বেস্ট থ্রিলার গল্প

দ্য এডিকটেড লাভার – সিজন ২ । বেস্ট থ্রিলার গল্প

দ্য এডিকটেড লাভার – বেস্ট থ্রিলার গল্প: এই মেয়ে তোমার সাহস তহ কম না। আমাকে এত কিছু বলতাসো। কি বললা আমি দিপজলের মত। কদু চোর। তুমি আমায় চিন। শত শত কোম্পানির মালিক আমি। আমার আন্ডারে হাজার হাজার মানুষ কাজ করে। কি, মাথা ঘুরছে তো? পড়ুন শেষের দিকে আরো কাহিনী আছে।

পর্ব ৯

অর্ণব যা দেখলো নীলাকে কেউ জরিয়ে ধরে আছে। আর নীলা ওকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ছেলেটা প্রায় নীলাকে অনেক বাজে ভাবেই টাচ করতাসে।

এ সব দেখে অর্ণব এর মাথা গরম হয়ে যায়। তার চোখ দুটো ভীষণ লাল হয়ে আছে। আর তার চাহনিতে হ্রিংস্রতা ফুটে উঠেছে। অর্ণব সামনে এগুতেই যাবে তখন দেখে নীলা তার পা দিয়ে সেই ছেলের পায়ে পারা দিল। যেহেতু নীলা পেন্সিল হিল পরেছিল তাই ছেলেটা পায়ে বেশ ভালোই ব্যথা পেয়েছে। নীলা ওই ছেলের পায়ে পারা দেওয়ার পর ওর পা টেনে ধরে ফালিয়ে দেয়। তারপর পাশে থাকা বাশের টুকরা দিয়ে ইচ্ছা মত পিটাতে থাকে। আর বলে

নীলাঃ হাতির বাচ্চার ঘরের নাতির ঘরে বউয়ের একমাত্র পোলা। তোরে একশ বার ওয়ারনিং দিসি আমার কাছে আসবি না। এতদিন কিছু বলি নাই দেইখা মাথায় উঠা গেসোস তাই না। আজকে তুই তোর সব সীমানা পারাইয়া গেসোস। আজ তোর এমন অবস্থা করবো যে তুই আর কোনদিন কোন মেয়ের দিকে বাঝে নজরে তাকাবি না।
এই বলে ধুম ধারুম পিটাতে থাকে।

আর অর্ণব মুগ্ধ হয়ে নীলাকে দেখতে থাকে। অর্ণব কখনো কোন মেয়েকে এইভাবে প্রতিবাদ করতে দেখি নি। নীলা এর মধ্যে এক আলাদা যাদু আছে যা অর্ণবকে তার প্রতি আর্কষীত করছে। নীলা ওই ছেলেকে পিটিয়ে চলে যেতে নেয়। তখন অর্ণব লুকিয়ে পরে। আর নীলা তহ রাগে ফুসতে ফুসতে চলে যায়। অর্ণব কাকে যেন ফোন করলো। এর কিছুক্ষন পরেই ২ জন কালো পোশাক পরা লোক আসলো। অর্ণব তাদের কি জানি বললো। তারপর তারা সেই ছেলেটির কাছে গিয়ে দেখে সে উঠার চেষ্টা করছে। তারা ওই ছেলেকে উঠে নিজের সাথে কোথায় জানি নিয়ে যায়। আর অর্ণব চলে যায় স্টেজে।

সবাই ভাবছেন তহ কি হয়েছিল। আর ছেলেটিই বা কে। তাহলে যেতে হবে কিছু সময় আগে।

কিছুক্ষণ আগে

নীলা স্টেজ থেকে নামতেই বকুল ( মানে ওই ছেলেটি) এসে সামনে দাড়ায়। আর কি না বলে নীলাকে টান দিয়ে সাথে নিয়ে যায়। ঘটনা এত দ্রুত হওয়ায় নীলা বুঝে উঠতে পারে নি। বকুল নীলাদের সাথেই পড়ে এন্ড নীলাকে ভালবাসে। কিন্তু নীলা কখন ওকে পাত্তা দেয় নি। তাই আজ ওই ঠিক করেছে নীলাকে প্রাপোস করবে। হয়ত ওর সাথে রিলেশনে যাওয়ার জন্য রাজি হবে নাইলে আজ তাকে একদিন এর জন্য বেডপার্টনার হতে হবে। আর যেভাবে সেই কাজ। নীলাকে কলেজের পিছে এনে তাকে প্রাপোস করে। কিন্তু ও মানা করে দেয়। আর বকুলকে থাপ্পড় মাড়ে। ব্যাস বকুলের মাথা গরম হয়ে যায় আর সে নীলা এর সাথে জোরাজোরি করে।

বাকি তহ আপনারা জানেন এই।

অর্ণব এসে নিজের সিটে বসে। তখন তিহান অর্ণবকে জিজ্ঞেস করে কই গেসিল ওই। অর্ণব বলে একটা কল আসছিল। তিহানও আর কিছু জিজ্ঞেস করে নি। ফাংশন শেষে ট্রাস্টিদের সাথে প্রিন্সিপালের মিটিং ছিল। তাই সবাই কনফারেন্স রুমে চলে যায়। এইদিকে নীলা অর্ণবকে খুজতেছে তাকে সরি বলার জন্য। কিন্তু অর্ণবকে কোথাও খুজে পেল না। নীলা ভাবলো অর্ণব হয়তো চলে গেছে তাই ও মন খারাপ করে নিজের কাজে লেগে গেল।

প্রায় ৩ ঘন্টার পর তাদের মিটিং শেষ হলো। অর্ণব মিটিং থেকে বের কাকে যেন ফোন করে। আর কথা বলতে বলতে কিনারে চলে যায়। পুরো কলেজ এখন একদম অর্ণবব। কোথাও কোন সারা শব্দ নেই। থাকবেই বা কিভাবে। সব স্টুডেন্টরা চলে গেছে। আর ট্রাস্টিরাও একে একে চলে যাচ্ছে। অর্ণব তিহানকে আগেই চলে যেতে বলেছিল। তাই তিহান চলে যায়। অর্ণব কথা শেষ করে গেটের দিকে যাচ্ছে। গাড়ির সামনে এসে যেই না উঠতে যাবে তখন দেখে একটা মেয়ে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে।

অর্ণব ভালো করে তাকিয়ে দেখে নীলা। নীলাকে এই সময়ে দেখে খানিকটা অবাকই হয় অর্ণব। নীলাও অর্ণবকে দেখে কিছু ভয় পায়। কিন্তু পরে নিজেকে সামলিয়ে ওর কাছে যায়। তা দেখে অর্ণব নিজের চেহেরায় গম্ভীর ভাব নিয়ে বলে,

অর্ণবঃ কি চাই?

নীলা এইবার সামনে এসে বলে,

নীলাঃ আসলে ভাইয়া ফাংশনের সব দ্বায়িত্ব আমার উপর ছিল। আর তাই ফাংশন শেষে সব গুছাতে গুছাতে টাইম লেগে যায়। আর দেরি হয়ে যায়। আমার সাথে যারা ছিল তারাও চলে গেছে ছেড়ে। আমি এখন হয়ে গেসি। কোথায় কোন রিকশা বা অটো ও নেই যে চলে যেতে পারবো।

অর্ণবঃ তহ তাতে আমি কি করবো।

নীলাঃ যদি আমাকে হস্টেলে ড্রব করে দিতেন। প্লিজ মানা কইরেন না। প্লিজ প্লিজ। আমি একা একটা মেয়ে এইভাবে এত রাতে রাস্তায় কিভাবে থাকব। তার উপর ওই পাশে কয়েক বখাটে ছেলেও আছে। প্লিজ ভাইয়া আমায় নামিয়ে দিন না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ। একদম কাদো কাদো ভাব নিয়ে বেবি ফেস করে।

ভাইয়া ওয়ার্ড শুনে অর্ণব এর যতটা না রাগ হয়েছিল ততটাই মায়া হচ্ছে এই ফেস দেখে। এই মুখখানির দিকে তাকিয়ে অর্ণব এর মানা করার সাধ্য নেই। তার উপর এত রাতে ওকে একাও ছাড়া সম্ভব না। তাই মুখ গম্ভীর করে বললো

অর্ণবঃ যাও গাড়িতে উঠো।

নীলা খুশি হয়ে বলে,

নীলাঃ থ্যাংক ইউ ভাইয়া। থ্যাংক ইউ সো সো মাচ।

এই বলে নীলা গিয়ে ড্রাইভিং সিটের পাশে সিটে গিয়ে বসে পরে। অর্ণব গিয়ে বলে,

অর্ণবঃ তোমাকে কি আমি ড্রাইভার এর সাথে লাইন মারার জন্য গাড়িতে উঠাইসি নি। যদি এতই লাইন মারার ইচ্ছা থাকে তাহলে ওই ছেলেদের উপর গিয়ে মারাও। আমার ড্রাইভার এর উপর না। যাও পিছে গিয়ে বসো। ধমকে সুরে।

নীলা গাল ফুলিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পিছে বসতে গেল। আর বিরবির করে বলতে থাকলো।

নীলাঃ বেটা আম গাছের লেঙ্গুর। দেখতে তহ সাকিব খানের মত। কিন্তু কথা দিপজলের মত। হুহ। আমি নাকি ড্রাইভার এর উপর লাইন মারবো। আমি। আমার চয়েস এতও খারাপ না। হুহ।

অর্ণবঃ এত কি বিরবির করতাসো। যা বলার সোজা সোজি বল।

নীলাঃ আমি আবার কি বললাম। কানে বেশি শুনেন নাকি।

অর্ণবঃ আমার কান ঠিক আসে। নিজের ঠোঁট ঠিক করো আগে। খালি নড়ে। যে কেউ দেখলো বুঝবে তুমি বিরবির করতাসো।

নীলাঃ হুহ

তারপর নীলা কিছু বললো না। গাড়ি ছেড়ে দিল। কিছুক্ষন যাওয়ার পর।

নীলাঃ এইযে শুনুন। ওইদিনের জন্য সরি। আসলে।

অর্ণবঃ আসলে কি। তুমি কি মনে করেছ আমি সব ভুলে গেসি। একদম না। অর্ণব কাউকে একবার দেখলে ভুলে না। আমি দেখতে চাচ্ছিলাম তুমি কি করো।
আর হ্যাঁ জানি এখন কি বলবা। আমার মত হ্যান্ডসাম ছেলে দেখে নিজেকে কান্ট্রোল করে পারো নি তাই তহ। জানা আছে। আর বলতে হবে না।

নীলা এইবার রেগে গিয়ে অর্ণব এর পাঞ্জাবির কোলার ধরে টান নিজের কাছে এনে বলে,

নীলাঃ এএএহহহ আসছে। আপনার মধ্যে এমন আসে যে আমি নিজেকে কান্ট্রোল করতে পারবো না। দেখতে তহ দিপজলের মত। না না। দিপজল আপনার থেকে সুন্দর। আপনি তহ কদু চোর। আর হ্যাঁ ওই দিন ফ্রেন্ড আমাকে ডেয়ার দিসিল যে রেস্টুরেন্টে সর্ব প্রথম যে ঢুকবে তাকে প্রাপোস করতে হবে। এন্ড গালে কিস করতে হবে। তাই করসি। নাইলে আপনার মত মানুষকে কে বাই প্রাপোস করবো। আর কেই বা কিস করবো।

অর্ণব এইবারে রেগে গিয়ে নীলা এর হাত দুটো চেপে ধরে আর দাত চেপে বলে,

অর্ণবঃ এই মেয়ে তোমার সাহস তহ কম না। আমাকে এত কিছু বলতাসো। কি বললা আমি দিপজলের মত। কদু চোর। তুমি আমায় চিন। শত শত কোম্পানির মালিক আমি। আমার আন্ডারে হাজার হাজার মানুষ কাজ করে।

আর তোমারে আমার কোন দিক দিয়া দিপজলের মত লাগে। আমি সারুক খানের থেকে কম না। আমার পিছে কত মেয়ে পাগল তুমি জানো। শত শত মেয়ের ক্রাশ আমি। আমাকে পাওয়ার জন্য সবাই মরিয়া হয়ে পড়ে।

জাস্ট এক ইশারায় মেয়েদের লাইন লেগে যাবে।

নীলাঃ আমি তহ আর পাগল নই যে একটা কদু চোরের পিছে লাইন লেগে দাড়াব।

অর্ণবঃ আরেক বার যদি কদু চোর বলসো না। আমি যে কি করবো নিজেও জানি না।

নীলাঃ কদু চোর, কদু চোর, কদু চোর, কদু চোর, কদু চোর। উমমমম…

অর্ণব আচমকায় নীলা এর ঠোঁট আকড়ে ধরে। নীলা তহ শত বড় ঝাটকা খেল। চোখ তহ একদম রসগোল্লার মত বড় বড় করে রাখসে। নীলা বুঝার পর ওর সাথে কি হচ্ছে তখন সে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছুটা ছুটি করতে থাকে। অর্ণব এইবার এক হাত নীলা এর কোমরে নিয়ে তাকে নিজের সাথে চেপে ধরে। নীলা তহ ছুটার জন্য অস্থির হয়ে গেছে। নীলা আর না পেরে এইবার কেদে দেয়। প্রায় কিছুক্ষন পর অর্ণব স্বরে আসে। নীলা কাদতে কাদতে বলে,

নীলাঃ ইউ। আপনার সাহস কিভাবে হলো আমাকে কিস করার।

অর্ণব একদম রিলেক্স হয়ে বললো,

অর্ণবঃ তোমায় আগেই বলেছিলাম চুপ করতে কিন্তু তুমি করো নি। তাই বাধ্য হয়ে আমি এমন করসি। আর এমনেও তুমি আমায় একবার কিস করছো আমিও করছি। হিসাব বরাবর। বাট মেয়েদের ঠোঁট খেতে এত মিষ্টি হয় আগে জানতাম না তহ। আমার এখন আবার এই মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করতাসে।

নীলাঃ ইউউউউউউ।

অর্ণবঃ হুসসসস। নো মোর ওয়ার্ডস। আমি যে কি করতে পারি তা এতক্ষণে বুঝেই গিয়েছ। তাই এখন যদি আরেকটা শব্দ বের হয় তোমার মুখ দিয়ে আমি যে করবো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

নীলা এইবার চুপ হয়ে যায়। আর গাড়ির একদম কিনারে গেষে বসে। তা দেখে অর্ণব নীলাকে টান দিয়ে নিজের সাথে মিলিয়ে নেয়। নীলা নিজেকে ছাড়াতে চাইলে অর্ণব ধমক দিয়ে বলে,

অর্ণবঃ যদি আরেকটু নড়া চড়া করসো তোমাকে যে আমি কি করবো তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

নীলা আর কিছু না বলে চুপ হয়ে বসে থাকে। এই পোলার ভরসা নাই। কি না করে। তাই নীলা চুপ হয়ে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা নীলা এর হস্টেলে এসে পৌছায়। গেট খুলে দিতেই নীলা এক দৌড়ে হস্টেলের ভিতরে চলে যায়। তা দেখে অর্ণব একটু হাসে। তারপর ড্রাইভারকে বলে গাড়ি গোডাউনের দিকে নিয়ে যেতে। ড্রাইভারও আর কিছু না বলে গাড়ি ওই দিকে ঘুরিয়ে নেয়।


পর্ব ১০

কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা নীলা এর হস্টেলে এসে পৌছায়। গেট খুলে দিতেই নীলা এক দৌড়ে হস্টেলের ভিতরে চলে যায়। তা দেখে অর্ণব একটু হাসে। তারপর ড্রাইভারকে বলে গাড়ি গোডাউনের দিকে নিয়ে যেতে। ড্রাইভারও আর কিছু না বলে গাড়ি ওই দিকে ঘুরিয়ে নেয়।

গাড়ি এসে গোডাউনের সামনে থামে। অর্ণব ফুল এটিটিউড নিয়ে ভিতরে ঢুকে। ভিতরে ঢুকে দেখে চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর একজনকে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে। সেই ব্যক্তিটি ছুটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। অর্ণব হাতে একটা লোহার রড নিয়ে সেই ব্যক্তিটিকে মারতে শুরু করে। আর বলতে থাকে।

অর্ণবঃ তোর সাহস কিভাবে হলো আমার জিনিসের উপর নজর দেওয়ার। ওর দিকে হাত বাড়ানোর সাহস হয় কিভাবে তোর। তোকে তহ আমি জেন্ত কবর দিব।

ব্যক্তিটিঃ আপনি কার কথা বলছেন।

অর্ণবঃ নীলা। নীলা এর কথা বলছি। তোর সাহস কিভাবে ওর দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকানোর। আজ তোকে আমি শেষ করে দিব।

এখন নিশ্চয়ই বুঝেছেন ব্যক্তিটি কে। এ হচ্ছে বকুল। যাকে অর্ণব তার বডিগার্ড দিয়ে উঠিয়ে এনেছিল।

বকুলঃ আমায় মাফ করে দিন। আমি আর কখনো ওর দিকে চোখ তুলেও তাকাবো না। প্লিজ মাফ করে দিন।

অর্ণবঃ তোর ভুলের কোন মাফ নেই। এই বলে ওকে ইচ্ছা মত পিটাতে থাকে।

ওর হাত একবারে মোচড়ে ভেংগে ফেলে। মেড়ে একদম রক্তাক্ত করে ফেলে।

অর্ণবঃ এইবারের জন্য ছাড়ছি তোকে। যদি আরেকবার নীলা এর আশে পাশে ও দেখি সেই দিনই হবে তোর জীবনের শেষ দিন।

অর্ণব ওর বডিগার্ডদের ইশারা করতেই তারা বকুলকে নিয়ে চলে যায়। আর অর্ণব চলে যায় নিজের বাসায়।

এইদিকে…

নীলা রাগে ফুসছে আর আয়নাতে নিজেকে দেখছে।

নীলাঃ দিপজলের ছোট ভাই। হাতির পোলা। সাহস কিভাবে হয়। আমাকে। আমাকে কিস করার। আবার আমারেই ভয় দেখায়। আল্লাহ এর কাছে দোয়া করি এই পোলার লগে যাতে আর জীবনে কোন দিন দেখা না হয়। নাইলে আমি যে কি করুম নিজেও জানি না।

অন্যদিকে…

অর্ণব নিজের ব্যালকনিতে দাড়িয়ে আছে। আর এক হাতে সিগারেট জ্বালিয়ে এক মনে আকাশের পানে তাকিয়ে আছে। আর নিজের খেয়ালে বিভর হয়ে আছে। গাড়ির মধ্যে হয়ে যাওয়া ঘটনা মনে পড়তেই অর্ণব এক গাল হেসে দেয়। কিন্তু পরক্ষনেই তা নিমিশে গায়েব হয়ে যায়।

অর্ণবঃ কি হচ্ছে আমার সাথে এইসব। যে অর্ণব রহমান মেয়েদের দিকে চোখ তুলেও তাকায় না। কোন মেয়েকে পাত্তা দেয় না সে আজ একটা মেয়েকে জোর করে কিস করে বসলো। তাও আবার এমন একটা পাগলাটে মেয়েকে। কেন করলাম আমি এমন। আমি তহ এমন না। কিন্তু ওকে দেখার পর থেকে মনের মধ্যে এক অজানা অনুভূতি লুকোচুরি খেলছে। এক আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে। জানি না একে কি বলে, কিন্তু তখন নীলা এর নড়তে থাকা ঠোঁট আর তার ডান গালের সেই তিল আমায় তার দিকে বার বার আর্কষীত করছি। না চাওয়া সত্তেও আমি ওকে নিজের কাছে টেনে নেই। আমি তখন আমার মধ্যে ছিলাম না। আচ্ছা আমি তাহলে ওর মায়াতে পরে গিয়েছি। ওর মায়া নিজেকে উম্মক্ত হতে চাচ্ছি। নিজেকে ওর মাঝে বিলিয়ে দিতে চাচ্ছি। নিজের মনের অজানতে কি আমি ওকে নিজের মনে জায়গা দিয়ে দিয়েছি।

এই রকম আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতেই অর্ণব সেই রাতটি নির্ঘুম পার করে। ।

এইভাবে চলে যায় ৩-৪ দিন।

এর মধ্যে অর্ণব নীলা এর সব ইনফরমেশন বের করে ফেলেছে। নীলা এর বাড়ি কুমিল্লা। সেখানে সে তার বাবা এর সাথে থাকে। মা মারা গিয়েছে ১ বছর আগে। নীলা এর ছোট বেলার ইচ্ছা সে ঢাকায় এসে পড়ালেখা করবে তাই সেই শুবাদে ঢাকায় আসা। এইখানে সে একটা হস্টেলে থাকে।

এই কয়েকদিনের মধ্যে অর্ণব এর সাথে অনিচ্ছাকৃত ভাবে নীলা এর অনেক বার দেখা হয়ে যায়। অর্ণব সেইদিনের জন্য সরি বলতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রতি বারই নীলা অর্ণবকে ইগনোর করে চলে। তার পাশ কাটিয়ে চলে যায়। নীলা চায় না যে ওর অর্ণব এর আর কোন ঝামেলা হোক।

আর এইদিকে অর্ণব এর এইসব একদম সহ্য হচ্ছে না। ইচ্ছে করছে নীলাকে তুলে আছাড় দিয়ে মারে। ওর এত রাগ কেন হচ্ছে ও নিজেও জানে না। শুধু এতটুকু জানে নীলা এর ইগনো গুলো ও সহ্য করতে পারছে না। তার কথা এতটুকু মেয়ে নাকি তাকে এটিটিউড দেখাবে, তাকে ইগনোর করার সাহস পায় কই ওই মেয়ে। কিন্তু তাও অর্ণব কিছু বলছিল না। চুপ এই ছিল।

কিন্তু একদিন অর্ণব এর সহ্যের সব বাধ ভেংগে যায়।

সেইদিন…

অর্ণব একটা কাজে কলেজে এসেছিল। কাজ শেষে তার চোখ বার বার নীলাকে খুজছিল। কেন খুজচ্ছে তা সে জানে না। শুধু জানে তাকে একবার নীলাকে দুই নয়ন ভরে দেখতে হবে। তখনই হঠাৎ তার চোখে পড়ে গেটের কিছুটা আগে নীলা এর মত কাউকে দেখা যাচ্ছে। তাই অর্ণব সিউর হওয়ার জন্য সেই দিকে যায়। সামনে গিয়ে যা দেখে তাতে অর্ণব এর পা সেখানেই স্থীর হয়ে যায়। ওর চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। চোখ একদম লাল হয়ে যায়। হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ হয়ে যায়।

অর্ণব দেখে নীলা একটা ছেলের সাথে অনেক ক্লোসলি দাড়িয়ে কথা বলছে আর হাসছে। হাসতে হাসতে সেই ছেলের গায়ে পরে যাচ্ছে। একসময় সেই ছেলেটি নীলাকে সাইডলি হাগ করে চলে যায়। নীলা পিছে ঘুরতেই অর্ণবকে এই অবস্থায় দেখে চমকে যায়। কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামলিয়ে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে অর্ণব ক্ষপ করে নীলা এর হাত ধরে ফেলে। তাতে নীলা কিছু হচকিয়ে যায়। তারপর নিজেকে সামলিয়ে রাগি গলায় বলে,

নীলাঃ ওই দিপজলের ছোট ভাই কদু চোর। এইটা কোন ধরনের অসভ্যতা। হাত ছাড়ুন আমার।

অর্ণব কিছু না বলে নীলাকে টানতে টানতে নিজের গাড়ির সামনে নিয়ে যায়। তারপর গাড়ির দরজা খুলে নীলাকে ধাক্কা মেরে ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। আর নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে হাই স্প্রীডে গাড়ি চালাতে থাকে। নীলা বার বার চেচিয়ে বলছে কই নিয়ে যাচ্ছে আমায়। গাড়ি থামান। কিন্তু এইসব কথা অর্ণব এর কান অব্ধি এইসব পৌঁছাচ্ছে কিনা সন্দেহ। প্রায় কিছুক্ষন পরই একটা দোতলায় ডুপলেক্স বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামে। অর্ণব গাড়ি থেকে মেনে আবার টানতে টানতে নীলাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। আর তাকে নিয়ে সোজা উপরের একটা রুমে নিয়ে গিয়ে এক ধাক্কায় বেডে ফেলে দেয়। আর দরজা লোক করে দেয়।

আর এই দিকে বাড়ির সার্ভেন্টরা তহ অবাক। যে অর্ণব এই প্রথম বাসায় কোন মেয়েকে নিয়ে এসেছে। তারউপর এইভাবে টানতে টানতে। এর মধ্যেই একটা সার্ভেন্ট কাকে যেন ফোন করে এই নিউসটি দেয়।

সার্ভেন্টঃ এখন আমি কি করব?

অন্যপাশ থেকে কি বললো শুনা গেল না।

সার্ভেন্টঃ ওকে, আপনি চিন্তা করবেন না। এই বিষয়ে কেউ কিছু জানবে না।

এই বলে রেখে দিল।

নীলা সোজা হয়ে দাড়িয়ে চিল্লিয়ে বলে,

নীলাঃ ওই ব্যাটা কদু চোর। এইটা কি ধরনের অসভ্যতা। আমাকে এইভাবে আনার মানে কি। আর আপনি গেট লাগালেন কেন। দরজা খুলুন বলছি। আমি বাসায় যাব।

অর্ণবঃ ছেলেটা কে ছিল। নীলা এর দিকে এগুতে এগুতে।

নীলাঃ কোন ছেলে। কিসের ছেলে। কোথাকার ছেলে। কোথায় ছেলে। কি ছেলে। কেমন ছেলে।

অর্ণবঃ যার সাথে তুমি কেলেজের গেটের সামনে এত হেলে ধুলে কথা বলছিলে। দাতে দাত চেপে।

নীলাঃ ওও তাহলে সে আরিফ এর কথা বলতাসে। কিন্তু সে আরিফ এর কথা জিজ্ঞেস করতাসে কেন। মনে মনে।

অর্ণব নীলাকে চুপ থাকতে দেখে চিল্লিয়ে বলে,

অর্ণবঃ কি হলো বলছো না কেন। কে ছিল ওই ছেলে।

নীলাঃ যেই ছিল তাতে আপনার কি।

অর্ণবঃ আমার সব। বলো কে ছিল।

নীলাঃ আমার বিএফ হইসে। এইবার সরেন আমায় যেতে দেন। (আরিফ নীলা এর বিএফ না, বরং ওর আপন খালাতো ভাই। আজ সে বিদেশ চলে যাবে বলে নীলা এর সাথে দেখা করতে এসেছিল। কেন না নীলা তার এক মাত্র আদরের বোন। ঢাকায় আসার পর নীলাকে ওদের বাসায় থাকতে বললেও সে থাকে নি। কিন্তু মাঝে মাঝে তাদের বাসায় যায়। আর নীলা এর কিছু প্রেক্টিক্যাল এক্সাম আছে যার জন্য সে আরিফ এর সাথে দেখা করতে পারবে না। তাই সে নিজেই আসে)

এই বলে নীলা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে অর্ণব ওর হাত ধরে তাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে বলে,

অর্ণবঃ কিসের বিএফ। এক থাপ্পড় দিয়ে এইসব ভূত টুত নামিয়ে দিব। এক কথা মাথায় ঢুকিয়ে নে। তোর কোন বিএফ টিএফ থাকতে পারবে না। তুই শুধু আমার বুঝলি।

নীলাঃ আজিব তহ আপনি আমার কে হন যে আমার আপনার কথা শুনতে হবে। আর আমার যা ইচ্ছা আমি তা করবো। পারলে একশটা বিএফ নিয়ে ঘুরব তাতে আপনার কি। কে হন আপনি আমার।

অর্ণব নীলাকে আরো জোরে চেপে ধরে বলে,

অর্ণবঃ আমি তোর সব বুঝলি। তুই শুধু আমার। আর আমি বাদে তুই অন্য কাউরো হতে পারস না। তোর উপর শুধু আমার অধিকার।

নীলাঃ কিসের এত অধিকার দেখাচ্ছেন আমার উপর। কি হই আমি আপনার। আপনার সাথে সম্পর্ক কি। কিছুই না। আমি আপনার কেউ না বুঝলেন।

অর্ণবের এত খুনে হুস আসে সে কি করতাছিল। সে নীলা এর শেষ কথা শুনে ওকে ছেড়ে দেয়। একটু দূরে গিয়ে ভাবতে থাকে। সে নিজেও তহ জানে কেন সে নীলা এর সাথে এমন করছে। ঠিকই তহ কি বাই হয় ওই ওর। কি বাই সম্পর্ক ওর সাথে। কিসের এত অধিকার খাটাচ্ছি তার উপর। কিসের এত টান যা বার বার নীলা এর দিকে তাকে অগ্রসর করেই চলেছে। কেন সে নীলাজে অন্যের সাথে সহ্য করতে পারে না। কেন তাকে নিজের আড়াল করতে চায় না। কেন। এইসব যখন অর্ণব ভাবছে তখন নীলা বলে উঠে।

নীলাঃ কি নেই তহ জবাব আপনার কাছে। আর থাকার কথাও না। তাই আপনাকে এর জবাব দিচ্ছি আমি আপনার কেউ না। আর তাই আমার উপর আপনার কোন অধিকার নেই।

সো নেক্সট টাইম আমার উপর কোন রকম অধিকার খাটানোর চেষ্টা করবেন না।

এই বলে নীলা বেড়িয়ে যেতে নিলে অর্ণব ওর হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে। আর তারপর নীলা এর কানের কাছে গিয়ে নিজের মুখ এনে স্লো ভয়েসে বলে,

অর্ণবঃ তোমার উপর আমার কিসের অধিকার তা তুমি আজ বিকেলেই টের পাবে। এর পর তুমি চাইলে আমার থেকে এই অধিকার নিতে পারবে না। বি রেডি জান। আজই আমি তোমায় দেখিয়ে দিব তোমার উপর আমার কিসের এত অধিকার।

এই বলে অর্ণব নীলাকে ছেড়ে হনহনিয়ে চলে যায়। আর যাওয়ার আগে রুম বাইরে দিয়ে লাগিয়ে দিয়ে যায়। আর সার্ভেন্টদের ও বলে যাতে কেউ দরজা খুলে। এই বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

আর এইদিকে নীলা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর জোরে জোরে চিৎকার করছে কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না। একসময় দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে সে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পরে। তাই সে খাটের উপর বসে পরে আর আকাশ পাতাল ভাবতে থাকে। একসময় সে ঘুমের দেশে তলিয়েও পরে।

প্রায় বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হতে আসলো। নীলা তখনও ঘুমে আছে। এমন সময় ধাম করে দরজা খুলার আওয়াজে সে ধরফরিয়ে উঠে। আর সামনে যা দেখে তাতে নীলা সপ্তম আকাশে উঠে পরে।


পর্ব ১১

সন্ধ্যাবেলায়….

নীলা ঘুমিয়ে ছিল। এমন সময় ধাম করে দরজা খুলার আওয়াজে সে ধরফরিয়ে উঠে। আর সামনে যা দেখে তাতে নীলা সপ্তম আকাশে উঠে পরে।

কেননা দরজায় অর্ণব দাড়িয়ে আছে। অর্ণব দাড়িয়ে আছে তা দেখে নীলা অবাক নয়। নীলা অবাক এই জন্য কেন না অর্ণব বিয়ের শেরওয়ানি পরে আছে। আর তার পিছনে কয়েকটা বডিগার্ড কি জানি হাবিজাবি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। নীলা ভালো করে খেয়াল করে দেখলো বিয়ের পোশাক। নীলা এইবার ভয়ে ঢোক গিলে। নীলা আনতাজ করতে পারছে তার সাথে এখন কি হতে চলেছে। নীলা তারাতারি খাট থেকে নেমে দৌড়ে রুম থেকে বের হতে নিলে অর্ণব খপ করে নীলা এর হাত ধরে ফেলে। আর বডিগার্ডদের ইশারা করে। সাথে সাথে তারা সব জিনিস খাটে রেখে বের হয়ে যায়। অর্ণব নীলাকে নিজের সামনে দাড় করিয়ে বলে,

অর্ণবঃ চুপচাপ আধাঘন্টার মধ্যে এইসব পরে রেডি হয়ে নাও। তোমার দরকার এর সকল জিনিস আছে এখানে।

নীলাঃ আমি কেন এইসব পড়তে যাব।

অর্ণবঃ বারে। নিজের বিয়ে তে যদি তুমি এইসব না পড়ো তহ কে পড়বে শুনি।

নীলাঃ মানে। চোখ দুটো একদম ডাবল বড় করে।

অর্ণবঃ অহহ তোমায় তহ বলাই হয়নি। আজ আমাদের বিয়ে।

নীলাঃ কিইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই। চিৎকার দিয়ে।

পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “বেস্ট থ্রিলার গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

অর্ণব নিজের কানে হাত দিয়ে বলে,

অর্ণবঃ আস্তে আস্তে। কানের পর্দাই তহ ফাটিয়ে দিবে।

নীলাঃ আমি এই বিয়ে করবো না। হইলে আমি ঠ্যালা গাড়ি ওয়ালারে বিয়া করুম। তাও আপনার মত দিপজল মার্কা কদু চোর রে বিয়ে করুম না।

অর্ণব তহ এইবার কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেল প্লাস তার রাগ ও হচ্ছে। সে নাকি দিপজল মার্কা কদু চোর। হাইরে কপাল। যেখানে ঢাকা শহরের সব মেয়েরা ওর উপর ফিদা। অর্ণব এর নাম শুনলেই বেহুস। সেখানে এই মেয়ে কয় কি। অর্ণব নিজের রাগ কাল্ট্রোল করে বলে,

অর্ণবঃ ভালোই ভালোই বলছি রেডি হয়ে নাও। তা না হলে আমি যে কি করতে পারি তা তোমার ধারণার বাইরে।

নীলাঃ যা ইচ্ছে তা করেন। আমার কি।

এই বলে চলে যেতে নিলে অর্ণব ওকে বেডের সাথে চেপে ধরে। আর বলে,

অর্ণবঃ এখনো টাইম আছে। রাজি হয়ে যাও। তা না হলে বিয়ের আগেই আমাদের বাসর সেরে ফেলবো।

নীলাঃ তহ করেন মানা কে করসে।

অর্ণব তহ এইবার ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। এই মাইয়া এর মাথা ঠিক আসে তহ নাকি।

অর্ণবঃ তোমার মাথা ঠিক আছে তহ। বুঝতাসো তহ কি বলতাসো।

নীলাঃ হ্যাঁ। আচ্ছা বিলাই টা কই।

অর্ণবঃ বিলাই মানে। জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে,

নীলাঃ আরেহ বাসর এর জন্য বিলাই লাগে। আগে বিলাই খুজতে হয়। তারপর ওরে ধরে মারতে হয়। কিন্তু এইখানে তহ কোথাও বিলাই নাই। সো জান গা আগে বিলাই খুইজা আনেন দ্যান ওরে মাইরা ওর লগে বাসর কইরেন। আর আমারে বাসায় যাইতে দেন।

অর্ণব এই কথায় হাসব নাকি কাদব বুঝতাসে না। হাইরে কোন মাইয়া এর চোক্করে পড়লাম।

অর্ণবঃ না আমি সেই বাসর করব না অন্য বাসর করবো।

নীলাঃ অন্য বাসর মানে। চোখ ছোট ছোট করে।

অর্ণবঃ ওয়েট প্রেক্টিক্যালই দেখাই।

এই বলে অর্ণব নীলা এর ঠোঁট দুটো নিজের আয়েত্তে নিয়ে নেয়। তারপর কিছুক্ষণ পড়েই ওর গলায় অসংখ্য চুমু তে ভরিয়ে দেয়। নীলা এতক্ষণ হাবলার মত তাকিয়ে ছিল। পরক্ষনে সে বুঝতে পারে অর্ণব এর মানে কি ছিল। সে সাথে সাথে চিল্লিয়ে উঠে।

নীলাঃ নায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।

অর্ণব এইবার কানে হাত ঢুকিয়ে বসে পরে।

অর্ণবঃ আরেহ। আমার বয়রা করতে চাচ্ছো নাকি। আজিব।

নীলাঃ আপনি দূরে থাকেন আমার থেকে। আমার কাছে আসবেন না।

অর্ণব এইবার একটা পৈচাশিক হাসি দিয়ে বলে,

অর্ণবঃ কেন গো। এই বাসর বুঝি ভালো লাগে নি। আসো শুভ কাজটা সেরে ফেলি।

নীলাঃ আমার একদম কাছে আসবেন না। দুরে দুরে যান।

অর্ণবঃ তা তহ হয় না। আসো কাছে আসো।

নীলাঃ একদম ছুবেন না আমায়। আপনি যা বলবেন আমি তাই করতে রাজি কিন্তু তাও কাছে আসবেন না আমার।

অর্ণব এইবার বিশ্বজয় একটা হাসি দেয়। সে এতক্ষণ এইটার জন্যই অপেক্ষা করছিল। অর্ণব তারপর বলে,

অর্ণবঃ তাহলে আমাকে বিয়ে করতে তৈরি হয়ে যাও। এইসব পড়ে রেডি হয়ে নাও। কিছু মেয়ে এসে তোমাকে সাজিয়ে দিয়ে যাবে। আর হ্যাঁ কোন রকম যদি চালাকি করছো তোমার সাথে যে কি হতে পারে তা তুমি নিশ্চয়ই জেনে গেছ। তাই ভালো মেয়ের মত চুপচাপ বসে থাকবে। একটু পর আমি এসে নিয়ে যাব।

এই বলে অর্ণব চলে যায়। আর সাথে সাথে কিছু মেয়ে ভিতরে আসে। নীলা এখনো ঠাই মেরে বসে আছে। তার সাথে কি হচ্ছে সে বুঝতে পারছে না। যেখানে ৬ ঘন্টা আগেও সব ঠিক ছিল সেখানে এখন তার লাইফ কোথা থেকে কই চলে যাচ্ছে। সেই মেয়ে গুলো নীলাকে সাজাতে ব্যস্ত। নীলা নিজ থেকে কিছু করছে না বলে সব তারাই করে দিচ্ছে।

এইদিকে নিচে…

অর্ণব নিচে নেমে দেখে তিহান সোফাতে বসে আছে। তিহানকে দেখে অর্ণব কিছুটা বিচলিত হয়ে যায়। তারপর নিজেকে সামলিয়ে ওর সামনে যায়। তিহানের পাশে গিয়ে বসতেই তিহান অর্ণবের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে।

তিহানঃ এইসব কি হচ্ছে অর্ণব। প্লিজ তুই আমাকে বলবি। তুই কেন এমন করছিস।

অর্ণব একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলে,

অর্ণবঃ আমি নিজেও জানি না আমি এমন কেন করছি। শুধু এতটুকু জানি আই নিড হার।

তিহানঃ আমায় সব কিছু খুলে বল।

অর্ণব তারপর তিহানকে সব খুলে বলে, তিহান তা শুনে মাটিতে বসে টেবিলে থাকা পানির বোতলটা নিয়ে মাথায় পানি দেওয়া শুরু করে। তা দেখে অর্ণব ভ্রু কুচকিয়ে তিহানের দিকে তাকায়।

তিহানঃ তুই শালা অর্ণব হতেই পারিস না। আমি অর্ণবকে ভালো মত চিনি। ওর তহ মাইয়া মানেই এলার্জি। ওই পোলা শালা এক নাম্বার এর খারুস। ওই পোলা দাড়া প্রেম পসিবেলই না।

অর্ণবঃ জাস্ট সাট আপ। আমি এখন একদমই মজার মুডে না।

তিহানঃ আমি বিশ্বাস করতে পারতাসি না। তুই। দ্যা গ্রেট অর্ণব রহমান কাউরে প্রেমে পড়সে। তাও আবার এমন পিচ্চি মেয়ের। যেখানে তুই গ্রিস থেকে পড়ালেখা করে এসেছিস। তুই জানোস ও ওইখানের সব মেয়েরা তোর জন্য কেমন পাগল ছিল। তুই বলতে ওদের ড্রিম বয় ছিলি। সেখানে তুই ওদের ছেড়ে এইখানে একটা মেয়ের প্রেমে পড়লি।

অর্ণবঃ একদম বাজে বকবি না। আমি ওর প্রেমে পরি নি।

তিহানঃ তাহলে বিয়ে করছিস কেন। ডোন্ট সে টাইমপাস এর জন্য। কেন না তুই টাইমপাস এর জন্য এর চেয়ে ভালো মেয়ে পাবি। আর এর চেয়েও বড় কথা তুই টাইমপাস করার মত ছেলে না। তুই মান আর নাই মান তুই এই মেয়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছিস।

অর্ণবঃ জানি না আমি কিছু। আমি শুধু এতটুকু জানি ওই শুধু আমার। ওর উপর শুধু আমার অধিকার।

তিহানঃ এইটাই প্রেম বুঝলি। যাই হোক আরেক বোতল পানি হবে।

অর্ণব এইবার অগ্নি দৃষ্টিতে তিহানের দিকে তাকায়। তাতে তিহান একটা শুকনো ঢোক গিলে।

কিছুক্ষণ পর অর্ণব উপরে যায়। দরজার সামনে এনে অর্ণব থমকে যায়। নীলা একটা মেরুন কালার লেহেংগা পরেছে। সাথে মেচিং অরনামেন্টস। মুখে হাল্কা মেকাপ। চুল গুলো পিছনে খোপা করা। চোখে কাজল। কিন্তু কান্নার কারনে তা ল্যপ্টে গেছে। তাও অর্ণব এর কাছে নীলাকে কোন অপ্সরী থেকে কম লাগছে না। অর্ণব নীলাকে নিয়ে নিচে আসে। নীলা তাকিয়ে দেখে সোফায় একটা হুজুরের মত লোক বসে আছে। সে হচ্ছে কাজি। আর তার পাশেই অর্ণব এর সমবয়সী একটা ছেলে। ও আরেকজন ব্ল্যাক সুট পরা ছেলে। তারা দুইজন হচ্ছে তিহান আর নুরু। কিন্তু নীলা তাদের চিনে না। ওদেএ দুইজনকে সাক্ষী হিসাবে রাখা হয়েছে।

অর্ণব নীলাকে নিয়ে সোফায় বসায়। আর নিজে ওর হাত ধরে ওর পাশে বসে।

কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করে। অর্ণবকে কবুল বলতে বললে ও বলে ফেলে। কিন্তু নীলাকে বলার পর ও বলছে না। অনেকবার বলার পরও যখন নীলা কবুল বলছে না তখন অর্ণব উঠে গিয়ে নীলা এর সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে,

অর্ণবঃ আচ্ছা তোমার কি বুদ্ধি শুদ্ধি নাই। তুমি এত বেক্কল কেন।

এই মুহূর্তে অর্ণব যে এই টাইপ কথা বলবে তা সবার চিন্তার বাইরে ছিল। তিহান আর নুরু অবাক চোখে অর্ণব এর দিকে তাকিয়ে আছে। আর নীলা তহ ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসে আছে। পোলাই কি কইতাসে কিছুই বুঝতাসে না।

অর্ণবঃ ওই তুমি পড়ালেখা জানো তহ। নাকি খালি এমনেই তিরিং বিরিং করো। তোমার মাথায় জ্ঞান বুদ্ধি আছে। নাকি জলহস্তির মত খালি এই মাথাটাই আছে।

এইবার নীলা এর রাগ উঠে যায়।

নীলাঃ কে বলসে আমার জ্ঞান বুদ্ধি নাই। আমি যথেষ্ট বুদ্ধি মতি।

অর্ণবঃ তাই নাকি। তাহলে একটা টেস্ট হয়ে যাক। তাহলেই প্রমান হয়ে যাবে তুমি বুদ্ধি মতি নাকি মাথামোটা।

নীলাঃ ওকে।

অর্ণবঃ লবুক রে উল্টো করলে কি হয়।

নীলা কিছুটা ভেবে।

নীলাঃ কবুল।

অর্ণবঃ গুড। এইবার বলো। কবু এর পরে ল যোগ করলে কি হয়।

নীলাঃ কবুল।

অর্ণবঃ হইসে। এইবার বলো। বুল এর আগে ক যোগ করলে কি হয়।

নীলাঃ কবুল।

এইবার সবাই এক সাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠে। নীলা বোকার মত চেয়ে থাকে। হচ্ছেটা কি। তখন কাজি বলে উঠে। আপনারা এখন থেকে স্বামী স্ত্রী। তখন নীলা আকাশ থেকে পরে।

নীলাঃ ভাইরে ভাই। দাড়াও দাড়াও। কেমনে কি। আমি তহ কবুল এই বললাম না। তাইলে বিয়ে কেমনে হইলো।

অর্ণবঃ ওহো নীলা। তুমি কতটা বোকার। একটু মনে করে দেখত আমি তোমায় কি জিজ্ঞেস করছিলাম। তুমি নিজ ইচ্ছায় ৩ বার কবুল বলসো বুঝলা। আমি জানি তুমি সোজা কথার মানুষ না। তাই আমাকেও তোমার মত একটু ত্যাড়া হতে হইলো আরকি।

নীলা হা হয়ে তাকিয়ে আছে। রাগে জিদে নিজের চুল নিজেই ছিড়তে ইচ্ছে করতাছে। এই একটা নীলা এর খারাপ অভ্যাস। সহজে রেগে যায়। আর রাগলে কি থেকে কি করে সে নিজেও জানে না। এইদিকে সবাই সবাইকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। নীলা আর কিছু না বলে উপরে চলে যায়।

উপরে গিয়ে নীলা নিজে পরে থাকা সকল গয়নাগাটি খুলে ছুড়ে মারছে। পারছে না তহ সব শেষ করে দিতে। নীলা খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে কাদতে থাকে।

রাত ৯ টার দিকে অর্ণব রুমে যায়। রুমে গিয়ে দেখে নীলা খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক কেদেছে। চোখের কোনে পানি শুকিয়ে গেছে। নাক টা লাল হয়ে আছে। গালে কান্নার দাগ রয়েছে। অর্ণব এখন নিজের মধ্যে এক অপরাধ বোধ কাজ করচ্ছে। কিন্তু তার যে কিছু করার ছিল না। নীলা যখন অধিকারের কথা বলে তখন তার মাথা খারাপ হয়ে যায়। যার জন্য সে এই রকম একটা ডিসিশন নিয়ে বসে। তার একটাই কথা নীলা অন্য কাউরো হতে পারবে না। সে শুধু অর্ণব এর। আর কাউরো না।

অর্ণব ধীর পায়ে নীলা এর দিকে এগিয়ে যায়। নীলা এর সামনে হাটু গেড়ে বসে ওর গালে নিজে হাত রাখে। তারপর নিজের হাতের বৃদ্ধ আঙুল গিয়ে নীলা এর গালে স্লাইড করতে থাকে। গালে কাউরো শীতল স্পর্শ পেয়ে নীলা জেগে উঠে। চোখ খুলে দেখে অর্ণব তার দিকে গভীর চাহনিতে তাকিয়ে আছে। অর্ণবের চোখে চোখ পড়তেই নীলা তার মধ্যে এক আলাদাই নেশা দেখা যাচ্ছে। কাউকে নিজের করে পাওয়ার নেশা। নীলা এর ইচ্ছে করছে এই চোখের নেশায় ডুব দিতে। কিন্তু পরক্ষনেই সব কথা মনে পড়তে সে এক ঝাটকায় অর্ণব এর হাত সরিয়ে ফেলে। আর বলে,

নীলাঃ ডোন্ট টাচ মি। আপনার সাহস কিভাবে হলো এইসব করার। কেন করলে এমন আমার সাথে। আপনাকে তহ আমি ভালো মত চিনিও না। আপনি কি আমার থেকে সেইদিনের প্রতিশোধ নিচ্ছেন। আমি তহ ওটা ইচ্ছেকৃত ভাবে করি নি। কিন্তু তাও আমি অন্যায় করেছি বলে সরিও বলেছি আপনার কাছে। তাও কেন আপনি আমার সাথে এমন করলেন। কেন। কিসের শাস্তি দিচ্ছে আমায়।

অর্ণব নীলা এর মুখে হাত রেখে বলে,

অর্ণবঃ হুসসস। আর কথা না। আমি তোমায় কোন কিছুর শাস্তি দিচ্ছি না। আর না তোমায় আমি কোন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিয়ে করেছি। কেন জানি না তোমাকে দেখার পর আমি ঠিক নেই। তোমাকে দেখার পর থেকেই আমি শুধু সব জায়গায় তোমায় অনুভব করি। বসতে উঠতে খেতে ঘুমাতে শুধু তোমার চেহেরাই চোখে ভাসে। তোমার জন্য আমার মনে এক আলাদাই অনুভুতি নাড়া দেয়। যার নাম আমার আদো জানা নেই। শুধু মন এইটাই বলে তোমাকে তার প্রয়োজন। সহ্য হয় না তোমার পাশে অন্য আরেকজনকে। তাই তহ আজ যখন তোমায় অন্য ছেলের সাথে দেখে। তাও আবার হেসে হেসে কথা বলতে মাথা রক্ত চড়ে বসে। নিজে ঠিক রাখতে পারি নি। আর যখন অধিকারের কথা বললে। তখন মাথায় একটা কথাই ঘুর ঘুর করছিল যে তোমার উপর সব থেকে আমার অধিকার। আর কাউরো না। তাই আমি এই ডিসিশন নেই যে তোমায় চিরতরের জন্য নিজের করে নিব। আর দেখ করেও নিলাম। জানি কিছুটা অন্যায় ভাবে তোমায় নিজের করেছি কিন্তু তাতে আমার আফসোস নেই। তুমি এখন আমার। আর তোমাকে আমায় থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না। কেউ না। সে যাই হোক। আলমারিতে তোমার জন্য কিছু জামা আর শাড়ি রাখা আছে। চেঞ্জ করে নাও। আমি বাইরেই আছি।

এই বলে অর্ণব উঠে দরজার দিকে পা বাড়াতেই নীলা এর কথায় থমকে যায়।


পর্ব ১৩

অর্ণব উঠে দরজার দিকে পা বাড়াতেই নীলা এর কথায় থমকে যায়।

নীলাঃ ভালবাসেন আমায়?

অর্ণব নীলা এর দিকে ঘুরে দাড়ায়। আর অবাক হয়ে নীলা এর দিকে তাকিয়ে থাকে। তা দেখে নীলা বলে।

নীলাঃ কি হলো বলেন। ভালবাসেন আমায়?

অর্ণব কি বলবে বুঝতে পারছে না। সে নিজেও এর উত্তর জানে না৷

নীলাঃ কি হলো চুপ করব আছেন কেনো, বলেন। আমি উত্তর টা জানতে চাই। আপনার উত্তর এর উপর এই কিন্তু এখন আমার আর আপনার লাইফ ডিপেন্ড করে। এই উত্তরের উপর বিত্তি করেই আমাদের লাইফ শুরু হবে। সব প্রশ্নের জোট খুলবে। তাই আশা করি আপনি সত্যি সত্যি আমায় উত্তর টা দিবেন। মিথ্যা বলবেন না প্লিজ।

অর্ণব এইবার চুপ থাকতে পারলো না। নিজের মুখ খুললো।

অর্ণবঃ জানি না। আমি তোমায় ভালবাসি কিনা। আদো ভালবাসা বলে কিছু আছে কিনা। আমি এইটাও জানি না আমার মনে তোমার জন্য যে জমানো অনুভুতি রয়েছে তা কি। তবে এত টুকু জানি। তোমার জন্য আমার মনে যে অনুভুতি। তা আজ পর্যন্ত অন্য কাউরো জন্য হয়নি। বলতে গেলে আমার মধ্যে আজ পর্যন্ত এমন অনুভুতি কাজ এই করেনি। তোমাকে দেখার জন্য আমার অস্থিরতা। তা অন্য কাউকে দেখার জন্য হয় নি। তোমাকে দেখলে মনে তুমি শুধু আমার। তোমার উপর শুধু আমার অধিকার। আর কাউরো না। জানি না একে ভালবাসা বলে কিনা। যদি একে ভালবাসা বলে থাকে তাহলে হ্যাঁ আমি তোমায় ভালবাসি। অনেক বেশি ভালবাসি।

এই বলে অর্ণব রুম থেকে চলে যায়। আর নীলা অর্ণব এর যাওয়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে। তাকিয়ে থাকতে থাকতে নীলা এর ভিতরে থেকে এক দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে আসে।

সেইদিন রাতে আর অর্ণব রুমে আসে নি। নীলা আর জানতে চাই নি অর্ণব কোথায়। কেন না নীলা এর কিছুক্ষণ একা থাকার প্রয়োজন। তার যে কিছু হিসাব মিলাতে হবে। জীবনের হিসাব। আজ তার লাইফ কোথ থেকে কোথায় চলে এসেছে। যেখানে আজ সকাল পর্যন্ত একাকিত্ব জীবনযাপন করতো। সেখানে তার জীবন এখম অন্য একজনের সাথে জুরে গেছে। তার নামে সাথে এখন মিশে গেছে অন্য একজনের নাম। সে এখন মিস থেকে মিসেস হয়ে গিয়েছে। আচ্ছা সে এখন তার বাবাকে কি মুখ দেখাবে। কি বলবে তার বাবাকে। আদো ক বাবা এইসব মানবে। বুজবে তাকে।

এইসব ভাবতে ভাবতে নীলা যে কখন ঘুমিয়ে পড়ে তা ওর খেয়াল নি।

অন্যদিকে…

অর্ণব চাদে দাড়িয়ে আকাশের পানে তাকিয়ে আছে। সে এখন বুঝতে পারছে সে কি করে ফেলেছে। নিজের জীবনের সাথে আজ সে অন্য আরেকজনকে জরিত করে ফেলেছে। যা এখন সে চাইলেও নিজের জীবন থেকে সরিয়ে ফেলতে পারবে না। তাকে সারাজীবনের জন্য আগলে রাখতে হবে। আচ্ছা কাজ টা কি সে ঠিক করেছে নাকি ভুল। কিছুই বুঝতাসে না সে। কি করবে কিনা। এক দোটানায় পরে গিয়েছে সে। যার টানে হয়ত কাউরো জীবন শুদরে যাবে। নয়তো কাউরো জীবন সেখানে নষ্ট হয়ে যাবে।

দেখতে দেখতে পুরো রাত কেটে যায়। অন্ধকারকে দূর করে এক মুঠ আলো চারদিকে ছড়িয়ে পরে। সকলের জন্য আজ একদিন নতুন দিন শুরু হলে কিছু মানুষের জন্য আজ জীবনের নতুন অধ্যায় খুলতে চলেছে। এখন তা কি হয় খারাপ নাকি মন্দ তা কাউরো জানা নেই।

পাখির কিচিরমিচির শব্দে নীলা এর ঘুম ভেংগে যায়। নীলা আদো আদো করে চোখ খুলে। তারপর উঠে বসে। চার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়। সে কোথায়। চারদিক ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। পরে তার কালকের কথা মনে। নীলা এর ভিতর থেকে এক দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে আসে। তারপর সে আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।

অর্ণব শেষ রাতের দিকে ছাদে ঘুমিয়ে পরে। রোদের কড়া আলোতে অর্ণব এর ঘুম ভাংগে। অর্ণব আড়মোড় ভেংগে রুমে দিকে পা বাড়ায়। রুমে এসেই তার পা থমকে যায় সামনে থাকা অপ্সরীকে দেখে। নীলা আজ পিংক কালারের একটা জরজেট শাড়ি পরেছে। চুল গুলো ভিজা। আয়না এর সামনে দাড়িয়ে সে চুল গুলো সামনে এনে মুজচ্ছে। এতে নীলা এর সাদা পিঠটা দেখা যাচ্ছে। পিঠে কিছুটা পানি জমে আছে। অর্ণব এর যেন ঘোর লেগে যাচ্ছে। সে ধীর পায়ে নীলা এর পিছনে গিয়ে দাড়ায়। নীলা তখনো অর্ণবকে দেখে নি। হঠাৎ পেটে কাউরো স্পর্শ পেয়ে নীলা আয়নাতে তাকায়। তাকিয়ে অর্ণবকে দেখতে পায়। অর্ণব নীলাকে একবারে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। ওর চুলে মুখ গুজে। নীলা কিছুটা কেপে উঠে। সাথে অস্তিত্ত বোধ করে। কেন না আগে কখনো কোন ছেলে তার এত কাছে আসেনি। অর্ণব নীলা এর কাধে ছোট ছোট চুমু দিতে থাকে। তা আস্তে আস্তে গভীর হতে নিলে। নীলা বলে উঠে।

নীলাঃ আমার কিছু সময় লাগবে সব কিছু মেনে নিতে। মানছি আমাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমার উপর আপনার অধিকার আছে। কিন্তু তাও একটা রিকুয়েষ্ট করছি। আমায় কিছুদিন সময় দিন। যাতে আমি আপনাকে মেনে নিতে পারি।

এই কথা শুনার সাথে সাথে অর্ণব এর ঘোর কেটে যায়। সে নীলাকে ছেড়ে দেয়।

অর্ণবঃ সরি ফোর দিস। আমি জানি না কেন আমি তোমার দিকে বার বার মোহহীত হই। কেন তোমাকে দেখলে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। সে যাই হোক। টেক ইউর টাইম। আমি সেই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

এই বলে অর্ণব আলমারি থেকে কাপড় নিয়ে চলে যায়। আর নীলা সেই দিকে তাকিয়ে বলে।

নীলাঃ বাঙালি মেয়েদের বিয়ে একবার এই হয়। সেটা হোক না জোর করে। কিন্তু তাও আমার সব কিছুর সাথে ক্ষাপ মানিয়ে নিতে টাইম লাগবে। কিন্তু চিন্তা করেন না। খুব জলদি আপনাকে আপন করে নিব।

এইভাবেই চলতে থাকে দিন। অর্ণব কখনো নীলা এর কাছে নিজের অধিকার দেখাতে আসে নি। কেন না সে চায় নীলা নিজ থেকে তাকে সেই অধিকারটি দেয়। তাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক না হলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক ঠিকই হয়েছে। নীলা এখন অর্ণবকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু বলতে পারছে না। অর্ণব ও নীলা একই রুমেই ঘুমায়। অর্ণব এর বুকেই নীলা ঘুমায়। এইটা অর্ণব এর আবদার। যেখানে সব কিছু নীলা এর মতে হচ্ছে সেখানে অর্ণব এর এই একটা কথা রাখতেই পারে। অর্ণব এতদিনে বুঝেছে তার না জানা অনুভুতির নাম ভালবাসা। আর নীলা ও বুঝতে পারছে সে অর্ণবকে ভালবেসে ফেলেছে। ভালবাসবেই বা না কেন। অর্ণব এর কেয়ারনেস। নীলা এর জন্য ওর পজিসিভ নেস। ওর অফুরন্ত ভালোবাসা। সবই নীলাকে অর্ণবকে ভালবাসতে বাধ্য করেছে। কিন্তু তাও মাঝে মধ্যে অর্ণব অতিরিক্ত করে। যেমন কোন ছেলের সাথে মিশা যাবে না। এইটা খাওয়া যাবে না। ওইটা খাওয়া যাবে না। নীলা এতে অতেষ্ট হলেও তার এইসব ভালোই লাগে। কিন্তু এর মধ্যে মজার বেপার হলো কেউ নীলা আর অর্ণব এর কথা জানে না। নীলা এই মানা করেছে। তার কথা সে ভারসিটিতে উঠার পর বাবা এর কাছে তাদের কথা বলবে। তখন তাকে সকলের সামনে আপন করে নিয়ে এসে ঘরে তুলবে। অর্ণব এর এতে কোন আপত্তি নেই। এর মাঝে একজন ঠিকই তাদের খোজখবর নিচ্ছে। তাদের উপর কড়া নজর দিয়ে রেখেছে। কাউরো জানা নেই এই লোকটি কি করতে চলেছে। আদো তার উদ্দেশ্য ভালো নাকি খারাপ। এই অনাগত আগুন্তক না জানি কি ঝড় বয়ে নিয়ে আসছে নীলা ও অর্ণব এর জীবনে।

সামনে ভেলেন্টাইন ডে। অর্ণব নীলা এর জন্য স্পেশিয়াল কিছু প্লেন করে। অর্ণব চায় এইদিন সে তার নীলপরীকে তার মনের কথা বলবে। তাকে বলবে সে তাকে বড্ড ভালবাসে।
অর্ণব এখন দিনের প্রহর গুনছে। কবে যে ভেলেন্টাইন আসবে। দেখতে দেখতে ভেলেন্টাইন এসেও পরে। আর শেষ হয় অর্ণব এর অপেক্ষার প্রহর।

On valentine day


পর্ব ১৪

On valentine day

সূর্যের মিষ্টি আলো নীলা এর উপর পরতেই নীলা এর ঘুম ভেংগে যায়। ঘুম ভাংগার পর প্রতিদিনের মত নিজেকে অর্ণব এর বাহুদরে আবদ্ধ পায়। নীলা এর দিকে চেয়ে থাকে। একদম নিষ্পাপ তার মুখ খানি। ঠোঁট গুলো ঠিক গোলাপের পাপড়ির মত লাল। ডান চোখের একটু নিচে একটা তিল। নাকটা চিকন সরু। চুল গুলো সিল্কি হওয়ার কারনে কপালে এসে ঘাবটি মেড়ে বসে আছে। একদম বাচ্চা মত লাগছে। কোন ছেলে যে এত কিউট হতে পারে তা অর্ণব না দেখলে নীলা জানতেই পারত না।

নীলা এর ইচ্ছে হচ্ছে চুল গুলো নিয়ে খেলতে। তাই সে আর তার ইচ্ছাকে দমিয়ে না রেখে অর্ণব এর চুল গুলো নিয়ে খেলা শুরু করে দেয়। অতঃপর অর্ণব এর কপালে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে উঠতে নিলে অর্ণব ক্ষপ করে নীলা এর হাত ধরে ফেলে। (মাইয়া কাক্সহে আইলে পোলা গো ঘুম এত হাল্কা হয় কে এমনে তহ আগুন লাগলেও ঘুম থেকে উঠবো না। )

পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “বেস্ট থ্রিলার গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

নীলা অর্ণব এর দিকে ঘুরে তাকায়। অর্ণব চোখ বন্ধ করেই বলে।

অর্ণবঃ ঘুমের মধ্যে একটা ছেলেকে নির্যাতন করা ঠিক না।

নীলাঃ আমি আবার কখন নির্যাতন করলাম।

অর্ণবঃ এই যে আমার মত অসহায় একটি ছেলে যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন তুমি ওর চুল নিয়ে খেলসো তারপর ওর কপালের চুমুও খাইসো। এইটি পুরুষ নির্যাতন না।

নীলা এইবার হো হো করে হেসে দেয়। তারপর হাসি থামিয়ে বলে।

নীলাঃ ওলে লে। আমার অসহায় কদু চোরটা। তুমি যে এত বোকা তা জানতাম না। আমি যেটা করসি ওইটা কোন নির্যাতন না। ওইটা আমার অধিকার। আমি আমার বরের চুল নিয়ে খেলসি তার চুমু খাইসি তাতে তোমার কি শুনি।

অর্ণব এইবার নীলাকে নিচে ফেলে ওর উপরে বসে বলে,

অর্ণবঃ তাই না। যদি সেটা তোমার অধিকার থাকে তাহলে আজ আমিও আমার অধিকার নিতে চাই।

এই বলে অর্ণব নীলা এর ঠোঁট দুটো আকড়ে ধরে। নীলা আজ ছুটাছুটি করছে না। বরং আয়েশে চোখ বুঝে নিয়েছে। প্রায় ১০ মিনিট পর নীলাকে উঠে বসে। তারপর নীলা এর দিকে তাকিয়ে বলে।

অর্ণবঃ যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। আর শুনো আলমারিতে একটা পেকেট আছে। সেটা সন্ধ্যায় পরে রেডি হয়ে নিও। এক জায়গায় যাব।

নীলা মাথা নিচু করে ওয়াশরুমে চলে যায়। অর্ণব সেইদিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে ,

অর্ণবঃ তোমাকে এইভাবে আপন করতে চাই না। কিছু স্পেশিয়াল মোমেন্ট ক্রিয়েট করে দিনটাকে মেমরেবল করতে চাই। যাতে এই দিনটি তোমার জন্য স্মৃতি হয়ে থাকে। আজ তোমার চোখের আমি আমার জন্য ভালবাসা দেখেছি। তোমাকে আপন করে নেওয়ার সম্মত্তি পেয়েছি। শুধু আরেকটু অপেক্ষা কর। আজই তোমায় আপন করে নিব।

সকালের নাস্তা করে অর্ণব চলে যায়। নীলা রুমে গিয়ে পড়তে থাকে। সামনে এক্সাম। কলেজ আপাতত অফ। তাই বাসায় থেকে পড়ছে নীলা। এমনেই পড়ালেখায় কাচা। তাই আগে থেকেই ট্রাই করছে।

বিকেলে নীলা আলমারি খুলে একটা পেকেট পায়। পেকেট খুলে দেখে রেড কালারের শাড়ি। তার উপর অনেক সুন্দর পাথরের ডিজাইন। এর সাথে মেচিং অরনামেন্টস। নীলা এর খুব পচ্ছন্দ হয়েছে। তাই সে তারাতারি গিয়ে শাড়িটি পড়ে আসে। চোখের হাল্কা কাজল। রেড লিপস্টিক। কানে ঝুমকা। হাতে লাল রেশমি চুড়ি। চুল গুলো এক সাইডে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। আজ নীলাকে সেই লাগছে। অর্ণব দেখলে নির্ঘাত আবার নতুন করে নীলা এর প্রেমে পড়বে। নীলা সেজে বসে আছে। ঠিক তখন নিচ থেকে গাড়ি এর হর্নের শব্দ কানে ভেসে আসে। নীলা বারান্দায় গিয়ে দেখে অর্ণব গাড়িতে বসে হর্ন বাজাচ্ছে। নীলা দ্রুত নিচে নেমে আসে। নিচে গিয়ে দেখে অর্ণব গাড়ি এর সাথে হেলান গিয়ে দাড়িয়ে আছে। নীলা ধীর পায়ে অর্ণব এর দিকে এগুতে থাকে। অর্ণব সামনে তাকাতেই নীলাকে দেখে স্থীর হয়ে যায়। লাল শাড়িটা বেশ মানিয়েছে ওকে। অর্ণব প্রাণ ভরে তার মায়াবতীকে দেখছে। নীলা কাছে আসতেই অর্ণব ওর কানের সামনে ঝুকে লো ভয়েসে বলে।

অর্ণবঃ আজ কিন্তু তোমায় সেই লাগছে জান। আজ হয়তো নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা আমার জন্য বড্ড দায় হয়ে যাবে।

নীলা তা শুনে গাল একদম লাল হয়ে যায়। আর নিচু স্বরে বলে,

নীলাঃ কদু চোর মার্কা অসভ্য।

অর্ণব মুচকি হেসে গাড়ি এর দরজা খুলে দেয়। নীলা গিয়ে বসে সিট বেল পরে নেয়। আর অর্ণব ও গাড়িতে উঠে চালানো শুরু করে।

সন্ধ্যা প্রায় মেনে এসেছে। আর গাড়ি চলছে আপন গতিতে। নীলা বাইরে তাকিয়ে আছে। বাতাসে চুল গুলো উড়ছে। অর্ণব ড্রাইভ করছে আর মাঝে মাঝে নীলা এর দিকে তাকাছে।

গাড়ি এসে একটা রিসোর্টের সামনে থামে। অর্ণব গাড়ি পার্ক করে নেমে যায়। সাথে নীলা ও। অর্ণব একটা কালো কাপড় দিয়ে নীলা এর চোখ বেধে দেয়। তারপর ওকে কোলে তুলে নিয়ে হাটা শুরু করে। নীলা কিছু বলতে গেলে অর্ণব তাকে চুপ করিয়ে দেয়। অর্ণব সুইমিংপুলের সামনে এসে নীলাকে কোল থেকে নামায়। তারপর আসতে করে ওর চোখ দুটো খুলে দেয়। নীলা আস্তে আস্তে চোখ খুলে। চোখ খুলে একদম অবাক হয়ে যায়। চারদিকে লালা লাভ সেপ বেলুন। আর গোলাপের পাপড়ি। সামনেই একটা টেবিল তাতে দুটি চেয়ার। তার উপর রেড ভ্যালভেট কেক। টেবিলের উপরে লাল কালারের নেটের কাপড় দিয়ে ছাউনি তৈরি করা।

নীলা পাশে তাকাতেই অবাক হয়ে যায়। সুইমিংপুলের উপর গোলাপের পাপড়ি দিয়ে “আই লাভ ইউ” লিখা।

নীলা অর্ণব এর দিকে তাকাতেই দেখে অর্ণব হাটু গেড়ে বসে একটা রিং হাতে আছে। অর্ণব বলতে শুরু করে,

অর্ণবঃ জানি না কিভাবে কেমনে কখন আমি তোমায় ভালবেসে ফেলি। কখনো কোন মেয়েদের প্রতি আমার এমন ফিলিংস হয় যেমন তোমায় দেখার পর হয়েছিল। নিজের অজানতে তোমার মায়া পরে গিয়েছি। প্রেমে পরে গিয়েছি তোমার এই কালো দুই নয়নে। তোমার দুষ্টুমিতে। তোমার পাগলামি গুলোকে ভালবেসে ফেলেছি। তোমার বলা সেই নামকে ভালবেসে ফেলেছি। এখন তুমি ছাড়া আমি আর এক মূহুর্ত থাকতে পারবো না। তাই, বলি কি!

আমার কি হবে তুমি। এই কদু চোরের কদু চুরনি।

(আল্লাহ গো। লাইক সিরিয়াসলি এমন প্রাপোস মনে হয় আজ পর্যন্ত কেউ করে নাই। এতক্ষন এত সুন্দর সুন্দর কথা কইয়া লাস্ট এইটা)

নীলা এতক্ষন অর্ণব এর কথায় ডুবে গিয়েছিল। তার প্রত্যেকটা কথা নীলা এর বুকের ভিতর গিয়ে লেগেছিল। কিন্তু লাস্ট এর কথা শুনে নীলা হাসতে হাসতে শেষ। তারপর কোন মতে হাসি থামিয়ে বলে,

নীলাঃ হ্যাঁ হবো তোমার কদু চোরনি।

(প্রেমে মাথা গেসে)

এই বলে হাত বাড়িয়ে দেয়। অর্ণব চট করে নীলা এর হাতে আংটিটি পরিয়ে দেয়। তারপর উঠে দাড়িয়ে নীলাকে জরিয়ে ধরে। তারপর টেবিলের সামনে নিয়ে গিয়ে দুইজনের কেক কাটে। পরে এক সাথে ডিনার করে।

হঠাৎ মীর উঠে কোথ থেকে একটা গিটার নিয়ে আসে। আর তা নীলা এর দিকে এগিয়ে বলে,

অর্ণবঃ তোমার গানের সুরের মাঝেই আমি তোমাতে পাগল হয়েছি। আজ আবারো তোমার গানের সুরের মাঝে তোমাতে পাগল হতে চাই। দিবে কি সেই সুযোগ।

নীলা মুচকি হেসে গিটারটা নেয়। অর্ণব তখন নীলাকে নিজের কোলে বসিয়ে ওর কোমর জরিয়ে ধরে। নীলাও কিছু না বলে গিটারে সুর ধরে।

Kehte Hain Khuda Ne Iss Jahan Mein Sabhi Ke Liye
Kisi Na Kisi Ko Hai Banaya Har Kisi Ke liye
Tera Milna Hai Uss Rab Ka Ishaara Maanu
Mujhko Banaya Tere Jaise Hi Kisi Ke Liye
Kehte Hain Khuda Ne Iss Jahan Mein Sabhi Ke Liye
Kisi Na Kisi Ko Hai Banaya Har Kisi Ke Liye
Tera Milna Hai Uss Rab Ka Ishaara Maanu
Mujhko Banaya Tere Jaise Hi Kisi Ke Liye
Kuch Toh Hai Tujhse Raabta
Kuch Toh Hai Tujhse Raabta
Kaise Hum Jaane Hume Kya pata

নীলা পাশেই গিটার রাখতেই অর্ণব ওকে কোলে নিয়ে রিসোর্টের দিকে হাটা শুরু করে দেয়। অর্ণব একটা রুমের সামনে এসে হাল্কা ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে যায়। অর্ণব গিয়ে নীলাকে বেডে শুয়ে দেয়। তারপর গিয়ে দরজা অফ করে আসে। নীলা চারদিকে তাকিয়ে দেখে অনেক বড় একটা রুম। চারদিকে কেন্ডেল আর গোলাপের পাপড়ি। অর্ণব কাছে এসেই নীলা এর ঠোঁট দুটো আকড়ে আয়েত্তে নিয়ে নেয়। আর এক হাত দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে। অর্ণব নীলা এর ঠোঁট ছেড়ে গলায় ঘারে চুমু দিতে থাকে। একটু পর মাথা উঁচু করে নীলা এর কানের সামনে এসে বলে,

অর্ণবঃ মে আই?

নীলা কিছু না বলে অর্ণবকে জরিয়ে ধরে। অর্ণব তার উত্তর বুঝতে পেরে নীলা এর উপর উঠে বসে নিজের ভর ছেড়ে দেয়। আর নিজের হাত নীলা এর মাথার পিছনে নিয়ে ওর ঠোঁট গুলো নিজের ঠোঁটের মাঝে নিয়ে নেয়।


পর্ব ১৫

সেইদিনের পর থেকে নীলা আর অর্ণব এর মধ্যে স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক তৈরি হয়। দুইজন এখন দুইজনকে পাগলের মত ভালবাসে। তাদের ভালবাসার মধ্য দিয়েই তাদের দিন যাচ্ছিল। এর মধ্যে নীলা এর পরিক্ষা সামনে আসে। সে পরিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে। পরিক্ষা শেষে নীলা সিদ্ধান্ত নেয় যে সে অর্ণবকে তার বাবার সাথে দেখা করাবে। অর্ণব কে দেখিয়ে বলবে এ হচ্ছে আমার ভালবাসার মানুষ। অর্ণবকে সে আগেই এইসব এর কথা বলে রেখেছে। আগামি সপ্তাহে তারা খুলনা যাবে। কিন্তু কে জানতো এর আগেই এক তুমুল ঝড় এসে সব লন্ড বন্ড করে দিয়ে যাবে। যা নাকি দুইজনের জীবনেই একবারে তাবাহ করে দিবে।

সেইদিন…..

অর্ণব ব্রেকফাস্ট করে অফিসে চলে যায়। আর নীলা রুমে গিয়ে টিভি দেখতে থাকে। তখন হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে। নীলা অবাক হয় এই সময় আবার কে আসলো। নীলা গিয়ে দরজা খুলে দেখে কেউ নেই। নীলা চারদিক ভালো মত তাকিয়ে দেখে না কেউ নেই। তাহলে কলিংবেল কে বাজালো। নীলা ঘুরে আসতে নিবে তখন তার চোখ নিচের দিকে যায়। সেখানে একটি বক্স পরে আছে। আর তার উপর নীলা এর নাম লিখা। নীলা সেটা হাতে নিয়ে দরজা লাগিয়ে বক্সটা নিয়ে রুমে আসে। তারপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তা দেখতে থাকে। নীলা বক্সটা খুলে ভিতরে যা দেখে তাতে আতকে উঠে

ভিতরে কিছু ছবি আছে। আর সাথে একটি হ্যান্ডি ক্যামেরা। ছবিগুলো হাতে নিয়ে দেখে তার মায়ের নিথর দেহের ছবি। আর তার সামনে অর্ণব বসে আছে। তার হাতে ছুড়ি। যেন তাকে এই খুন করে ছুড়ি বের করা হয়েছে। আরেক ছবিতে অর্ণব পেটে ছুড়ি মেরে ধরে রেখেছে এমন ছবি। আরও কিছু ছবি। এইগুলা দেখে নীলা এর শরীর থরথর করে কাপতে থাকে। সে কাপা কাপা হাতে এইবার হ্যান্ডি ক্যামেরাটা চালু করে। তাতে দেখতে পায় সামনে চেয়ারে অর্ণব এর মতই একজন পিছে ঘুরে দাড়িয়ে আছে। আর তার সামনে এক লোক বলছে।

লোকটিঃ আমার কিছু কাজ তোমায় করতে হবে।

অর্ণবঃ কাকে খুন করতে হবে শুনি।

লোকটিঃ একজন ল্যান্ডলোর আছে তাকে। পুরানত পল্টনের যে রহিম আমেজ আছে তাকে খুন করতে হবে।

অর্ণবঃ কোন ব্যাপার এই না। খুন করা তহ আমার বা হাতের কাজ। কিন্তু এর বিনিময়ে আমার কি চাই তা তহ আপনি জানেন এই।

লোকটিঃ হ্যাঁ। তোমার টাকা তুমি পেয়ে যাবে। কেননা আমি জানি তোমার লাইফে টাকা ছাড়া কিছু জরুরি না।

অর্ণবঃ হ্যাঁ টাকাই আমার সব। টাকার জন্য আমি সব করতে পারি সব।

এই বলে হু হু করে হাসতে থাকে।

এইসব দেখার পর নীলা এর পুরো শরীর থরথর কাপতে থাকে। সে বিশ্বাস করতে পারছে না অর্ণব তার মায়ের খুনি। আর সে টাকা এর জন্য খুন করে। নীলা এর রাগে জিদে নিজের চুল নিজেই ছিড়তে ইচ্ছে করছে। সে কিভাবে তার মায়ের খুনিকে ভালবাসতে পারলো। কিভাবে। নীলা এর মন চাচ্ছে সে এখনই সব শেষ করে দিক। তখন তার ফোনে একটি কল আসে। ফোন উঠিয়ে সে অবাক হয়ে যায়। সে ধীরে ফোনটা তুলে। ফোনের কিছুক্ষন কথা বলে বের হয়ে যায়।

নীলা এখন একটি রেস্টুরেন্টে বসে আছে। তার সামনে বসে আছে শরিফুল হোসেন। এনি হচ্ছে নীলা এর আপন মামা। কিন্তু তার মামার সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক নেই। কিন্তু কেন তা নীলা জানে না। মাঝে মধ্যে মামা এর সাথে কথা হতো। কিন্তু আজ হঠাৎ এইভাবে দেখা করতে বললেন কেন তাই নীলা বুঝতাসে না।

নীলাঃ হঠাৎ আমায় মনে পড়লো যে।

শরিফুলঃ কেন মা মনে পড়তে পারে না। তুই তহ আমার এক মাত্র ভাগনি। আর এই সময় তহ তোর পাশে আমায় থাকতেই হবে তাই না।

নীলাঃ এই সময় মানে। অবাক হয়ে

শরিফুলঃ আমি জানি মা তোর মায়ের হত্যা কারীকে। আর সেই হত্যাকারী এর সাথে তোর সম্পর্ক কি।

নীলাঃ আপনি জানেন।

শরিফুলঃ হ্যাঁ। ওই অর্ণব রহমান এই তোর মায়ের খুনি। যে নাকি এখন তোর স্বামী।

নীলাঃ আপনি কিভাবে জানেন অর্ণব আমার স্বামী।

শরিফুলঃ আমি সব জানি। ভুলে যেও না আমি এক সময় ডিটেকটিভ এর কাজ শিখেছিলাম। তাই এইসব ইনফরমেশন বের করা আমার কাছে কিছুই না।

নীলা এইবার আর কিছু না বলে চুপ হয়ে যায়।

শরিফুলঃ তুমি যার সাথে থাকছো সে একজন খুনি। হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে সে। নিষ্পাপ আর অসহায় মানুষের সব কেড়ে তার লাশের উপর দিয়ে উঠে আজ এই অর্ণব রহমান সব টাকা পয়সা কামিয়েছে।

নীলাঃ কিন্তু আমার মার সাথে অর্ণব এর কি সম্পর্ক। সে কেনই বা আমার মাকে হত্যা করলো।

শরিফুলঃ তুমি তহ জানোই তোমার মা সেই ছোট বেলা থেকে প্রতিবাদি এই ছিল। আর এইটা ওর মৃত্যু এর কারন হয়ে দাড়ায়। ২ বছর আগে অর্ণব একটা কাজে খুলনা আসে। আর কাজটা হলো একজনকে খুন করা। যাকে অর্ণব খুন করতে আসে সে খুলনার মেডিক্যাল হসপিটালে ভর্তি ছিল। অর্ণবও সেই হসপিটালে গিয়ে ওর অক্সিজেন মাক্স খুলে তাকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মারে। আর দূর্ভাগ্যবশপত সেইদিন তোর মা সেই হসপিটালে রক্ত পরীক্ষা করতে যায় আর এইসব দেখে ফেলে।

আর তোর মা যে এইসব দেখছে তা অর্ণব দেখে ফেলে। তোর মা পালাতে শুরু করে। এবং পালিয়েও যায়। সে পুলিশ এর কাছে যেতে নিলে মাঝ রাস্তায় অর্ণব তোর মাকে ধোরে ফেলে আর তার পেটে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে।

এই বলে শরিফুল হোসেন কান্না শুরু করে দেয়। তারপর নিজেকে সামলিয়ে বলে,

শরিফুলঃ আর রাস্তায় ফেলে দে। আর এমন দেখায় যে গাড়ি এর সাথে এক্সিডেন্ট হয়ে তোর মায়ের পেটে কাচ ঢুকে গেছে। অর্ণব চলে যাওয়ার পর কিছু মানুষ তোর মাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। কিন্তু আফসোস ততক্ষণে সে মারা গিয়েছিল।

এইসব শুনে নীলা স্তব্ধ হয়ে যায়। কি বলবে কিছু বুঝতে পারছে না। এখন নিজেরই গা ঘিন ঘিন করছে যে এমন নরপশু এর সাথে সে এতদিন ছিল। আর তাকে কতটা না ভালবেসেছিল। নীলা এইসব ভাবছিল ঠিক তখনই শরিফুল হোসেন বলে উঠে।

শরিফুলঃ মা এখন তোকেই তোর মায়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে হবে। কেন না পুলিশ এতে আমাদের কোনো সাহায্যই করবে না। কারন অর্ণব অনেক পাওয়ারফুল মানুষ। সব পুলিশ অফিসার ওর পিছে পিছে ঘুরে। আমরা যদি পুলিশকে কিছু বলি তারা বিশ্বাস করবে না। আর তোমার কাছে যে প্রুফ আছে ওইগুলো আমি এই দিয়েছিলাম। কিন্তু অর্ণব ওইগুলো নিমিশেই গায়েব করতে পারবে। তার ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই এখন তোমাই সব করতে হবে।

নীলাঃ কিন্তু কিভাবে।

শরিফুল একটা পেকেট সামনে এগিয়ে বলে,

শরিফুলঃ এইভাবে।

নীলা অবাক চোখে শরিফুল এর দিকে তাকিয়ে আছে।

রাতের বেলা….

নীলা অর্ণব এর বুকে শুয়ে আছে। অর্ণব নীলা এর মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে। আর নীলা অর্ণব এর বুকের মধ্যে আকা আকি করছে। হঠাৎ নীলা বলে উঠে।

নীলাঃ কখনো আপন জনের কাজ থেকে ধোকা পেয়েছ। বা কোন রকমের বিশ্বাস ঘাতকতা?

অর্ণব অবাক হয়ে নীলা এর দিকে তাকায়।

অর্ণবঃ হঠাৎ এই রকম প্রশ্ন করলে যে।

নীলাঃ এইভাবেই। জানতে ইচ্ছে করছিল। বল না।

অর্ণবঃ হ্যাঁ অনেক বার পেয়েছি। আমার আপন চাচার কাছ থেকে। যাকে নিজের বাবা সমতুল্য মানতাম। বাবা মা মারা যাওয়ার পর তাকেই সব থেকে বেশি ভালবেসেছিলাম। কিন্তু তিনি শুধু সম্পত্তির জন্য আমায় মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেন নি। উল্টো তিনি কার এক্সেডেন্টে মারা জান। যখন জানতে পারি তিনি আমাকে মারতে চেয়েছিলেন তখন অনেক কষ্ট পাই। মনে হয়েছিল কেউ ধুমরে মুচড়ে দিয়েছে আমাকে। সেই আঘাত থেকে বের হতে আমায় অনেক সময় লেগেছিল। আপন জনের আঘাত যে সহজে ঠিক হয় না।

নীলাঃ হ্যাঁ অনেক কষ্ট দায়ক। আর সেটা যদি ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে হয় তাহলে তহ আরও বেশি কষ্ট দায়ক তাই না।

অর্ণবঃ হুম। আজ তোমায় একটা কথা বলে রাখি। আমায় তুমি যতই আঘাত কর না কেন। কিছু বলবো না। আমার ঠোঁট দিয়ে উফফ পর্যন্ত বের হবে না। কিন্তু এইখানে ( আঙুল তা বুকের বা দিকে দেখিয়ে) কখনো করো না। সহ্য করতে পারব না। তিলে তিলে মরে যাব।

পাঠক আপনাদের জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত লিখে থাকি। আপনাদের আনন্দ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ। তাই এই পর্বের “বেস্ট থ্রিলার গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো পড়া শেষে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

নীলাঃ আমি তহ তোমায় এইভাবে মরতে দিব না। এই বলে অর্ণবকে জরিয়ে ধরে। অর্ণব ও নীলাকে আয়েশে জরিয়ে ধরে।

কিছুদিন পর….

আজ অর্ণব আর নীলা যাচ্ছে নীলা এর বাসায়। নীলা এর বাবার সাথে দেখা করতে। অর্ণব আজ তার মায়াবতীর হাত চাইতে যাবে চিরতরের জন্য। সকলের সামনে নিজের বউ বানিয়ে আনবে। গাড়ি চলছে আপন গতিতে।

ঠিক দুইরাস্তার মড়ে এসে নীলা বায়ে যেতে বলে। কিন্তু তাদের যাওয়ার কথা ডানে। অর্ণব কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে সোর্টকাট। অর্ণবও কিছু না বলে সেইদিকেই গাড়ি ঘুরায়। ঠিক কিছু দূর যাওয়ার পর নীলা গাড়ি থামাতে বলে অর্ণবও থামায়। নীলা আর অর্ণব গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। অর্ণব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে নীলা এর দিকে তাকাতেই আতকে উঠে। নীলা এর হাতে গান। আর তা অর্ণব এর দিকে তাক করে রাখা আছে।

অর্ণবঃ এইসব কি হচ্ছে নীলা। এইটা কোন ধরনের ফাজলামো।

নীলাঃ কোন ফাজলামো না। তুমি যা করেছ তার শাস্তি দিতে আজ তোমায় এইখানে আনা হয়েছে।

অর্ণবঃ কিসের শাস্তি। কি করেছি আমি।

নীলাঃ নিষ্পাপ মানুষের হত্যাকারী তুমি। খুনি তুমি। খুনি। নরপশু একজন। তোমার বেচে থাকার কোন অধিকার নেই।

অর্ণবঃ আমি কোন খুনি না। আর না কাউরো খুন করেছি।

নীলাঃ ওহহ প্লিজ। বন্ধ করো তোমার মিথ্যা কথা। সহ্য হয় না আমার এইসব। তোমার এই মিথ্যা ভালবাসা। এই ভালো হওয়ার অভিনয়। উফফ অতেষ্ট হয়ে গেছি আমি। আমি শুধু তোমায় ঘৃণা করি। ঘৃণা।

অর্ণবঃ আমার ভালবাসা তোমার কাছে মিথ্যা। অভিনয়।

নীলাঃ তা বাদে আর কি?

অর্ণবঃ তাহলে তোমার ভালবাসাও কি অভিনয় মিথ্যা।

নীলাঃ হ্যাঁ মিথ্যে। অল্প বয়সে থেকে কিছু মিথ্যা আবেগে জরিতে গিয়েছিলাম। আর কিছুই না। আমি আর যাই হোক কোন খুনিকে ভালবাসতে পারি না।

অর্ণব এর ভিতর থেকে এক দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে আসে।

অর্ণবঃ এখন তুমি কি চাও?

নীলাঃ তোমার মৃত্যু।

অর্ণবঃ তাহলে তাই হোক। ভালবাসার হাতে মরছি। আমার মত সৌভাগ্য কত জনেরই হয় বলো। কিন্তু মরার আগে একটা কথাই বলবো। আমাকে এইভাবে মেরো যাতে আমার বাচার বিন্দু মাত্র চান্স না থাকে। তা না হলে আল্লাহের কাছে দোয়া কইরো যে আমি যাতে ফিরে না আসি। তা না হলে আমি কি করবো আমি নিজেও জানি না।

নীলা একটা মুচকি এসে অর্ণব এর বুকের বা পাশে টিগার পোয়েন্ট করে। আর চালিয়ে দেয় গুলি। গুলিটি গিয়ে ক্ষোপ করে অর্ণব এর বুকে ঢুকে বের হয়ে যায়। অর্ণব বুক গিয়ে গল গল করে রক্তের বন্যা ভেসে যেতে থাকে। আস্তে আস্তে মাটিতে লুটিয়ে পরে অর্ণব এর দেহ। অর্ণব এইবার একটা মুচকি হাসি দিয়ে নীলাকে বলে,

অর্ণবঃ যেখানে আঘাত করতে মানা করেছিলাম সেখানেই আঘাতটা করলে। আজ আমায় চিরতরের জন্য শেষ করে দিলে। শেষ করে দিলে আমার মনের সকল অনুভুতি ভালবাসা। আশা করি এখন তুমি খুশি।

অর্ণব এর গলা ধরে আসছে। কথা বলতে পারছে না আর সে। কাতরাচ্ছে। তা দেখেও নীলা এর মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া নেই। অর্ণব অনেক কষ্টে বলে,

অর্ণবঃ আমার একটা শেষ ইচ্ছে পুরণ করবে। বলবে তোমার মুখ দিয়ে ভালবাসি।

নীলাঃ ঘৃণা করি তোমায়। শুনেছ ঘৃণা করি।

এই বলে নীলা উল্টো পথে হাটা শুরু করে। তার চোখ দিতে পরছে অজস্র পানি। এতক্ষণ নিজেকে সামলাতে পারলেও এখন নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না। চোখের পানি বাধ মানছে না।

অর্ণব নীলা এর চলে যাওয়া দেখছে। তারও চোখ দিয়েও এক ফোটা নোনা জল গরিয়ে পরলো। যে অর্ণব রহমান কাউরো সামনে নত হয়নি। যে নাকি কখনো হার মানতে শিখে নি। সে আজ তার ভালবাসার কাছে হাড় মেনে নিয়েছে। আজ সে ভালবাসার কাছে সব বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে।

অর্ণব এর চোখের সামনে অন্ধকার ছেয়ে আসছে। চোখ দুটো লেগে আসছে। পারছে না আর চোখ মেলে রাখতে। ঘুমে ঢলে পরছে সে।

কিন্তু তাও চেষ্টা করছে মেলে রাখার। যতক্ষণ না তার মায়াবতী আবছা আলোতে মিলিয়ে যায়। কিন্তু আফসোস সে পারলো। চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসলো। পারি দিল এক অজানা ঘুমের রাজ্যে।

চলবে

দ্য লেডি লাভার
লেখিকাঃ তানজিন ইসলাম

আরো পড়ুনঃ দ্য এডিকটেড লাভার – সিজন ১ । খুনের থ্রিলার গল্প

দ্য এডিকটেড লাভার – সিজন ৩ । শীঘ্রই আসিতেছে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *