পারে সো আপনি কার জন্য ওয়েট করছেন দিন সাস্তি আমাকে (অনেক টা রেগে কথা গুলো বললো ফারহা)
  • আর ইউ সিওর মিস ফারহা।
  • দেখুন এর জন্য যদি আমাকে জব থেকে স্যাক করেন তো করতে পারেন বাট য সত্যি ত আমি বলবো(হুরররে এবার হয়তো আমাকে জব টা চলে যাবে)
  • ওহহ মিস ফারহা মনে মনে খুব খুশি হচ্ছো এটা ভেবে যে এবার হয়তো এই মেঘ চৌধুরির হাত থেকে মুক্তি পাবে কিন্তু তুমি জানো না তোমার জন্য কি অপেক্ষা করছে,এগুলো ভাবতে ভাবতে মেঘ ওর চেয়ার থেকে উঠে এক পা এক পা করে ফারহার দিকে এগুচ্ছে আর ফারহা পিছুচ্ছে।
  • হঠাৎ করেই দেখি স্যার চেয়ার থেকে উঠে আমার দিকে এগোতে লাগলো আমি ভয়ে পিছুনে সরে যেতে থাকি কিন্তু ওনি ততোই আমার দিকে এগোতে লাগলো ভিষন ভয় লাগছে তারপর ও সাহস করে স্যার কে বলতে লাগলাম। স্যার আপনি আমাকে সাস্তি দিবেন বলেছিলেন কিন্তু এভাবে আমার দিকে এগুচ্ছেন কেনো?
  • দেখছি ফারহা খুব ভয় পেয়ে আছে তাই আর একটু ভয় দেওয়ার জন্য বললাম। আমি তো আপনাকে সাস্তি দেওয়ার জন্যই তো এগোচ্ছি কিন্তু আপনি পিছিয়ে যাচ্ছেন কেনো। দেখলাম ফারহা দেয়ালের সাথে আটকে গেলো আর পিছাতে পারছে না তখনি আমার হাত দুটো দিয়ে ফারহার দুদিকে হাত দিয়ে আটকে দিলাম যাতে ফারহা পালিয়ে না যেতে পারে।
  • আল্লাহ নোস বেস্ট এই রাক্ষসটা আমার কাছে আসলে কেনো যে আমার হাটু কাপেঁ সাথে হার্ডবিট ১০০ স্পিডে বেরে যায় যানি না ওনি এভাবে কেন আমাকে আটকালো।
  • কি হলো মিস ফারহা কি ভাবছেন কেন আমি আপনাকে এভাবে আটকালাম তাই তো। (রহস্য জনক হাসি দিয়ে)
  • হ হ্যা ন না মা মানে (ভয়ে আমার গলা থেকে শব্দ বের হচ্ছে না কারন স্যার এভাবে আমার এতোটা কাছে এসে দারিয়েছে যে ওনার নিস্বাসের প্রত্যেকটা শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছি যার জন্য আমার হার্ডবিট এতো জোরে ধুকবুক করছে মনে হয় এক্ষুনি আমি হার্ডফেল করব)
  • ভয় নেই এখুনি তুমি হার্ডফেল করবে না। (মুচকি হাসি দিয়ে)
  • এমা রাক্ষসটা আমার মনের কথা শুনতে পেলো কি করে।
  • এতো জোড়ে জোড়ে ভাবলে তো আমি শুনতে পাবোই তাই না মিস ফারহা।
  • রাক্ষসটা আমার কানের কাছে এসে কথা টা বললো যে আমার সারা শরীর শিউরে উঠলো মনে হচ্ছে এবার সত্যি আমি অক্কা পাবো এই রাক্ষসটার জন্য।
  • দেখছি আমার কথা শুনে ফারহা ভয়ে কাপঁছে তাই ওর থেকে একটু ডিসটেন্স রেখে দারালাম তারপর ও ফারহা কেঁপে যাচ্ছে ওর হুস ফেরাতে মুখের সামনে চূটকি বাজালাম তখনি আমার দিকে তাকিয়ে পরলো।
  • আসোলে আমার সাথে কি হচ্ছে আমি এমন বিহেবিয়ার করছি কেন আর কেনই বা এই রাক্ষসটা কে ভয় পাচ্ছি ৷ নাহ ফারহা তুই সট্রং গার্ল তুই এমন রাক্ষস খক্কস কে ভয় পেতে পারিস না

এই সব কিছু ভাবতে থাকে ফারহা তখনি মেঘ ওর টেবিলে রাখা গ্লাসের পানি ফারহার মুখে ছুড়ে মারে।

  • ওয়াট দা হেল ইজ দিস এটা আপনি কি করলেন স্যার (ফারহার ড্রেস টা প্রায় সব টাই ভিজে গেছে ও ভাবছে এভাবে কি করে বার হবে বাইরে আর ও অন্য কোনো ড্রেস নিয়ে আসেনি সাথে এখন কি হবে আর এতোটা অপমানিত করবে ফারহা তা বুঝতে পারেনি ওর চোখ থেকে অনবরত পানি পরে যাচ্ছে)
  • ডোন্ট সাউট মিস ফারহা ওটাই পার সাস্তি ছিল নাও লিভ (জোড়ে চিৎকার করে)
  • ওনার ধমকে কেপেঁ উঠলাম দেরি না করে ওড়নাটা ভালো করে সারা গায় জরিয়ে নিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলাম নতুন কেবিনে যেটা স্যারের কেবিনর ঠিক পাশে। এতো কান্না পাচ্ছে এমন অপমান আজ পযর্ন্ত কেউ করে নি ব্যাগ থেকে বাকি চকলেট গুলো বার করে খেতে শুরু করলাম।
  • কেবল তো তোমাকে কষ্ট দেওয়া শুরু করলাম মিস ফারহা তাতেই এই হাহাহা কিন্তু এই ভেজা কাপর পরে থাকলে তো অসুস্ত হয়ে পরবে।
    মেঘ ঐশি কে কল করে কেবিনে আসতে বলে।
  • আরে ফারহা তোমার একি অবস্তা হয়েছে এভাবে ভিজে গেলে কি করে। (ঐশি)
  • কি বলি এখন নাহ মানে বাথরুমের ট্যাব টার মুখ খুলে গিয়েছিল তাই তো ভিজে গেছি। (মিথ্যে টা বলতে বাধ্য হলাম সত্যি তা জানাতে পারবো না)
  • কিন্তু এভাবে থাকলে তো তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে।
  • নাহ আমার তেমন কিছু হবে না ফ্যানের হাওয়ায় শুকিয়ে যাবে জামা।
  • একদম না এই নেও একটা প্যাকেট দিয়ে।
  • এটার মধ্যে কি?
  • খুলে দেখো।
  • ফারহা প্যাকেট টা খুলে দেখে একটা নীল রংয়ের জামদানী শাড়ি। ওয়াও ঐশি শাড়িটা দারুন কিন্তু এটা আমাকে কেনো দিচ্ছো। (খানিকটা অবাক হয়ে)
  • বিকজ এখন আমার ছোট্টো বনুটার এটার প্রয়োজন তাই দিচ্ছি।
  • নাহ ঐশি এটা আমি কি করে নি না এতো দামি শাড়ি এটা আমি নিতে পারবো না তুমি প্লিজ কিছু মনে করো না।
  • একটা মার দিবো ফাজিল মেয়ে শোন তোকে আমি আমার নাম ধরে ডাকতে বলেছি কিন্তু এটা তুই ভুলে যাস না আমি তোর থেকে বয়সে বড় সো আমার কথা তোকে শুনতে হবে আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না যা জলদি শাড়িটা পরে আয় আমি ওয়েট করছি আর শোন এটার ভিতর পেটিকোট ব্লাউজ আছে যা পরে আয়।
  • ঐশি কে আর বারন করতে পার লাম না আর আমার ও বেশ ঠান্ডা লাগছে তাই আর বেশি কিছু না বলে বাথরুমে চলে গেলাম শাড়ি টা পরতে।
  • মেয়েটার বাকি সব ইনফরমেশন আমার কালেক্ট করা হয়ে গেছে এখন শুধু ফারদিনের প্যারিসে যাওয়ার অপেক্ষা তার পর আমি আমার কাজ শুরু করব আমি আর কিছুতেই ফারদিন কে সাইকো হতে দিতে পারি না তার জন্য আমাকে দিয়ে যা যা করা প্রয়োজন আমি তাই করব। (জনি)

পর্ব ৭

  • ভিষন জোড়ে শব্দ করে চায়ের কাপঁটা টেবিলে রাখলো রাজিয়া বেগম
    এই নেও তোমার চা এখন কি আমার কথা শোনার সময় হবে আপনার (প্রচন্ড রেগে কথা গুলো বললো রাজিয়া)
  • ইসস আজ মনে হয় একটু বেশি করে ফেলেছি যে করে হোক বিষয় টা মেনেজ করতে হবে নয় তো এটার প্রতিশোধ অন্য ভাবে তুলবে।
    (কথা গুলো ভাবতে থাকে রিয়াজুল)
  • কি হলো এখন কি চা টা ঠান্ডা বানিয়ে খাবে হুম।
  • নাহ মানে খাচ্ছি তো এতো টা রেগে যাচ্ছো কেনো তুমি কিন্তু একটা কথা মানতেই হবে চায়ে চুমুক দিয়ে তোমার হাতের চা টা অসাধারন যার জন্য আমি বার বার তোমার প্রেমে পড়ি তোমার রাগ মাখা মুখ খানা দেখে জেনো চাদঁ কেউ হার মানাবে। আর (বাকি টা আর বলতে দিলো না আমার বেগম তার আগেই বলে উঠলো)
  • এই থামো থামো এখানেই ব্রেক লাগাও।
  • কেনো গো যা সত্যিটাই তো বলছি বলো তোমার ওই গুলু গুলু গাল দুটো।
  • এই চুপ একদম চুপ বুড়ো বয়সে ভিমরতি হুম দিনে দুপুরে আকাশে চাদঁ খুজছে আবার তার সাথে আমার তুলনা এতো তৈল দিতে তুমি কি করে পারো হুম বুড়ো কোথাকার আজ বাদে কাল মেয়েদের বিয়ে দিয়ে নাতি নাতনি নিয়ে খেলা করবে তা না উনি আছে ওনার রসের কথা নিয়ে। রাজিয়া বেগম রেগে কথা গুলো বলে ফেল্লো কিন্তু রিয়াজুল কোনো কথার উওর না দিয়ে চুপচাপ কথা গুলো শুনে গেলো।
  • শোন ফারহার আব্বু আমি তোমাকে তোমার মেয়ের বিয়ের কথা বলতে এসেছি।
  • কিহ বিয়ে সবে তো দু বছর হলো ফারহা পড়াশুনা শেষ করেছে আরও কিছু দিন যেতে দেও তারপর নয় ওর বিয়ে নিয়ে ভাববো।
  • নাহ তোমার কথায় সায় দিলে হয়তো তোমার বড় মেয়ের আর বিয়েই হবে না তোমার সময় অনুযায়ি ফারহার বয়স তো আর থেমে থাকবে না তাই না এটাই পার্ফেক্ট বিয়ের বয়স কি বলেছি বুঝতে পেরেছো।
  • নাহ বুঝতে পেরেছি তোমার মাথায় যেহেতু ফারহার বিয়ের বিষয়টা একবার ডুকে গেছে তাহলে এবার তুমি ওর বিয়ে দিয়েই ছাড়বে তাহলে দেরি কেন পাএ দেখা শুরু করো ওহ শোন তার আগে ফারহার কাছে এই বিষয়টা জানিয়ে অনুমতি নিয়ে নিয়ে আফটারল লাইফ টা ওর সো ওর পার্মিশনের একটা বিষয় আছে। চা খেতে খেতে বললো রিয়াজুল রহমান
  • দেখো ফারহার আব্বু আমি এতো ঢাক ঢোল পিটিয়ে জানাতে পারবো না সময় হলেই তোমার মেয়ে যানতে পারবে। ।
  • ওয়াও ফারহা যাস্ট ফাটাফাটি লাগছে তোমাকে এখন যাস্ট চুল গুলো ছেড়ে দেও ওভাবে বেধে রেখো না।
  • উফ এখন আবার শুরু হয়ে যেয়ো না আমি চুল টুল খুলে রাখতে পারবো না চলো কেনটিনে আমার খুব খিদে পেয়েছে।
  • ওকে চলো বাট আমি তোমার চুল টা তো খুলেই ছাড়বো ফারহার পিছুন থেকে চুলের ক্লিপটা খুলে দিলাম এক দৌর।
  • এমা এটা কি হলো ঐশি কে বললাম চুল খুলবো না তারপর ও চুল টা খুলে দিলো এ লম্বা চুল সামলানো কি চারটি খানি কথা হু।
    নিজের মনে বকবক করতে করতে কেনটিনে চলে গেলাম এখানে এসে দেখি সব ইবলিস গুলো বসে আতে খাবার সামনে নিয়ে।
  • ওয়াও ফারহা আ’ম যাস্ট ক্রাস তোমাকে যা লাগছে না এই নীল শাড়িতে যে কেউ তোমার প্রেমে পড়বে (আকাশ)
  • আরে আকাশ প্রশংসা করবে ঠিক আছে বাট তোমার পাশে কে আছে একবার দেখে নিবে তো। (। (প্রিয়া)

আকাশ ঐশির দিকে তাকিয়ে একঢোক গিল্লো কারন ঐশি বড় বড় চোখ করে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো এখনি গিলে খাবে আকাশ কে আকাশ অবস্তা বুঝে এক দৌর দিয়ে ওয়াসরুমের দিকে চলে গেলো আর এদিকে সবাই আকাশের কান্ড দেখে একসাথে হেসে উঠল।

  • ঐশি বেচারা আকাশ কে প্লিজ কিছু আর বলিস বেচারা এমনিতেই ভয় পেয়ে আছে (প্রিয়া)
  • হ্যা ঐশী প্লিজ কিছু বলো না (ফারহা)
  • আকাশতো ভয়ে ওয়াস রুমে ডুকে বসে আছে ওকে আর আমি কি বলবো বল তবে সিরিয়াসলি বলছি ফারহা আমি যদি ছেলে হতাম না তোকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম (ঐশী)

ফারহা ঐশী প্রিয়া একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো তখনি শ্রাবন আসে ক্যানটিনে ফারহা কে দেখে ওহ আপনাদের তো বলাই হয়নি এই শ্রাবন ফারহার পিছুনে পরে আছে ফারহা যখনি এই কম্পানিতে জয়েন করে তবে থেকে আর ফারহার ফ্রেন্ড প্রিয়া ভালোবাসে এই শ্রাবন কে যা শুধু মাএ ঐশী আর আকাশ জানে।

  • হেই গাইস কি করছো তোমরা। (শ্রাবন)
  • ওহ মিস্টার শ্রাবন সাহেব দেখতে পাচ্ছেন না এখানে আমরা লুডু খেলছি আপনি কি আমাদের সাথে খেলবেন নাকি হুম। (ফারহা)
  • নাহ মানে (ভ্যাবাচেকা খেয়ে)
  • না মানে কি শ্রাবন সাহেব বলুন আমরা শুনছি(ঐশী)
  • ক্যানটিনে লুডু না মানে ফারহা তোমাকে কিছু বলার ছিল আমার আর তোমাকে না খুব সুন্দর লাগছে এই নীল শাড়িতে।
    (শ্রাবন)
    শ্রাবনের কথা শুনে প্রিয়ার মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো যেটা একমাএ ঐশীর চোখে ধরা পরলো ঐশী টেবিলের নিচ থেকে হাত দিয়ে প্রিয়ার হাতে হাত রেখে চোখে চোখে ইসারা করল সব কিছু ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না।
  • হে মিস্টার শ্রাবন কি বলছিলেন যেনো বলুন (ঐশী)
    যখনি শ্রাবন ওর কথা ঠিক তখনি ফারহার ফোন টা বেজে উঠল ফারহা তাকিয়ে দেখে আননোন নাম্বার তাই না ধরে রেখে দিলো কিন্তু কলটা কাটে যেতেই আবার ও একি নাম্বার থেকে কল আসতে লাগলো ফারহা বিরক্ত হয়ে কলটা রিসিব করল।
  • হ্যালো হুস দ্যাট। (ফারহা)
  • দু মিনিটের ভিতর আপনাকে আমার কেবিনে দেখতে চাই। বলে ফোনটা কেটে দিলো।
    আর ফারহা ফোনটা হতে নিয়ে স্টাচু হয়ে বসে রইলো তা দেখে প্রিয়া ফারহা কে জ্বিগাসা করলো কি হয়েছে আর কে ফোন দিলো।
    ফারহা সে সব কথার উওর না দিয়ে উলটো জ্বিগাসা করল স্যার কে আমার নাম্বার কে দিয়েছে।
  • কে নো রে ফারহা আমি দিয়েছি স্যার আমাকে ডেকে ছিল ক্যানটিনে আসার আগে ডেকে বললো তোর ফোন নাম্বার এফ বি আইডির নাম ইমেইল আই ডি সব কিছু নিয়ে নিয়েছে। (প্রিয়া)
  • কেনো তুই আমার এতোবড় ক্ষতি টা করলি প্রিয়া (নেকা কান্না করে)
  • মানে (অবাক হয়ে জানতে চাইলো প্রিয়া)
  • মানে টানে কিছুনা রাক্ষসটা আমাকে ফোন করেছিলো এই মাএ বললো দু মিনিটের ভিতর স্যারের কেবিনে যেতে অলরেডি পাচঁ মিনিট হয়ে গেছে রাক্ষস টা আমার কি অবস্তা করবে এক মাএ আমার আল্লাহ জানে আর একমিনিট ও অপেক্ষা না করে দৌড়ে অফিসে স্যারের ক্যাবিনের সামনে চলে এলাম চোখ বন্ধ করে ইউনুস দোয়া পড়ে দরজায় নক করলাম।
  • কামিং বুঝতে বাকি রইল না কে নক করল বিকজ সারা অফিসে সি সি ক্যামেরা লাগানো আছে আর ফারহা দরজার সামনে দারিয়ে কি বির বির করছে তাও আমি দেখতে পাচ্ছি ল্যাপটপে কিন্তু নীল শাড়িটা একদম অপ্সরীর মতো লাগছে বিশেষ করে ফারহার খোলা চুলের জন্য অসাধারন লাগছে।
    স্যার আপনি ডেকে ছিলেন (ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে এটা ভেবে সার যেনো আগের মতো ব্যাবহার না করে)
  • আপনি পুরো পাচঁ মিনিট লেট মিস ফারহা এটার জন্য আপনাকে সাস্তি পেতে হতে পারে এটা নিশ্চয় জানেন আপনি।
  • ইয়েস স্যার বাট স্যার ক্যানটিন থেকে আসতে একটু সময় লেগেছে।
  • দ্যাটস নট মাই লুক আউট আপনি কার পি এ মিস ফারহা। (ব্রু কুচকে জ্বিগাসা করল মেঘ)
  • আপনার স্যার কেনো।
  • তাহলে আপনি অফিসে কাজ কর্ম ফেলে বিশেষ করে আমার অনুমতি ছাড়া আপনি অফিসের বাইরে জান কি করে আবার অফিস কলিগদের সাথে বসে আড্ডা দেন হাউ ডেয়ার ইউ আপনার সাহস কি করে হয় অফিসের নিয়ম ব্রেক করার। (জোড়ে চিৎকার করে বললো মেঘ)
  • সালা খরুচ। বদ রাক্ষস,চামচিকা,হনুমান। লেজ কাটা শিয়াল। এনাকন্ডা। কান ছাড়া হাতি। সাদা ইদুর। বদমাইস কি ভাবে আমার মতো বাচ্চা মেয়েটাকে একা পেয়ে বকছে তোর জীবনে বিয়ে হবে না হলেও এমন একটা মেয়ের সাথে হবে যে তোর জীবন টা চুনা মাছ ভাজার মতো করে দিবে হু (ফারহা মনে মনে মেঘ কে বকা দিয়ে দিয়ে মেরে ফেলছে কিন্তু তা ওর ফেস দেখে বোঝা যাচ্ছে না)
  • মিস ফারহা (জোড়ে চিৎকার করে ওঠে মেঘ)
  • ফারহা ওর নিজের জগত থেকে বের হয়ে যায় মেঘের চিৎকার শুনে। কি কি হয়েছে স্যার (ভয় পেয়ে)
  • মেঘ এটা দেখে অবাক হয়ে যায় যে এতোক্ষন ধরে মেঘ ফারহা কে বকেই চলেছে কিন্তু ফারহা সে দিকে কান নেই সে আছে তার নিজের জগতে এটা দেখে মেঘে রাগ সপ্তমে উঠে যায় মেঘ ২০১৮ সালের পুরোনো একগাদা ফাইল টেবিলের উপর রাখে।

মিস ফারহা বিকেল ৫টার ভিতর এই সব গুলো ফাইলের ডিটেইলস চাই আমার(বেশ রেগেই বলে মেঘ)

  • ওয়াট স্যার এতো গুলো ফাইল ৫ঘন্টার ভিতর দেখতে হবে এটা তো অসম্ভব।
  • মিস ফারহা এই কাজ যদি বিকেল ৫ টার ভিতরে না শেষ করতে পারেন তো আপনাকে সো কজ করা হবে আর এই মাসের স্যালারি ও আপনি পাবেন না গট ইট।
  • স্যালারি দিবে না কথা টা শুনে ফারহা আর কিছু বলে না কারন ফারিহা আবদার করেছিলো নেক্সট birthday তে ওকে একটা ল্যাপটপ গিফট দিতে কজ আব্বু এখন ফারিয়া কে ল্যাপটপ কিনে দিতে রাজি নয় তাই আমার কাছে আবদার করেছিলো। ফারহা মেঘ আর কিছু না বলে ফাইল গুলো নিয়ে নিজের কেবিনে চলে আসে আর এদিকে মেঘ ফারহার অবস্তা দেখে হাসতে থাকে।
  • ফারহা নিজের মনে বক বক করতে থাকে আর চকলেট খেতে থাকে এটা মেঘ ল্যাপটপে দেখছে আর মিটি মিটি হাসছে মেঘ ফারহা কে র একটু কষ্ট দেওয়ার জন্য ল্যান লাইনে কল করে ফারহা কে।
  • বিরক্তি কর আবার কে কাজের সময় ফোন করল ফোন টা কানে তুলতেই রাক্ষস টা আই মিন মেঘের গলা শুনতে পাই।
  • মিস ফারহা এক্ষুনি আমার জন্য ব্লাক কফি নিয়ে আসুনআসুনআর শুনুন নিজের হাতে বানিয়ে নিয়ে আসবেন নয় তো । বলে ফোন টা কেটে দিলো মেঘ
  • সালা রাক্ষস টা আমার জীবন ডা তেনা তেনা বানিয়ে দিলো রে দারা তোকে খাওয়াচ্ছি কফি তাও আমার হাতের ইস্পেসাল কফি দেরি না করে ক্যানটিনে যেয়ে ব্লাক কফি বানালাম তার ভিতে কচু পাতার রস আর মরিচের গুরা মিশিয়ে দিলাম ব্যাস হয়ে গেলো আমার হাতের ঝটপট ইস্পেসাল ব্লাক কফি।
  • স্যারের কেবিনের সামনে এসে নক করলাম মে আই কামিং স্যার।
  • ইয়েস কামিং দেখলাম ফারহা কফি নিয়ে এসেছে ভালোই হলো মথাটা অনেকক্ষন হলো খুব ধরেছে তাই ফারহা টেবিলে কফি টা রাখতেই কফি টা হাতে নিলাম।
  • নে সালা বজ্জাত রাক্ষস স্যার খা তোর কফি আর আমি মজা নি (এই সব কথা ফারহা মনে মনে ভাবতে থাকে)
  • কি বেপার মিস ফারহা এভাবে হাসছে কেনো কফি তে কিছু মেশানো নেই তো আবার শিওর হয়ে নিতে হবে। সো মিস ফারহা কফি টা আপনি বানিয়েছেন?
  • জ্বি স্যার কেনো খেতে খুব বাজে হয়েছে কি কিন্তু সবাই তো বলে আমার হাতের ইস্পেসাল কফি খেলে জীবনে আর ভুলতে পারবে না তাহলে তারা কি মিথ্যে বলেছে (মুখ কালো করে বললাম)
  • এটা তো বোঝা যাবে আপনার হাতের বানানো কফি খাওয়ার পর।
  • হুম স্যার আপনি খান আমি মার কাজ গুলো সেরে নি।
  • ইয়াহহ শিওর ইউ মে গো নাও বাট রিমেমব্বার মিস ফারহা বিকেল ৫টার ভিতর সব ফাইল কম্পিলিট চাই।
  • ওকে স্যার। মানে মানে এখন কেটে পরি নয় তো আবারো বিপদে পরতে হবে আমাকে।
  • কি বেপার ফারহা তুমি কফি নিয়ে কাকে দিলে (প্রিয়া)
  • কাকে আর দিলাম ওই রাক্ষস স্যার কে আমার হাতের ইস্পেসাল কফি (বএিশ পাটি দাত কেলিয়ে)
  • ওয়াট ফারহা তুমি পাগল কিছু দিন আগে শ্রাবন তোমার হাতের কফি খেতে চেয়েছিল তাই তুমি তোমার এই ইস্পেসাল কফি খাইয়েছিলে তারপর পুরো একসপ্তাহ ও বেড থেকে উঠতে পারে নি তা কি তোমার মনে নেই।
  • সবই মনে আছে বুঝছো সোনা যাই আমার কাজ আছে সালা রাক্ষস টা অনেক গুলো ফাইল দিছে দেখতে তুমি ডক্টর কে আসতে বলো কিছুক্ষণ পর ডক্টরের প্রয়োজন হবে। এটা বলে আমি কেবিনে চলে এলাম আর প্রিয়া আমার কথা শুনে ওখানেই হা হয়ে দারিয়ে রইল।

পর্ব ৮

  • ওহ গড অলরেডি চারটা বেজে গেছে আর আমার এখনো অনেক গুলো ফাইল দেখা বাকি আছে কি করে এখন এগুলো শেষ করব।
    এগুলো ভাবতে থাকে আর চকলেট খেতে থাকে তখনি প্রিয়ার আগমন ঘটে কেবিনে।
  • ফারহা তুমি এখানে কি করছো।
  • কি আর করবো বলো রাক্ষস টা একগাদা ফাইল দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে আবার হুকুম দিয়েছে বিকেল পাচঁ টার ভিতর তার সব ফাইল কম্পিলিট চাই।
  • ওহ এই বেপার।
  • এই এই কি বলছো এই বেপার মানে আমার মতো ছোট্ট নিশ্পাপ মেয়ের উপর এরকম টর্চার করাটা কি ঠিক হ্যা।
  • কিহ তুমি ছোট্ট নিশ্পাপ বলেই প্রিয়া হাসতে থাকলো।
  • এই থামো থামো তুমি আমার সময় নষ্ট না করে বিদেয় হও পাচঁ টার ভিতর ফাইল গুলো রাক্ষসটার টেবিলে না রাখতে পারলে আমাকে যে কি করবে একমাএ আল্লাহ জানে।
  • ওহ কামওন ফারহা তুমি কি তোমার নিজের উপর আস্থা নেই।
  • থাকবে না কেনো। এই তুমি ঝেরে কাশো তো কি বলতে চাও। চুল গুলো বাধতে বাধতে বললো ফারহা।
  • এই জন্যই তো তোমাকে এতো ভালোবাসি কিছু যে বলতে চাই তা তুমি ধরে ফেললে আচ্ছা শুনো তুমি যে স্যার কে তোমার ইস্পেসাল কফি বানিয়ে খেতে দিয়েছিলে এটা তো তোমার মনে আছে।
  • হ্যা হ্যা কি হয়েছে তারা তারি বলো ওই বদ রাক্ষস টা কি অক্কা পেয়ে গেছে।
  • হা মানে। ফারহা কথা শেষ করতে না দিয়ে টেবিলের উপর দিয়ে খুশিতে নাচতে থাকে। হুররে বদ রাক্ষস টা অক্কা পেয়েছে ইয়ে কি মজা আজ আমি কত্তো খুশি প্রিয়া ইউ ডোন্ট নো দ্যাট ফাইনালি আমি মুক্তি পেয়েছি। খুশিতে ডিন্কাচিকা ডিন্কাচিকা বলে টেবিলের উপর দারিয়ে নাচতে থাকে ফারহা।

কিছুক্ষন লাফালাফি করার পর ও খেয়াল করলো পিছুন থেকে প্রিয়ার কোনো সারা শব্দ পাচ্ছে না তাই নাচ থামিয়ে পিছে মুরে তাকিয়ে দেখে প্রিয়া নেই আর সেই জায়গায় মেঘ দারিয়ে আছে তা দেখে ফারহা ভুত ভুত বলে জোড়ে চিৎকার করতে থাকে।

  • যাষ্ট স্যাটআপ ফারহা চিৎকার করা বন্ধ করুন (জোড়ে চিৎকার করে বললো মেঘ)
  • ফারহা মেঘের ধমক শুনে স্টাচু হয়ে যায় এই টুকু বুঝতে পারে যে মেঘ অক্কা পায়নি ফারহা ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য টেবিল থেকে নামতে যেতেই শাড়ির সাথে পা বেধে পরে যেতে থাকে ঠিক তখনি মেঘ দৌড়ে এসে ফারহা কে ধরে ফেলে ফারহা পরে যাওয়ার ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
  • হে আল্লাহ এই বারের মতো আমার কমরটা ভাঙ্গার হাত থেকে বাচাও সাথে রাক্ষসটার হাত থেকেও বাচিয়ে নেও কথা দিচ্ছি আর কখনো আমার হাতে ইস্পেসাল কফি রাক্ষসটাকে খাওয়াবো না।
  • কি যে বলবো এই পাগলি মেয়ে টাকে বুঝে উঠতে পারছি না কিন্তু ফারহার কথা শুনে বুজতে পারছি ওর বানানো কফি টায় কিছু একটা মিশানো ছিলো কিন্তু কফিটা আমি লাস্ট মোমেন্টে কফি টা খাওয়ার সময় একটা জরুরি কল আসে আর সেটা এটেন্ট করার জন্য কফি টা আর খাওয়া হয়নি ।
  • তো মিস ফারহা আপনি আমার কফি তে কিছু মিশিয়ে ছিলেন তাই তো।
  • হঠাৎ করে রাক্ষসটার গলা শুনে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি রাক্ষসটা আমাকে ধরে রেখেছে ভয়ে আমার হাত পা কাপঁতে শুরু করল।
  • দেখলাম আমাকে দেখে ভয়ে মুখটা ছোট হয়ে গেছে তাই আর কিছু না বলে ছেড়ে দিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলাম।
  • আউচ আ আমার পা (কান্না করে)
    এভাবে পরে যাওয়ায় ফারহার পা টা মচকে যায় তখনি প্রিয়া কেবিনে আসে।
  • ফারহা কি হয়েছে তুমি নিচে কেনো বসে আছো আর স্যার তোমাকে কিছু কি বলেছে। ফারহা কে নিচ থেকে তুলতে তুলতে বললাম।
  • রাক্ষসটার কথা বাদ দিয়ে আমাকে চেয়ারে বসা মনে হয় আমার পা টা মচকে গেছে।
  • হা তাই হবে হয়তো।
  • হ্যালো ফারদিন বল।
  • ব্রো আমার বিদেশে যাওয়াটা কিছুদিন পোসপন করা যায় না।
  • কেনো যেতে প্রব্লেম কি?
  • ব্রো আমার কিছু পার্সোনাল কাজ আছে তাই বলছি কিছুদিন পর যাই।
  • ওকে। বলে কলটা কেটে দিলো মেঘ।

আমি জানি ফারদিন তোর মাথায় কি চলছে কিন্তু এই বার আমি তোকে এমন টা করতে দিবো আর ফারহা ও যা করেছে তার সাস্তি তো আমি ওকে দিবো কিন্তু তারপর হাহাহা এগুলো বলতে বলতে মেঘ এক রহস্যজনক হাসি দিলো যা একমাএ ঐশীর চোখে ধরা পরলো।

  • মে আই কামিং স্যার। (ঐশী)
  • ইয়েস।
  • স্যার ফারহার পায়ে খুব খারাপ ভাবে মচকে গেছে তাই ও বাড়ি চলে গেছে।
  • ওয়াট কার পার্মিশন নিয়েছে মিস ফারহা? (প্রচন্ড রেগে বললো মেঘ)
  • সরি স্যার আসোলে ওর পায়ে খুব ব্যাথা করছিলো শ্রাবন আর আকাশ দুজনে মিলে ওকে হসপিটালে ডক্টর দেখিয়ে বাসায় দিয়ে আসে।
  • আপনি এখন আসতে পারেন। (রেগে)
  • বাট স্যার।
  • । আই সেইড লিভ নাও। (জোড়ে চিৎকার করে বললো মেঘ)
    মেঘের ধমক শুনে ঐশী আর এক মুহূর্ত না দারিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায় আর এদিকে মেঘ ফারহার কেবিনের সিসি ফুটেজ দেখলো শ্রাবন ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছে আর এটা দেখে মেঘের রাগে কপালের রগ ফুলে উঠলো চোখ থেকে মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে।
  • হ্যালো দোস্ত একটা মাইন্ডব্লোইং খবর আছে। (ফারদিন)
  • এতো এক্সসাইটিং না হয়ে বলবি কি খবর?
  • ব্রোর সাথে কথা বলে প্যারিসে যাওয়া টা কিছুদিনের জন্য পোসপন করেছি এখন আমি আমার মনের কথা ওকে জানাবো আমার আমার সব টুকু ভালোবাসা দিয়ে জরিয়ে রাখবো ওকে আমি।
  • থাম থাম আমি রাতে আসছি তখন সবটা শুনবো এখন রাখছি বাবা কে হসপিটালে ডক্টর দেখাতে নিয়ে এসেছি।
  • ওকে ওকে ফাইন বাট early আসবি নয় তো তোর নাক ফাটিয়ে ঢোল বানিয়ে দিবো। রাখছি
  • ফারদিনের ফোনটা কেটে সস্থির নিশ্বাস ফেললো জনি।
  • আপনি এতোদিন পর কি মনে করে পেশেন্ট তো সুস্থ হয়ে গিয়েছিলো তাহলে আপনি এখন এখানে মিস্টার জনি? (ডক্টর)
  • ডক্টর পেশেন্ট আসতে আসতে আবার ভায়োলেন্ট হয়ে যাচ্ছে।
  • দেখুন এধরনের পেশেন্টদের যেটা চায় সেটা দিতে হবে তাহলে আর ভায়োলেন্ট হবে না আর তার সাথে সাথে মেডিসিন রেগুলার কন্টিনিউ করতে হবে।
  • ডক্টর এই ধরনের পেশেন্ট যদি আবার কাউকে ভালোবাসে বিয়ে করতে চায় বিয়ের পর কি ওর এই সাইকোনেস টা কি কমে যাবে?
  • দেখুন মিস্টার জনি এই ধরনের পেশেন্ট যখন কাউকে ভালোবাসে তখন পাগলের মতো ভালোবাসে আর সেটা এক মুহূর্তে ও হতে পারে তাতে কোন সন্ধেহ নেই।
  • এই রকম পরিস্তিতে করনিও কি?
  • দেখুন একটাই কথা সাজেস্ট করবো মেয়েটি যদি পেশেন্টর অবস্তা যেনে সাহায্য করে তাহলে এই সমস্যা থেকে রিকভারি করা সম্ভব আর যদি তা না হয় তাহলে পেশেন্ট আগের মতো সাইকো হয়ে যেতে পারে।
  • ওকে ডক্টর থ্যান্কস এতো টা সময় দেওয়ার জন্য।
  • নো ইটস ওকে মিস্টার জনি এটা আমার দ্বায়িত্বে ভিতর পরে।

পর্ব ৯

  • আম্মু ও আম্মু শুনতাছো। উফফ মেজাজ টা কি যে খারাপ হচ্ছে বলে বুঝাতে পারবো না এই সব হয়েছে ঐ বদ রাক্ষস টার জন্য কি দরকার ছিলো আমার কেবিনে আসার হু আর এ দিকে খিদেতে পেটের ভিতর ইদুর বিড়াল ছোটাছুটি করছে আর বেশিক্ষন এভাবে থাকলে শিওর আমি মরে যাবো।
    ফারহা মচকে যাওয়া পা নিয়ে বিছানা থেকে নামতেই পরে যেতে নেয় ঠিক তখনি ফারিয়া ধরে ফেলে।
  • কিরে আপু এই ভাঙ্গা পা নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস দেখলি তো আমি না থাকলে এতোক্ষনে বাকি পাটা ও ভেঙ্গে ফেলতিস তখন কি হতো।
  • এই তুই চুপ থাকবি আমি বাচছি না আমার খিদের জালায় আর এনি আসছে আমাকে জ্ঞান দিতে।
  • দেখ আপু আমাকে বকা দিবি না একদম নিজে তো পা ভেঙ্গে পরে আছিস আর আমি কতো কষ্ট করে তোর জন্য বিরয়ানি রান্না করলাম তার কিছু না।
  • তুই দিনকে দিন না খুব বোকা হয়ে যাচ্ছিস ফারিয়া তুই রান্না করেছিস তা আমাকে খেতে না দিকে এখানে বক বক করছিস যা বের হয়ে যা রুম থেকে জীবনটা আমার অতিষ্ঠ হয়ে গেলো অফিসে বদ রাক্ষস আর বাড়িতে তুই যা বেরিয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে
  • তোর খাবার টা তো খেয়ে নে। (ভয়ে ভয়ে)
  • খাবোনা খিদে নেই আমার যা এখান থেকে। (চিৎকার করে)
    ফারিহা অবাক হয়ে যায় ফারহার এমন ব্যবহারে ফারহা এমন ব্যবহার কখনো করেনি ওর সাথে তাই ছলছল চোখ নিয়ে রুম থেকে বার হয়ে রাজিয়া বেগমের সামনে পরে যায় ফারিহা।
  • কি হয়েছে ফারিহা তোর চোখে পানি কেনো।
  • কই আম্মু চোখে কি যেনো পরেছে বুঝতে পারছি না তাই হয়তো।
  • তাই হয়তো কি হুম ফারহা কিছু কি বলেছে তোকে সত্যি করে বল।
  • নাহ আমাকে কি বলবে কিছু বলে নি তো।
  • আমি গোসল করতে ছিলাম তাই ফারহা কাছে আসতে পারি নি তুই তো খাবার নিয়ে গিয়েছিলে তা ফিরে আসলি কেনো?
  • আম্মু ওর মাথা ব্যথা করছে তাই বললো পরে খাবে। (মিথ্যে বললাম নয়তো আপু কে বকা দিবে)
  • আচ্ছা প্লেটটা আমাকে দিয়ে তুই তোর রুমে যেয়ে পড়তে বস।
    ফারিহা খাবারের প্লেট টা রাজিয়া বেগম কে দিয়ে রুমে চলে গেলো আর রাজিয়া বেগম খাবার নিয়ে ফারহার রুমের দিকে চলে গেলো।
  • জন মেডেসিন গুলো নিয়ে এসেছিস?
  • হা মেঘ তবে তুই এতো তারাতারি অফিস থেকে বাড়ি চলে এলি?
  • জন ফালতু কথা রেখে যে কাজ গুলো দিয়েছি সে গুলো কর?
  • কিন্তু মেঘ এতো তারাতারি করাটা কি ঠিক হবে। নাহ মানে ভাবি কি এটা একসেপ্ট করতে পারবে?
  • ইউ নো ওয়াট জন এই মেঘ চৌধুরি কারোর একসেপ্ট করার আশায় বসে থাকে না চাইলেও একসেপ্ট করতে হবে আর না চাইলেও একসেপ্ট করতে হবে মাইন্ড ইট।
  • ওকে তাহলে কবে কাজ টা শেরে ফেলতে চাস?
  • নেক্সট উইক। আই থিং ততোদিনে ফারহা সুস্থ হয়ে যাবে। আর একটা কথা ফারদিনের উপর করা নজর রাখ ওর প্রত্যেকটা পদক্ষেপ জেনো আমার নখদর্পণে করা থাকে।
  • ফারহা তোর কি হয়েছে বলবি আমাকে। (রাজিয়া বেগম)
  • আমার কি হবে আম্মু আমি একদম ঠিক আছি
    জানালার দিকে তাকিয়ে বললো ফারহা।
  • তাহলে এই কথা টা আমার চোখে চোখ রেখে বল দেখ আমি জানি তুই ঠিক নেই এরকম অনেকবার তোর পা মচকে গেছে কেটে গেছে কিন্তু এতোটা রুড বিহেব তুই ফারিহার সাথে করিস নি তাহলে আজ কি হলো তোর এটা ভাবিস না যে ফারিহা নালিশ করেছে আমার কাছে ওর কাছে জানতে চাইলে বলে চোখে কি জেনো একটা পরেছে কিন্তু মায়ের চোখকে কিকিছুই লুকানো যায় না তোর ব্যবহারে ফারিহা খুব কষ্ট পেয়েছে।
  • এতোক্ষন আম্মুর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলাম এখন সত্যি মনে হচ্ছে আমি ভুল করেছি এমনটা আমার করা ঠিক হয়নি রাক্ষসটার রাগ সবটা ওর উপর দেখিয়েছি নাহ ওকে সরি বলতে হবে। আম্মু ফারিহা কে একটু রুমে ডেকে দিবে প্লিজ?
  • হুম তার আগে বল তোর কি হয়েছে?
  • নাহ আজ আম্মুকে সবটা বলবো আর জানতে চাইবো এতে আমার ভুল কোথায়।
  • কি হলো বলবি নাকি আমি চলে যাবো ওহ তার আগে তোকে একটা কথা বলতে ভুলে গেছি তোর একটা বিয়ের সমন্ধ এসেছে ছেলে নাম করা বিজনেস মান বাবা মা নেই শুধু দুই ভাই।
  • কিহ বলছো আম্মু এখনি বিয়ে আর একটু সময় দিতা।
  • দেখ ফারহা ছেলে ভালো আর ঝামলাবিহিন পরিবার এর থেকে বেশি আর কি চাস।
  • তোমার কথা শুনে মনে হলো তারা খুব রিচ ফ্যামেলি কিন্তু আম্মু আমরা তো তাদের সাথে সমানে সমানে পেরে উঠবে না তাদের তো অনেক চাহিদা থাকতে পারে?
  • আমার সাথে ছেলের বন্ধুর কথা হয়েছে তারা কিচ্ছু চায় না তোর বাবা ছেলে বিষয়ে খোজ খবর নিয়েছে ছেলে একে বারে মাশাআল্লাহ খুব ভালো চরিএের দিক থেকেও ভালো কোন দোষ নেই।
  • দেখো আম্মু আমি কখন তোমাদের মতের অমত করিনি আর আজ ও করবো না তুমি তাদের হা বলে দেও।
  • আলহামদুল্লিলাহ আমার সোনা মেয়ে যা কালই ছেলের সাথে দেখা করে আয় আর এই নে ছেলের নাম্বার আমি ফারিহা কে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
    রাজিয়া বেগম যেতে নিলে ফারহা রাজিয়া বেগম কে দারাতে বলে।
  • আবার কি হলো কিছু কি বলবি?
  • আম্মু ছেলে কে বলে দেয় একে বারে বিয়ের দিন দেখে নিবো তার আগে আমি ওনার সাথে দেখা করতে চাই না।
  • ভেবে বলছিস তো তুই যাতে এর পর আমাকে কোন প্রকার দোষ দিবি না?
  • হুম তুমি ফারিহা কে পাঠিয়ে দেও। যাক একবার বিয়েটা হয়ে গেলে এই রাক্ষসটার হাত থেকে আমি বেচেঁ যাই ইসস এখনি আম্মুকে রাক্ষসটার কথা বলে দিতাম ভাগ্যিস বিয়ের কথা ওঠায় আর বলে ওঠা হয়নি।
    এই সব কথা বলতে বলতে ফারিহা রুমে নক করে।
  • আপু আসবো।
  • ড্রামা না করে রুমে আয়।
  • এতো শাড়ি কার জন্য ফারদিন? (অবাক হয়ে)
  • আবে সালা তোর ভাবির জন্য শাড়ি গুলো আর কার জন্য হবে।
  • ফারদিন এখন কিন্তু তুই বাড়াবাড়ি করছিস এখন পর্যন্ত তুই ফারহা কে প্রপোস করিস নি আর প্রপোস করার পর ও এক্সসেপ্ট করবে কিনা তাও শিওর না তাহলে।
    জনির কথা শুনে ফারদিন চুপ হয়ে বেডে বসে পরে এটা দেখে জনি ফারদিনের কাছে গিয়ে বসে কাধে হাত রাখতেই ফারদিন হঠাৎই জনি গলা চেপে ধরে।
  • কিহ বললি তুই ফারহা আমাকে এক্সসপ্ট করবে না এটা বলার সাহস তোর হলো কি করে। (গলা চেপে ধরে)
  • কি করছিস কি ফা র দিন ছাড় আমাকে লা গছে আমার পাগল হয়ে গেলি নাকি ছাড় লাগছে আমার। (জনি)
    হঠাৎ করেই ফারদিন জনির গলা ছেড়ে দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় জনি ছাড় পেতেই বেডের পাশে পানির বোতল নিয়ে পানি খেয়ে নিয়ে সস্থির নিঃশ্বাস ছাড়লো
  • আবার ও আজ ফারদিন আগের মতো করলো এটা ডক্টর কে জানাতে হবে।
    জনি ফারদিনের পায়ের শু খুলে দিয়ে বেডে ভালো করে শুইয়ে দিয়ে তারপর ফোন নিয়ে ডক্টক কে।

পর্ব ১০

  • আবার ও আজ ফারদিন আগের মতো করলো এটা ডক্টর কে জানাতে হবে।

জনি ফারদিনের পায়ের শু খুলে দিয়ে বেডে ভালো করে শুইয়ে দিয়ে তারপর ফোন নিয়ে ডক্টক কে কল দিলো জনি।

  • হ্যালো ডক্টর আমি জনি বলছি আপনার পেশেন্ট ফারদিন চৌধুরির বন্ধু। (জনি)
  • ওহ ইয়েস ইয়েস আজ এসেছিলেন আপনি। বলুন কি দরকারে কল করেছেন? ।
  • ডক্টর ফারদিন হঠাৎ করে সেন্সলেস হয়ে গেছে।
  • তার আগে কি কোন ভাবে হাইপার হয়েছিলো কি? (ডক্টর)
  • ইয়েস ডক্টর।
  • একটা কাজ করুন ওনার চোখে মুখে পানির ছিটে দিয়ে দেখুন জ্ঞান ফিরে আসবে তারপর মেডেসিন গুলো খাইয়ে দিন ওহ আর একটা কথা দেখবেন এরকম যেনো বার বার হাইপার না হয় তাহলে কিন্তু পরে বিপদ হতে পারে আমি বলতে চাইছি ওনি সম্পূন পাগল ও হয়ে যেতে পারে সো বি কেয়ার ফুল। (ডক্টর)
  • ওকে ডক্টর এর পর থেকে আরও ভালোভাবে খেয়াল রাখবো।

জনি ডক্টরের সাথে কথা বলা শেষ করে ফারদিনের চোখে মুখে পানির ছিটে দিতে ফারদিনের জ্ঞান ফিরে আসে জনি মেডেসিন গুলো নিয়ে ফারদিন কে খাইয়ে দেয়।

  • দোস্ত তুই এখন রেস্ট কর আমি পাশে আছি আজ রাতে আর বাড়ি ফিরবো না। (জনি)
  • সরি দোস্ত আ’ম রেইলি সরি আমাকে ক্ষমা করে দিস।

বলতে বলতে ফারদিন ঘুমিয়ে পরলো ফারদিনের মেডিসিনের ভিতর হাই পাওয়ারের ঘুমের মেডিসিন থাকায় অল্প সময়ের ভিতর ফারদিন ঘুমিয়ে পরে আর জনি ফারদিনের পাশে বসে বসে ভাবতে থাকে ফারহা কে কি করে বিষয় টা জানিয়ে বিয়ের জন্য রাজি করবে।

  • বাহ আমার বোনটার হাতে তো জাদু আছে। (বিরয়ানি খেতে খেতে বললো ফারহা)
  • হয়েছে আর হাওয়া দিতে হবে না তোর খেয়ে আমাকে উদ্দার কর। (ফারিহা)
  • সরি বনু (কান ধরে বললো ফারহা)

ফারহার কান ধরা দেখে ফারিহা ফিক করে হেসে দিয়ে ফারহার গলা জরিয়ে আদুরে গলায় বললো।

  • আপু আমার ল্যাপটপ টা কবে কিনে দিবি?
    ফারিহার কথা শুনে ফারহার মুখের হাসি উধাও হয়ে গেলো ফারহা ভাবতে লাগলো মেঘের কথা কাল অফিসে গেলে কি যে অপেক্ষা করছে ওর জন্য এটা ভেবেই ফারহার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
  • আপু ও আপু কি হলো কি ভাবছিস তুই? (ফারিহা)
    ফারিহার কথা শুনে ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে ফারহা।
  • নাহ কিছু ভাবছি না আমি তো আগেই তোকে বললাম তোর বার্থডে তে তোর গিফট পেয়ে যাবি।

দু বোন খেতে খেতে গল্প করতে থাকে হঠাৎ করেই কলিং বেলের শব্দ পেয়ে বাবা এসেছে ভেবে ফারিহা দৌড়ে যায় দরজা খুলতে কিন্তু দরজা খুলে কাউকে দেখতে পায় না ফারিহা কিন্তু দরজার সামনে একটা বক্স দেখতে পেয়ে ফারিহা বক্স টা ভিতরে ফারহার নিয়ে আসে ফারহা বক্স টা দেখে খুব অবাক হয় কারন এমন কোন ফ্রেন্ড নেই ফারহার যে এমন করে পার্সেল পাঠাবে ফারিহা উত্তেজিত হয়ে বক্সটা খুলে হা হয়ে তাকিয়ে আছে ফারহা ফারিহার কান্ড দেখে হেসে বিছানায় লুটুপুটি খাচ্ছে আর ফারিহা কপাল কুচকে ফারহার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।

  • আপু এটা কোন গিফট হলো পুরো বক্সটায় মেডেসিন ভরা পেইন কিলার। নাপা এক্সট্রা আর কতো কি।
  • গিফট তো বুজলাম বাট কে দিলো বক্স টা ভালো করে দেখে নিলাম কোথাও কোন নাম দেখতে পেলাম না তবে বক্সটার ভিতর একটা চিরকুট দেখতে পেলাম আমি চিরকুট টা নিতে জাবো ঠিক তখনি ফারিহা ছো মেরে চিরকুট টা নিয়ে নিলো।
  • ফারিহা কি করছিস কি আমাকে দে।
  • ওয়েট ওয়েট আগে আমি দেখবো এতো কেয়ারিং লোকটার নাম কি।
    ফারিহা চিরকুট খুলে দেখে বড় করে M লেখা আর কোন ওয়ার্ড লেখা নেই বিষয় টা ফারিহা না বুজতে পেরে মাথা চুলকাতে থাকে সেই সুযোগে ফারহা ফারিহার হাত থেকে কাগজ টা নিয়ে নেয়। ফারহা নিজে ও অবাক হয় M লেখা দেখে কিন্তু পরো নাম না থাকায় ফারহা বুজতে পারে নি এটা কার কাজ।
  • ফারিহা অনেক হয়েছে এখন তুই এই সব নিয়ে গুছিয়ে রেখে পরতে বস আমি এখন ঘুমবো।
  • আপু তোর মাথা ঠিক আছে তুই এখন ঘুমাবি মানে? এই না তুই ঘুম থেকে উঠলি? এতো ঘুমাতে কি করে পারিস তুই বল তো?
  • পেচাল না দিয়ে লাইট অফ করে যা তো। (ফারহা)
  • হু দেখিস তোর এই ঘুমের সব থেকে বড় শএু হবে তোর বর দেখে নিস।
    কথা টা বলেই ফারিহা দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ফারহা রেগে টেডিবিয়ার টা জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
  • মামুনি ওঠো তোমাকে তৈরি হতে হবে। (রাজিয়া বেগম)
    রাজিয়া বেগমের কথা শুনে ফারহা উঠে বসে কিন্তু ফারহা বুঝে উঠতে পারছে না কেনো তাকে রেডি হতে হবে ফারহা কে ঠেলে ঠুলে রাজিয়া বেগম ওয়াসরুমে পাঠিয়ে দেয় ফ্রেস হতে ফারহা ঘুমের ঘোরে কোন রকম মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে বেরিয়ে আসে তারপর শুরু হয় ফারিহার অর্তাচার (I mean সাজানো) ফারহা ঘুম ঘুম চোখে ফারিহা কে জ্বিগাসা করল।
  • ফারিহা কয়টা বাজে রে এখন।
  • বইন তুই আর কথা কইস না তুই ঘুমাচ্ছিস ঘুমা আমাকে সাজাতে দে।
    ফারহা আর কথা না বলে বেডের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো ফারিহা সে সুযোগে ফারহা কে সুন্দর করে বউয়ের মতো সাজিয়ে ফেল্লো।
    *** রাত ১১:৫০।
  • আপু এই আপু ওঠ না আপু।
  • উফফ কানের কাছে চিল্লানি না দিয়ে আমাকে ঘুমাতে দে। (ফারহা)
  • আচ্ছা আমি যাচ্ছি তার আগে এই কাগজ টায় সই করে দে আপপপপপু
  • উফ দে কোথায় সাইন করতে হবে (চোখ বন্ধ করে)

ফারিহা কলমটা ফারহার হাতে দিয়ে পেপারস টা হাতে দিয়ে সাইন করতে বলে ফারহা ঘুম ঘুম চোখে পেপারস টা না পরে সাইন করে আবার ঘুমিয়ে পরে।

  • আম্মু এই নেও (রেজিস্ট্রি পেপারস টা হাতে দিয়ে)
  • এতো সহজে সাইন করে করে দিলো?
    রাজিয়া বেগমের কথা শুনে ফারিহা হাসতে লাগলো এতো জোড়ে হাসছে যে পাসের রুম থেকে জন এসে জিগাসা।
  • আন্টি এনিথিং রং? (জন)

জনের কথা শুনে ফারিহা হাসি বন্ধ করে নিজের মুখ বন্ধ করে ফেল্লো।

  • না না বাবা কিছু না এই নেও ফারহা সাইন করে দিয়েছে এখন জামাই বাবার সাইন করা বাকি আছে। (রাজিয়া বেগম)
  • হ্যাঁ আন্টি কিন্তু একটা কথা আমার ফ্রেন্ড আজই ভাবি কে আমাদের সাথে নিয়ে যেতে চায়। (জন)
  • কিন্তু ভাইয়া আপু তো এখন অসুস্থ আর সব থেকে বড় কথা আপু এখন বুজতে পারে নি যে ওর বিয়ে হয়ে গেছে।
    ফারিহার কথা শুনে জন থতমত খেয়ে ফারিহার দিকে তাকিয়ে রইল ফারিহা এরকম তাকানো দেখে বুজতে পারলো ওর কথা গুলো জনের মাথার উপর দিয়ে গেলো তাই ফারিয়া এবার একটু নরে চরে দারিয়ে বললো।
  • ভাইয়া আমার কথার মানে হয়তো আপনি বুজতে পারেন নি তাই তো?
  • হ্যাঁ মানে না।
  • বুজতে পেরেছি তাহলে শুনুন আমার আপু হচ্ছে ঘুম কুমারি যখন তখন ঘুমিয়ে পরতে পারে আর একবার ঘুমিয়ে পরলে দুনিয়া যদি উলটেও যায় তাহলে উঠবে না।
  • তাহলে সাইন বা করল কি করে আর আন্টি বললো ভাবি রেডি আছে?
  • আসলে ভাইয়া আপু তো বসে বসে ঘুমাচ্ছিলো তাই আমি আপু কে রেডি করে দিলাম আর রইল সাইন আপুর হাতে কলম টা দিলে সাইন করার জায়গায় কলম ধরিয়ে দিয়ে সাইন করতে বলায় না দেখেই সাইন করে দিয়েছে।
  • ওহ মাই গড ভাবি এতোটাই ঘুম কাতুরে যে তার বিয়ে হয়ে গেলো আর সেই জানে না।
    জনের কথা শুনে রাজিয়া বেগম ফারিহা হাসতে শুরু করল জন হেসে পেপারস টা নিয়ে মেঘের কাছে গিয়ে মেঘের সাইন টা নিয়ে নিলো।
  • দোস্ট কাজ টা কি ঠিক করলি? (জন)

মেঘ জনের কথার কোন উওর না দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্তা করতে বললো কিন্তু ফারহার বাবা আজ রাতে এখানে থেকে যেতে অনুরোধ করায় জন মেঘ এখানে রাতে থেকে গেলো জন কে গেস্ট রুমে থাকতে দেওয়া হলো আর মেঘ কে ফারহার রুমে।

মেঘ রুমে ঢুকতেই দেখে ফারহা বেডের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আজ যেনো মেঘের চোখ সরছে না ফারহার উপর থেকে মেঘের দেওয়া লাল বেনারসি শাড়ি টায় যেনো ফারহার রুপটা উপচে পরছে মেঘ কখন ভাবে নি ফারহা কে এতো সহজে হাতের মুঠোয় এসে যাবে। মেঘ ফারহা কে বেডে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে সরে যেতে নিলে ফারহা ঘুমের ঘোরে মেঘের হাত টা চেপে ধরে মেঘ হাত ছাড়ানোর চেষ্টা না করে ফারহা কে বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।


পর্ব ১১

মেঘ রুমে ঢুকতেই দেখে ফারহা বেডের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আজ যেনো মেঘের চোখ সরছে না ফারহার উপর থেকে মেঘের দেওয়া লাল বেনারসি শাড়ি টায় যেনো ফারহার রুপটা উপচে পরছে মেঘ কখন ভাবে নি ফারহা কে এতো সহজে হাতের মুঠোয় এসে যাবে। মেঘ ফারহা কে বেডে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে সরে যেতে নিলে ফারহা ঘুমের ঘোরে মেঘের হাত টা চেপে ধরে মেঘ হাত ছাড়ানোর চেষ্টা না করে ফারহা কে বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।

পুরো রাত মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিয়ে ভোর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে ৷ সকাল সকাল ফারহার ঘুম ভেঙে যায় ৷ ফারহা উঠতে গেলে খেয়াল করে একটা ভারি হাত ওর কোমড় জরিয়ে আছে ৷ ফারহা পাশ ফিরে তাকিয়ে মেঘ কে দেখে ভয়ে ফারহা বিকট চিৎকার দিয়ে ওঠে ৷ ফারহার চিৎকার শুনে মেঘ ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠে ফারহার মুখ চেপে ধরে।
। হুয়াই আর ইউ শাউটিং জান? এই ভোর বেলা চিৎকার করে আমাকে ঘুম থেকে না তুললে হতো না সোনা?
। এই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাটা আমার রুমে কি করছে আর আমার পাশে কেন ঘুমিয়ে আছে ৷ ওহ মাই খাট এই খারুছ বেটা আমাকে খুন করতে আসে নি তো?(মনে মনে বলতে লাগলো ফারহা)
ফারহা মেঘের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য মোড়ামুড়ি করতে লাগলো ৷ মেঘ ফারহার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷ এলোমেলো চুল গুলো কপাল ছেয়ে আছে ৷ মেঘ ফারহার চোখ দুটোর দিকে ঘোড় নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷

ফারহা কি করবে বুজতে না পেরে মেঘের হাতে জোড়ে চিমটি কাটে ৷ মেঘ ব্যাথা পেয়ে হাত সরিয়ে নিতে ফারহা ফারহা এক লাফে বিছানা থেকে লাফ দিয়ে নিচে নেমে এসে কোমড়ে হাত দিয়ে দারিয়ে বলতে লাগলো। আপনার সাহস তো দেখছি খুব বেশি মিস্টার চৌধুরী ৷ একজন কুমারী মেয়ে রুমে এভাবে যে আসতে নেই এটা কি আপনি জানেন না ওহ জানবেন কি করে আপনি সে শিক্ষা পাননি ৷ ক্যারেক্টারলেস লোক ৷ এখুনি বেড়িয়ে যান আমার রুম থেকে ৷ আর একটা কথা আমি আপনার অফিসে আর চাকড়ি করবো না ৷ এখন আপনি আসতে পারেন৷।

ফারহা রাগের মাথায় কি কি বলেছে সেটা সে নিজেও জানে না ৷ মুখে যা এসেছে তাই বলে দিয়েছে ৷ ফারহা এতোক্ষন মেঘের মুখের দিকে ভালো করে খেয়াল না করলেও মেঘের রক্ত চক্ষু ফারহার চোখ এরায়নি ৷ মেঘ ফারহার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বিছানার উপর ফেলে দিয়ে দু হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো। আমি ক্যারেক্টারলেস তাই না? এবার আমি তোমার সাথে ঠিক কি কি করি যাস্ট ওয়েট এন্ড সি।

ফারহা বুজতে পারলো মেঘ প্রচন্ড রেগে আছে ৷ এখুনি মেঘ কে শান্ত করতে হবে নাহলে ওর সাথে বাজে কিছু করে দিতে পারে৷ ফারহা একটু দম নিয়ে মেঘ কে বলতে লাগলো। স্যরি স্যার। ইয়ে মানে আপনি আমার রুমে কি করে এলেন স্যার ৷ আমি আসলে ভয় পেয়ে গেছিলাম। ফারহার এলোমেলো কথা শুনে মেঘের রাগ কিছুটা কমে আসে কারন ফারহা এখনো জানে না ওর সাথে গতকাল রাতে ওর বিয়ে হয়েছে ৷ মেঘ ফারহার গলায় মুখ গুজে দিয়ে ধির গলায় বলে উঠলো। বউয়ের রুমে যে বর থাকবে এটাই সাভাবিক নয় বউ।

মেঘের মুখে বউ ডাক টা শুনে ফারহার যেন সারা শরীল শিউরে উঠছে ৷ ফারহা পুরো শরীল কাপছে মেঘের কথা শুনে ৷ ফারহার যতোদুর মনে পরছে গতকাল রাতে ঘুমানোর পর কিছুক্ষন আগে ঘুম ভাঙলো তাহলে ওর বিয়েটা কখন হলো? ফারহার ভাবনার ছেদ ঘটে মেঘে ঠোটের স্পর্শে ৷
। এ, এটা আ আপনি কি করলেন?তুতলিয়ে বললো ফারহা।
। কি করেছি আমি?না জানার ভান করে বললো মেঘ

। এই যে আপনি এই মাত্র আমাকে। বাকিটা বলতে গিয়ে থেমে যায় ফারহা। লজ্জায় মুখটা লাল নীল বর্ণ ধারন করেছে ৷ মেঘের বেশ ভালো লাগছে তার বউয়ের লজ্জা মাখা মুখটা দেখে। ফারহা কে আর একটু লজ্জা দেওয়ার জন্য মেঘ বলে উঠলো। কি হলো বলো কি করেছি আমি। ঠোটের কোনে দুষ্টুমি হাসি নিয়ে বললো।
। এই রে আমি লজ্জা পাচ্ছি কেন আমাকে জানতে হবে এই রাক্ষস এখানে কি করছে৷।
। স্যার আপনি এখানে কেন আর কে আপনার বউ?
। তুমি আমার বউ জান। (মেঘ)

। কিহ এই এই উঠুন আমার উপর থেকে আগে তারপর বিদায় হোন আমার রুম থেকে ৷ আল্লাহ সকাল সকাল আমাকে পাগল সাজাতে এসেছে হু।
। বউ একবার নিজেকে ভালো করে দেখো তো। (মেঘ)
মেঘ ফারহার উপর থেকে উঠে বললো। ফারহা উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দারিয়ে নিজেকে দেখে আতকে উঠে।
। আ, আমি বউ বেশে কেন? কে সাজালো আমাকে?

মেঘ ফারহা কে পিছুন থেকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলো। তোমার ছোট বোন তোমাকে সাজিয়েছে উম যতোদুর জন আমাকে বলেছে ফারিহা তোমাকে যখন সাজিয়েছিল তখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলে৷
। আর বিয়েটা?আতঙ্কিত হয়ে জানতে চাইলো ফারহা। মেঘ ফারহার আতঙ্ক মুখটা দেখে ধির গলায় বলে উঠলো। বিয়ের রেজিট্রি পেপারে তুমি ঘুমের ঘোড়ে সাইন করে দিয়েছো৷

মেঘের কথা শুনে ফারহার রাগে পুরো শরীল জ্বলে উঠলো হঠাৎ মেঘ কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে রাগি গলায় বলে উঠলো। আমি এই বিয়ে মানি না ৷ মানি না আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে ৷ আপনারা সবাই আমাকে ঠকিয়েছেন৷ আপনাকে কখনো- ই আমার স্বামী হিসেবে মানবো না আমি।
মেঘের প্রচন্ড রাগ লাগছে তারপর ও ফারহার উপর রাগ দেখাবে না বিধায় ধুপ ধাপ হেটে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল ৷ এদিকে ফারহার প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে এটা ভেবে নিজের বাবা মা বোন এভাবে ঠকাতে পারলো ওকে ৷ ফারহা রাগে শরীল থেকে গয়না গুলো খুলে ছুড়ে ফেলতে লাগলো ৷

মেঘ ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে দেখে ফারহার কান্ড ৷ ফারহা হাতের বালা খুলতে গেলে মেঘ ফারহার হাতটা চেপে ধরে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফারহার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো। হাউ ডেয়ার ইউ। তোমাকে কে সাহস দিয়েছে গয়না গুলোর খোলার হুম।
। এখন গয়না গুলো খুলতেও কি আপনার পারমিশন লাগবে মিস্টার চৌধুরী?রাগি গলায় বললো ফারহা
। ইয়েস অফকোর্স বিকজ ইউ আর মাই ওয়াইফ ৷ তোমাকে প্রত্যেকটা কাজ আমার পারর্মিশন নিয়ে করতে হবে গট ইট।

ফারহা কিছুতেই রাগ টা দমন করতে পারছে না ইচ্ছে করছে এখুনি এই মেঘ নামের রাক্ষস টাকে খুন করতে ৷
মেঘ ফ্লোর থেকে গয়না গুলো তুলে এক এক করে ফারহার কানে গলায় হাতে পরিয়ে দিয়ে বলে উঠলো। পাঁচ মিনিটের ভিতর ফ্রেস হয়ে আসবে ৷ নাউ গো।
ফারহা কিছু না বলে দ্রুত ওয়াসরুমে ঢুকে দরজা শব্দ করে বন্ধ করে দিলো৷

ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে রাজিয়া বেগম মেয়ে জামাই এর জন্য নানা রকম খাবারের আয়োজন করছে ৷ রিয়াজুল রহমান বসে বসে তার স্ত্রীর কান্ড দেখছে ৷ কিন্তু মনে মনে ভিষন ভয় লাগছে রিয়াজুল রাহমানের ৷ তিনি তার মেয়ে কে খুব ভালো করে চিনে ফারহা যেমন ভালোর ভালো ঠিক রেগে গেলে ভিষন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে ৷ আর বিয়েটা পুরো ওর অজান্তে হয়েছে ৷ মেঘ যেভাবে ওকে বিয়ে করার জন্য অনুরোধ করেছে ৷

মেয়ে প্রতি মেঘের এমন ভালোবাসা দেখে না করতে পারলো না রিয়াজুল রহমান। রাজি হয়ে গেল বিয়ের জন্য কিন্তু ফারহা বিয়ে টা কি মেনে নিবে নাকি নিবে না এই ভাবনাই ভেবে যাচ্ছে রিয়াজুল রহমান ৷ হঠাৎ করে ফারহা হন্ত দন্ত হয়ে রুম থেকে বের হয়ে রিয়াজুল এর সামনে দারায় ফারহার পিছু পিছু মেঘ ও চলে আসে ৷ফারহা থমথমে মুখ নিয়ে রিয়াজুল রহমান কে প্রশ্ন করলো। কেন করলে বাবা?

ফারহার প্রশ্ন শুনে রাজিয়া বেগম আর রিয়াজুল রহমান দুজনে চুপ হয়ে যায় ৷ তারা দুজনে বুজতে পারছে তাদের মেয়ের মনের অবস্তা।
। মারে আমরা যা করেছি তোর ভালোর জন্য- ই করেছি বিশ্বাস কর।
ফারহা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো।


পর্ব ১১

হঠাৎ করে ফারহা হন্ত দন্ত হয়ে রুম থেকে বের হয়ে রিয়াজুল এর সামনে দারায় ফারহার পিছু পিছু মেঘ ও চলে আসে ৷ফারহা থমথমে মুখ নিয়ে রিয়াজুল রহমান কে প্রশ্ন করলো। কেন করলে বাবা?

ফারহার প্রশ্ন শুনে রাজিয়া বেগম আর রিয়াজুল রহমান দুজনে চুপ হয়ে যায় ৷ তারা দুজনে বুজতে পারছে তাদের মেয়ের মনের অবস্তা।
। মারে আমরা যা করেছি তোর ভালোর জন্য- ই করেছি বিশ্বাস কর।
ফারহা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে উঠলো। তাই আব্বু। আমার এতো ভালো যখন করতে গেলে তখন আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করোনি কেন?
ফারহার এমন রুড বিহেব দেখে মেঘ ফারহার হাত টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে উঠলো। ঠিক করে কথা বলো ফারহা উনি তোমার বাবা।

। ওহ রেইলি এখন আপনি আমাকে বলে দিবেন আমি আমার বাবার সাথে কি ভাবে কথা বলবো? ইউ নো ওয়াট মিস্টার চৌধুরী আপনার সাথে দেখা হবার পর থেকে আমার লাইফটা হেল হয়ে গেছে বুজতে পারছেন আপনি?
। ফারহা ভালো করে কথা বলো ভূলে যেও না মেঘ এখন তোমার হাসবেন্ট৷

। হু হাসবেন্ট মানি না ওনাকে হাসবেন্ড আমি ৷ আমি ডিভোর্সের ব্যাবস্তা করছি এনার সাথে আমি থাকতে পারবো না।
এতোক্ষন মেঘ ফারহার সব কথা সহ্য করলেও ডিভোর্সের কথাটা মেঘ সহ্য করতে পারলো না ৷ ফারহার মা রাজিয়া বেগম ফারহা কে সবটা বুঝিয়ে বলতে যাবে তার আগে মেঘ প্রচন্ড রেগে ফারহার হাত টেনে রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷

। হাউ ডেয়ার ইউ মিস্টার চৌধুরী। ফারহার কথা শেষ হতে মেঘ ফারহার হাত দুটো পিছুনে মুরে বলতে লাগলো
। হাউ ডেয়ার ইউ টু ফারহা? তোমার সাহস দেখে আমি যাস্ট স্পিচলেস ৷ সাহস কি করে ডিভোর্সের কথা বলার হ্যা। ।
। আমার ব্যাথা লাগছে হাত ছাড়ুন মিস্টার চৌধুরী। রাগে ফুসতে ফুসতে বললো ফারহা।

। নো ওয়ে জান তোমাকে তো শাস্তি পেতে- ই হবে ৷ এখুনি নিজের যাবতীয় জিনিস পত্র গুছিয়ে নেও আমরা এখুনি চৌধুরী ম্যানশনে যাবো৷।
। আমি কোথাও যাবো না আপনার সাথে।
। তুমি যাবে নাহলে তোমার পরিবারের জন্য খুব একটা ভালো হবে না৷

। কি চাইছেন আপনি। রাগে থম থমে মুখ নিয়ে জ্বিগাসা করলো ফারহা।
। তোমাকে। কথাটা বলে মেঘ দরজা খুলে বেরিয়ে সাথে সাথে রাজিয়া বেগম রুমে ঢুকে।
। ফারহা এটা কোন ধরনের অসভ্যতা হ্যা।

। তোমরা আমায় ঠকিয়েছো মা৷
। ফারহা আমরা কেউ তোমায় ঠকাইনি তোমাকে আগে জানানো হয়েছে ৷ তোমাকে ছবিও দেখতে বলা হয়েছিলো কিন্তু তুমি দেখোনি এটা কার দোষ ফারহা আমাদের নাকি তোমার?

। মানলাম আমার ভূল ছবি দেখা আমার উচিত ছিলো কিন্তু বিয়েটা? বিয়েটা নিয়ে কি বলবে মা?
। দেখো ফারহা যা হবার হয়ে গেছে এখন আর কোন কিছু পাল্টানো সম্ভব নয় ৷ তুমি জামাকাপড় গুছিয়ে নেও ৷ আসতে আসতে শুনলাম জামাই নাকি এখুনি বেরিয়ে যাবে৷
। আমি যাবো না কোথাও।

। জেদ করো না ফারহা ৷ ভূলে যেও না তুমি এখন বিবাহিত ৷ আর এ বাড়ির কিছুদিনের অতিথি মাত্র।
। মা। ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ফারহা তার মায়ের দিকে। ফারহার আড়ালে চোখের পানি মুছে নিলেন।
ফারহা আর কিছু না বলে কাবার্ড খুলে জামা কাপড় প্যাক করতে লাগলো।

। আমি জানি ফারহা আমার কথায় তুই অনেক কষ্ট পেয়েছিস কিন্তু তোকে আজ এই কথা গুলো না বললে তুই হয়তো জামাইর সাথে যেতে রাজি হতিস না ৷ বিশ্বাস কর ফারহা আমরা যা করেছি তোর ভালোর জন্য করেছি। মনে মনে কথা গুলো বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷

কিছুক্ষন পর মেঘ রুমে এসে দেখে ফারহার প্যাকিং করা শেষ৷ মেঘ বেশ অবাক হয় কিন্তু মুখে প্রকাশ করে না ৷
। রেডি তুমি?(মেঘ)
। হু।
। ওকে চলো।

ফারহা কোন কথা না বলে লাকেজ নিয়ে বের হতে নিলে মেঘ ফারহা কে থামিয়ে দিয়ে ফারহার হাত থেকে লাকেজ টা নিয়ে নেয়৷ ফারহা কোন টু শব্দ ছাড়াই রুম থেকে বের হয়ে কারোর সাথে কোন কথা না বলে সবার সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায় ৷ রাজিয়া বেগম বেশ বুজতে পারছেন যে ফারহা তখন ওনার কথায় কষ্ট পেয়েছে কিন্তু মেয়ের সুখের জন্য তিনি এই টুকু কষ্ট দিতে প্রস্তত৷

ফারহার বাবার মুখের দিকে মেঘ তাকিয়ে বুজতে পারলেন মনে মনে বেশ কষ্ট পেয়েছেন ৷ ফারহার বাবা মেঘের হাত দুটো ধরে কেঁদে দেয়। বাবা আমার মেয়ে টাকে দেখো ও ভিষন অভিমানিনী ৷ কষ্ট পেলেও মুখ ফুটে বলবে না বড্ড চাপা স্বভাবের।
। আপনি কোন চিন্তা করবেন না আঙ্কেল আমি ফারহার খেয়াল রাখবো৷

মেঘ ফারহার বাবা মার সাথে কথা বলে বেরিয়ে যায় ৷ ফারিহা ঘুম থাকায় ফারহার চলে যাওয়ার খবর জানতে পারে না ৷
। বাহ মহারানি দেখছি আগে গাড়িতে বসে আছে ৷ আচ্ছা হুট করে এতো পরিবতর্ন কি করে হলো? কোন ম্যাজিক হলো নাকি?মেঘ মনে মনে ভাবতে ভাবতে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো। এদিকে জন আগেই চৌধুরী ম্যানশনে চলে যায় ৷ ফারহার ওয়েকাম করার জন্য সব কিছুর আয়োজন করতে৷

ফারদিন খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে গার্ডেনে এসে এক্সসারসাইজ করতে লাগলো। কিন্তু হঠাৎ করে জন কে গাড়ি নিয়ে ঢুকতে দেখে জনের দিকে এগিয়ে যায় ফারদিন।
। হেই ব্রো এতো সকালে তুমি এখানে?(ফারদিন)

। এখন কথা বলার সময় নেই মেঘ কিছুক্ষনের মধ্যে তোমার ভাবি কে নিয়ে চৌধুরী ম্যানশনে চলে আসবে।
। মানে কি বলছো ব্রো ভাবি মানে? ভাইয়া বিয়ে করেছে? কখন কাকে ওহ মাই গড। আমাকে না জানিয়ে ভাইয়া বিয়ে করে ফেললো। লাস্ট কথাটা অভিমানি গলায় বললো ফারদিন।

। ফারদিন ভাই আমার এখন অভিমান করার সময় নয় ৷ ভাবি আজ প্রথম বার এবাড়িতে আসছে তার জন্য গ্রান্ড এন্ট্রির ব্যবস্থা করতে হবে তো নাকি?
। হ্যা তাই তো ভাইয়ের সাথে না হয় পরে রাগ অভিমান করে নিবো তার আগে ভাবি কে চৌধুরী ম্যানশনে গ্রান্ড এন্ট্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

বিশ মিনিটে পুরো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলে জন ফারদিন ৷ যেটা সারবেন্টদের দিয়ে করাতে পারতো সেটা নিজেরা করে নিয়েছে ৷ সারবেন্ট যাস্ট হ্যা করে দুজনে কাজ দেখে গেছে ৷ কিছুক্ষন পর গাড়ির হর্ন শুনে সারবেন্টরা হাতে ফুলের ট্রে নিয়ে দারিয়ে পরে। মেঘ গাড়ি থেকে নেমে ফারহা কে কোলে তুলে নেয় ৷

। কি করছেন কি পরে যাবো তো। প্লিজ আমাকে নামিয়ে দিন। (নরম স্বরে বললো ফারহা)
। আমার জীবন থাকতে তোমাকে পরে যেতে দিবো না জানপাখি ৷ যাস্ট রিল্যাক্স।

মেঘ ফারহা কে নিয়ে গট গট করে ভিতরে হেটে যেতে সবাই ফুল ছিটাতে লাগলো।
। ফারদিন তুমি আগে তোমার ভাই ভাবি কে বরন করে নেও।
। ওকে ব্রো।
মেঘ ফারহা কে দরজার কাছে দার করাতে ফারহা কে দেখে ফারদিনে পা দুটো যেন ওখানে ফ্রিজড হয়ে গেল ৷ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে।


পর্ব ১৩

মেঘ ফারহা কে দরজার কাছে দার করাতে ফারহা কে দেখে ফারদিনে পা দুটো যেন ওখানে ফ্রিজড হয়ে গেল ৷ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে। জনি আজ লেট করে ঘুম থেকে ওঠায় সব টা জানতে একটু লেট করে ফেলে কিন্তু যখনি সবটা জানতে পারলো ততোখনে দেরি হয়ে গেছে ৷ জনি ফারদিনের পাশে দারিয়ে ফারদিনের রিয়েকশন বোঝার চেষ্টা করছে ৷ আর ফারহা ফারদিন কে এখানে দেখে বেশ অবাক।

ফারদিন তোর ভাবি কে ওয়েলকাম করবি না? (মেঘ)
ভা..বি।
হুম সারপ্রাইজ টা কেমন দিলাম বল?

খুব ভালো ব্রো এতো ভালো যে আমার মুখের ভাষা হারিয়ে গেছে ট্রাস্ট মি। বলতে বলতে ফারদিনের চোখ দুটো ছল ছল করছে৷ জনি তার বেস্টফ্রেন্ড এর কষ্টটা ফিল করতে পারছে কিন্তু ফারদিন যে সব টা দেখে এতোটা শান্ত থাকবে এটা জনি কখনো ভাবেনি৷
তুই ঠিক আছিস ফারদিন?খুব আস্তে করে বললো ফারদিন কে।

ফারদিন কোন কথা না বলে দু মুঠো গোলাপের ফুলের পাপড়ি নিয়ে ফারহা দিকে ছিটিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো। ওয়েলকাম ভাবি।
মেঘ ফারহার হাত ধরে ভিতরে প্রবেশ করে সোফায় বসিয়ে দেয়৷ ফারদিন হঠাৎ আসছি বলে চলে যায়। ফারহা বুজতে পারছে না ফারদিনের এমন আচরনের কারন আর না মেঘ বুজতে পারলো তবে জনি ঠিকি বুজতে পারলো ফারদিনের কি হয়েছে৷

জনির চোখ মুখে ভয়ের আভাস দেখে ফারহাকে বেশ ভাবাচ্ছে কিন্তু ফারহা এখন এই বিষয় গুলো নিয়ে মটেও ভাবতে চাইছে না। বাবা মা আর মিস্টার চৌধুরীর দেওয়া ধোকাটা ফারহা মটেও ভূলতে পারছে না আর না পারছে তার মায়ের কথা গুলো ভূলতে।
। মেঘ ভাবিকে নিয়ে রুমে যা আমি ওখানে তোদের নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি। (জন)

। ওকে,মেঘ আচমকা ফারহা কে কোলে নিয়ে উপরে যেতে লাগলো। ফারদিন দরজার আড়াল থেকে নিজের ভাই ভাবি কে দেখছে ৷ ফারহার শরীলে মেঘের স্পর্শ ফারদিন মেনে নিতে পারছে না ৷ দরজা আটকে পাগলের মতো বিহেব করতে থাকে ৷ জনি ফারদিনের কাছে এসে ওর পাগলামি আটকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু মটেও আজ ফারদিনের শক্তির সাথে পেরে উঠছে না তাই বাধ্য হয়ে জনি ফারদিনের কাধে ইনজেকশন পুশ করে দেয় ৷ ধিরে ধিরে ফারদিন সেন্সলেস হয়ে যায় ৷
ওহ গড এখন কি হবে ফারদিন কে মনে হয় আর সামলাতে পারবো না ৷ মেঘ ভাই কে সবটা ক্লিয়ার করে জানাতে হবে ৷ স্যরি ফারদিন তোর ওয়াদা আমি রাখতে পারলাম না৷জনি ফারদিন কে বিছানায় ঠিক করে শুয়েই দিয়ে দরজা লক দিয়ে ফারদিনের পাশে বসে থাকে।

জন নিজে এসে মেঘ ফারহার জন্য খাবার নিয়ে আসে৷
মেঘ তোরা ফ্রেস হয়ে খেয়ে রেস্ট নে বাকি কথা পরে হবে।
। ওকে।

জন চলে যেতে মেঘ ফারহা কে বলে ওঠে। জানপাখি যাও ফ্রেস হয়ে আসো দেন এক সাথে খাবো।
আপনার ইচ্ছে হলে আপনি খেয়ে নিন আমাকে বিরক্ত করতে আসবেন না মিস্টার চৌধুরী। (ফারহা)
মেঘ বাকা হেসে ফারহার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। ফারহা মেঘ কে এগোতে দেখে ফারহা দ্রুত পিছুনে ফিরে বাইরের দিকে যেতে নিলে মেঘ ফারহার হাত হ্যাচকা টান দিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে।
। আমাকে ছাড়ুন মিস্টার চৌধুরী। রাগি গলায় বললো ফারহা।

। ছাড়বো তো তার আগে আমার জানপাখি কে নিজের হাতে ফ্রেস করিয়ে আনি তারপর না হয় ছাড়বো।
মেঘের কথা শুনে ফারহার দু- চোখ জোড়া কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম।
। ওয়াট আপনার মাথা ঠিক আছে কি সব বলছেন হ্যা।

। আমার মাথা ঠিক আছে এখন বলো তুমি নিজে ফ্রেস হয়ে আসবে নাকি আমি তোমাকে ফ্রেস করাতে বাথরুমে যাবো।
। নায়য়য়য়য়া আমি নিজে ফ্রেস হয়ে আসছি।
। দ্যাটস লাইক এ গুড গার্ড।

ফারহা মেঘের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আর এক মুহূর্ত না দারিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল ৷ ফারহা যেতে মেঘ হেসে ফেলে বির বির করে বলতে লাগলো।
। না চাইতেও জান তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি ৷ আমার প্রত্যেকটা নিশ্বাসে তোমার নাম। তোমার অস্তিত্ব খুজে পাই নিজেকে৷ আমি প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়, আমি জানি জানপাখি তুমি এখন আপসেট আছো তাই তুমি এমন টা ব্যবহার করছো ৷ তোমার মন ঠিক হয়ে গেলে তুমি আমার কাছে ফিরে আসবে ৷ ভালোবাসবে আমাকে। তোমার সবটা জুরে শুধু আমি থাকবো শুধু আমি।

মেঘের ভাবনার মাঝে দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে ফারহা আদভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে ৷ ফারহার মুখে বিন্দু বিন্দু পানি আদভেজা চুল সব মিলিয়ে মেঘ ঘোর নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে। ফারহা মিররের সামনে দারিয়ে চুল মুছতে থাকে ৷ মেঘ ফারহার পিছুন থেকে ফারহার কোমর জরিয়ে ধরে ভেজা চুলে মুখ গুজে দেয়৷ মেঘের স্পর্শে কেঁপে ওঠে ফারহা, কাপা কাপা গলায় মেঘ কে বলতে লাগলো। ক, কি করছেন মিস্টার চৌধুরী? ছাড়ুন আমাকে প্লিজ।

মেঘের কানে ফারহার কথা টা ঢুকেছে বলে ফারহার মনে হচ্ছে না ৷ কারন মেঘ এখনো ওভাবে ওকে জরিয়ে চুলে মুখ গুজে দারিয়ে আছে ৷ মেঘ হঠাৎ চুল গুলো কাধ থেকে সরিয়ে চুমু দিয়ে বসে ৷ ফারহার দু চোখে পানি টলমল করছে ৷

মিররের দিকে তাকাতে ফারহার চোখে পানি দেখতে পেয়ে ফারহা কে ছেড়ে দিয়ে হাটু গেড়ে ফারহার সামনে বসে পরে।
আই এম স্যরি জানপাখি। তুমি কাছে থাকলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না ৷ তোমাতে মিশে যেতে ইচ্ছে করে৷
এতো- ই যখন নিজেকে কে কন্ট্রোল করতে না পারেন তাহলে দুরে থাকুন আমার থেকে।
এটা তখনি সম্ভব যখন আমি আর এই পৃথিবীতে থাকবো না জান।

কথাটা শুনে ফারহার বুকের ভিতর ছ্যাৎ করে ওঠে কেন তা ফারহা নিজেও জানে না ৷ মেঘ কে এভাবে হাটু গেড়ে বসে থাকতে দেখে ফারহার কেন যেন খারাপ লাগছে কিন্তু তার নিজের পরিবারের সাথে মিলে এতো বড় ধোকা দেওয়া ফারহা ভূলতে পারছে না ৷
। আপনার এই সব নাটকে আমি ভূলছি না মিস্টার চৌধুরী সো এই সব সস্তা নাটক আমার সামনে করা বন্ধ করেন ৷ আপনার এই সস্তা নাটকে এই ফারহা ভূলবে না। ফারহা তোয়ালে টা বেলকনিতে মেলে দিয়ে সোফায় বসে পরে। মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দারিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় ৷

ফারহা পুরো রুমের দিকে এবার চোখ বুলিয়ে নেয়৷ বিশাল রুম পুরো রুমটায় ওয়াইট কালার করা৷ আর তার ভিতর প্রত্যেকটা জিনিসের মধ্যে আভিজাত্যের ছোয়া ৷ বিভিন্ন রকমের দামি সোপিচ দিয়ে রুম টা সাজানো ৷ রুমের এক পাশে বড় কাবার্ড তার পাশে বড় আয়না রুমের মাঝ বড়াবড় রাউন্ড বেড এক কোনে বড় সোফা আরো অনেক জিনিস পত্র দিয়ে গছিয়ে রাখা হয়েছে রুম টা৷

মেঘ ফ্রেস হয়ে চেন্জ করে বের হয়ে দেখে ফারহা সোফায় বসে কি যেন ভাবছে ৷ মেঘ খাবারের ট্রে টা নিয়ে ফারহার পাশে বসে ৷ ফারহা মেঘ কে পাশে বসতে দেখে উঠে চলে যাবে এমন সময় মেঘ রাগি গলায় বলে উঠলো। এখান থেকে একচুল নরার চেষ্টা ও করো না জানপাখি ৷ তাহলে যে কাজ টা করা এখনো বাকি আছে ওটা আমি এখুনি করে ফেলবো

ফারহা মেঘের থ্রেট শুনে ওখান থেকে উঠে যাওয়ার আর সাহস করলো না ৷ মেঘ খাবার নিয়ে ফারহার মুখের সামনে ধরে ফারহা বাধ্য হয়ে মেঘের হাতে খেয়ে নেয়৷ ফারহার খাওয়া শেষ হতে মেঘ বলে। এবার তুমি আমাকে খাইয়ে দেও জানপাখি।
। কিহ আমি আপনাকে খাইয়ে দিবো ! কখনো না আপনার মতো বাজে লোককে আমি কিছুতেই খাইয়ে দিবো না।

ফারহার কথা শুনে মেঘের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ৷ ফারহা উঠতে যাবে তখনি মেঘ ফারহার কোমর শক্ত করে চেপে ধরে বলে। আমাকে যতোই ঘৃনা করো না কেন জানপাখি তুমি আমার কাছে থাকবে মিসেস ফারহা মেঘ চৌধুরী হয়ে ৷ এটাই এখন তোমার পরিচয় ৷ চৌধুরী বাড়ির বড় বউ তুমি৷
। মানি না আপনাকে হাসবেন্ট হিসেবে ৷ আর না নিজেকে চৌধুরী বাড়ির বড় বউ মানি৷।

। মানতে তুমি বাধ্য জানপাখি ৷ এখন আমাকে খাইয়ে দেও৷ নাহলে এর পরিনাম তোমার পরিবার ভুকবে৷।
। আপনি জানেন আপনি কতোটা নিকৃষ্ট লোক?
। হ্যা আমি নিকৃষ্ট লোক হয়েছি শুধু তোমার জন্য। তোমার জন্য বাজে খারাপ নিকৃষ্ট নয় এর থেকে ও যদি আরো খারাপ নিকৃষ্ট ভয়ঙ্কর হতে হয় তাহলে ও আমি তা হবো।
। কেন মিস্টার চৌধুরী?

। বিকজ আই লাভ ইউ ড্যাম ইট।
ফারহা মেঘের কথা শুনে চুপ হয়ে গেল ৷
। কি হলো খাইয়ে দিবে নাকি।

ফারহা আর কথা বাড়ালো না চুপ চাপ মেঘ কে খাইয়ে দিলো।
। এখন থেকে তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে আর হ্যা দ্বিতীয় বার যেন আমাকে খাইয়ে দেওয়ার কথা বলতে না হয়।
ফারহা মাথা নারলো।
মেঘ হুট করে ফারহার কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ফারদিনের রুমের দিকে চলে গেল৷ ফারদিনের রুমের সামনে আসতে দেখে জনি ফারদিনের রুম থেকে বের হচ্ছে ৷ জনি মেঘ কে দেখে ঘাবড়ে যায়।

। ভাইয়া আপনি এখন এখানে?
। হ্যা ফারদিনের সাথে দেখা করতে এসেছি।

। ভাইয়া ওর নাকি মাথ্যা ব্যাথা করছে তাই মেডেসিন খেয়ে রেস্ট করছে৷।
। ওহ তাহলে রেস্ট করুক৷
। ভাইয়া আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
। হ্যা বলো।

জনি কিছু বলতে যাবে তার আগে মেঘের ফোনটা বেজে ওঠে৷ মেঘ কল রিসিব করে কানে ধরতে মেঘের চোখ মুখের রঙ পাল্টে গেল ৷ রাগে চোখ মুখ লাল বর্ন ধারন করেছে ৷ ফোনটা কানে নিয়ে ধরে বলে উঠলো।
। আমি আসছি।


পর্ব ১৪

জনি কিছু বলতে যাবে তার আগে মেঘের ফোনটা বেজে ওঠে৷ মেঘ কল রিসিব করে কানে ধরতে মেঘের চোখ মুখের রঙ পাল্টে গেল ৷ রাগে চোখ মুখ লাল বর্ন ধারন করেছে ৷ ফোনটা কানে নিয়ে ধরে বলে উঠলো।
। আমি আসছি। ।

মেঘ জনির কোন কথা না শুনে দ্রুত বেরিয়ে যায় গাড়ি নিয়ে। জনি ভাবে যখন মেঘ কে বলতে পারলো না তখন না হয় ফারহার সাথে এই বিষয় টা নিয়ে কথা বলবে ৷ হেল্প তো ফারহা কে করতে হবে তাহলে ওকে বললে তো হলো।
জনি ফারহার রুমের সামনে গিয়ে নক করে ৷
। দরজা খোলা আছে ভিতরে আসুন। (ফারহা)

জনি ভেতরে ঢুকলো। জনি কে দেখে ফারহার চিনতে অসুবিধা হয়নি কারন ফারদিনের সাথে প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিলো সেদিন জনি ও ছিলো।
। আপনি এখন এখানে?
। ভাবি আপনার সাথে আমার জরুলি কিছু কথা আছে আপনার কাছে কি সময় হবে আমার কথা গুলো শোনার?
। আচ্ছা বসুন আর কি বলতে চান বলুন।

জনি সোফায় বসে ফারহার উদ্দ্যশ্য বলে উঠে। ভাবি টোটাল বিষয় টা ফারদিন কে নিয়ে ওর সুস্থতা এখন আপ। বাকিটা বলতে পারলো না তার আগে জন এসে হাজির হয়।
জনি কে দেখে জন ব্রু কুচকে তাকায় তার দিকে। জনি তুই এখানে?
। এই তো ভাবির সাথে আলাপ হতে চলে এলাম। (জোর পূর্বক হাসার চেষ্টা করে)

। এই ছেলেটা মিথ্যে বললো কেন? আর ফারদিনের সুস্থতা নিয়ে কি যেন বলতে যাচ্ছিলো?(মনে মনে বলতে লাগলো ফারহা)
। ওকে বাট এখন তোর এই রুমে আসাটা ঠিক হয়নি জনি মেঘ জানতে পারলে। বাকিটা বলার আগে জনি বলে উঠলো। জন ভাই আমি ফারদিনের রুমে যাচ্ছি আর প্লিজ মেঘ ভাই কে কিছু বলো না৷ ভাইয়া আমাকে ভূল বুজতে পারে। ।
। ওকে।
জনি বেরিয়ে গেল রুম থেকে কিন্তু এদিকে ফারহা বুজতে পারছে না ওর সাথে সামান্য কথা বললে মেঘ কেন রাগ করবে? হঠাৎ জনের কথায় ফারহার ধ্যান ভাঙে। ভাবি আপনি রেস্ট করুন ৷ মেঘ অফিসের কাজে বাইরে গেছে কিছুক্ষনের মধ্যে ফিরে আসবে৷

কথা টা বলে জন দরজা আটকে বেরিয়ে যায় ৷ ফারহার মাথা প্রচন্ড ভার হয়ে আছে এতো মানুষিক চাপ নিতে পারছে না ফারহার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে তাই চুপ চাপ বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে কিছুক্ষনের মধ্যে গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় ফারহা।

। স্যা,র স্যার আমাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দিন ৷ আমি আর কোন দিন আপনার বিপক্ষে কথা বলার সাহস করবো না। লোকটি মেঘের পা জরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বলতে লাগলো কিন্তু মেঘের তাতে বিশেষ কিছু যায় আসে বলে মেঘের লোকজনের মনে হচ্ছে না ৷ মেঘ বাকা হেসে লোকটির গাল টিপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো। এই মেঘ চৌধুরী কোন বিশ্বাস ঘাতককে দ্বিতীয় বার কাউকে সুযোগ দেয় না৷কথাটা শেষ করে মেঘ লোক টির জিব্বাহ টা কেটে দেয় ৷ মেঘের এমন নৃশংস রুপ দেখে বাকিরা ভিষন ভয় পেয়ে যায়৷ তবু ও চুপ চাপ দারিয়ে সব টা দেখছে ৷

। রাব্বি এই জন্জাল টাকে ডাসবিনে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আয়৷
। ইয়েস বস।
মেঘ হাতে লেগে থাকা রক্ত ধুয়ে ফেলে অফিসে উদ্দ্যেশ্য বেরিয়ে যায়৷

কিছুক্ষন আগে ফারদিনের ঘুম ভাঙে। ঘুম থেকে উঠে ফারদিন কিছুক্ষন মাথা চেপে ধরে বসে থাকে ৷ জনি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফারদিন কে উঠে বসতে দেখে জনি ঘাবড়ে যায়৷
। ফারদিন এভাবে শান্ত হয়ে বসে আছে কেন? নাকি এটা ঝড় আসার পূর্বাভাস?

জনি ভাবনার ছেদ ঘটে ফারদিনের কথায়। এভাবে খাম্বার মতো ওয়াশরুমের সামনে দারিয়ে আছিস কেন? সামনে থেকে সর আমাকে ফ্রেস হতে হবে।
জনি নিঃশব্দে ওয়াশরুমের সামনে থেকে সরে দারায় ৷ ফারদিন ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয় ৷ কিছুক্ষন পর ফারদিন শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে চেন্জ করে নেয়৷ জনি বসে বসে শুধু ফারদিনের বিহেবিয়ার ফলো করছে ৷

। এভাবে তাকিয়ে না থেকে আমার লান্চের ব্যবস্থা করতে বল সারবেন্ট কে।
হঠাৎ ফারদিনের এমন কথায় হচকিয়ে ওঠে জনি।

। আমি যাচ্ছি সারবেন্ট বলতে তুই নিচে আয়।
জনি চলে যেতে ফারদিন আয়নার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলে উঠলো। এই ফারদিন চৌধুরী নিজের পছন্দের জিনিস সহজে না পেলে ছিনিয়ে নিতে জানে ৷ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেলেও তোমাকে আমি নিজের করে নিবোই ফারহা আই প্রমিস ইউ।

ফারদিন শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে মেঘের রুমের দিকে হাটতে লাগলো। ফারদিন দরজা খুলে রুমে ঢুকে দেখে ফারহা বাচ্চাদের মতো করে ঘুমিয়ে আছে ৷ ফারদিন ফারহা কে এভাবে দেখে হেসে ফেলে ফারহার গায় চাদর টা টেনে দিতে দিতে ফারদিন মনে মনে বলতে লাগলো।
। রাতপরী আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা করো তারপর তুমি শুধু আমার হয়ে যাবে ৷ আমাদের মাঝখানে তৃতীয় কোন ব্যক্তি কে আমি আসতে দিবো না৷। লাস্ট কথাটা বলার সময় ফারদিন দাতেঁ দাতঁ চেপে বললো।

হঠাৎ কারো পায়ের আওয়াজ শুনতে পেয়ে ফারদিন আড়ালে লুকিয়ে পরে।
মেঘ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখে ফারহা বেড়াল ছানার মতো ঘুমিয়ে আছে ৷ মেঘ মুখে মুচকি হাসি দিয়ে ফারহার মুখের উপর এলোমেলো চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে কপালে চুমু দিয়ে চাদর টা আর একটু টেনে দেয়৷ তখনি দরজায় নক করে মেঘ বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দেখে জন দারিয়ে।
মেঘ লান্চ সার্ব করা হয়েছে ৷ তুই ভাবি কে নিয়ে নিচে আয়।
ওকে তুই যা আমি ফারহা কে নিয়ে আসছি।

জন চলে যেতে মেঘ ফারহা কে অনেক ডাকা ডাকি করে কিন্তু ফারহা ওঠা তো দুরে থাক ৷ মুখে বিরক্তি ভাব নিয়ে চাদর মুরি দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরে ৷ মেঘ ফারহার অবস্তা দেখে হাসবে নাকি কাদঁবে বুজতে পারছে না এতোটা ঘুম কাতুরে তার জানপাখি ৷

মেঘ এবার ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকতে ফারদিন দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷ মেঘ ফারহা কে বাথটপে শুইয়ে দেয়। ফারহার চোখে মুখে পানি ছুতে ফারহা চোখ মেলে তাকিয়ে উঠে বসে নিজেকে ওয়াশরুমে বাথটপে দেখে তিক্ষ্ম দৃষ্টিতে মেঘের দিকে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো। হাউ ডেয়ার ইউ মিস্টার চৌধুরী ৷

আপনার কি করে হয় আমার সাথে এমন আচরন করার?রাগে ফোস ফোস করতে করতে বললো ফারহা। মেঘ ফারহার রাগ দেখে মুখ টিপে টিপে হাসছে ৷ মেঘ কে হাসতে দেখে ফারহার রাগ যেন আরো বেরে গেল ফারহা মেঘের দিকে হাত বারিয়ে দেয় ওঠার জন্য মেঘ ফারহার হাত ধরে ফারহা কে তুলতে ফারহা মেঘ কে ধাক্কা দিয়ে বাথটপে ফেলে দেয়৷

। টিট ফর ট্যাড বুজলেন মিস্টার চৌধুরী। মুখে বিজয়ের হাসি নিয়ে বললো ফারহা।
মেঘ অবাক হয়ে যায় ফারহার কান্ড দেখে। ফারহা রুমে গিয়ে লাগেস থেকে নীল চুড়িদার বের করে নেয় ততোখনে মেঘ চুল মুচতে মুচতে বেরিয়ে আসে ৷ ফারহা দ্রুত ওয়াশরুমে ঢুকে চেন্জ করে বেরিয়ে আসে৷

মেঘ আয়ানার সামনে দারিয়ে চুলে ব্রাস করার সময় হঠাৎ আয়নার ভিতরে ফারহার প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে ৷ নীল চুড়িদারে সাদা ওড়না। ভেজা চুল লেপ্টে যাওয়া চোখের কাজল, গোলাপি ঠোট ৷ মেঘ এক দৃষ্টিতে ফারহার দিকে তাকিয়ে আছে ৷ মেঘের ইচ্ছে করছে ফারহার ঠোট জোড়া ছুয়ে দিতে কিন্তু নিজের অদম্য ইচ্ছে কে সংযত করে দৃষ্টি সরিয়ে ফেলে।
ফারহা ভেজা চুল মুছতে মুছতে পেটের ভিতর কিছু একটা অনুভব করলো।

ফারহা বুজতে পারছে তার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে ৷ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দুপুর দুইটা বেজে গেছে অলরেডি আর এদিকে পেটের ভিতর ইদুর বিড়াল ছুটোছুটি করছে ৷
। জানপাখি নিচে চলো লান্চ করবো।
ফারহা চুপ চাপ মেঘের কথায় সায় দিয়ে ওরনা সুন্দর করে মাথায় গায় পেচিয়ে নিচে নামতে নিলে মেঘ বাধা দেয়৷
। কি হলো মিস্টার চৌধুরী?

মেঘ কিছু না বলে ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে নিচে যেতে লাগলো। ফারহার কোন কথাই মেঘ শুনছে না সে নিজের মতো করে হেটে যাচ্ছে।
ডাইনিং টেবিলে ফারদিন জন জনি মেঘ ফারহার জন্য অপেক্ষা করছে ৷ হঠাৎ করে মেঘের কোলে ফারহা কে দেখে ফারদিনের চোখ মুখের রং পাল্টে যায়।


পর্ব ১৫

মেঘ কিছু না বলে ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে নিচে যেতে লাগলো। ফারহার কোন কথাই মেঘ শুনছে না সে নিজের মতো করে হেটে যাচ্ছে।
ডাইনিং টেবিলে ফারদিন জন জনি মেঘ ফারহার জন্য অপেক্ষা করছে ৷ হঠাৎ করে মেঘের কোলে ফারহা কে দেখে ফারদিনের চোখ মুখের রং পাল্টে যায় ৷

মেঘ ফারহা কে নিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে ফারহার পাশের চেয়ারে বসে ৷ মেঘ বসতে সারবেন্ট খাবার সার্ব করে দেয় ৷ মেঘ এক প্লেটে খাবার নিয়ে প্লেট টা ফারহার সামনে রাখে ৷ ফারহা প্রথমে বুজতে না পারলেও পরে বুজতে পারে মেঘ কেন প্লেট টা তার সামনে রেখেছে ৷ ফারহার ইচ্ছে না থাকা সত্যেও মেঘ কে খাইয়ে দিতে লাগলো৷

মেঘ মুচকি হেসে ফারহার হাতে খেতে লাগলো এদিকে চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে রাগে ফুসতে লাগলো হঠাৎ কাচ ভাঙার আওয়াজ পেয়ে সবাই ফারদিনের দিকে তাকায়।
। ওয়াট দ্যা হেল ফারদিন হাত কাটলো কি করে?(মেঘ)
ফারদিন হাত টা ঝারা দিয়ে সরিয়ে আসতে করে বলে উঠলো। জানি না ব্রো হুট করে গ্লাস ভেঙে গেছে।

। তুই এতো কেয়ারলেস কেন বলতো? দেখলি কতোটা হাত কেটে গেছে?
জনি দৌড়ে গিয়ে ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে আসে ৷ মেঘ খুব সাবধানে ফারদিনের হাতটা ড্রেসিং করে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়৷
। ব্রো আমি রুমে গিয়ে রেস্ট নিচ্ছি তুই বরং খেয়ে নে।
। স্যাটআপ ফারদিন। তুই না খেয়ে থাকবি আর আমি খেয়ে নিবো !।

মেঘ ফারদিন কে নিজ হাতে খাইয়ে দেয় ৷ ফারহা দুই ভাইয়ের একে অপরের প্রতি কেয়ারিং ভালোবাসা দেখছে ৷ হুট করে ফারিহার কথা মনে পরে যায় ফারহার ৷ সেদিন নিজ হাতে বিরয়ানি রান্না করে খাইয়েছিলো ফারিহা তার বদলে ফারহা বকা দেয় ৷ তারপর স্যরি বলা ফারিহা কে মানানো সবটা ভেবে ফারহার চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো ৷
। জানপাখি বাড়ির জন্য মন খারাপ লাগছে?
কানের কাছে হঠানো হঠাৎ মেঘের গলা পেয়ে চমকে ওঠে ফারহা দ্রুত চোখ মুছে নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে ফারদিন জন জনি কেউ নেই মেঘ ব্যতিত।
। বাকিরা কোথায়?

। ওদের লান্চ হয়ে গেছে তাই ওরা ফারদিন কে নিয়ে রুমে চলে গেছে।
। ওহ।
। বললে না তো বাড়ির কথা মনে পড়ছে নাকি?
ফারহা মাথা নারালো। ফারিহা কে ভিষন মিস করছি৷
। সুইটহার্ট এতোটুকু। ডোন্ট ওয়ারি আদঘন্টার মধ্যে ফারিহা তোমার সামনে পাবে।

। সত্যি। উত্তিজিত হয়ে বললো ফারহা।
। ইয়েস জানপাখি নেও এবার আমাকে খাইয়ে দেও।
বোন কে দেখতে পাবে বিধায় ফারহা নির্দিধায় মেঘ কে খাইয়ে দিতে লাগলো ৷ মেঘের খাওয়া শেষ হতে মেঘ ফারহা কে খাইয়ে দিলো ৷

ফারিহা ফারহা কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে ৷ মেঘ ঠিক তার কথা মতো আদঘন্টার মাথায় ফারিহা কে ফারহার সামনে দার করায়। ফারহা ফারিহা কে দেখে খুশিতে আত্তহারা ফারিহার ও সেম অবস্তা৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন জানতে পারে মেঘ ভোর বেলা ফারহা কে নিয়ে চলে গেছে শুনে কান্না করে দেয় ফারিহা ৷ আর ঠিক আদঘন্টা আগে মেঘ ফারহার মা কে ফোন করে ফারিহা কে পাঠিয়ে দিতে বলে ৷ ফারহার মা রাজি হয়ে যায় ৷ মেঘের পাঠানো এড্রেসে পাঠিয়ে দেয় ফারিহা কে।
। জানপাখি তুমি সালিকার সাথে বসে গল্প করো আমি বাইরে যাচ্ছি সন্ধের আগে চলে আসবো৷”

মেঘ ফারহার কপালে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে বেরিয়ে গেল৷
। ওয়াও আপু মেঘ জিজু কি রোমান্টিক।
। চুপ কর ফাজিল। ফারিহার কথায় ভিষন লজ্জা পায় ফারহা। মেঘ কে ভালো না বাসলেও মেঘ কে ওতোটাও ঘৃনা করে না ফারহা প্রথম থেকে ঘটা সবটাই যে মিসআন্ডারস্টান্ডিং সেটা ফারহা খুব ভালো করেই জানে কিন্তু মেঘ ওকে সত্যি ভালোবাসে এটা ফারহা কখনো আশা করেনি ৷ ফারহার ভাবনার ছেদ ঘটে ফারিহার চিৎকার শুনে।

। ফারিহা এভাবে গরুর মতো চিৎকার করছিস কেন ইডিয়ট?
। আপু জিজুর পাশের ছেলেটা কে? ওয়াও কি কিউট দেখতে আমিতো ক্রাশ।
। ওনার নাম ফারদিন তোর জিজুর ছোট ভাই।

। ওহ গট আপু তোর দেবর আছে আগে বলবি না৷
। কেন রে আগে বললে কি করতি তুই?কাপাল কুচকে জ্বিগাসা করলো ফারহা।
। কি আর করতাম তোর দেবরের সাথে সেটিং টা করে নিতাম।

ফারিহার কথা শুনে ফারহা ফারিহার কান মুচরে ধরে বলে। অনেক পেকে গেছিস তুই দারা মা কে বলতে হবে ৷ এবার তোকে বিয়ে দিতে।
। উফফ আপু কান টা তো ছাড় লাগছে ৷ আর শোন বলবি যখন বলিস তবে বিয়েটা যেন তোর দেবর এর সাথে যেন হয় বলে দিলাম।
। ফাজিল মেয়ে নিজের বিয়ের কথা নিজে বলছিস নির্লজ্জ মেয়ে একটা।
। আপু আমি সিরিয়াস।

। তোর কথা পরে শুনবো তার আগে দুইশ বার কান ধরে উঠবস শুরু কর।
। এ্যা কি বলছিস দুইশ বার কান ধরে উঠবস কেন করবো?

। গতকাল রাতে কে আমাকে সাজিয়েছে? কে আমাকে রেজেট্রি পেপারে সাইন করিয়ে নিয়েছে?
ফারিহা আর কোন কথা বলছে না মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে৷ ফারহা সোফায় পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে আবার বলতে লাগলো। কি হলো শুরু কর আমি কাউন্ট করছি।
। আপুউউউ।

স্যাট আপ ফারিহা। গতকাল যা করেছিস সে হিসেবে শাস্তি অনেক কম যদি এটা করতে চাস তাহলে অন্য কোন শাস্তি তোকে দিতে পারি? নাও চয়েস ইজ ইউর’স?
না আপু এই শাস্তি ঠিক আছে আমি কান ধরে উঠবস করছি তুই কাউন্ট কর।
গুড গার্ল।

আর ইউ শিওর স্যার?
ইয়াসিন আমি এক কথা দু বার বলতে পছন্দ করি না৷

ওকে স্যার আপনি যে ভাবে বলবেন আমি ঠিক সেভাবে করবো মেঘ চৌধুরীর জীবনে আজ শেষ দিন৷
কাজটা যতো তারাতারি সম্ভব করা চাই আমার নাহলে তোর জীবনের আলো আমি আমি অন্ধকারে ডুবিয়ে দিবো।
কথাটা বলে খট করে কল টা কেটে দিয়ে বাকা হাসছে লোকটি।

মেঘ রেস্টুরেন্টে মিটিং শেষ করতে করতে সন্ধ্যে সাতটা বেজে যায় ৷ মেঘ একাই ড্রাইভ করতে লাগতো হঠাৎ।


পর্ব ১৬

মেঘ রেস্টুরেন্টে মিটিং শেষ করতে করতে সন্ধ্যে সাতটা বেজে যায় ৷ মেঘ একাই ড্রাইভ করতে লাগতো হঠাৎ মেঘের গাড়ির সামনে একটা বড় ট্রাক এলোমেলো ভাবে ওর দিকে এগিয়ে আসছে ৷ মেঘ গাড়ি অন্য সাইডে নিতে ট্রাক টাও সে দিক দিয়ে এগিয়ে আসতে লাগে ৷ মেঘ জানে ট্রাক টার সাথে সংঘর্ষ হলে ওর বেচে থাকার পার্সেনটেইজ জিরো। মেঘের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো মেঘের বুজতে বাকি নেই ট্রাকটা ওকে মারার জন্য কেউ পাঠিয়েছে৷ মেঘ এবার ফুল স্পিডে ট্রাকটার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। ট্রাক টাও ফুল স্পিডে মেঘের গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে তখনি।

_মেঘ কি হয়েছে তোর হাতে কপালে ব্যান্ডেজ কেন?(জন)
তেমন কিছু না আসার সময় ছোট্ট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে।

কেন যেন জন মেঘের কথা গুলো বিশ্বাস করতে পারলো না ৷ জন মেঘ কে সোফায় বসিয়ে দিয়ে সারবেন্ট কে পানি নিয়ে আসতে বলে৷
তোর ভাবি কোথায় জন?
ভাবি রুমে আছে তার ছোট বোনের সাথে গল্প করছে।
বাহ ভালো। আমি রুমে যাচ্ছি।

আমি তোকে রুমে ছেড়ে দিয়ে আসি?
নো নিড জন।
মেঘ উঠতে নিলে কোথা থেকে ফারদিন ছুটে এসে মেঘ কে জরিয়ে ধরে। দু পা পিছিয়ে যায় মেঘ।
ফারদিন তোর আবার কি হলো?(মেঘ)
কি হলো মানে তুই এক্সিডেন্ট করলি কি করে?

এক মিনিট আমি তো তোকে বলেনি আমি এক্সিডেন্ট করেছি তাহলে তুই জানলি কি করে?ব্রু কুচকে জানতে চাইলো মেঘ।
মা। মানে আমি আমি তো তোর এই অবস্তা দেখে গেস করলাম।
বাহ তোর সিক্স সেন্স বেশ ভালো ফারদিন ৷ যাই হোক আই নিড সাম রেস্ট। পরে কথা হবে তোর সাথে। ।
ওকে ব্রো।
মেঘ উপরে উঠার সময় সে সময়ের কথা ভাবতে লাগলো তখন ফুল স্পিডে ট্রাক টার সামনে এগিয়ে গেলেও ঠিক সামনে এসে সাইড হয়ে যায় আর ব্যালেন্স না রাখতে পেরে গাছের সাথে গাড়ি টা লাগিয়ে দেয়৷ আর ট্রাক টা অন্য একটা গাড়ির সাথে এক্সিডেন্ট করে বসে৷ মেঘ শিওর যে কেউ ওকে মারতে চাইছে কিন্তু আজ যখন মারতে পারেনি তখন আবার ও সে তাকে মারার জন্য অন্য কোন প্লান করবে ৷

মেঘ চৌধুরীকে মারার প্লান যে করুক না কেন তাকে আমি ছাড়বো না জ্যান্তু কবর দিবো। মেঘ কথা গুলো বির বির করতে করতে রুমের দরজা খুলে সামনে তাকাতে অবাক হয়ে যায় দু বোনের কান্ড দেখে। পুরো রুমে এলোমেলো হয়ে আছে ৷ ফারিহা ফ্লোরে বসে পা ছড়িয়ে কাঁদছে আর ফারহা হাতে চিরনি নিয়ে দারিয়ে আছে ৷
দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে দুজনে দরজার দিকে তাকিয়ে মেঘ কে দেখে দুজনে খুব লজ্জা পেয়ে যায় ৷ হঠাৎ ফারহা মেঘের মাথা হাতে ব্যান্ডেজ দেখে বুকের ভিতর ছ্যাৎ করে ওঠে কিন্তু কেন এটা ফারহা জানে না ৷ ফারহা চিরনি টা ছুড়ে ফেলে দিয়ে মেঘের কাছে ছুটে আসে ৷

। আ,আপনার কি হয়েছে হাতে মাথায় ব্যাথা পেলেন কি করে?উত্তিজিত হয়ে।
মেঘের প্রচন্ড ভালো লাগছে ফারহার এমন তার প্রতি চিন্তা করতে দেখে।
কি হলো মিস্টার চৌধুরী কথা বলছেন না কেন? কি করে হলো আপনার এই অবস্তা?
বসে বলি?

। ওহ স্যরি ভিতরে আসুন। ফারহা দ্রুত ঘুরে বিছানা ঠিক করে এলোমেলো জিনিস গুলো ঠিক করে নিয়ে মেঘ কে বসতে বলে৷।
মেঘ বসে ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলে। সালিকার এই অবস্তা কেন?
। জিজু আপনার দর্জাল বউ আমাকে শাস্তি দিয়েছে।

। কিহ আমি দর্জাল আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
ফারহা এগোতে নিবে তার আগে মেঘ ফারহা হাত ধরে হ্যাচকা টান দিতে ফারহা মেঘের উপর পরে যায় ৷ ফারিহা সে সুযোগে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ৷
। কি করছেন কি মিস্টার চৌধুরী ছাড়ুন আমাকে।

মেঘ এতোক্ষন নেশাগ্রস্ত চোখে ফারহার ঠোটের নিচে তিল টার দিকে তাকিয়ে ছিলো। ফারহার কথা শুনে মেঘের হুস ফেরে। মেঘ বা হাত দিয়ে ফারহার কোমর চেপে ধরে কানের কাছে মুখ এনে বলে। ভালোবাসি জানপাখি। মেঘের মুখে যতোবার ভালোবাসি কথা টা শুনে ঠিক ততোবার ফারহার ভিতরটা তোলপার শুরু করে দেয়৷ ফারহা মেঘের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো ৷ মেঘ প্রচন্ড মজা পাচ্ছে ফারহা কে লজ্জায় ফেলতে৷ মেঘ খুব ভালো করে জানে ফারহা ওকে খুব তারাতারি ভালোবাসতে শুরু করবে৷

। আপনি আমাকে ছাড়বেন নাকি আমি চেচাবো?
। চেচাবে ওকে চেচাও দেখি কে আসে তোমাকে আমার থেকে বাচাঁতে।
ফারহা মেঘের কথা শুনে পড়লো বিপাকে। মেঘ কোন কথাই শুনছে না ৷ ফারহার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হচ্ছে ৷ জোর জবরদস্তি করা ফারহা কখনোই পছন্দ করে না আর মেঘ তাই করছে ৷
। মিস্টার চৌধুরী আপনি আমায় ছাড়বেন নাকি ছাড়বেন না?

। উহু ছাড়বো না দেখি তুমি কি করতে পারো?
ফারহা এবার বেশ ক্ষেপে যায় ৷ ফারহা রেগে মেঘের কপালে ব্যাথা যায়গায় চেপে ধরে ৷ মেঘ ব্যাথা পায় তবুও ফারহা কে ছাড়ে না ৷ ফারহা আরো রেগে যায় এটা দেখে। আরো জোড়ে চেপে ধরে এতো জোড়ে চেপে ধরে যে মেঘের কপালে ক্ষত স্থান দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে৷ রাগের মাথায় কাজ টা করলেও এখন প্রচন্ড খারাপ লাগছে ফারহার।
। এই ছাড়ুন আমাকে আপনার কপাল থেকে রক্ত বের হচ্ছে ৷ এখুনি ড্রেসিং করে আবার ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে৷
। ঝরুক না রক্ত তাতে কি?

। স্যাটআপ মিস্টার চৌধুরী কি পাগলামি করে যাচ্ছেন হু ছাড়ুন বলছি আর এই মুহূর্তে যদি আপনি আমাকে না ছাড়েন তো আমি এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবো। ।
মেঘের হাত আলগা হয়ে এলো। ফারহা নিজেকে ছাড়িয়ে মেঘ কে জ্বিগাসা করলো ফাস্ট এইড বক্স কোথায় আছে?
। সামনে ওড্রবের সেকেন্ড ড্রয়ারে।
ফারহা ঝটপট ফাস্ট এইড বক্স এনে মেঘের আগে করা ব্যান্ডেজ খুলে ড্রেসিং করে আবার ব্যান্ডেজ করে দেয়৷
। আমি চেন্জ করবো।

। তো করুন আপনাকে কে ধরে রেখেছে?
। কেউ ধরে রাখেনি কিন্তু কারোর হেল্প লাগবে দেখছো- ই তো হাতে ব্যান্ডেজ করা।
ফারহা খেয়াল করে দেখে সত্যি হাতে ব্যান্ডেজ করা।

। ওকে তাহলে আমি জন ভাইয়া বা আপনার ভাই কে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
ফারহা যেতে নিলে মেঘ ফারহার হাত ধরে আটকে দেয়।
। আপনার কি কোন রোগ আছে মিস্টার চৌধুরী?
। রোগ মানে !।

। এই যে হুট হাট করে হাতে ধরে টান মারেন আবার কোলে তুলে নেন?
। বউয়ের হাত ধরেছি কোলে নিয়েছি অন্য কারোর বউয়ের হাত ধরেনি কোলে তুলে নেই নি।
। আপনি জানেন আপনি একটা যাচ্ছে তাই মানুষ অসয্যকর।
। চলো আগে আমাকে ফ্রেস করিয়ে দিবে তারপর চেন্জ করে দিবে।

ওয়াট কি বলছেন এই সব। আমি আপনাকে চেন্জ করিয়ে দিবো! অসম্ভব আমি পারবো না।
তাহলে আমিও তোমাকে ছাড়ছি না এভাবে ধরে রাখবো তোমাকে।

__ একঘন্টা ধরে মেঘ ফারহার হাত ওভাবে ধরে আছে ৷ ফারহা অনেক চেষ্টা করেও হাত ছাড়তে পারেনি ৷ প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে আছে ফারহা। আর মেঘ কিছুক্ষন পর পর ফারহার হাতে চুমু দিচ্ছে ৷ খুশিতে আছে মেঘ ৷ ফারহা আর সহ্য করতে না পেরে বলে উঠলো। চলুন আপনাকে ফ্রেস হতে হেল্প করবো আমি।
সত্যি নাকি মিথ্যে বলছো আমার হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য?
আমি মিথ্যে বলি না মিস্টার চৌধুরী।

ওকে ফাইন তাহলে চলো। ।
ফারহা কাবার্ড থেকে মেঘের ট্রাউজার আর টি শার্ট নিয়ে মেঘ কে নিয়ে ওয়াশরুমে যায়৷
জানপাখি তুমি আমাকে টিশার্ট টা পরতে হেল্প করো ট্রাউজার আমি পরে নিচ্ছি।
ইউ চিপ।

সুইটহার্ট এখানে চিপ চাপের কথা আসছে কেন?
দেখুন ফালতু কথা বন্ধ করুন নাহলে আমি কিন্তু চলে যাবো।
ওকে ফাইন এখন কোট খুলতে হেল্প করো৷।

ফারহা চুপ থেকে মেঘের কোট খুলে শার্টের বোতাম খুলে দেয়৷ মেঘ শার্ট ছাড়া দেখে প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে যায় ৷ ফর্সা শরীলে লোমস ভরা বুকে ৷তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে ফারহা ৷ মেঘ খুব ইনজয় করছে ফারহার লজ্জা মাখা মুখ দেখে।
আপনি বাকিটা করে নিয়ে আমাকে ডেকে দিয়েন আমি ওয়াসরুমের বাইরে দারিয়ে আছি৷। ফারহা আর না দারিয়ে দ্রুত ওয়াশরুম ত্যাগ করে।
মেঘ হেসে ফেলে ফারহার কান্ড দেখে তারপর নিজে চেন্জ করে নেয়৷ মেঘ হাতে ওতোটাও ব্যাথা পায়নি যতোটা ফারহা কে দেখাচ্ছে ৷ কিছুক্ষন পর মেঘ ফারহা কে ডেকে নেয় ফারহা মেঘ কে ফ্রেস করিয়ে দিয়ে টি- শার্ট টা পরতে হেল্প করে ৷

আপনি বসুন আমি সারবেন্ট কে বলছি আপনার জন্য কফি পাঠিয়ে দিতে৷।
উহু আমি সারবেন্টের হাতে কফি খাবো না তুমি নিজ হাতে আমার জন্য কফি বানিয়ে আনবে।

ফারহার এখন মটেও ইচ্ছে করছে না মেঘের সাথে তর্ক করার তাই চুপচাপ চলে গেল কফি বানাতে।
ফারহা রুম থেকে যেতে মেঘ কাউকে কল করলো।
কে আমাকে মারার চেষ্টা করেছে Mk?

বস লোক টাকে চেপে ধরার আগে কেউ একজন লোকটাকে সরিয়ে দেয়৷
ড্যাম ইট চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আমি খবর চাই কে এই কাজ টা করেছে MK।
ওকে স্যার।


পর্ব ১৭

ফারহা রুম থেকে যেতে মেঘ কাউকে কল করলো।
কে আমাকে মারার চেষ্টা করেছে Mk?

বস লোক টাকে চেপে ধরার আগে কেউ একজন লোকটাকে সরিয়ে দেয়৷
ড্যাম ইট চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আমি খবর চাই কে এই কাজ টা করেছে MK।
ওকে স্যার।
মেঘ কল ডিসকানেক্ট করে বিছানার পাশে ড্রয়ার থেকে ল্যাপটপ টা বের করে অফিসের কাজ করতে লাগলো তখনি কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে মেঘ পিছুনে তাকিয়ে দেখে ফারদিন।

ফারদিন তুই এখন এখানে?
কেন আসতে পারি না ব্রো?
কেন আসতে পারবি না আচ্ছা বস। ।

ফারদিন লাফ দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে মেঘের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে ৷
কি বেপার ফারদিন এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? কি দেখছিস?

মেঘের কথায় হচকিয়ে যায় ফারদিন। না ব্রো এমনি। এখন কেমন আছিস মাথায় হাতে ব্যাথা করছে বেশি?
। নাহ তোর ভাবি ক্ষত স্থানে ড্রেসিং করে আবার ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে ৷ আর মেডেসিন তো আগে- ই খেয়েছি।

ফারহা যে মেঘ কে ছুয়েছে কথাটা জানার পর ফারদিনের চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠলো। কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাগ টা কন্ট্রোল করলো ফারদিন। ফারদিন কে চোখ বন্ধ করে থাকতে দেখে মেঘ বলে ওঠে। ফারদিন ঘুম পেলে ডিনার করে ঘুমিয়ে পর।
মেঘের কথা শুনে ফারদিন চোখ মেলে তাকিয়ে বলে উঠলো। নো ব্রো আমার ঘুম পাইনি আর ডিনার আমরা এক সাথে করবো৷”
ওকে তাহলে আদ ঘন্টা পর ডিনারের জন্য নিচে যাবো ওকে?
ওকে ব্রো।

ফারহা কফি নিয়ে রুমে ঢুকে দেখে ফারদিন আর মেঘ গল্প করছে ৷ ফারহা কফির মগ টা নিয়ে মেঘের সামনে গিয়ে ধরে। আপনার কফি।
মেঘ মুচকি হাসি দিয়ে কফির মগ টা নিয়ে নেয়৷
। কেমন আছো ফারহা না মানে ভাবি?(ফারদিন)

আলহামদুলিল্লাহ ভালো মিস্টার ফারদিন। আপনি কেমন আছেন?
তোমাকে ছাড়া কি করে ভালো থাকি রাতপরী? (আস্তে করে বললো)।
জ্বি। । (ফারহা)
ভালো বলেছি।

ফারদিন তোরা একে অপর কে চিনিস মনে হচ্ছে?
ইয়েস ব্রো ফারহা আই মিন ভাবির সাথে আমার আগে থেকে পরিচয় আছে, তাই না ভাবি?
ফারহা মুখে জোর পূর্বক হাসি ফুটিয়ে মাথা নাড়লো।
ভাইয়া তুই তো ফ্রেস হসনি মে বি চল তোকে ফ্রেস করিয়ে আনি।

তার কোন প্রয়োজন নেই ফারদিন কারন তোর ভাবি আমাকে ফ্রেস হতে হেল্প করেছে৷।
মেঘের কথা শুনে ফারদিনের মুখে অন্ধকার নেমে এলো।
ব্রো তাহলে আমি এখন রুমে যাচ্ছি ডিনারের সময় দেখা হচ্ছে।
ওকে।
ফারদিন রুম থেকে যেতে মেঘ কফির মগ টা রেখে ফারহার হাত ধরে টেনে কোলে বসিয়ে ফারহার কোমর চেপে ধরে মেঘ।

মিস্টার চৌধুরী এটা কোন ধরনের অসভ্যতা ছাড়ুন বলছি। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো ৷ মেঘ হুট করে ফারহার গলায় ঠোট ছুইয়ে দেয় সাথে সাথে ফারহা কেঁপে ওঠে মেঘের ছোয়া পেতে ৷ ফারহা স্থির হয়ে হয়ে যায় তবুও পুরো শরীল কাঁপতে থাকে ফারহার ৷ ফারহা কে এভাবে কাপঁতে দেখে মেঘ ফারহা কে বুকে সাথে শক্ত করে চেপে ধরে গলায় কামড় দেয়৷
উহু ক, কি কর,ছেন আ,আপ,নি। (কাপা কাপা গলায় বলে উঠলো ফারহা)
মেঘ বাকা হেসে ফারহার কানের কাছে মুখ এনে বলতে লাগলো। আমি আমার বউকে আদর করছি।

বউ শব্দ টা শুনে ফারহার পুরো শরীল যেন শিউরে ওঠে ৷ আবার লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচু করে ফেলে৷ মেঘ নামক লোকটাকে প্রথমে থেকে সহ্য করতে না পারলেও এখন কেন যেন এই লোকটাকে নিজের বড্ড আপন মনে হচ্ছে ৷ আর এই লোকটার বুকে মধ্যে পৃথিবীর সব চেয়ে সেইফজন মনে হচ্ছে ফারহার।

ফারদিন দরজার কাছে লুকিয়ে এতোক্ষন সবটা দেখছিলো ৷ মেঘ ফারহার এতো কাছাকাছি আসাটা ফারদিন কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না ৷ ফারদিন ধিরে ধিরে সাইকোর মতো আচরন শুরু করলো ৷ ফারদিন মেঘের রুমে ঢুকতে যাবে তখনি জনি ফারদিনের হাত ধরে টেনে রুম নিয়ে যায়।
আমাকে এখানে টেনে আনলি কেন জনি বল। জনির গলা চেপে ধরে বলতে লাগলো ফারদিন।
ফা,রদিন শা,ন্ত হো ছা,ড় আ,মাকে।

। আগে বল কেন আমাকে এভাবে টেনে আনলি? আমার রাতপরী কে অন্য কেউ ছুয়ে দিচ্ছে এটা আমি কি করে মেনে নিবো বল?
ফারিহার রুমে পানি না থাকায় ফারিহা পানির বোতল নিয়ে ফারদিনের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ফারদিনের এমন কথা শুনে থেমে যায় ফারিহা দরজা কিছুটা খোলা থাকায় ফারিহা ফারদিনের পাগলের মতো আচরন করতে দেখে ফেলে ভয়ে ফারিহার হাত থেকে বোতল টা পরে যেতে ফারদিন জন কে ছেড়ে দিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে পরে ৷
। ওহ নো এই মেয়ে টা এখানে কি করছে না জানি ফারদিন এখন এই মেয়েটার সাথে কি না কি করে বসে৷। (মনে মনে)

ফারদিন দু পা ফারিহার দিকে এগোতে ফারিহা ভয় পেয়ে দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লক করে দেয়৷ ফারদিন পিছু পিছু ফারিহার রুমের সামনে গিয়ে দেখে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।
আমার কথা গুলো শুনে তুমি ঠিক করোনি মিস এর শাস্তিতো তোমাকে পেতেই হবে ৷ রাতপরী আর আমার মাঝে যে বা যারা পথের কাটা হবে আমি তাদের সরিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় বার ভাববো না৷কথা গুলো বির বির করে আওরাতে আওরাতে নিজের রুমে চলে আসলো ফারদিন।
ফারদিন দোস্ত তুই ঠিক আছিস?(জনি)

আমি ততোক্ষন ঠিক থাকবো না যতোক্ষন না আমি আমার রাতপরী কে নিজের করে নিচ্ছি জনি। গম্ভির গলায় বললো জনি।
ফারহা ভাবি এখন মেঘ ভাইয়া স্ত্রী ফারদিন তুই এটা ভূলে যেতে পারিস না৷।
নাহ আমি কিচ্ছু ভূলিনি জনি তবে তুই ভূলে যাচ্ছিস আমার ভালোবাসা কে নিজের করে পেতে এই ফারদিন চৌধুরী যে কোন কিছু করতে পারে।
জনি হতবাক হয়ে ফারদিনের কথা শুনছে ৷

তার মানে কি ফারদিন তুই তোর বড় ভাইকে। বাকিটা বলার আগে ফারদিন বলে উঠলো। সরিয়ে দিবো।
ওয়াট। ফারদিন তুই কি পাগল হয়ে গেছিস মেঘ ভাই তোর নিজের ভাই তুই তোর ভাইয়ের সাথে এমনটা করতে পারিস না।
ফারদিন ঘাড় বাকিয়ে জনি কে বলে উঠলো। রাতপরীর পাওয়ার জন্য আমি পুরো দুনিয়া ধ্বংস করে দিতে পারি জনি আর সেখানে মেঘ ভাই কে সরিয়ে দিতে আমার মটেও হাত কাঁপবে না যদি কাপতোই তাহলে আজ ব্রো মরতে মরতে বেঁচে যেত না। কথা বলে পাগলের মতো হাসতে লাগলো ফারদিন আর জনি ফারদিনের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে দারিয়ে আছে৷

ডাইনিং টেবিলে মেঘ ফারহা জন জনি ফারদিন বসে চুপ চাপ খেয়ে যাচ্ছে ৷ ফারিহার খিদে নেই বলে ফারিহা আগে দরজা আটকে ঘুমিয়ে আছে ৷ এদিকে ফারহা খুব যত্ন করে মেঘ কে খাইয়ে দিচ্ছে আর মেঘ তৃপ্তি সহকারে খেয়ে যাচ্ছে ৷ ফারদিন দাঁতে দাঁত চেপে সব টা সহ্য করে যাচ্ছে ৷
ব্রো আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে যাচ্ছি ৷ গুড নাইট৷

ফারদিন আর দারায় না দ্রুত নিজের রুমে চলে যায়৷
ফারহা মেঘ কে খাইয়ে নিজে খেয়ে নেয়৷

__ ফারহা বিছানা ঠিক করে বালিস কাথা নিয়ে সোফায় শুয়ে পরে ৷ মেঘ ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে ফারহা সোফায় শুয়ে আছে ৷ ফারহা কে সোফায় দেখে মেঘ প্রচন্ড রেগে যায়৷ ভেজা তোয়ালে নিচে ছুড়ে মেরে ফারহা কে কোলে তুলে নেয় ৷
মাত্র দু- চোখ লেগে এসেছিলো ফারহার কিন্তু আচমকা মেঘ এভাবে কোলে তুলে নেওয়ায় ফারহা ভয় পেয়ে যায়৷ কিন্তু মেঘ কে কিছু বলার সাহস করে উঠতে পারেনি মেঘের রক্তবর্ণ দু- চোখ দেখে।

মেঘ ফারহাকে সাবধানে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ফারহা কে বুকের সাথে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরে৷
অন্যদিকে হাত পা বাধা অবস্তায় ফ্লোরে শুয়ে আছে ফারিহা ৷ চোখ দিয়ে অঝরে পানি ঝরছে ফারিহার এদিকে দাত মুখ খিচে ফারিহার দিকে তাকিয়ে আছে ফারদিন।

রেন্সপন্স না পেলে গল্প আর দিবো না ৷ বাই দ্যা চিপা গলি আনফ্রেন্ড মিশন শুরু করে দিয়েছি ৷ যারা রিয়েক্ট করবে না তাদের ফ্রেন্ডলিস্টে রেখে অযথা বড় ফ্রেন্ডলিস্ট করতে চাই না


পর্ব ১৮

অন্যদিকে হাত পা বাধা অবস্তায় ফ্লোরে শুয়ে আছে ফারিহা ৷ চোখ দিয়ে অঝরে পানি ঝরছে ফারিহার এদিকে দাত মুখ খিচে ফারিহার দিকে তাকিয়ে আছে ফারদিন।
অনেক বড় ভূল করে ফেলেছো তুমি এর শাস্তি তোমাকে তোমার প্রান দিয়ে শোধ করতে হবে মিস ফারিহা।
জনি ফারিহা দুজনে ফারদিনের কথা শুনে চমকে যায়৷

একি শুনছি ফারদিন মেয়েটাকে মেরে ফেলবে! নাহ এটা হতে দেওয়া যাবে না তাহলে ভাবি বা মেঘ ভাই কোন ভাবে জানতে পারলে ফারদিনের সাথে সাথে আমাকেও শেষ করে দিবে৷। (মনে মনে)

আ,আমাকে মারবেন না প্লিজ আমি আপনার কথা কাউকে বলবো না বিশ্বাস করুন। (কাদঁতে কাদঁতে বললো ফারিহা)
নো বেব তোমাকে ছেড়ে দেওয়া মানে নিজের প্লানে নিজে পানি ঢালা সো তোমাকে মরতে- ই হবে। ফারদিন তার গান বের করে তাতে সাইলেন্টসার লাগিয়ে নিয়ে নিয়ে ফারিহার দিকে তাক করতে জনি গান টা কেরে নেয়৷

জনি গান টা কেরে নিলি কেন? ফিরিয়ে দে গান টা।
তার আগে আমার কিছু কথা তোকে শুনতে হবে তারপর তোকে আমি গান টা দিবো।
ফারদিন চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে কয়েকবার নিশ্বাস নিয়ে বলে। ওকে বল কি বলবি?
জনি ফারদিনের হাত ধরে রুমের এক সাইডে নিয়ে আসে।

আর ইউ লস্টেট ফারদিন কি করতে যাচ্ছিলি তুই বুজতে পারছিস কিছু?
জ্ঞান না ছেড়ে কি বলতে চাইছিস ক্লিয়ার করে বল জনি?
ওকে ফাইন। তুই যে ভাবির বোন কে মারার কথা ভাবছিস ইভেন মারতে যাচ্ছিস এটা যখন মেঘ ভাই বা ভাবি জানতে পারবে তখন তোকে তারা কি ভালোবাসবে? না তোকে ঘৃনা করবে কারন ভাবির জান হচ্ছে তার ছোট বোন ফারিহা তুই তাকে মেরে ফেলবি আর তোকে ভাবি ভালোবাসবে কাছে টেনে নিবে ইউ ফুল।

কিন্তু ফারিহা তো সবটা জেনে গেছে।
ভূল ফারিহা তেমন কিছুই জানতে পারেনি কিন্তু তোর রিয়েক্ট দেখে আন্দাজ করে নিয়েছে।

তাহলে এখন ওকে কি করে ছেড়ে দি বল? রাতপরীর জন্য আমি যে কাউকে শেষ করে দিতে দ্বিতীয় বার ভাববো না জনি।

জানি এখন যা বলছি মন দিয়ে শোন তুই ফারিহার হাত পায়ের বাধন খুলে দিবি দেন ওকে পুরো বিষয় টা বুঝিয়ে বলবি।
যদি চেচামেচি করে?
করবে না আমি বলছি।
ফাইন চল।

ফারদিন জনি দুজনে ফারিহার হাত পায়ের বাধন খুলে দিয়ে বেডের উপর বাসায়।
। আ, আমি কাউকে কিছু বলবো না প্লিজ ছেড়ে দিন আমাকে। ।
। ছেড়ে দিবো তার আগে তোমাকে কথা দিতে হবে আজ তুমি যা যা শুনেছট দেখেছো আর ফারদিনের এই পাগলামির কথা তুমি কাউকে বলতে পারবে না ইভেন তোমার বোন জিজু কেও না গট ইট।

ফারিহা মাথা নারে যার অর্থ হ্যা।
যাও নিজের রুমে আর কাল সকালে নিজের বাড়িতে ফিরে যাবে মনে থাকবে?(জনি)
হ্যা থাকবে কাল সকালে আমি আমার বাড়িতে ফিরে যাবো।
গুড গার্ল।

ফারিহা আর এক মুহূর্ত দারায় না এক ঝলক ফারদিনের দিকে তাকিয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়৷ ফারিহা চলে যেতে ফারদিন চিন্তিত ভঙ্গিতে জনিকে বলে। মেয়েটা কি সত্যি তোর সব কথা মেনে নিয়েছে নাকি পুরো টাই নাটক?
আমার মনে হয় না এতুটুকু মেয়ে আমাদের সাথে নাটক করবে ৷ এখন সকাল হওয়ার অপেক্ষা কারন আগামিকাল বোঝা যাবে মেয়েটির উদ্দ্যশ্য।
হুম।

মেয়েটাকে তো বাঁচানো গেল এখন যতো তারাতারি সম্ভব মেয়ে টাকে তার বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে যে কোন মূল্যে নাহলে শিওর ফারদিন মেয়েটাকে মেরে ফেলবে। (মনে মনে)
ফারদিন তুই এখন ঘুমিয়ে পর আর আমিও ঘুমাতে যাচ্ছি রাত প্রায় শেষের দিকে একটু ঘুমিয়ে নি।
হু যা ঘুমিয়ে পর।

ফারহার ঘুম ভাঙতে নিজেকে মেঘের বুকে আবিষ্কার করে পরক্ষনে গতকালের কথা মনে পরতে ফারহার মুখটা লজ্জায় লাল বর্ন ধারন করে৷
মেঘ এখনো ঘুমিয়ে আছে ৷ ফারহা এক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে৷

বড্ড সুন্দর মেঘ বিশেষ করে মেঘের মুখে চাপ দাড়ির কারনে মেঘ কে আরো বেশি এট্রাকটিভ লাগে ৷ মেয়েদের মতো ঘন চোখের পাপড়ি জোড়া ব্রু চকলেট কালার ঠোট জোড়া। ঘুমের মধ্যে পুরো বাচ্চাদের মতো লাগছে মেঘ কে ৷ ইসস আমার বর এতো কিউট হ্যান্ডসাম ড্যাসিং মন চায় কামড়ে খেয়ে ফেলি। (মনে মনে)
তাহলে খেয়ে ফেলো জানপাখি। (চোখ বন্ধ করে বললো মেঘ)
মেঘের কথা শুনে ফারহার শ্বাস আটকে আসে।

আপনি না ঘুমিয়ে ছিলেন মিস্টার চৌধুরী?
ঘুমাতে আর দিলে কই পুরো রাত তোমাকে জরিয়ে ধরে তোমার ঘুমন্ত মুখ টা দেখেছি৷কথাগুলো বলার সময় মেঘ চোখে মেলে তাকায় সাথে সাথে ফারহা লজ্জায় মিটিয়ে যায়। ফারহা মেঘের বুকের উপর থেকে উঠতে নিলে মেঘ ফারহা কে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
কি হচ্ছে কি মিস্টার চৌধুরী ছাড়ুন আমাকে।

উহু যতোক্ষন না আমার ঘুম ফুল ফিল হচ্ছে ততোক্ষন তোমার ছাড় নেই আমার থেকে।
ফারহার কোন কথাই শুনলো না মেঘ। ফারহা কে জরিয়ে ধরে আবার ঘুমিয়ে পরে।
দুপুরে ফারহা শাওয়ার নিয়ে ফারিহার রুমে আসে ফারিহার সাথে দেখা করতে কিন্তু পুরো রুমে কোথায় ফারিহা কে না পেয়ে ফারহা বেশ চিন্তায় পরে যায় তখনি ফারহা বেডের উপর ভাজ করা একটা কাগজ দেখতে পায়। ফারহা কাগজ টা নিয়ে মেলে দেখে ফারিহার হ্যান্ড রাইটিং।

আপু প্রথমে এত্তো গুলো স্যরি তোকে না বলে চলে আসার জন্য। আজ আমার কলেজে ইমপটেন্ট ক্লাস ছিলো আর আম্মুর নাকি শরীল টা ভালো না তাই আমাকে চলে আসতে হলো ৷ তোকে সকালে জানাতে গিয়েছিলাম কিন্তু তুই ঘুমিয়ে ছিলি তাই তোকে আর ডাকি নি ৷ চিন্তা করিস না এ বাড়ির গাড়ি করে আমি ফিরে যাচ্ছি ৷ ভালো থাকিস আর আমার জিজুকেও ভালো রাখিস আর হ্যা বাড়ির চিন্তা তোকে করতে হবে না আমি আব্বু আম্মু কে সামলে নিবো ৷ সাবধানে থাকিস আপু ৷
ইতি
ফারিহা

ফারহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চিঠি টা নিয়ে রুম থেকে বের হতে ফারদিনের মুখোমুখি হয় ফারহা৷ ফারদিন কে দেখে ফারহা মুখে জোর পূর্বক হাসি ফুটিয়ে তোলে বলে। সে দিনের পর আপনার সাথে তো আর কথা- ই হলো না ভাইয়া? তো কেমন আছেন?
ফারহার মুখে ভাইয়া ডাক টা শুনে ফারদিনের বেশ রাগ হলো কিন্তু কিছু বললো না ৷
ভালো আছি ব্রো কোথায়?
শাওয়ার নিচ্ছে আমি সারবেন্ট কে লান্চ রেডি করতে বলছি।

ওকে আমি ব্রো কে নিয়ে আসছি।
হুম। ফারহা নিচে যেতে গিয়ে আবার ফিরে আসে রুমে চিঠিটা রাখার জন্য। ফারহা রুমে এসে দেখে ফারদিনের হাতে ওর ওরনা। ।
ভাইয়া আপনি আমার ওরনা টা নিয়ে কি করছেন?

আচমকা ফারহার গলা শুনে ফারদিন চমকে ওঠে আর ঠিক সে সময় মেঘ শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে ফারদিনের হাতে ফারহার ওরনা টা দেখতে পায়৷
তুই এখন এখানে? আর তোর ভাবির ওরনা নিয়ে কি করছিস।

রুমে এসে দেখে ওরনাটা ফ্লোরে পরে আছে তাই তুলে রাখছিলাম।
ওহ আচ্ছা।
ফারহা মেঘ কে শুধু টাওয়াল পরে বের হতে দেখে ভিষন লজ্জা পেয়ে যায় ৷ রুম থেকে বের হতে যাবে তখনি মেঘ ফারহাকে ডাক দেয়। জানপাখি তুমি কোথায় যাচ্ছো ৷ আমাকে চেন্জ করতে হেল্প করবে না? দেখছো- ই তো হাতের মাথার ব্যান্ডেজ টা ভিজে গেছে।
ব্রো আমি আছি তো আমি তোকে হেল্প করে দিচ্ছি ৷ ফারহা মানে ভাবি কিচেনে যাচ্ছে।

ফারদিনের কথা শুনে ফারহাও তালে তাল মিলাতে লাগলো। হ্যা ভাইয়া আপনি মিস্টার চৌধুরী কে চেন্জ করতে হেল্প ক, আর বলতে পারলো না ফারহা মেঘের রক্তিম চাউনি দেখে। ফারদিন তুই তোর রুমে যা আমাকে তোর ভাবি হেল্প করবে।
কিন্তু ভাইয়া!।
যাস্ট গো ফারদিন।
ফারদিন দুহাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে গট গট করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ ফারহা বুজতে পারছে ওর কপালে আজ শনি সোম বুধ নাচছে।
এদিকে এসো জানপাখি। ।

ফারহা ভদ্র মেয়ের মতো মেঘের সামনে গিয়ে দারাতে মেঘ ফারহার দুগালে হাত রেখে ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দেয়৷ পাচঁ মিনিট পর মেঘ ফারহা কে ছেড়ে দিয়ে বলে উঠলো। এটা আমার কথা না শোনার শাস্তি জানপাখি ৷ যখনি আমার কথার অবাধ্য হবে তখনি তুমি শাস্তি পাবে ৷ বুজতে পেরেছো জান পাখি? নাও চেন্জ করতে হেল্প করো।

ফারহা কোন টু শব্দ ছাড়া- ই মেঘ কে চেন্জ করিয়ে নিচে কিচেনে চলে আসে ৷
নিচে নামার সময় মেঘের ফোনে মেসেজ আসে ৷ মেঘ মেসেজ টা দেখে চোখ মুখের রং বদলে যায়৷

জানপাখি আমার আর্জেন্ট একটা মিটিং আছে ৷ আমাকে যেতে হবে তুমি খেয়ে নিও। মেঘ ফারহার কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায় গাড়ি নিয়ে।
ফারহার কেন যেন খেতে ইচ্ছে করছে না বিষয় টা জন ফারদিন জনি খেয়াল করে।
ভাবি আপনি খাচ্ছেন না কেন?(জন)

খেতে ভালো লাগছে না ভাইয়া ৷ আপনারা খেয়ে নিন আমি উপরে যাচ্ছি।
ফারহা জন কে আর বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধুয়ে উপরে চলে যায় ৷

এদিকে মেঘ গাড়ি কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছে ৷ মেঘ বুজতে পারছে গাড়ির ব্রেকফেল ৷ মেঘ গাড়ি নিয়ে নির্জন রাস্তায় চলে আসে এদিকে গাড়ি খুব কম আসে ৷ মেঘের দ্রুত জন কে একটা মেসেজ সেন্ড করে গাড়ি থেকে লাফ দেয় ৷

স্যার আমার পাওনাটা?
ফারদিন হাজার টাকার একটা বান্ডিল লোকটার দিকে ছুড়ে দিতে লোকটা টাকার বান্ডিল টা নিয়ে চলে যায়৷ কিছু দুর যেতে একটা ট্রাক দ্রুত গতিতে এসে লোকটা কে রাস্তায় পিশে দেয় ৷ পিচ ঢালা রাস্তায় লোকটার অর্ধেক রক্তাক্ত দেহ পরে থাকতে দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পরে।


পর্ব ১৯

স্যার আমার পাওনাটা?
ফারদিন হাজার টাকার একটা বান্ডিল লোকটার দিকে ছুড়ে দিতে লোকটা টাকার বান্ডিল টা নিয়ে চলে যায়৷ কিছু দুর যেতে একটা ট্রাক দ্রুত গতিতে এসে লোকটা কে রাস্তায় পিশে দেয় ৷ পিচ ঢালা রাস্তায় লোকটার অর্ধেক রক্তাক্ত দেহ পরে থাকতে দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পরে।
এই ফারদিন চৌধুরী কখনো কোন প্রমান বাচিয়ে রাখে ইডিয়ট। তাই তোকে শেষ হতে হলো হা হা হা।

ফারদিন এটা তুই সত্যি ঠিক করছিস না ৷ আমি ভাবতে পারছি না তুই তোর নিজের বড় ভাই কে মারার চেষ্টা করতে পারিস?
ফারদিন তার ভালোবাসা ছিনিয়ে নিতে যা খুশি করতে পারে জনি৷ তবে তুই ও যদি আমার পথের কাটা হস তাহলে তোকে ও সরিয়ে দিতে আমি দ্বিতীয় বার ভাববো না জনি।
ফারদিনের কথা শুনে জনি স্তব্ধ হয়ে যায়৷ ফারদিনের অসুস্থতা এতো বেড়ে যাবে এটা জনি ভাবতেও পারে নি৷
আমি বাড়ি ফিরে যাচ্ছি ফারদিন তোর যা ইচ্ছে তুই তাই কর এর পর থেকে তোর সাথে আমার কোন বন্ধুত্ব নেই এখানে শেষ৷

জনি চলে যেতে নিলে ফারদিন পিছুন থেকে জনির মাথায় বড় পাথর দিয়ে আঘাত করে সাথে সাথে জনি সেন্সলেস হয়ে হয়ে যায়৷
স্যরি দোস্ত তুই অনেক কিছু জেনে গেছিস তাই তোকে এখন আমি ছাড়তে পারবো না ৷ ব্রো যদি কোন ভাবে আজ বেঁচেও যায় তাহলে তুই ব্রো কে কিছু জানাতে পারবি না৷।
ফারদিন কাউকে ফোন করতে দশ মিনিটের মাথায় এসে হাজির হয়ে জনি কে তুলে নিয়ে যায়৷

আর ইউ ওকে মেঘ?(জন)

ইয়েস আ’ম ওকে। MK কোথায়?(মেঘ)
আমি এখানে স্যার। স্যার আপনার উপর আপনার সব চেয়ে আপন জন এট্যাক করেছে ৷ আর সে আপনাকে মারতে চায়।
কে সে MK।
ফারদিন চৌধুরী আপনার ছোট ভাই।

মেঘ ফারদিনের নাম টা শোনা মাত্র সিংহের মতো গর্জে ওঠে MK গলা চেপে ধরে। তোর সাহস কি করে হয় আমার ভাইয়ের নামে মিথ্যে কথা বলার বল। আন্সার মি।
মেঘ কি করছিস ছাড় ওকে ৷ ও যেটা বলেছে নিশ্চয় ওর কাছে কোন প্রফ আছে তাই না ৷ ছাড় ওকে মেঘ৷।
জনের কথায় মেঘ MK গলা ছেড়ে দেয় ৷ MK জোড়ে জোড়ে কয়েক বার শ্বাস নেয়৷ জন পানির বোতল টা এগিয়ে দেয় Mk দিকে। Mk পানি খেয়ে আবার বলতে লাগলো।
স্যার আমি একটা কথাও মিথ্যে বলছি না তার প্রমান আমি আপনাকে দিচ্ছি৷

এম কে মেঘের হাতে কয়েকটা ফটো দেয় ৷ যেগুলোয় ফারদিন একজন কে মোটা অংকের টাকা দিচ্ছে ৷ তারপর এম কে মেঘ কে একটা ফুটেজ দেখায়।
স্যার এটা ওই লোকটার শিকারক্তি। ট্রাক ড্রাইভার কে শেষ করে দিলেও তাকে যে সুপারি দিয়েছে এ সে ব্যাক্তি।

মেঘ খুব মনোযোগ দিয়ে ভিডিও টা দেখে। সব টা দেখে মেঘ ধপ করে চেয়ারে বসে পরে।
মেঘ। জন মেঘের দিকে আগাতে মেঘ হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলে। আমাকে মারার উদ্দ্যেশ্য কি ফারদিনের?

স্যার এটা এখনো আমাদের কাছে ক্লিয়ার নয় তবে ওনার বেস্টফ্রেন্ড জনি কে যদি আমরা তুলে এনে জ্বিগাসা বাদ করি তাহলে মে বি কিছু জানতে পারবো৷
জনি কে তুলে আন তাহলে আমি জানতে পারবো আমার ছোট ভাই আমাকে কেন খুন করতে চায়? সম্পত্তির জন্য নাকি অন্য কিছু!।
মেঘ এখন তোর রেস্টের প্রয়োজন তুই বাড়ি ফিরে যা তুই খাসনি বলে ভাবিও কিছু খায়নি।

কথা টা শুনে মেঘের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো। ফারহা ওর জন্য না খেয়ে আছে বেপার টা সত্যি মেঘের ভালো লাগছে ৷ যখন কোন ব্যাক্তি তার ভালোবাসার মানুষটার কাছে আস্তে আস্তে ইমপটেন্ট হয়ে ওঠে তখন সত্যি তার ভালো লাগে ৷ ফারহার মনে ওর জন্য যে একটু একটু করে যায়গা করে নিচ্ছে এটা মেঘ বেশ বুজতে পারছে ফারহা খাইনি বলে৷ কিন্তু এই খুশি টাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে যখনি ফারদিনের করা কাজ গুলো মনে পরে যাচ্ছে৷
স্যার আপনাকে আর একটা কথা জানানোর ছিলো। (এম কে)
কি কথা?

আজ আপনার গাড়ির ব্রেকফেল আপনার ভাইয়ের লোক করিয়েছে৷ এই দেখুন আপনার বাড়ির সি সি ক্যামেরার ফুটেজ।
মেঘ এবার সত্যি স্পিচলেস হয়ে যায়।
তার মানে আজও ফারদিন আমাকে খুন করতে চেয়ে ছিলো বাট হুয়াই ড্যাম ইট হুয়াই?
চিন্তা করবেন না স্যার কারন টাও খুব তারাতারি আমরা খুজে বের করবো৷

এম কে ফারদিনের ফোন ট্রাক করো ৷ কার কার সাথে কথা বলে কি নিয়ে কথা বলে তার সব রেকড রেকর্ডিং সব চাই আমার।
পেয়ে যাবেন স্যার।
আর ইউ ড্যান মেঘ? এখন বাড়িতে চল প্লিজ ভাবি তোর জন্য অপেক্ষা করছে৷
হুম।

রাত প্রায় এগারোটায় মেঘ জন বাড়িতে ফিরে ৷ ফারদিন ড্রয়িং রুমে বসে টি ভি দেখছিলো হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পিছুনে তাকিয়ে দেখে মেঘ কে দেখে ফারদিন চমকে যায়৷ মেঘ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফারদিনের দিকে মা বাবা মারা যাওয়ার পর এই ফারদিন ছিলো যার জন্য মেঘ বেচে ছিলো নাহলে কবে নিজেকে শেষ করে দিতো ৷ শুধু মাত্র ভাইটার মুখের দিকে তাকিয়ে বেচে ছিলো ৷ আর আজ জানতে পারলো তার- ই ভাই তাকে খুন করতে চায় একবার নয় দু বার চেষ্টা করেছে ৷ মেঘ নরম গলায় ফারদিন কে বলে। এখনো ঘুমাসনি?

ফারদিন মুখের এক্সপ্রেশন ঠিক করে হাসি মুখে বলে ওঠে। ঘুম আসছিলো না তাই কিন্তু তুই এতো লেট কেন করলি ব্রো?
কাজ ছিলো আচ্ছা ডিনার করেছিস?
হ্যা তুই তো জানিস আমার টাইম টেবিল। খেয়ে নিয়েছি তবে ফারহা খায় নি।
ভাবি ভাবি বল।

স্যরি ভাবি।
জন তুই খেয়েনিস আর সারবেন্ট কে বলে আমাদের খাবার টা উপরে পাঠিয়ে দিতে বল।
ওকে।
জন মেঘ চলে যেতে ফারদিন টিভির রিমোর্ট টা ফ্লোরে ছুড়ে মেরে নিজের চুল নিজে টানতে থাকে ৷

। এবারো মরলি না মেঘ কেন কেন কেন মরলি না তুই? তুই না মরলে আমি কখনো আমার রাতপরী কে নিজের করে নিতে পারবো না কারন আমাদের মাঝে সব চেয়ে বড় বাধা হচ্ছিস তুই শুধু তুই তাই তোকে তো মরতে হবে কিন্তু অন্য কেউ না এবার তোকে আমি নিজের হাতে মারবো।
কথা গুলো বির বির করতে করতে ফারদিন তার রুমে চলে গেল৷

মেঘ দরজা খুলে রুমে ফারহা কে দেখতে না পেয়ে ভয় পেয়ে যায়৷ দ্রুত ওয়াশরুম চেক করে সেখানেও না পেয়ে বেলকনিতে চেক করতে গিয়ে দেখে ফারহা গ্রিল ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে৷ ফারহা কে দেখতে পেয়ে মেঘ সস্থির শ্বাস ফেলে ফারহাকে পিছুন থেকে জরিয়ে ধরে মেঘ। মেঘ জরিয়ে ধরতে ফারহা ভয় পেয়ে যায় কিন্তু পরক্ষনে বুজতে পারে এটা কার স্পর্শ ৷ ফারহা মেঘের থেকে নিজেকে ছাড়াতে গিয়ে পারে না কারন যতোবার নিজেকে মেঘের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ঠিক ততোবার মেঘ আরো শক্ত করে ফারহাকে জরিয়ে ধরে।

মেঘ ফারহার গলায় মুখ গুজে দেয় সাথে সাথে ফারহা কেঁপে ওঠে ৷
ক,কি করছেন মিস্টার চৌধুরী।
সুইটহার্ট দেখছো না আমি মার বউ কে আদর করছি।
প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।

কেন নিজের বউ কে ধরছি ছাড়বো কেন? শরীল থেকে যেমন আত্তা কে বাদ দেওয়া যায় না ৷ হৃদয়ের স্পন্দন যেমন থামিয়ে রাখা যায় না ৷ ঠিক তোমাকে ছেড়ে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয় ৷ তুমি আমার হৃদস্পন্দন আমার শরীলের আত্তা আমার নিশ্বাস তুমি। তোমাকে কি করে ছেড়ে দি বলো?
ফারহা অবাক হয়ে মেঘের কথা শুনছে।
এই লোকটা কেন আমাকে এতো ভালোবাসে! আর আমিও কি ওকে ভালোবাসি? তা না হলে কেন এই লোকটার কষ্ট দেখলে আমার কষ্ট লাগে মনে হয় ক্ষত গুলো ওনার শরীলে নয় আমার শরীলে লেগেছে৷(মনে মনে)

কি ভাবছো জানপাখি? এটাই তো তুমি আমাকে ভালোবাসো নাকি না! আমি বলছি তুমিও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছো৷মেঘ ফারহা কে ছেড়ে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে ফারহার দুগালে হাত রেখে আবার ও বলতে লাগলো মেঘ। আমি জানি জানপাখি প্রথম থেকে তোমার প্রতি আমার আচরন ঠিক ছিলো না ৷ আমিও তোমার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম বাট ট্রাস্ট মি কখন কি ভাবে তোমার বাচ্চামো তোমার কথা তোমার আচরন তোমার হাসি তোমার কান্না তোমার রাগের উপর প্রেমে পরেছি সেটা আমি নিজেও জানি না ৷ জানো প্রেম তো মাত্র দু দিনের কিন্তু ভালোবাসা সেটা চিরস্থায়ী আর আমি তোমাকে ভালোবাসি ভিষন ভালোবাসি।

। ফ্রেস হয়ে আসুন আমি রুমে আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসছি। কথাটা বলে ফারহা দ্রুত মেঘের সামনে থেকে সরে আসে ৷ মেঘের ভালোবাসি কথা টা বার বার ফারহা কানে বাজছে ৷ ফারহা হঠাৎ ব্লাসিং করতে লাগলো। তখনি দরজায় কেউ নক করে।
। ভিতরে আসুন।
। ম্যাম আপনাদের খাবার।

টি টেবিলের উপর রাখুন।
ওকে ম্যাম।
মেঘ সারবেন্টের কথা শুনে বেলকনি থেকে বের হয়ে টাওয়াল নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে যায়৷ কিছুক্ষন পর মেঘ ফ্রেস হয়ে চেন্জ করে নিয়ে বেরিয়ে আসে ৷
ফারহা মেঘ কে বের হতে দেখে খাবারের প্লেট সাজিয়ে দেয় সামনে, মেঘ তার প্রতি ফারহার এতো কেয়ারিং দেখে মেঘের প্রচন্ড খুশি ৷
খেয়ে নিন মিস্টার চৌধুরী।

মেঘ ফারহার পাশে বসে পরে ৷ ফারহা মেঘের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখছে ৷ বড্ড ক্লান্ত লাগছে মেঘ কে চোখে মুখে বেদনার ছাপ ৷ ফারহার কেন যেন খুব কষ্ট হচ্ছে মেঘের মুখটা দেখে ৷ মেঘ কিছু বলার আগে ফারহা ভাত মাখিয়ে লোকমা বানিয়ে মেঘের মুখের সামনে ধরে। মেঘ অবাক হয়ে যায় ফারহা নিজ থেকে মেঘ কে খাইয়ে দিতে চাচ্ছে৷

মেঘের দু চোখ খুশিতে চিক চিক করছে যেটা ফারহার চোখ এরায় নি৷ ফারহা মেঘ কে এক লোকমা খাইয়ে দিয়ে নিজেও এক লোকমা খেয়ে নেয় ৷ দুজনের খাওয়া শেষ হতে ফারহা হাত ধুয়ে এটো প্লেট নিয়ে নিচে কিচেনে রাখতে চলে যায়৷ ফারহা কিচেনে প্লেট রেখে উপরে মেঘের রুমে দিকে যেতে হঠাৎ ফারহার মুখ চেপে ধরে অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়।

এভাবে তাকিয়ে থেকে কি ভাবছিস জনি এটাইতো তোকে কেন এখনো মারলাম না? কারন টা হলো তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড।
বেস্টফ্রেন্ড শব্দ টা শুনে তাচ্ছিল্যর হাসি হেসে উঠলো জনি।

আমি তোকে মারবো না জনি কিন্তু তোকে ততোক্ষন এখানে বন্দি থাকবে যতোক্ষন না আমি আমার রাতপরী কে নিজের করে নিচ্ছি৷
মেঘ ভাই তোর এই ইচ্ছে কখনো পূরন হতে দিবে না ফারদিন। (জনি)

ফারদিন জনির কথা শুনে প্রচন্ড রেগে যায় ৷ ফারদিন জনিকে ঘুশি মেরে কলাট চেপে ধরে বলে ওঠে। ডোন্ট ইউ ডেয়ার জনি আদার ওয়াইজ আই উইল কিল ইউ।
ফারদিনের কথা শুনে আবারও জনি তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে বলে উঠলো। একটা কথা জানিস তো ফারদিন যখন কুকুর পাগল হয়ে যায় তখন সে কুকুর কে মেরে ফেলতে হয় কারন কুকুর টা তখন মানুষের জন্য বিপদজনক হুমকি স্বরুপ হয়ে ওঠে৷।

জনির কথার মানে ফারদিনের বুজতে একটুও কষ্ট হয়নি তবুও ফারদিন ওর রাগ টা সামলে চেয়ারে লাথি মেরে বেরিয়ে যায়৷


পর্ব ২১

আজ খুব ভোর বেলায় ফারহার ঘুম ভেঙে যায়৷ ঘুমন্ত মেঘের কপালে ঠোট ছুইয়ে দিয়ে মেঘের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে চলে যায়৷ ফারহা আজ মেঘের জন্য গরম গরম পরোটা লুচি আলুর দম আর গরুর মাংস ভুনা করে ফেলে ৷

ফারহা সম্পূর্ন রান্না টা ইউটিউভ দেখে দেখে করে ফেলে ৷ ফারহা খাবার গুলো ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে ফেলে উপরে চলে যায় ৷ দু- ঘন্টা রান্না ঘরে কাটিয়ে ফারহা পুরো ঘেমে নেয়ে গেছে ৷ ফারহা দ্রুত রুমে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় শাওয়ার নেওয়ার জন্য। শাওয়ার নিয়ে রুমে এসে মেঘ কে না দেখতে পেয়ে ভয় পেয়ে যায় ফারহা।

মিস্টার চৌধুরী কোথায় গেলো? ফারদিন মেঘের কোন ক্ষতি করে ফেলেনি তো!। ফারহা ঘাবড়ে গিয়ে রুমের বাইরে যেতে নিলে মেঘের বুকের সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে নিলে মেঘ ফারহার কোমড় জরিয়ে ধরে ৷
জানপাখি এতো সকালে এভাবে ছুটোছুটি করছো কেন পরে গিয়ে হাত পা ভাঙতে হু। খানিকটা রাগ নিয়ে বললো মেঘ।

ফারহা নিজেকে ছাড়িয়ে একটু দুরে সরে দারিয়ে বলে। কোথায় গিয়েছিলেন আপনি আপনাকে রুমে না দেখতে পেয়ে আমি তো ভ, বাকিটা বলতে গিয়ে থেমে যায় ফারহা। ঘাবড়ে গিয়ে ফারহা কথা গুলো এভাবে বলে ফেলবে ভাবেনি ৷ ফারহা চায়না এতো তারাতারি মেঘ জানুক ও মেঘের প্রতি দূর্বল হয়ে পরেছে৷
কি হলো জানপাখি বলো কি বলছিলে আমাকে না দেখতে পেয়ে তুমি ভয় পেয়ে গেছেলি তাই না? কিন্তু আমাকে না দেখতে পেয়ে তুমি ভয় কেন পাচ্ছিলে তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাই না। মেঘের ঠোটের কোনে দুষ্টুমির হাসি। ফারহার বুজতে বাকি নেই মেঘ ওকে নিয়ে মজা করছে ৷

দেখুন আপনি রুমে ছিলেন আর হঠাৎ করে আপনাকে না দেখতে পেয়ে ভাবছিলাম আপনি হয়তো অফিসে চলে গেছেন তাই ভাবলাম।
মাঝ থেকে কথা কেটে মেঘ আবার বলে উঠলো। কি ভাবলে শুনি? আর বাই দ্যা ওয়ে তুমি সকাল সকাল শাওয়ার কেন নিলে আমি তো গতকাল রাতে তোমার সাথে কিছু করেনি তাহলে!। চিন্তিত ভঙ্গিতে বললো মেঘ।

মেঘের কথা শুনে ফারহা গাল দুটো লাল বর্ন ধারন করলো। ছিঃ আপনার মুখে কি কিছুই আটকায় না ৷ তখন থেকে কি সব বলে যাচ্ছেন আপনি হ্যা। যান গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিন আমি টেবিলে ব্রেকফাস্ট দিতে বলছি ৷ কথা টা বলে ফারহা দ্রুত মেঘের সামনে থেকে সরে যায়৷ আর এক মুহূর্ত মেঘের সামনে দারালে ফারহা লজ্জায় হয়তো ব্লাস্ট হয়ে যেত৷
মেঘ যখন ঘুমিয়ে ছিলো তখন এম কে ফোন করে মেঘ কে। মেঘ ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে পানির শব্দ পেয়ে বুজতে পারে ফারহা ওয়াশরুমে তাই রিক্স না নিয়ে বাইরে চলে যায় ফোনে কথা বলতে।

ফারহা দরজা কিছুটা ফাক করে আগে দেখে নেয় মেঘ রুমে আছে কিনা। মেঘ কে রুমে না দেখতে পেয়ে ফারহা রুমে ঢুকে ভেজা চুল গুলো হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে শুকিয়ে নিয়ে চোখে কাজল মুখে ক্রিম ঠোটে ভ্যাজলিন কানে দুল হাতে কাচের চুড়ি। গলায় চেইন পরে নিয়ে চুলে চিরনি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় মেঘ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসার আগে।

ফারদিন শিস বাজাতে বাজাতে নিচে নেমে আসতে লাগলো আর পিছুনে মেঘ দুজনে নিচে নেমে এসে ফারহা কে দেখে থমকে যায়৷ গোলাপি রঙের চুড়িদার পড়া হাতে মুঠো ভর্তি কাচের চুড়ি চোখে কাজল কানে ঝুমকো ৷ দুজনের হার্ডবিট যেন থেমে গেছে ৷

ফারহা ফারদিন কে দেখে চোখ মুখ কুচকে যায়৷ তখনি মেঘ কে ফারদিনের পিছুনে দেখে ঠোটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে ৷ দুজনে এগিয়ে আসে ফারহার দিকে। মেঘ ফারদিন দুজনে চেয়ারে বসে পরে ৷ ফারহা একজন সারবেন্ট কে ইশারা করতে সারবেন্ট ফারদিন কে খাবার সার্ব করে দেয় আর ফারহা মেঘ কে খাবার সার্ব করে দেয় আর নিয়ম অনুযায়ী ফারহা মেঘ কে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়৷ যেটা দেখে ফারদিনের চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠলো ৷ ভিতরে ভিতরে ফুসছে ফারদিন ৷ ফারদিনের ইচ্ছে করছে এখুনি মেঘ কে শেষ করে দিতে ৷

নাহ ব্রো আর দেরি না তোকে আগে দু বার শেষ করতে গিয়ে ও শেষ করতে পারলাম না বাট ইউ ডোন্ট ওয়ারি ব্রো তোকে এবার আমি নিজের হাতে শেষ করবো তারপর রাতপরী শুধু আমার হবে৷”(মনে মনে)

আজ খাবারের স্বাদ টা একটু ভিন্ন লাগছে জানপাখি তবে দারুন হয়েছে৷
স্যার আজ সব রান্না ম্যাম করেছেন নিজের হাতে। (সারবেন্ট)

সারবেন্টের কথা শুনে মেঘ অবাক ৷ মেঘের জানা মতে ফারহা রান্না করতে পারে না তবে এতো গুলো খাবার কি করে একা রান্না করলো? মেঘ মনে মনে বলতে লাগলো।
ওয়াও আমার রাতপরীর হাতের রান্না এতো সুস্বাদু হয়েছে মনে হচ্ছে সবটাই আমি একা সবার করে দি। (মনে মনে বলতে লাগলো ফারদিন)
মেঘ খাওয়া শেষ করে ফারহার হাতে চুমু দিয়ে উঠে যায় ৷

জানপাখি আমাকে বের হতে হবে খুব তারাতারি চলে আসবো তুমি সাবধানে থাকবে আর কিচেনে পা রাখবে না ৷ কিছু প্রয়োজন হলে সারবেন্ট কে বলবে বুজতে পেরেছো?
ফারহা মাথা নারে যার অর্থ হ্যা, মেঘ বের হবার আগে ফারদিনের সামনে ফারহার কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায়৷
মেঘ বের হতে ফারদিনের ঠোটের কোনে শয়তানি হাসি ফুটে ওঠে ৷

জনি ওয়েকআপ জনি জনি চোখ মেলে তাকা। (জন)
জন ওর চোখে মুখে পানি ছিটে দে ৷ আর এম কে ডক্টর কে ফোন করে এখুনি আসতে বল৷। (মেঘ)
ওকে স্যার।

কিছুক্ষণ পর ডক্টর এসে জনির পুরো শরীলে ক্ষত স্থানে ঔষধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়৷ সাথে ইন্জেকশন দিয়ে দেয়৷
মিস্টার চৌধুরী এখন উনি ঠিক আছে ৷ আর কিছুক্ষন পর জ্ঞান ফিরে আসবে৷
থ্যাংন্ক ইউ ডক্টর৷ জনি ওখানে ছেড়ে আয়।

ওকে।
বিশ মিনিট পর জনির জ্ঞান ফিরে আসে৷ চোখ মেলে তাকিয়ে মেঘ কে দেখতে পেয়ে জনি উঠে বসতে চায় ৷ মেঘ সাবধানে জনি কে উঠে বসতে সাহায্য করে৷
মেঘ ভাই আপনি ঠিক আছেন তো?

হুম আমি ঠিক আছি কিন্তু তুই বল হাইওয়েতে এভাবে অজ্ঞান হয়ে পরেছিলি কেন আর এই অবস্তা তোর কি করে হলো? আর কে করলো তোর এই অবস্তা?(মেঘ)
ফারদিন। ফারদিন করেছে আমার এই অবস্তা আমি ওর আস্তানা থেকে পালিয়ে এসেছি কিন্তু রাস্তায় আমার মাথা ঘুরে যায়।
ওয়েট জনি ফারদিন তোর এই অবস্তা করেছে মানে?

ভাইয়া আমি জানি তুমি আমার কথা বিশ্বাস করবে না তবুও বলছি তোমাকে দু বার মারার চেষ্টা ফারদিন করেছে ৷ ফারহা ভাবিকে পাওয়ার জন্য।
জনির কথা শুনে মেঘের চোখ মুখ একে বারে শান্ত জন এম কে জনি প্রত্যেকের মুখের চিন্তার ছাপ মেঘের কোন রিয়েকশন না দেখে ৷ এ যেনকোন বড় ঝড় আসার পূর্ব সংকেত৷
মেঘ তুই কিছু বলছিস না কেন?(জন)
হুট করে মেঘের মনে হলো ফারহার কথা বাড়িতে ফারহা একা আছে আর ফারদিন সেও তো বাড়িতে মেঘ আর এক মুহূর্ত দেরি না করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়৷

বাড়িতে ফিরে মেঘ মেইন ডোর খোলা দেখতে পেয়ে ঘাবড়ে যায় ৷ দ্রুত ভিতরে ঢুকে দেখে সারবেন্টরা সবাই নিচে জ্ঞান হারিয়ে পরে আছে৷ মেঘ দ্রুত উপরে উঠে রুমে গিয়ে ফারহা কে না দেখতে পেয়ে পুরো বাড়ি খুজে ও ফারহা কে না পেয়ে মেঘ ভয় পেয়ে যায়৷ মেঘের বুজতে বাকি নেই ফারহার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে ৷ মেঘ দ্রুত নিচে এসে সারবেন্টদের চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দেয় ৷ সারবেন্টদের জ্ঞান ফিরতে মেঘ কে দেখে সারবেন্ট বলতে লাগলো। স্যার ম্যাম কে বাচান ফারদিন স্যার ম্যাম কে অজ্ঞান করে কোথাও একটা নিয়ে গেছে ৷

মেঘ আমাদের এখুনি কিছু একটা করতে হবে আর জনির কথা মতো ফারদিন মানুষিক ভাবে সুস্থ নয় মানুষিক ভাবে অসুস্থ৷(জন ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে উঠলো)
হ্যা ভাইয়া আমাদের এখুনি কিছু করতে হবে নাহলে ফারদিন রাগের মাথায় ভাবির কোন ক্ষতি করতে পারে৷। (জনি)
আমি বেঁচে থাকতে কিচ্ছু হতে দিবো না আমার জানের ৷ আমি আসছি জানপাখি আমি আসছি তোমার কাছে।
অন্যদিকে।


অন্তিম পর্ব

মেঘ আমাদের এখুনি কিছু একটা করতে হবে আর জনির কথা মতো ফারদিন মানুষিক ভাবে সুস্থ নয় মানুষিক ভাবে অসুস্থ৷(জন ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে উঠলো)
হ্যা ভাইয়া আমাদের এখুনি কিছু করতে হবে নাহলে ফারদিন রাগের মাথায় ভাবির কোন ক্ষতি করতে পারে৷। (জনি)
আমি বেঁচে থাকতে কিচ্ছু হতে দিবো না আমার জানের ৷ আমি আসছি জানপাখি আমি আসছি তোমার কাছে।

অন্যদিকে ফুলের বিছানায় শুয়ে আছে ফারহা ৷ এখনো জ্ঞান ফেরেনি ফারহার, ফারদিন ফারহার বা হাতটা ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে,
রাতপরী তোমার চোখ মেলে তাকানোর অপেক্ষায় আছি ৷ তোমার জ্ঞান ফিরে আসলে আর এক মুহূর্ত দেরি করবো না তোমাকে বিয়ে করে নিবো৷।
ফারহা চোখ মেলে তাকাতে ফারদিনের কথা গুলো মস্তিষ্কে পৌছাতে ফারহা উত্তিজিত হয়ে পরে ৷
আ,আমি কোথায় আর মেঘ কোথায়?
কাম ডাউন রাতপরী একটু পর তোমার আর আমার বিয়ে।

ওয়াট, এই বিয়ে আমি কখনো করবো না মিস্টার ফারদিন চৌধুরী ৷ আমি মেঘের বিবাহিত স্ত্রী ভূলে যাবেন না ৷ সরুন আমাকে যেতে দিন৷।
ফারহা বিছানা থেকে উঠতে নিলে ফারদিন প্রচন্ড রেগে ফারহার গালে থাপ্পোর মেরে বিছানার সাথে দু হাত চেপে ধরে বলে উঠলো। তুই শুধু আমার শুধু আমার আর কারো না আর তোর ওই মেঘ কে আমি তোর- ই সামনে মেরে ফেলে তোকে বিয়ে করবো৷

ফারহা ফারদিনের মুখে থু থু মেরে বলে। জানোয়ার আমার মেঘের মাথার একটা চুল ও তুই বাকা করতে পারবি না আর সেখানে তুই ওকে মারার প্লান করছিস হাউ ফানি ৷ তৈরি হো আমার মেঘের হাতে মরার জন্য।

ফারদিন রেগে রুম থেকে বের হয়ে যায় ৷ ফারদিন বেরিয়ে যাওয়ার দু মিনিট পর দুজন মেয়ে রুমে ঢুকে।
আপনারা কে?

আমাদের ফারদিন স্যার পাঠিয়েছে আপনাকে সাজানোর জন্য।
হু মেঘ বেচে থাকতে তার জানপাখিকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না ৷ ঠিক আছে সাজান আপনারা খুব সুন্দর করে সাজান আমাকে।

মেয়ে গুলো ফারহার কথা শুনে বেশ অবাক হয়ে যায় ৷ মেয়ে গুলো ভেবেছিলো ফারহা সাজতে চাইবে না চেচামেচি করবে ৷ কিন্তু এখানে সবটাই পুরো উলটো ঘটছে ৷ মেয়ে গুলো চুপচাপ ফারহা কে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো ৷ ফারহা আয়নার সামনে দারিয়ে নিজেকে দেখছে ভারি গয়না নীল বেনারসী শাড়ী দু হাতে সোনার মোটা বালা আর চুড়ি। মুখে ভারি সাজ। ফারহা আয়নাতে নিজেকে দেখে নিজে চিনতে পারছে না ৷
। বাহ খুব সুন্দর সাজিয়েছেন তো।

থ্যাংকিউ ম্যাম। এখন আমরা আসি।
হুম।
মেয়ে গুলো চলে যেতে ফারদিন ভিতরে ঢুকে ফারহার দিকে চোখ পড়তে ফারদিনের চোখ দুটো আটকে যায়৷
অপূর্ব।

অফকোর্স অপূর্ব লাগবে কজ আমি আপনার ভাইয়ের বউ আপনার একমাত্র ভাবি সো চোখ নামিয়ে ফেলুন৷।
ফারহার কথা গুলো শুনে ফারদিনের চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে আছে৷
উফফ দেবরজি এভাবে লজ্জায় লাল হলে হবে হু যাও নিজের ভাইকে ওয়েলকাম করো কারন সে আসছে৷”
দেখ কেমন লাগে না আমি তোর মতো সাইকো কে ভয় পাবো আর না নিজে দূর্বল হবো যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ এই ফারহা কি কি করে তা এবার তোমায় দেখাবো দেবরজি। (মনে মনে)

ফারদিন রেগে ফারহার হাত ধরে রুমের বাইরে নিয়ে আসলো ৷ ফারহা চারিদিক তাকিয়ে দেখে বুজতে পারলো এটা চৌধুরী ম্যানশন না ৷ চারিদিকে গান হাতে গার্ড পাহারা দিচ্ছে ৷
ফারদিন ফারহার হাত ধরে সোফায় বসিয়ে দিয়ে হুজুর মতো একটা লোক কে বিয়ে শুরু করতে বলে।

এইজে দেবরজি এই সব কি হচ্ছে হু তুমি বিয়ে করছো আর আমাকে বলোনি ৷ ওকে মাইন্ড করলাম না এখন বলো মেয়ে টা কে?(দাত কপাটি বের করে)
মজা করছো আমার সাথে? বিয়েটা তোমার আর আমার হচ্ছে বুজতে পেরেছো?(দাঁতে দাঁত চেপে বললো ফারদিন)
ওয়াট এ্য জোক দেবরজি ৷ আচ্ছা বুড়ো দাদু আপনি বলেন একজন বিবাহিত মেয়ে কি আবার বিয়ে করতে পারে?
না পারে না যতোক্ষন না সে মেয়ের তালাক হচ্ছে৷।

শুনে নিয়েছেন দেবরজি এর মানে মেঘের সাথে আমার তালাক না হওয়া পর্যন্ত আপনি আমাকে বিয়ে করতে পারবেন না ৷ আর না মেঘ আমাকে তালাক দিবে৷ সো আমাকে বিয়ে করার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন৷ আর এই যে লম্বু তারের খাম্বা এভাবে গান নিয়ে দারিয়ে না থেকে আমার জন্য এক গ্লাস পানি নিয়ে আসুন ঝটপট।
গার্ড ফারহার কথা শুনে হতবম্ব হয়ে যায়৷ গার্ড ফারদিনের দিকে তাকাতে ফারদিন ইশারা করে আনতে ৷

ফারহা পানি খেয়ে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আঙ্গুলের ফাকে ফাকে কলম ঘুড়াতে থাকে৷
ফারদিন কি করবে বুজতে পারছে না ৷ ফারহার কথার জালে বার বার ফেসে যাচ্ছে ফারদিন৷ হুঠাৎ করে বাইরে গুলির আওয়াজ পায় ফারদিন ফারহা।
বাইরে শব্দ শুনতে পারছেন দেবরজি ৷ আমার মেঘ এসে গেছে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে।

এটা তোমার স্বপ্ন রাতপরী এটা কখনো এই ফারদিন চৌধুরী হতে দিবে না৷। কথাটা বলে ফারদিন বসা থেকে উঠে বাইরের দিকে যেতে যাবে তখনি মেইন দরজা খুব জোড়ে খুলে যায়৷ ফারদিন সামনে তাকিয়ে দেখে মেঘ হাতে গান নিয়ে দারিয়ে আছে ৷ মেঘ কে আজ প্রচন্ড ভয়ঙ্কর লাগছে ফারদিন মেঘ কে দেখে তেতে ওঠে।
এসে গেছিস তুই আমার হাতে মরতে এসে গেছিস। (ফারদিন)

মেঘ কিছু বলছে না ফারদিন কে গান আঙ্গুলের ফাঁকে ঘুড়াতে ঘুড়াতে ফারদিনের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলতে লাগলো। ফারদিন তুই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস আর কেউ আমার জিনিসের উপর অধিকার খাটাবে এটা আমি যে কোন মতে মেনে নিতে পারবো না ফারদিন ৷ বাট তোকে একটা লাস্ট সুযোগ দিতে চাই আমি।

স্টপ ব্রো স্টপ আমি তোর জিনিসের উপর অধিকার খাটায়নি বরং তুই আমার জিনিসের উপর অধিকার খাটিয়েছিস ৷ প্রথম থেকে আমি ফারহা কে ভালোবাসতাম কিন্তু তুই কি করলি তুই আমার ভালোবাসা কে তোর নিজের করে নিলে ! আর কি বললি সুযোগ হাহ সুযোগ আমি তোকে দিচ্ছি চলে যা আমাদের জিবন থেকে নাহলে তোকে খুন করতে আমার হাত কাঁপবে না।

ফারদিনের কথা শুনে ফারহা মেঘ দুজনে হেসে ফেলে এটা দেখে ফারদিন প্রচন্ড ক্ষেপে যায়৷ গার্ডদের ইশারা করে মেঘ কে আক্রমন করতে কিন্তু কোন গার্ড- ই সাহস করে মেঘের দিকে গান তাক করার সাহস করে উঠতে পারছে না৷ প্রত্যেকে মাথা নত করে আছে এটা দেখে ফারদিনের মাথা নষ্ট হওয়ার যোগার ৷ ফারদিন গার্ডের হাত থেকে গান ছিনিয়ে নিয়ে মেঘের দিকে তাক করে ৷ ফারহা এবার ভয় পেয়ে যায় মেঘের দিকে গান তাক করতে দেখে ৷ ফারহা ছুটে মেঘের ফারদিনের গানের সামনে দারায়।

সরে যাও রাতপরী আমি আজ ওকে শেষ করে দিবো তার পর তোমাকে পেতে আমার আর কোন বাধা থাকবে না৷।
যাস্ট শ্যাটআপ। এতোটা নিচে কি করে নামতে পারেন আপনি নিজের বড় ভাই কে মারতে চান ছিঃ।

ফারহা কথা গুলো বলে মেঘের দিকে যেতে নিলে ফারদিন উত্তিজিত হয়ে বলতে লাগলো। ফিরে এসো রাত পরী ফিরে এসো নাহলে আমি তোমাকে শুট করে দিবো৷
মেঘ ফারদিনের চোখ দুটো দেখে ফারহা কে বলতে লাগলো। জানপাখি স্টপ ওখানে দারিয়ে যাও প্লিজ। মেঘের কথা শেষ হওয়ার পূর্বে গুলির আওয়াজ হতে মেঘ থমকে গেল৷ মেঘের চোখের সামনে ফারহা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ৷ মেঘ ছুটে যায় ফারহার কাছে আর ফারদিন ওখানে হাটু গেরে বসে পরে।
ছয় মাস পর।

মেঘ ফারহা দুজনে আজ মেন্টাল হসপিটালে এসেছে ফারদিনের সাথে দেখা করতে ৷ ছয়মাস পূর্বে ফারহা কে শুট করার পর ফারদিন পুরো পুরি মানুষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরে ৷ মেঘ ফারহা আর ফারদিন দুজন কে হসপিটালে এডমিট করে দেয় ৷ ফারহার পিঠে গুলি লাগে ৷ অপারেশন করার এক মাস পর ফারহা সুস্থ হয়ে ওঠে কিন্তু ফারদিন সুস্থ হয়ে ওঠে না ৷ ফারদিন কে মেন্টাল হসপিটালে ভর্তি করতে বাধ্য হয় মেঘ৷

স্যরি মিস্টার এন্ড মিসেস চৌধুরী আমি এই ছয় মাসে আপনাদের ভালো কোন সংবাদ দিতে পারলাম না৷
আমরা ফারদিনের সাথে দেখা করতে চাই ডক্টর।

ওকে চলুন।
ডক্টর মেঘ ফারহা কে নিয়ে ফারদিনের কেবিনের সামনে নিয়ে যায় ৷ মেঘ ফারহার দুজনের চোখ ছল ছল করছে পুরো কেবিনের দেয়ালে রাতপরী নাম লেখা আর ফারদিন শুধু বির বির করে বলে যাচ্ছে। রাতপরী শুধু আমার শুধু আমার।

ফারদিন। (মেঘ)
কে তোমরা কেন এসেছো আমার রাতপরী কে আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে হ্যা কখনো না রাতপরী শুধু আমার শুধু আমার চলে যা চলে যা। বলেই হাতের কাছে যা পাচ্ছে তা ছুড়ে মারছে ৷ মেঘ বাধ্য হয়ে ফারহা কে নিয়ে কেবিনের সামনে থেকে সরে যায়৷

মেঘ ফারহার মনের অবস্তা বুজতে পেরে ফারহাকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলো। ডোন্ট বি স্যাড জানপাখি নিজেকে একদম দোষারোপ করবে না কারন ফারদিনের এই অবস্তার জন্য তুমি দায়ি নও ৷ ফারদিন আগে থেকে মানুষিক ভাবে অসুস্থ ছিলো৷

কিন্ত।
কোন কিন্তু নয়। আজ আমাদের ডক্টরের কাছে তোমার রিপোর্ট আনতে যাওয়ার কথা ছিলো চলো হসপিটালে যেতে হবে আমাদের।
হু।

ডক্টরের সামনে বসে আছে মেঘ ফারহা। ডক্টর রিপোর্ট টা চেক করে মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বলে উঠলো। Congratulations মিস্টার এন্ড মিসেস চৌধুরী ৷ আপনারা বাবা মা হতে চলেছেন৷ চার সপ্তাহ চলছে মিসেস চৌধুরীর প্রেগনেন্সির৷

ডক্টরের কথা শুনে মেঘ খুশিতে কেঁদে ফেলে ৷ ফারহা অবাক হয়ে মেঘ কে দেখছে মানুষটা বাবা হতে চলেছে জেনে এতোটা খুশি হবে এটা ফারহা ভাবেনি ডক্টরের সামনে ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরতে লাগলো ৷ ডক্টর মেঘের পাগলামো দেখে হেসে ফেলে।
মেঘ কি করছো পরে যাবো তো নামাও আমাকে মাথা ঘুরছে আমার।

ফারহার কথা শুনে মেঘ থেমে গেল ঠিকি কিন্তুফারহা কে কোল থেকে নামায় নি ৷ ফারহা কে সোজা গাড়িতে বসিয়ে চৌধুরী ম্যানশনে ফিরে আসে ৷ বাড়িতে ফিরে ফারহা তার মা বাবা কে দেখে প্রচন্ড খুশি হয় ৷ ফারহার প্রেগনেন্সির খবর জেনে ফারিহা জন জনি ফারহার বাবা মা ভিষন খুশি হয় ৷ মেঘ তাদের এবাড়িতে থেকে যেতে বলে যাতে তারা তাদের মেয়ের কাছে থাকতে পারে৷

রাতে ফারহা বেলকনিতে দারিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ ফারহা পিছুনের দিন গুলোর কথা ভাবতে লাগলো সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরবার পর মেঘের ভালোবাসর কমতি হয়নি বরং দিনকে দিন বেরে গেছে তার পাগলামি ভালোবাসা ৷ ফারহা ও নিজেকে মেঘের ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নেয় ৷ শুরু হয় ভালোবাসাময় পথ চলা দুজনে৷
মেঘের স্পর্শে ফারহার ঘোড় কাটে।

এই সন্ধে বেলায় এখানে কি করছো জানপাখি?
জুনিয়র মেঘ কে নিয়ে আকাশ দেখছি মিস্টার চৌধুরী।

উফফ জানপাখি কবে এই মিস্টার চৌধুরী বলা বন্ধ করে শুধু মেঘ বলে ডাকবে হুম।
ওটা না হয় পরে হবে এখন আপনার সাথে জন ভাই আর ফারিহার বিয়ে নিয়ে কিছু কথা আছে৷।
মেঘ ফারহার চুলে মুখ গুজে বলতে লাগলো। বলে ফেলো জানপাখি।

আব্বু আম্মু চায় যতো তারা তারি সম্ভব জন আর ফারিহার বিয়ে টা দিয়ে দিতে।
বেশ তো তুমি ডেট ফিক্সড করে জন কে জানিয়ে দেও।

কিন্তু ভাইয়ার বাবা মা কে না…… বাকিটা বলতে পারলো না। তার আগেই মেঘ ফারহার ঠোটে ঠোট ডুবিয়ে দেয়৷ পাচঁ মিনিট পর ঠোট জোড়া ছেড়ে দিয়ে মেঘ ফারহাকে কোলে তুলে নিয়ে বলে ওঠে, এখন আর কোনো কথা হবে না। জানপাখি, শুধু ভালোবাসা হবে, ভালোবাসা। বলে ফারহা কে নিয়ে বিছানার দিকে এগোতে লাগলো মেঘ আর ফারহা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে৷

লেখা – Farhana Chobi

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “পাগলামি ভালোবাসা গল্প – bangla love story facebook” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ। )

আরো পড়ূন – নিকাহ – bangla romantic biyer golpo from fb

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *