অবুঝ ভালোবাসার গল্প

অবুঝ ভালোবাসার গল্প – বান্ধবীর সাথে প্রেম | College Love Story

অবুঝ ভালোবাসার গল্প: ভালোবাসা শব্দের সাথে একটা অবুঝ আর পাগলামি ভাব মিশে আছে। বুঝে শুনে ভেবে চিন্তে আর যাই হোক ভালোবাসা বা প্রেম হয় না। লোকে বলে প্রেম নাকি অন্ধ। আসলে তাই, চলুন এরকম একটি দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প পড়ি।

আজ আমার কলেজে প্রথম দিন আমি যখনি কলেজে ঢুকতে যাব তখনি পরলাম বিপদে একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে গেলাম।

মেয়েটিঃ এই যে আপনি দেখতে পান না নাকি।

আমিঃ আসলে আমি না দেখতে পাই নাই সরি।

মেয়েটিঃ ইটসসস ওকে।

আমিঃ আচ্ছা আপনি কোন বর্ষে পড়েন।

মেয়েটিঃ আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পরি আপনি।

আমিঃ ওওও আমিও। আচ্ছা আমরাতো বন্ধু হতে পারি কারণ আমরা তো সমবয়সী।

মেয়েটিঃ ওকে কাল ভেবে দেখবো।

আমিঃ ইসসসস মেয়েটারতো নামটাই শুনা হইলোনা। মেয়েটি ছিল দেখতে খুবই সুন্দর। চোখগুলো টানা টানা। মুখে হালকা লিপস্টি। সব মিলয়ে খুব সুন্দর লাগছিল। তারপর নিজের ক্লাসের দিকে হাটা শুরু করলাম। চলুন, এর ফাকে আমি আমার পরিচয়টা দিয়ে দিই। আমার নাম নীল আমি এইবার অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আমি ক্লাসের সামনে চলে এসেছি। ক্লাসে ঢুকে সবার সাথে পরিচয় হলাম। তারপর দেখলাম সেই মেয়েটি অন্য একজন এর সাথে বসে আছে। স্যার ক্লাসে এসে সবার নাম শুনলো। তারপর ওই মেয়েটি তার নাম বললো যে মোহিনী। খুব সুন্দর নাম। তারপর আমি ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসার পর আম্মু বললো……

আম্মুঃ নীল কলেজের প্রথম দিন কেমন কাটলো।

আমিঃ জি আম্মু খুব ভালো।

আম্মুঃ আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। আমি খাবার দিচ্ছ।

আমিঃ আচ্ছা আম্মু যাচ্ছি।

তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম। তারপর খাওয়া করে নিজের রুমে চলে গেলাম। তারপর দিলাম একটা ঘুম। ঘুম থেকে উঠে চলে গেলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে তারপর সন্ধায় বাড়িতে চলে গেলাম। তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। পরের দিন আবার কলেজে গেলাম তারপর যা হইলো……

তারপরের দিন কলেজে গিয়ে যা হইলো আবার ওই মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা প্রতিদিন ধাক্কা খাওয়ার জন্য কী আমাকেই দেখাতে পান।

নীলঃ আরে রাগ করছেন কেন আমি কী ইচ্ছা করে করছি নাকি।

মোহিনীঃ চুপ করেন। আপনার জন্য আমার ক্লাসের দেরি হয়ে গেল।

নীলঃ আচ্ছা চলুন একসাথে ক্লাসে যাই।

মোহিনীঃ হুমম চলুন।

নীলঃ আচ্ছা আপনাকে আমি কালকে কিছু বলছিলাম মনে আছে আপনার।

মোহিনীঃ হুমমম মনে আছে। যেহেতু আমরা সমবয়সী আর একই ক্লাসে পরি। তাহলে আমরা বন্ধু হতেই পারি।

নীলঃ আপনি আমার সম্পর্কে কিছু শুনবেন না।

মোহিনীঃ হুমম অবশ্যই বলুন।

নীলঃ আমার নাম হলো নীল চৌধুরী। আর আমি এখানে আমার আব্বু আম্মু আর ছোট ভাই এর সাথে থাকি।

মোহিনীঃ ওওওহহ ভালোই তো।

নীলঃ আমার সম্পর্কে তো সব শুনলেন আপনার সম্পর্কে কিছু বলেন।

মোহিনীঃ আমার সম্পর্কে বলার মতো কিছুই নাই। আমি গ্রামে থাকি।কিন্তু এখানে এসেছি পড়ালেখা করার জন্য। আর আমি এখানে আমার মামা বাড়িতে থাকি।

নীলঃ আচ্ছা আপনার কোন ছোট ভাই বোন নাই।

মোহিনীঃ আছে তো আমার একটা ছোট বোন আছে।

নীলঃ ওওওহহহ আচ্ছা চলুন ক্লাসের সামনে চলে এসেছি।

মোহিনীঃ আচ্ছা চলুন।

নীলঃ তারপর যে যার মতো ক্লাসে চলে গেলাম। তখনি সারের আগমন। স্যার কিছুক্ষণ ক্লাস নিয়ে চলে গেলেন।

তারপর কালকের বানানো কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম। তাদের মধ্যে রহিম আর বকুল এর সাথে আমার ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল। এরই মাঝে রহিম বলে উঠলো।

রহিমঃ আচ্ছা দোস্ত তুই সত্যি কথা বলতো তুই ওই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ছিলি কেন?

নীলঃ আরে কোন মেয়ের কথা বলছিস।

রহিমঃ আরে দোস্ত আমি মোহিনীর কথা বলছি।

নীলঃ আরে না রে কী যে বলিস না। মেয়েটি খুব ভালো। তার দিকে তাকিয়ে থাকলে কেমন জানি একটা মায়ায় পরে যাই। আর আমি ওর সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম তাই ওকে সরি বলছিলাম এতটুকুই বুঝেছিস।

রহিমঃ আরে দোস্ত অন্তত আমাদেরকে সত্যি কথাটা বল।কী রে বকুল তুই কিছু বল।

বকুলঃ হে রে দোস্ত বল আমরা যদি কোন সাহায্যে করতে পারি।

নীলঃ আরে তোরা চুপ করবি কী যাতা বকছিস।আমি তো ওর সাথে শুধু বন্ধত্ব করার জন্য কথা বলছিলাম।

রহিমঃ হুমম দোস্ত বুঝি বুঝি আমরাও বুঝি।

নীলঃ তোরা থাক আমি গেলাম।

বকুলঃ আরে আরে রাগ করছিস কেন আমরাতো তোর সাথে একটু মজা করলাম।

নীলঃ আচ্ছা এখন অনেক মজা করছিস চল বাসায যাব।

রহিমঃ হুমম চল।

তারপর আর কিছু না বলে আমরা যে যার বারি চলে গেলাম। বাসায় যাওয়ার পর আম্মু বললো……

আম্মুঃ নীল এতক্ষণ কোথায় ছিলা।

নীলঃ আম্মু এমনি কলেজের বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।

আম্মুঃ আচ্ছা এখন যাও উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।

নীলঃ জি আম্মু যাচ্ছি।

আম্মুঃ হুমমম যাও।

নীলঃ আমি আর কোন কথা না বলে চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য।

তারপর খাওয়া করে দিলাম একটা ঘুম। বিকালে ফোনের আওয়াজে ঘুমের বারটা বাজে গেল। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি সালা সয়তানটা ফোন দিছে। ফোন রিসিভ করার পর বলল……

বকুলঃ দোস্ত কই তুই?

নীলঃ আমিতো বাসায় দোস্ত, কেন?

বকুলঃ আয় আমাদের এখানে সবাই অপেক্ষা করছে তোর জন্য।

নীলঃ আচ্ছা তোরা থাম আমি যাচ্ছি।

বকুলঃ ওকে তারাতারি আয়।

নীলঃ আর কোন কথা না বারিয়ে চলে গেলাম আড্ডা দিতে।

অনেক্ষন আড্ডা দেওয়ার পর বারিতে গেলাম। পরের দিন যথা সময়ে কলেজে গেলাম। কলেজে গিয়ে যা দেখলাম তার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।

আমি দেখলাম মোহিনী একটা ছেলেকে ধরে মারতেছে আমিতো দেখে অবাক। কী গুন্ডি মেয়েরে ভাই এইভাবে কি কেও কাউকে মাড়ে। আমি মোহিনীর কাছে গিয়ে বললাম।

নীলঃ আপনি এইভাবে ছেলেটিকে মারছেন কেন।

মোহিনীঃ এই ছেলেটার সাহস কিভাবে হয় আমাকে প্রপোজ করার।

নীলঃ তাই জন্য কী এইভাবে মারবেন।

মোহিনীঃ হুমম বেশ করেছি মেরেছি এখন আপনি যদি বেশি কথা বলেন তাহলে আপনাকেও মারবো।এখন বেশি কথা না বলে চলুন ক্লাসে যাব।

নীলঃ কী মেয়েরে ভাই হুমম চলুন।

মোহিনীঃ হুমম চলেন।

নীলঃ ক্লাসে ঢুকার পর পরলাম মহা বিপদে।আমি আমার বসার সিটে গিয়ে যা দেখলাম…..

নীলঃ আমি আমার বসার সিটের সামনে গিয়ে দেখলাম যে কে যেন বসার জায়গায় চুইংগাম লাগিয়ে দিয়ছে। মাথাটা গরম হয়ে গেল পাশে তাকিয়ে দেখি আমার সয়তান বন্ধুগুলো পাগলের মতো করে হাসছে। এখন বুঝতে পারলাম যে এগুলো কার কাজ সালা তোদেরকে ক্লাস শেষে দেখে নিবো। এমন সময় সার ক্লাসে এসে পড়ে তখন আর কোথাও জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে মোহিনীর পাশে গিয়ে বসতে হলো। তখনি মোহিনী বললো….

মোহিনীঃ ওই সয়তান এখানে কেন বসলি।

নীলঃ তো কি করবো আমি কি মাটিতে গিয়ে বসবো নাকি।

মোহিনীঃ হুমম তাই কর বসলে তো ভালোই হতো।

নীলঃ আমি কেন বসবো আপনার ইচ্ছে হলে আপনি গিয়ে বসুন আমাকে কেন বলছেন। এই কথাটা বলার পর মোহিনী আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমার তো খুব ভয় করছিল কেন যে বলতে গেলাম কথাটা।

মোহিনীঃ ওই কুওা তুই আমাকে কী বললি আমি মাটিতে বসবো হুমম দারা তোকে আজকে আমি মজা দেখাবো।

নীলঃ আরে এই মাইয়া কয় কী আমাকে নাকি মজা দেখাবে কেন যে আজকে কলেজে আসলাম আল্লাগো বাচাঁও আমারে।

মোহিনীঃ আজকে কলেজ শেষে আমার জন্য অপেক্ষা করবি। যদি কোন রকম চালাকি করছিস না তাহলে তোকে কাল মেরে এখানেই মাটি চাপা দিয়ে দিব এই বলে দিলাম।

নীলঃ কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা একটা ছেলেকে ভয় দেখায় আমিতো পুরাই অবাক।ক্লাস শেষে আমি চুপ করে বসে আছি আর ভাবছি মোহিনী কি আমাকে আজ মারবে। এসব ভাবছি তখনি রহিম আর বকুল আমার কাছে আসলো আর বললো।

রহিমঃ কী রে দোস্ত তখন থেকে দেখছি কী যেন চিন্তা করছিস আমাদের বল কী হয়েছে।

বকুলঃ হে রে দোস্ত বল আমরা যদি কোন রকম সাহায্য করতে পারি।

নীলঃ চুপ কর সালা তোদের জন্য তো সব হইল এখন সাহায্য করতে আসছিস। যা তোদের সাহায্যের কেন দরকার নাই আমার।

রহিমঃ আরে আমরা ফির কি করলাম। বরং আমরা তো তোর সাহায্য করতে চাইছিলাম। কী রে বকুল ঠিক বললাম তো।

নীলঃ তোরাা আমার সাহায্য করতে যায় আমাকে তো বিপদে ফেলায় দিলি মোহিনী আমাকে আজকে কলেজ ছুটির পর থাকতে বলছে জানি না আজকে আমার কপালে কি আছে আমারতো খুব ভয় করছে রে।

রহিমঃ তোরতো খুশি হওয়ার কথা আর তুই চিন্তা করছিস হা হা হা হা হা হা হা।

নীলঃ চুপ কর সালা আবার হাসছিস আজকে কলেজে ঢুকতে গিয়ে দেখি মোহিনী একটা ছেলেকে ধরে মারতেছিল আর আজকে যা হইলো মনে হয় আমারো কপালে মাইর লিখা আছে৷

রহিমঃ কী বলিস দোস্ত তুই তো মনে হয় আজকে শেষ দোস্ত। এখন যাই বাচেঁ থাকলে আবার দেখা হবে।

নীলঃ আমিতো কিছুই বুঝলাম না ওরা দৌর দিল কেন। পিছনে তাকিয়ে দেখেতো আমার পেন্ট খারাপ করার মতো অবস্থা। মোহিনী আরো কয়েকটা মেয়ে আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে এগিয়ে আসছে। মোহিনী আমার কাছে আসলো আর বলল…..

মোহিনীঃ ওই কুওা এইদিকে শুন।

নীলঃ আমি কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে গেলাম তার দিকে।

মোহিনীঃ তোকে আমি বলেছিলাম কলেজ ছুটির পর থাকতে আর তুই এখানে বসে আড্ডা দিচ্ছিস।

নীলঃ না না আ আ আ মানে আমি এমনি বসে ছিলাম এখানে। (আমি কাপা কাপা কন্ঠে কথা গুলো বললাম)

মোহিনীঃ চল আমার সাথে তোর খবর করবো আজকে।

নীলঃ আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম ওর সাথে। যপ মেয়েরে বাবা যেকোনো সময় যে কিছু করতে পারে। কিছুক্ষণ পর দেখলাম যে ওরা সবাই মিলে একটা কাজী অফিসে ঢুকছে আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা কী হচ্ছে। তাই আর চুপ করেনা থেকে মোহিনীকে জিজ্ঞেস করলাম। মোহিনী কি হচ্ছে এসব আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা।

মোহিনীঃ একটু অপেক্ষা করো সব বুঝতে পারবা।

নীলঃ তুমি এসব কি করতে যাচ্ছ আমার মাথায় কিছুই আসছেনা।

মোহিনীঃ আহহহহ তুই চুপচাপ বসে থাক।

নীলঃ তারপর একটা রুম থেকে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে বের হয়ে আসলো একজন বরের কাপড় আর একজন বৌয়ের কাপড় পড়ে আসলো। তারপর মোহিনী আমাকে বললো….

মোহিনীঃ আরে এদের বিয়েতে তুমি সাক্ষী হিসেবে থাকবা তাইতো তোমাকে এখানে আনা হয়েছে।

নীলঃ আচ্ছা আমি আরকিছু না বলে সাইন করে দিলাম তারপর তাদের বিয়েটা হয়ে গেল। তারপর মোহিনী ও তার বান্ধবীরা তাদের বিদায় দিয়ে চলে গেল আর মোহিনী আমার কাছে চলে এলো।

মোহিনীঃ কি কিছুই বুঝতে পারছেন নাতো।

নীলঃ হুমমম একটু বলবেন প্লিজ।

মোহিনীঃ আচ্ছা শুনুন তবে ও হলো আমার সেই ছোট বেলার বন্ধু আর ওই ছেলেটি হলো ওর বিএফ আর তাদের পরিবারের লোকজন তাদের বিয়ে করতে দিচ্ছিলোনা। তাই আমরা আজকে তাদের বিয়ে টা করিয়ে দিলেম। আর এইটা যদি আপনাকে আমি আগে বলতাম তাহলে কি আপনি যেতেন তাই আমি এগুলো প্ল্যান করছিলাম।

নীলঃ মানে আপনি আমাকে মারতেন না।

মোহিনীঃ আপনি মনে হয় খুব ভয় পাইছিলেন তাই না আমি দেখছি। হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা।

নীলঃ এই দেখেন একদম হাসবেন না বলে দিলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা হাসবো না চলুন বাসায় যাওয়া যাক।

নীলঃ হুমমম চলুন। আচ্ছা একটা কথা বলি যদি রাগ না করেন।

মোহিনীঃ হুমমম বলেন।

নীলঃ আপনার কোন বিএফ নাই।

মোহিনীঃ না কোনদিন প্রয়োজন মনে করে নি। আপনার হয়তো আছে।

নীলঃ না আমার কোন জিএফ নাই। আচ্ছা আজকে আমার বসার সিটে চুইংগাম লাগানো টা কি আপনার প্ল্যান ছিল।

মোহিনীঃ হুমমম আমি রহিম আর বকুল কে বলেছিলাম নাহলেতো আপনি আমার কথা শুনতেন না।

নীলঃ ওওওহহ আচ্ছা। আপনার বাসা আরো কতদূরে।

মোহিনীঃ ওইতো সামনের মোরে আর ৫ মিনিট এর মতো লাগবে।

নীলঃ ওওহহহ আচ্ছা চলুন।

মোহিনীঃ হুমম চলুন আর আমরা যখন ভালো বন্ধু তাই আমাকে তুমি করেই বলতে পারো।

নীলঃ আচ্ছা আমি চেষ্টা করব।

মোহিনীঃ কিসের চেষ্টা তুমি করেই বলতে হবে।

নীলঃ আচ্ছা বলব এত রাগেন কেন।

মোহিনীঃ আমি এইরকমি বুঝছো। আচ্ছা তোমার নাম্বারটা দেও।

নীলঃ কেন নাম্বার নিয়ে কি করবা।

মোহিনীঃ আমরা এখন ভালো বন্ধু তাই তোমার নাম্বারটা দেও।

নীলঃ আচ্ছা নেও 01755825…

বলতে বলতে আমি মোহিনীর বারির সামনে চলে এসেছি।

মোহিনীঃ এইটাই আমার বাসা। আচ্ছা নীল তুমি এখন যাও আর কাল ঠিক সময়ে কলেজে চলে আসবা আর হে প্রয়োজনে তোমাকে ফোন দিব বিরক্ত হবা না তো।

নীলঃ না না বিরক্ত হবার কি আছে।

মোহিনীঃ আচ্ছা তাহলে এখন যাও। বাই।

নীলঃ আচ্ছা বাই। আর কিছু না বলে চলে গেলাম বাড়িতে। বসায় যাওয়ার পর আম্মু বললো যে……

আম্মুঃ নীল এতক্ষণ কোথায় ছিলা? আমি কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করতেছি।

নীলঃ আম্মু একটু কাজে ফাঁসে গেছিলাম তাই আসতে একটু লেট হয়ে গেল।

আম্মুঃ কোন কাজ।

নীলঃ এমনি একটা কাজ ছিল।

আম্মুঃ আচ্ছা যাও উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো আমি খাবার দিচ্ছি।

নীলঃ জি আম্মু যাচ্ছি। আর কিছু না বলে চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। তারপর নিচে এসে সবার সাথে খাওয়া করে নিজের রুমে চলে আসলাম তারপর ফেসবুকে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে দিলাম একটা ঘুম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য। তারপর অনেক্ষন ধরে আড্ডা দিয়ে বাড়িতে চলে গেলাম। পরেরদিন যথা সময়ে কলেজে চলে গেলাম। এভাবেই দিনগুলো কাটছিলো এখন আমি আর মোহিনী অনেকটাই ফ্রী।

আমরা সবসময় এখন ফোনে কথা বলি।

এমন একদিন মোহিনী ফোন দিয়ে যা বললো…


পর্ব নং ২

এমন একদিন মোহিনী ফোন দিয়ে যা বললো….

মোহিনীঃ নীল তুই কোথায় রে।

নীলঃ কেন আমিতো বাসায় রে। কোন প্রয়োজন আছে নাকি।

মোহিনীঃ হুমমম আছে তুই এখনি আমার বাসার কাছে চলে আয়।

নীলঃ কিন্তু এখন।

মোহিনীঃ হুমমম এখনি তুই না আসলে কাল কলেজে তোর খবর করবো আমি।

নীলঃ আচ্ছা থাম আমি যাচ্ছি। কি আর করার ইচ্ছা না থাকার সত্যেও যপতে হলো। আমি মোহিনীর বাড়ির সামনে দারিয়ে আছি কিন্তু মোহিনীর তো কোন দেখাই নাই। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখলাম যে মোহিনী আসছে। আমিতো মোহিনীকে দেখে আমার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। মেয়েটিকেতো আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে যে কেও দেখে ক্রাশ খাবে। মোহিনীর কথায় আমার ঘোর কাটল।

মোহিনীঃ কিরে হাঁদারাম এইভাবে কী দেখছিলি। আমারতো খুব লজ্জা করছিল।

নীলঃ কই নাতো আমি কিছু দেখিনি। আসলে আজকে তোকে খুব ভালো লাগছে। তাই দেখছিলাম আরকি।

মোহিনীঃ কেন এর আগে কি আমি খারাপ দেখতেছিলাম।

নীলঃ তুই সবসময় একলাইন বেশি বুঝিস কেন।

মোহিনীঃ হুমম এখন তো বলবি। আচ্ছা চল একজায়গায় যাব আজকে।

নীলঃ আচ্ছা যাব কিন্তু যাবি কথায় সেইটাতো বল।

মোহিনীঃ আজকে আমার ফ্রেন্ডের বার্থডে তাই তোকে আমি সাথে নিয়ে যাব। কেন তোর কি কোন সমস্যা।

নীলঃ তোর ফ্রেন্ডের বার্থডে তুই যা আমি কেন যাব।

মোহিনীঃ দেখ নীল একদম মাথা গরম করাবি না তুই আমার সাথে যাবি কিনা বল।

নীলঃ আচ্ছ বাবা যাব এতো রাগিস কেন।

মোহিনীঃ হুমম জানি তুই আমার কথা শুনবি।

(আমার গাল টেনে কথা গুলো বললো)

নীলঃ তুই যাকে বিয়ে করবি সেতো বিয়ের পরের দিনি পলাবে।

(আস্তে আস্তে কথাটা বললাম)

মোহিনীঃ ওই কি বললি আবার বল।

নীলঃ না থাক কিছু বলিনি আমি।

মোহিনীঃ হুমম এখন চল দেরি হয়ে গেল তো।

নীলঃ হুমম চল বাইকে ওঠ। তারপর মোহিনী আমাকে ধরে জরিয়ে বসলো। কেন জানি একটা আলাদা ফিলিংস কাজ করছিল নিজের মধ্যে যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এখনতো আমার গান গাইতে ইচ্ছে করছে।

এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো।

প্রায় ৩০ মিনিট পর মোহিনীর বান্ধবীর বাড়িতে পৌছালাম। মোহিনীর বান্ধবীর নাম হলো নেহা। নেহা ও তার আরো কিছু বান্ধবী মিলে আমাদেরকে ভিতরে নিয়ে গেল। ভিতরে অনেক লোকজন ছিল আর হবেইনা কেন বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে বলপ কথা। যাই হোক মোহিনী ওর বান্ধবীদের সঙ্গে কথা বলছে আর আমি চুপ করে বসে আছি। এমন সময় মোহিনী এলো।

মোহিনীঃ কি রে এই ভাবে বাচ্চাদের মতো বসে আছিস কেন যা এনজয় কর।

নীলঃ না আমার এগুলো একদম ভালো লাগেনা।

মোহিনীঃ হইছে আর ভদ্রলোক হতে হবে না তোকে।

নীলঃ কী যে বলিস না আমিতো সেই জন্ম থেকেই ভদ্র।

মোহিনীঃ হা হা হা হা হা তোর সাথে আমি পারবোনা।

নীলঃ তো লাগিস কেন আমার সাথে।

মোহিনীঃ হুমম এখন চল যেখানে কেক কাটবে। সবাই অপেক্ষা করছে তোর জন্য।

নীলঃ ওকে চল যাই।

তখন নেহা সবার সামনে কেক কাটলো। তারপর সেখান থেকে এক টুকরো কেক নিয়ে তার আব্বু, আম্মু ও আমাকে খিলায় দিল সবাই তো অবাক নিলার কর্মকাণ্ড দেখে। যাই হোক এখন খাওয়ার পর সবাই নাকি নাচ করবে। আমি এগুলো পারি না তাই আমি চুপচাপ বসে ছিলাম এমন সময় নেহা আমার সামনে আসলো।

নেহাঃ কি ভাইয়া আপনি এখানে একা বসে আছেন কেন সবাই কতো এনজয় করতেছে আপনিও করুন।

নীলঃ না আসলে আমি এগুলো পারিনা। আর বরো কথা হলো আমার এগুলো ভালো লাগে না।

নেহাঃ আচ্ছা চলুন আমার সাথে আমি আপনাকে শিখিয়ে দিচ্ছি।

নীলঃ না না না এসবের কোনো দরকার নাই।

নেহাঃ না দরকার আছে চলুন আমার সাথে।

নীলঃ নেহা আমাকে একপ্রকার জোর করে নিয়ে গেল। নেহা জোর করে আমার এক হাত তার কোমরে ও আরেকটি হাত তার কাধে নিল। আর বল……

নেহাঃ এখন আমি যেভাবে বলব সেভাবে করবা।

নীলঃ আমিতো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। এই মেয়ে বলে কি এই মেয়ের আবভাব তো ভালো লাগছেনা আমার। আর অই দিকে মোহিনী এগুলো দেখে তার কাছে রাখা গ্লাসটা ভেঙে দিল তারপর আমার কাছে এসে বললো……

মোহিনীঃ নীল এখন বাসায় যাব চল আম্মু ফোন করছিল।

নেহাঃ কেন রে আরেকটু থাক।

মোহিনীঃ নারে আম্মু বকবে তাই যেতে হবে।

নীলঃ আচ্ছা চল বাড়িতে যাওয়া যাক। বাই নেহা কাল কলেজে দেখা হবে। (মোহিনী কে রাগানোর জন্য কথাটা বললা)

মোহিনীঃ হুমম চল বাইক নিয়ে আয়।

নীলঃ আচ্ছা। তারপর আমি বাইক নিয়ে মোহিনীর কাছে আসলাম। মোহিনী আমার বাইকে উঠে বসলো। তারপর আমি বাইক স্টার্ট দিলাম। তখনি মোহিনী বলতে শুরু করলো।

মোহিনীঃ তুই একটা লুচ্চা মেয়ে দেখলে খালি টাংকি মারা দারা আজকে আমি আন্টিকে সব বলবো।

নীলঃ এই নারে প্লিজ এগুলো করিস না। আমি আর এগুলো করবোনা।

মোহিনীঃ না আমি আজকে কিছু শুনবোনা চল তোর বাসায়।

নীলঃ আমার তো কোন দোষ নেই সেখানে তো নেহা আমাকে একপ্রকার জোর করে নিয়ে গিয়েছে।

মোহিনীঃ ও বললে কি তুই চলে যাবি।

নীলঃ আমি তো ইচ্ছে করে যাই নাই। ওওওহহ আপনাদের তো একটা কথা বলাই হয়নি মোহিনী এখন প্রায় আমার বাড়িতে আসে। যাই হোক মূল ঘটনায় আসি।হুমম আমি জানি আমি যতই বলিনা কেন মোহিনী আমার একটা কথাও শুনবে না।

মোহিনীঃ তোর খবরতো আমি আজকে করেই ছারব।

নীলঃ প্লিজ এগুলো করিস না রে। এগুলো বলতে বলতে বাড়িতে চলে আসলাম। কলিংবেল চাপ দিতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিল। আমার সাথে মোহিনীকে দেখে আম্মু বল……..

আম্মুঃ আরে মোহিনী মা যে আসো আসো ভিতরে আসো।

মোহিনীঃ আন্টি কেমন আছেন।

আম্মুঃ এইতো ভালো মা। তুমি কেমন আছো।

মোহিনীঃ আপনার ছেলে আমাকে ভালো থাকতে দিলে থাকব।

আম্মুঃ কি করছে নীল আমাকে বলো।

মোহিনীঃ কি আর করবে আমার সামনে অন্য মেয়ের সাথে লুচ্চামি করছে।

আম্মুঃ নীল মোহিনী কী সত্যি বলছে।

নীলঃ আসলে না মানে হে আম্মু।

আম্মুঃ তাহলে আজ তোর খাওয়া বন্ধ।

নীলঃ কিন্তু আম্মু আমার কথাটা।

আম্মুঃ আমি তোর কোন কথা শুনবো না যা নিজের রুমে যা।

নীলঃ আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম নিজের রুমে।

আমি রাগ করে বসে আছি তখন মোহিনীর আগমন তারপর যা করল….


পর্ব নং – ৩

আমি রাগ করে বসে ছিলাম এমন সময় মোহিনীর আগমন তারপর মোহিনী যা করল…

মোহিনীঃ নীল প্লিজ কিছু খেয়ে নে।

নীলঃ না আমার খাওয়ার দরকার নাই। তুই যাতো এখন।

মোহিনীঃ দেখ আমি কি জানতাম যে আন্টি এমনটা করবে। প্লিজ চল আমার সাথে।

নীলঃ মোহিনী তুই যাতো এখান থেকে।

মোহিনীঃ নীল আমি কিন্তু এখন কান্না করবো। প্লিজ চল না।

নীলঃ তুই কান্না কর তাতে আমার কি। (আমি জানি ও কান্না করবে না)

মোহিনীঃ অ্যা অ্যা অ্যা এ এ এ এ এ এ।

নীলঃ একি এই মেয়ে তো সত্যি কান্না করছে। কিরে মোহিনী চুপ কর কান্না করছিস কেন। আচ্ছা চল আমি খাব।

মোহিনীঃ আমি জানতাম তুই আমার কথা শুনবি বাবু। আর আমি তো কান্না করার অভিনয় করছিলাম হি হি হি হি হি হি হি হি হি।

নীলঃ তুই সবসময় আমাকে এইভাবে রাজি করাইস সয়তান।

মোহিনীঃ হুমমম এখন চল আন্টি অপেক্ষা করছে তোর জন্য।

নীলঃ হুমমম চল। তারপর আর কিছু না বলে চলে গেলাম খাওয়ার জন্য।

মোহিনীঃ আন্টি আপনি বসেন আমি খাবার দিচ্ছি।

আম্মুঃ না মা তুমি বসো তোমাকে এগুলো করতে হবে না আমি করছি আর তুমি তো আামদের অতিথি তাইনা।

মোহিনীঃ ওকে আন্টি যেইটা আপনি ভালো বুঝেন।

(তারপর মোহিনী আর কোন কথা না বলে খেতে লাগলো)

নীলঃ আম্মু আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি রুমে গেলাম।

আম্মুঃ একটু পর মোহিনীকে ওদের বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসিস।

নীলঃ জি আম্মু। (মোহিনী খাওয়া করে আমার কাছে আসলো)

মোহিনীঃ হুমম চল অনেক রাত হয়ে গেল তো।

নীলঃ আচ্ছা তুই থাম আমি গিয়ে বাইকটা নিয়ে আসি।

(আমি বাইক নিয়ে মোহিনীর কাছে গেলাম) হুমমম উঠ তারাতারি।

মোহিনীঃ হুমমম তারাতাড়ি চল এখন।

(কিছুক্ষণ পর মোহিনীর বাড়ির সামনে চলে গেলাম তারপর মোহিনী বললো) নীল আমার একটা কথা তোকে রাখতে হবে।

নীলঃ কি কথা বল রাখার মতো হলে রাখবো।

মোহিনীঃ না তুই আগে বল কথাটা রাখবি।

নীলঃ আচ্ছা বলবি তো কি কথা।

মোহিনীঃ তোকে আামর সাথে আমার গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে কালকে আমার চাচাতো বোনের বিয়ে। দেখ প্লিজ না করিস না।

নীলঃ আরে সামনে তো আমাদের পরীক্ষা শুরু হবে আর আম্মু রাজি হবে না।

মোহিনীঃ আমি আন্টিকে বলছি আর আন্টি তোকে যেতে বলেছে।

নীলঃ তুই এগুলো আম্মুকে কখন বললি।

মোহিনীঃ সেইটা তোকে শুনতে হবেনা। তুই যাবি কিনা বল।

নীলঃ কি আর করবো ওকে যাব। কিন্তু তোর বোনের বিয়ে তাই আমি গিয়ে কি করবো বল।

মোহিনীঃ আমার আব্বু আর আম্মু তোকে যেতে বলেছে আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বুঝলি।

নীলঃ হুমমম বুঝলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা এখন যা অনেক রাত হয়ে গেছে তাছারা আন্টি মনে হয় চিন্তা করতেছে।

নীলঃ আচ্ছা যাচ্ছি।

মোহিনীঃ ওকে যা আর হে বাসায় গিয়ে একটা ফোন দিস। এখন যা বাই।

নীলঃ তারপর বাইক ঘুরিয়ে চলে আসলাম বাড়িতে। বাড়িতে গিয়ে মোহিনী কে ফোন করলাম রিং হচ্ছে……

মোহিনীঃ হুমম বাসায় গেছিস।

নীলঃ হুমম এখনি আসলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা শুন কালকে কিন্তু সকাল ১০ টায় আমাদের ট্রেন দেরি করিস না কিন্তু।

নীলঃ কালকেই যাবি।

মোহিনীঃ হুমমম কালকেই যাব। কেন তোকে তো বললাম।

নীলঃ ওকে আমি আম্মুকে বলে আমার সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছি।

মোহিনীঃ আচ্ছা এখন অনেকে রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পর আর সকালে আমি ফোন দিব।

নীলঃ আচ্ছা বাই গুড নাইট।

মোহিনীঃ ওকে বাই গুড নাইট।

(তারপর আমি আম্মুর রুমে গেলাম)

নীলঃ আম্মু তোমার সাথে আমার কথা আছে।

আম্মুঃ বল কি বলবি।

নীলঃ তুমি নাকি মোহিনী কে বলছো যে ও যেন আমাকে ওর সাথে নিয়ে যায়।

আম্মুঃ হুমম আমি বলছি কেন।

নীলঃ না মানে ওইটাই শুনতে চাইছিলাম।

আম্মুঃ আচ্ছা আমি যানি তুই কি জন্য আসছিস তোর সব আমি ওই লাগেজে গুছিয়ে রেখেছি। আর এখন যা ঘুমা গুড নাইট।

নীলঃ আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম নিজের রুমে তারপর ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিছুক্ষণ ফেসবুকে ঘুরাঘুরি করে দিলাম একটা ঘুম একবারে সকালে ঘুম ভাঙ্গলো ফোনের আওয়াজে। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি মোহিনী ফোন করেছে।

মোহিনীঃ ওই কুওা তুই আর কতো ঘুমাবি দেখছিস একবারো যে কয়টা বাজে।

নীলঃ আমি ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি যে ৮টা বেজে গেছে।মোহিনীকে বললাম যে তুই ওয়েট কর আমি যাচ্ছি। তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে কিছু খেয়ে নিলাম। আম্মুর রুম থেকে আমার লাগেজ টা নিয়ে মোহিনীকে ফোন দিলাম।

মোহিনীঃ হুমম বল।

নীলঃ কোথায় তুই?

মোহিনীঃ তুই এক কাজ কর তুই স্টেশনে যা আমিও যাচ্ছি।

নীলঃ আচ্ছা তারাতাড়ি আসিস কিন্তু।

মোহিনীঃ ওকে বাই।

(আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলাম। আমি আম্মুর কাছে গিয়ে বিদায় নিলাম)

নীলঃ আম্মু আমি যাচ্ছি। তোমার ভালে থেকো।

আম্মুঃ এমন বলছিস মনে হচ্ছে আর আসবি না আচ্ছা সাবধানে যাস।

নীলঃ জি আম্মু যাচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।

(তারপর একটা সিএনজি করে চলে গেলাম স্টেশনে। গিয়ে দেখি মোহিনী একা বসে আছে আমাকে দেখে উঠে দারাল)

মোহিনীঃ ওই কুওা তোর এখন সময় হলো আসার আমি সেই কখন থেকে বসে ছিলাম।

নীলঃ আরে এইটা কি আমার দোষ।

মোহিনীঃ না আমার দোষ।

নীলঃ আচ্ছা চল ওখানে গিয়ে বসি।

মোহিনীঃ হুমম চল। সকালে খেয়েছিস কিছু।

নীলঃ হুমমম খেয়েছি তুই।

মোহিনীঃ আমিও। জানিস আজ অনেক দিন পর গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে।

নীলঃ ওওওও তাই বুঝি। (অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো ট্রেন এসে গেছে আমি আর মোহিনী ট্রেনে উঠে পরলাম)

মোহিনীঃ নীল দেখ জনালার দিয়ে কি সুন্দর দৃশ্যদেখা যাচ্ছে।

নীলঃ হুমমম ঠিক বলছিস খুব সুন্দর। কথা বলতে বলতে মোহিনী আমার কাধে মাথা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে সে নিজেও যানেনা। অসম্ভব সুন্দর লাগছিল তাকে বাতাসে চুল গুলো উরছিল। আমি প্রায় অনেকটা সময় তারদিকে এইভাবে তাকিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল যদি সময়টা এখানে থেমে যেত তাহলে খুব ভালো হতো। আমি কখনো মোহিনীকে এইভাবে কখনো দেখিনি। আজকাল মোহিনীর পাগলামিগুলো খুব ভালোইলাগে আমার। এসব ভাবতে ভাবতে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। তারপর আমি মোহিনীকে ডাক দিলাম।

মোহিনীঃ আমরা এসে গেছি।

নীলঃ হুমমম এখন চল।

মোহিনীঃ হুমম চল।

(তারপর আমারা ট্রেন থেকে নেমে একটা সিএনজি করে মোহিনীর গ্রামে গেলাম)

নীলঃ বাহ্ মোহিনী তোদের গ্রামটা তো খুব সুন্দর। আমারতো খুব ভালো লাগছে।

মোহিনীঃ হুমম দেখতে হবেনা কার গ্রাম এইটা।

নীলঃ তুই আবার শুরু করলি।

মোহিনীঃ উফফ তুই কি মজাও বুঝিস না।

নীলঃ আচ্ছা তোদের বাসাটা কোন দিকে।

মোহিনীঃ ওই যে সামনের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে।

নীলঃ ওহহহ আচ্ছা। মোহিনীর গ্রামটা খুবই সুন্দর যেমন নাম তেমনি সুন্দর। চারদিক সবুজ। ঠান্ডা হাওয়া বইছে। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। মনে হচ্ছে সবাই যেন আমাদের স্বাগতম জানাচ্ছে। গ্রাম যে এত সুন্দর হয় তা জানতাম না। গ্রামের লোকেরা আমাকে আর মোহিনী কে যেভাবে দেখছে মনে হচ্ছে আমারা দুজন কোন ভূত। যাই হোক, দীর্ঘ ১ ঘন্টা হাটার পর আমরা মোহিনীর বাড়িতে গেলাম। আবার সেই একি কাহিনী মোহিনীর বাড়ির লোকজনও আমাদের অবাক চোখে দেখছিল। তারপর মোহিনীর আব্বু আর আম্মু আসলো। আমি সালাম দিলাম তারপর মোহিনীর আম্মু বললেন…..

আন্টিঃ বাবা তুমি তাহলে সেই নীল।

নীলঃ জি আমি সেই নীল। আর আপনারা আমাকে চিনেন কিভাবে।

আন্টিঃ তোমার কথাইতো মোহিনী আমাদেরকে বলেছিল।

নীলঃ ওহহহ আচ্ছা। আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে মোহিনী নিজেই বলতে শুরু করলো।

মোহিনীঃ উফফ আম্মু আমারা অনেক জার্নি করে এসেছি। আর নীল খুব ক্লান্ত ওকে একটু রেস্ট নিতে দেও।

আন্টিঃ আচ্ছা নীলকে তুই গেস্ট রুমে নিয়ে যা আর তুই তোর রুমে থাকবি কেমন।

মোহিনীঃ ওকে আম্মু। নীল তুই আমার সাথে আয়।

নীলঃ হুমমম চল। তারপর মোহিনী আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল ওখানে আমি আমার সব জিনিস পত্র রাখলাম। তরপর মোহিনী চলে গেল আর আমি ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। ফ্রেশ হওয়ার পর আমি চারপাশটা ঘুরে দেখতে লাগলাম।

তখনি মোহিনী আমার রুমে আসলো।

মোহিনীঃ নীল নিচে চল খাওয়া করার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে তোর জন্য।

নীলঃ আচ্ছা চল। তারপর আমি আর মোহিনী একসাথে নিচে গেলাম। আমি খাচ্ছিলাম আর মোহিনী আমাকে খাবার দিচ্ছিল। আমি বললাম তুইও বস।

মোহিনীঃ তুই খা আমি পরে খাব।

নীলঃ তুই বসতো। তারপর মোহিনী আমার পাশের চেয়ারে বসে পরলো। তখন আমি খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে চলে গেলাম। রুমে আসার পর মোহিনী কিছুক্ষন পর আমার রুমে আসলো আর বলল।

মোহিনীঃ নীল তুই রেডি থাকিস আমরা বিকালে গ্রামটা ঘুরে দেখবো কেমন।

নীলঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

মোহিনীঃ ওকে এখন রেস্ট নে।

নীলঃ মোহিনী চলে যাওয়ার পর আমি একটু ঘুমালাম। তারপর মোহিনী বিকালে আমার রুমে এসে যা করলো…..


পর্ব নং – ৪

বিকালে মোহিনী আমার রুমে এসে যা করল তা বলার মতো না……

নীলঃ মোহিনী আমার উপর পানি ঢেলে দিল। আমার তো মাথা গরম হয়ে গেল তখনি মোহিনী বলল-

মোহিনীঃ তোকে আমি কি বলেছিলাম তোর মনে আছে।

নীলঃ হুমমম তুইতো বলে ছিলি যে বিকালে ঘুরতে যাবি।

মোহিনীঃ হুমমম বলেছিলাম কিন্তু তুইতো ঘুমাচ্ছিস আর আমি সেই কখন থেকে ডেকপ যাচ্ছি। আর তুই যখন উঠছিলি না তাই আমি পানি ঢেলে দিছি।

নীলঃ তোকে আর কি বলব তুই আর ভালো হইলি না।

মোহিনীঃ হুমম এখন যা তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নে আমি তোর জন্য নিচে অপেক্ষা করতেছি।

নীলঃ আচ্ছা যা আমি যাচ্ছি। তারপর আর কিছু না বলে চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ফ্রেশ হওয়ার পর নিচে চলে গেলাম দেখি মোহিনী বসে আছে আমাকে দেখে উঠে দাড়ালো।

মোহিনীঃ আরে নীল তোকে খুব সুন্দর লাগছে।

নীলঃ হুমমম হইছে থাক আর বলতে হবে না।

মোহিনীঃ আচ্ছা চল।

(তারপর আমি আর মোহিনী রাস্তার একপাশ দিয়ে হাটতে লাগলাম)

নীলঃ আচ্ছা মোহিনী কালকে গ্রামের সবাই আমাকে আর তোকে ওইভাবে দেখছিল কেন।

মোহিনীঃ আসলে আমি যখন গ্রামে থাকতাম তখন কোন ছেলে আমার সাথে কথা বলতে আসতোনা কারণ আমি খুব রাগি ছিলাম আর তাদেরকে মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দিতাম। আর তুই কাল আমার সাথে আবার আমার গ্রামেে আসলি তাই সবাই তোকে আর আমাকপ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল।

নীলঃ কেন তুই ছেলেদের মারিস কেন।

মোহিনীঃ ছেলেদেরকে মারতে আমার খুব ভালো লাগে, তাই।

নীলঃ তাহলে আমাকে মারিস না কেন।

মোহিনীঃ কারন তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, তাই।

নীলঃ ওওও তাই নাকি।

মোহিনীঃ হুমম। ওই যে পুকুর পাড়টা দেখছিস ওখানে আমি প্রতিদিন বিকালে যেতাম।

নীলঃ ওওও আচ্ছা।

মোহিনীঃ চলনা যাই ওখানে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য।

নীলঃ না আমি যদি পুকুরে পড়ে যাই তখন।

মোহিনীঃ আরে চল আমি আছি না কিছু হবে না চল।

নীলঃ তারপর আর কি মোহিনী আমাকে একপ্রকার জোর করে নিয়ে গেল ওখানে। দুজনেই চুপচাপ বসে আছি। সব নিরবতা ভেঙ্গে মোহিনী বলতে শুরু করল।

মোহিনীঃ জনিস নীল আজ অনেক দিন পর এই পুরোনো জায়গাটিতে আসলাম। পুরনো সব সৃতি গুলো মনে পরছে।

নীলঃ ওওও আচ্ছা কি মনে পড়ছে।

মোহিনীঃ অনেক কিছু ওগুলো বলতে শুরু করলে দিন পার হয়ে যাবে।

নীলঃওকে অন্য একদিন বলিস শুনবো।

মোহিনীঃ আচ্ছা বলব আর হে আমিতো তোকে একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম।

নীলঃ কোন কথা।

মোহিনীঃ আজকে আমার চাচাতো বোনের গায়ে হলুদ সবাই যাবে আর তোকেও যেতে হবে।

নীলঃ দেখ তুইতো জানিস আমার এগুলো একদম ভালো লাগে না।

মোহিনীঃ প্লিজ নীল তুই না করিসনা।

নীলঃ ওকে যাব। কেন জানি ওর কোন কথাই আমি না করতে পারি না। খুব মায়ায় পরে গেছি ওর। মনের অজান্তেই ওকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। কিন্তুু কোনদিন বলিনি কারন আমাদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটি নষ্ট করে দেয়। কিন্তু মনের কথা আর চেপে রাখতে পারছি না তাই ভাবছি বলেই দিব। আমি এগুলো মনে মনে বলছিলাম আর মোহিনী তো সেই কবে থেকে কথা বলেই যাচ্ছে।

মোহিনীঃ কিরে নীল কি এতো চিন্তা করছিস। আমি সেই কখন থেকে বলেই যাচ্ছি আর তুই কিছুই বলছিস না। কোনো প্রবলেম নাকি।

নীলঃ আরে না না এমনি ভালো লাগছিল না তাই আরকি।

মোহিনীঃ আমাকে বল কি সমস্যা।

নীলঃ আরে না কিছু হয়নি চল বাসায় যাব অনেক তো ঘুরা হইলো।

মোহিনীঃ ওকে চল আর পাঞ্জাবি পরে রেডি থাকিস।

নীলঃ আচ্ছা চল এখন। বাসায় যাব।

মোহিনীঃ হুমম চল।

(মোহিনী হয়তো আমার থেকে এমনটা আশা করে নাই কিন্তু ও কি বুঝবে যে আমার মনে এখন কি চলছে কিছুক্ষণ পর বাসায় আসলাম)

নীলঃ আচ্ছা মোহিনী আমি একটু আমার রুমে যাচ্ছি।

মোহিনীঃ আচ্ছা যা। হঠাৎ নীলর কি হলো ও তো এমনটা কখনো করে না কি নিয়ে এতো চিন্তিত ও। এসব মোহিনী ভাবছিল।

নীলঃ আজ কেন জানি খুব কান্না করতে ইচ্ছা করছে আমার। ভালোবাসার মানুষটা আমার এতো কাছে তাও আমি তাকে আপন করে নিতে পারতেছি না। এর থেকে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে। তাই আমি একটু রহিমকে ফোন দিলাম ওর সাথে কথা বললে হয়তো ভালো লাগবে। রিং হচ্ছে………

রহিমঃ কিরে দোস্ত কেমন আছিস। সেইযে গপলি আর একটা ফোনও করলি না।

নীলঃ আরে না দোস্ত সবকিছু হঠাৎ করে হয়ে গেল।

রহিমঃ কেমন আছিস বল। আর মোহিনী কেমন আছে।

নীলঃ আমি ভালো আছি আর মোহিনীও ভালো আছে তুই কেমন আছিস রে।

রহিমঃ আছি আরকি। কিরে তোর মনে হচ্ছে মন খারাপ।

নীলঃ না রে এমনি একটু অসুস্থ।

রহিমঃ আমি জানি তোর মন খারাপ। এখন বলতো কি হইছে।

নীলঃ আরপ বললাম তো কিছু হয়নাই।

রহিমঃ দেখ তুই আমার বন্ধু তাই আমি ভালে করেই বুঝতে পারছি যে তোর মন খারাপ।

নীলঃ আরে না।

রহিমঃ আমি জানি তোর মোহিনীর জন্য মন খারাপ। তুই ওকে ভালোবাসিস এই কথাটা বলে দিলেই তো পারিস।

নীলঃ না রে দোস্ত তখন যদি আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যায়।

রহিমঃ দেখ তুই পকে ভালোবাসিস আর এইটা যদি তুই মোহিনীকে না বলিস তাহলে একদিন তোর এই ভূলের কারণে তুই মোহিনীকে হারাবি।

নীলঃ এইভাবে বলিস না রে।

রহিমঃ তুই আজকে মোহিনীকে তোর মনের কথাটা বলে দে।

নীলঃ কিন্তু ও যদি না মানে তখন।

রহিমঃ তাহলে তুই বসে থাক আর অন্য কেউ এসে ওকে নিয়ে যাক।

নীলঃ না রে এগুলো বলিস না।

রহিমঃ তাহলে কি বলবো।

নীলঃ আচ্ছা আমি আজকেই মোহিনীকে নিজের মনের কথাটা বলে দিব।

রহিমঃ হুমম ওইটাই কর।

নীলঃ আচ্ছা দোস্ত এখন তাহলে রাখি।

রহিমঃ আচ্ছা ভালে থাকিস বাই।

নীলঃ ওকে বাই। তার কিছুক্ষণ পর মোহিনী রুমে আসলো।

মোহিনীঃ কিরে কার সাথে এতো কথা বলেছিলি।

নীলঃ এমনি রহিমের সাথে।

মোহিনীঃ ওওও আচ্ছা নিচে আয় আম্মু ডাকছে খাওয়া করার জন্য।

নীলঃ আচ্ছা তুই যা আমি যাচ্ছি। তরপর মোহিনী চলে গেল। আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম দেখি সবাই বসে আছে আমার জন্য। আমি গিয়ে একটা চেয়ারে বসলাম। আমি দেখলাম যে মোহিনী এখানে নেই। তাই আমি আন্টিকে বললাম যে মোহিনী কই। তখনি পিছন থেকে মোহিনী বলল।

মোহিনীঃ আমি এখানে। কথাটা বলার পর মোহিনী আমার পাশের চেয়ারটিতে বসে পরল।

আমি খাওয়া করে নিজের রুমে চলে আসলাম। তার কিছুক্ষণ পর মোহিনী আমার রুমে এসক বললো যে সন্ধ্যায় যাবে চাচাতো বোনের গায়ে হলুদেে। আমি শুধু মাথা নারালাম। আমি কিভাবে বলব মোহিনী কে আমার মনের কথা ও কি বলবে আমাকে তখন। ও কি আদও আমাকে ভালোবাসবে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারিনি। সন্ধ্যায় মোহিনী এসে আমাকে ডাকল।

মোহিনীঃ কিরে ওঠ আর কতো ঘুমাবি।

নীলঃ হুমমম যাচ্ছি থাম।

মোহিনীঃ ওকে তারাতাড়ি আয়।

নীলঃ হুমম তারপর ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলাম তারপর নিচে গেলাম।

মোহিনীঃ হইছে তোর চল এখন অনেক দেরি হয়ে গেল তো।

নীলঃ ওকে চল। তারপর বাড়ির সবাই মিলে চলে গেলাম মোহিনীর চাচাতো বোনের গায়ে হলুদে।
ওখানে গিয়ে ঘটল আরেক ঘটনা…..


পর্ব নং – ৫

তারপর বাড়ির সবাই মিলে চলে গেলাম মোহিনীর চাচাতো বোনের গায়ে হলুদে।

ওখানে গিয়ে ঘটল আরেক ঘটনা মোহিনীর বাসার সবাই বলছে আমাকে নাকি ছবি তুলতে হবে আর আমি এসব ছবি টবি তুলতে পারি না তাই মোহিনীকে গিয়ে বললাম।

নীলঃ দেখ তুই ভালো করেই জানিস আমার এগুলো একদম ভালো লাগে না।

মোহিনীঃ প্লিজ আমার জন্য কর।

নীলঃ না রে প্লিজ আমাকে জোর করিস না। আমি আর কিছু না বলে বাইরে আসলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা। কি হলো নীলর ওতো এমন ছিলনা হঠাৎ করে কি এমন হলো ওর। মনের অজান্তেই মোহিনী এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে লাগল। নীলর এরুপ আচরনে সে কিছুটা দুখিঃত। ওদিকে নীল একটাই চিন্তা করছে কী ভাবে মোহিনীকে সে নিজের মনের কথাটা বলবে।

যাই হোক, মূল ঘটনায় আসি।

নীলঃ আজকে আমি মোহিনীকে আমার মনের কথাটা বলেই ছারব। যে করেই হোক আজকে আমি মোহিনী কে সব বলবই যে আমি ওকে কতোটা ভালোবাসি।

(তাই আমি আর দেরি না করে বাড়ির ভিতরে গেলাম গিয়ে দেখি মোহিনী বসে কি জেন ভাবছিল আমাকে দেখে উঠে দারলো আর বললো)

মোহিনীঃ নীল তুই কথায় ছিলি আমি সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি তোর জন্য আর তোরতো কোন হুদিস নাই।

নীলঃ মোহিনী তোর সাথে আমার একটু কথা আছে ছাদে আয়।

মোহিনীঃ কেন এখানে বল কি বলবি।

নীলঃ না এখানে বলা যাবেনা তুই প্লিজ ছাদে আয়। আমি যাচ্ছি তুই আয়।

মোহিনীঃআচ্ছা তুই যা আমি যাচ্ছি। হঠাৎ নীলর কি হলো ও এমন করছে কেন।

নীলঃ আমি ছাদে চলে আসলাম তার কিছুক্ষণ পর মোহিনী আসলো।

মোহিনীঃ হুম এখন বলতো কি বলবি।

নীলঃ আমি যেই কথা গুলো বলব সেগুলো মন দিয়ে শুনিস। আমি জানিনা কথাগুলো বলার পর তুই কেমন রিয়েক্ট করবি কিন্তু আমি আর এগুলো নিজের মনে চেপে রাখতে পারছিনা। বার বার খালি হারানোর ভয় কাজ করছে।

মোহিনীঃ আরে আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না একটু পরিস্কারভাবে বল।

নীলঃ মোহিনী আমি তোকে খুব ভালোবাসি রে। তোকে ছাড়া আমি বাচঁবোনা । মনের অজান্তেই তোকে আমি খুব ভালোবেসে ফেলেছি। আমি তোকে এতদিন বলিনি কারন তুই যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাস। কিন্তু মনের মাঝে যখন তোকে হারানোর ভয়টা তীব্র হয়ে ওঠলো তখন আমি আর চাইলেও নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। তাই তোকে আমি সব বলপ দিলাম।

মোহিনীঃ ঠাসসসসসসসস আমি তো ভাবতেও পারিনি তুই এমনটা করবি। তোকে আমি খুব ভালে ভেবেছিলাম কিন্তু না তুইও একটা লুচ্চা। তোর সাথে আমি কি একটু মিশলাম আর তুই এইটাকে ভালেবাসা মনে করলি। আসলে তোরা সব ছেলেরা না একি। আমারি ভুল হয়েছিল তোকে নিজের বন্ধু বানিয়ে যা এখন আমার চোখের সামনে থেকে দূর হো।

নীলঃ আমি ভাবতেই পারিনি যে মোহিনী এইটা করবে। আচ্ছা ভালোবাসাটাকি অপরাধ। আমি কি এমন ভুল করেছি। আমি তোকে ভালেবাসছি এইটা কি আমার ভুল। আমিতো তোর কাছে কিছু চাইনি শুধু তোর মনের কোনে একটু জায়গা চেয়েছিলাম। আমি তো তোকে নিয়ে নিজের একটা পৃথিবী তৈরি করতে চাইছিলাম। এইটা কি ভুল।

(কান্না করতে করতে কথা গুলো বললাম)

মোহিনীঃ চুপচাপ…….

নীলঃ কি হলো বল চুপ করে আছিস কেন এখন।

মোহিনীঃ চুপচাপ…….

নীলঃ তুই কি বলবি যা বলার আমি বলছি। আরে আমি তো তোকে সেই প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসি কিন্তু কোনদিন বলিনি কারন তুই যদি খারাপ মনে করিস আমাকে।
মোহিনীঃ চুপচাপ……

নীলঃ কিন্তু যখন তোকে হারাবার ভয় করছিল তাই নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না। আমি কত আশা নিয়ে তোকে কথাগুলো বললাম কিন্তু সেগুলো আমার আশাই থেকে গেল।

মোহিনীঃ তাও চুপচাপ…….

নীলঃ আসলে কিছু আশা আশাই থেকে যায় কখনো পূরণ হয়না। যানিস আমি ভাবছিলাম আজ তোকে ভালোবাসি কথাটা বলার পর তুই আমাকে জরিয়ে ধরবি আর কপালে একটা চুমু খেয়ে বলবি যে আমিও তোকে খুব ভালোবাসি নীল।

কিন্তু দেখ সব কিছুই যেন উল্টো হয়ে গেল আর আমি তোর চোখে লুচ্চা হয়ে গেলাম।

মোহিনীঃ দেখ নীল…..

(ওকে থামিয়ে দিয়ে)

নীলঃ থাক তোকে আর কিছু বলতে হবে না। হয়তো তুই আমার ভালোবাসা বুঝিস নি। ওকে ভালো থাকিস আমি আজকে আর এখনি এই গ্রাম ছেড়ে চলে যাব।

(আমি কান্না করতে করতে ছাদ থেকে নিচে চলে গেলাম)

(মোহিনী শুধু মাথা নিচু করে কথা গুলো শুনছিল ও যেন ওর কথা বলার ভাষাই হারায় ফেলেছে)

মোহিনীঃ নীল শুন শুন প্লিজ যাসনা……

নীলঃ আমি ওর কোন কথা না শুনে নিচে চলে আসলাম।

তারপর মোহিনীর চাচাতো বোনের বাড়ি থেকে মোহিনীদের বাড়িতে চলে গেলাম আমিতো কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিনা যে মোহিনী আমাকে থাপ্পড় মারলো এসব ভাবতে ভাবতে মোহিনীদের বাড়িতে গেলাম ওখানে গিয়ে দেখি মোহিনীর বাবা সোফায় বসে আছে আমাকে দেখে বলল।

আঙ্কেলঃ কি হলো বাবা তুমি এত তারাতাড়ি চলে আসলা যে আর বাকিরা কই।

নীলঃ আসলে আঙ্কেল আমার আম্মুর শরীরটা খুব একটা ভালো না তাই আমাকে এখনি যেতে হবে আম্মু ফোন করছিল।

আঙ্কেলঃ সে কী কিন্তু এখন রাতে তুমি কিভাবে যাবা।

নীলঃ আপনি চিন্তা করিয়েন না আমি বাসের টিকিট কিনে নিয়েছি।

আঙ্কেলঃ কিন্তু বাবা আজকের রাতটা থাক। কাল সকালের ট্রেনে চলে যেও।

নীলঃ না আঙ্কেল আমাকে যেতেই হবে আজকে আম্মু খুবই অসুস্থ।

আঙ্কেলঃ আচ্ছা বাবা তুমি যেইটা ভালো মনে করো আর সাবধানে যেও রাস্তাঘাট ভালো না।

নীলঃ জি আঙ্কেল। তখন আর কোন কথা না বাড়িয়ে আমকে যে রুম টা দিয়েছিল থাকার জন্য সেখানে গেলাম আর নিজের সকল কিছু নিয়ে নিচে গেলাম। তারপর আঙ্কেলের কাছে বিদায় নিয়ে যেই বাইরে যাব তখনি মোহিনীর সামনে পরলাম । এই আবার কখন এলো। যাই হোক আমি যখনি ওকে এরিয়ে যেতে লাগলাম তখনি মোহিনী পিছন থেকে আমার হাতটি ধরলো আমি কোন মতে হাতটা ছারিয়ে চলে আসলাম বাড়ির বাহিরে। তারপর একটা রিকশা করে বাস স্টান্ডে চলে গেলাম।তার কিছুক্ষণ পর একটি বাস আসলো সেটাতে করে নিজের বাসায় চলে আসলাম। তারপর কলিংবেল চাপ দিতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিল। আমাকে দেখে অবাক হয়ে গেল কারণ আমি কালকে গেলাম আর আজকেই আসলাম। আম্মু আমাকে দেখে বলল…….

আম্মুঃ কিরে তুইতো কালকেই গেলি আর আজকেই চলে আসলি। আর তোকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক কেঁদেছিস। কি হয়েছে বাবা তোর এই অবস্থা কেন আমাকে বল।

নীলঃ না আম্মু আমার কিছু হইনি তুমি প্লিজ আমাকে এখন কোন প্রশ্ন করোনা আমাকে ভালো লাগছে না। তারপর আমি আর কিছু না বলে নিজের রুমে চলে আসলাম। অপরদিকে মোহিনী ভাবছে।

মোহিনীঃ আমি কি করে পারলাম ওকে থাপ্পড় মারতে। ও তো ঠিকই বলছে ও আমাকে ভালোবাসে এইটা তো খারাপ কিছু না। আর ও তো আমাকে জোর করেনি ভালোবাসার জন্য। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে আমার। কী করে পারলাম ওকে এতোটা কষ্ট দিতে। না আমি কালই ওর কাছে ক্ষমা চাব।

(মোহিনী এসব কান্না করতে করতে বলল)

আর নীল এদিকে ভাবছে……

নীলঃ আমি কি ওকে ভালোবাসি এইটা কি ভুল। না এখানেতো মোহিনীর কোন দোষ নেই। ওতো আমাকে শুধু নিজের ফ্রেন্ড ভাবে আর জোর করে ভালেবাসা পাওয়া যায়না। আমি না হয় ওকে নিরবেই ভালোবেসে যাব কিন্তু কোনদিন প্রকাশ করব না।

ও ভালো থাকুক এতেই না হয় আমি আমার সুখ ও শান্তি খুজে নিব। আমি না হয় ওকে দূর থেকেই ভালোবাসব।

(নীল কান্না করতে করতে এগুলো বলল)

ওদিকে নীলর আম্মু তার ছেলের এরুপ আচরণের কারণে খুবই চিন্তিত। তার ছেলের এমন পরিবর্তনে তিনি খুবই হতাশ।

ওদিকে মোহিনী চিন্তিত যে সে কিভাবে নীলর কাছে ক্ষমা চাবে। নীল আদও আমাকে ক্ষমা করবে এসবের পর।

এসব এসব ভাবতে ভাবতে দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ল।
কাল সকালে……

নীলঃ আম্মু আমি কলেজ যাচ্ছি।

আম্মুঃ কেন কিছু খেয়ে যা আর আজকে এত দেরি করে উঠলি কেন। আমাকে বল না বাবা কি হয়েছে তোর আমাকে বল।

নীলঃ না আম্মু কিছু হয়নি আর আমার খাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। আমি কলেজে গিয়ে দেখি মোহিনীও কলেজে আসছে আমাকে দেখে আমার কাছে দৌড়ে আসলো। তারপর ও যা করল………

পর্ব নং – ৬

আমি কলেজে গিয়ে দেখি মোহিনীও কলেজে আসছে আমাকে দেখে আমার কাছে দৌড়ে আসলো। তারপর ও যা করল…..

মোহিনীঃ নীল প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে আমি সত্যি কিছুই বুঝতে পারি না । আমি আসলে আমার মাথা তখন ঠিক ছিল না তাই তোকে আমি মারছিলাম। প্লিজ আমাকে তুই ক্ষমা করে দে।

নীলঃ তুই আর কিছু বলবি। আমার ক্লাসের দেরি হচ্ছে। কিছু বকার থাকলে তারাতাড়ি বল।

মোহিনীঃ নীল আমার কথাটা শুন আমি সত্যি দুখিঃত কালকের জন্য আসলে আমি ভাবিনি যপ এত কিছু হয়ে যাবে।

নীলঃ না তুই কিছু করিস নি সব ভুল আমার। আমার বুঝা উচিত ছিল যে জোর করে ভালেবাসা পাওয়া যায়না। কিন্তু কি করব বেহায়া মন বার বার খালি ওই কথাটি মনে করিয়ে দেয়। কি করব বল এই ভালোবাসাটা শুধু একতরফা যাই হোক আমি ক্লাসে যাব তুই যদি চাস তাহলে আমার সাথে যেতে পারিস।

আমি যখন দেখলাম ও কিছু বলছে না তখন আমি চলে আসলাম ওখানে থেকে কারণ ওখানে যদি থাকতাম তাহলে নিজের চোখের পানি আটকে রাখতে পারতাম না। আমি চলে আসলাম ক্লাসে আর মোহিনী ওখানে দারিয়ে কান্না করছিল। আর ভাবছিল যে যেই নীল আমার সাথে সয়তানি না করে ক্লাসে যেতো না যেই নীল আমাকে ছাড়া কলেজে ঢুকতো না। যেই নীল আমাকে ফোন না দিয়ে থাকতে পারতো না আর সেই নীল এক রাতে এতো বদলে গেছে ভাবতেও খুব অবাক লাগছে। তাহলে কি আমি নীলকে হারালাম। এসব ভাবতে ভাবতে মোহিনীও ক্লাসে আসল আর ওর বান্ধবীদের সাথে বসে পরলো। আর আমি একা একটা সিটে বসে আছি তখনি প্রিন্সিপাল সার রুমে আসলো আর বলল,

সারঃ কেমন আছো তেমরা সবাই।

সবাইঃ ভালো আছি সার আপনি।

সারঃ আমিও ভালো আছি আর তোমাদের ক্লাসে নতুন একজন স্টুডেন্ট এসেছে। যার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি এসেছি। নেহা এদিকে এসো।
(তারপর বাহির থেকে একটা মেয়ে এলো)

এ হলো নেহা আর ও আজকে থেকে তোমাদের সাথেই পরবে। তারপর সার চলে গেলেন। মেয়েটি এদিক সেদিক বসার জন্য জায়গা খুজছিল তারপর দেখল যে আমার পাশের সিটটা খালি আছে তাই আমার পাশে এসে বসে পরলো। তারপর ক্লাসে সার আসলো আর ক্লাস নিতে শুরু করলো এরই ফাকে মোহিনী আমার দিকে দু তিনবার তাকিয়েছিল। আমি দেখে না দেখার ভান করে ছিলাম। ক্লাস শেষ করে সার চলে গেলেন। তারপর আমার পাশের মেয়েটি বললো।

মেয়েটিঃ হাই আমি নেহা আর আপনি।

(আমার দিকে বন্ধুত্বের হাত বারিয়ে দিয়ে)

নীলঃ হাই আমি নীল।

(মেয়েটির সাথে হাত মিলিয়ে)

নেহাঃ আমরা কি বন্ধু হতে পারি।

নীলঃ এই কথাটা শুনে কপন জানি বুকের বাম পাশটা মোচর দিয়ে উঠল। ঠিক এই কথাটি আমিও একদিন মোহিনীকে বলেছিলাম।

নেহাঃ আপনি মনে হচ্ছে খুব চিন্তিত। কোন প্রবলেম।

নীলঃ কই না তো।

নেহাঃ না মনে হলো তাই বললাম। আচ্ছা বাদ দিন কেমন আছেন বলুন।

নীলঃ জি ভালো আপনি।

নেহাঃ হুমম ভালোই আছি।

নীলঃ আপনাকে দেখপতো এই শহরের মনে হচ্ছে না।

নেহাঃ না আমি এখানে থাকি না। কিছুদিন হলো এখানে এসেছি।

নীলঃ ওওও আচ্ছা।

নেহাঃ হুমম আচ্ছা চলুন না কেন্টিনে যাই কিছু খেয়ে আসি।

নীলঃ কেন আপনি যান।

নেহাঃ এভাবে বলছেন কেন আসলে আমিতো এখানে নতুন তাই কিছুই চিনি না।

নীলঃ ওওও সরি। আচ্ছা চলুন আপনাকে আমি নিয়ে যাচ্ছি।

(নেহা যেতে যেতে আবার বক বক শুরু করল)

নেহাঃ আচ্ছা আমি আপনাকে তুমি করে বলতে পারি।

নীলঃ হুমম ওকে বলিয়েন।

নেহাঃ ওকে ধন্যবাদ। আচ্ছা আপনার বাড়িতে কতজন আছে।

নীলঃ আমি আমার বাবা…. মা… আর আমার ছোট ভাই। আর আপনার।

নেহাঃ আমার বাড়িতে আমি আম্মু আর আব্বু থাকি।

নীলঃ শুধু এই কয়েকজন কেন কোন ছোট ভাই বোন নেই?

নেহাঃ না আমি সবার ছোট। আমার একটা বড় ভাই আছে।

নীলঃ ওওও আচ্ছা। আপনার বড় ভাই কি করে।

নেহাঃ ওওও উনি একজন পুলিশ অফিসার।

নীলঃ কিইইইই।

নেহাঃ হুম এতে অবাক হওয়ার কি আছে।

নীলঃ না আসলে আমি পুলিশকে খুব ভয় করি।

নেহাঃ হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা। আচ্ছা ভিতরে চলুন।

নীলঃ হুমম চলুন। আমি তো এতক্ষণ লক্ষই করিনি যে মোহিনী আমাদের ফলো করছিল। আমরা যেখানে বসলাম তার পাশের টেবিলে মোহিনী বসলো।

নেহাঃ কি হলো ওইদিকে কী দেখছেন।

নীলঃ না না কিছু না তুমি খাবার অর্ডার করো।

নেহাঃ না না আপনি বলুন আপনি কি খাবেন।

নীলঃ না আপনি নতুন তাই আপনি বলুন।

(তারপর নেহা কিছু খাবার অর্ডার দিল আর পাশের টেবিলে মোহিনী এগুলো দেখছে আর রাগে ফুলছে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা একি এই মেয়ে তো আমার দিকেই আসছে আর যেভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আমাকে গিলে খাবে)

মোহিনীঃ নীল শুন তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।

নীলঃ না তুই যা আমি একটু পরে যাচ্ছি।

মোহিনীঃ তোকে আমি যেইটা বলেছি সেইটা কর।

(রাগী কন্ঠে কথাটা বলল)

নীলঃ আরে আমিতো ওর এইরকম চেহারা দেখে খুবি ভয় পেয়ে গেলাম কিন্তু তাও বললাম মোহিনী বললাম তো তুইযা আমি পরে যাব। আর এদিকে নেহাতো আমাদের কান্ড দেখে কিছুই বুঝতে পারছেনা। তারপর মোহিনী আমার কলার ধরে ক্যান্টিন থেকে নিয়ে মাঠের এক কোণে নিয়ে গেল আর এদিকে কলেজের সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। তারপর মোহিনী বলল।

মোহিনীঃ ওখানে ওগুলো কি হচ্ছিল।

নীলঃ কি হচ্ছিল মানে আমি আর নেহা ওখানে খাওয়া করতেছিলাম।

মোহিনীঃ তুই ওই মেয়ের সাথে কেন খেতে যাবি।

নীলঃ সেটাকি আমি তোকে বকব নাকি। আর তুই কোন অধিকারে এগুলো বলছিস।

মোহিনীঃ কাল আমাকে প্রপোজ করলি আর আজকে অন্য মেয়ের সাথে টাংকি মারিস।

নীলঃ আমি ওগুলো কিছুই করিনি আর তুই তো আমাকে ভালোই বাসিস না তাহলে তোর লাগবে কেন। যদি তুই আমাকে ভালোবাসতি তাহলে তোর কষ্ট হওয়ার কথা ছিল। আর পরবর্তীতে এগুলো কথা না বললে আমি খুশি হবো।

মোহিনীঃ নীল তুই এক রাতের মধ্যে এতোটা বদলে গেলি কিভাবে।

নীলঃ সময় ও পরিস্থিতি মানুষকে চেঞ্জ হতে বাধ্য করে।

মোহিনীঃ দেখ আমি বলে দিচ্ছি তুই ওই মেয়ের সাথে একদম মিশবি না।

নীলঃ কেন মিশবনা নেহা খুব ভালে একটা মেয়ে এসব বলে আমি চলে আসলাম। আর মোহিনী কান্না করতে থাকলো আমি মনে মনে বলছিলাম ঢ়ে দেখ এখন প্রিয়জনের অবহেলা কেমন লাগে। তারপর আমি কলেজ থেকে সজা বাসায় গেলাম। বসায় যাওয়ার পর….

আম্মুঃ নীল এদিকে শুন।

নীলঃ জি আম্মু বলো।

আম্মুঃ আমি কাল থেকে দেখছি তোর কিছ একটা হয়েছে। এখন সত্যি সত্যি বল কি হয়েছে।

নীলঃ আরে না কিছু হয়নি।

আম্মুঃ আমি বুঝতে পেরেছি তোর মোহিনীর সাথে কিছু হয়েছে তাই না।

নীলঃ আরে বলছি তো কিছু হয়নাই তাও তুমি একি প্রশ্ন করছো কেন।

আম্মুঃ শুন তুই আমার ছেলে তাই তোকে আমি ছাড়া আর কেউ ভালো বুঝতে পারবে না । আমি ভালো করেই জানি যে তোর কিছু একটা হয়েছে আচ্ছা এখন যাও আর ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আমি খাবার দিচ্ছি।

নীলঃ ওকে যাচ্ছি । তারপর আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম খাওয়ার জন্য। কিছু খেয়ে আবার নিজের রুমে চলে আসলাম। আর ভাবতে লাগলাম আজকে কলেজের ঘটনাটি মোহিনী কেন আমার সাথে এমন করল তবে কি ও আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম নিজেও জানি না। বিকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম তারপর বাইকটা নিয়ে চলে গেলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য। ওখানে গিয়ে রহিম বলল।

রহিমঃ কি রে দোস্ত গার্লফ্রেন্ড পেয়ে এখন দোস্তকে ভুলে গেছিস।

নীলঃ হা হা হা হা।

রহিমঃ হাসছিস কেন আমি কি কোন জোক্স বললাম নাকি।

নীলঃ তারপরে আমি ওকে ওইদিনের সব ঘটনা খুলে বললাম।

রহিমঃ কি বলিস দোস্ত আমার মনে হচ্ছে তোর কথাও ভুল হচ্ছে। আনার মনে হয় মোহিনীও তোকে ভালোবাসে।

নীলঃ তারপর আমি ওকে আজকের ঘটনাটা বললাম।

রহিমঃ আরে দোস্ত তুইতো প্রমান পায় গেলি।

নীলঃ কোন প্রমান।

নীলঃ আরে মোহিনী তোকে অন্য মেয়ের সাথে দেখতে পারেনা কেন জানিস।

নীলঃ কেন?

রহিমঃ ওরে পাগল কারন ও তোকে ভালোবাসে এই জন্য। এখন চল ট্রিট দিবি।

নীলঃ আরে হেতো তুই কি সত্যি বলছিস।

রহিমঃ হুমমম।

নীলঃ না এখন না যখন আমাদের রিলেশন শুরু হবে তখন ট্রিট দিব। তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম। তারপর ভাবতে লাগলাম তাহলে মোহিনী কি সত্যি আমাকেই ভালোবাসে।
এভাবে ১৫ দিন কেটে গেল আমি মোহিনীর সাথে প্রয়োজন ছাড়া কিছু বলিনা। একদিন রাতে মোহিনী তার ডায়েরিতে আমার কথা লিখছিল আর কান্না করছিল।

মোহিনীঃ নীল তুই কেন এমন করছিস আমার সাথে। জানিস আমি কতটা কষ্টে থাকি। তুই কেন নেহার সাথে মিশিশ। তুই কি বুঝিস না যে আমি তোকে অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারি না। জানিস তোর কথা মনে করে প্রতি রাতে আমি কাদি। জানিস নীল এখন তোর মতো করে কেউ আমাকে বলে না যে মোহিনী খাওয়া করছিস। তোর মতো করে আমকে কেউ শাসন করে না না আমি বুঝে গেছি তোকে ছাড়া আমি অসম্পূর্ন। কান্না করতে করতে মোহিনী বালিশ কান্নায় ভাসিয়ে দিয়েছে। এভাবে কাটছিল দিনগুলো একদিন মোহিনীর বাবা আমাকে ফোন দিয়ে যা বলল….


পর্ব নং – ৭

এভাবে কাটছিল দিনগুলো একদিন মোহিনীর বাবা আমাকে ফোন দিয়ে যা বলল…..

আঙ্কেলঃ নীল তুমি কোথায় বাবা?

নীলঃ কেন আঙ্কেল আমি তো বাসায়। আর হঠাৎ ফোন দিলেন যে কোন প্রবলেম।

আঙ্কেলঃ বাব তুমি তারাতাড়ি সিটি হাসপাতালে আসো। মোহিনী সুসাইট করছে।

(আঙ্কেল কান্না করতে করতে কথাটা বলল)

নীলঃ এই কথাটা শুনার পর যেন আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল। আমার অজান্তেই চোখ দিয়ে পানির বন্যাা বয়ে যেতে লাগলো আমি কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে আঙ্কেল কে বললাম। আঙ্কেল প্লিজ কান্না করিয়েন না আমি এখুনি যাচ্ছি। আপনি কোন চিন্তা করিয়েন না সব ঠিক হয়ে যাবে।

তারপর আমি নিচে গেলাম আম্মুকে সব খুলে বললাম তার কিছুক্ষণ পর আমি আর আম্মু হাসপাতালে গেলাম। গিয়ে দেখি আঙ্কেল আর আন্টি অপারেশন থিয়েটারের বাইরে দারিয়ে অঝোরে চোখের পানি ফেলছে। আমি তাদের এই অবস্থা দেখে নিজের চোখের পানি আটকে রাখতে পারলাম না। আমি আঙ্কেলের কাছে গিয়ে বললাম। আঙ্কেল মোহিনী এখন কেমন আছে।

আঙ্কেলঃ জানি না বাবা ডাক্তার সাহেব নিয়ে গেছেন অপারেশন থিয়েটারে। মেয়েটা যে কেন এমন করলো। কিছুদিন ধরে খাওয়া দাওয়া সব ছেড়ে দিয়েছিল সবসময় ঘরে বসে কান্না করতো। তারপর আজকে আমি যখন ওর রুমে গেলাম তখন দেখি যে ও সুসাইট করছে আর হাতে এই চিঠিটা ছিল।

(আঙ্কেল কান্না করতে করতে কথা গুলো বলল)

নীলঃ কোন চিঠি আঙ্কেল। তারপর আমি আঙ্কেলের কাছ থেকে চিঠিটা নিয়ে পরতে লাগলাম। চিঠিটা ছিল এমন…..

প্রিয় নীল,
আশা করি, তুই ভালো আছিস।
আর আমি যানি তোর ভালো না থাকার কারণ গুলোর মধ্যে আমি একজন। আর আমি জানি তুই নেহাকে পছন্দ করিস আর সাথেই তুই ভালো ও সুখে থাকিস।
জানিস নীল তোকে আমি যখন ওই নেহার সাথে দেখতাম না আমার খুব খারাপ লাগতো।

তখন আমার খুব ইচ্ছে হতো তোকে গিয়ে জরিয়ে ধরতে আর বলতে নীল আমি তোকে খুব খুব ভালোবাসি। কিন্তু আমি পারতাম না কারণ তুইতো ওর সাথেই হাসি খুসি থাকতিস।
জানিস আমার ভালো থাকার কারণ গুলের মধ্যে তুই একটি কারণ।

তোকে ছাড়া যে আমার প্রত্যেকটা মুহূর্ত এক একটি বছর মনে হতো।

তোকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগতো না আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার। কিন্তু আমি চাইলেও তোকে গিয়ে বলতে পারিনি। কারণ তুইতো ওর সাথেই ভালো আছিস। আমার কারণে তোর ভালো লাগা নষ্ট হোক এইটা আমি চাই না।

তাই এই রহিম রেখে কী লাভ যেখানে বেচেঁ থাকার জন্য কোন উদ্দেশ্য নেই।

তুই তো আমার সব ছিলি আর যখন তুই আমার রহিম থেকে সরে গেলি তাহলে আমার আর বেচে থেকে কী হবে। তাই তুই আর নেহা ভালো থাকিস।

ইতি
তোরই বন্ধু
মোহিনী

চিঠিটা পড়ার পর আমার চোখ দিয়ে অঝরে পানি পরতে লাগলো। এ আমি কি করলাম আমি কিভাবে পারলাম ওকে এতটা কষ্ট দিতে। আমি যেনে শুনে এইরকম ভুল কিভাবে করলাম। না আমি খুব করেছি ওর সাথে এসব ভাবছিলাম আর তখনি ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে থেকে বের হচ্ছেন। আমি দৌড়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে তারপর ডাক্তার বলল।

ডাক্তারঃ আপনারা চিন্তা করিয়েন না উনি এখন সুস্থ আছে। আপনারা ওনাকে ঠিক সময় হাসপাতালে নিয়ে আসছেন বলে এবারের যাত্রায় উনি বেচেঁ গেছেন আার উনার খেয়াল রাখবেন।

নীলঃ জি ডাক্তার। আর আমরা কি ওনার সাথে দেখা করতে পারি।

ডাক্তারঃ না এখন না উনাকে আমরা ঘুমের ইনজেকশন দিছি তাই জ্ঞান ফিরলে আপনারা দেখা করতে পারেন।

নীলঃ ওকে ডাক্তার। তারপর আমরা সবাই মোহিনীর জ্ঞান ফেরার জন্য অপেক্ষা করছিলাম অবশেষে তার জ্ঞান ফিরলো। একে একে সবাই তার সাথে দেখা করার জন্য ভিতরে গেল কিন্তু আমি এখনো যাইনি আর কেনই বা যাব তার এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী। আমি এসব ভাবছিলাম আর কান্না করছিলাম তখনি মোহিনীর বাবা এসে বললো যে মোহিনী আমাকে ডাকছে তারপর আমি ভিতরে গেলাম। তারপর মোহিনী সবাইকে বাহিরে যেতে বলল।

মোহিনীঃ নীল তুই এসেছিস । আমার কাছে আয়।

(তারপর আমি ওর কাছে গেলাম)

নীলঃ মোহিনী তুই এগুলো কেন করিস তুই কও একটি বার আমার কথা ভাবলি না যে আমার কি হবে। তুই জানিস আমি এতক্ষণ কিভাবে ছিলাম। তুই খুব খারাপ। আমি কান্না করতে করতে কথা গুলো বললাম।

মোহিনীঃ প্লিজ নীল কাদিস না আমার ভুল হয়েছে। আমি আর কখনো এমন করবো না। আমি তোকে ছাড়া আর কোথায় যাবনা এই বলে মোহিনী আমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরলো আর কপালে একটা চুমু খেয়ে বলল আমার পাগলটাকে আমি খুব খুব ভালোবাসি।

নীলঃ আমিও ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম আমিও আমার পাগলিটাকে খুব ভালোবাসি। এই বলে আমিও ওকে বুকে জরিয়ে ধরলাম আর এভাবে যে কতক্ষণ ছিলাম জানি না। তবে মনে হচ্ছিল যেন সময়টা যদি এখানেই থেমে যেত তাহলে খুব ভালো হতো।তখনি মোহিনীর বাবা রুমে আসল আর হালকা একটা কাশি দিল।

আঙ্কেলঃ এহেম এহেম এহেম।

তারপর আমারা দুজন দেখলাম যে সবাই আমাদের দিকে একধ্যয়ানে তাকিয়ে ছিল আমরা দুজন তো তখন লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম। তারপর মোহিনীর বাবা বলতে শুরু করল।

আঙ্কেলঃ মা তুই এখন কেমন আছিস।

মোহিনীঃ জি আব্বু ভালো আছি এখন একটু।

আঙ্কেলঃ আচ্ছা মা আর নীল তুমি এখন বাসায় যাও তোমার আম্মু আর তুমি অনেক্ক্ষণ হলো এসেছো।

মোহিনীঃ নাাা (মোহিনী কথাটা চিল্লিয়ে বলল)

সবাই তো ওর কান্ড দেখে অবাক সবাই হাসবে না কানবে বুঝতে পারছে না। তখন ওর আম্মু বলতে শুরু করলো।

আন্টিঃ কেন ওরা তো অনেকক্ষণ হলে এসেছে।

মোহিনীঃ না মানে তোমরা যাও নীল আমার সাথে এখানে থাকবে।

তখন আমার আম্মু বলল?

আম্মুঃ আচ্ছা মোহিনী নীল তোমার কাছে থাকবে আমরা তাহলে যাই এখন।

মোহিনীঃ ওকে আন্টি।

আমি তো কিছুই বলতে পারছিনা লজ্জায় পুরো লাল হয়ে গেছি মোহিনীর কান্ড দেখে সবার সামনে এসব কি বলছে ও । তার কিছুক্ষণ পর সবাই চলে গেল। শুধু আমি আর মোহিনী ছিলাম। তারপর আমি মোহিনীকে বলতে লাগলাম।

নীলঃ কি রে তোর কি কোন কান্ড জ্ঞান নাই নাকি সনার সামনে কি কেউ এমন করে।

মোহিনীঃ আমি আমার স্বামীর সাথে কি করব সেইটা কি আমাকে কারো থেকে শিখতে হবে নাকি।

নীলঃ তোর সাথে আমি পারব না আচ্ছা নে এখন কিছু খেয়ে নে।

মোহিনীঃ না আমি খাবো না তুই খিলায় দিবি।

নীলঃ তুই কি এখন বাচ্চা হয়ে গেলি নাকি।

মোহিনীঃ হুমম এখন তারাতাড়ি দেতো।

নীলঃ ওকে নে হা কর। তারপর আমি ওকে খিলায় দিলাম। তখন আবার অন্য এক বায়না ধরলো।

মোহিনীঃ নীল তুই আমার পাশে শুবি।

নীলঃ তুই এগুলো কি বলিস আর আমি তোর পাশে শুতে যাব কেন।

মোহিনীঃ আমি বলেছি তাই আর এখন বেশি কথা না বলে আমার পাশে এসে শুয়ে পর।

কি আর করার ওর পাশে শুয়ে পরলাম।

নীল তোকে একটা কথা বলব।

নীলঃ হুমম বল।

মোহিনীঃ আমি আগে তোর বুকে আমার মথাটা রাখি।

নীলঃ ওকে। তারপর ও আমার বুকে মাথা রাখলো আর বলল,

মোহিনীঃ জানিস আজকে আমি খুব খুশি।

নীলঃ কেন।

মোহিনীঃ কারণ আমি আজকে আমার পাগলটাকে নিজের করে পেলাম।

নীলঃ ওওওহহহ তাই।

কিছুক্ষণ কথা বলার পর আমারা দুজনেই ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে ঘটলো আরেক ঘটনা আমরা দুজনে একে ওপরকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলাম আর সবাই কেবিনে এসে এইটা দেখে হাসছিল আমরা নিজেরা নিজেকে ছেরে দিলাম।

আম্মুঃ মোহিনী তুমি এখন কেমন আছো।

মোহিনীঃ জি আন্টি ভালো আছি।

আম্মুঃ হুমম আচ্ছা। আর শুনো নীল তুমি এখন বাসায় যাও আর ফ্রেশ হয়ে পরে এসো কেমন।

নীলঃ জি আম্মু যাচ্ছি।

মোহিনীঃ ওকে তারাতাড়ি আসিও।

তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম ফ্রেশ হশে খেতে বসলাম তখনি মায়ের ফোন তারপর আম্মু বললো যে,

আম্মুঃ নীল তুই তারাতাড়ি হাসপাতালে আয়।

নীলঃ কেন আম্মু?

আম্মুঃ মোহিনী তোকে ছাড়া নাকি খাওয়া করবে না।

নীলঃ উফফফ ওকে থামো আমি যাচ্ছি।

আম্মুঃ ওকে তারাতাড়ি আয়।

নীলঃ জি আম্মু।

তারপর হাসপাতালে হেলাম গিয়ে দেখি মোহিনী মুখ ফুলিয়ে বসে আছে আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম।

মোহিনী এগুলো কি তুই না খেয়ে আছিস কেন।

মোহিনীঃ আমি তোর হাতে খাব তাই।

নীলঃ কেন তুই কি নিজে খেতে পারিস না।

মোহিনীঃ না তুই খিলায় দিবি বুঝলি।

কি আর করার খিলায় দিলাম।

তারপর বলল নীল আমার এখানে ভালো লাগছেনা আমি বাসায় যাব।

নীলঃ ওকে তুই থাম আমি গিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসি। তারপর আমি ডাক্তারের রুমে গেলাম আর বললাম ডাক্তার আমরা কি ওকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি।

ডাক্তারঃ জি উনি এখন পুরোপুরি সুস্থ।

নীলঃ ওকে ডাক্তার তারপর আমরা ওকে বাসায় নিয়ে গেলাম তবে ওর বাসায় না বমাদের বাসায় উনার জেদ উনি আমার বাসায় আমার সাথে সাথে থাকবেন। আমরা ওকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু ও কারো কথাই শুনি নি। বাসায় আসার পর মোহিনী আমাকে কোথাও যেতে দেয় নাই সব সময় ওর কাছে রাখছে।

মোহিনী এখন সুস্থ তাই আমি আর মোহিনী আজকে কলেজে গেলাম।

আমাকে কলেজে দেখে নেহা আমাকে দৌড়ে এসে জরিয়ে ধরলো আর এদিকে মোহিনী রাগে একদম লাল হয়ে গেছে তখন মোহিনী নেহার সাথে যা করলো..

পর্বটি দিতে দেরি হলো এই জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুখিঃত।


পর্ব নং – ৮

আমাকে কলেজে দেখে নেহা আমাকে দৌড়ে এসে জরিয়ে ধরলো আর এদিকে মোহিনী রাগে একদম লাল হয়ে গেছে তখন মোহিনী নেহার সাথে যা করলো…..

মোহিনীঃ ওই মেয়ে তুমি ওকে জরিয়ে ধরলে কেন।

নেহাঃ আমি উনাকে জরিয়ে ধরেছি তাতে আপনার কি।

মোহিনীঃ আমার কী মানে আমার অনেক কিছু। বাই দা ওয়ে ও আমার হবু বর ওকে তাই একটু দুরুত্ব রেখে চলবা।

নেহাঃ আপনার কি মাথা খারাপ হইছে নাকি যে নীল তোমাকে ভালোবাসবে। তখন নেহা আমাকে বলল যে নীল মোহিনী কি এগুলো সত্যি বলছে।

নীলঃ না মানে হ্যাঁ সত্যি।

নেহাঃ কি কিন্তু কিভাবে?

নীলঃ সে অনেক কাহিনী তোমাকে পরে বলব। এসব কথা শুনার পর নেহার মুখটি মলিন হয়ে গেল। আমি আর মোহিনী কিছু না বলে হাটা শুরু করলাম ক্লাসের দিকে। তখন আমি মোহিনীকে বললাম যে আমি আবার তোর কখন বর হলাম আর আমাদের বিয়ে ঠিক হলো কখন।

মোহিনীঃ হয়নি তবে হবে কিছুদিন পর হবে বুঝলি হাঁদারাম।

নীলঃ হুমম বুঝছি।

মোহিনীঃ হুমম গুড এইটাই তোর জন্য ভালো হবে।

নীলঃ এখনি আমার সাথে যেমন করিস আর বিয়ের পর তো মনে হয় আমাকে জালায় মারবি।

(কথাটা আমি আস্তে আস্তে বললাম)

মোহিনীঃ ওই কুওা কী বললি আবার বল আমি শুনতে পাই নাই।

নীলঃ তোকে আর শুনতে হবে না।

তারপর আমরা আর কিছু না বলে ক্লাসে চলে আসলাম। কলেজে ছুটির পর আমি বন্ধুদের সাথ ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখনি রহিম বলে উঠলো।

রহিমঃ আরে দোস্ত আমি যেইটা শুনলাম সেইটা কি সত্যি।

নীলঃ আরে কি বলছিস। (না বুঝার ভান করে)

রহিমঃ দেখ বেশি সাধু সাজতে হবে না। আমরা সব কিছু জেনে গেছি।

নীলঃ আরে কি হইছে বলবি তো?

রহিমঃ আমি তোর আর মোহিনীর রিলেশনটার কথা বলছি।

নীলঃ ওওও তোকে কে বললো?

রহিমঃ সেইটা তোর না জানলেও চলবে এখন বল কি ট্রিট দিবি।

নীলঃ আমার কাছে কোন টাকা নেই।

রহিমঃ তুই রিলেশন করবি আর ট্রিট দিবি না এইটা কি ঠিক বলতো।

নীলঃ আরে আমি কোন রিলেশন করি না তাহলে ট্রিট দিব কেন।

রহিমঃ তুই কি সত্যি বলছিস যে তুই রিলেশন করিস না।

নীলঃ হুমমম সত্যি বলছি।

রহিমঃ আজকে তোর কপালে দুঃখ আছে ভাই।

নীলঃ কি যাতা বলছিস।

রহিমঃ আমি সত্যি বলছি কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারবি।

নীলঃ তুই আর ভালে হবি না।

রহিমঃ আমকে ভালো হতে হবে না। তুই ভালো থাকিস আর বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে।

নীলঃ আরে রহিম এগুলো কি বলছিল পাগল হয়ে গেল নাকি।

আমি যেই পিছনে ঘুরে হাটতে শুরু করবো তখনি আমি বড় ধরনের একটা শক খেলাম আমি দেখলাম যে মোহিনী আমার পিছনে দাড়িয়ে ছিল। আর ওকে দেখে মনে হচ্ছে খুব রেগে আছে। কিন্তু কেন আমিতো এখন কিছুই বলিনি। ওওও আমার এখন মনে পড়লো রহিম কেন তখন ওই কথাটি বলছিল। সালা তোকে আমি দেখে নিব। তবে কি মোহিনী আমার সব কথা শুনে ফেলেছে। আমি ওকে বললাম তুই এখানে।

মোহিনীঃ কেন অন্য কেউ আসবে নাকি।

নীলঃ না না কি বলিস আমিতো এমনি বললাম।

মোহিনীঃ তুই রহিমকে কী বললি?

নীলঃ কই না তো আমিতো কাউকে কিছু বলিনি।

মোহিনীঃ তাহলে কি আমি ভুল শুনলাম।

নীলঃ আসলে ওরা তখন ট্রিট চাচ্ছিল তাই আমি তখন ওই কথাটি বলছিলাম এতটুকুই।

মোহিনীঃ চল আমার সাথে আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন।

নীলঃ কেন তুই কি করবি আমার সাথে।

মোহিনীঃ সেইটা না হয় বাসায় যায় দেখতে পাবি।

তারপর মোহিনী আমাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো। বাসায় আসার পর আমি এক দৌড় দিলাম নিজের রুমের দিকে। তারপর আমি যেই দরজাটা লাগাতে যাব তখনি মোহিনী আমার রুমে ঢুকলো আর বলল।

মোহিনীঃ তুই যদি রিলেশন না করিস তাহলে আমি কে বল? আর তখন তুই কি বললি আমি শুধু তোর বন্ধু তাই না। মোহিনী এসব বলছিল আর আমার দিকে এগোতে লাগল আমারতো গলার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে কি করব আমি এখন মোহিনী এখন আমার কাছে চলে এসেছে। ওর নিশ্বাসের শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছি তখনি আমি বললাম।

নীলঃ মোহিনী এগুলো কি করছিস ছার আমাকে। আর সর আমি ফ্রেশ হবো।

মোহিনীঃ তোকে আজ আমি আর ছার ছিনা তুই অনেক পালিয়ে বেরিয়েছিস আমার কাছ থেকে কিন্তু আর না আজকের পর থেকে তুই আমাকে ছাড়া কোথাও যাবি না।
তারপর মোহিনী আমাকে কিছু বলতে দিলনা ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোটঁ এক করে দিল আমরা দুজনে ডুবে গেলাম ভালোবাসার এক অনন্য সাগরে । প্রায় ১০ মিনিট পর ও আমাকে ছেড়ে দিল আমি তো এখনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা যে কি হলো। কিন্তু মহূর্ত টা ছিল অসাধারণ। তারপর আমি চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম খাওয়ার জন্য। তখন আম্মু বললো,

আম্মুঃ নীল আজকে তুই মোহিনী কে ওর বারিতে গিয়ে দিয়ে আসবি বুঝলি।

মোহিনীঃ তুমি ওইটা ওকে গিয়ে বলো আমি বলতে পারবনা।

আম্মুঃ তোর দারায় কিছু হবেনা আমাকেই সব কিছু করতে হবে। আর হে আমিও যাব তের সাথে।

নীলঃ কেন তুমি যাবা কেন?

আম্মুঃ তোর আর মোহিনীর বিয়ের কথাটা বলতে।

নীলঃ এত তারাতাড়ি কেন আমি তো এখন কোন চাকরি করি না।

আম্মুঃ আমি তো শুধু কথা বলব।

নীলঃ ওকে তুমি যেইটা ভালো মনে করো।

আম্মুঃ হুমমম মোহিনী কই ওকে তো দেখছিনা।

নীলঃ ওইতো মোহিনী আসছে। তারপর আম্মু মোহিনীকে সব বলব মোহিনীতো খুশিতে লাফাচ্ছিল। তারপর আমরা খাওয়া করে গেলাম মোহিনীর৷ বাসায়। আমদের দেখে মোহিনীর আব্বু আর আম্মু খুবি খুশি হয়েছেন।

তারপর আমার আম্মু বলল।

আম্মুঃ আপনারা কেমন আছেন। মোহিনীর আব্বু আর আম্মু একসাথে বলল ভালো আছি। তারা আমাকে একসাথে বসতে দিল মোহিনী আমার পাশে বসেছে। তখনি মোহিনীর আব্বু বলল,

আঙ্কেলঃ হঠাৎ কোন ফোন ছারাই চলে আসলেন একটা ফোনও দিতে পারতেন।

আম্মুঃ আসলে প্রয়োজন টাই ছিল এমন তাই বলা হয়নি।

আঙ্কেলঃ ওও কি এমন কথা।

আম্মুঃ আসলে আমি মোহিনী আর নীলর বিয়ের কথাটা বলতে এসেছি এখানে আপনাদের মতামত তো প্রয়োজন, তাই না।

আঙ্কেলঃ আমরা আর কি বলব যখন দুজন দুজনকে ভালোবাসে। আমরাও ঠিক একই কথাই ভাবছিলাম।

আম্মুঃ যাক তাহলে তো ভালই হলো।

আঙ্কেলঃ হুমম তো আপনারা কখন বিয়েটা করাতে চাচ্ছেন।

তখনি আমি বললাম।

নীলঃ আসলে আঙ্কেল আমরা তো এখন পড়ালেখা করি আর আমার তো কোন চাকরি বাকরি নাই তাই আমি যখন কিছু করব তখন না হয় বিয়েটা হবে।

এই কথাটা বলার সাথে সাথে মোহিনী পাশে থাকা ফুলদানিটা মাটিতে ফেলে দিয়ে ভেঙে দিল। আর বলল।

মোহিনীঃ না ওগুলো চলবে না বিয়ে এই মাসে এই সপ্তাহে হবে।

আঙ্কেলঃ কিন্তু মা নীলতো ঠিকি বলছে।

মোহিনীঃ না কোন ঠিক নেই আমি যেইটা বলেছি সেইটাই হবে।

আঙ্কেলঃ আচ্ছা তোর কথাই হবে।

তারপর আর কি মোহিনীর জেদের কাছে সকলকে হার মানতে হলো আর এই সপ্তাহে মোহিনী আর আমার বিয়ে আর সেইটা ৩ দিন পর। আজকে অনেক রাত হয়েছে তাই বাসায় যেতে পারলাম মোহিনীদের বাসায় থাকতে হলো। রাত ১১ টা কি ১২ টা হবে তখন মোহিনী আমাকে জানলা দিয়ে ডাক দিচ্ছে।

মোহিনীঃ ওই কুওা ওঠ আর কত ঘুমাবি (আস্তে আস্তে বলল)

নীলঃ উফফফফ কে…

মোহিনীঃ আমি তারাতারি বের হো রুম থেকে।

নীলঃ উফফ তুই এত রাতে কেন।

মোহিনীঃ তুই বের হবি না আমি তোর রুমে যাব বল,

নীলঃ না না তুই দারা আমি যাচ্ছি।

মোহিনীঃ হুমম তারাতাড়ি কর। তারপর আমি বাহিরে গেলাম আর বললাম।

নীলঃ কি রে এত রাতে কেন। আর কি বলবি বল।

মোহিনীঃ চল ছাদে যাব।

নীলঃ তোর কি মাথা ঠিক আছে এত রাতে ভূত ছাদে ঘুরে আর তুই বলছিস আমি এখন ছাদে যাব।

মোহিনীঃ তুই যাবি না আমি জোর করে নিয়ে যাব বল।

নীলঃ ওকে চল কি আর করব।

মোহিনীঃ হুমম চল।

(তারপর আমি আর মোহিনী ছাদে গেলাম)

নীলঃ আচ্ছা এখন বল কি বলবি।

মোহিনীঃজানিস আজকে না আমি খুব খুশি কারণ তোকে কিছুদিন পর নিজের করে পাব। তোর ওপর থাকবে শুধু আমার অধিকার।

নীলঃ হুমম জানি আচ্ছা দেখ না আজকের চাঁদ টা খুব সুন্দর।

মোহিনীঃ হুমম ঠিক বলছিস।

নীলঃ হুমম শুধু এইটা বললে তো হবে না।

মোহিনীঃ তো কি বলব বল।

নীলঃ কেন কালকে যে দিলি ওইটা দে।

মোহিনীঃ যা দুষ্ট আমার তো লজ্জা করে।

নীলঃ ওরে আমার লজ্জাবতী দারা। আমি কথা বলতে তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি একদম ওর কাছে দুজনেরি নিশ্বাস ভারি হয়ে গেছে। দুজনেরি ঠোঁট কাপছে। তারপর ওর ঠোঁট আর আমার ঠোঁট এক করে দিলাম। এভাবে অনেক্ষন ছিলাম। তারপর ছেড়ে দিলাম।

মোহিনীঃ ওই কুওা একটু হলেই তো মরে যেতাম।

নীলঃ না তোকে ফির আমি মারতে পারি বল।

মোহিনীঃ হুমমমমম আমার সোনা।

তারপর আমরা একসাথে অনেকটা সময় ছাদে কাটালাম। তারপর নিজ নিজ রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।

কাল সকালে……

আম্মুঃ নীল ওঠ বাসায় যেতে হবে তো।

নীলঃ কি হয়েছে আম্মু এত সকালে ডাকছ কেন।

আম্মুঃ কি বললি সকাল ১০ টা বাজে আর তুই বলছিস যে ডাকছি কেন। আর ৩ দিন পর তোর বিয়ে তাই অনেক কাজ আছে এখন চল।

নীলঃ ওকে দারাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। আমি ফ্রেশ হয়ে মোহিনীর আব্বু আর আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতে লাগলাম। তাখন কোথা থেকে যেন মোহিনী দৌড়ে আমার কাছে আসলো আর তারপর যা করল…..

ছোট হলে ক্ষমা করবেন। কিছু সমস্যা থাকার কারনে বেশি লিখতে পারলাম না পরের পর্বটি বড় করে দিব ইনশাআল্লাহ।


পর্ব নং – ৯

আমি ফ্রেশ হয়ে মোহিনীর আব্বু আর আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতে লাগলাম। তাখন কোথা থেকে যেন মোহিনী দৌড়ে আমার কাছে আসলো আর তারপর যা করল…….

মোহিনীঃ নীল তোকে কি যেতেই হবে।

নীলঃ আরে এগুলো কি বলছিস আমি যদি না যাই তাহলে আম্মু এতগুলো কাজ করবে কিভাবে।

মোহিনীঃ আচ্ছা যা। আর ফোন দিবিি ওকে। তারপরে আমরা মোহিনীর বাসা থেকে চলে আসলাম। উফফ বাচাঁ গেল মোহিনী এমন করছে মনে হচ্ছে আমি কোথাও হারিয়ে যাব। পাগলিটা আমাকে খুব ভালোবাসে।

বাসায় আসার আম্মু বলল।

আম্মুঃ নীল রেডি থাকিস আমরা শপিং এ যাব কেমন।

নীলঃ ওকে আম্মু। হুমম এখন নিজের রুমে যা আর রেডি হয়ে নে।

নীলঃ ওকে আম্মু তারপর আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম নিজের রুমে। তরপর মোহিনীকে ফোন দিলাম।

মোহিনীঃ হ্যালো নীল তুমি কি বাসায় গেছ।

নীলঃ হুমমম আসলাম এখনি।

মোহিনীঃ ওওও আচ্ছা তাহলে আবার কখন আসবে। তোমাকে আমি খুব মিস করছি।

নীলঃ একটু অপেক্ষা কর আর ৩ দিন পর তো আমি তোমার কাছে যাবই সারারহিম এর জন্য।

মোহিনীঃ আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিনা। আচ্ছা তোরা শপিং করতে যাবি না।

নীলঃ হুমমম যাব একটু পর।

মোহিনীঃ ওকে শুন তোরা যেখানে শপিং করতে যাবি আমাকে বলিস ওকে।

নীলঃ কেন?

মোহিনীঃ উফফ তোর এই প্রশ্ন করার অভ্যাসটা কবে যাবে।

নীলঃ আচ্ছা শুন তাহলে। তারপর আমি তাকে যেখানে শপিং করতে যাব সেই জায়গার ঠিকানাটা দিয়ে দিলাম।

মোহিনীঃ ওকে বাবু শপিং মলে আমার জন্য অপেক্ষা করবি বাই। উম্মাহহহহহ।

নীলঃ হয় হায় এই মেয়েকে আমি রহিমে বুঝতে পারবনা। বিয়ের আগে যেইরকম করে। বিয়ের পর তো আমাকে শেষ করে দিবে। তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম আম্মুর কাছে।
আম্মুঃ তুই এসেছিস চল এখন অনেক কাজ আছে।

নীলঃ ওকে আম্মু চলো।

আম্মুঃ হুমম চল। আমরা তখন একটা সিএনজি করে শপিং মলে গেলাম। আম্মু ভিতরে ঢুকছিল কিন্তু আমি বাহিরে দারিয়ে ছিলাম। আমাকে বাহিরে দারিয়ে থাকতে দেখে আম্মু বলল। কিরে ভিতরে চল।

নীলঃ আম্মু মোহিনীরা বলছিল যে ওরাও নাকি এখানে শপিং করতে আসবে। আম্মু আমার কথা শুনে মুচকি মুচকি হাসছেন।

আম্মুঃ তো ওরা কথায়?

নীলঃ ওই তো আসছে। তারপর আমরা সবাই একসাথে শপিং মলে ঢুকলাম।

আম্মুঃ নীল চল ওখানে যাই ওখান থেকে তোর বিয়ের শেরওয়ানি টা কিনি।

নীলঃ ওকে আম্মু চল।

আম্মুঃ ওকে চল।আর মোহিনী তুমি আগে তোমার বিয়ের শাড়িটা কিনে নেও তারপর না হয় বাকি শপিং গুলো একসাথে করব।

মোহিনীঃ ওকে আন্টি। মোহিনী মন খারাপ করে চলে গেল।

আমি একটা শেরওয়ানি নিয়ে ট্রায়াল রুমে যাচ্ছিলাম তখনি চোখ কপালে উঠে গেল এ আমি কি দেখছি মোহিনী তো ট্রায়াল রুমের সামনে দারিয়ে আছে। মোহিনী আমার কাছে আসলো আর আমার কলার ধরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো আর বললো।

মোহিনীঃ তুই কি মনে করছিস আমি তোকে কাছে পেয়েও ছেড়ে দিব।

নীলঃ মানে আমি তো কিছু বুঝতে পারছিনা।

মোহিনীঃ আমি তোর সাথে শপিং এ আসলাম কারণ তোর সাথে একটু দুষ্টুমি করব এই জন্য।

নীলঃ ওই তোর কি দুষ্টুমি ছাড়া কোন কাজ নেই।

মোহিনীঃ না নেই। এখন চুপ করে থাক একটাও কথা বলবি না। আমাকে আমার কাজ করতে দে।

নীলঃ আরে এইটা তো……

(আমাকে আর কিছু বলতে দিলনা ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট এক করে দিল মনে হচ্ছে যেন দুই ঠোঁট তাদের ভালোবাসা আদান প্রদান করছে আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম)

মোহিনীঃ এইটা কি হলো (একটু রেগে)

নীলঃ কি হইছে মানে এই পাবলিক প্লেসে কি কেউ কাউকে কিস করে এভাবে যদি কেউ এসে পরত তখন।

মোহিনীঃ ওরে বাবালে আমার বরটা এত বুঝে। (গাল টেনে)

নীলঃ হইছে এখন যা আমাকে যেতে হবে এখন।

মোহিনীঃ ওকে যা।

নীলঃ হুমম ও যাওয়ার সময় একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল আমি তো এইটার মানে বুঝলাম না। আমি এতো না ভেবে আম্মুর কাছে গেলাম। একি সবাই আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন আমি কি করলাম। আমি আম্মুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম যে কী হইছে।

আম্মুঃ ওরে হাঁদারাম তোর ঠোঁটে লিপস্টিক কোথা থেকে আসলো (আম্মু হাসতে হাসতে বলল)

নীলঃ ইসসসসস রে আমার তো সব মানসম্মান শেষ হয়ে গেল।

আম্মুঃ যা ওয়াশরুমে গিয়ে ধুয়ে আয়।

নীলঃ ওকে। আমি তারাতাড়ি গিয়ে ঠোঁটে লাগা লিপস্টিপ গুলো ধুয়ে নিলাম। তারপর আবার আম্মুর কাছে আসলাম।

আম্মুঃ তোর কি এই নীল শেরওয়ানিটা পছন্দ হয়েছে।

নীলঃ হুমম আম্মু। তারপর আম্মু দোকানদারটিকে বলল পেক করে দিতে। তখন দেখি মোহিনীর শাড়ি কেনা হয়ে গেছে।

আম্মুঃ আরে তেমাদের কি শপিং শেষ।

মোহিনীঃ না আন্টি কেবলতো শাড়ি কিনলাম।

নীলঃ কিইইইই এতক্ষণ ধরে কি কেউ শাড়ি কিনে।

মোহিনীঃ হুমম আমি কিনি।

নীলঃ ওওও আচ্ছা।

মোহিনীঃ হুমম চলো এখন বাকি শপিং গুলো করে নেই।

(তারপর সবার শপিং শেষে সবাই সবার বাড়িতে গেলাম)

আম্মুঃ নীল তোর বন্ধুর দাওয়াত দিবি না।

নীলঃ হুমম দিব তো সন্ধায় ওদের কাছে যাব।

আম্মুঃ ওকে এখন চল কিছু খেয়ে নে।

নীলঃ ওকে। আর আব্বুকে তো দেখছিনা কোথায় আব্বু।

আম্মুঃ তোর আব্বু একটা জরুরি কাজে বাইরে গেছে।

নীলঃ ওওওহহহ আচ্ছা।

আম্মুঃ হুমমম।

তারপর আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম খাওয়ার জন্য। খাওয়া শেষে…..

নীলঃ আম্মু আমি বাহিরে গেলাম।

আম্মুঃ কেন কথায় যাবি।

নীলঃ কেন তোমাকে তো একটু আগেই বললাম।

আম্মুঃ ওওও হে মনে পরেছে। আচ্ছা যা আর তারাতাড়ি আসিস ওকে।

নীলঃ ওকে আম্মু। তারপর আমি গেলাম রহিম আর বকুলের কাছে।

রহিমঃ কি রে দোস্ত কেমন আছিস।

নীলঃ ভালো রে তুই।

রহিমঃ আছি আরকি। আমদের তো ভুলেই গেছিস।

নীলঃ আরে না দোস্ত আসলে একটু ব্যাস্ততায় ছিলাম।

রহিমঃ কি এমন করছিলি।

নীলঃ বিয়ের শপিং।

রহিমঃ কার বিয়ের শপিং।

নীলঃ কার আবার আমার বিয়ের।

রহিমঃ কি বলিস দোস্ত।

নীলঃ হুমম তোকে আসতে হবে কিন্তু আস বকুল কোথায়।

রহিমঃ ও তো একটু আগেই চলে গেল।

নীলঃ আচ্ছা চল ওর বাসায় যাব।

রহিমঃ ওকে চল। তারপর আমরা বাইক নিয়ে বকুলের বাড়িতে গেলাম। কলিংবেল চাপ দিতেই আন্টি এসে দরজা খুলে দিল।

আমি আর নীল একসাথে সালাম দিলাম।

আন্টিঃ তোমরা এখন এখানে যে।

নীলঃ আন্টি বকুল আছে।

আন্টিঃ হুমম দারাও আমি ডেকে দিচ্ছি।

তখন বকুল এলো আনি বললাম।

নীলঃ দোস্ত এই কার্ডটা নে।

বকুলঃ এইটা কিসের কার্ড।

নীলঃ আমার বিয়ের কার্ড রে।

বকুলঃ কিভাবে এগুলো হলো কিভাবে।

নীলঃ সে না হয় পরে বলব আর আসিস কিন্তু।

বকুলঃ ওকে দোস্ত যাব।

নীলঃ ওকে তাহলে এখন যাই। তারপর আমরা চলে হেলান রহিমকে ওর বারিতে নামিয়ে দিয়ে আমি আমার বাড়িতে চলে আসলাম। এভাবে দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসলে আমরা আর মোহিনীর বিয়েটা খুব ধুমধামের সাথে হয়ে গেল বিয়ের দিন মোহিনীকে নীল শাড়িতে পরীর মতো লাগছিল। এই কয়েকদিনে মোহিনীর সাথে একবারও কথা হয়নি। আমি ছাদে দারিয়ে আছি। তখনি ভাবি আমার কাছে আসলো

ভাবিঃ কি নীল তুমি এখানে দাড়িয়ে আছো কেন মোহিনী সেই কখন থেকে তোমার ঘরে বসে আছে।

নীলঃ ওকে যাচ্ছি।

ভাবিঃ ওকে আর বিড়ালটা মনে করে মরিও।

নীলঃ ভাবি এই বিড়ালটা আবার কি।

নীলঃ একটু পরেই বুঝতে পারবা৷

আমি আমার রুমের সামনে দাড়িয়ে আছি।

ভাবি আমাকে জোর করে রুমে ঢুকিয়ে দিল।

রুমে ঢুকার পর মোহিনী আমার ছুয়ে সালাম করল। আমি ওকে উঠিয়ে বললাম তোমার জায়গা আমার পয়ে না আমার বুকে। তারপর আমি ওকে আমার বুকে জরিয়ে নিলাম। আরে মোহিনীতো কান্না করছে। আমি বললাম কিরে তুই কান্না করছিস কেন।

মোহিনীঃ তোকে আমি আমার রহিম সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি এই জন্য।

নীলঃ আরে পাগলি এতে কান্না করতে হবে।

মোহিনীঃ এইটাতো খুশির কান্না। আচ্ছা আমাকে আজকে থেকে তুমি করে বলবা কারণ আমরা এখন স্বামী স্ত্রী কেমন।

নীলঃ ওকে বলবো। এখন চল ঘুমাবো।

মোহিনীঃ কি এখন ঘুমাবি এই বলে আমাকে মারতে লাগল।

নীলঃ আরে আরে কি করেছিস আমিতো মজা করছিলাম।

মোহিনীঃ চুপ কুওা আর কিছু বলবি না। এই বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমার উপর চরে বসলো।

নীলঃ আরে আরে কি করছিস লাগছে তো।

মোহিনীঃ লাগুক আজ তোকে আমি ছারবনা। আজ কোথায় পালাবি। আমি কিছু বলতে যাব এমন সময় ও ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট এক করে দিল। প্রায় ১০ মিনিট পর আমাকে ছেড়ে দিল।

নীলঃ আর একটু হলেই তো মরে যেতাম।

মোহিনীঃ নীল আমাী না তোর মতো একটা ছোট নীল চাই। এই বলে আমার বুকে মাথা লুকালো।

নীলঃ ওমা তাই নাকি। তাহলে চলো ক্রিকেট টিম গঠন করার কাজ শুরু করি।

মোহিনীঃ যা দুষ্টু আমার বুঝি লজ্জা করে না।

তারপরে আর কি হয়েছিল সেটা আপনাদের না জানলেও চলবে। বিয়ে করেন তাহলে বুঝবেন। ওই দিনকার মতো ঘুমিয়ে পরলাম।

কাল সকালে আমার ঘুম ভেঙে গেল আমি ওঠে দেখি মোহিনী আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আচরাচ্ছে খুব মায়াবী লাগছিল তাকে। কেবলি মনে হয় গোসল করে আসলো। আমি গিয়ে ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম আর ঘারে একটা কিস করলাম।

মোহিনীঃ কি করছো তুমি কাল রাতে কি দুষ্টুমি করে মন ভরে নি। সরো আম্মু একা কাজ করছে আমাকে যেতে হবে।

নীলঃ ওকে যাও। তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম তারপর আম্মু বললো..


শেষ পর্ব

তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম তারপর আম্মু বললো…

আম্মুঃ নীল আজকে তুই মোহিনীকে ওদের বাসায় নিয়ে যাবি আর ওখানেই আজকের দিনটা থাকবি বুঝলি কি না?

নীলঃ ওকে আম্মু যাব। মোহিনী কই?

আম্মুঃ যা রান্না ঘরে আছে আমি কত করে বললাম তোমাকে রান্না করতে হবে না কিন্তু ও আমার কেন কথাই শুনলো না আমাকে এখানে পাঠিয়ে দিল।

নীলঃ আচ্ছা তুমি দারাও আমি দেখছি।

আম্মুঃ হুমমম যা। আমি গিয়ে দেখি মোহিনী কি যেন রান্না করছে আমি সজা গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরলাম। তারপর মোহিনী বলল।

মোহিনীঃ তুমি আবার শুরু করলা দেখছ না আমি রান্না করছি।

নীলঃ কি রান্না করছ গো।

মোহিনীঃ যখন খাওয়র সময় হবে তখন বললব।

নীলঃ হুমম আগে একটু দুষ্টুমিতো করি তারপর না হয় যাব।

মোহিনীঃ চুপ দুষ্টু খালি সয়তানি করা।

নীলঃ হুমমম আর আম্মু তোমাকে আজকে তোমার বাসায় নিয়ে যেতে বলেছে।

মোহিনীঃ সত্যি বলছো।

নীলঃ হুমমম সত্যি।

নীলঃ হুমমম তুমি খাওয়া করে রেডি থেকো কেমন।আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।

মোহিনীঃ আচ্ছা যাও।

(তারপর আমি ফ্রেশ হওয়ার জন্য গেলাম তার কিছুক্ষণ পর মোহিনী ডাকতে আসলো খাওয়ার জন্য তখন আমি খেতে চলে গেলাম)

নীলঃ মোহিনী আম্মু কোথায়।

মোহিনীঃ আম্মুতো আব্বুকে ডাকতে গেল এখুনি। আচ্ছা তুমি এখন খেয়ে নেও তারপর আমরা আমার বাসায় যাব কেমন।

নীলঃ হুমমম ওকে তারপর আমি খেতে শুরু করলাম খাওয়ার মাঝখানে মোহিনী বলল।

মোহিনীঃ নীল কেমন হয়েছে রান্নাটা?

নীলঃ হুমম ভালোই হয়েছে তুমিও খেতে বসো।

মোহিনীঃ না আম্মু আর আব্বু আসুক তারপর।

নীলঃ আমি কিছু বলতে যাব তখনি আম্মু আব্বু আসলো আর বলল।

আম্মুঃ মা তুমি খেয়ে নেও আমরাও খাচ্ছি।

মোহিনীঃ জি আম্মু খাচ্ছি।

(তারপর আমরা সবাই একসাথে খাওয়া করে নিলাম খাওয়া করার পর আমি আর মোহিনী গেলাম রেডি হওয়ার জন্য তখনি মোহিনী বলল)

মোহিনীঃ ওই আমি না শাড়ি পরতে পারি না এখন কি হবে।

নীলঃ হা হা হা তুমি শাড়ি পরতে পারো না।

মোহিনীঃ ওই একদম হাসবে না। ভালো হবে না বলে দিলাম।

নীলঃ ওকে ওকে বাবা আসো আমি পড়িয়ে দেই।

মোহিনীঃ হুমম দেও তো।

(আমি মোহিনীকে শাড়ি পরিয়ে দিলাম)

নীলঃ হুমম এখন দেখ কেমন লাগছে।

মোহিনীঃ বাহ্হহহ তুমি তো ভালোই পারো দেখছি।

নীলঃ হুম তোমার মতো নাকি এখন চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে ।

মোহিনীঃ হুমম চলো যাওয়া যাক। তখন আমি আর মোহিনী ওদের বাসায় গেলাম ওখানে যাওয়ার পর মোহিনী আমাকে তার বান্ধবী ও তার বোনদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। আমি ওদের সাথে কথা বলছিলাম আর মোহিনী ওর আম্মু আব্বুর কাছে গেল আর আমি ওদের সাথে বসে আছি বর গল্প করতেছি।ওদের মধ্যে একজন বলে উঠলো।

রিয়াঃ আপনি আমাদের দুলাভাই আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না।

নীলঃ কেন এতে বিশ্বাস না করার কি আছে।

রিয়াঃ কারন আপনার তো বিয়ের বয়স হয়নি।

নীলঃ ওওও এই ব্যাপার।

রিয়াঃ হুমম আপনি তো খুব হ্যান্ডসাম।

নীলঃ ওওওহহ তাই নাকি।

রিয়াঃ হুমম আপনি যদি সিঙ্গেল থাকতেন তাহলে তো আমি আপনাকে বিয়ে করে নিতাম।

নীলঃ হা হা হা হা তাই নাকি।

রিয়াঃ হুমম তাই।

নীলঃ আপনি তাহলে চান্স মিস করছেন।

রিয়াঃহা হা আপনিতো খুব মজার।

নীলঃ সবাই এইটাই বলে।

তখনি মোহিনী আমার কাছে আসলো আর বললো,

মোহিনীঃ নীল আমার রুমে আসো কথা আছে।

নীলঃ ওকে তুমি যাও আমি একটু পর যাচ্ছি।

মোহিনীঃ না এখনি আসো (রেগে গিয়ে)

নীলঃ আচ্ছা চলো আমি ওর পিছনে পিছনে রুমে চলে আসলাম। তারপর মোহিনী রুমের দরজা লাগিয়ে দিল আর আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো তারপর আমাকে এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে দিল আর আমার উপর চরে বসলো। আর বললো।

মোহিনীঃ তুই ওই রিয়ার সাথে এতো হেসে হেসে কথা কেন বলছিল। কোই আমার সাথে তো কোনদিন এভাবে কথা বলিস নি।

নীলঃ আরে আমিতো এমনি কথা বলছিলাম।

মোহিনীঃ না তুই অন্য কোন মেয়ের সাথে কথা বলবি না তুই শুধু আমার বর আমার সাথেই কথা বলবি বুঝতে পারছিস।

নীলঃ হুমম আমার দুষ্টু বউ।

মোহিনীঃ ওই আমি দুষ্টু হুমমম।

নীলঃ তো কে আমি।

মোহিনীঃ হুমমম তুই।

নীলঃ ওওহহ তাই তাহলে আসো একটু দুষ্টুমি করি।

মোহিনীঃ এই না একদম না যাও।

নীলঃ ওকে যাও। আমি মন খারাপ করার অভিনয় করে বিছানার অন্য পাশে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পরলাম।

মোহিনীঃ ওই নীল আমিতো এমনি মজা করছিলাম।

নীলঃ চুপচাপ……..

মোহিনীঃ এই এইদিকে ঘুরো বলছি।

নীলঃ না আমি ঘুরবো না আমি রিয়ার কাছে যাব আর ওর কাছে কিস নিব (একটু সয়তানি করে)

মোহিনীঃ কি বললি তুই রিয়ার কাছে যাবি হুমমম…

নীলঃ হুমম ওর কাছে যাব।

মোহিনীঃ দারা তোকে মজা দেখাচ্ছি।

তারপর আমার ঠোঁটের সাথে ওর ঠোঁট চেপে ধরলো সে এক অনন্য মহূর্ত। এভাবে যে কতক্ষণ ছিলাম জানি না। তারপর আমাকে ছেড়ে দিয়ে মোহিনী বলল তোর এই ঠোঁটের মধ্যে শুধু আমার অধিকার বুঝলি এরপরও যদি ওই রিয়ার কথা বলছিস তাহলে তোর নাক ফাটিয়ে দিব বলে দিলাম।

নীলঃ না না আমি কি ওইটা করতে পারি।

মোহিনীঃ হইছে আমি জানি তুই একটা লুচ্চা মেয়ে দেখলেই খালি কথা বলা তাই না তুই এই রুমেই থাকবি রুমের বাইরে জাবি না বলে দিলাম।

নীলঃ না রে আমি একা এই রুমে কি করব।

মোহিনীঃ বসে থাকবি।

নীলঃ প্লিজ এইটা করিস না রে।

মোহিনীঃ না তোকে এইখানেই থাকতে হবে।

নীলঃ না রে প্লিজ। কি আর করার আমাকে রুমে বন্দী করে চলে গেল । দুপুরে খাওয়ার সময়।

মোহিনীঃ নীল খাবার খেয়ে নে।

নীলঃ না আমি খাবনা আমার খিদে নেই।

মোহিনীঃ কেন খেয়ে নে প্লিজ।

নীলঃ না তুই খা যা এখান থেকে।

মোহিনীঃ বুঝতে পারছি রাগ করছিস।

নীলঃ না আমার ফির রাগ আছে নাকি আমি তো রোবটের মতো যেইটা বলবে সেইটাই করতে হবে।

মোহিনীঃ দেখ আমি তো ভালোর জন্য বলছিলাম।

নীলঃ হুমম জানি তুই যা এখন।

মোহিনীঃ আমাকে পিছনে থেকে জরিয়ে ধরলো আর কান্না করা শুরু করে দিল।

আমি ওকে আমার দিকে ঘুরিয়ে বললাম,

নীলঃ আরে পাগলি কান্না করছিস কেন।

মোহিনীঃ তুই আমার জন্য কষ্ট পেলি। (কান্না করতে করতে)

নীলঃ আরে আমি তো তোর সাথে একটু মজা করলাম তাই বলে কি তুই এইভাবে কান্না করবি।

(ওর চোখের পানি মুছতে মুছতে কথাটা বললাম)

মোহিনীঃ কুওা তুই খুব খারাপ (আমার বুকে মারতে মারতে)

নীলঃ আহহ্ লাগছে তো।

মোহিনীঃ লাগুক সয়তান এই বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিল আর আমার উপর চরে বসলো।

নীলঃ আরে আমি তো মরে যাব।

মোহিনীঃ চুপ সয়তান।

নীলঃ আচ্ছা চল খেয়ে নেই।

মোহিনীঃ হুমম চল নিচে।

নীলঃ হুমমম চল।

আমারাা সবাই একসাথে খেতে বসলাম আমি খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলাম।

এভাবে একটি দিন কেটে গেল আমরা আমাদের বাসায় চলে আসলাম।

এভাবে দুষ্টু মিষ্টি ঝগরায় আমাদের দিন গুলো কাটতে লাগলো।

দীর্ঘ ৫ বছর পর……

ইফতিঃ আব্বু দেখো না আম্মু আমাকে বকা দিচ্ছে।

(ইফতি হলে আমার মেয়ে)

নীলঃ কেন আম্মু তুমি কি করছ।

ইফতিঃ কিছু করিনি আব্বু।

নীলঃ আচ্ছা চলো আম্মুর কাছে।

ইফতিঃ হুমমম চলো।

নীলঃ মোহিনী তুমি আমার মেয়েকে কেন বকা দিছ হুমমম।

মোহিনীঃ দেখ তোমার মেয়ে কি করেছে।

নীলঃ তাই বলে কি ওকে বকবা।

মোহিনীঃ তোমার জন্য ও এমন হচ্ছে দিন দিন।

নীলঃ হুম জানি। আমি মোহিনীকে কোলে তুলে নিয়ে কথাটা বললাম। উল্টা মোহিনী আমাকে বিছানায় ফেলে দিল আর ইফতি আমাদের কান্ড দেখে হাসছে।

মোহিনীঃ সয়তান একটা এই বলে আমার বুকে মাথা রাখলো। আর ইফতিও আমর কাছে এসে আমার বুকের অন্য পাশে মাথা রাখল। এভাবে হাসি খুশি আর ভালো বাসায় তাদের দিন কটতে লাগল। ভালো থাকুক সকল ভালোবাসার মানুষ গুলো।

~সমাপ্ত~

অবুঝ ভালোবাসা গল্প
লেখক – সুমন

আরো পড়ুন- বন্ধু যখন বর

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *