জীবনের সংলাপ – কবির প্রেম (Poetry Love Story)

ইমু! আমি তোমাকে কতগুলো ফোন দিয়েছি ধরো নি কেন ?
~ধুর, এই যন্ত্র আমার কাছে মঝা লাগে না, নিয়ে যাও তো এটা ।
~আমি তো তোমার মঝা লাগার জন্য মোবাইল কিনে দেই নি । তুমি যে হারায়া যাও দুই দিন পর পর তা কোথাই আছো সেটা জানার জন্য মোবাইল দিয়েছি ।
~কবি, সাহিত্যিক, মহামানব তারা যুগের পর যুগ হারিয়ে যেতেই ভালোবাসে ।
~তোমার মাথা থেকে এখনো এইসব ভূত নামে নি ?
~মহামানবদের ভূতে ধরে না ।

~তুমি জানো বাবা আমার জন্য আবার ছেলে খোঁজে এনেছে ?
~ওনি বাবা হিসেবে শুধুমাত্র ওনার দায়িত্ব পালন করছে । এখানে রেগে যাবার কি আছে ?
~ইমু আমি কিন্তু মোটেও মঝা করছি না ।
~দেখ তোমার বাবার হাইপারটেনশন আছে, আর এটা হলো একটা স্বাস্থ্য সমস্যা।এটি তখনই ঘটে যখন রক্তের অত্যধিক চাপ পড়ে ধমনীতে । সুতরাং এটার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে তাই তুমি তোমার বাবা যে ছেলেকে দেখছে তুমিও তাকে দেখে ছেড়ে দাও । হয়ে যায় তো ।

~আসলে তুমি আমাকে ভালোবাসো না, তাই তো সবসময় এমন করো আমার সাথে ।
এতটুকু বলে বীণা কান্না করতে লাগলো । কি এক ঝামেলা !! মেয়েরা কিছু থেকে কিছু হলেই কান্না । এখন আমি চিন্তা করছি যে আমি কি করবো । অবশ্য লেমোনি স্নিকেট বলেছেন “যখন কেউ কান্না করছে তখন অবশ্যই সবচেয়ে মহৎ কাজ হলো তাকে সান্ত্বনা দেয়া “ এখন আমি এই মহান কাজ করার জন্য বীণার পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললাম,

~অবশ্যই তুমি পাবে, যা তোমার থেকে চলে গেছে তার চেয়েও উত্তম । সুতরাং কান্না করো না ।
বীণা রক্তমাথা মুখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো
~সূরা আনফাল এর এই আয়াত অবশ্যই সিচুয়েশন নাজিল হয় নি ইমু ।

~আরে আমি তো দেখলাম এখন সবগুলো পুচকে পোলাপাইন তাদের ব্রেকাপ হওয়া পর ই এই লাইন পোষ্ট করে । তাদের এসব পোষ্ট দেখে তো আমি এই আয়াত নাজিল হওয়ার আসল ঘটনা ভুলতে বসেছি ।
~তারমানে তুমি আমার সাথে ব্রেকাপ করতে চাচ্ছো ? তাই এটা বলছো এখন ?
~আসলেই মেয়েরা বেশি বুঝে ।
~এই তোমার র্শাট থেকে কেমন গন্ধ বেরুচ্ছে ! কোথাই ছিলে এই দুই দিন তুমি ?
~মেথর পাড়াতে , সাজু চাচার সাথে তাস খেলছিলাম ।
~তোমাকে বলেছিলাম না যে ওই পাড়ায় যাবে না ।

~কবি দের যেতে হয় সব জায়গায় । আসো তোমার গালে একটা মধুময় চুমু দেই ।
আমি বীণার গালের কাছে আমার ঠোটদ্বয় র্স্পশ করার আগেই সে ঠাস করে আমার গালে একটা চড় মেরে বসলো ।
~আরে আজব মারলে কেন ? তুমি একটা কবির গায়ে হাত তুলতে পারো না ।
~আমি তো বলিনি যে আমায় চুমু দিতে ।
~তুমি জানো তাসলিমা নাসরিন ম্যাম কি বলেছে ?
~কি বলেছে ?

~হে নারী, কেউ যদি তোমাকে ধর্ষণ করতে আসে, তুমিও তাকে ধর্ষণ করে দাও। পুরুষদের দেখিয়ে দাও, ধর্ষণ শুধু তারা নয়, তোমরাও পারো।
~এটা দিয়ে কি বুঝাতে চাচ্ছো ?
~এই যে তোমার উচিত ছিল আমি চুমু দেবার আগেই লেডি হাসমি ব্রো হয়ে তুমি ই আমাকে অজস্র চুমু দিয়ে দেখিয়ে দিতে যে মেয়েরা কোন দিক থেকে কম না ।
~ইমু আরেকটা ওল্টা পাল্টা কথা বললে খুব খারাপ হবে কিন্তু ।
~একটা কবিতা শুনবে ?
~হুম শুনবো
“ তোমাকে ভালোবাসি , ভালোবাসি বলেই
কোনঠাসা হৃদয়ে তাকে আবদ্ধ করে রাখি।
দেহ পেলেই যদি হয় এ প্রেম সত্য
তাহলে ললাট চুম্বনেই কেন আমি এত তৃপ্ত !!

~দিলে তো আমার সব রাগ শেষ করে ? আচ্ছা ইমু তোমায় বুঝতে পারি কি আমি ?
~না বুঝলে কি আমার সকল পাগলামি তুমি মেনে নিতে ?
~তুমি আবার আমায় প্রশ্ন করো কেন ?
~আমার হৃদয়প্রাণ আর উওরের ভান্ডারের সবটাই যে তুমি তাই ।
~থাক অনেক হয়েছে । আমি এখন বাসায় যাবো , বাবার পছন্দের ছেলেটাকে ভাগাতে হবে তো ।
~হুম! আর দেখতে আসার সালামি টা আমার নামে পাঠিয়ে দিয়ো ।
~তুমি ভালো হবানা ।

~যে আমার খারাপ টা দেখেই এত ভালোবাসে সেখানে ভালো হওয়ার কি প্রয়োজন ?
~ ঠিকাছে । এই নাও কিছু টাকা । আর হ্যা বাসায় গিয়ে গোসল দাও, কেমন দেখাচ্ছে তোমায় ।
এতটুকু বলে বীণা আমার হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলো । আমি জানি মেয়েটা খুব ভয়ানক প্রেমের অসুখে ধরেছে ।

তার সমাধান শুধু মাত্র আমি তাও জানি । আমি সেখানে আরো কিছুক্ষন বসে থাকলাম, অপেক্ষা করছি র্সূয অস্ত যাবার । প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসলো,দোকান থেকে একটা সিগারেট গুজে মুখে দিলাম । বেশ দারুন তৃপ্তি । ফিল্টারের আগুনের তাপে নিজেকে কিছুক্ষন পুড়ালাম আর আনমনে বলে উঠলাম
” যদি পুড়াতে হয় তাহলে নিজেকে পোড়াও,
র্ব্যাথ সকল অনুভূতি ধোয়াতে উড়াও,
মন্দ বলে তখন সমাজ দেখবে যদিও তোমাকে-
তারা কি জানে মৃত আত্নার আত্নচিৎকার
কি অমানবিক নিজেকেই তৈরি করে ?“

আমি শ্যাম পাড়ার রাস্তা ধরে বাসার দিকে যাচ্ছি । পাড়ার মোড়ে বেশ অনেক লোক দাড়িয়ে । ভাষন দিচ্ছে মনসুর আলি । ওনি নেশা জাতীয় জিনিসের খারাপ দিক সমাজের মানুষের দিকে তুলে ধরছে । তিনি অবশ্য মহল্লার মাতাব্বর হওয়ার জন্য এত কিছু করছে । সাদা লুঙ্গি আর সাদা ফতুয়া পড়ে সবার মাঝে মধ্য মনি হয়ে দাড়িয়েছে । হাসি পায়! এই লোকটাই আবার এই মহল্লার নেশা জাতীয় সবকিছু সাপ্লাই করে । ওনি আমাকে দেখে এক পাটি দাত বের করে বললো
~আরে ইমু যে ! এদিকে আসো , মহল্লার ছেলেদের তো কিছু বলো ।
~চাচা জ্ঞান পরে দেন, আগে চিপায় দিয়ে আপনার শিষ্যদের থেকে গান্জার দু এক টান দেন ।
~ইমু তুমি বলছো এসব ।

~চাচা আমি জানিনা এমন কিছুই আপনার নাই তা আপনি ও ভালো করে জানেন । পল্লী পাড়ায় যে নতুন আসর করেছেন তা কি মহল্লায় জানিয়েছেন ?
চাচা দাতের সাথে দাত চেপে আমাকে হুমকি দিকে চলে গেল । মহল্লার ছোট ভাই গুলা আমার কাছে এসে হাসতে লাগলো । অবশ্য তারাও এটা জানে কিন্তু আমরা এমন সমাজে বসবাস করি যেখানে, কেউ একজন প্রতিবাদ করবে সেই আশায় হাজারো মানুষ চুপ থাকে ।

বাসায় আসলাম,গোসল করে লম্বা একটা ঘুম দিলাম । সকাল হলো, মোবাইলে বীণার অনেকগুলো ফোনকল ও পেলাম । সে জানে আমি ফোন উঠাবো না তবুও সে ফোন দিবে আমাকে । আমি হাটতে হাটতে আবারো মেথর পাড়ায় চলে গেলাম । সাজু ভাইয়ের বউ আমাকে দেখেই এক গাল হাসি দিলো আর পান্তা ভাতের সাথে শুটকি দিয়ে আমাদের খেতে দিলো । বেশ তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে সাজু ভাইয়ের সাথে আবারো তাস খেলায় মগ্ন হয়ে গেলাম । এই ফাকে ভাবি বলে উঠলো
~হোন ভাজান , তোমার ছেড়ি যদি জানে তুমি এখানে আইসা আড্ডা দাও তাইলে কিন্তু খুব মান করবো ।
~সে জানে আমি এখানে আসি ।

~তুমিও পারো বটে । তা তোমার সুপারিশে তুমার ভাইয়ের চাকরি কিন্তু লাইগ্গা গেছে । কাল থেইকা কামে যাইবো তো জানো ?
~তাহলে তো আরো ভালো , ভাবী তাহলে আজ রাতে ইলিশ মাছ কিনে আনবো । ভালো করে রান্না করবে কিন্তু ।
~হেইডা করমু নি । তা এই পাগলামি ছাইড়া বিয়া করো না কেন মেয়েটারে ?
ভাবি এমন করে আমায় আরো অনেক সময় ধরে বকা দিলো এবং ভালোবাসা ও প্রকাশ করলো । আসলে টাকা ই যে মানুষের সবকিছু হতে পারে না তা আমি এদের দেখে শিখেছি । মানুষ হতে গেলে বড় মন লাগে যা তারা আমার দেখা বাস্তব উদাহরণ ।

সেদিন রাতে সাজু ভাইয়ের সাথে রাতের খাবার শেষ করে বাসায় ফেরার পথে মনসুর আলির ছেলেপেলেরা আমাকে একা পেয়ে বেশ জব্দ করলো ।তারপর গাল,নাক, কপাল ফুলিয়ে বাসায় আসলাম ।সত্য বলার এটাও হলো এক বাস্তব পরিনাম । অবশ্য এতে আমার কোন আফসুস নেই ।

ঠিক তার পরের দিন বীণা আমার এই অবস্থা দেখে কেদে ফেললো আর বলতে লাগলো
~তুমি আবার কিছু উল্টা পাল্টা বকেছো তাই না ?
~মোটেও না, আমি কি মাতাল নাকি !
~তাহলে তোমার এই অবস্থা কি করে হলো ।
~কবিদের এমন হয় কখনো কখনো ।

~তোমার কবিগিরি আমি বন্ধ করছি দাড়াও । বাবাকে আমি তোমার কথা বলে দিয়েছি, এটাও বলেছি তুমি বেকার, পাগল, ভবঘুরে ।
~এত সুনাম না করলেও পারতে ।
~বাবা বলেছে তোমার সাথে কথা বলবে । প্রয়োজন হলে তোমাকে একটা জব ও ব্যবস্থা করে দিবে ।
~কবিদের দ্বারা কখনো জব হয় না প্রিয় । তারা স্বাধীন ভাবে বেচে থাকতে ভালোবাসে ।
~তুমি কি আমার সাথে বাবার কাছে যাবে কি না ?
~যাবো তো ! মুখের ব্যাথা টা ঠিক করে নিই আগে ।

~তোমার সাথে ঠিক নেই । চলো তোমার বাসায় যাবো, গিয়ে তোমার ব্যাথা দুর করবো ।
~ফাঁকা বাসায় কিন্তু তোমার সর্বনাশ টানবে ।
~সমস্যা নেই তাসলিমা নাসরিন ম্যাম এর উক্তি বলেছিলে না আমায় ? দেখিয়ে দিবো ।
~আস্তাগফিরুল্লাহ ।
~কি মঝা পাও এমন পাগলামো করে ?
~তোমার ভালোবাসা পাই ।

~তাহলে আমাকে ও শামিল করে নাও না তোমার সাথে ।
আমি কিছু বললাম না । বীণা আমার সাথে আমার বাসায় চলে আসলো । আমার মস্ত বড় বাড়ি দেখে সে কিছুটা অবাক হলেও কিছু বললো না । তারপর আমার রুমে এসে সবকিছু এমন এলোমেলো দেখে সে এগুলো গুছাতে লাগলো । তারপর বীণা আমার খুব কাছে এসে আমার গালে , নাকে বরফ লাগিয়ে দিতে লাগলো ।

তারদেহের ঘ্রাণ আমার নাকে এসে ঠেকলো । আমি বীণার নাক টেনে তার চোখে চোখ রেখে বলতে লাগলাম
~এমন ট্রিটমেন্ট পেলে আমি প্রতিদিন আহত হতেও রাজি প্রিয় ।
~নাক টা ছাড়ো আগে । তুমি তোমার এই পাগলপণার বেশ আত্যাচার করো আমায় ।
~হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন ,পৃথিবীতে অনেক ধরনের অত্যাচার আছে । ভালোবাসার অত্যাচার হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ানক অত্যাচার। এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলা যায় না, শুধু সহ্য করে নিতে হয়। তাহলে তুমিও সহ্য করো ।
~আগে তুমি আমার হও, তারপর সব মেনে নিবো ।

বীণা আমার রুম গুছিয়ে আমার পকেটে বরাবরের মতো কিছু টাকা রেখে চলে গেল । বলে গেল যেন কাল তার বাবার সাথে দেখা করি । আমি বাহিরে এসে আরো একটা সিগারেট ধরালাম ।আমি আমার সমস্ত অনুভূতি বীণার নামে লিখে দিয়েছি । তার সকল অভিমান নিজের কাছে বন্দি রেখেছি । আমি খুব খারাপ ভাবে তার ভালোবাসায় বন্ধি হয়ে গিয়েছি, আমি সেই বদ্ধ ঘরেই বাঁচতে চাই ।
” যেখানে প্রাপ্তির পর ও সহস্র বেদনা জন্মায়, সেখানে পৃথিবীর যৌনি জুড়ে থাকা এক ফালি অভিমান গোধূলি রঙে ডুবন্ত সূর্যের সাথে অস্ত যায়। সমাপ্ত হয় মূর্ছনার। “

পরের দিন বিকেলে বীণা তার বাবার সামনে আমাকে নিয়ে গেল । নিয়ে যাবার আগে বীণা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছে যে কি কি বলতে হবে । এখন আমি আর বীণার বাবা সামনা সামনি বসে আছি, ওনি আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে । তা দেখে বীণা ও কিছুটা ভয় পেয়ে গেছে ।বীণার বাবা রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে তা ওনার মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে আর বীণা এদিকে ভয়ে আমার হাত শক্ত করে ধরে বসে আছে । আমি তাদের বাপ মেয়ের মনে মনে যুদ্ধ দেখে বলে উঠলাম।

~আঙ্কেল আপনারা মনে মনে যুদ্ধ জারি রাখুন আমি বাহির থেকে অক্সিজেন ফুকে আসি । আমার আবার এত চুপচাপ থাকার অভ্যাস নেই ।
বীণা কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো আর আঙ্কেল ও । হঠাৎ বীণার বাবা আর আমি দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে দিলাম । আঙ্কেল আমার কাধে হাত রেখে বললো
~কি ইমু তোমার কি শেয়ার বাজার ডাওন নাকি ? আমার মেয়ে তো বলছে তোমার জন্য একটা জব ব্যবস্থা করে দিতে ।

~আঙ্কেল সারাদিন তো বসে বসে আর বীণার সাথে প্রেম করেই কাটাই তাই একটা জব হলে খারাপ হয় না ।আমার কাজ তো সব রাতে ই হয় ।
বীণা হা করে আমাদের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে যে কি হচ্ছে । যখন বুঝে গেল তখন বীণা দাতের সাথে দাতের প্রবল ঘর্ষণ দিয়ে বলতে লাগলো
~তারমানে তোমরা আগে থেকেই দুজন দুজনকে চিনো ?
আঙ্কেল বলতে লাগলো
~হ্যা, এটাও জানি তোমরা ২ বছর ধরে প্রেম করছো ।
~তাহলে তোমরা দুজন এতদিন আমার সাথে এমন করছো কেন ? একটার পর একটা ছেলে নিয়ে এসে আমার সাথে ফান করছো ?
~এটা ইমুর প্ল্যান মা, আমি এসব জানিনা ।
~থাকো তোমরা , কারো সাথেই আমার কোন কথা নেই ।

এতটুকু বলেই বীণা রাগে নিজের রুমে চলে গেল । এদিকে আঙ্কেল ও আমার সাথে পল্টি নিয়ে বলতে লাগলো
~তোমরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই এখন বুঝে নাও বাবা । আমার আমার প্রেশার বেড়ে যাবে ।
~বাংলা ছবির মতো এখন ই এই ডায়লগ টা দিতে হইলো আপনার আঙ্কেল ?
~মেয়ে রাগ করে আছে আগে সেটা দেখ । এতদিন তো অনেক মিথ্যা বলেছো আমার মেয়েটাকে ।
~আচ্ছা আপনি রেডি হয়ে আসুন, আমি বীণাকে দেখছি ।

আমি হাসি দিয়ে বাহিরে চলে আসলাম । জানি আমার প্রিয়তমা বেশ রাগ করে আছে আমার উপর। তাই রাগ ভাঙ্গানোর জন্য আর বিয়ের প্রপোজাল হিসেবে বীণার কাছে একটা কালো শাড়ি আর একটা চিরকুট পাঠিয়ে দিলাম । সেখানে লিখা ছিলো
” ভালোবাসা যদি অত্যাচার হয়,

তাহলে আমি জঘণ্য পাপী । এ পাপিকে যদি সাজা দিতে চাও,তাহলে কালো শাড়ি টা পরে জলদি তোমার বাবার সাথে কাজী অফিসে চলে আসো । আমি চাই আমার ভালোবাসার শাস্তিটা মৃত্যু পযর্ন্ত তোমার নরম হাতেই যেন সাজা প্রাপ্ত হই ।আর হ্যা কান্না করে এমনিতেই মুখটা আগুনের মতো লাল টকটকে করে ফেলেছো এখানে আলাদা করে আবার মেকাপ করো না যেন ।”
ইতি একটু পর হয়ে যাওয়া তোমার জামাই ।

তারপর আমি কাজী অফিসে বীণার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কালো শাড়িতে বীণাকে বউ সাজে দেখতেই মনের ভেতর এক প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেল। তাকে দেখেই আনমনে পূণেন্দু পত্রী র কিছু লাইন আবৃতি করতে লাগলাম ।
একজীবনের এতগুলো সংলাপ
সব ঠিকঠাক আদায়ের পর ছুটি।
আমরা দেখছি শ্রান্ত পায়ের ছাপ,
ভালবাসা তবু দেখায়নি বিচ্যুতি।

গল্প : জীবনের সংলাপ (কবির প্রেম – Poetry Love Story)
শাহরিয়ার আহমেদ ( বাউন্ডুলে )


আরো পড়ুন – এক টুকরো জীবন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *