লাভ ছিনতাই – প্রেমিকা তুমি কার । ছলনাময়ী ভালোবাসা

লাভ ছিনতাই – প্রেমিকা তুমি কার । ছলনাময়ী ভালোবাসা: আমি তো সুরাইয়া কে সত্যি ভালোবাসি আর লুচ্চা লোফার সালা হৃদয় শয়তানি ছাড়া কিছুই করবে না। তাই সুরাইয়া আমার শুধুই আমার।


পর্ব ০১

হৃদয় আর আকাশ দু’জন প্রাণের বন্ধু। সেই নেংটা কাল থেকে তাদের তাদের পরিচয়। তারা সব সময় এক সাথে থাকে। এখন তারা অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। এখন তাদের সম্পর্কে কিছু কথা বলি। হৃদয় খুব চঞ্চল আর খুব স্মার্ট একটা ছেলে। সে মেয়েদের মন নিয়ে প্রেম প্রেম খেলতে ভালোবাসে।

বলা যায় জামা কাপড় বদলানোর মতো করে সে তার গফ বদলায়ে থাকে প্রতিদিন। মেয়েরাও কেমন জানি, হৃদয়ের বাবার টাকা দেখে তার প্রেমে পড়ে যায়। এবার আকাশের বেপার কিছু কথা বলা যাক। আকাশ আর হৃদয়ের থেকে পুরা আলাদা একটা ছেলে। দেখতে কিন্তু কম সুন্দর না। অনেক সুদর্শন একটা ছেলে সে। কিন্তু সাদা মাটা ভাবে থাকতে ভালোবাসে। প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস করে না। তাই সে কোন মেয়ে কে পাত্তা দেয় না। সব সময় পড়া লেখা নিয়ে ব্যস্তো থাকে।

হৃদয়ের এমন লুচ্চামি দেখে আকাশ বার বার হৃদয় কে বলে, এ সব লুচ্চামি ছাড়ে দিয়ে লেখাপড়ায় একটু মনযোগ দিতে। তখন জবাবে হৃদয় রেজাকে বলে, তুই একটু বইয়ের বাহিরে আসপে নিজের জীবনটাকে উপভোগ কর। তা না হলে তো তুই জীবনের মানে বুঝবি না। আর আমাকে পড়াশোনা করতে হবে কেনো তুই তো আছিস আমার জন্য। তখন আকাশ আর হৃদয় কে ভয় দেখায় যে, তুই যদি নিজেকে পরিবর্তন না করিস তো আমি তোকে আর কখনো সাহায্য করবো না।

আকাশ এই কথা কতো বার বলেছে সে নিজেও জানে না। আর হৃদয় তো এ সব কথা কানেই তোলে না। তাই আকাশ যখন ঐ কথা বলে তখন জবাবে হৃদয় বলে, যা যা তুই কি করতে পারিস তা আমি ভালো করেই জানি। এই ভাবে দুই বন্ধুর জীবন চলে যায়।

গতোকাল একটা নতুন মেয়ে এসেছে কলেজে। হৃদয় তার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলো। তাই সে দেখতে পায়নি। আজ কলেজে এসে দেখে একটা মেয়ে তাদের ক্যামপাসে দাঁড়িয়ে আছে। তার সাথে গল্প করছে সেলিম আর নুড়ি। মেয়েটাকে দেখে হৃদয়ের অনেক ভালো লাগে যায়। বিনা পয়সায় যে কুখাদ্য খাওয়া যায় সেই ক্রাশ নাম খাদ্য খায়ে ফেলে হৃদয়। হৃদয় তাদের সাথে কথা বলার জন্য তাদের দিকে এগি যেতে লাগে তখনি তার বর্তমান গফ আয়েশা পেছন থেকে ডাক দেই।
আয়েশাঃ এই হৃদয় কোথায় যাচ্ছো?

  • শুভ কাজে যাচ্ছিলাম দিলো তো কুফা লাগে। (মনে মনে)
    আয়েশাঃ ষষকি হলো কথা বলো না কেনো?
    হৃদয়ঃ এই তো সেলিম আর নুর এর কাছে যাচ্ছিলাম।
    আয়েশাঃ যেতে হবে না আমারা সাথে এখন।

হৃদয়ঃ তোমার সাথে কোথায় যেতে হবে? আজ আমি পারবো না। অন্য কাওকে নিয়ে চলে যাও।
আয়েশাঃ ঘুরতে যাবো। অন্য কাকে নিয়ে যাবো? ভুতের মুখে রাম নাম!
হৃদয়ঃ মানে!

আয়েশাঃ মানে এখন আমি তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। আর কখনো শুনিনি যে তোমার আবার কাজ আছে।
হৃদয়ঃ কেনো আমার কি কোন কাজ থাকতে পারে না?

আয়েশাঃ হুম থাকতেই পারে। তবে এখন কোনো কাজ করতে হবে না এখন চলো আমার সাথে।
হৃদয়ঃ আরে বাবা বুঝতে পারছো না কেনো আমার কাজ আছে?
আয়েশাঃ আমার চাইতেও কি তোমার কাজ আগে?

হৃদয়ঃ দেখো তিথি কাজটা আমার।
হঠাৎ তাদের মাঝে আকাশ চলে আসে আর বলে ওঠে।
আকাশঃ ভাবি যখন এতো করে বলছে তখন যাচ্ছিস না কেনো? যা।
আকাশঃ আরে ভাই আমার একটা কাজ আছে তাই তো যেতে চাচ্ছি না।
আকাশঃ কি কাজ আমাকে বল আমি করছি, তাও তুই ভাবির মনে কষ্ট দিস না।

হৃদয় ভাবছে। সালা হাদারাম তোকে কেমন করে বলি যে আমার কাজটা কি? যদি বলি তবে তো উল্টা আমাকে জ্ঞান দিতে আসবি।
আকাশঃ কিরে এমন চুপ করে আছিস কেনো? বললাম তো আমি তোর কাজটা করে দিবো।
হৃদয়ঃ না থাক আমি পরে করে নিবো, তোকে দিয়ে হবে না।

আকাশঃ হুম যা ভাবি কে নিয়ে ভালো করে ঘুড়িয়ে আসিস all the best.
হৃদয়ঃ হুম। চলো এবার যাওয়া যাক।
এই বলে হৃদয় আয়েশাকে নিয়ে হাটাঁ ধরে। আর আকাশ সেখানে দাড়িঁয়ে হাসতে থাকে হৃদয় কে বাঁশ দিতে পারে। হৃদয় কিছু দূর যাওয়ার পড়ে পিছোন ফিরে ইশারায় বলে। আজ তুই আমাকে বাঁশ দিলি তো। সময় আসুক তোকে সুদে আসোলে ফেরোত দিবো। জবাবে রেজা বলে যা যা সেটা সময় বলে দিবে।

এরপরে আকাশ তার ক্লাসের দিকে হাঁটা ধরে তখনি সেলিম পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলে।
সেলিমঃ এই আকাশ শুন।
আকাশঃ হুম বল কি বলবি?

সেলিমঃ এ হলো সুরাইয়া আমার ফুপির মেয়ে গতোকাল আমাদের কলেজে ভর্তি হয়েছে।
আকাশঃ দেখতে মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দরী। আর দেখে মনে হচ্ছে অনেক ভদ্র একটা মেয়ে। হৃদয়ের নজর থেকে একটু দূরে রাখিস তাহলেই হবে।
সুরাইয়াঃ বাহ মেয়ে তো বেশ ভালো ভাবে পটাতে পারেন।

আকাশঃ এতো তাড়াতাড়ি পটে গেলেন? আমি তো আপনাকে পটানোর চেষ্টাও করিনি। আপনাকে তো ভদ্র ভাবা আমার ভুল হয়েছে।
সেলিমঃ ঐ তোরা থাম।
সেলিমঃ তোকে যে জন্য এখানে ডাকা হয়েছে সেটাতো আগে শুন।
আকাশঃ না বললে আমি শুনবো কেমন করে?
সেলিমঃ তুই তো রসায়ন ভালো পারিস, তাই বলছিলাম কি।
আকাশঃ তাই বলছিলাম কি আমাকে এবারের পরিক্ষায় একটু সাহায্য করিস, তাই তো?
সেলিমঃ ঐ তুই এতো বেশি বুঝিস কেনো?

আকাশঃ হুম বল?
সেলিমঃ তুই যদি সুমাইয়া কে একটু পড়াতি উপকার হতো।
আকাশঃ কেনো তুইও তো পড়াতে পারিস।
ছেলিম, আমার হাতে সময় হবে নারে।

আয়েশাঃ আচ্ছা দেখি সময় বের করতে পারি কি না? যদি পারি তবে পড়াবো।
এই বলে যে যার যার ক্লাস রুমে চলে যায়। আর এ দিকে আয়েশা আর হৃদয় এসেছে একটা রেসটুরেন্টে। মনের সুখে খাবার খেয়ে যাচ্ছে তারা। মনে হয় তাদের বাবার হোটেল বিল দিতে হবে না? হৃদয় খাবার খাচ্ছে আর ভাবছে এই আপদ টাকে কেমন বিদায় কর যায় সেটাই ভাবছে। খাবার শেষ হয়েছে এবার বিল দেওয়ার পালা। ওয়েটার এসে হৃদয়ের হাতে বিল ধরে দিতে লাগলে হৃদয়।

হৃদয়ঃ আচ্ছা সব সময় ছেলেরা বিল দিবে এমন কোথাও লেখা আছে কি?
ওয়েটারঃ না। তবে সব সময় দেখি ছেলেদের বিল দিতে তাই।
হৃদয়ঃ ওহ। আজ তোমার মেডাম বিল দিবে। তাকে দেও।

ওয়েটারঃ মেম বিল নেন।
আয়েশাঃ ওকে আপনি যান আমি বিল দিচ্ছি।
ওয়েটা চলে যাবার পরে।
আয়েশাঃ এই তুমি ফকির না কি হ্যাঁ? সামান্য রেস্টুরেন্টে খেয়ে বিল দিতে পারো না?
হৃদয়ঃ আমার কাছে টাকা আছে আমি বিল দিবো না।

আয়েশাঃ কেনো?
হৃদয়ঃ তোমরা নারি পুরুষের সমান অধীকার বলে গলা ফাটাও। নেও অধীকার পালন করো।
আয়েশাঃ এ সব কিন্তু ভালো হচ্ছে না হৃদয়।
হৃদয়ঃ যাক আর একটু রাগালে ঐ নিজের থেক ব্রকআপ করবে। (মনে মনে)

আয়েশাঃ কি ভাবছো তুমি এ সব করবে আর আমি তোমার সাথে ব্রেকআপ করবো? না কখনোই তা করবো না আমি। আমি তোর জীবনটা ঝালাফালা করবো একেবারে।
হৃদয়ঃ এই তুমি কি জ্বীন পরি নাকি?
আয়েশাঃ কেনো?

হৃদয়ঃ আমার মনের কথা তুমি বুঝতে পারছো। এই ব্রেকআপ করি চলো।
আয়েশাঃ আর একবার যদি তুই এই কথা বলিস তবে আমি এখন তোকে গনঢোলাই খাওয়াবো।
হৃদয়ঃ না থাক চলো।
আয়েশাঃ বিলটা?

হৃদয়ঃ আজ তুমি আমাকে নিয়ে আসছো তাই তুমিই দেও।
আয়েশাঃ আচ্ছা।
এর পরে তারা বিল মিটিয়ে যে যার যার বাসায় চলে যায়। আয়েশা বাসায় গিয়ে সুমাইয়া কথা ভাবতে থাকে কতো সুন্দরী একটা মেয়ে। টানা টানা চোখ তাতে আবার কাজল দেওয়া। সুদির্ঘ চুল। সালোয়ার কামিজে একে বারে একটা সাদামাটা পরী সাজে এসেছে। হৃদয়ের মনে পরে সেলিমের কথ। তাই সেলিম কে কল করে সে।
হৃদয়ঃ কিরে কেমন আছিস?

সেলিমঃ কে ভাই আপনি?
হৃদয়ঃ আরে আমি হৃদয়।
সেলিমওওওওওওও তুই প্লে বয় হৃদয়! তা ভাই তুমি।


পর্ব ২

এর পরে তারা বিল মিটিয়ে যে যার যার বাসায় চলে যায়। হৃদয় বাসায় গিয়ে সেলিম কথা ভাবতে থাকে কতো সুন্দরী একটা মেয়ে। টানা টানা চোখ তাতে আবার কাজল দেওয়া। সুদির্ঘ চুল। সালোয়ার কামিজে একে বারে একটা সাদামাটা পরী সাজে এসেছে। হৃদয়ের মনে পরে সেলিম কথ। তাই সেলিম কে কল করে সে।
হৃদয়ঃ কিরে কেমন আছিস?
সেলিমঃ কে ভাই আপনি?
হৃদয়ঃ আরে আমি।

সেলিমঃ ওওওওওওও তুই প্লে বয় হৃদয়! তা ভাই তুমি কেনো ফোন দিয়েছো জানতে পারি কি?
হৃদয়ঃ কেনো আমি কি তোর খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য একটু ফোন দিতে পারি না?
সেলিমঃ এর আগে কখনো প্রয়োজন ছাড়া দেসনি তো তাই।
হৃদয়ঃ তা কি করিস এখন?

সেলিমঃ এই তো জাহিদের সাথে চ্যাট করছিলাম। তুই?
হৃদয়ঃ তেমন কিছু না। আচ্ছা ক্যামপাসে নতুন একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখলাম মেয়েটাকে কি তুই চিনিস?
সেলিমঃ এই বাবু তুমি এবার লাইনে এসেছো।
হৃদয়ঃ আহা বল না।
সেলিমঃ চিনি কিন্তু তোকে বলবো না।

হৃদয়ঃ আরে তুই না আমার আপন দোস্ত।
সেলিমঃ তবুও বলবো না। রাখ তুই জাহিদ অপেক্ষা করছে।
এই বলে সেলিম ফোনটা রাখে দেয়। আর ঐ দিকে হৃদয় অবাক হয়ে যায় সেলিমের ব্যবহারে।

পরের দিন সকাল সকাল ক্যামপাসে চলে যায় হৃদয়। যেখানে আকাশ ঘুম থেকে ডাকে ওঠায়ে নিয়ে যেতো সেখানে হৃদয় নিজে ওঠে চলে গেছে। হৃদয়ের বাসায় এসে জানতে পারে অবাক হয়ে যায় আকাশ। আকাশের মনে সন্দেহ জাগে এতে নিশ্চয়ই কোন কাহিনি আছে? তাই সেও যাথা সম্ভব দ্রুত ক্যাম্পাসে চলে যায়। গিয়ে দেখে সুরাইয়া আর নূরের সাথে কথা বলছে হৃদয়। এবার রেজা বুঝতে পারে গতোকাল কেনো সে আয়েশার সাথে ঘুড়তে যেতে চাইছিলো না আর আজ কেনো এতো সকাল সকাল ক্যামপাসে আসছে? আকাশ কে দেখে জাহিদ ডাক দেয়।
জাহিদঃ হাই আকাশ ভাইয়া।

আকাশঃ হুম বলো। (তাদের কাছে গিয়ে)
জাহিদঃ কেমন আছেন।
আকাশঃ ভালো। তোমরা কেমন আছো?

সুমাইয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
আকাশঃ তা হৃদয় সাহেব তোমার ঘুম আজ এতো সকাল সকাল ভাংলো কেমন করে?
হৃদয়ঃ আর বলিস না, ভাবছি এখন থেকে প্রতি দিন সকাল সকাল ওঠবো।
আকাশঃ তা তো ভালো। তা জাহিদ আমাকে ডাকলে যে?

জাহিদঃ ওহ। গতোকাল সেলিম আপনাকে একটা কথা বলেছিলো মনে আছে?
আকাশঃ ওহ মনে আছে। আগমী সপ্তাহ থেকে পড়াবো। এই সপ্তাহ থেকে পড়াবো না।
সুমাইয়াঃ ওহ ঠিক আছে।
হৃদয়ঃ কি পড়াবি আর কাকে?
আকাশঃ সুমাইয়া কে রসায়ন পড়াবো।

হৃদয়ঃ আমাকে বললেও পারতো, আমি পড়াতাম।
আকাশঃ তা তুই পড়া আমি বাঁচে যাই।
জাহিদঃ না থাক হৃদয় ভাই কে লাগবে না।
হৃদয়ঃ কেনো? আমি কি রসায়ন পারি না?
জাহিদঃ তা পারেন কিন্তু আপনি যে।
হৃদয়ঃ দেখো আমি নিজকে অনেক বদলে নিয়েছি।

জাহিদঃ থাক আমাকে জানতে হবে না। ক্লাসের বেল বাজতেছে যান ক্লাসে।
এই বলে জাহিদ আর সুমাইয়া চলে গেলো আর এদিকে ক্লাসে যাচ্ছে হৃদয় আর আকাশ
আকাশঃ এই মেয়েটাকেও বাদ দিলি না?

হৃদয়ঃ দেখ মেয়ে টা দেখতে অনেক সুন্দরী আর হ*। আমার মনে ধরেছে। যদি আমি একে পাই তবে আমি একে বারে ভালো হয়ে যাবো।
আকাশঃ তুই এই কথাটা তো সব মেয়েকে দেখার পরে বলিস। আর নতুন কাওকে দেখলে প্রেমে পড়ে যাস।
হৃদয়ঃ আর এমনটা হবে না। তুই একটু উপকার কর plz দোস্ত।
আকাশঃ তুই ভালো করেই জানিস আমি তোকে এবেপারে কোনো সাহায্য করব না তাই এসব বলিস না।
হৃদয়ঃ তুই আমার বন্ধু নাকি শত্রু?

আকাশঃ তুই যেটা ভাবিস।
আর এ দিকে সুমাইয়া জাহিদের কাছে জানতে চায়।
সুমাইয়া ভাবি তুমি হৃদয়ের সাথে এমন করে কথা বললে কেনো?
জাহিদঃ তুমি জানোনা সালা হারামি কতো বড় লুচ্চা।

সুমাইয়াঃ তাক আমার আর জানে কোন কাজ নাই। আমি আমার মতো চলি।
এদিকে দিন যায় রাত যায় হৃদয় আয়েশা সাথে কোন যোগাযোগ করে না। আয়েশা ফোন দিলে তার ফোন ধরেও না সে। আয়েশা সেই লেভেলের রাগে যায়। আর মেসেজ করে বলে। tui jodi agami kal amar sathe park k dekha na krish tw toke jele pathabo। হৃদয় জেলের কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে যায়। সে জেল হাজোত খুব ভয় পায়। তাই সে রাজি হয় আগামীকাল সে আয়েশার সাথে দেখা করবে।

সকালে ওঠে আয়েশাকে কল করে আসতে বলে পার্কে চলে যায় হৃদয়। গুনে গুনলে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে
আয়েশা আসে। আয়েশা কে আসতে দেখে বলে ওঠে।
হৃদয়ঃ আসতে এতো সময় লাগে?
আয়েশাঃ রাস্তায় অনেক ট্রাফিক ছিলো তাই।
হৃদয়ঃ ট্রাফিক নাকি অন্য কিছু?

আয়েশাঃ অন্য কিছু কি হুম? আর তুমি আমাকে এমন এড়িয়ে চলছো কেনো?
হৃদয়ঃ তোমাকে কেনো জানি আমার আর ভালো লাগছে না।
আয়েশাঃ আকাশ ভাই ঠিক বলেছিলো তুমি একটা লুচ্চা।
হৃদয়ঃ বুঝতে যখন পারছো তখন আবার পিছে পড়ে আছো কেনো? ব্রেকআপ তুমি আসতে পারো।
আয়েশাঃ ব্রেকআপ বললেই হলো? আমি তোকে এতো সহজে ছাড়ছি না।
হৃদয়ঃ তো কি করবে আমার?

আয়েশাঃ তোকে জ্বালাবো পোড়াবো। আর দেখবো তুই কেমন করে অন্য কারো সাথে প্রেম করিস সেটা আমি দেখে নিবো।
হৃদয়ঃ আচ্ছা তুই কেমন করে দেখে নিবি আমিও একটু দেখি।
আয়েশাঃ তোকে আবার আমার কাছে ফিরতে হবে।
হৃদয়ঃ কখনোই না।

আয়েশাঃ তবে তোকে উগান্ডার মেয়েদের সাথে প্রেম করতে হবে।
এবার হৃদয় রাগে যায়। আয়েশাকে মারতে গিয়ে নিজেকে সংযত করে চলে আসে ক্যামপাসে। বকুল তলায় মন খারাপ করে বসে আছে হৃদয়। আকাশ ক্লাস শেষ করে বকুল তলা দিয়ে যাওয়ার পথে হৃদয়ের সাথে দেখা হয়। আর দেখে, হৃদয় মন খারাপ করে বসে আছে।
আকাশঃ কি বেপার লাভার বয় মন খারাপ করে বসে আছেন যে?

হৃদয়ঃ না কিছু হয়নি।
আকাশঃ কিছু তো একটা হয়েছে তা না হলে কেউ কি মন খারাপ করে বসে থাকে?
হৃদয়ঃ কেউ না থাকলেও আমি থাকি।
আকাশঃ আপনি কি আমাকে বন্ধু ভাবেন?
হৃদয়ঃ আপনি ভাবলে আমি ভাববো না কেনো?

সুমাইয়াঃ আমি ভাবি তো। তো এখন বলেন কি হয়েছে আপনার? বন্ধুর কাছে কিন্তু মিথ্যা কথা বলতে নাই।
হৃদয় সুমাইয়া কাছে যাওয়ার সেই রকম সুযোগ পায়। তাই সে সুযোগ নষ্ট না করে চাল চালে।
হৃদয়ঃ জানে আমি একটা মেয়েকে আমার জীবনের থেকেও বেশী ভালো বাসতাম। আজ সকালে ফোন দিয়ে বলে দেখা করতে আমি দেখা করলাম। দেখা করে বলে কি জানেন?
সুমাইয়াঃ না বললে জানবো কি করে?
হৃদয়বলে যে।


পর্ব ০৩

হৃদয়ঃ জানে আমি একটা মেয়েকে আমার জীবনের থেকেও বেশী ভালো বাসতাম। আজ সকালে ফোন দিয়ে বলে দেখা করতে আমি দেখা করলাম। দেখা করে বলে কি জানেন?
সুমাইয়াঃ না বললে জানবো কি করে?
হৃদয়ঃ বলে যে সে নাকি আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। তার নাকি আমার সাথে যায় না। এ জন্য সে ব্রেকআপ করে চলে গেছে।
সুমাইয়াঃ এক জন গেছে তো কি হয়েছে? নতুন কাউকে খুঁজে নিবে। এ সামান্য বেপারে কি কেউ মন খারাপ করে?
হৃদয়ঃ তোমার কাছে এটা সামান্য বেপারে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে নয়। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম।
সুমাইয়াঃ সরি আমি বুঝতে পারিনি।

হৃদয়ঃ আর বেপার না আমার কপালটায় এমন।
এভাবে অনেক সময় তারা গল্প করে। হৃদয়ের প্রতি সুমাইয়া মন একটু নরম হয়। প্রথমে জাহিদ আর সেলিমের কথা শুনে যতোটা খারাপ মনে করেছিলো হৃদয় কে আসোলে ততোটা খারাপ না ছেলেটা। হৃদয়ের সাথে মিশা যায়। তাই সুমাইয়া হৃদয়ের fb id নিজে চেয়ে নেয়। হৃদয়ের মনে আরো একটা লাড্ডু ফোটে। পাখি নিজেই জালে ধরা দিতে যাচ্ছে। তাই হৃদয় কাল বিলম্ব না করে দিয়ে দেয়।

রাতে হৃদয় শুয়ে শুয়ে ফেসবুকিং করছিলো। তখনি একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট সাথে একটা মেসেজ রিকুয়েষ্ট আসে রাতের তারা নামের id থেকে। মেসেজ টা সিন করে দেখে। এই যে মিষ্টার কি করেন?
হৃদয়ঃ কে আপনি?
আজ যাকে id দিলেন সে আমি।

হৃদয়ঃ কাকে আমি id দিয়েছি সঠিক মনে নাই আমার।
কয় জন কে id দিয়েছিলেন তাই মনে নাই?
হৃদয়ঃ আপনি কি তানিয়া?
না

হৃদয়ঃ সারা।

  • তাও না।
    হৃদয়ঃ আরে ভাই বলবেন তো কে আপনি?
  • আমি সুমাইয়া
    হৃদয়ঃ ওহ সরি আমি বুঝতে পারিনি। আমি চিন্তা করলে সব কিছু কেমন যেনো গুলিয়ে ফেলি।
    সুমাইয়াঃ ওহ। তা যাদের নাম বললেন তারা কে?

হৃদয়ঃ ওরা আমার মামাতো বোন। যা ফাজিল নিত্য নতুন ফেক id
দিয়ে আমাকে জ্বালাবে। (পুরাই চাপা)
সুমাইয়াঃ একি করেন এখন?
হৃদয়ঃ শুয়ে আছি আর তোমার সাথে কথা বলছি। তুমি কি করো?
সুমাইয়াঃ আমিও শুয়ে আছি। খাইছেন কি আপনি?

হৃদয়ঃ না। খাইতে মন চাচ্ছে না। তুমি খাইছো? (পুরাটাই চাপা। হাতে বার্গার আছেই)
সুমাইয়াঃ এ মা এমন কেনো শরীর খারাপ করবে তো।
হৃদয়ঃ করলে করুক তাতে কার কি?
সুমাইয়াঃ আপনাকে খাইতে বলছি আপনি খাবেন ব্যেস।

হৃদয়ঃ খাব, তার আগে আমার একটা কথা আছে।
সুমাইয়াঃ কি কথা বলেন?
হৃদয়ঃ তুমি আমাকে আপনি করে বলছো এতে আমর খারাপ লাগছে।
সুমাইয়াঃ তো কি করে বলবো আপনাকে?
হৃদয়ঃ তুমি করে ডাকবে আমাকে।
সুমাইয়াঃ ওকে ডান।

এই ভাবে তারা আপনি থেকে তুমিতে নামে আসে। ধীরে ধীরে তাদের কথা বলার সময় বাড়তে থাকে। মোবাইল নাম্বার আদানপ্রদান করে একে অপরের সাথে। ক্যাপাসে গেলে সবার আগে হৃদয়ের খোঁজ করে সুমাইয়া। আকাশ বিষয় টা লক্ষ্য করে। তো আকাশের বুঝতে আর বাকি থাকেনা বিষয় টা কোন দিকে গড়াচ্ছে। কি আর কর সে যেমন মেয়ে তেমন ছেলে দেখা যাক বিষয় টা কোন দিকে গড়ায়।
আকাশ কে দেখে সুমাইয়া তার কাছে আসে। আসে জিজ্ঞাসা করে।
সুমাইয়াঃ কি হলো আপনি কবে থেকে পড়াতে যাবেন?
আকাশঃ ধরে নেও আজ থেকে।

সুমাইয়াঃ আমি ধরে নিতে পারবো না সোজা সুজি বলেন।
আকাশঃ আজ সন্ধ্যা থেকে।
সুমাইয়াঃ আমার বাসার ঠিকানা জানেন?
আকাশঃ না। লোকেশন শেয়ার করেন।

সুমাইয়াঃ ওকে। হৃদয় ভাই ডাকছে আসি।
এই বলে সুমাইয়া চলে গেলো। আর আকাশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসতে লাগলো। দু’দিন পরে ভাইয়া থেকে জানু হয়ে যাবে। আবার কিছুদিন পরে ব্রেকআপ। এরা পারেও বটে। এরি মাঝে আয়েশা আসে রেজার কাছে।
আকাশঃ কি খবর আয়েশা?

আয়েশাঃ কোন খবর নিতে চান আপনি?
আকাশঃ তোমার খবর ছাড়া কার খবর নিবো?
আয়েশাঃ এই তো আছি।
আকাশঃ এইতো আছি বলতে?

আয়েশাঃ আপনার লুচ্চা বুন্ধু ভালো আর থাকতে দিলো কোথায়?
আকাশঃ আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম। কিন্তু আমার কথা শুনলেটা কোথায় তুমি?
আয়েশাঃ আপনার কথা না শুনার ফল আমি পাচ্ছি। তবে আমিও ওকে ছাড়ছি না। আমি চিটার টাকে উচিৎ শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।
আকাশঃ আমি তোমার সাথে আছি।

এই বলে তারা দু’জনে বুদ্ধি পরামর্শ করে কি ভাবে হৃদয় কে একটা শিক্ষা দিয়ে ভালো পথে আনা যায়।
এদিকে জাহিদ আর সেলিম সম্পর্কের মাঝে ঝামালা শুরু হয়ে গেছে। সেলিম নাকি জানতে পেরেছে সাথে সুমাইয়া স্পর্ক করে দিচ্ছে জাহিদ। তাই সেলিম বেপক পরিমান রেগে গিয়ে জাহিতের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে।

সন্ধ্যা হলে আকাশ সুমাইয়া কে পড়াতে যায়। সময় আসবে সুমাইয়ার বাসায় গিয়ে মুগ্ধ হয়ে যায় সে। সুমাইয়া পরিবার বলতে তার মা ছাড়া আর কেউ নেই। আকাশ কেনো জানি সুমাইয়া মা কে দেখে মায়া হয়। তাই সে মনে মনে ভাবে এমন একটা পরিবারের মেয়ে যদি প্রতারিত হয় তবে সত্যি বলতে কি নিজের কোন ধরনের একটা বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলবে। যা আকাশ দাঁড়িয়ে দেখতে পারবে না। তাই যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে যে করেই হোক হৃদয়ের কাছ থে দূরে রাখবে সুমাইয়া কে।

সপ্তাহে ৪ দিন পড়ানোর কথা থাকলেও আকাশ কেনো জানি ৬ দিন পড়াতে যায়। দিন যেতে থাকে সুমাইয়া প্রতি কেমন জানি টান অনুভব করতে থাকে মাহফুজ। ইদানিং বেশ কয়েক দিন থেকে কথায় কথায় সুমাইয়া হৃদয়ের কথা টানে নিয়ে আসে যা আকাশে একেবারে সহ্য হয় না। আকাশ মনে হয় সুমাইয়া প্রেমে পড়ে গেছে। মনে হয় বললে ভুল হবে। প্রেমে পড়ে গেছে একে বারে তা না হলে সুমাইয়া মুখে হৃদয়ের কথা শুনলে এমন জ্বলে ওঠে কেনো সে?

এদিকে হৃদয় আর সুমাইয়া অনেকটা এগিয়ে গেছে। রাত জাগে কথা বলা শএরু হয়েছে। হৃদয় যখন যেখানে ডাকে সেখানে চলে যায় সুমাইয়া। এ থেকে বুঝা যায় সুমাইয়া অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়েছে। সে চাচ্ছে হৃদয় তাকে প্রপোজ করুক। আর এ দিকে হৃদয় ভাবছে অনেক ঘুরেছি সুমাইয়ার পিছনে আর নয়। এখন সরাসরি বলে দিবো আমি তোমাকে ভালোবাসি। এতে যা হবার হবে।

আর এ দিকে আকাশ ভাবছে হৃদয় তার মনের কথা বলার আসে সে তার মনের কথা বলে দিবে। তাই সে সুমাইয়া কে কল করে বলে একটু সকাল সকাল ক্যাম্পাসে আসতে আর হাতে তার জন্য সময় রাখতে। তার একটু পরে হৃদয়ও সুমাইয়া কে কল করে একই কথা বলে। সুমাইয়া বেশ চিন্তায় পড়ে যায়। এরা দু’জনে এমন সকাল সকাল যেতে বললো কেনো? আবার হাতে সময় নিয়ে যেতে বললো কেনো?

সকালে ওঠে সুমাইয়া একটু মানজা মারে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আর এ দিকে আকাশ আর হৃদয় হাতে গোলাপ নিয়ে রওনা দেয় সুমাইয়াr উদ্দেশ্যে। ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যায়। দু’জনে গিয়ে দেখে সুমাইয়া।


পর্ব ০৪

সকালে ওঠে সুরাইয়া একটু মানজা মারে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আর এ দিকে আকাশ আর হৃদয় হাতে গোলাপ নিয়ে রওনা দেয় সুরাইয়া উদ্দেশ্যে। ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যায়। দু’জনে গিয়ে দেখে সুরাইয়া বকুল তলায় বসে আছে। আকাশ সুরাইয়া কাছে যাবে তখনি আয়েশা তাকে ডাক দেয়। তো আয়েশার ডাকে সাড়া দিয়ে আকাশ তার কাছে চলে যায়। আর এই ফাঁকে হৃদয় সুরাইয়ার কাছে যায়। তো হৃদয় কে যাওয়া দেখে সুরাইয়া বলে ওঠে।
সুরাইয়াঃ এই যে মিষ্টার আমাকে এতো সকালে ডাকার কারণ টা কি শুনি?

হৃদয়ঃ কারণ তো একটা আছে এ জন্যই তো তোমাকে ডাকেছি তাই না?
সুরাইয়াঃ হুম সেটাই তো জানতে চাইছি। বলো এখনো।
হৃদয়ঃ আমি যা বলতে চাচ্ছি তুমি কি তা বুঝতে পারছো না?
সুরাইয়াঃ না। আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।

হৃদয়ঃ সুরাইয়া আমি তোমার সাথে মিশতে মিশতে কখন যে তোমাকে ভালোবাসে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি। যখন তুমি আমার পাশে থাকো তখন আমার মনে হয় আমি পরিপূর্ণ। আর যখন তুমি আমার দূরে থাকো তখন আমার কেনো জানি মনে হয় আমি নিশ্ব। তুমি কি আমার ভালোবাসা গ্রহণ করে তোমার ভালোবাসা আমায় দিবে?
সুরাইয়াঃ সত্যি বলতে কি আমিও কখন যে তোমাকে ভালোবাসে ফেলেছি আমি নিজেই জানি না। তোমাকে যদি ফেরোত দেই তবে তো আমি নিজেই শূন্য হয়ে যাবো।
হৃদয়ঃ তাহলে বলো।

সুরাইয়াঃ কি?
হৃদয়ঃ ঐ যে তিন শব্দের একটা মধু মাখা বাক্য।
সুরাইয়াঃ সেটা আবার কি?
হৃদয়ঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি।
সুরাইয়াঃ যদি না বলি তবে কি আমার ভালোবাসা কম হবে তোমার প্রতি।
হৃদয়ঃ না তা হবে কেনো?
সুরাইয়াঃ হুম ঠিক তাই।

এই বলে সুরাইয়া হৃদয়ের হাত জড়িয়ে ধরে কাধে মাথা দিয়ে হাটতে থাকে। আর ঐ সময়ে আকাশ আর আয়েশার কাছ থেকে আসছিলো সুরাইয়া কাছে। এমন দৃশ্য দেখে তো আকাশের মাথার উপরে মনে হয় ঠাডা পড়ে। সেই ঠাডার শব্দে তার মুখের কথা হারিয়ে যায়। তার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয় না। সুরাইয়া জানতে চায় আকাশের কাছে কেনো তাকে সকালে ডেকেছিলো। আকাশ মুখ দিয়ে কোন কথা বের করতে পারে না৷শুধু মাথা নাড়িয়ে বলে কিছু না। এর পরে হৃদয় আর সুরাইয়া রিক্সা করে চলে যায়। আকাশের মন খারাপ থাকায় ক্লাস আর না করে বাসায় চলে যায়।

আর এ দিকে হৃদয় আর সুরাইয়ার মনের আনন্দে আজ সময় কাটাচ্ছে। তাদের মাঝে জমে থাকা যতো কথা ছিলো একে অপরকে খুলে বলছে। এক কথায় তারা সব চাইতে ভালো সময় কাটাচ্ছে আজ। সুরাইয়া তো হৃদয় কে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু হৃদয় কি সুরাইয়া কে ভালোবেসেছি নাকি আর সব মেয়ের মতো সময়ের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে? দেখা যাক কি হয়।

এ দিকে শুরু আগেই শেষ দেখে ফেলে আকাশের বাসায় এসে মন খারাপ করে শুয়ে আছে। ভাবছে। জীবনে কতো মেয়ে আমাকে প্রপোজ করলো। কতো সুন্দরী মেয়ে পিছনে ঘুড়লো কিন্তু কাউকে পাত্তা দিলাম না। আজ একজনকে আমার ভালো লাগলো, আমি তাকে ভালোবাসলাম। আর আমি বলার আগে হৃদয় তাকে নিজের করে নিলো! না এটা হয় না, এটা আমি কখনো মানে নিবো না। যে করেই হোক সুরাইয়া কে আমার চাই চাই। এতে যদি আমাকে অন্যায়ের পথ বেছে নিতে হয় তবে তাই নিবো। আমি তো সুরাইয়া কে সত্যি ভালোবাসি আর লুচ্চা লোফার সালা হৃদয় শয়তানি ছাড়া কিছুই করবে না। তাই সুরাইয়া আমার শুধুই আমার।

এদিকে যখন আকাশ বাংলা সিনেমার পুরাতন ছবির ডাইলোগ ভাবছি তখনি হৃদয় আর সুরাইয়া একে অপরকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনেছে। তারা হারিয়ে যেতে চাইছে একে অপরের মাঝে।

সুরাইয়াঃ আচ্ছা হৃদয় এখন যদি তোমার পুরাতন প্রেমিকা তোমার কাছে ফিরে আসতে চায় তবে তুমি কি করবে?
হৃদয়ঃ এমন সময় ঐ ছলোনাময়ী মেয়ের কথা বলো নাতো।
সুরাইয়াঃ আহা বলবো না শুধু যা জানতে চেয়েছি এটা বলো।
হৃদয়ঃ তোমাকে পেয়ে আমি পরিপূর্ণ। আয়েশার কথা ভুলে গেছি আমি তোমার ভালোবাসা পেয়ে। তাই তো আয়েশা ফিরে আসলেও তার কোনো জায়গা নেই আমার কাছে।
সুরাইয়াঃ নতুন কাউ কে পেলে কি আমাকেও ভুলে যাবে আয়েশার মতো?

হৃদয়ঃ পাগলীর মতো কি সব উল্টাপাল্টা বলছো? আমি আয়েশাকে আগে ছাড়িনি আয়েশা আমাকে ছাড়েছে।
সুরাইয়াঃ জানো হৃদয় আমার বড্ডো ভয় হয়। আমার প্রিয়ো জিনিস গুলা কেনো জানি খুব দ্রুত হারিয়ে যায়।
হৃদয়ঃ এ সব ভুলভাল ভাবা বাদ দিয়ে চলো আমাদের নিয়ে একটু ভাবি।
সুরাইয়াঃ হুম চলো ভাবি।
আচ্ছা এরা দু’জন এখানে ভাবুক ও দিকে জাহিদ সেলিম কে কি জানি বলছে একটু শুনে আসি চলুন।
জাহিদঃ সেলিম আমি আর পারছি না।

সেলিমঃ কেনো আবার কি হয়েছে?
জাহিদঃ গতোকাল আবার বর পক্ষের লোক আমাকে দেখতে এসেছিলো। এবার মনে হয় বিয়েটা হয়ে যাবে।
সেলিমঃ তো করে নেও মানা কে করেছে?
জাহিদঃ আমি কিন্তু তোমার সাথে মজা করছি না?
সেলিমঃ আমাকে কি দেখে মনে হচ্ছে তোমার সাথে আমি মজা করছি?
জাহিদঃ হারামি কুত্তা বিলাই আমার সাথে প্রেম করে অন্য কাউকে নিয়ে ঘড় করবি আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো তুই ভাবলি কেমন করে?
সেলিমঃ আমি এই কথা বললাম তোমাকে?

জাহিদঃ আমাকে বিয়ে করতে বলছিস তার মানে।
তুই অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করবি।
সেলিমঃ আরে বাবা আমি এখন কি করবো বলো?
জাহিদঃ হয় আমার বাসায় তুমি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে পাঠাও নয়তো আমাকে নিয়ে পালিয়ে যাও।
সেলিমঃ আমি কখনো বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারবো না।
জাহিদঃ কেনো আমার সাথে প্রেম করার আগে মনে ছিলো না?

সেলিমঃ আমি কি জানতাম তুমি এতো দ্রুত বিয়ে করতে বলবে?
জাহিদঃ ওহ তাই! প্রেম যখন করেছো তখন বিয়ে আমাকে করতেই হবে।
সেলিমঃ হুম বাসায় আগে যাই বাবার সাথে কথা বলি তারপরে।
জাহিদঃ আমি এতো কিছু বুঝিনা। যদি তুই আমাকে বিয়ে না করিস তবে আমি আত্নহত্যা করবো। আর তার আগে চিঠিতে তোর নাম লেখে রাখে যাবো।
সেলিমঃ এই না। আমি তো।


পর্ব ৫

জাহিদঃ আমি এতো কিছু বুঝিনা। যদি তুই আমাকে বিয়ে না করিস তবে আমি আত্নহত্যা করবো। আর তার আগে চিঠিতে তোর নাম লেখে রাখে যাবো।
সেলিমঃ এই না। আমি তো তোমাকেই বিয়ে করবো। তুমি ছাড়া আমি যে শূন্য।
জাহিদঃ থাক আমাকে নিয়ে আর কবিতা লিখতে হবে না। তুই বাসায় গিয়ে আগে আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা কর।
সেলিমঃ ওকে সোনা তুমি যা বলছো তাই হবে।
জাহিদঃ এইতো লক্ষী ছেলের মতো কথা।

এই ভাবে তারা দু’জনে আরো অনেক সময় গল্প করে। তারপরে যে যার যার বাসায় চলে যায়। সেলিম তার বাসায় গিয়ে মহা চিন্তার মাঝে পড়ে যায়। কি ভাবো কি বলবে? আর সে কাকে বলবে তার বিয়ের কথা? যদি মাকে বলে তো।
(কল্পনায়)
সেলিমঃ মা একটা কথা বলার ছিলো।

মাঃ কখনো কি কথা বলার জন্য এর আগে অনুমতি নিয়েছিলি?
সেলিমঃ না মা।
মাঃ তবে আজ নিচ্ছিস?
সেলিমঃ আজকের কথা একে বারে আলাদা আর নতুন।
মাঃ আচ্ছা বলতো কি কথা বলবি?
সেলিমঃ মা আমি বিয়ে করতে চাই।

মাঃ কি বললি বাবা আর একবার বলতো? (রান্না ঘড়ে যেতে যেতে)
সেলিমঃ মা আমি বিয়ে করতে চাই।
মাঃ ঐ হারামজাদা কি বললি তুই? নিজের পেটের ভাত জোটাতে পারিস না আর বিয়ে করবি? খাড়া তুই আমি আসতেছি। (ঝাড়ু হাতে নিয়ে)
সেলিম এ কথা ভাবতেই চমকে উঠে। আর বলে না না মাকে এ ভাবে বলা যাবে না। মাকে বলা আর বাসায় তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হওয়া। বাবাকে বলতে হবে, বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসে।
(কল্পনায়)

বাবাঃ কিরে তুই এমন আমার পিছনে এমন বিলায়ের মতো ঘুড় ঘুড় করছিস কেনো?
সেলিমঃ বাবা আমার একটা কথা বলার ছিলো।
বাবাঃ আচ্ছা বল কি কথা বলবি?
সেলিমঃ বাবা আমি বিয়ে করতে চাই।

বাবাঃ হুম বুঝলাম। তা দিনে কতো টাকা আয় করিস?
সেলিমঃ এক টাকাও না।
বাবাঃ তা বিয়ে করে বউকে খাওয়াবি কি?
সেলিমঃ কেনো আমি যা খাই তাই খাওয়াবো।
বাবাঃ তুই কি ভাবছিস তোর মতো একটা ছাগল পালছি আবার তোর বউকেও আমি পালবো? এ বাড়িতে এটা হবে না। যদি বিয়ে করতেই চাস তবে এ বাড়ি হতে বেড় হয়ে যেতে হবে।

না না বাবাকেও বলা যাবে না। যদি বাসা থেকে বের করে দেয় তো ভিক্ষা করা ছাড়া খাবার জুটবে না। আমার পক্ষে ভিক্ষা করাও সম্ভব না। তাই আমাকে না খায়ে মরতে হবে। আর যদি তাদের কে না বলি তবে জাহিদ আত্মহত্যা করবে। আর মরার আগে চিঠিতে লেখে যাবে আমার নাম। আমাকে বাকিটা জীবন জেলে কাটাতে হবে। আমি এতো সুন্দর জীবনটা জেলের আধারে কাটাতে চাই না। আমি বাঁচতে চাই।

এই উভয় সঙ্কট থেকে বাঁচার একটাই সমাধান আকাশ। ঐ হারামি আমাকে এই বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ, সেলিম আকাশ কে কল করে।
আকাশঃ আপনি যে ব্যক্তি কে চাচ্ছেন সে ব্যক্তি এখন একাকি থাকতে চাচ্ছে। তাই দয়া করে আগামীকাল যোগাযোগ করুন।
এই বলে আকাশ কলটা কাটে দিলো। সেলিম কিছু বুঝতে না পারে আবার কল দেয়।
সেলিমঃ কিরে কি সব উল্টাপাল্টা বলে কল কাটলি কেনো?
আকাশঃ কি হয়েছে সেটা বল।
সেলিমঃ আগে বল তোর কি হয়েছে।

আকাশঃ আমার কিছু হয়নি। তুই কি বলার জন্য ফোন দিয়েছিস সেটা বল।
সেলিমঃ দোস্ত আমি একটা বিপদে পড়ে তোর কাছে ফোন দিয়েছি।
আকাশঃ বিপদে না পড়া পর্যন্ত তোরা কেউ এই আকাশের কথা স্মরণ করিস না।
সেলিমঃ এমন করে বলিস না দোস্ত।

আকাশঃ হুম। এবার বল তোর সমস্যা কি?
সেলিমঃ দোস্ত জাহিদ বলে দিয়েছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিয়ে করতে হবে। নয় তো আত্মহত্যা করবে। আর মরার আগে চিঠি লিখে যাবে তার মৃত্যুর জন্য আমি দায়ি।
আকাশঃ খারাপ তো বলেনি ভালোই বলেছে। তো বিয়ে করে নে।
সেলিমঃ আরে বিয়ে তো করবো সমস্যা ঐটা না। সমস্যা হলো বাসায় বলতে পারছি না।
আকাশঃ বাসায় সোজা সাপটা বলে দে তুই বিয়ে করবি। আর না হলে বিয়ে করে বউ নিয়ে হাজির হো বাসায়।
সেলিমঃ কোন কথা ছাড়াই পাছায় লাথি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবে।

আকাশঃ তো কি করবি? হয় জেলের ঘানি টান নয়তো পাছায় লাথি খায়ে ফুটপাতে ঘুমা।
সেলিমঃ দোস্ত তুই আমাকে একটা বুদ্ধি দে না আমাকে।
আকাশঃ বুদ্ধি দিতে পারি এক শর্তে।
সেলিমঃ কি শর্ত বল।

আকাশঃ…
সেলিমঃ আমি রাজি। আমি আমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য এ সামান্য কাজ করতে পারবো না কেনো? আর তুই আমার বন্ধু তুই এমনিতে বললেই আমি করে দিতাম।
আকাশঃ কেমন করে দিতি আমার জানা আছে। এবার শুন তুই যে ভাবে কাজ করবি। প্রথমে তুই…..
সেলিমঃ কাজ হবে তো?
আকাশঃ কজ না হলে বুদ্ধি ফেরোত।

সেলিমঃ হুম।
এর পরে টুকিটাকি আর কিছু সময় কথা বলে ফোন রাখে দেয় তারা। এর পরে আকাশ চলে যায় সুরাইয়া বাসায় টিউশনি করতে। গিয়ে দেখে সুরাইয়া মোবাইল ফোনে কথা বলছে। কিছু না বলে পড়ার টেবিলে গিয়ে বসে আকাশ। বসে বসে আকাশ ভাবতে থাকে। নাহ সুরাইয়া কে এ ভাবে হৃদয়ের সাথে মিশতে দেওয়া যাবে না। এ ভাবে মিশতে দিলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। আর তাদের কে আলাদা করতে সমস্যা হবে। তাই তাদের মাঝে কথা বলা কমাতে হবে। আর এই কাজটা আমাকেই করতে হবে।
যা ভাবা তাই কাজ। আকাশ সুরাইয়া কে ডাক দেয়।
আকাশঃ সুরাইয়া সুরাইয়া।

সুরাইয়াঃ আসছি ভাইয়া।
আকাশঃ দ্রুত আসো।
পাঁচ মিনিট পরে সুরাইয়া আসে।
আকাশঃ আমি কখন আসছি তোমার জানা আছে?
সুরাইয়াঃ আধা ঘন্টার মতো হবে।
আকাশঃ তা তোমার আসতে এতো সময় লাগলো কেনো?

সুরাইয়াঃ আপনার বন্ধু হৃদয়ের সাথে কথা বললাম একটু।
আকাশঃ তাহলে আজ আমি তোমার বাসায় বলে যাই আমি আর আগামীকাল থেকে আসবো না। এতে তোমার কথা বলা সুবিধা হবে।
সুরাইয়াঃ না ভাইয়া এমন করবেন না। আগামী মাস থেকে আমার পরিক্ষা।
আকাশঃ পরিক্ষার কথা মনে আছে তোমার? আমি তো ভাবছিলাম প্রেমে পড়ে তুমি ভুলেই গেছো সব কিছু।
সুমাইয়াঃ … (নিশ্চুপ)

আকাশঃ আমার কাছে পড়তে হলে ভালো করে পড়তে হবে। নাম মাত্র পড়বে আর সাড়া দিন প্রেম করবে। আর পরিক্ষায় ডাব্বা মারবে তোমার বাবা মা বলবে আমি কেমন করে তোমাকে পড়ায়? তার মেয়ের দোষ না দেখে আমার দোষ দেখবে। আমি তো এটা মানতে পারবো না।
সুরাইয়াঃ সরি ভাইয়া।
আকাশঃ হুম। পড়া বের করো।

সুরাইয়াঃ পড়া বের করে। একটু পরে আকাশ অংক করতে দেয় সুরাইয়া কে। কিন্তু অংক ভুল যায় সুরাইয়ার। যার জন্য আকাশ সুরাইয়াকে অনেক বকাঝকা করে।
আকাশঃ এগুলা কি করেছো? একরা অংক তো ঠিক হয়নি। প্রেম করার সময় তো ঠিকি প্রেম করো। আর পড়ার বেলায় লাড্ডু। পড়বে কেমন করে সব সময় যদি ফোনে কথা বলো আর রিক্সায় করে ঘুড়ে বেড়াও। শুনো আমার কাছে পড়লে এ সব কিছু চলবে না বলে দিলাম। আমার সামনে যেনো কোন লুতুপুতু করা না দেখি। যদি দেখি আর রাতে আসে যদি পড়া না পাই তবে কি হবে বুঝতেই পারবে না।
আকাশের কথা শুনে সুরাইয়া কান্না করে দেয়।

আকাশঃ থাক আর কান্না করতে হবে না। আজ আমি আসি।
এই বলে আকাশ বের হয়ে চলে আসে। বাহিরে আসে ভাবতে থাকে সুরাইয়াকে কি বকা দেওয়া বেশি হয়ে গেলো? এর আগে কখনো মেয়েটাকে মন খারাপ করে থাকতে দেখিনি। আজ মেয়েটা আমার কথা শুনে কান্না করে দিলো। এ ছাড়া আমি আর কি করবো? সে তো বেশি করে মিশছে হৃদয়ের সাথে। যা আমি চাই না তাই বেশি বেশি করে করছে।
এদিকে সেলিম তার পরিবারের সকলের সাথে রাতের খাবার খাচ্ছে। আর আকাশের দেওয়া বুদ্ধির কথা ভাবছে। তা সেলিমে বাবা লক্ষ্য করে তার ছেলে খাবার না খায়ে কিছু একটা বিষয় নিয়ে ভাবছে। তাই তিনি সেলিম কে বলেন।

বাবাঃ কিরে খাবার খেতে বসে কি ভাবছিস?
সেলিমঃ কিছু না বাবা।
বাবাঃ আরে বলতো কিছু একটা তো ভাবছিস।
সেলিমঃ আসলে হয়েছে কি বাবা। আমি একটা মেয়ে কে ভালোবাসি। মেয়েটা।
বাবাঃ এই সেলিমের মা ছেলে কি বলছে শুনছো।

মাঃ আমি তো ভাবতাম আমার ছেলে কিছু পারেনা। একে বারে একটা অপদার্থ। এখন তো দেখছি ছেলে কিছু একটা পারে।
বাবাঃ তা এখন মেয়েটা কি তোকে ছাড়ে অন্য কারো কাছে যেতে চাচ্ছে?
সেলিমঃ আরে আগে আমার পুরা কথা শুনবে তো?
মাঃ বল।

সেলিমঃ মেয়ের বাসা থেকে বিয়ের চাপ দিচ্ছে মেয়েকে। একের পর এক বিয়ের সমন্ধ আসছে। আর সে আমার জন্য সব ভাঙে দিচ্ছে। আজ আমাকে বলেছে সে আর এ কাজ করতে পারবে না। যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে তাকে না করে তবে সে আত্মহত্যা করবে।
বাবাঃ কিহ! এতো বড় কথা।


পর্ব ০৬

সেলিমঃ মেয়ের বাসা থেকে বিয়ের চাপ দিচ্ছে মেয়েকে। একের পর এক বিয়ের সমন্ধ আসছে। আর সে আমার জন্য সব ভাঙে দিচ্ছে। আজ আমাকে বলেছে সে আর এ কাজ করতে পারবে না। যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে তাকে না করে তবে সে আত্মহত্যা করবে।
বাবাঃ কিহ! এতো বড় কথা? আত্মহত্যা করবে বললেই হলো নাকি।
মাঃ এতো দিন প্রেম করে এখন বিয়ে না করলে এ ছাড়া মেয়েটা কি করবে?
সেলিমঃ বাবা-মা শুনে রাখো আমি যদি সাদিয়াকে না পাই তবে।
বাবা:আত্মহত্যা করবি? যা কর আমাদের কোন আপত্তি নাই।

সেলিমঃ আমি কি এক বারো বলেছি আমি আত্মহত্যা করবো।
মাঃ তো কি করবি শুনি?
সেলিমঃ আমি একেবারে সন্যাসি হয়ে যাবো।
বাবাঃ আচ্ছা বল এখন আমাকে কি করতে হবে?
সেলিমঃ তোমরা সাদিয়ার বাসায় গিয়ে আমাদের বিয়ের কথা পাকা করে আসবে।
বাবাঃ বাসার ঠিকানা দে।

এর পরে সেলিম তার বাবা মাকে সাদিয়ার বাসার ঠিকানা দিয়ে খাবার শেষ করে তার রুমে চলে আসে। আর এ দিকে সুরাইয়া তার রুমে শুয়ে শুয়ে কান্না করছে আর বলছে। নিজে প্রেম করে না তো কেমন করে বুঝবে একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়। চুপি চুপি কথা বলার মজা কি? আর ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রিক্সায় বসে ঘুরেবেড়ানোর মধ্যে কি আনন্দ? যে দিন প্রেমে পড়বে সেই দিন বুঝতে পারবে এ সব। এমন ভাবে শাসিয়ে গেলো মনে হয় আমি তার বিয়ে করা বউ? আমি কখনো এমন বকা খাইনি যা আজ অ্যানাকোন্ডাটা দিয়ে গেলো।

পরে দিন সকালে আকাশ আর হৃদয় এক সাথে ক্যাম্পাসে আসলো। একটু পরে সুরাইয়াও আসলো। সুরাইয়া কে আসতে দেখে হৃদয় তাকে ডাক দেয়।
হৃদয়ঃ এই সুরাইয়া আমি এই খানে।
সুরিয়া, আমি এখন তোমার কাছে যেতে পারবো না।
হৃদয়ঃ কেনো?
সুরাইয়াঃ এখন আমার ক্লাস আছে।
হৃদয়ঃ আজ তোমাকে কোনো ক্লাস করতে হবে না।

সুরাইয়াঃ না। এমনিতেই অনেক ক্লাস মিস দিয়ে ফেলেছি। ক্লাস শেষে তোমার সাথে কথা বলবো আসি।
এই বলে সুরাইয়া তার ক্লাসে চলে গেলো। আর হৃদয় অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। আকাশ সুরাইয়া এমন ব্যবহার দেখে মনে মনে ভাবছে। যাক ঔষুধে তবে কাজ দিয়েছে। এরি মাঝে হৃদয় এসে আকাশ কে বলে।
হৃদয়ঃ সুরাইয়া আমার সাথে এমন করলো কেনো?
আকাশঃ আমি কেমন করে বলি?

হৃদয়ঃ গতোকাল তুই পড়াতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তো ভালোই ছিলো। তারপর কেমন জানি করছে।
আকাশঃ তো তুই এখন আমাকে কি বলতে চাচ্ছিস?
হৃদয়ঃ আমি বলতে চাচ্ছি যে তুই কি আমার ব্যপারে কিছু বলেছিস?
আকাশঃ আমি পড়াশোনার ব্যপারে সুরাইয়া বাসায় যাই। তোর ব্যপারে কথা বলতে নয়।
হৃদয়ঃ হুম তাই যেনো হয়।

এই বলে হৃদয় সুরাইয়ার কাছ থেকে চলে যায়। ক্লাস শেষে সুরাইয়া বেরিয়ে আসতেই হৃদয় তার কাছে চলে যায়। আর বলে।
হৃদয়ঃ এই বাবু চলো একটু লেকের পাড় থেকে কিছু সময় কাটে আসি।
সুরাইয়াঃ না সোন আজ আমি পারবো না।

হৃদয়ঃ কেনো কি হয়েছে বাবু তোমার?
সুরাইয়াঃ তোমার বন্ধু আকাশ এতো পড়ার চাপ দিয়েছে যে আমি কোন দিকে একটু নড়তে পারছিনা।
হৃদয়ঃ থামো আমি এখনি ওকে মজা দেখাচ্ছি। (এই বলে ফোন বের করতে যায়)
সুরাইয়াঃ এই না না না। এমনটা করো না বাবু।
হৃদয়ঃ কেনো?

সুরাইয়াঃ বাবা তাকে বলেছে যদি আমার রেজাল্ট খারাপ হয় তবে তার খবর করবে।
হৃদয়ঃ তাই বলে আমরা একটু প্রেম করতে পারবো না?
সুরাইয়াঃ কেনো পারবো না? আমার পরিক্ষা শেষ হলেই তো আবার আগের মতো সময় কাটাবো সোনা। আজ আসি।
এই বলে সুরাইয়া বাসায় চলে যায়। খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পরে। আর এদিকে টং দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে আর গল্প করছে আকাশ ও সেলিম।
সেলিমঃ দোস্ত কাজ তো মনে হয় হয়ে গেছে।

আকাশঃ কি কাজ হয়েছে রে?
সেলিমঃ ঐ গতোকাল তুই যে কাজের জন্য বুদ্ধি দিলি।
আকাশঃ ঐরে সালা তা বিয়ে কবে তোদের?
সেলিমঃ এখনো কিছু ঠিক হয়নি। তবে বাবা সব কিছু শুনে সাদিয়ার বাসর ঠিকানা নিয়েছে।
এরি মধ্যে সেলিমের মা সেলিম কে ফেন করে।
মা, কিরে বান্দর কোথায় তুই?

সেলিমঃ চিড়িয়াখানাই।
মাঃ ওখানে আবার কি করিস?
সেলিমঃ লোকজন ধরে এখানে বুন্দি করে রাখেছে।
মা, ফাজলামি বাদ দিয়ে দ্রুত বাসায় আয়।
সেলিমঃ কেনো কি হয়েছে?

মাঃ তোর বাবা বললো আজ নাকি সাদিয়ার বাসায় যাবে তোদের বিয়ের কথা বলতে
সেলিমঃ আমি এখনি আসছি।
এই বলে সেলিম ফোন কাটে দেয়। আর আকাশের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে যায়। আকাশ আর একা একা থাকে কি করবে? সেও বাসায় চলে যায়।
সুরাইয়া ঘুম থেকে ওঠে হৃদয় কে কল করার জন্য ফোন হাতে নিয়ে দেখে ২০+ মেসেজে এসে হাজির হয়েছে একটা অচেনা নাম্বার থেকে। সুরাইয়া এক এক করে সব কয়টা মেসেজ দেখে। প্রতি টা মেসেজে সুরাইয়ার রুপের গুন গান গাওয়া হয়েছে। তার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ করা হয়েছে। আর সুরাইয়া আজ মিষ্টি কালারের যে চুড়ি দাড় পড়ে গিয়েছিল তাতে নাকি অসম্ভব সুন্দরী লাগছিলো তাকে তাও বলা হয়েছে।

এতো সব কেমন করে জানলো? নিশ্চয়ই এটা তার পরিচিত কেউ তাই জানার জন্য সুরাইয়া সেই নাম্বারে কল করে কিন্তু বন্ধ পায়। এজন্য একের পর এক কল করতে থাকে। এরি মধ্যে আকাশ তাকে পড়ানোর জন্য চলে আাসে।
এ দিকে সেলিমের তার পরিবার নিয়ে সাদিয়ার বাসায় যায়। সাদিয়ার বাবা আর সেলিমের বাবা কথা বলে তাদের বিয়ে পাকা করে চলে আসে। বাসায় এসে সেলিম সাদিয়াকে ফোন করে।

সেলিমঃ কি এবার শান্তি তো তোমার?
সাদিয়া, না এবার আরো অশান্তি।
সেলিমঃ কেনো কেনো?

সাদিয়া, সেটা পরে বলবো আগে বিয়েটা হোক।
এ ভাবে আরো সময় কথা বলে তারা। আর এ দিকে আকাশ সুরাইয়া কে চাপের মধ্যে রাখে পড়াশোনার ব্যপারে। বর্তমানে সুরাইয়া রুটিন হয়ে গেছে ভার্সিটি আর বাসা। হৃদয়ের সাথে তার তেমব সময় কাটানো হয় না। খুব অল্প পরিমানের কথা হয় তাদের মধ্যে। যা দিয়ে হৃদয়ের মন ভরে না। আর এ দিকে সেই অপরিচিত নাম্বার থেকে নিয়মিত মেসেজ আসতেই আছে নিয়মিত। ঠিক রাত ১০টার পর থেকে নাম্বার টা খোলা থাকে। ফোন দিলে ফোন ধরে না। শুধু মেসেজে কথা বলে। আজও রাত ১০টার পরে একটা মেসেজ আসলো।

  • হাই, কেমন আছেন?

সুরাইয়াঃ ভালো। আপনি কে বলুনতো?

  • আর কতো বার বলবো আমি একটা মানুষ।
    সুরাইয়াঃ এর বাহিরেও একটা পরিচয় আছে, আপনার নাম কি? আর বাসা কোথায়?
  • রাত অনেক হয়েছে ঘুমান নয়তো শরীর খারাপ করবে। আমিও ঘুমাবো।
    এরপরে সুরাইয়া আর কোন মেসেজ করেনা। কারণ এখন আর মেসেজ করে কোন লাভ হবেনা। এই কথা যতো বার বলেছে ততো বার এমন করে চলে গিয়েছে আর ফোন বন্ধ করেছে।

দেখতে দেখতে সেলিমের বিয়ের দিন ঘুনিয়ে এসেছে। হৃদয় আকাশ সহ সকল বুন্ধুদের দাওয়াত করেছে। বিয়ের ২ দিন আগে সকল আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা এসে হাজির হয়েছে। শুধু সুরাইয়া আর আকাশ বাদে। আগামীকাল সুরাইয়া পরিক্ষা আছে এজন্য এরা দু’জন আসেনি। এ দিকে বিয়ে বাড়িতে অসংখ্য সুন্দরী মেয়েতে ভর্তি। হৃদয়ের মাথা আর ঠিক থাকলো না। সুরাইয়া তাকে তেমন সময় দিচ্ছে না। এমন করে তো দিন যেতে পারে না।

তাই হৃদয় মনে মনে ঠিক করে এই বিয়ে বাড়িতে একটা মেয়ে পটাতে হবে। সুরাইয়া যখন পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্তো থাকবে তখন তো আর হাত ধুয়ে বসে থাকা যাবে না। এজন্য বেকাপ হিসাবে রাখতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। হৃদয় নেমে পড়ে মাঠে।
গায়ে হলুদের প্যান্ডেল যেখানে সাজাচ্ছে ঐখানে যেতেই একটা সুন্দরী মেয়ে সামনে এসে বলে।

  • আর আপনি হৃদয় ভাইয়া না?

হৃদয়ঃ হুম। কিন্তু আপনি কে?

  • আর আপনি আমাকে আপনি করে বলছেন কেনো? তুমি করে বলেন। আর আমাকে চিনবেন না আমি সেলিম ভাইয়ের খালাতো বোন রেজিনা। ভাইয়ার মুখ থেকে আপনার অনেক গল্প শুছি।
    হৃদয়ঃ ওহ তাই বলো। আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।
    রেজিনাঃ হা হা হা তাই।

হৃদয়ঃ হুম।
রেজিনাঃ তো এখন আসি কাজ আছে একটু।
হৃদয়ঃ ওকে।
একটু গিয়ে আবার রেজিনা ফিরে এসে হৃদয়কে বলে।
রেজিনাঃ আপনি যদি কিছু না মনে করতেন তে একটা কথা বলতে পারি?
হৃদয়ঃ হ্যাঁ বলেন।
রেজিনাঃ আমি কি আপনার।


পর্ব ০৭

একটু গিয়ে আবার রেজিনা ফিরে এসে হৃদয় কে বলে।
রেজিনাঃ আপনি যদি কিছু না মনে করতেন তে একটা কথা বলতে পারি?
হৃদয়ঃ হ্যাঁ বলেন।
রেজিনাঃ আমি কি আপনার ফোন নাম্বার টা পেতে পারি?
কিছু ক্ষন চিন্তা করার ভান করে।
হৃদয়ঃ পেতে পারো তবে।?

রেজিনাঃ তবে কি?
হৃদয়ঃ অন্য কাউ কে দিতে পারবে না।
রেজিনাঃ হুম। দ্রুত দেন আমার কাজ আছে।
এর পরে হৃদয় রেজিনা কে তার মোবাইল নম্বর দিয়ে দেয়। আর রেজিনা তা নিয়ে চলে যায়। হৃদয় ভাবে আর ঘুড়ে কি হবে একটা পাখিতো তার ফাদে পা দিয়েছে। তাই আর না ঘুড়ে ছাদে গিয়ে বসে রেজিনা অপেক্ষা করতে থাকলো হৃদয়।

কিন্তু কোন কল আসলো না। সন্ধ্যার দিকে নেমে গেল ছাদ থেকে। আর এই দিকে আকাশ সুরাইয়া কে নিয়ে সেলিমের বাসায় রওনা দিলো। হৃদয় এর সাথে কথা বলার জন্য মুনতাহার মনটা ছটফট করছে। কিন্তু পাশে আকাশ থাকায় কথা বলতে পারছে না। আকাশের ভয়ের চাইতে তার ভিতরে অভিমান কাজ করছে বেশি। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত একবারের জন্য হৃদয় না কল না মেসেজ কোনটাই করেনি। তাই ফোনটা বের করে আবার রাখে দিল।

একটু পরে সুরাইয়া ফোনে একটা মেসেজ আসলো। ফোনটা বের করে দেখে সেই অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে। সুরাইয়া একবার আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে আকাশ কি করছে? তারপরে মেসেজের উত্তর দেয়।

  • কেমন আছেন?
    সুরাইয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?
  • জি আলহামদুলিল্লাহ। কি করছেন?
    সুরাইয়াঃ এটা বড় ভাইয়ের বিয়েতে যাচ্ছি। আপনি কি করছেন?
  • এই তো আপনার সাথে কথা বলছি আর আপনাকে ফলো করছি। তা সাথে কি আছে আপনারাই গন্ডার স্যার?
    সুরাইয়াঃ হ্যাঁ। তবে আপনি কেমন করে বুঝলেন?
  • ওই যে বললাম না আপনাকে ফলো করছি। যাই হোক আজকে আপনাকে কিন্তু বেশ সুন্দর লাগছে।
    সুরাইয়াঃ তাই! কেমন করে বুঝলেন? আমাকে দেখেন কিভাবে?
  • হ্যাঁ। কি পড়ে আছেন সেটা বলতে পারবো আমি।
    সুরাইয়াঃ আচ্ছা বলেন তো শুনি।
  • আপনি এখন লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পড়ে আছেন। হাতে লাল নীল কাঁচের চুঁড়ি। পাশে আকাশ বসে আছে আর মাঝে মাঝে আপনাকে দেখছে।
    সুরাইয়াঃ আপনি এতো কিছু জানেন কেমন করে? আপনি কি আমাকে দেখছেন?
  • ঐ যে বললাম আপনাকে আমি ফলো করছি।

সুরাইয়াঃ আপনি কোথায় প্লিজ দেখা দেন।

  • আশে পাশে তাকিয়ে দেখেন আমাকে দেখতে পাবেন।
    এর পরে সুরাইয়া আশেপাশে তাকিয়ে দেখে। আকাশ কে ছাড়া আর কাওকে দেখতে পায় না। সুরাইয়া সন্দেহ করে আকাশ কে। তাই আকাশের ফোনে উঁকি দেয়। কিন্তু হতাশ হয়ে যায়। দেখে আকাশ ফেসবুকিং করছে।
  • কি আমাকে কল দেওয়ার কথা ভাবছেন?
    সুরাইয়াঃ হ্যাঁ আপনি আমার মনের কথা কেমন করে জানেন?
  • যা ভাবছেন ভুলেও তা করবেন না।
    সুরাইয়াঃ কেনো?
  • আড্ডা দেওয়ার মানুষ টাকে হারাবেন।
    এই ভাবে তারা অনেক সময় কথা বলে। এক সময় তারা একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নেয়। কথা বলা শেষ হওয়ার কিছু সময় পর তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে যায়। বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়ে সেলিমের বাসার দিকে রওনা দেয়। এত পাশাপাশি এর আগে কোন মেয়ের সাথে বসেনি আকাশ।

তাই তার মনের ভিতর অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। এক সময় রিকশা সেলিমের বাড়ির সামনে এসে থামে। সুরাইয়া আগে রিকশা থেকে নেমে বাসার ভিতরে ঢুকে যায়। ভিতে ঢুকে সুরাইয়া দেখে রেজিনার সাথে হেসে হেসে গভীর মনোযোগ দিয়ে গল্প করছে হৃদয়। মনে হয় কতো দিনের পরিচয় তাদের। মনটা আসতে করে হৃদয়ের পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তাদের কথোপকথন শুনতে থাকে। এই সময় আকাশ রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে বাসের মধ্যে ঢুকে। দেখে সুরাইয়া হৃদয়ের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ সুরাইয়াকে ডাক দেই।

আকাশঃ এই এই সুরাইয়া ওখানে কি করে?
মন তাহার নাম শুনে হৃদয় চমকে ওঠে। আর পেছনে তাকিয়ে দেখে তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। তা দেখে ভয় পেয়ে যায়। আর তোতলাতে তোতলাতে জিজ্ঞাসা করে।
হৃদয়ঃ তু তু তু তুমি। এখানে? কখন আসলে?
সুরাইয়াঃ কেন অন্য কাউকে আশা করেছিল? আমি যখন আসি না কেন তোমার কি?
হৃদয়ঃ ওইদিকে গিয়ে কথা বলি?

সুরাইয়াঃ কেন এখানে বললে কি সমস্যা?
হৃদয়, এখানে অনেক মানুষ আছে প্লিজ সিনক্রিয়েট করোনা?
সুরাইয়াঃ ও তাই নাকি! অন্য মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছো আমার খবর নেওয়ার সাথে সাথ নেই আর এ দিকে অন্য মেয়ের সাথে ঠিকি সময় কাটাচ্ছো আসি।
এই বলে সুরাইয়া সেখান থেকে চলে আসে। হৃদয় বার নার সুরাইয়া কে পিছন থেকে ডাকে। কিন্তু সুরাইয়া থামে না। আর দিকে রেজিনা এদের কথা শুনে হৃদয়কে বলে।
রেজিনাঃ তা সুরাইয়া আপু কি আপনার গফ হয়?

হৃদয়ঃ আরে না আমরা খুব ভালো বন্ধু তো তাই এমন করছে।
রেজিনাঃ ও তাই বলেন আমি কি ভাবছিলাম।
হৃদয়ঃ কেন সুরাইয়া আমার যে হলে তোমার সমস্যা কি?
রেজিনাঃ আমার অনেক সমস্যা?

হৃদয়ঃ কি সমস্যা বল তো শুনি?
রেজিনাঃ সব কথা মুখে বলা যায় না কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।
এই বলে রেজিনা সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে সুরাইয়ার উপরে গিয়ে কান্না করছে। আর ঠিক সেই সময় কি অপরিচিত নাম্বার থেকে মেসেজ আসে।

  • আপনি একদিন কান্না করবেন না, কান্না করলে আপনাকে একদম পেত্নীর মত লাগে।
    সুরাইয়াঃ দেখেন এমনিতে মনটা খারাপ। আপনি প্লিজ আমাকে আর জ্বালান না।
  • যা সত্যি তাই বললাম। আর হ্যাঁ আপনার কান্না করা দেখে একজন মন খারাপ করে বসে আছে।
    সুরাইয়াঃ কে সে?
  • আপনার গন্ডার স্যার।
    সুরাইয়াঃ কেন তিনি আমার কান্না করা দেখে মন খারাপ করে থাকবে কেন?
  • কারন সে আপনাকে ভালোবাসে।
    সুরাইয়াঃ দেহেন উল্টোপাল্টা কিছু বলবেন না।
  • যা সত্যি তাই বললাম। এখন আসি আবার পরে কথা হবে।

এই বলে চলে গেল সেই অপর পাশের ব্যক্তিটি। আর এদিকে সুরাইয়া তার বলা কথা ভাবতে শুরু করল। সত্যিই কি আকাশ তাকে ভালোবাসে? যদি ভালোবাসে তবে আজ বলেনি কেন? আর যদি না ভালোবাসে তবে এমনি এমনি এত খেয়াল রাখে? হৃদয়ের সাথে ঠিকমত মিশতে দেয়না।
তবে কি অপরিচিত লোক টা যা বলল সব সত্যি? যা হয় হোক আমি তো হৃদয় কে ভালোবাসি। এ সব ভাবতে ভাবতে কারো সাথে দেখা না করে ঘুমিয়ে পড়ে সুরাইয়া। এদিকে আকাশ কে দেখে সকলে জিজ্ঞাসা করে আকাশ কোথায়? আকাশ বলে। তার শরীরটা ক্লান্ত তাই ঘুমাবে বলে উপরে চলে গেছে।

এই দিকে হৃদয় সুরাইয়ার রাগ কি করে ভাঙাবে তাই নিয়ে মহা চিন্তায় আছে। এখন যদি সুরাইয়া তার সাথে ব্রেকআপ করে তবে তার মহা ক্ষতি হয়ে যাবে। এখনো সুরাইয়ার হাত ধরা ছাড়া কিছুই করা হয়নি। আর সুরাইয়া কে সে একটু বেশি সময় দিয়ে ফেলেছে। এভাবে তো সম্পর্ক শেষ করা যায় না। তাই সে সুরাইয়া কে খুঁতে খুঁজতে উপরে চলে যায়। গিয়ে দেখে।


পর্ব ০৮ (অন্তিম)

এই দিকে হৃদয় সুরাইয়ার রাগ কি করে ভাঙাবে তাই নিয়ে মহা চিন্তায় আছে। এখন যদি সুরাইয়া তার সাথে ব্রেকআপ করে তবে তার মহা ক্ষতি হয়ে যাবে। এখনো সুরাইয়ার হাত ধরা ছাড়া কিছুই করা হয়নি। আর সুরাইয়ার কে সে একটু বেশি সময় দিয়ে ফেলেছে। এভাবে তো সম্পর্ক শেষ করা যায় না। তাই সে সুরাইয়া কে খুঁতে খুঁজতে উপরে চলে যায়। গিয়ে দেখে আকাশ সুরাইয়া পাশে বসে তার মুখের পানে এক ধেনে বসে তাকিয়ে আছে। এই দৃশ্য দেখে হৃদয়ের মাথা ঘুরে যায়। তবে কি তার বন্ধু আকাশ ও মন তাকে ভালো বাসে? বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন আসে তার মাথায়। হৃদয় রুমের ভিতরে না গিয়ে বাইরে থেকে দেখে থাকে আকাশ কি করে।

একটু পরে আকাশ সুরাইয়ার কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বাইরে বের হয়ে আসে। এমন দৃশ্য দেখে হৃদয় কি করবে ভেবে পাইনা। আকাশ বের হয়ে আসা দেখে দ্রুত সরে যেতে লাগে আর তখনই রেজিনা সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। দুজনে একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। যেন হারিয়ে যাবে চোখের মাঝে। আকাশ বের হয়ে এ অবস্থা দেখে সুযোগ হাতছাড়া করল না। তার পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে সুন্দরভাবে এ রোমান্টিক দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে রাখে। আকাশকে দেখে আলাদা হয়ে যায়। আকাশের কিছু না বলে চলে যায়।

রাত পেরিয়ে ভোর আসে তা কিচিমিচি ডাকে ঘুম ভাঙয়ে। ঘুম থেকে উঠে বাইরে বের হয় দেখে সুরাইয়া কপি হাতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা বাতাসে সুরাইয়া খোলা চুল এলোমেলো ভাবে উঠছে। মন চাইছে একটু হাত বুলিয়ে আসেন। কিন্তু এখন তা সম্ভব নয়। আর এদিকে দেশের ঘুম ভাঙ্গে ফোনের শব্দে। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল এসেছে। অধীর আগ্রহে কলটা রিসিভ করে। অপর পাশ থেকে সুমিষ্ট কণ্ঠ ভেসে আসে।

  • এই যে মিস্টার কি করেন এখন?

হৃদয়ঃ কে আপনি? আর আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?

  • গত পরশু নাম্বার দিলেন আর এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন?
    হৃদয়ঃ আরে সকাল সকাল মজা না করে বলেন তো কে আপনি?
  • আরে ভাইয়া আমি রেজিনা। আমার কণ্ঠ শুনে চিনতে পারছেন না আমাকে?
    হৃদয়ঃ ও তুমি? ঘুমিয়ে ছিলাম তো তাই চিনতে পারিনি।

রেজিনাঃ হয়েছে আর বলতে হবে না বাইরে আসেন। কত সুন্দর সকাল উপভোগ করি একসাথে।
হৃদয়ঃ এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়না। তাই যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুত হয়ে বাইরে বের হয়। বের হয়ে আকাশের সামনে পড়ে। মন তাহাকে দেখামাত্রই বলতে শুরু করে।
হৃদয়ঃ শুভ সকাল। কেমন আছো সোনা?
সুরাইয়াঃ আমি যেমনি থাকনা কেন তোমার কি? তোমার তো খোঁজ নেওয়া মানুষের অভাব নেই।
হৃদয়ঃ দেখাশোনা এমন করে বলো না আমার খুব কষ্ট হয়।

সুরাইয়া, তো কেমন করে বলব আমার বুঝি কষ্ট হয় না? জানো যখন রেজিনার সাথে তোমাকে ওইভাবে কথা বলতে দেখি আমার কত কষ্ট হয়েছে? এখানে এসে তুমি তো দিব্যি সময় পার করছো। আর আমি তোমার একটা ফোন করার আশায় একটা মেসেজের আশায় বসে আছি। তুমি ভুল করে একটা মেসেজ কিংবা কল কিছুই করনি।
হৃদয়ঃ সরি সোনা। আমার ভুল হয়ে গেছে। এমন ভুল আর কখনো হবেনা। এই যে দেখো কান ধরেছি।
সুরাইয়াঃ সরি বললেই কি সব কিছু সমাধান হয়ে যায়?

হৃদয়ঃ বললাম তো এমন ভুল আর কখনো হবে না।
সুরাইয়াঃ হয়েছে আর নাটক করতে হবে না আমার সাথে।
হৃদয়ঃ কিহ! আমি তোমার সাথে নাইট কি?
সুরাইয়াঃ থাক কিছু না বলি। তা এই সকালে এমন মানজা মারে কোথায় যাচ্ছিলে?
হৃদয়ঃ কোথায় আবার তোমার।
তখনি রেজিনা হৃদয় কে কল করে।
কিন্তু সুরাইয়ার সামনে ফোন ধরতে ভয় করছে।

সুরাইয়াঃ কি হলো ফোন ধরছো না কেনো?
হৃদয়ঃ না থাক ফোন ধরলে বাহিরে যেতে বলবে না ধরি।
সুরাইয়াঃ ফোন ধরো বলছি।
এর পরে হৃদয় বাধ্য হয়ে ফোন ধরে ভয়ে ভয়ে।

রেজিনাঃ এই আপনি কোথায়? আপনার জন্য আমি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছি।
হৃদয়ঃ হ্যাঁ দোস্ত অল্প একটু অপেক্ষা কর আমি আসছি।
রেজিনাঃ এই আপনার মাথা ঠিক আছে? কি বলছেন আপনি?
হৃদয়ঃ না না দেরি হবে না সত্যি বলছি।

রেজিনাঃ মনে হয় আপনি পাগল হয়ে গেছেন। পাবনা পাঠাতে হবে।
হৃদয়ঃ ওকে তুই থাক আমি আসছি।
এই বলে হৃদয় ফোন রাখে দেয়। আর সুরাইয়া কে মিথ্যা বলে রেজিনার সাথে দেখা করতে যায়। আর তখনি সুরাইয়ার ফোনে সেই অপরিচিত নাম্বার থেকে মেসেজ আসে।

  • কি আপনার চাইতে বন্ধু বড় হয়ে গেলো?
    সুরাইয়াঃ সেটা আপনার না জানলেও চলবে।
  • হুম তা ঠিক। খোলা চুলে কিন্তু আপনাকে বেশ সুন্দর লাগছে।
    সুরাইয়াঃ ধন্যবাদ।
    এদিকে এরা মেসেজ করতে থাকুক দেখে আসি ঐ দিকে রেজিনা আর হৃদয়ের কি খবর। হৃদয় যতো দ্রুত পারে দৌঁড়ে রেজিনা কাছে যায়। দৌঁড়ে যাওয়া দেখে রেজিনা বলে।
    রেজিনাঃ আপনাকে কি পাগলা কুত্তায় দৌঁড়ানি দিয়েছে নাকি?
    হৃদয়ঃ না।

রেজিনাঃ তবে এভাবে দৌড়ে আসলেন? কেন তার আসতে দেরি হল কেন এত?
হৃদয়ঃ এসব কথা পরে হবে আগে ওইদিকে চলো তো দেখলে সমস্যা।
রেজিনাঃ ও আবার কে। (যেতে যেতে)
হৃদয়ঃ আরে আকাশ, আমার সাথে আসতে চাইলো ওকে পিছু ছাড়াতে গিয়ে তো আমার এতো দেরি হয়ে গেলো।
রেজিনাঃ ওহ চল ওইদিকে যাই।

এই বলে রেজিনা আর হৃদয় হাঁটতে শুরু করে। এদিকে বেলকুনিতে সুরাইয়া কফির মগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে একাকী। একটু পর আকাশ সুরাইয়ার পাশে এসে দাঁড়াই।
আকাশঃ শুভ সকাল। কেমন আছো?
সুরাইয়াঃ শুভ সকাল। ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
আকাশঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। চলো একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি?
সুরাইয়াঃ না আমার ভালো লাগছে না আপনি যান ঘুরে আসেন।

কথাটা শুনে আকাশের মন খারাপ হয়ে যায়। আর কোনো কথা না বলে বেলকনি থেকে চলে আসে। আর সুরাইয়া কফি শেষ করে তার রুমে চলে যায়।
সকলা ১০ টা বাজে সকলে প্রস্তুতি নিচ্ছে বউকে হলুদ দিতে যাবে বল। কিন্তু রেজিনা কে কথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর পাওয়া যাবেই বা কি করে? রেজিনা আর হৃদয় সেই সকালে বের হয়েছে এখনো আসেনি। ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোনেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সকলে বেশ চিন্তায় পড়ে যাই। তার জন্য বেশ কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করে, কিন্তু না ফেরায় তাকে ছাড়াই সাদিয়া গায়ে হলুদ দিতে চলে যায়।

বাসার সকলে প্রায় চলে গেছে তাই বাসা প্রায় ফাঁকা। সকালে আকাশের মুখ থেকে না কথাটা শুনে আকাশের মনটা খারাপ। তাই বাহিরে বের হয় একটু ধুমপান করার জন্য। আকাশ নিয়মিত ধুমপান করেনা। যখন বেশ চিন্তায় বা মন খারাপ থাকে তখন। কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে এক মনে হাটছিলো সে। হঠাৎ করে রাস্তার পাশে একটা লেকের পাড়ে তার নজর যায়। দেখে। রেজিনা আর হৃদয় একে অপর কে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। আকাশ অতি দ্রুত তার ফোন বের করে ভিডিও শুরু করে।

বেলা প্রায় ২টা সকলে সাদিয়ার বাসা থেকে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ করে চলে এসেছে। হৃদয় আর রেজিনা ও ফিরে এসেছে। রেজিনা কে যখন বলা হয় সকাল থেকে সে কোথায় ছিলো? তখন মিথ্যা কথা বলে সকলকে সামলিয়ে নেয় রেজিনা।
সুরাইয়াঃ সুরাইয়া কে একটা মেসেজ করে। এই সোনা আজ সন্ধ্যায় ছাদে টাংকির পাশে দেখা করবে। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
সুরাইয়া আর কি করবে সেতো হৃদয় কে ভালোবাসে তাই সে হৃদয়ের কথায় রাজি হয়ে যায়।

অপরিচিত নাম্বারটার কথা হঠাৎ করে মনে হয়। তাই সুরাইয়া কল করে, কল করা মাত্র কল ঢোকে। এর আগে অনেক বার কল করেছে কিন্তু একবারো কল ঢোকেনি।
কি আশ্চর্য! কল ঢোকা মাত্র ধরে, আর অপর পাশ থেকে আওয়াজ ভেসে আসে।

  • কি অবাক হচ্ছেন তাই তো।
    সুরাইয়াঃ হুম। তা আজ কি মনে করে আমর কল ধরলেন?
  • আজ আপনার অবাক হওয়ার দিন। আর এজন্য কল ধরে আপনাকে অবাক করে দিলাম।
    সুরাইয়াঃ তাই নাকি?
  • হুম।

সুরাইয়াঃ তা অবশ্য সকাল থেকে অবাক হচ্ছি। হৃদয় ফোন করে আমাকে দেখা করতে বলছে। কি অবাক করা বিষয়।
সুরাইয়াঃ আপনিতো আমার বিষয়ে প্রায় সব কিছু জানেন। তয় বলেন তো আজ কি আরো অবাক হবো আমি?

  • হুম। আজ আজ এতোটাই অবাক হবেন যা জীবনে এর আগে হননি।
    সুরাইয়াঃ তা কি বিষয়ে আমি এতোটা অবাক হবো?
  • সময় আসুক দেখতে পারবেন।
    এই ভাবে তারা অনেক সময় ধরে ফোনে কথা বলে। আর এদিকে হৃদয় তার নতুন গফ রেজিনা কে নিয়ে ব্যস্ত।
    আজ রাত পার হলেই কাল বিয়ে। চারি দিকে আধার নেমে আসছে। গোটা বাসা মানুষে পরিপূর্ণ। কে কোথায় তার খোঁজ রাখার সময় কারো হাতে নাই। সকলের মাথায় এক গাদা কাজের ভাড়। হৃদয় আগে ভাগই ছাদে ওঠে টাংকির পেছনে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ করে সেখানে আকাশ চলে আসে।

হৃদয়ঃ কিরে তুই এখানে এই অসময়ে?
সুরাইয়াঃ তুই আগে বল, এখানে কি করছিস?
হৃদয়ঃ এই তো দাড়িয়ে আকাশ দেখিছি।

আকাশঃ ওহ! তা তোর সাথে কি কিছু সময় হবে কথা বলার?
হৃদয়ঃ কি বলবি বল।
আকাশঃ তুই সুরাইয়াকে লাভ করিস!
হৃদয়ঃ সবকিছু জেনেও একথা জিজ্ঞাসা করছিস। (সুরাইয়া আড়ালে দাঁড়িয়ে সবকিছু শুনছিল)
সুরাইয়াঃ শোনামাত্র, হৃদয়কে দৌড়ে এসে জাপটে ধরে।
হৃদয় নিজের শরীরে সুরাইয়ার অনুভূতি অনুভব করল। মুখটা ফিরিয়ে সেও জাপটে ধরলো সুরাইয়াকে। আর এভাবেই শুরু হলো নতুন একটি অধ্যায়।

লেখা – মাহিয়া বিনতে সুরাইয়া

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “লাভ ছিনতাই – প্রেমিকা তুমি কার । ছলনাময়ী ভালোবাসা” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – ম্যামের বোনের সাথে প্রেম – দুষ্টু প্রেমের মিষ্টি গল্প

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *