ম্যামের বোনের সাথে প্রেম – দুষ্টু প্রেমের মিষ্টি গল্প

ম্যামের বোনের সাথে প্রেম – দুষ্টু প্রেমের মিষ্টি গল্প: আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড না যে আপনার সাথে চিপকে বসবো। আপনি যেমন মেয়েদের দূরত্ব বজায় রাখেন আমিও ঠিক তেমনিভাবে ছেলেদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলি বুঝলেন এটা বলতে বলতে নিলা রিক্সায় উঠে বসলো।


পর্ব ১

কয়েকদিন অসুস্থ থাকার কারণে কলেজ প্রাইভেট কোনোটাই যেতে পারিনি। আজকে একটু ভালো লাগছে সকালে কলেজে যেতে পারিনি কিন্তু প্রাইভেটে যাচ্ছি।
একাই যাচ্ছি সবাই মনে হয় চলে গেছে।

আমার যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না। কিন্তু ভালো লাগার ফলে যাচ্ছি আর সামনে পরীক্ষা এখন একটু পড়তে হবে না হলে ফেল করবো।
ম্যামের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যাই।

বাসায় গিয়ে কলিংবেল চাপ দিতেই অপরিচিত একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো।
দেখেই আমি হা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।
মেয়েঃ অই মিস্টার অমনভাবে হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো মশা ঢুকে যাবে।
মেয়ের কথায় আমি বাস্তবে ফিরলাম।
আমিঃ না মানে আমি মনে হয় ভুল বাসায় চলে এসেছি।

মেয়েঃ আপনি কার বাসায় এসেছেন?
আমিঃ জি আশা ম্যামের কাছে প্রাইভেট পড়ি আর ম্যামের বাসা এই ফ্লোরেই মনে হয় ম্যাম ফ্লাট চেঞ্জ করেছে।
মেয়েঃ আপনি ঠিক বাসায় এসেছেন।
আমিঃ আপনাকে তো এর আগে কোনো দিন দেখিনি তাহলে ম্যাম কি নতুন কাজের বুয়া রাখলো নাকি?
মেয়েঃ না জেনে কথা বলেন কেনো? আমাকে দেখি কি আপনার কাজের বুয়া মনে হয়ম্ম।

আমিঃ মনে তো হয়না কিন্তু কি আর করার এতো সুন্দর একটা মেয়ে কি করে কাজের বুয়া হয় সেটাই মাথায় আসছে না।
মেয়েঃ আর একবার আমাকে কাজের মেয়ে ভেবে ভুল করলে আপনাকে নাকে এমন ঘুষি দিবো যে নাক বলে কিছু থাকবেই না।
আমিঃ আচ্ছা আপনি কে আর ম্যাম কই?

মেয়েঃ আমি নিলা আর আপু পড়াচ্ছে।
আমিঃ আচ্ছা আপনি কে সেটা আর জানতে চাই না সরেন আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।
মেয়েটা সরে দাঁড়ালো আর আমি ভেতরে চলে গেলাম।
ম্যাম আসবো?
ম্যামঃ হ্যা মামুন আসো। এতোদিন পরে এলে?
আমিঃ আসলে ম্যাম কয়েকদিন অসুস্থ ছিলাম তো?

ম্যামঃ এখন ঠিক আছ তো?
আমিঃ হ্যা ম্যাম আজকে একটা ভালো লাগছিলো তাই ভাবলাম প্রাইভেট পড়ে আসি।
ম্যামঃ একদম ঠিক করেছ আজকে পরীক্ষার জন্য কিছু সাজেশন দিবো সেটাও পেয়ে যাবে।

তারপর….

সবাই মিলে পড়তে লাগলাম। পড়া শেষ করে যখন বাসায় আসার জন্য দাঁড়ালাম প্রথমে মাথাটা একটু ঘুরলো ভাবলাম শরীর দূর্বল তাই হয়তো এমন লাগছে।!আমি সবার সাথে বের হচ্ছিলাম কিন্তু হঠাৎ কি হলো সেটা আমি নিজেও জানিনা। কতক্ষণ অচেতন অবস্থায় ছিলাম সেটা জানিনা। তবে যখন জ্ঞান আসে তখন দেখি আমি ম্যামের বাসায় শুয়ে আছি আর পাশে সেই মেয়েটা বসে আছে।

আমিঃ আমি এখানে কেনো?
মেয়েঃ ন্যাকা মনে হয় কিছুই জানে না। আমার উপর আপনি তখন ইচ্ছা করে পড়েছিলেন তাই না?
আমিঃ আমি আবার কখন আপনার উপর পড়তে গেলাম।
মেয়েঃ একদম ঢং করবেন না। আপনার জন্য আপু আমাকে বকেছে জানেন?
আমিঃ কেনো আপাকে কেনো বকা দিছেয়ে?
মেয়ে না ওর নাম তো নিলা।

নিলাঃ আপু ভাবছে আমি আপনাকে ল্যাঙ মেরেছি আর আপনি সেই ল্যাঙ এর জন্য পড়ে গেছেন।
আমিঃ আসলে আমি নিজেও জানিনা আমার কেনো এমন হলো?
নিলাঃ সুন্দরি মেয়ে চোখের সামনে দেখলে সবারি এমন হয়।
এমন সময় ম্যাম এসে বললো নিলা কি সব বলছিস তুই জানিস কলেজে যদি কোনো ভালো ছেলে থাকে তাদের মধ্যে মামুন একজন।
নিলাঃ আপু তুমি জানো না এই বদমাশ ছেলে ইচ্ছা করে তখনন আমার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলো।

ম্যামঃ মারবো টেনে এক চড় কি সব বলছিস। যে ছেলে কিনা সব সময় মেয়েদের থেকে দূরে থাকে সেই ছেলে তোর উপর পড়বে এটা আমি বিশ্বাস করবো?
নিলাঃ আপু তুমি আমার বোন নাকি ওর বোন? এমনভাবে বলছ মনে হয় আমি সব দোষ করেছি?
আমিঃ ম্যাম ওনার কোনো দোষ নেই আসলে আমার মাথাই প্রচণ্ড ঘুরে গেছিলো নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি তাই।
ম্যামঃ অসুস্থ তো তাই এমন হয়েছে এখন তুমি বাসায় যেতে পারবে?

আমিঃ হ্যা ম্যাম পাড়বো।
ম্যামঃ আচ্ছা তাহলে যাও। আসলে ম্যাম আমাকে একটু বেশি আদর করে ম্যামের পছন্দের মধ্যে আমি একজন।
আমি উঠে দাঁড়াতেই আবার মাথা ঘুরে গেলো।
আমি ধপ করে বসে পড়লাম।
ম্যামঃ বুঝতে পেরেছি তুমি একা?
যেতে পারবে না, এই নিলা যা তো ওকে একটু বাসায় দিয়ে আয়।

নিলাঃ আপু তুমি কি পাগল হয়ে গেছ? আমি তো এখনো তেমন কিছুই চিনিনা জানিনা
ম্যামঃ তো কি চিনতে হবে তো নাকি? আমি দিয়ে আসতাম এখন আবার আমাকে একটু বাজারে যেতে হবে তাই তোকে বলছি যা দিয়ে আয় আর মহল্লাটা একটু দেখে আয়।
ম্যামের বাসা থেকে আমাএ বাসায় হেটে যেতে লাগে ৩০ মিনিট আর রিক্সাতে করে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট।
আমিঃ ম্যাম আমি পারবো শুধু শুধু ওনাকে কষ্ট করতে হবে না।

ম্যামঃ পারবে মানলাম কিন্তু যদি রাস্তায় মাথা ঘুরে পরে যাও তাহলে কি হবে ভেবে দেখেছ তাই নিলা তোমাকে নিয়ে যাক আর বাসায় ছেড়ে দিয়ে আসুক।
আমিও না করলাম না কারণ সত্যি যদি মাথা ঘুরে পড়ে যাই তাহলে কি হবে।
নিলাও মনে হয় ওর আপুকে খুব ভয় পাই তাই আর না করেনি।
নিলাকে সাথে করে বেরর হলাম।

নিলা মনে হয় খুব বিরক্ত হচ্ছে।
একবার তো বলেই বসলো আচ্ছা এই অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রাইভেটে না আসলে হয় না?
আমিঃ আমি কি জানতাম নাকি আমার আবার এই রকম খারাপ লাগলে। আগে জানলে আমি কোনোদিনন আসতাম না।
নিলাঃ শুনুন এরপর যতদিন না সুস্থ হবেন তার আগে প্রাইভেটে আসবেন না বুঝলেন।

আমি আর কোনো কথা বললাম না।
নিলাই একটা রিক্সা ডেকে নিলো।
আমি রিক্সায় উঠে বললাম থাক আপনাকে আর যেতে হবে না। আমি একাই যেতে পারবো।
নিলাঃ একদম চুপ থাকেন আজকে আপনার জন্য অনেক গুলো কথা শুনেছি আর নতুন করে কোনো কথা শুনতে পারবো না। আপু যেটা বলেছে আমি সেটাই করবো। একটু অই দিকে চেপে বসেন।

আমিঃ তাহলে আপনি আলাদা রিক্সায় যান না প্লিজ?
নিলাঃ এতো ভদ্র সাজার দরকার নেই।
আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড না যে আপনার সাথে চিপকে বসবো। আপনি যেমন মেয়েদের দূরত্ব বজায় রাখেন আমিও ঠিক তেমনিভাবে ছেলেদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলি বুঝলেন এটা বলতে বলতে নিলা রিক্সায় উঠে বসলো।

আমি একটু চেপে বসলাম কিন্তু যতই চেপে বসি রিক্সা তো একজনের সাথে অন্য জনের টাচ লাগবেই তবুও যতটা সম্ভব আমি চেপে বসেছি।
আমি যতই চেপে বসছিলাম ঝাঁকিতে নিলা আমার দিকেই তত চলে আসছিলো।
চাপতে চাপতে এমন স্থানে চলে গেছি যে পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছে।
নিলাঃ আরে করছেন কি পড়ে যাবেন তো এইদিকে আসুন।

আমিঃ কি করবো আপনি তো আমার দিকে চেপে আসছিলেন।
নিলাঃ আচ্ছা আমি সরে বসছি আপনি এইদিকে আসুন।
নিলা একটু সরে বসলো আর আমিও যায়গামত বসলাম। রিক্সা করে যখন বাজার পার হচ্ছিলাম তখন দেখি আব্বু বাজারে আর আমাদের দিকে কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে।
আব্বুকে এমন অবস্থায় দেখে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো।

কারণ আজকে বাসায় গেলে আমারর খবর আছে।
বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে নিলা সেই রিক্সায় করে আবার চলে গেলো।
আর আমিও এতোই ভিতু যে একবার যে নিলাকে ভেতরে আসতে বলবো সেই সাহস টুকু পায়নি।
আমি বাসায় গিয়ে আমার রুমে চলে গিয়ে শুয়ে পড়লাম কতক্ষণ পর নিচে চেঁচামেচিরর শব্দ শুনতে পেলাম। আমি তো ভয়ে শেষ কারণ আব্বু আম্মুর সাথে আমার ব্যাপারে কথা বলছে কতক্ষণ পর আব্বু আম্মু আমার রুমে আসলো।

আব্বুঃ তা বাছাধন পড়ালেখা বাদ দিয়ে আজকাল তুমি কি অইসব করেই বেড়াও নাকি?
আমিঃ আব্বু তুমি কিসেরর কথা বলছ?
আব্বুঃ এখন তুমি কিছুই জানো না? তা কতদিন ধরে অইসব চলছে?
আমিঃ আব্বু আমি কিছুই বুঝতেছি না।

আব্বুঃ আরে বাহ বাছাধন আমার এখন কিছুই বুঝে না আজকে যখন রিক্সায় করে অমন চিপকিয়ে অই মেয়েটার সাথে যাচ্ছিলে সেটা আমি দেখে ফেলেছি।
ঘুরতে খুব ভালো লাগে তাই না, এলাকায় কিভাবে আমার মান সম্মান ডোবানো যাই তুমি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছ। তোর কি মনে নাই ছোটবেলায় আমি তোকে কি বলেছিলাম মেয়েদের থেকে দূরে থাকতে বলছিলাম না।
আমিঃ আব্বু তুমি যাও তো আমার রুম থেকে আমার ভালো লাগছে না।
আব্বুঃ এখন কেনো ভালো লাগবে সব সত্যি টা আমি জেনে গেছি তো।


পর্ব ২

আব্বু তুমি যাও তো আমার ভালো লাগছে না শুয়ে থাকতে দাও।
আব্বুঃ হ্যা এখন কেনো ভালো লাগবে সত্যি টা আমি জেনে গেছি তো।
আমিঃ আব্বু যা দেখেছ সেটা ভুল দেখেছ। অই মেয়েটা আমার কেও না। আজকেই আমাদের প্রথম দেখা।
আব্বুঃ ভালো তো। প্রথম দেখাতেই এতো ঘনিষ্টটা? রিক্সাতে চিপকিয়ে যেতে হয়।

আমিঃ আব্বু তুমি সব কিছু না জেনে ভুলভাল বলছ কেনো?
আব্বুঃ আমি সব কিছু দেখেই বলছি।
আমিঃ তোমার দেখার মধ্যে ভুল ছিলো আব্বু।
ওটা আমার ম্যামের বোন আমাকে বাসায় ছাড়তে আসছিলো।

আব্বুঃ তার মানে তুই ম্যাডামের বোনের সাথে রিলেশন করিস?
আমিঃ ধুর আমি আজকে পড়তে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম তাই ম্যাম তার বোনকে বলেছিলো আমাকে এই বাসায় পৌছে দিতে। যদি তাও বিশ্বাস না করো তাহলে ম্যামকে ফোন দিয়ে জেনে নাও।
আব্বুঃ এই কথাটা এতোক্ষন বলিস নাই কেনো শুধু শুধু এতো গুলো কথা খরচ করলাম।

আমিঃ আব্বু তুমি আমাকে বলতে দিলে তো বলতাম তুমি তো নিজের মত করে বানিয়ে বলছিলে।
আব্বুঃ কি করবো বল অই মেয়ের সাথে তোকে দেখে রাগ হচ্ছিলো তাই আচ্ছা এখন কেমন লাগছে? আর তুই সময় মত ওষুধ খাচ্ছিস তো?
আমিঃ হুম আব্বু খাচ্ছি আমি এখন ঘুমাবো তুমি যাও তো?
তারপর আব্বু আর আম্মু চলে গেলো।

আর আমিও শান্তির ঘুম ঘুমাইলাম।
কয়েকদিন পর আমি অনেক সুস্থ হয়ে গেছি
তাই আজ থেকে আবার কলেজে যাবো।
রেডি হয়ে বেড় হচ্ছিলাম তখন পেছন থেকে আম্মুর ডাক।

আম্মুঃ এই মামুন দাড়া।
আমিঃ হ্যা আম্মু বলো?
আম্মুঃ এই নে তোর এই কইদিনের সব পকেট মানি।
আমিঃ কিন্তু আম্মু আমি তো এই কদিন কলেজে যাই নাই।
আম্মুঃ তুই গেলে তো লাগতো আর রেখে দে কাজে লাগতে পারে।

আমি আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে কলেজে চলে গেলাম।
পকেট ভর্তি আজ টাকা তাই একটু ফুটানি মেরে রিক্সায় না গিয়ে মোটরসাইকেল কলেজে গেলাম।
মাত্র নেমেছি আর অমনি হারামি রাফি আর নাজমুল আসলো।
রাফিঃ কিরে মামু শুনলাম তুই নাকি ম্যাডামের বোনের সাথে টাংকি মারছিস?
আমিঃ ধুর শালা কি বলিস এইসব?

নাজমুলঃ জানি সেদিন রনি সব দেখেছিলো।
ভাগ্য তোর রে মামু একদিনের কিভাবে পটিয়ে ফেললি? আমরা কদিন যাবত চেষ্টা করছিলাম কেও কথা বলতে পাড়লাম না আর তুই প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি করে দিলি। তা তোর মহারানী এখনো আসলো না কেনো?
আমিঃ আমার মহারানী মানে(অনেক টা অবাক হয়ে)

রাফিঃ মহারানী মানে নিলা এখনো আসলো না কেনো?
আমিঃ নিলা কেনো এখানে আসতে যাবে?
রাফিঃ কেনো আসবে মানে? তুই কি কিছুই জানিস না মামুন নিলা তো এই কলেজেই ভর্তি হয়েছে?
আমিঃ তো কি হয়েছে।
নাজমুলঃ এতো ভাব ধরতে হবে না
অই দেখ ভাবি আসছে। এই বলে ওরা নিলাকে দেখিয়ে দিলো।

আমি খেয়াল করে দেখলাম নিলা কোথাও না দাঁড়িয়ে সোজা ক্লাসে চলে গেলো।
আমরাও কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম। আমরা বরাবর পেছনের সিটে বসি। কারণ সামনে বসলে স্যারদের লেকচার শুনতে শুনতে মাথা হ্যাং হয়ে যাই আর পেছনে বসলে নিজেদের মধ্যে কথা চালিয়ে গেলেও কেও বুঝতে পারে না।
আমরা বসে পড়লাম কিছুক্ষণ পর ক্লাস শুরু হয়ে গেলো।

প্রথম ক্লাসটা স্যারের স্যার চলে আসছে। সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম।
স্যারের মত স্যার ক্লাস করছে আর আমাদের মত আমরা গল্প করেই যাচ্ছি।
নাজমুলঃ দোস্ত আজ অনেক দিন হলো মিমের পেছনে লেগে আছি কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
আমিঃ শুধু তো ঘুড়েই যাচ্ছিস কোনো সামনে দাঁড়িয়ে তোর ভালোবাসার কথা মিমকে বলেছিলি?
নাজমুলঃ একবার বলেছিলাম তারপর থেকে আমি বা কানে কম শুনি।

আমিঃ তো আর একবার বল দেখবি প্রব্লেম ঠিক হয়ে গেছে।
নাজমুলঃ আমি কিছু করতে পারবো না তুই কিছু একটা আইডিয়া দে না ভাই।
আমিঃ দেখতো মিম কোথায় বসেছে?
নাজমুলঃ অই তো নিলার সাথেই বসেছে দেখ।
আমিঃ আরে নিলা কোথায় বসেছে।

নাজমুলঃ অই তো অই যে দেখ। আমাকে দেখিয়ে দিয়ে।
এক কাজ কর এখটা কাগজে ছোট করে লেখ আই লাভ ইউ।
নাজমুলঃ লেখলাম তারপর।?
অইটাকে ছোট ভাজ কর।
নাজমুল ছোট ভাজ করে বললো হ্যা করেছি।

নাজমুলঃ এখন এটা দিয়ে কি করবি?
আমিঃ এখন আমি এটা মিমকে ছুড়ে মারবো মিম তোর আমাদের দিকে তাকাবে, তখন তুই ইশায়ার বুঝিয়ে দিবি তুই ওকে খুব ভালোবাসিস।
আর ভয় পাস না ও স্যারকে কিছু বলবে না, আর পরে তকে চড় ও মারবে না এইভাবে কয়েকদিন করে দেখ মিম তোর প্রেমে পড়ে যাবে।
নাজমুলঃ তাহলে এখনো এটা হাতে নিয়ে বসে আছিস কেনো? দে ছুড়ে।
আমি কাগজটা ছুড়ে মারলাম।

কিন্তু সেটা মিমের কাছে না গিয়ে চলে গেলো নিলার কাছে।
নিলা কাগজটা খুললো। তারপর আমাদের দিকে তাকালো। আমরা তো ভয়ে শেষ।
আর এরি মধ্যে মিতু নিলার কানের কাছে কিছু একটা বললো।

নিলা দাঁড়িয়ে স্যারকে ডাকলো।
নিলাঃ স্যার এইটা কি পড়ালেখা করার যায়গা নাকি প্রেম নিবেদন কেন্দ্র?
স্যারাঃকেনো নিলা কি হয়েছে।
নিলাঃ এই দেখেন স্যার পেছন থেকে এটা আমাকে ছুড়ে দিয়েছে।
স্যার নিলার হাত থেকে নিয়ে নিলো।

স্যারঃ কে দিয়েছে তুমি দেখেছ?
নিলাঃ হ্যা স্যার আমি দেখেছি অই যে অই ছেলেটা দিয়েছে? আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বললো।
স্যার আমাকে দাঁড়াতে বললেন।
স্যারঃ মামুন তুমি কি এই কাগজ ছুড়ে মেরেছ?
আমিঃ জি স্যার আমি মেরেছি কিন্তু স্যার?

স্যারঃ কোনো কিন্তু নয় এটা কি পড়ালেখা করার যায়গা নাকি প্রেম নিবেদনের যায়গা।
আমিঃ স্যার মানে?
স্যারঃ আবার কথা বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকো।
আর নিলা তুমি বসে পড়ো।

থাক বাবা বেচে গেছি ভাবছিলাম প্রিন্সিপালের কাছে নিয়ে যাবে। কতক্ষণ যেতে না যেতেই আমার হারামি বন্ধুগুলো আমালে খোঁচাতে শুরু করে দিলো।
আমি বসেছিলাম মাঝখানে সেই অনুপাতে আমি দাড়িয়েও ছিলাম মাঝখানে দুজনের খোচানি সহ্য করতে না পেরে আমি স্যারকে ডাক দিলাম।
স্যার দেখেন এই দুজন আমাকে খোঁচাচ্ছে।
এমনিতেই স্যার আমার উপর রেগে আছে তার উপর আবার দিছি বিচার।

স্যারঃ দাড় করিয়ে রেখেছিলাম তাতে ভালো লাগলো না। কানে ধর বেয়াদব।
আমি চুপ করেই দাঁড়িয়ে আছি।
কি হলো কথা কান দিয়ে যাচ্ছে না তোকে কানে ধরতে বলছি তো নাকি? কানে ধরবি নাকি তোকে প্রিন্সিপালের কাছে নিয়ে যাবো?
প্রিন্সিপালের কথা শুনে আমার গলা শুকিয়ে গেছে।

আমি কানে ধরলাম। ক্লাসের বাকি ছাত্রছাত্রী হাসাহাসি শুরু করে দিছে। আমি নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি কতক্ষণ পর পর আমার দিকে তাকাচ্ছে আর মিটিমিটি করে হাসছে।
ক্লাস শেষ হয়ে গেলো কিন্তু স্যার এটা বলে গেছে যে আমি যেনো না বসি যদি ম্যাম আমাকে বসতে বলে তাহলেই আমি বসতে পারবো। এদিকে আমার কান্না চলে এসেছে আমি মনে হয় জোকার সবাই আমাকে দেখে মজা নিচ্ছে।

তবে রাফি আর নাজমুল চুপ করেই বসে আছে কেও কোনো কথা বলছে না।
আমার শুধু ভয় হচ্ছে একটা নেক্সট ম্যাডামের ক্লাস। আর ম্যাডামটা অন্য কেও নয় নিলার বোন।
যদি ম্যাম শুনে আমি তার বোনকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছি তাহলে তো আমার খবর আছে।
যতইই আদর করুক না কেনো আজকে বড় ধরণের শাস্তি আমার কপালে আছে।

ম্যাম আসা মাত্রই আমার দিকে নজর দিয়ে বললো কি হলো মামুম কান ধরে দাঁড়িয়ে আছ কেনো।
কেও একজন বললো ম্যামম ও নিলাকে আজকে ক্লাস চলাকালীন কাগজে আই লাভ ইউ লিখে ছুড়ে মেরেছিলো।
ম্যাম আমাকে কান ছাড়তে বললেন।
তারপর বললেন সেই কাগজটা কই?

সেটা তো আহাম্মদ স্যার নিয়ে গেছে ম্যাম সাথে সাথে বের হয়ে গেলেন কিছুক্ষণ পর আবারর চলে আসলেন।
আমাদের কাছে এসে বললেন মামুনন এটা তোমার হাতের লেখা নয়। এটা নাজমুলের হাতে লেখা এখন বলো আসল সত্যি বলো। তখন আমরা তিনজন সব কিছু ম্যামকে বললো আসল ঘটনা কি?
ম্যাম আমাদের বললেন নেক্সট জেনো আর ক্লাসে এইসব না করি। আর নিলাকেও কি জেনো একটা বললো।

ক্লাস শেষে আমি নাজমুল আর রাফি বাসায় ফিরছি।
নাজমুলঃ সরি দোস্ত আজকে আমার জন্যই তোকে এইভাবে শাস্তি পেতে হল। আমি কোনো কথা বলছি না চুপচাপ হেটে যাচ্ছি মন খুব খারাপ আজকে আমাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করেছে তার জন্য।
সারা রাস্তা কোনো কথা বলেনি।

বাসায় এসে অল্প কিছু খেয়ে শুয়ে পড়ছিলাম।
বিকালে আম্মু ডেকে দিলো প্রাইভেটে যাবার জন্য আমি গোসল করে প্রাইভেটের উদেশ্যে রওনা দিলাম।
ম্যামের বাসায় গিয়ে কলিংবেলে চাপ দিতেই নিলা এসে দরজা খুলে দিলো।

তারপর….

নিচের দিকে তাকিয়ে বললো সরি আসলো আমি বুঝতে পারিনি ওটা আপনি আমাকে দেননি।
সরি হ্যা
যান আপু পড়াচ্ছে পড়ুন গিয়ে।
আর আপু জিজ্ঞাস করলে বলবেন আমি সরি বলেছি।
আমি কোনো উত্তর না দিয়ে ভেতরে চলে যেতে লাগালাম।
নিলাঃ কি হলো হ্যা না ইটস ওকে কিছু একটা তো বলেবন তো নাকি? কিছু না বলে চলে যাচ্ছেন কেনো


পর্ব ৩

কি হলো কিছু না বলে চলে যাচ্ছেন কেনো?
হ্যা না অথবা ইটস ওকে কিছু একটা বলে তো যান।
আমি তাও কিছু না বলে চুপচাপ চলে গেলাম
ম্যাম যে ফ্লাটে থাকতো তাতে ৩টা রুম ছিলো ম্যাম একাই থাকতো ম্যামের বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু কোনো এক কারনে তারা আলাদা হয়ে গেছে।

৩রুমের একটার মধ্যে একটাই কিছু বেঞ্চ ছিল আর সেটাই আমাদের পড়াতো।
ম্যাম আসবো?
ম্যামঃ হ্যা আস দেড়ি হলো কেনো?
আমিঃ না ম্যাম এমনি একটু দেড়ি হয়ে গেলো।
ম্যামঃ তোমার কি কোনো কারণে মন খারাপ মামুন?

আমিঃ হ্যা ম্যাম ক্লাসে অমনভাবে কানে ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম সবাই আমাকে নিয়ে কত মজা করলো।
ম্যামঃ আরে অটা কোনো ব্যাপার হলো মামুন?
ভুল করে হয়ে গেছে আর যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে মন খারাপ করে থাকতে হবে না যাও গিয়ে বস।
তারপর আমি গিয়ে বসে পড়লাম কিছুক্ষণ পর নিলাও চলে আসলো। পড়ায় মন দিলাম।

সন্ধ্যা অবধি পড়ে বাসায় চলে এলাম।
কিছুতেই তখনকার ব্যাপার ভুলতে পাড়ছি না বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে।
আর নিলাকে যে শাস্তি দিবো সেটাও মন চাচ্ছে না।

কারণ নিলা যেটা করেছে একদম ঠিক করেছে ভুল তো আমারি। যাই হোক এটা আর ভাববো না যেটা যতবেশি ভাবা হয় তার জন্য মন ততবেশি খারাপ হয়।?
রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরদিন আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল।

এই নবাবজাদা আর কত ঘুমাবি তোর কলেজের সময় হয়ে গেছে।?
আমিঃ আম্মু যাও তো বিরিক্ত করো না আজ কলেজে যাবো না।
আম্মুঃ ভালোই ভালোই উঠবি নাকি পানি ঢেলে দিবো। এমনিতেই অসুস্থতার কারনে কতদিন কলেজে যেতে পারিস নাই আবার এখন সুস্থ তাও বলছিস কলেজে যাবি না।!উঠ বলছি উঠ উঠে রেডি হয়ে কলেজে চলে যা।

নাহ আম্মু যেটা শুরু করেছে তারপর আর শুয়ে থাকা যাবে না। আমি উঠে প্রথমেই ফ্রেশ হয়ে নিলাম তারপর খেয়ে রেডি হয়ে কলেজে চলে গেলাম।
রাফি আর নাজমুল ক্যাম্পাসেই বসে ছিলো আমিও ওদের কাছে গেলাম।
রাফিঃ এই তো মামুন চলে এসেছে।
আমিঃ কেনো আমার জন্য কি তোরা অপেক্ষা করছিলি নাকি?

নাজমুলঃ হ্যারে ভাই আজকে মিমমে ক্যাম্পাসের সবার সামনে প্রপোজ করবো।
আমিঃ কিন্তু মিম যদি তোকে আবার চড় মারে।
নাজমুলঃ আজকে যদি আমাকে ফিরিয়ে দেই আর ওর পেছনে ঘুরবো না অনেক ঘুরেছি গত দুইমাস ধরে ওর পেছনে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি আর না আজকে রাজি হলে হবে নয়তো অন্য একটা খুঁজে নিবো।
আমিঃ আরে মামু তুই এতো রেগে আছিস কেনো?

নাজমুলঃ তো রাগবো নাতো কি করবো?
মিম আমার সামনে আসলে রেগে যাই আর আজকে অই ছেলেটার সাথে আসলো তাও আবার এতো ক্লোজ হয়ে।
রাফিঃ এইবার বুঝলাম নাজমুল কেনো সকাল থেকে এতো রেগে ছিল।
আমিঃ আচ্ছা চল তাহলে প্রপোজ করে আসি।

নাজমুলঃ হুম চল
আমরা তিনজন মিলে মিমের কাছে চলে গেলাম।
নাজমুল মিমকে উদেশ্যে করে বললো এই মিম একটু শুন?
মিমঃকি ব্যাপার আবার তুমি এসেছ তোমাকে না বলে দিছিলাম আর আমার সামনে না আসতে। আর ভালো কথা তুমি ক্লাসে অমনভাবে আমার দিকে তাকিয়ে কেনো থাকো?
নাজমুলঃ ওমা তুমি সেটা খেয়াল করো নাকি? তার মানে তুমিও আমার দিকে তাকিয়ে থাকো?

মিমঃআমি মোটেও তোমার দিকে তাকাই না, আমার বান্ধবীরা বলে তুমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকো।
নাজমুলঃ সে যাই হোক আমি তোমাকে এই শেষবারের মত বলতে এসেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মিমঃকিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি না, আর কোনো দিন বাসবো না।
নাজমুল এইই উত্তরটা শুনেই সোজা ক্লাসে চলে গেলো।

আমি আর রাফিও সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ক্লাসে চলে গেলাম। ক্লাসে গিয়ে দেখি নাজমুল শেষের বেঞ্চে বসে বাচ্চাদের মত কান্না করছে।
কিরে ভাই কান্না করছিস কেনো?
নাজমুলঃ কান্না করবো নাতো কি করবো? আমি ওকে কত ভালোবাসি সেটা মিম বুঝলো না।
আমিঃ আরে ব্যাপার না একটা হয়নি তো কি হয়েছে ওর থেকে অনেক ভালো মেয়ে তোর জীবনে আসবে।

নাজমুলঃ আমার তো ওর থেকে ভালো
কাওকে চাই না, আমি মিমকেই চেয়েছিলাম কিন্তু মিম আমাকে কোনো দিন চাইনি। নাহ অনেক হয়েছে আজ থেকে আমি মিমকে ভুলে যাবো। এটাও ভুলে যাবো আমি কোনো দিন মিমকে ভালোবেসেছিলাম
আমিঃ সেটাই কর ভাই আর কান্না থামা সবাই তোকে দেখতে আছে।

নাজমুল নিজের চোখের পানি মুছে ফেললো।
এর মধ্যে ক্লাসে নিলা আসছে। আমি দেখেও না দেখার ভান করলাম। কারণ নিলাকে দেখলেই আমার কালকের কথা মনে পড়া যাচ্ছিলো।
নিলাও আমার দিকে চেয়ে আছে সেটা একটু খেয়াল করছিলাম।
অনেকক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।

রাফি কতক্ষণ পর পর আমাকে বলছিলো নিলা নাকি আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি শুধু বলছিলাম আরে তাকিয়ে থাকতে দে।
ক্লাসে স্যার আসলো।
ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্যার আমাদের কাছে আসলো।
আমরা তো আবার ভয়ে শেষ কারণ আজকে মনে হয় মিম স্যারের কাছে বিচার দিয়েছে আমরা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই পাড়ছি না।

স্যারঃ মামুন শুনো কালকে যা হয়েছে সেটার জন্য মন খারাপ করো না, তবে এটা সত্যি তোমরা অন্যায় করেছ। আর এটা প্রিন্সিপালের কাছে গেলে অনেক সমস্যার পড়তে হতো তাই আর এমনন কাজ করো না। সামনে পরীক্ষা তাই মন দিয়ে পড়ালেখা করে এই কথা বলেই স্যার চলে গেলেন আর আমরা হাফ ছেরে বাচলাম। স্যার যখন আমাদের সাথে কথা বলছিলো নিলা আমাদের তিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছিলো।

প্রতিদিন নাজমুল ক্লাস করা বাদ দিয়ে মিমের দিকে তাকিয়ে থাকতো। কিন্তু আজ নাজমুল একবারো মিমের দিকে তাকায়নি।
আমি লক্ষ্যে করছিলাম মিম কয়েকবার আমাদের দিকে তাকিয়েছিলো।
কয়েকদিন হয়ে গেছে নাজমুল এখন আর মিমের দিকে ফিরেও তাকায় না।
মিম এখন তাকিয়ে থাকে। যখন নাজমুলকে বলি দোস্ত তোর দিকে তো মিম তাকিয়ে আছে দেখ।
নাজমুলঃ আরে তাকিয়ে থাকতে দে তাতে আমার কি।

৯দিন পর নিলার সাথে এখন একটু আকটু কথা হয়।
আমি নিজেই বলি না। ভালো লাগে
না কথা বলতে তাই কথা বলি না।
রাফিঃ দোস্ত সবার জন্য একটা গুড নিউজ আছে।
আমিঃ গুড নিউজ কি সেটা?

রাফিঃ আমার ছোট মামার বিয়ে আর আমরা যাচ্ছি।
নাজমুলঃ আমরা মানে কারা?
রাফিঃ আমার পরিবার তো যাচ্ছে সাথে তুই আর মামুন। শোন এটা ভেবে ভয় পাস না তোদের টাকা খরচ করতে হবে। ওখানে যাওয়া খাওয়া আবার ফিরে আসা সব টাকাই আমি দিবো।
আমিঃ কিন্তু আমার আব্বু আম্মু তো আমাকে যেতে দিবে না।

রাফিঃ তোদের দুজনের যেতেই হবে। না গেলে একটুও মজা করতে পারবো না।
আমিঃ আচ্ছা আমি তোকে সন্ধ্যায় জানিয়ে দিবো কিন্তু কবে যেতে হবে?
রাফিঃ আমরা আগেই চলে যাবো।

আমিঃ আচ্ছা আমি বাসায় গিয়ে আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলছ। তা নাজমুল তুই যাবি তো?
নাজমুলঃ সিউর দিয়ে বলতে পাড়ছি না তবে যাবার ট্রাই করবো।
তারপর একে অপরকে বিদায় দিয়ে যার যার বাসায় চলে গেলাম।

বাসায় এসে আম্মু আব্বুকে বলতেই তাড়া রাজি হয়ে গেলো। এতো সহজে আব্বু আম্মু রাজি হয়ে যাবে সেটা ভাবতে পারিনি।
আমি রাফিকে জানিয়ে দিলাম আমি যাচ্ছি সন্ধ্যায় রাফি আমাকে ফোন করে জানিয়ে দিলো নাজমুলো যাচ্ছে।
পরদিন আর কেও কলেজে গেলাম না,
কুমিল্লার একটা গ্রামে যাবো।

বড় হয়েছি শহরের এই কোলাহলে তাই আমার আর তর সইছে না গ্রাম দেখার জন্য।
আমরা তিনজনেই যাচ্ছি।
আব্বু আমাকে কিছু টাকা দিলো।
আর আমার কাছেও কিছু ছিলো খুব ভালোভাবেই হয়ে যাবে।
রাফি নিজের টাকায় টিকিট কিনলো।

তারপর কয়েক ঘন্টা জার্নি করে আমরা চলে আসলাম রাফির নানু বাসায়।
সেখানে সবার সাথে পরিচয়য় করিয়ে দিলো।
বিকেলবেলা আমরা গ্রাম ঘুরতে বের হলাম।
নাজমুল যেখানেই মেয়ে দেখছে সেখানেই দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলছে। সাথে আমাদের দুজকে নিয়েই তুলছে আর ফেসবুকে আপলোড দিচ্ছে।
এইভাবে দুদিন কাটালাম আজকে বিয়ে।

বাসায় মেহমানে ভর্তি কতগুলো মেয়ের সাথে আমাদের ভালোই পরিচয় হলো
নাজমুল তো মেয়েদের সাথে একদম চিপকিয়ে থাকে। আর সেল্ফি তুলেই আপলোড দেই।
কেনো এমন করছে সেটার কিছুই বুঝতে পাড়ছি না।
তবে মেয়ে গুলো বেশ মিশুক অল্পতেই আমাদের সাথে মিশে গেছে।
সেদিন বিকেলবেলা আমরা একসাথে ঘুরতে বের হলাম।

একদম জোড়ায় জোড়ায়। আমরা ৩জন ওড়াও ৩জন।
আর একজন ছেলে একজন মেয়ে এমন ভাবে সারি ধরে হাটছি।
আজকে কেনো জানি আমাদেরো ছবি তুলতে খুবব ইচ্ছা করছিলো।
যে যার যার মর ছবি তুলে নিলাম। এর মধ্যে ঘটে গেছে আরেক কান্ড রাফির নাকি অহনাকে ভালো লেগে গেছে।

অহনা হলো আমাদের সাথে যে তিনজন ঘুরতে এসেছিলো তাদের মধ্যে একজন।
রাফিঃ দোস্ত আজকেই শেষ দিন যে করেই হোক আজকের মধ্যেই পটাতে হবে পটাতে না পারলে আমি প্রেম করার আগেই দেবদাস হয়ে যাবো প্লিজ দোস্ত একটু লাইন করিয়ে দে না।

আমিঃ আচ্ছা একটু দাড়া দেখছি।
আমি অহনা ডেকে বললাম অহনা তোমাকে একটা পারসোনাল কথা জিজ্ঞাস করি?
অহনাঃহ্যা করো কি করবে?
আমিঃ তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?
অহনাঃনা কেনো? ম

আমিঃ কিভাবে যে বলি?
অহনাঃকেনো কোনো সমস্যা?
আমিঃ আসলে হয়েছে কি রাফি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
আমার কথা শুনে অহনা একটু ভেবাচেকা খেয়ে গেলো। তারপর রাফির কাছে চলে গেলো।
রাফি মনে হয় ভয় পাচ্ছে অহনার দিকে তাকাতে পাড়ছে না।
অহনাঃকি হলো অমনভাবে মাটির দিকে তাকিয়ে আছ কেনো? কথা আছে তোমার সাথে চলো অই দিকে এই বলে রাফিকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলো।


পর্ব ৪

কি হলো রাফি অমনভাবে মাটির দিকে তাকিয়ে আছ কেনো? চলো তো_মার সাথে আমার কথা আছে এই কথা বলে অহনা রাফিকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলো।
আর আমাদের বলে গেলো আমরা যেনো ওদের কাছে না যাই। এমনি তেও কারো পারসোনাল সময়ে ডিস্টার্ব না করাই ভালো তাই আমরা সবাই দাঁড়িয়ে ছিলাম।
কতক্ষণ পর ওরা আসলো।

রাফির গাল লাল হয়ে আছে। অহনা মিটিমিটি হাসছে।
আমিঃ কিরে রাফি তোর গাল অমন দেখাচ্ছে কেনো?
অহনাঃএকটু আদর করেছি তাই অত লাল হয়ে আছে।
আমিঃ আদর করলে গাল লাল হয় নাকি?

অহনাঃহ্যা হয় তো। আসলে আদরটা করতাম না যদি ও নিজে এসে আমাকে প্রপোজ করতো তাহলে
আমি এর আগেও অনেকবার খেয়াল করেছিলাম রাফি যখনি ওর নানু বাসায় আসতো আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে থাকতো। আমি বুঝতে পারতাম কিছু একটা ব্যাপার আছে, কখনো ও নিজে এসে ভালোবাসি কথাটা বলার সাহস পায়নি কিন্তু আজ আপনাকে দিয়ে। সে যাই হোক এখন থেকে আমি আপনাদের ভাবি, আর অই তোরা শোন এখন থেকে রাফি তোদের দুলাভাই।

ব্যাস হয়ে গেলো আমার এক কাছের বন্ধুর প্রেম।
তারপর সবাই বাসায় চলে আসলাম। সেদিন নাজমুল যত পেরেছে ছবি তুলেছে শালা পাগল হয়ে গেছে।
পরদিন আমাদের সবাইকে মেয়ের বাড়ি যেতে হবে।
দুইটা গ্রাম পরে মেয়ের বাড়ি। যদিও গ্রাম তবুও রাস্তাঘাট সব পাকা।
বরযাত্রী যাবে ৫০জন+

সবাই বাসে উঠে গেছি। আমি নাজমুল আর রাফি পেছনের সিটে বসেছি।
হঠাৎ অহনা এসে
অহনাঃরাফি তুমি আমার সাথে বসে যাবে, আর অই বাড়িতে আমার সাথে ঘুরবে খেতেও বসবে আমার সাথে
আমিঃ ভাবি একদিনেই কি আমাদের বন্ধুকে এইভাবে কেড়ে নিবেন?
অহনাঃহ্যা নিবো আর একদিন নয়য় আমি রাফিকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসি আমি ভাবছিলাম কাল আমি নিজেই প্রপোজ করবো কিন্তু তার আগেই
আপনি বললেন রাফি আমাকে ভালোবাসে। আর।

শুনেন রাফিকে আমি আগলে রাখতে চাই। আপনাদের সাথে যেতে দিলে দেখা যাবে অই বাড়িতে
কোন মেয়ের পাল্লায় ফেলে দিবেন আমার ভোলাভালা রাফিকে।
এই রাফি তাড়াতাড়ি উঠো। পড়ে সিট পাওয়া যাবে নাতো।
রাফিঃ কিন্তু বাড়ির লোক কি বলবে?

অহনাঃসেটা নিয়ে এতো ভাবছ কেনো বলবে যে যায়গা পাওনি তাই আমার সাথে বসতে বাধ্য হয়েছ।
আর এইযে আপনারা এখানে না বসে সামনে গিয়ে বসুন যাতে রাফিকে কেও বলতে না পারে আপনাদের সাথে না বসে আমার সাথে বসল কেনো?
ভাবলাম যে নতুন প্রেম একটু আকটু একসাথে থাকার ইচ্ছা হতেই পারে। তাই আমরা উঠে গিয়ে সামনের দিকে বসলাম।
আর অহনা আর রাফি একদম পেছনেরর সিটে বসেছে।

গাড়ি চলতে লাগলো আমরা গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম, প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছে আমার।
দেখতে দেখতে আমরা কনের বাড়ি চলে এসেছি।
কিন্তু গেইটে বাধলো বড় গেঞ্জাম।

ভেতরে কি হচ্ছে আমরা জানিনা কারণ আমরা সবার ছোট তাই আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই।
তবে হৈ হট্রগোল হচ্ছে খুব।
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আমরা ভেতরে প্রবেশ করলাম।
চারিদিকে সব ডানাকাটা পরি আমরা।
রাফি এইসবের কিছুই দেখতে পাচ্ছে না।

কারণ অহনা রাফিকে নিয়ে এক যায়গাতে বসে আছে।
আর আমরা চারিদিক ঘুরে দেখছ।
বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ এখন আমাদের ফিরে যাবার পালা।
রাফির আব্বু আম্মু আগেই চলে গেছে, আমরাই রয়ে গেছি।
কিন্তু।

আর না এইবার ফিরে যেতে হবে তাই যে যারযার মত সব গুছিয়ে নিয়ে বাস কাউন্টারে চলে আসলাম।
এর মাঝে ঘটছে আর এক বিপত্তি
অহনা এসে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে
রাফিকে কিছুতেই যেতে দিতে চাচ্ছে না রাফি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করছে কিন্তু অহনা মানতেই চাচ্ছে না,
তারপর আমরা গেলাম বুঝাতে।

অনেক বোঝানোর পর অহনা ভাবি বুঝ মানলেন
এরপর আমরা ঢাকাতে চলে আসলাম।
দেখি রাফির মন অনেক খারাপ সেটা একটু স্বাভাবিক
যে যার বাসায় চলে গেলাম।
পরদিন কলেজে যাবো।

নাজমুল আর রাফিকে কল দিলাম ওদের
আমার জন্য দাঁড়াতে বললাম।
আমি খেয়ে দেয়ে বেড়িয়ে গেলাম।
তিনজন আজ একসাথে কলেজে যাচ্ছি,
হেটেই যাচ্ছি কারণ এতে করে রাস্তায় মজা করা যায় অনেক।
দুষ্টুমি করতে করতে আমরা কলেজে চলে এসেছি।

ক্যাম্পাসে মাত্র প্রবেশ করেছি আমাদের সামনে মিম চলে আসছে। এসেই নাজমুলের কলার চেপে ধরেছে।
আমি আর রাফি সেটা দেখতে আছি।
মিমঃঅই এতোদিন তুই কই ছিলি?
নাজমুলঃ সেটা আমি তোমাকে বলতে যাবো কেনো।
মিমঃবলতে হবে না আমি সব জানি, কি ভেবেছিস এদিকে একজনের মনে প্রেম জাগিয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে মেয়েদের সাথে ঢলাঢলি করবি।

নাজমুলঃ আমি কার সাথে কি করবো সেটা আমার ব্যাপার এইভাবে আমার কর্লার ধরেছ কেনো সবাই দেখছে।
মিমঃদেখুক সবাই সবাইকে দেখানোর জন্যই তো ধরেছি, মেয়ে গুলো কে ছিলো?
নাজমুলঃ সেটা জেনে তুমি কি করবে?
মিমঃআচ্ছা বলতে হবে না, নেক্সট আর কোনো মেয়ের সাথে মিশবি না।

নাজমুলঃ কেনো মিশবো না কেনো?
মিমঃতোকে অন্য কোনো মেয়ের সাথে দেখলে আমার কষ্ট হয়।
নাজমুলঃ কেনো তোমার কেনো কষ্ট হবে কান্না কণ্ঠে।
দুজনি কান্না কন্ঠে কথা বলছে।
মিমঃকারণ আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি,

নাজমুলঃ তাহলে বুঝো তুমি যখন অন্য ছেলের সাথে মিশ আমার কেমন লাগে?
মিমঃআর কোনো ছেলের সাথে মিশবো না
আরো একটার প্রেম হয়ে গেলো আমি এতিম হয়ে গেলাম নাকি?
মিম আর নাজমুল অন্য যায়গাতে চলে গেলো দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি আর রাফি, কিছুক্ষণ পর রাফির ফোন আসলো অহনা নাকি কল করেছে রাফিও অন্য যায়গাতে চলে গেলো আমি একাই দাঁড়িয়ে রইলাম।

দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছিলো না তাই একটা গাছের নিচে বসে পড়লাম।!
কি হলো একা কেনো বন্ধুগুলো কই গেলো?
আমি তাকিয়ে দেখি নিলা এসে কথা টা বললো।
আমিঃ আছে যে যার যার কাজে ব্যাস্ত।

নিলাঃ এই কলেজে এসে কিসের কাজ?
আমিঃ একজন তার প্রেমিকার সাথে কই জেনো গেলো আর একজন প্রেমিকার
সাথে ফোনে কথা বলতে ব্যাস্ত।
নিলাঃ তো আপনি একা কেনো? আপনিও একটা প্রেমিকা জুটিয়ে নিন
আমিঃ আরে ধুর আমি অইসবে নেই যেমন আছি অনেক ভালো আছি,
নিলাঃ আচ্ছা আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি?

নিলার এমন কথা শুনে আমি ওর দিকে তাকালাম।
নিলাঃ আরে আরে অমনভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো
আমি আপনার পাশে বসতে চেয়েছি কারণ আপনিও একা আর আমিও একা দুজনের কারোই কথা বলার মত কেও নেই, তাই দুজন একটু গল্প করতাম আরকি।
আমিঃ হ্যা বসে পড়ুন।

নিলা আমার পাশে বসলো।
নিলা বসার পর আমি একটু সরে বসলাম।
কারণ নিলা যেইভাবে বসেছে তাতে করে ওর শরীরের সাথে স্পর্শ হতো।
নিলাঃ হাহা আপনি না সত্যি একটা ভিতু জানেন?
আমিঃ কেনো আমি ভীতু হতে যাবো কেনো?

নিলাঃ অইযে সরে বসলেন তাই, আচ্ছা বাদ দিন
এতোদিন ছিলেন কোথায়?
আমিঃ এক ফ্রেন্ডেরর মামার বিয়েতে গেছিলাম।
নিলাঃ এখানে এমন ভাব ধরেন যেনো আপনি মেয়েদের একদম সহ্য করতে পারেন না, মেয়েদের সাথে মিশতে আপনার একদম ভালো লাগে না।

আমিঃ হ্যা ঠিক বলেছেন, শুধু আপনি সেদিন আমাকে সাহায্য করেছিলেন আর আপনি ম্যামের বোন তাই আপনার সাথে কথা বলছি
নিলাঃ একদম ভাব নিবে না বলে দিলাম। আমি সব দেখেছি ওখানে গিয়ে মেয়েদের সাথে ছবি তোলা গ্রামে ঘুরতে বের হওয়া।
আমিঃ আপনি কিভাবে দেখলেন?
নিলাঃ দেখেছি কোনো একভাবে আর আমি যা বললাম তা তো মিথ্যা নয় সব সত্যি বলেছি।

আমিঃ হ্যা সত্যি বলেছেন
নিলাঃ তাহলে এখানে এমনভাবে থাকো কেনো নাকি ভদ্র সাজতে চান।
আমিঃ আরে সেইসব কিছুই না,
নিলাঃ একটা কথা বলবো?
আমিঃ হ্যা বলে ফেলুন?

নিলাঃ দেখুন আপনার গার্লফ্রেন্ড নাই আমার বয়ফ্রেন্ড নাই আর দুজনের কেও এটা চাই না আমাদের মাঝে কতমিল দেখেছেন?
আমিঃ হ্যা তো কি হয়েছে।
নিলাঃ আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।
আমিঃ হলাম তারপর?
নিলাঃ তারপর আবার কি।
আমরা এখন থেকে ফ্রেন্ডস ওকে।

আমিঃ জোর করে ফ্রেন্ডশিপ
হ্যা জোর করেই করবো। আমার একা থাকতে ভালো লাগে না, যার শুনো আমরা যেহেতু ফ্রেন্ডস তুমি আমাকে তুমি করে বলবে। আর আমাকে সময় দিবে, আমারর সাথে কথা বলবে ভয় পেও না
আপু কিছুই বলবে না, আপুই আমাকে বলছে তোমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে


পর্ব ৫

আর শোন তুমি এখন থেকে আমাকে তুমি করে বলবে। আমার এটাও মনে হচ্ছে তুমি আপুকে ভয় পাচ্ছ শোন ভয় পাবার কোনো কিছুই নেই আপু বলেছে তোমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে।
আমিঃ কিন্তু আমি একটা ছেলে আর আপনি একটা মেয়ে আমাদের মাঝে কিভাবে ফ্রেন্ডশিপ হবে?
নিলাঃ কেনো হয় না বুঝি? এখন তো ছেলে আর মেয়েই বেষ্ট ফ্রেন্ড হয়। আর নাহলে জাস্ট ফ্রেন্ড। কিন্তু আমি জাস্ট ফ্রেন্ডে বিশ্বাসী না তাই তোমাকে আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড বানাতে চাই, আর তুমি না করলে না নাক ফাটিয়েয়ে দিবো।

আমিঃ অমনভাবে বলছেন কেনো?
নিলাঃ তো কেমন ভাবে বলবো? আমি তো প্রথমে তোমাকে ভালোভাবেই বলেছিলাম কই তুমি সেটা শুনলে উল্টা এটা ওটা বললে?
আমিঃ ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে ক্লাসে যাবেন না?
নিলাঃ আরে বাহ তুমি তো বেশ ভালো কথা ঘুরাতে জানো।? কিন্তু সেটা করলে তো কাজ হবে না আজকে আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করে তারপর ক্লাসে যাবে তার আগে আমি তোমাকে ছাড়ছি না।

আমি কোনো উপায় দেখতেছিলাম না, কি করবো সেটাও ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাই নিলাকে বলে দিলাম।
হ্যা আমি আপনার প্রস্তাবে রাজি।
নিলাঃ আমার প্রস্তাবে রাজি হলে আপনি করে বলছ কেনো? তুমি করে বলো।
আমিঃ কিন্তু আমি তো সবাইকে আপনি করেই বলি এটা আমার অভ্যাস।

নিলাঃ গুল্লি মারো তোমার অভ্যাসের সবাইকে আরর যেইভাবেই বলো আমাকে তুমি করেই বলতে হবে।
আমিঃ না বললে হয় না?
নিলাঃ হবে না তুমি করেই বলতে হবে
আমিঃ আচ্ছা চলো ক্লাসে চলো।
নিলাঃ এইতো গুড বয় হ্যা চলো ক্লাসে যেতে যেতে বাকি কথা হবে।
তারপর আমি আর নিলা ক্লাসে চলে আসলাম।

তার কিছুক্ষণ পর রাফি আসলো তারো কিছুক্ষণ পর নাজমুল ক্লাসে চলে আসলো।
রাফি আর নাজমুল দুজনকে দুই সাইডে দিয়ে আমি মাঝখানে বসে পড়লাম।
আমিঃ রাফি দোস্ত নাজমুল আমাদের ট্রিট দিলো না কিন্তু প্রেম করবে সেটা হয়?
রাফিঃ আমিও সেটাই ভাবছি ও আমাদের ট্রিট না

দিয়ে প্রেম করবে সেটা তো মেনে নেওয়া যাই না।
আমিঃ কিরে নাজমুল চুপ করে বসে আছিস কেনো আমাদের ট্রিট দিবি কবে?
নাজমুলঃ দিবো কোনো একসময় মাত্র তো প্রেম শুরু করলাম কয়েকটা দিন আগে যাবে তারপর নাহয় তোদের ট্রিট দেওয়া যাবে।
আমিঃ সেটা বললে তো হবে না আমাদের আজকেই ট্রিট দিতে হবে।

নাজমুলঃ আচ্ছা দিয়ে দিবো। স্যার চলে আসছে ক্লাসে
তারপর ক্লাস করতে লাগলাম।
কয়েকদিন পর।
এই মামুন শোন? (নিলা)

আমিঃ হ্যা বলো কি বলবে?
নিলাঃ আমি তো এখানে কিছুই তেমন চিনি না, আর আপুর হাতেও সময় নেই তুমি প্লিজ আমার সাথে একটা শপিং এ যাবে প্লিজ মামুন না করো না প্লিজ।
নিলা এমনভাবে বলছিলো যার কারণে আমি আর না করতে পারিনি।
সেদিন কলেজ শেষ করে আমি আর নিলা শপিং করতে গেলাম। নিলার প্রয়োজনীয় সকল কিছু কিনে ও প্রবেশ করলো ম্যান’স ওয়াল্ডে
আমিঃ কি ব্যাপার নিলা এখানে আসলে কেনো? এটা তো ছেলেদের।

আমিঃ আমি জানি এটা ছেলেদের তাই তো এসেছে একটা টি শার্ট কিনবো?
আমিঃ তুমি টি শার্ট দিয়ে কি করবে? ওহ বুঝতে পেরেছি তোমার বয়ফ্রেন্ডকে গিফট করবে?
নিলাঃ হ্যা অনেক টা সেইরকম এখন চুপচাপ আমার সাথে চলো/। আমি আর কোনো কথা না বলে
নিলার পেছন পেছন হাটতে লাগলাম।

নিলা নীল রাঙের একটা টি শার্ট নিয়ে আমার মাপ নিতে লাগলো।
আমিঃ আরে আরে আমার মাপ কেনো নিচ্ছ?
নিলাঃ আমার বয়ফ্রেন্ড এর শরীরের গঠন আর তোমার গঠন সেম তো তাই তোমার শরীরের মাপ নিচ্ছি।
আমিঃ অহহ আচ্ছা তবে আমার শুরশুরি লাগছে যা করবে তাড়াতাড়ি করো।
নিলা ঝটপট মাপ নিয়ে চটপট বিল দিলো।

তারপর আমরা বের হলাম। রিক্সা ডাকা হলো।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে তুমি এই রিক্সাতে করে চলে যাও
আমি অন্য একটায় করে যাচ্ছি।
নিলাঃ কেনো অন্যটায় কেনো যেতে হবে তোমার আর আমার বাসার রাস্তা তো একটাই এক রিক্সাতে যেতে প্রব্লেম কি? উঠো বলছি।
আমিঃ কিন্তু?
নিলাঃ আমরা না।

ফ্রেন্ড তাহলে তুমি এতো লজ্জা পাচ্ছ কেনো?
আসলে লজ্জা না আমার ভয় আব্বু যদি আজকে আবার আমাদের একসাথে দেখে ফেলে তাহলে আমার কপালে দুঃখ আছে সেটা ভেবেই আমি ভয় পাচ্ছি।
নিলাঃ কি হলো উঠছ না কেনো? আর তুমি যদি এখন রিক্সায় না উঠো তাহলে আমি তোমার আব্বুর কাছে গিয়ে বলে দিবো আমি তার ছেলের হবু বউ।
আমিঃ এটা কেমন কথা তুমি আমার বউ হতে যাবে কেনো? আর আব্বুকেই বা এই কথা বলবে কেনো?

নিলাঃ তুমি আমার সাথে রিক্সায় যেতে চাচ্ছ না তাই তো আমি বলতে চাচ্ছি, আর যদি ভালোই ভালোই এখন রিক্সায় উঠো তাহলে আমি তোমার আব্বুর কাছে কিছু বলবো না
আমি ভদ্র বাচ্চার মত রিক্সায় উঠে পড়লাম দোয়া পড়ছি যাতে আব্বুর সামনে না পরি।
এই নাও এটা তোমার জন্য টি শার্টের ব্যাগটা বাড়িয়ে দিয়ে।
আমিঃ এটা আমার জন্য নয় এটা তোমার বয়ফ্রেন্ডের জন্য।

নিলাঃ মামুন তুমি এতো বোকা কেনো, তোমার কি ভাবা উচিত ছিলো না আমার কোনো ভয় ফ্রেন্ড নাই।
আমিঃ হয়তো আছে কিন্তু সেটা লুকিয়েছ।
নিলাঃ লুকাতে যাবো কেনো প্রেম কি চুরির জিনিস নাকি যে লুকিয়ে প্রেম করতে হবে। যাকে ভালো লাগবে তার সাথে প্রেম করবো আর সেটা সবাইকে দেখিয়ে প্রেম করবো যাতে করে আমার জিনিসের উপর অন্য কারো নজর না পরে, যাকে ভালোবাসবো তাকে আমার ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখে দিবো।
এটা তোমার জন্য কিনেছি তুমি নাও এটা।

আমিঃ তাহলে তখন বললে না কেনো?
নিলাঃ কেনো বলি নাই জানো। আমার ইচ্ছা তাই বলি নাই, এখন তোমাকে এটা নিতে বলেছি তুমি এটা নিবে, আর বিকেলবেলা এটা পরে প্রাইভেট যাবে,
আমিঃ এটা আমি নিলাম কিন্তু যদি এটা পড়ে না যাই তাহলে কি হবে।
নিলাঃ কি হবে জানো? তুমি অন্য যে জামা পড়ে যাবে সেটা ছিঁড়ে ফেলবো।

আর তুমি এটা ভালো করেই জানো রোজ আমি দরজা খুলে দেই। তাই ভুলেও অন্য জামা পরে যাবে না এই বলে দিলাম। আর হুম রিক্সা ভাড়াটা তুমি দিয়ে দিও
এই কথাটা বলে নিলা রিক্সা থেকে নেমে গেলো। সত্যি বলতে টি শার্টটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিলো।
আমার কাছে টাকা ছিলো না তাই অন্য একটা যে নিবো সেটাও করতে পারেনি এটাও ভাবিনি নিলা আমার জন্য কিনেছে।
বাসায় ফেরার পর।

আম্মুঃ কিরে কলেজ তো আরো আগে ছুটি হয়ে গেছে এতোক্ষন কই ছিলি? আর তোর হাতে কিসের ব্যাগ?
আমিঃ একটু শপিং করতে গিয়েছিলাম।
আম্মুঃ তুই তো সব টাকা বাসায় রেখে গেছিলি। তাহলে টাকা পেলি কোথায়?
আমিঃ আম্মু আমাকে একজন গিফট করেছে।

আর কোনো কথা না বলে আমি উপরে চলে গেলাম। তারপর খেয়ে দেখে দিলাম এক ঘুম।
ঘুম থেকে উঠে গোসল করে রেডি হয়ে নিলাম। তবে অবশ্যাই নিলার দেওয়া টি শার্টটা পড়ে নিয়েছি যে হুমকি দিয়েছে।
প্রাইভেটের জন্য বের হচ্ছিলাম আম্মু বলে উঠলো যে দিয়েছে তার বেশ পছন্দ আছে তোকে খুব মানিয়েছে।
কোনো উত্তর না দিয়ে আমি প্রাইভেটে চলে গেলাম।

ম্যামের বাসায় গিয়ে কলিংবের চাপ দিতেই নিলা দরজা খুলে দিলো।
আমাকে দেখেই।
নিলাঃ ওয়াও খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।
আমিঃ ধন্যবাদ।
নিলাঃ ধন্যবাদ কেনো?

আমিঃ গিফট করার জন্য।
এতে ধন্যবাদ দেওয়ার কি আছে শুনি আমি কি ধন্যবাদ পাবার জন্য তোমাকে দিয়েছি অনেক রেগে গিয়ে।
আমিঃ তুমি এতো রেগে যাচ্ছ কেনো।
নিলাঃ আপু ভেতরে পড়াচ্ছে যাও সেখানে এখানে থাকলে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে।
আমিও ভেতরে চলে গেলাম।


মাস পর আগের থেকে আমরা অনেক বেশি কাছে চলে এসেছি।
ক্যাম্পাসে বসে ছিলাম তখন নিলা এসে বললো
এই মামুন শোননা আমার ভালো লাগছে না আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসবে?
আমিঃ কেনো কি হয়েছে তোমার?

নিলাঃ মাথা ব্যাথা করছে আর কেমন জানি লাগছে।
আমিঃ ম্যামকে বলেছ?
নিলাঃ হ্যা বলেছি আপু বলছে আমাকে বাসায় চলে যেতে কিন্তু একা যাবো সেই সাহস পাচ্ছি না
প্লিজ আমার সাথে একটু চলো না।
আমিও না করলাম না নিলা একবার আমার এমন।
অবস্থায় আমাকে সাহায্য করেছিলো।

আমি ক্লাস থেকে আমার ব্যাগ নিয়ে আসলাম।
রিক্সায় করে যেতে লাগলাম কলেজ থেকে বেশ খানিকক্ষণ কোনো লোকালয় নেই মানুষ জন কম থাকে।
হঠাৎ করে নিলা আমার মাথার চুল ধরে ওর কাছে টেনে নিয়ে গালে চুমু দিলো।
আমিও এইরকম কান্ডে একদম শখ খেয়ে গেছি।
কতক্ষণ চুমু দিয়ে ছিলো আমি জানিনা।
তবে এক গালেই দিয়ে ধরে রেখেছিলো।
হঠাৎ কি হলো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।


পর্ব ৬

দুজন পাশাপাশি বসে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই নিলা আমার মাথার চুল টেনে ধরে ওর কাছে নিয়ে একগালে চুমু দিয়ে ধরে রাখলো।
এইভাবে কিছুক্ষণ যাবার পর নিলা ছেড়ে দিলো।
কি হলো সেটা ভাবার চেষ্টা করছি।
কিন্তু হিসাব মিলাতে পারছিলাম না।

নিলার দিকে তাকাতেও কেমন যেনো লাগছিলো।
একনজর তাকিয়ে দেখি নিলা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আর মিটিমিটি হাসছে।
আমার কি হলো আমি নিজেও জানিনা, মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছিলো না
নিলার সাথে বসে থাকতেও কেমন যেনো লাগছিলো।

তাই আমি রিক্সা থামিয়ে ভাড়াটা দিয়ে হাটা ধরলাম।
হাটছি আর তখনকার অনুভূতি মনে করছি।
নিলা যখন আমাকে চুমু দিচ্ছিলো আমার পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছিলো। একটুও শক্তি ছিলো না,
কিন্তু নিলা হঠাৎ করে আমাকে চুমু কেনো দিলো। এটাও ভাবার বিষয়।
হাটতে হাটতে আমি বাসায় চলে আসছি।

কিন্তু কোনো ভাবেই তখনকার অনুভূতির কথা ভুলতে পারছিলাম না,
বাসায় এসেই সোজা আমার রুমে চলে আসছি।
এসে চেঞ্জ করে শুয়ে পড়ছি তখনি নিলার ফোন আসলো।
ফোন ধরতেও কেমন যেনো লাগছিলো তাই আর রিছিভ করলাম না, বেশ কয়েকবার নিলা ফোন করলো কিন্তু আমি রিছিভ করিনি।
তারপর টেক্সট ম্যাসেজ আসলো।

মামুন রিক্সায় যা হয়েছে তার জন্য আমি সরি আসলে।
আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না, প্লিজ মামুন আমাকে তুমি ভুল বুঝো না,
ম্যাসেজ পরে আমি কোনো উত্তর দিলাম না,
তারপর বেশ কয়েকবার এসএমএস আসছে ফোন আসছে আমি কোনো সাড়া দেইনি।
সেদিন বিকেলে প্রাইভেট যায়নি।

আমার ফোন বন্ধ করে রেখেছিলাম। জানি নিলা আমাকে ফোন দিবে।
এমন কেনো হচ্ছে আমার নিলার কথা ভাবলেই কেমন জানি একটু লজ্জাবোধ কাজ করছে।
পরদিন আমি কলেজ আর প্রাইভেটেও গেলাম না,
বিকেলবেলা বাসায় বসে ছিলাম।
হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো।

আম্মু গিয়ে দরজা খুলে দিলো।
রাফি আর নাজমুল বাসায় এসেছে।
আম্মু ওদের আমার।
কাছে পাঠিয়ে দিলো।

রাফিঃ কিরে কলেজে যাচ্ছিস না আবার প্রাইভেটেও যাচ্ছিস না তোর ফোন অফফ ব্যাপার কি?
আমিঃ তেমন কিছু না হঠাৎ তোরা আমার বাসায়?
নাজমুলঃ এসেছি আর সাধে আমাদের ম্যামের বোন আছে না অই তো আমাদের তোর বাসায় আসতে বাধ্য করলো।
আমিঃ কেনো নিলার আবার আমাকে কিসের দরকার?
রাফিঃ সেটা জানিনা তবে তোকে অনেক খুঁজছে।
কালকে তোকে কলেজে যেতে বলেছে।

আমিঃ কেনো যেতে বলছে সেসব কিছু বলেছে তোদের?
নাজমুলঃ না সেইসব কিছু বলেনি তবে তোকে কালকে যেতে বলছে আর কালকে তোকে যেতেই হবে।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাবো আমি,
নাজমুলঃ আজকে তাহলে যাই আমরা।

আমিঃ সে কি এসেছিস কিছু খেয়ে যাবি তো?
নাজমুলঃ খাবো নারে মিম যদি জানতে পারে আমি বাসায় যায়নি আমার ১২টা বাজিয়ে ফেলবে।
রাফিঃ হ্যারে দোস্ত অহনাও আমার ১২টা বাজাবে না খেয়ে রেগে ফুলে থাকবে ওর রাগ অনেক বেশি সহজে ভাঙানো যায়না।
আমরা যাই কাল দেখা হচ্ছে নাজমুল আর রাফি চলে গেলো। আমি ফোন টা অন করলাম।
অন করার কিছুক্ষণ পর ম্যাসেজ আসতে লাগলো।

এমনভাবে আসছে ফোনে অন্য কোনো কাজ করাই যাচ্ছে না।
এইভাবে ১৪৪ টা এসএমএস আসলো।
প্রায় গুলোই লেখা মামুন আমার কিছু ভালো লাগছে না আমার সাথে প্লিজ কথা বলো।
তুমি না চাইলে আর কখনো অইসব করবো না তাও আমার সাথে কথা বলো। এসএমএস গুলো পড়া শেষ ও করতে পারিনি আর আগেই নিলার ফোন।
আজকে আর রেখে দিলাম না রিছিভ করলাম।

হ্যালো(আমি)।
হ্যালোহহহ বলেই নিলা মনে হয় একটা শান্তির নিশ্বাস ফেললো।
তারপর এই।
তুই তোর ফোন অফ রাখছিলি কেনো ভাব বেড়ে গেছে তাই না ভাব অই এতো ভাব কিসের আমার সাথে কোনো ভাব দেখাইতে আসবি না বলে দিলাম। আজকে নাজমুল আর রাফিকে তোদের বাসায় পাঠিয়েছি কাল যদি তোকে কলেজে না দেখি আমি আবার সব কিছু নিয়ে তোর বাসায় চলে যাবো এই বলে রাখলাম
আমি এতোক্ষন চুপ করে সব শুনছিলাম এইবার বললাম।

তুমি সব কিছু নিয়ে আমার বাসায় আসবে মানে? ব্যাপার টা ঠিক বুঝতে পারলাম না।
নিলাঃ তোকে বুঝতেও হবে না, যদি ভালো চাস তাহলে কালকে সকাল সকাল কলেজে চলে আসবি
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাবো।
নিলাঃ মনে থাকবে তো?

আমিঃ হ্যা থাকবে, এখন বলো কেমন আছ?
নিলাঃ তুই ভালো থাকতে দিলে তো ভালো থাকবো।
আমিঃ এই তুমি আমাকে তুই করে বলছ কেনো?
নিলাঃ তো আর কি করে বলবো কাল কলেজে আয় শুধু তোর একদিন কি আমার একদিন। /
আমিঃ তুমি কি আমাকে মারবে?

নিলাঃ নাহ আদর করবো শোন আমার ফোনের ব্যালেন্স নাই তাই আজ রাখলাম কাল কলেজে দেখা হচ্ছে।
নিলা কল কেটে দিলো নিলার কিছু কথা আমার অস্বাভাবিক লাগলো এতো অধিকার বোধ দেখালো।
তার মানে কি নিলা আমাকে ভালোবাসে।
সেদিনের পর থেকে আমিও নিলাকে নিয়ে একটু বেশি ভাবছি সব সময় মাথার মধ্যে শুধু নিলা নিলা।
পরদিন কলেজে যাচ্ছি।

রিক্সায় করে কলেজে গেলাম।
রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিতে যাবো তার আগেই কোথা থেকে জেন নিলা আসলো এসেই আমাকে টানতে শুরু করলো।
আমিঃ আরে আরে আমাকে এমনভাবে টানছ কেনো?
নিলাঃ চল অই দিকে চল কথা আছে তোর সাথে।
আমিঃ আগে ভাড়াটা তো দিতে দিবে।

নিলাঃ আমি দিচ্ছি দাড়া এই বলে নিলা ভাড়া দিয়ে আমাকে টানতে টানতে একটু আড়ালে নিয়ে গেলো।
নিলাঃ এই দুইদিন কলেজে আসলি না কেনো?
আমিঃ সেদিন আমাকে অইটা দিছ আমার কেমন জানি লাগতো তাই আসেনি
নিলা আবারো আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিলো।
দেখবি এইবার আর কোনো রকম লাগবে না।

আমিঃ এই তুমি না বলছিলে আর কখনো দিবে না
নিলাঃ যখন বলছিলাম তখন তোর ফোন অফ ছিলো তাই অই কথা আমি মানি না, শোন আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছিরে।
আমিঃ বন্ধু হিসেবে বাসতেই পারো।
নিলাঃ বন্ধু না বোকা নাজমুল আর মিম যেইভাবে একে অপরকে ভালোবাসে আমি তোকে সেইভাবে ভালোবাসি।
আমিঃ কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না।

নিলাঃ কেনো পারবি না কেন(চোখে পানি চলে এসেছে। )
আমিঃ কারণ আমার আব্বু জানলে আমাকে খুব মারবে।
নিলাঃ আচ্ছা তোর কি মনে হয় তুই আমাকে ভালোবাসিস?
আমিঃ ভালোবাসি কিনা জানিনা তবে এই দুইদিনে তোমার কথা খুব বেশি মনে পরেছে।

নিলাঃ মনে পড়ার জন্যই তোকে অইটা দিয়েছিলাম আর এখন যেটা দিলাম সেটা হলো আমাদেএ ভালোবাসা যাতে দৃঢ় হয় তার জন্য।
আর তোর আব্বুকে নিয়ে ভাবার কোনো দরকার নাই।
তোরর আব্বু এইসব কিছুই জানবে না, ।
আর যদি তুই আমাকে ভালো না বাসি আমি তোর আব্বুকে গিয়ে বলে দিবো তুই আমার গলায় ছুড়ি ধরে।

আমার কাছ থেকে জোর করে কিস আদায় করে নিয়েছিস।
আমিঃ আচ্ছা এই রিলেশনশিপে কি না গেলেই নয়। আমরা বন্ধু আছি তাতেই তো আমরা ভালো আছি।
নিলাঃ আমি ভালো নেই আমি তোকে ভালোবাসি আর সেই তুই আমার বন্ধু হয়ে আমার থেকে দূরে দূরে থাকিস।
তোকে কাছে পেয়েও আপন করে নিরে পারি না, তাই আমার সাথে রিলেশন করতেই হবে। আর আমিও জানি তুই একটু একটু করে আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছিস
আমিঃ কিভাবে বুঝলে।

নিলাঃ তাই তো আমাকে নিয়ে এই কয়েকদিন এতো ভেবেছিস ভালো না বাসলে এতো ভাবতি না।
আমিঃ হবে হয়তো, কিন্তু রিলেশনশিপে না যাওয়াই ভালো দেখো এখন আমরা বন্ধু আছি কোনো ঝামেলা নেই, কিন্তু যখন রিলেশনশিপে যাবো একজন অন্যজনের প্রতি অধিকারবোধ দেখাবে নিজের ইচ্ছা মত অন্য জনকে চালাতে চাইবে আর এটা চাইবো সে শুধু আমাকে ভালোবাসুক আমাকে সময় দিক কিন্তু যদি এমনটা না হয় তাহলে হবে ঝগড়া বাড়বে ঘৃনা দূরত্ব সেটা কি তুমি চাও।

নিলাঃ এইসব আমি যেমন চাই না তেমন এটাও চাইনা তোর সাথে বন্ধুত্ব্ব আমি তোকে আমার করে পেতে চাই এটাই আমার শেষ কথা।
আমিঃ আচ্ছা আমাকে ভাবার জন্য একটু সময় দিতে হবে।
নিলাঃ আমি জানতাম ভালো ভাবে বললে তুই রাজি হবি না।
তাই তো এই দেখ এটা নিয়ে এসেছি আর সাথে এটাও লেখে নিয়ে এসেছি।

নিলার হাতে একটা ব্লেড আর একটা কাগজ।
আমিঃ ব্লেড দিয়ে কি করবে?
নিলাঃ কি করবো বুঝতে পারছিস না, সুইসাইড করবো আর তার জন্য তোকে দায়ি করে রেখে যাবো লেখা।
আছে আমার সাথে প্রেমের অভিনয় করে তুই আমাকে ধোকা দিয়েছিস সেই দুঃখ সহ্য করতে না আমি আমি নিজেকে শেষ করে দিলাম।
আমিঃ এইসব পাগলামি বন্ধ করো প্লিজ।

নিলাঃ করবো আগে আমাকে লাভ ইউ বল।
আমি কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না।
আচ্ছা এখনকার মত বলে দেই।
নিলা আই লাভ ইউ।

নিলাঃ অমনভাবে বললে হবে না আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে হবে যদি না বলিস দিলাম হাতে টান।
কোনো উপায় না পেয়ে নিলাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরলাম।
নিলাঃ আলতো করে জড়িয়ে ধরলে হবে না শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বল।
আমি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম।

আই লাভ ইউ।
লাভ ইউ টু(নিলা।
হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেলাম।


পর্ব ৭

নিলাকে জড়িয়ে ধরে আই লাভ ইউ বললাম।
লাভ ইউ টু(নিলা)
হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেলাম।

আমি নিলাকে ছেড়ে দিলাম
পাশ থেকে রাফি নাজমুল আর মিম বের হয়ে আসলো।
রাফিঃ কিরে ব্যাটা ছেড়ে দিলি কেনো ফ্রিতে ভালোই মুভি দেখছিলাম সেটা বন্ধ করে দিলি কেনো?
আমিঃ তারমানে তোরা এতোক্ষন এইখানেই ছিলি?

মিমঃহ্যা ভাইয়া আপনি কিভাবে ডুবে ডুবে জল খান সেটাই দেখলাম এমনিতে তো মেয়েদের থেকে ১০হাত দূরে থাকেন আর এখানে কিনা বলেই হেসে দিলো।
আমি কিছু বলতে পাড়ছিলাম না, আর নিলাও কিছু বলছিলো না
মিমঃভাইয়া আজকে আমাদের সবাইকে ট্রিট দিতে হবে।
রাফিঃ ঠিক বলছ ভাবি আজকে ট্রিট দিবি চল।

আমিঃ ট্রিট কিসের ট্রিট আমি কেনো ট্রিট দিবো আমার আগে তোরা প্রেম করছিস কই সেটার ট্রিট দিয়েছিস। /।
আগে তোরা দুজন ট্রিট দে তারপর আমি দিবো তার আগে কিছু দিবো না।
নাজমুলঃ এইভাবে বলছিস কেনো ভাই আমরা আগে প্রেম করেছি বলে কি আগে আমাদের ট্রিট হবে হবে তুই আজকে দে পরে নাহয় আমি দিবো।
নিলাঃ আচ্ছা আমি সবাইকে ট্রিট দিবো আজ।
আমিঃ নাহ কিছু দেওয়া লাগবে না আগে ওরা দিবে।

নিলাঃ বলছি তো আমি দিবো চলো খেতে যাবো।
আমিঃ ক্লাস করবো না?
নিলাঃ একদিন ক্লাস না করলে কিছু যাবে আসবে না তার থেকে ভালো সবাই মিলে একটু ঘুরাঘুরি করা যাবে।
সবাই মিলে বের হলাম
প্রথমে খেতে গেলাম তারপর সেখান থেকে বের হয়ে ঘুরাঘুরি আমি আর নিলা মিম আর নাজমুল খুশি হলেও রাফির মনে কোনো আনন্দ নেই।
আমিঃ রাফি দোস্ত মন খারাপ?

রাফিঃ হ্যারে দোস্ত আসলে অহনা থাকলে অনেক ভালো হতো।
আমিঃ হুম সেটা ঠিক আচ্ছা মন খারাপ করিস না একদিন যা গিয়ে দেখা করে আয়
রাফিঃ যাবো সামনে মাসেই যাবো।
নিলাঃ ভাইয়া মনন খারাপ কইরেন না, আর একা যাবেন না কিন্তু আমাদের সবাইকে নিয়ে যেতে হবে।
রাফিঃ আচ্ছা সবাইকে নিয়ে যাবো। সেদিন অনেক ঘুরাঘুরি করে আমরা বাসায়।

ফিরলাম পা একদম ব্যাথা হয়ে গেছে কেও এতো হাটাহাটি করে।
বিকেলবেলা প্রাইভেটে যাচ্ছি তবে আজকে অন্যরকম লাগছে আমি রাফি আর নাজমুল যাচ্ছি।
নাজমুলঃ মামা ম্যামের বোনকে তুই পটালি কিভাবে?
আমিঃ ধুর আমি কেনো পটাতে যাবো।
নাজমুলঃ তাহলে তোদের প্রেম হলো কিভাবে?

আমিঃ অই আমাকে প্রপোজ করছিলো।
রাফিঃ তবে একটা বিষয় সত্যি নিলা তোকে সত্যি অনেক ভালোবাসে আর তোর জন্য অনেক পাগল।
আমিঃ তুই বুঝলি কিভাবে?
রাফিঃ নিলার আচরণেই বলে দেই ও তোর জন্য কতটা পাগল। কথা বলতে বলতে আমরা চলে এসেছি কলিংবেলে চাপ দিতেই নিলা এসে দরজা খুলে দিলো।
রাফি আর নাজমুল ভেতরে চলে গেছে শুধু আমি আর নিলা দাঁড়িয়ে ছিলাম।
নিলাঃ কি ব্যাপার এতো দেড়ি হলো কেনো?

আমিঃ হেটে হেটে আসছি তো।
নিলাঃ হেটে এলেও এতোক্ষন লাগার কথা না। রাস্তায় কোনো মেয়ের পিছু নিয়েছিলে একদম সত্যি করে বলবে।
আমিঃ মেয়ের পিছু কেনো নিতে যাবো আমার পা ব্যাথা ছিলো তা ধিরে ধিরে হেটে এলাম
নিলাঃ পায়ে ব্যাথা পেয়েছ?

আমিঃ নাহ আজকে অনেক হেটেছি তো তাই।
নিলাঃ আচ্ছা এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না চলো ভেতরে চলো।
আমি ভেতরে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে পড়লাম কিছুক্ষণ পর নিলা এসে আমার পাশে বসলো।
মেয়ের সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি,
আপুর সামনে একটা ছেলের সাথে বসেছে আমি হলে তো কোনো দিন একটা মেয়ের সাথে বসতে পারতাম না
ম্যাম বুঝাচ্ছিলো আমি বুঝছিলাম
নিলা ওর পা দিয়ে আমাকে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে এটা বুঝাতে চাইলাম হচ্ছে কি এইসব।
নিলা কিছু না বলে চোখ টিপ দিলো।
আমি পা সরিয়ে নিলাম কিন্তু নিলা আবার একটু কাছে ঘেঁষে বসে আবার সুড়সুড়ি দিতে লাগলো।
যতবার পা সরিয়ে নিচ্ছিলাম ও ততবার আমার কাছে চলে আসছিলো আমার ভয় হচ্ছিলো ম্যাম কিছু বলে বসে কিনা।
তাই আরর পা সরিয়ে নিলাম না প্রাইভেট যতক্ষণ চলছিলো নিলা ততক্ষণ আমার সুড়সুড়ি।

দিচ্ছিলো। বিরক্ত লাগছিলো খুব কিছু বলতেও পাড়ছিলাম না, প্রাইভেট পড়া শেষ করে নিলার সাথে কোনো প্রকার কথা না বলে চলে আসলাম।
বের হবার কিছুক্ষণ পরেই নিলার ফোন।
হ্যালো(আমি)
তুমি আমার সাথে কথা বলে গেলে না কেন(নিলা)

আমিঃ তুমি তখন কি রকম শুরু করছিলে? আমার ভালো লাগছিলো না সেটা বুঝেও তুমি করেই যাচ্ছিলে।
নিলাঃ কিন্তু আমার তো ভালো লাগছিলো।
আমিঃ কিন্তু আমার লাগছিলো না
নিলাঃ সরি আমি বুঝতে পারিনি।
আমিঃ আর এমন ভুল করবে না বলে দিলাম।

নিলাঃ ঠিক আছে সাবধানে যাবে বাসায় গিয়ে আমাকে এসএমএস করবে।
আমার কথা শুনে মনে হয় নিলার মন খারাপ হয়ে গেছে
বাসায় এসে নিলাকে এসএমএস করলাম আমি বাসায় চলে এসেছি
১৫ দিন পর এখন আমিও ভালোবাসতে শুরু করেছি প্রথম দিকে নিলার থেকে থেজে দূরে থাকতে চাইতাম
কিন্তু এখন নিলার থেকে দূরে থাকতে পারিনা।

একটু কথা না হলেই আমার কেমন জানি লাগে।!
সারাক্ষণ ওর সাথে কথা বলতেই থাকি।
ও আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা।
ক্লাস থেকে শুরু করে সব কিছুই একসাথে করতাম
কেও কাওকে কিছু বলা ছাড়া কোনো কাজ করতাম না।

১মাস পর

নিলাঃ মামুন আজকে আপু বাসায় থাকবে না।
আমিঃ অহহ তাহলে আজকে প্রাইভেট বন্ধ!
নিলাঃ হহুম বন্ধ কিন্তু তার পরেও তুমি আসবে।
আমিঃ আমি গিয়ে কি করবো।

নিলাঃ তুমি আর আমি বসে একটু সময় কাটাবো।
আমিঃ কিন্তু ম্যাম তো বাসায় নেই।
নিলাঃ সেই জন্যই তো তোমাকে আসতে বলছি
আমিঃ না গেলে হবে না?

নিলাঃ না হবে না তুমি এখুনি আমার বাসায় আসবে এটাই আমার শেষ কথা।
নিলার জেদ সম্পর্কে আমার বেশ ভালো ধারণা হয়ে গেছে
হেটে হেটে নিলার বাসায় চলে গেলাম।
কলিংবেল চাপতেই নিলা এসে দরজা খুলে দিলো।
তারপর আমাকে টান দিয়ে ভেতরে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
আমিঃ আপু কই গেছে?

নিলাঃ তার কোনো এক বান্ধবীর বাড়ি মনে হয়।
আজকে তোমাকে অনেক অনেক আদর করবো।
আমি কি আদর করবে
নিলাঃ করবো যা মন চাই।

আমিঃ এইভাবেই কি জড়িয়ে ধরে থাকবে নাকি কিছু খেতে দিবে।
নিলাঃ হ্যা দিবো তো আমাকে ছেড়ে দিয়ে নিলা ফ্রিজ থেকে কিছু ফল বের করলো।
সোফায় বসে নিলা বললো এইবার আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকো আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্চি।
আমি নিলার কোলে মাথা রাখলাম নিলা আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো আঙুর ফল।

একটা একটা করে খাইয়ে দিচ্ছি আর আমি গপ গপ করে খাচ্ছি। এইভাবে কিছুক্ষণ যাবার পর
বাহ বাহ বেশ ভালোই মুভি হচ্ছে দেখা যাচ্ছে।
নিলাঃ আ আ আপুউউ তুই এখানে?
ম্যামঃ আমার বাসায় আমি থাকবো নাতো কে থাকবে?
হঠাৎ ম্যাম কই থেকে চলে আসলো।

ম্যাম এসে নিলাকে সজোরে কয়েকটা চড় মারলো।
তোকে আমার বোন ভাবতেও লজ্জা লাগছে বাসা খালি আর সেই সুযোগে তুই ছিঃ নিলা ছিঃ
নিলাঃ আপু আমি মামুনকে ভালোবাসি।
ম্যামঃ সেটা তো আমি আগে থেকেই জানতাম মানে এর ওর কাছে শুনেছিলাম কিন্ত বিশ্বাস করি নাই আমি ভাবতাম তোরা দুজন বন্ধু কিন্ত্ কেও কেও অন্য কিছু ভাবে, কিন্ত্ আমার তো মনে হচ্ছে এখন তাদের কথা না শুনে আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।

আর মামুনন তোমাকে আমি ভালো ছেলে জানতাম তুমি এমনন করবে সেটা আমি ভাবতেও পারিনি
যা করেছ তা তো করেই ফেলেছ এরপর থেকে তুমি আর আমার বাসায় এসো না,
আমিঃ কিন্তু ম্যাম।
আমি কোনো কথা শুনতে চাই না, তুমি আর আমার কাছে পড়তে আসবে না, আর এক্ষুনি তুমি এই বাসা থেকে বের হয়ে চলে যাবে।
কি হলো যাচ্ছ না কেনো যাও বলছি।

আমি বের হয়ে চলে আসলাম জানিনা নিলার উপর কত অত্যাচার হচ্ছে।
যদি স্যারের বাসা হতো আমি আসতাম না দুইটা মেয়ে সেখানে কোনো ছেলে নেই যদি ওর আপু কোনোভাবে আমাকে ফাসিয়ে দেই।
বাসায় এসে নিলার ফোন দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ সেদিন আমার কিছুই ভালো লাগছে না রাতে না খেয়েই শুয়ে পড়লাম বারবার ফোন দিচ্ছিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ বলছিলো।
১১টার সময় একটা ম্যাসেজ আসলো তাও ম্যামের ফোন থেকে।

মামুন আপু আমার ফোন ভেঙে ফেলছে তাই তোমার সাথে কথা বলতে পাড়ছি না প্লিজ মন খারাপ করো না কালকে কলেজে গিয়ে তোমার সাথে কথা হবে।
সেদিনের মত ঘুমিয়ে গেলাম পরদিন খুব সকালে কলেজে চলে গেলাম নিলা তখনো আসেনি অনেকক্ষণ পর নিলা কলেজে আসলো।
তাও আবার ওর আপুর সাথে এসেছে।
ওর আপু ওকে ক্লাসে দিয়ে চলে গেলো। আমিও ক্লাসে চলে গেলাম।

নিলার কাছে যেতেই নিলা আমাকে ইশারায় বুঝিয়ে দিলো ক্লাসে কথা বলতে পাড়বে না ক্যাম্পাসের ফাকা যায়গাতে যেতে।
আমি সেখানে চলে গেলামম।
কিছুক্ষণ পর নিলাও চলে আসছে।
একদিনের নিলার চেহারা একদম শুকিয়ে গেছে।

নিলাঃ মামুন আমি এইভাবে থাকতে পারবো না প্লিজ আমাকে এখান থেকে দূরে কোথাও নিয়ে চলো।
তোমাকে ছাড়া থাকতে খুব কষ্ট হয় আমার।


পর্ব ৮

আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার খুব কষ্ট হয় প্লিজ মামুন আমাকে দূরে কোথাও নিয়ে চলো।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই ম্যাম চলে আসছে।
কিরে নিলা তোকে না বলছিলাম মামুনের সাথে আর কথা না বলতে তার পরেও এসেছিস কথা বলতে, নাকি সেদিনের কথা সব ভুলে গেলি।
নিলাঃ আপু প্লিজ ওর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারবো না,
ঠাসসস ঠাসস।

ম্যাম নিলার দুই গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিয়ে বললো।
তোর লজ্জা করেনা আমার সামনে এইসব বলছিস।
আজকে বাসায় চল তোর খবর আছে।
এই বলে ম্যাম নিলাকে নিয়ে চলে গেলো।

বুঝলাম না প্রত্যেকটা রিলেশনে ফ্যামিলি কেনো এতো ঝামেলা করে।
আমিও ক্লাসে চলে গেলাম কিন্তু ক্লাসে নিলাকে দেখলাম না।
আমারো মন খারাপ হয়ে গেলো আমিও সেদিন ক্লাস না করে বাসায় চলে আসছি।
দুইদিন ধরে প্রাইভেট যাই না তাই আম্মু আজ বলছে কিরে মামুন তুই প্রাইভেট যাচ্ছিস না কেনো?

আমিঃ আম্মু আমাদের ম্যাম কিছুদিন নাকি কলেজের কোনো কাজে ব্যাস্ত থাকবে তাই আমাদের পড়াতে পারবে না, তাই এখন আমাদের প্রাইভেট অফফ।
আম্মু;এটা আবার কেমন কথা সামনে না তোদের পরীক্ষা।
আমিঃ হ্যা আম্মু সেটা তো আছেই কিন্তু আম্মু ম্যাম বলছে পরীক্ষার আগে সিলেবাস শেষ করে দিবে।
আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

আম্মুর সাথে কথা বলে আমি আমার রুমে চলে আসলাম নিলার সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছা করছে কিন্তু কিভাবে কথা বলবো নিলার কাছে তো কোনো ফোনই নেই।
পরদিন কলেজে গেলাম।
নিলাও আসছে ওর সাথে কথা বলতে চাইলাম ও ইশারায় বললো আজকে কথা বলতে পারবে না, আমিও আর জোর করলাম না কারণ ওর আপুর কাছে যে কোনোভাবে খবর চলে। যাবে, আবার এসে নিলাকে এটা ওটা বলবে যেটা আমি সহ্য করতে পারবো না, ক্লাস শুরু হলো স্যার ক্লাস করে বের হয়ে গেলো এইবার ম্যাম আসবে।
ম্যাম চলে এসেছে যথারীতি আমরা পেছনে বসে গল্প করছিলাম।
আর।

বারবার নিলাকে দেখছিলাম নিলাও আমার দিকে তাকাচ্ছিলো।
সেটা মনে হয় ম্যামের নজরে পড়ছে।
ম্যামঃ এই মামুন তুমি দাড়াও।
আমি দাঁড়ালাম।

ম্যামঃ বলো এতোক্ষন আমি কি বললাম সেগুলো বলো।
কি বলবো আমি তো কিছুই শুনিনি তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
ম্যামঃ কি হলো মামুন কিছু বলছ না কেনো?
আমিঃ আসলে ম্যাম।

থাক আর কিছু বলতে হবে না আমি সব বুঝতে পেরেছি তা এখানে কি পড়তে আস নাকি চোখাচোখি করতে আর গল্প করার জন্য।
তোমাকে আমি লাস্ট বারের মত বলছি ক্লাসে মনোযোগী হও
নেক্সট টাইম এমন হলে তোমাকে প্রিন্সিপালের কাছে নিয়ে যাবো। তারপর উনি যা ভালো বুঝবে সেটা করবে। বসো
এটা ভেবে ভালো লাগছে নিলাকে কিছু বলেনি।

আমাকে বললে যতটা না কষ্ট হয় তার থেকে কয়েকগুন বেশি কষ্ট হয় নিলাকে কিছু বললে।
ক্লাস শেষ করে বাসায় আসছিলাম নিলা আমার পেছন পেছন আসছে।
নিলাঃ শোন মামুন ক্লাসে আর অমনভাবে আমার দিকে তাকাবে না।
আমিঃ কেনো তাকাবো না কেনো?

নিলাঃ দেখলেই তো আজ আপু কি বললো।
যদি সত্যি প্রিন্সিপালের কাছে বিচার দেয় তাহলে কি হবে ভাবতে পাড়ছ।
আমিঃ আমি অতকিছু ভাবতে চাই না আমি তোমাকে দেখবোই।
নিলাঃ পাগলামো করো না আমার দিকে আর তাকিও না আমি আসছি এই কথা বলেই নিলা চলে গেলো।
আমিও হেটে হেটে বাসায় চলে আসছি।

রাতে নিলার ওর আপুর ফোন থেকে কল করলো।
কি করো(নিলা)
আমিঃ শুয়ে আছি তুমি?
নিলাঃ আমিও শুয়ে আছি খেয়েছ?
আমিঃ হ্যা তুমি?

নিলাঃ আমিও খেয়েছি এখন রাখি টাটা গুড নাইট।
নিলা ফোন রেখে দিলো
আমিও ঘুমিয়ে গেলাম।
এইভাবে দিন গুলো যাচ্ছে।
কিন্তু এখন একটা বিষয় লক্ষ্য করছি ক্লাসে আমি নিলার দিকে তাকিয়ে থাকলেও নিলা আগের মত আমার দিকে তাকাতো না।
মাঝে মধ্যে দুইএকবার তাকাতো তবুও না দেখার মতই সুযোগ থাকলেও আমার সাথে কথা বলতে চাইতো না।

অনেক জোরাজুরি করার পর রাজি হতো তাও বেশিক্ষণ কথা বলতো না,
কেমন জানি আমাকে এড়িয়ে চলতে লাগলো।
আজকে কলেজে ম্যাম আসেনি কিন্তু নিলা এসেছে।
আজকে একটা সেই সুযোগ নিলার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারবো আমি নিলার কাছে গেলাম।
নিলাঃ কি ব্যাপার তুমি এখানে কেনো আসলে?
আমিঃ আজকে তো তোমার আপু আসেনি।

নিলাঃ হ্যা আসেনি তাতে কি হয়েছে?
আমিঃ আজকেই তো আমাদের সেই সুযোগ কথা বলার জন্য।
নিলাঃ আচ্ছা তুমি একটু যাও আমি কিছু কাজ শেষ করে আসছি
আমিঃ কাজ কিসের কাজ?

নিলাঃ তুমি বুঝবে না যাও তুমি আমি আসছি বললাম তো(অনেকটা বিরক্ত নিয়ে)
আমি চলে গেলাম ক্যাম্পাসের সেই জায়গাতে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু নিলার আসার কোনো খবর নেই।
প্রায় আধা ঘন্টা যাবৎ দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু নিলা আসছে না, আমি আবার ক্লাসে চলে গেলাম দেখলাম নিলা সেইই একভাবেই বসে আছে।
আমিঃ কি হলো নিলা তুমি না কাজ শেষ করে যাবে বলছিলে।

নিলাঃ অহ আমি না একদম ভুলেই গিয়েছিলাম সরি আজকে আর কথা বলতে পাড়ছি না একটু পরেই আমাদের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে
আমিঃ ভুলে গেছ মানে কি? আমি সেই কখন থেকে তোমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম সেই খবর আছে?
নিলাঃ আরে এতো রেগে যাচ্ছ কেনো আমি তো বললাম আমি ভুলে গেছিলাম তোমার কথা
সেদিন নিলার উপর রাগ দেখিয়েই কলেজ থেকে চলে আসলাম।
আম্মুঃ কিরে আজ এতো তাড়াতাড়ি বাসায় আসলি কেনো?

আমিঃ আমার ভালো লাগছে না আম্মু তাই চলে এসেছি
আম্মুঃ কি হয়েছে কোনো সমস্যা শরীর খারাপ করছে?
নাহ আম্মু তেমন কিছু না আমি রুমে গিয়ে ঘুমাবো আমাকে প্লিজ ডেকো না।
আমি আমার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম উঠে দেখি ২টা বেজে গেছে প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগছে।
তাই খেতে চলে গেলাম কিন্তু নিলার কথা মনে পড়তেই আর খেতে ইচ্ছা করলো না।
না খেয়েই বাসার বাইরে চলে গেলাম।

ঘুরবো সেটাও ভালো লাগছে না, ।
একটু হাটাহাটি করে আবার বাসায় চলে আসলাম।
পরদিন অনেক দেড়িতে কলেজে গেলাম।
আমি যাবার ৫মিনিট পরেই ক্লাস।
শুরু হয়ে গেলো আজ আর পেছনে বসলাম না সাধারণত সামনের সিট ফাকাই থাকে দুই একজন সামনের বেঞ্চে বসে আমিও বসে পড়লাম পেছনে বসলে বারবার নিলার দিকে নজর যায় কিন্তু নিলা বলছে ওকে যেনো আর না দেখি।

সামনে বসেই ক্লাস করলাম ম্যামের ক্লাস আসলো পড়া বুঝাচ্ছে আর আমি বুঝে যাচ্ছি
কয়েকদিন পর আমি কলেজে আসছিলাম নিলাকে দেখি একটা ছেলের সাথে আসতে।
রাফি আর নাজমুলকে জিজ্ঞাস করলাম ছেলেটা কে?
রাফিঃ কেনো মামুন তুই চিনিস না ও তো বায়েজিদ।

অন্য কলেজের কিন্তু আমাদের সাথে প্রাইভেট পড়ে।
আমিঃ তো নিলারর সাথে এইখানে আসছে কেনো?
রাফিঃ ওদের তো খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে জানিস না তুই ওরা একসাথে বসে প্রাইভেট পড়ে একে অন্যার খাতা নিয়ে এটা ওটা লিখে দেয়।
আরো কত কিছু।
আমি ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম নিলার হাতে একটা ফোন।

তারমানে নিলার কাছে ফোন আছে তারপরেও আমাকে ফোনন দেয় না,
আর এই ছেলের সাথে এতো কিসের কি আজকেই সব জানতে হবে।
নিলা মনে হয় আমাদের দেখেনি।

দেখলাম ছেলেটা নিলাকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত দিয়ে চলে গেলো। আমরাও গেলাম।
নিলা ক্লাসে যাবার আগেই আমি ওকে টেনে ক্যাম্পাসের ফাকা যায়গাতে নিয়ে গেলাম।
নিলাঃ মামুন কি রকম অসভ্যতা করছ আমাকে এখানে এইভাবে টেনে নিয়ে আসলে কেনো।
আমিঃ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
নিলাঃ হ্যা বলে ফেলো।

আমিঃ অই ছেলের সাথে তোমার কিসের সম্পর্ক।
নিলাঃ কার সাথে।
আমিঃ বায়েজিদ নাকি কি জেনো নাম।
নিলাঃ ও আমার ফ্রেন্ড।
আমি থাকতেও কেনো তোমার ছেলে ফ্রেন্ড লাগবে।

নিলাঃ তুমি তোমার যায়গাতে আর বায়েজিদ বায়েজিদের যায়গায়।
আমিঃ আমার কি কোনো মেয়ে ফ্রেন্ড আছে নেই তো তাহলে তোমার কেনো ছেলে ফ্রেন্ড থাকবে।
নিলাঃ তোমাকে কোনো মেয়ে পাত্তা দিলে তো তুমি ফ্রেন্ড বানাবে, থাকো তো বলদের মত মাথার চুল দেখেছ দেখে মনে হয় খাটি বলদ।
এখনকার ছেলেরা এই হেয়ার।

কাট দেয়?
আর শার্ট প্যান্টের অবস্থা এতো লুজ আরো একজন ধুকে যাবে।
আমিঃ তোমার কাছে ফোন থাকতেও তুমি আমাকে ফোন দাও না কেনো।
নিলাঃ কারন আপু বলে দিয়েছে এই ফোন দিয়ে যেনো তোমার সাথে কথা না বলি।
তাই তোমাকে ফোন দেই না, আর ফোন দিয়ে কি হবে একটু রোমান্টিক কথা কখনো বলেছ।
শুধু কি করো খাইছ কিনা।

এইসব কেন একটু রোমান্টিক কথা বলতে পারো না।
এইসব শুনেও আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমিঃ তুমি বায়েজিদের সাথে বন্ধুত্ব রাখতে পারবে না।
নিলাঃ তোমার কথা রাখতে পারবো না বায়েজিদের সাথে আমি বন্ধুত্ব নষ্ট করতে পারবো না।

আমিঃ তাহলে তুমি কাকে চাও আমাকে নাকি বায়েজিদকে যে কোনো একজনকে বেছে নিতে হবে।
নিলাঃ বায়েজিদ তোমার থেকে হাজার গুন বেটার তাই তুমি না থাকলেও আমার কিছু যাবে আসবে না।
নিলার কথা শুনে মনে হয় আমার মাথাটা একটু চক্কর দিয়ে উঠলো।
নিলাঃ শোন মামুন আমার পেছন আর ঘুরো না কেমন আর যদি আমার পেছন ঘুরো তাহলে লোক দিয়ে তোমাকে মাইর খাওয়াবো এই বলে দিলাম।


পর্ব ৯

দেখ মামুন তুমি আর আমার পেছন পেছন ঘুরবে না কেমন। আর যদি আমার পেছন পেছন ঘুরো তাহলে লোক দিয়ে তোমাকে মাইর খাওয়াবো এটা আমি বলে দিলাম,
নিলার এমন কথা শুনে একদম চুপ মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না,
নিলাঃ তোমার কিছু বলার থাকলে বলে দিতে পারো নাহয় আমি চলে যাবো।
আমিঃ নাহ আমার আর কিছু বলার নেই তুমি যেটা চাইলে আমি তোমাকে সেটাই দিবো আর ঘুরবো না তোমার পেছনে, কিন্তু দেখ এমন কোনো দিন যেনো না আসে আমার পেছনে তোমাকে ঘুরতে হয়।

নিলাঃ এতো খারাপ দিন এই নিলার কোনো দিন আসবে না, অনেক ভালো থাকবো আমি অনেক ভালো।
এই কথা বলেই নিলা সেখান থেকে চলে গেলে, আমার চলার শক্তি আমি হারিয়ে ফেলছি কেমন জেনো সব লাগছিলো।
আমি সেখানেই বসে রইলাম।
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর।

যেখানে বসে ছিলাম সেখানে কিছু বড় ভাই আসলো।
আরে তুই এখানে বসে কি করছিস?
আমিঃ না মানে ভাইয়া এমনি বসে আছি।
যা ক্লাসে যা একটু পর ক্লাস শুরু হবে।

আমি উঠে মাত্র একটু সামনে এগিয়েছি তার আগেই।
মাথা ঘুরে পরে গেলাম। ভাইয়ারা এসে আমাকে ধরলল।
কিরে নেশা জাতীয় কিছু খেয়েছিস নাকি?
আমিঃ না ভাইয়া আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।

ক্লাস করতে পারবি নাকি বাসায় যাবি?
আমিঃ বাসায় যাবো।
তোর ব্যাগ কই?
আমিঃ ক্লাসে।
এই তুই গিয়ে ওর ক্লাস থেকে ব্যাগটা নিয়ে আয় তো।
তোর নাম যেনো কি?

জি আমার নাম মামুন।
আর এক ভাইয়া আমার ব্যাগ আনতে ক্লাসে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পর ব্যাগ নিয়ে ভাইয়া আসলো সাথে দেখলাম নিলাও এসেছে।
কি হয়েছে ওর?
তেমন কিছু না একটু মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলো।

অহহহ বলেই নিলা সেখান থেকে চলে গেলো।
কিরে মেয়েটা কে?
আমিঃ নিলা ফ্রেন্ড।
তারপর ভাইয়ারা আমাকে একটা রিক্সায় উঠিয়ে দিলো। একজন সাথে আসতে চেয়েছিলো কিন্ত্ আমি না করেছি সাথে এটাও বলেছি আমি একাই যেতে পারবো।
বাসায় আসার পরেও মাথা ঘুরছিলো।

আমি গিয়ে শোফায় বসে পড়লাম।
আম্মুঃ কিরে মামুন কি হয়েছে তোর তোকে এমন দেখাচ্ছে কেনো?
আমিঃ মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলাম আম্মু।
আম্মুঃ মাথা ঘুরে পড়বে নাতো কিভাবে পড়বে?

একদম তো খাওয়া দাওয়া করো না শরীর দূর্বল তাই এমন হয়েছে।
আমিঃ আমার ভালো লাগছে না প্লিজ একটু চুপ থাকো।
আম্মুঃ হ্যা সত্যি কথা বললেই ভালো লাগে না
যা ফ্রেশ হতে যা তারপর খাবি।

আমার কিছু খেতেই ইচ্ছা করছে না আম্মু।
আম্মুঃ খেতে ইচ্ছা করছে না বললে তো আর হবে না তোকে খেতেই হবে যা বলছি ফ্রেশ হতে যা।
আমিঃ আম্মু আমি পরে খাবো এখন আমার ভালো লাগছে না আমাকে জোর করো না প্লিজ।
আম্মু;আচ্ছা তাহলে রুমে গিয়ে যা একটু শুয়ে রেস্ট নে ভালো লাগবে।
আম্মুর কথামত আমি রুমে চলে গেলাম।

রুমে আসার পর কেনো জানি আমার খুব কান্না পাচ্ছে।
নিলা আমার সাথে এমনটা করবে আমি সেটা ভাবতেও পারিনি আমার তো কোনো দোষ ছিলো না তাহলে কেনো আমার সাথে এমন করলো?
এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙলো।
আম্মু আমাকে গোসলে পাঠালো।

গোসল শেষ করে আমাকে খেতে ডাকলো।
খাবার বেড়ে দিলো কিন্তু কিছুই খেতে ইচ্ছা করছিলো না আমার কেমন জানি লাগছিলো।
আম্মুঃ কিরে তুই কিছু খাচ্ছিস না কেনো?
আমিঃ আম্মু আমার খেতে ভালো লাগছে না।
আম্মুঃ এই জন্য তো মাথা ঘুরে পরে গেছিলে না খেলে তো এমনি হবে।

আমিঃ আম্মু তুমি বুঝতে কেনো পারো না আমার কিছু খেতে ভালো লাগে না।
সারাদিন টো টো করে ঘুরতে খুব ভালো লাগে তাই না।
আম্মুর প্যা প্যা শুনে আমার পেট আরো বেশি ভরে যাচ্ছিলো আমি না খেয়েই উঠে বাইরে চলে গেলাম।
বাসা থেকে বের হয়ে হাটছি কলেজ ততক্ষণে ছুটি হয়ে গেছে।

রাস্তা দিয়ে হাটছি উদেশ্য নিলা একনজর দেখা।
এমন একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছ নিলাকে এক নজর না দেখলে আমার কিছুই ভালো লাগে না।
আমি একটা চায়ের দোকানে বসলাম যেহেতু এই রাস্তা দিয়েই নিলা বাসায় যাবে।
কিছুক্ষণ।

পর দেখি নিলা আসছে কিন্তু সাথে অই ছেলেটা আছে।
এমনভাবে হেটে আসছে একজনের সাথে আরেকজনের শরীরে স্পর্শ হচ্ছে।
এই দৃশ্য দেখে আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছিলো কিন্তু এখন কিছু বলবো না চুপচাপ দেখে যাবো দেখি কতদূর যেতে পারে।
নিলাকে আমি দেখেছি জানিনা নিলা আমাকে দেখেছে কিনা সেটা আমি জানিনা।

তবে একটা ডিসিশন নিয়েছি বায়েজিদ নাকি কি জেনো নাম ছেলেটার সাথে আমি ওর সাথে কথা বলবো আর বলবো নিলার থেকে জেনো একটু দূরে থাকে।
আমি ছেলেটাকে খুঁজে বের করলাম আমাদের পাশের এলাকাতেই ছেলেটার বাসা।
আমি ওদের এলাকাতে গেলাম।
ছেলের নাম্বার জোগার করলাম।

তারপর আমার সাথে দেখা করতে বললাম।
ছেলেটা আসলো।
আমিঃ কেমন আছ ভাইয়া?
বায়েজিদঃহ্যা ভাই ভালো তুমি?
আমিও ভালো ভাই।

আচ্ছা ভাই নিলার সাথে আপনার কিসের কথা?
বায়েজিদঃআরে ভাই ও আমার ফ্রেন্ড কথা বলতেই পারি।
আমিঃ ওর সাথে আর কথা বলবেন না আপনি।
বায়েজিদঃঅই ব্যাটা আমি ওর সাথে কথা বলবো কি বলবো না সেটা তুই বলার কেরে
আমি বলার কে সেটা শুনবি তুই।

আমি ওর বয়ফ্রেন্ড।
বায়েজিদঃবয়ফ্রেন্ড তো কি হয়েছে।
শোন ব্যাটা নিলা তোকে ভালোবাসে না।
নিলা আমাকে ভালোবাসে বুঝলি।

বায়েজিদেরর এমন কথা শুনে ওর নাক বরাবর ঘুষি দিলাম।
তারপর উড়াধুরা কিল ঘুষি দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসলাম।
পরদিন ফুরফুরা মনে কলেজে গেলাম।
ক্যাম্পাস দিয়ে তিড়িংবিড়িং করতে করতে হেটে যাচ্ছিলাম তখন নিলা এসে আমাকে চড় বসিয়ে দিয়ে বললো তোর সাহস হয় কি করে বায়েজিদের শরীরে হাত দেওয়ার।
চড় দিয়েছে সেটা বড় কথা না বড় কথা বায়েজিদকে কাল ইচ্ছামত ক্যালাতে পেরেছি সেটাই বড় কথা।

আমিঃ কাকে মারবো কাকে মারবো না সেটা আমার ব্যাপার।
নিলাঃ তুই বায়েজিদকে কেনো মারলি?
আমিঃ আমার ইচ্ছা হয়েছিলো তাই মেরেছি।
নিলাঃ কাজটা তুই ভালো করলি না এর প্রতিদান তোকে দিতেই হবে।
আমিঃ কিভাবে প্রতিদান দিতে হবে বলে যাও।

নিলাঃ যেটা যখন দিবে তখনি বুঝতে পারবে কিভাবে প্রতিদান দিবে কিন্ত্ অনেক ভয়ানক হবে সেটা এটা মাথায় রেখো।
কথাটা বলেই নিলা চলে গেলো।
এতো বেশি রেগে ছিলো যে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
গালটা ব্যাথা করছিলো কিন্তু মনটা তখনো ফুড়ফুড়া ছিলো বায়েজিদকে ইচ্ছামত ক্যালাতে পেরেছি তার জন্য,
কিছুদিন পর আমি শুয়ে ছিলাম।

তখন হঠাৎ নিলার নাম্বার থেকে ফোন আসলো।
কেটে গেল তখন একটা এসএমএস আসলো।
মামুন তোমার সাথে আমার কথা আছে প্লিজ একটু আমাদের বাসার সামনে আস
তাড়াতাড়ি উঠে চোরের মত বাসা থেকে বের হয়েই।
দিলাম এক দৌড়।

নিলাদের বাসার সামনে আসতেই দেখি কেও নেই।
কিন্ত এসএমএস এ লেখা ছিলো তুমি তাড়াতাড়ি আস আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
হঠাৎ পেছন থেকে কেও একজন আমার মাথায় আঘাত করলো।
সাথে সাথে আমি পড়ে গেলাম।

উত্তম মধ্যেম অনেক গুলো খেলাম।
আমার জ্ঞান যাবে যাবে অবস্থা হয়ে গেছে।
তখন শুনতে পেলাম।
হ্যা নিলা কাজ হয়ে গেছে ও এখন তোমাদের বাসারর নিচে পড়ে আছে, আরে না এখনো জ্ঞান আছে তবে যে অবস্থা করেছি তাতে করে ও আর কোন দিন আমাদেরর সাথে লাগতে আসবে না।

হ্যা আমারো অনেক শান্তি লাগছে।
কিহ তোমার শান্তি লাগছে আচ্ছা বাবু লাভ ইউ টু।
এখন রাখি।
সারা শরীর ব্যাথা হয়ে আছে এই অবস্থায় এখানে পড়ে থাকলে আমার কিছু হয়ে যেতে পারে পকেটে ফোন ছিলো সেটা বের করে রাফিকে ফোন করলাম।
রাফি সাথে সাথে ফোন ধরলো।
আমিঃ হ্যালো দোস্ত আমি নিলাদের বাসার সামনে পড়ে আছি প্লিজ কিছু একটা কর কেও আমার উপর হামলা করেছে।

রাফিঃ আমি এক্ষুনী আসছি।
তারপর কি হলো আমার মনে নেই।
যখন জ্ঞান আসে আমার পাশে রাফি আব্বু আম্মু ছিলো।
দুইদিনে মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেলাম।
আব্বু আম্মুকে সব বললাম।

আব্বুঃ তোর এখানে থাকা নিরাপদ না তুই তোর কাকা বাসায় চলে যাবি।
আমিঃ কিন্তু আব্বু আমার পড়াশোনা?
তুই চিন্তা করিস না ওখানকার কলেজ থেকে পড়বি আর এইচএসসি পরীক্ষা এই কলেজ থেকে দিবি
আমিঃ কিন্তু এই গুলো করবে কে আব্বু?
আব্বুঃ তোর কাকা সব করে দিব।

আব্বুর সাথে আর কোনো কথা বললাম না।
তবে নিলা আমার সাথে এমন টা করবে সেটা ভাবতে পারেনি বলেছিলো ভয়ানক প্রতিদান দিতে হবে সেটা যে এমন হবে তা ভাবতে পারিনি।
চাইলে নিলার উপর প্রতিশোধ নিতে পারতাম তবে অবলা একটা মেয়ের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিলো না।
আব্বু আম্মু কাওকে জানাতে দিলো না আমি কোথায় যাচ্ছি তাদের ভয় যদি সেখানেও আমার উপর হামলা হয় তার জন্য।


পর্ব ১০

চাইলে নিলার উপর প্রতিশোধ নিতে পারতাম কিন্তু অবলা একটা মেয়ের উপর প্রতিশোধ নেবার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলো না, আব্বু আম্মু কাওকে জানাতেও দিলো না আমি কোথায় আছি?
আব্বু আমাকে চাচ্চুর বাসায় দিয়ে চলে গেলো।
চাচ্চুর দুই ছেলে কিন্তু কেও দেশে থাকে না
বাহিরে থেকেই কাজ করে।
তাই বাসা একদম খালি।
চাচ্চু আর কাকিয়া থাকে বাসায়।
আর আমি আসলাম।

আব্বু ওনাদের সব বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেছে।
পরদিন চাচ্চু আমাকে কলেজে নিয়ে যাচ্ছে।
কলেজের যে প্রিন্সিপাল সে আবার চাচ্চুর বড় ছেলের শশুর তাই কোনো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।
আমাকে নিয়ে সোজা প্রিন্সিপ্যালের কাছে চলে গেলো।
ভাইসাহেবব আসতে পারি?

আরে আপনি আসুন আসুন।
বসুন।
চাচ্চুঃ হ্যা যে জন্য এখানে আসতে হলো?
আমার ভাইয়ের ছেলে পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে এই কলেজে পড়ালেখা করবে।
আর এর আগে যে কলেজে ছিলো অই কলেজের নামেই পরীক্ষা দিবে আপনি কিছু একটা ব্যাবস্থা করে দিন।
এটা কোনো ব্যাপার হলো? সব হয়ে গেছে।

চাচ্চুঃ তাহলে আমি আজ আসি ও কাল থেকে কলেজে আসতে পারবে তো?
হ্যা কাল থেকেই পারবে শুধু এই ফর্ম টা পূরণ করে জমা দিতে হবে।
আচ্ছা তাহলে আসি বাসায় যাবেন।
এই বলে চাচ্চু আবার আমাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো।
ছোট থেকে মাঝে মাঝে আসতাম।

কিন্তু কেমন জানি একা একা লাগছে কথা বলার মত কেও নেই আড্ডা দেওয়ার মত কেও নেই
পরদিন সকালে কাকিয়া ডেকে তুলে দিলো।
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলামম।

তারপর খেয়ে দেয়ে কলেজের উদেশ্যে রওনা দিলাম।
চাচ্চু কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিলো যদিও আব্বু দিয়ে গেছে তবুও চাচ্চু দিলো এখন এতো টাকার কোনো দরকার নেই আমার, কি করবো একা একা কোথাও ঘুরতে যেতেও পারবো না হারামি গুলো থাকতো তাহলেও হতো।
রিক্সায় করে কলেজ চলে গেলাম।
তারপর এক ভাইয়ার কাছে জিজ্ঞাস করে আমার ক্লাসে চলে গেলাম।
আগে থেকেই পেছনে বসার অভ্যাস আমার।

তাই একদম পেছনে গিয়েই বসলাম।
ক্লাস শুরু হয়ে গেলো আমি চুপচাপ পড়া শুনছি
স্যার হঠাৎ আমার দিকে নজর দিলো।
এই ছেলে তুমি দাঁড়াও।

আমি দাঁড়ালাম।
স্যারঃ তুমি কি নতুন এর আগে তো কোনো দিন তোমাকে দেখিনি।
আমিঃ জি স্যার আমি নতুন এসেছি।
স্যারঃ অহহ বসস।
স্যার নানা রকম অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছিলো। বেশ মজা লাগছিলো স্যারের ক্লাস আর অন্যসব ক্লাসে হৈচৈ হয়েই থাকে কিন্তু স্যারের ক্লাসে সবাই চুপ করে বসে ছিলো।

সেদিনকার মত দুইটা ক্লাস করেই বাসায় চলে আসছি।
এসে আমার রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নিলাম বসে আছি এমন সময় চাচ্চু আমার রুমে আসলো।
আমিঃ চাচ্চু তুমি কিছু বলবে?
চাচ্চুঃ চোখ বন্ধ কর একটু।

আমিঃ কেনো চোখ বন্ধ করবো কেনো?
চাচ্চুঃ তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে চোখ বন্ধ করে খুলিলেই দেখতে পাবি।
আমি চোখ বন্ধ করলাম।
নে এইবার চোখ খোল।

আমি চোখ খুলে দেখি চাচ্চু আমারর সামনে নতুন একটা ফোন ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
চাচ্চুঃ নে এইটা তোর জন্য এনেছি। তোর আব্বু বলেছিলো তোকে জেনো ফোন না দেই কিন্তু আমার একমাত্র ভাতিজা তুই তোকে কিছু না দিয়ে পারি, আর শোন অই যে মোটরসাইকেল আছে না ওটা তোর ওটা দিয়ে ভালো করে চালানো শিখে নে তারপর নতুন একটা দিবো তোকে।
আমিঃ চাচ্চু আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি নাতো?

চাচ্চুঃ আরে ধুর বোকা ছেলে স্বপ্ন কেনো হতে যাবে যা হচ্ছে সব সত্যি আজকে থেকেই আমার সাথে মাঠে যাবি তারপর আমি তোকে মোটরসাইকেল চালানো শেখাবো আর এখনো এইরকম গেটআপ নিয়ে কেনো আছিস তুই হলি আধুনিক যুগের ছেলে একটু আধুনিক হতে হবে তো নাকি? নিলার মত মেয়ে জীবনে অনেক পাবি আগে তোকে নিজেকে চেঞ্জ করতে হবে বুঝলি।
আমিঃ চাচ্চু তুমি নিলার কথা জানলে কিভাবে?

চাচ্চুঃ জেনেছি কোনো একভাবে যা বলছি সেটাই করবি আর ফোন দিয়েছি সবার সাথে কথা বলার জন্য না কিন্ত তোর আব্বু আম্মু আর আমাদের সাথে কথা বলার জন্য কোনো ফ্রেন্ড কেও কল দিতে পারবি না, কারণ যারা একবার তোর উপর হামলা করেছে তারা যে দ্বিতীয়বার তোর উপর হামলা করবে না তার কোনো ভরসা নেই যদিও এখানে তোদ গায়ে হাত তোলার সাহস কেও দেখাবে না তবুও বলা যায়না তাও সাবধান হয়ে থাকাই ভালো

আর তোকে মোটরসাইকেল চালানো শেখাবো মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে নয় আমাকে নিয়ে এখানে ওখানে যাবার জন্য তোকে শেখাবো
আমিঃ আচ্ছা চাচ্চু ঠিক আছে আপাতত ফোনটা আমাকে দাও।
চাচ্চু আমার হাতে ফোনটা দিয়ে চলে গেলো।
নতুন ফোন আর নতুন বউ একই কথা।

ফোন টিপতে লাগলাম ভাবছিলাম আমার ফেসবুক আইডি লগ ইন করবো কিন্তু পরে আর করলাম না।
নতুন একটা আইডি খুললাম সেটাই ফেইক একটা নামে।
বিকালে চাচ্চুর সাথে মাঠে চলে গেলাম।
তারপর চাচ্চু আমাকে কতক্ষণ ধরে সব বুঝাল কিভাবে কি করতে হবে।

আমি সামনে বসলাম চাচ্চু পেছনে বসেই সব করছে আমি শুধু দেখছি একসময় আমার হাতে দিয়ে দিলো আস্তে আস্তে চালাচ্ছি চাচ্ছু বলছে এইতো মামুন হচ্ছে খুব ভালো হচ্ছে অনেকক্ষণ চাচ্চু পিছনে বসে ছিলো।
আমি যখন নিজেই সব পারছিলাম চাচ্চু বললো।
মামুন তুই এখন একাই একটু কয়েকটা চক্কর দে আমি।
চা খেয়ে আসছি।
চাচ্চু চা খেতে চলে গেলো।

আমি আবার স্টার্ট করে চালাতে লাগলাম।
ভালোই চালাচ্ছিলাম চক্কর দিচ্ছিলাম আর স্পিড বাড়িয়ে দিচ্ছিলাম হঠাৎ একটা মেয়ের সামনে চলে আসলো কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না।
দিলাম লাগিয়ে দুজনের ধপাস করে পড়ে গেলাম মেয়েটার কিছু হয়েছে কিনা জানিনা তবে আমার আমার হাত কেটে গেছে পা কেটে গেছে।
মেয়েঃ অই দেখে চালাতে পারেন না?

আমিঃ আমি তো দেখেই চালাচ্ছিলাম আপনি তো আমার সামনে এসে গেলেন আমি কি করবো?
মেয়েঃ ব্রেক করতে পারেন না নাকি?
আমিঃ নতুন শিখছি তো তাই কন্ট্রোল করতে পারিনি।
মেয়েঃ দেখেছন আপনার কত যায়গায় কেটে গেছে।

একটু অবাক হলাম অন্য কেও হলে আগে নিজের টা ভাবে তারপর ইচ্ছামত গালিগালাজ করতো কিন্তু এইই মেয়ে তো তার উল্টো।
আমিঃ আপনি কোথাও ব্যাথা পেয়েছেন।
মেয়েঃ হ্যা তা একটু পেয়েছি কিন্ত আপনার তো কেটে গেছে চলেন সামনে ডাক্তারের দোকান আছে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি।
আমিঃ আরে না না লাগবে না।

মেয়েঃ লাগবে দেখন কত রক্ত ঝড়ছে।
তারপর মেয়েটাই আমাকে ফার্মেসিতে নিয়ে গেলো।
যেখানে কেটে গেছিলো সেখানে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো
আমি টাকা দিতে চাইলেও মেয়েটা টাকা পরে দিবে বলে দিলো।
আমিঃ আচ্ছা আপনি কেনো টাকা দিতে চাইলেন?

মেয়েঃ আসলে দোষ আমার ছিলো আমি ফোনে কথা বলায় এতো ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিলাম কি হচ্ছে সেইসব খেয়াল করিনি তাই তো এমন হলো তাই
আমি এতোক্ষণে বুঝিতে পাড়িলাম বালিকা কেনো নিচু স্বরে কথা বলছিলো।
বালিকা আমাকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো আমিও মাঠে চলে গেলাম চাচ্চুকে দেখলাম মোটরসাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে
চাচ্চুঃ কিরে কোথায় চলে গেছিলি আরর হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ কিসের?

আমিঃ আর বলো না চাচ্চু এক বালিকার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছিলাম
চাচ্চুঃ এইবার তো মনে হয় অই বালিকার সাথে তোর প্রেম হবে
আমিঃ ধুরর চাচ্চু কি বলো এইসব?
চাচ্চুঃ একটু মজা করলাম মেয়েটা দেখতে কেমনরে?

আমিঃ ভালো করে খেয়াল করিনি চাচ্চু।
আচ্ছা চল বাসায় চল তবে ব্যাপার না প্রথম প্রথম একটু আকটু ব্যাথা পেতেই হয়।

কাল আবার আসবো।
আমিঃ আচ্ছা চাচ্চু আসবো।
ঘাসের উপর পড়ছিলাম বলে অল্প কেটেছে তাই ব্যাপার না আর আমি ভয় পাই নাকি।
কাল এসে আবার অই বালিকার সাথে ধাক্কা খাবো দরকার হলে।
বাসায় আসার পরর।

কাকিয়াঃ কিরে মামুন তোর এই অবস্থা হলো কি করে?
চাচ্চুঃ প্রথম হাটতে শিখছে তো তাই একটু আছাড় খাচ্ছে।
কাকিয়াঃ একটু সাবধানে চালাবি তো?

আমিঃ আমি তো সাবধানেই চালাচ্ছিলাম হঠাৎ করেই একটা বালিকা আমার সামনে
চলে আসলো আমি কন্ট্রোল করতে না পেরে লাগিয়ে দিলাম ধাক্কা।
কাকিয়াঃ বেশ ভালো করেছ বাপজান ব্যাথা কি খুব পেয়েছ?
আমিঃ না কাকিয়া তেমন না।
পরদিন কলেজে গেলাম।

একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছিলাম হঠাৎ বালিকার আগমন।
এখন কেমন আছেন ব্যাথা কমেছে?
আরে আপনি এখানে কেনো?
মেয়েঃ আমি তো এখানেই পড়াশোনা করি আপনি তো নতুন এসেছেন।
আমি নতুন এসেছি সেটা আপনি জানলেন কিভাবে?
স্যার যখন জিজ্ঞাস করেছিলো তখন শুনে নিয়েছি।


পর্ব ১১

আমি যে এই কলেজে নতুন এসেছি সেটা আপনি জানলেন কিভাবে?
মেয়েঃ স্যার যখন জিজ্ঞাস করছিলো তখন শুনছিলাম।
আমিঃ অহহ আপনার ব্যাথা কমেছে?
মেয়েঃ হ্যা কিছুটা কমেছে আপনি তো বললেন না।

আমিঃ হ্যা কমেছে তাই তো কলেজে আসতে পেরেছি আচ্ছা আমি ক্লাসে যাচ্ছি বাই ভালো থাকবেন।
কয়েকদিন পর আমি মোটরসাইকেল চালানো আয়ত্তে এনে ফেলেছি।
চাচ্চু তুমি বলেছিলে আমি মোটরসাইকেল চালানো শিখলে তুমি আমাকে নতুন একটা কিনে দিবে?
চাচ্চুঃ হ্যা বলেছিলাম।
আমিঃ তাহলে এখনো কিনে দিচ্ছ না কেনো?
চাচ্চুঃ তোর আব্বু না করেছে তোকে যেনো বাইক না কিনে দেই।

আমিঃ অহহ আচ্ছা ঠিক আছে মন খারাপ করে চলে আসলাম এতো আশা নিয়ে বসে ছিলাম।
সব শেষ করে দিলো আমি রুমে বসে ফেসবুক চালাচ্ছি চোখ আটকে গেলো একটা গ্রুপে।
একটা পোস্ট তাও নিলার আইডি থেকে করা।
এইরকম ছিলো জীবনে এমন কিছু থাকে বা আসে যেটা খুবই মূল্যবান হয় যেটা একবারই আসে।
যা খুব যত্ন করা রাখতে হয়।

কেও পারে কেও পারে না।
আর যে পারে না হারিয়ে ফেলে।
পরে খুঁজেওও আর ফিরে পায় না।
এমন পোস্টের আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না কেনো করছে সেটা জানিনা।
ওর আইডি যাই না ইচ্ছা করেই যাই না।

কিন্তু আজ গেলাম এখনো সব কিছু আগের মতই আছে।
শুধু রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পাল্টে গেছে।
ভালো লাগছিলো না বের হয়ে গেলাম ওর আইডি থেকে।
মায়া বাড়িয়ে যখন লাভ হয় না তখন মায়া কাটাতে হয় আমিও সেটাই করছি কিন্তু নিলার কথা বারবার মনে পড়তো আর যখনি নিলার কথা মনে পড়তো ওর খারাপ দিক গুলো ভাবতাম কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিলাকে ভুলে থাকতে পারতাম তখন।
শুয়ে থাকতেও ভালো লাগছিলো না।

আমি বাইরে বের হবো ভাবছি।
কাকিয়া এসেঃমামুন তোর চাচ্চু তোকে ডাকছে দেখতো কেনো?
আমি উঠে চাচ্চুর কাছে চলে গেলাম।
চাচ্চু শোফায় বসে ছিলো।

আমিঃ চাচ্চু আমাকে তুমি ডেকেছ?
চাচ্চুঃ হ্যা তা বাবা দেখে মনে হচ্ছে মন খারাপ।
আমিঃ কই নাতো আমার মন খারাপ হতে যাবে কেনো?
চাচ্চুঃ বুঝেছি মন খারাপ।

মন খারাপ করে থাকতে হবে না বাইরে যাও তোমার জন্য কেও একজন অপেক্ষা করছে।
আমিঃ চাচ্চু কে আমার জন্য অপেক্ষা করছে?
চাচ্চুঃ সেটা বাইরে গেলেই বুঝতে পারবে কে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
কে হতে পারে? কে হতে পারে?

নাহ তেমন তো কেও নেই যে আমার জন্য অপেক্ষা করবে।
আমি ভাবতে ভাবতে বাহিরে চলে এসেছি
দেখি নতুন একটা বাইক রাখা।
আমি গিয়ে পাশে দাঁড়ালাম
পেছন থেকে চাচ্চু বললো কি পছন্দ হয়েছে তো?
আমিঃ এটা কার চাচ্চু?
চাচ্চুঃ কার আবার আমার একমাত্র ভাতিজার।

বাইকের সাথেই চাবি লাগানো ছিলো আমি লাফ দিয়ে উঠেই স্টার্ট করেই ছু হয়ে গেলাম।
সন্ধ্যায় বাসায় আসলাম
চাচ্চুঃ তুই একা ঘুরতে গেলি আমাকে সাথে নিলি না কেনো?

আমিঃ চাচ্চু তুমি তো বলোনি আমার সাথে ঘুরতে বের হবে।
দিনগুলো বেশ ভালোই কাটতে লাগলো তবে নিলাকে কিছুতেই স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পাড়ছিলাম না বার বার শুধু নিলার কথা মনে পড়ছিলো যতইই ভাবি নিলাকে আর মনে করবো না ততবেশি মনে পড়ে যায় নিলাকে।
তবুও সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।
৩মাস কেটে গেছে।

হঠাৎ চাচ্চু বললো।
তাড়াও নাকি বিদেশ চলে যাবে আমি চাইলে একা এই বাসায় থাকতে পারি কিন্তু আমার পক্ষে একা থাকা একদম সম্ভব না।
আমি একা কিভাবে থাকবো?
চাচ্চুঃ কিছু করার নেই তাহলে তুই এক কাজ কর তোর আব্বু আম্মুর কাছে ফিরে যা সেটাই ভালো হবে।
আমিঃ তাছাড়া তো অন্য কোনো উপায় দেখছি না।

কি আর করার চাচ্চুরা নাকি যত তাড়াতাড়ি পারে দেশের বাইরে চলে যাবে।
পরদিন আমি আমারর বাসায় চলে আসছি।
আব্বু আম্মু তোমরা কেমন আছ?
ভালো আছি তুই কেমন আছিস?

আমিঃ হ্যা আব্বু আম্মু আমিও ভালো আছি
তারপর কিছু কথা বলে আমার রুমে চলে গেলাম।
মাকড়সারর জাল ময়লা দিয়ে রুম ভরপুর হয়ে আছে
সারাদিন লেগে গেলো রুম পরিষ্কার করতে,

পরদিন আবার আগের কলেজে যাবো।
তবে আর হেটে বা রিক্সায় করে নয়,
চাচ্চুর দেওয়া বাইক নিয়ে যাচ্ছি,

ক্যাম্পাস দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম মিম আর ও বান্ধবীরা হা করে দেখছিলো। তবে আমি নিলাকে খুঁজছিলাম মনে মনে নিলা কোথায়।
কিন্তু কোথাও পেলাম না আমি বাইক পার্ক করে নাজমুল আর রাফিকে খুঁজতে লাগলাম।
কিন্তু খুজেও ওদের পাওয়া গেলো না।
পরে মিমদের কাছে গেলাম।
আরে মামুন ভাইয়া আপনি এতোদিন পর?

আর এতোদিনই বা কই ছিলেন?
আমি কই ছিলাম সেটা পরে বলছি তার আগে এটা বলো রাফি আর নাজমুল কই গেছে
মিমঃওরা তো আগের মত নিয়মিত কলেজেই আসে না।
রাফিকে কল দিলাম নতুন নাম্বারর দিয়ে।
কিরে শালা কলেজে আসিস নাই কেনো?
রাফিঃ কে আপনি?

আমি মামুন তুই ১০মিনিটের মধ্যে কলেজে আয়।
রাফি;মামুন তুই এতোদিন পর কই থেকে?
আমিঃ সব বলবো আগে কলেজে তো আয়।
রাফিঃ আমি এখুনি আসছি

কল কেটে দিলাম নাজমুলরে ফোন।
হ্যালো কই তুই?
কলেজে যাচ্ছি কিন্ত্ আপনি কে?
আমি যেই হোক একটু তাড়াতাড়ি কলেজে আয় তো রাখি
কল কেটে আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম।
দেখি নাজমুল আসছে।

আমি ওর সামনে গিয়ে কিরে দোস্ত কেমন আছিস?
নাজমুল আমাকে দেখে মনে হয় ভূত দেখার মত ভয় পেয়েছে।
নাজমুলঃ দোস্ত তুই এখানে এতোদিন পর আর কই ছিলি এতোদিন? তোর বাসায় গিয়েও কিছু জানিতে পারিনি।
আমিঃ রাফি আসুক তারপর সব কিছু বলবো তোদের।
ইতিমধ্যে রাফি চলে আসছে।
তারপর ওদের সব কিছু বললাম।

সব শুনে তাই বলে তুই আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখবি?
আমিঃ কি করবো বল তোদের সাথে যোগাযোগ রাখলে নিলার কথা জানতে ইচ্ছা করবে।
আর নিলাকে ভুলতে পারবো না অযথা কষ্ট পাবো তাই আর তোদের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখিনি।
রাফিঃ দোস্ত নিলাও না কেমন পাল্টে গেছেরে।
আমিঃ কেনো কি হয়েছে?

রাফিঃ জানিনা তবে তুই যখন কলেজে আসা বন্ধ করে দিলি নিলা কেমন জানি মনমরা।
হয়ে থাকতো কারো সাথে কথা বলতো না চুপচাপ বসে থাকতো।
আমিঃ তারপরর।
রাফি;নিয়মিত কলেজে আসা বন্ধ করে দিলো

আমিঃ আরে মনে হয় বায়েজিদের সাথে ঝামেলা হয়েছে তাই এমন হয়েছে বাদ দে দোস্ত তোদের খবর বল। রাফিঃ কি আর বলবো দোস্ত আনহাকে ছাড়া আমার কিছুই ভালো লাগে না, সবসময় ওর কাছে থাকতে ইচ্ছা হয়।
আমিঃ তো চলে গেলেই তো পারিস নাকি?
রাফিঃ ইচ্ছা করলেই কি সব সম্ভব?
আমিঃ সেটাও ঠিক বলছিস ভাই।
নাজমুল তোর খবর বল মিমের সাথে কেমন চলছে?

নাজমুলঃ ধুরধুর আর বলিস না কয়েকদিন পর ভালো গেছে কিন্তু আবার সেই আগের মত করা শুরু করে দিয়েছে।
তারমানে তোকে আর পাত্তা দেই না?
নাজমুলঃ হ্যারে আমি আর ওর সাথে রিলেশন করবো না।
আমিঃ তাহলে অন্য মেয়ে পছন্দ করে নিলেই তো পারিস?

নাজমুলঃ মিমকে ছাড়া অন্য কাওকে আমার ভালো লাগে নাতো?
কথা বলতে বলতে ক্লাসের বেল দিয়ে দিলো।
আমরা ক্লাস করতে গেলাম।
এতোদিন কলেজে কেনো আসিনি সেই সম্পর্কে স্যার জানতে চাইলে আমি আবার আব্বুর সাথে স্যারকে কথা বলিয়ে দেই।
আব্বু সব কিছু বলে দেই স্যারকে।
স্যার আর কোন কিছু জিজ্ঞাস করেনি।
স্যারের ক্লাস শেষ এইবার ম্যামের ক্লাস।

আমরা পেছনে বসেছি।
ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।
আগে যেমন ফাজলামি করতাম আজও তেমনভাবেই করতেছিলাম।
মাঝখানে বাদ দিয়েছিলাম নিলার জন্য নিলা যদি খারাপ ভাবে তার জন্য কিন্তু নিলাই যখন আমার থেকে চলে গেছে ভালো খারাপ দিয়ে কি হবে?
ম্যাম মনে হয় আমাকে দেখেছে।
আমাদের কাছে আসতে লাগলো।

ভয় হচ্ছে তবে আগের মত না।
ম্যামঃ এতোদিন কোথায় ছিলে মামুন?
আমিঃ জি ম্যাম এক রিলেটিভের বাসায়।
ম্যামঃ রিলেটিভের বাসায় কেও এতোদিন থাকে।
আমিঃ হ্যা ম্যাম আমি থাকি।

ম্যামঃ আচ্ছে ঠিক আছে মন দিয়ে পড়ালেখা করবে এতো ঘুরাঘুরি ভালো নয়।
আমিঃ ঠিক আছে ম্যাম।
ম্যাম চলে গেলো।
ম্যামের কথা শুনে বুঝতে।
পারলাম আমার উপর আর রেগে নেই।
সব গুলো ক্লাস শেষ করে বেরর হয়েছি।

ওরা সামনে যাচ্ছিলো পেছন থেকে আমি বাইক নিয়ে এসে ওদের কাছে দাঁড়ালাম।
রাফিঃ কিরে কার এটা?
আমিঃ চাচ্চু আমাকে দিয়েছে।
উঠ ওদের দুজনকে উঠিয়ে চালাতে লাগলাম।
ওদের বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমি আমার বাসায় চলে গেলাম।
পরদিন ওদের সাথে নিয়েই কলেজে গেলাম।

ক্যাম্পাস দিয়ে যাচ্ছি নিলা আমার পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে।
হর্ন দিচ্ছি কিন্তু সাইড দিচ্ছে না।
পরে অন্য সাইড দিয়ে নিয়ে গেলাম।
ক্লাসে চলে গেলাম।

নিলাকে দেখেই কেনো যানি রাগ হচ্ছিলো।
পেছনেরর সিটে বসলাম।
দেখলাম নিলা ক্লাসে আসছে তবে আগের নিলার আর এখনকার নিলাকে মিলাতে পাড়ছি না আগের নিলা নাদুস নুদুস ছিলো আর এখন একটা পাটখড়ি হয়ে গেছে।
নিলা আমার কাছে আসলো।

আমি দেখেও না দেখার ভান করে অন্য দিকে চেয়ে আছি এতোদিন কই ছিলে
শুনেও কোনো উত্তর দিলাম না।
নিলাঃ কি হলো কিছু জিজ্ঞাস করছি তো নাকি?
আমিঃ হ্যা কি আমাকে কিছু বললেন?


পর্ব ১২

কি হলো আমি কিছু জিজ্ঞাস করছি তো নাকি? (নিলা)
আমিঃ হ্যা আমাকে কিছু বললেন আপনি?
নিলাঃ তোমাকেই তো বলছি এতোদিন কোথায় ছিলে?
সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
নিলাঃ দরকার আছে বলো তুমি?

আমিঃ বলবো না এখান থেকে জান তো।
নিলাঃ আমি যাবো না তোমাকে আমি যেটা বলছি সেটা বলো কোথায় ছিলে।
আমিঃ অই আপনাকে এখান থেকে যেতে বলছি তো নাকি কান দিয়ে যাচ্ছে না কথা।
নিলাঃ না যাচ্ছে না।
রাগ উঠে যাচ্ছে আমার।
আমিঃ দেখুন আমার কিন্তু রাগ উঠে যাচ্ছে প্লিজ এখান থেকে যান। না হলে খারাপ কিছু হয়ে যাবে।

নিলাঃ কি খারাপ হবে বলো আমি দেখতে চায় কি খারাপ হয় আমার সাথে। আমি জানি তুমি আমাকে কিছুই করবে না।
আমিঃ কে বলছে কিছু করতে পারবো না তোকে এখান থেকে যেতে বলছি তবুও যাচ্ছিস না কেনো তুই? তোর কি লজ্জা শরম কিছুই নাই নাকি এটা তোর পেশা ছেলে বদলানো? একদম জোরে চিৎকার করে কথাগুলো বললাম।
ক্লাসের বাকি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি হলো এখনো যাচ্ছিস না কেনো?
নিলা কোনো কথা বলছে না মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

রাগ দেখিয়ে আমি ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম।
ক্যাম্পাসে এসে মাত্র বসেছি অমনি ক্লাস শুরু ঘন্টা পরে গেলো।
উঠে আবার ক্লাসে চলে গেলাম।
রাফিঃ দোস্ত নিলার সাথে এমন ব্যাবহার না করলেও পাড়তিস। দেখ মেয়েটা সেই তখন থেকে কেঁদেই যাচ্ছে।
আমিঃ কেদে যাচ্ছে তাতে আমার কি?

ওর ইচ্ছা হয়েছে কাঁদছে আর ওর সাথে এর থেকে ভালো ব্যাবহার যায় না বুঝেছিস।
রাফিঃ তবুও মানুষ মাত্রই তো ভুল হয় নিলাও ভুল করে ফেলছে মাফ করে দে মেয়েটাকে।
আমিঃ সব ভুলের ক্ষমা হয়না সেটা ভুলে যাস না।
স্যার চলে আসছে সবাই চুপ হয়ে গেলাম।
ক্লাস গুলো করে ওদের সাথে নিয়ে বাসায় চলে আসছি।

কয়েকদিন পর।
নিলারর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে,
দেখে মনে হয় খাওয়া দাওয়া একদম করে না,
রাতে ঠিক মত ঘুমায় না,
সবাই ক্যাম্পাসে বসে ছিলো।
তখন নিলা আমাদের কাছে আসলো।

ওকে দেখলেই কেনো জানি রাগ হয় আমার।
মামুন তোমার সাথে আমার কথা আছে।
আমিঃ কিন্তু আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই।
আপনি আমার সামনে থেকে প্লিজ যান।
নিলাঃ কিন্তু কথা গুলো বলার খুব দরকার।
আমিঃ কিন্তু আমার শোনার কোনো ইচ্ছা নেই।

নিলাঃ মামুন প্লিজ এমন করো না আমার দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে চলো কোথায় বসে কথা বলি।
আমিঃ আপনি একা গিয়া কোথাও বসে পড়েন আমাকে কেনো যেতে হবে সেটাই তো বুঝতে পাড়ছি না, আর আপনার বায়েজিদ কোথায় গেছে?
আর আমার থেকে না কথাটা শেষ করতেই পারলাম না নিলা হঠাৎ করেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
নিলাকে এই অবস্থায় দেখে কেনো জানিনা নিজের রাগটাকে আর পুষে রাখতে পারলাম না।
নিলা এই নিলা কি হলো?
নিলা কোনো সাড়া শব্দ দিচ্ছে না।

আমি রাফি আরর নাজমুল মিলে নিলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।
ম্যামকে কে বলবো সেই সুযোগ টাও পায়নি।
হাসপাতালে নিলাকে ভর্তি করে।
ম্যামকে জানালাম।

ডাক্তারের কাছে জানতে পাড়লাম না খেয়ে থাকার জন্য আর রাতে না ঘুমানোর জন্য এমন হয়েছে।
ম্যাম আসার পর তাকে সব বুঝিয়ে দিয়ে আমরা চলে আসলাম।
ম্যাম আমাদের নিলার জ্ঞান আসা অবধি থেকে আসার জন্য বলেছিলেন কিন্তু আমরা চলে আসি।
আমিঃ রাফি চল তোর নানু বাসা থেকে ঘুরে আসি।
রাফিঃ সত্যি যাবি তুই?

আমিঃ হ্যা আমি যাবো নাজমুল তুই যাবি?
নাজমুলঃ হুম যাবো এখানে থাকলে মিমকে কিছুতেই ভুলে থাকতে পারিনা তাই একটু ঘুরে আসি ভালো লাগবে।
আমিঃ গেলে কিন্তু ৭দিনের আগে আসবো না এটা বলে দিলাম।
রাফিঃ ১৪ দিন থাকলেও আমার কোনো সমস্যা হবে না।
নাজমুল তোর কোনো সমস্যা হবে নাকি?

না কোনো সমস্যা হবে না চল আজকেই রওনা দেই।
আমিঃ হ্যা সেটাই ভালো হবে।
সেদিনই আমরা রাফির নানু বাসায় চলে আসি।
রাফিকে তাড়া আদর করে আমাদেরো সেইভাবেই আদর করে তাই তো আসা, আসলে নিলা যখন সামনে আসে তখন রাগ হয় ঠিকই কিন্তু ওকে অমন অবস্থায় দেখলে কষ্ট ও হয়। তাই একটু একা থাকতে গ্রামে চলে আসা।
সেদিন আর কোথাও বের হলাম না।

পরদিন নাস্তা করে একটু বের হলাম উদেশ্যে আনহাদের স্কুলে গিয়ে আনকে সারপ্রাইজ দিবো।
আমরা স্কুলে চলে এসেছি কিন্তু আনহাকে খুঁজে পাচ্ছি না।
অনেক খোজা খুঁজির পর আনহার দেখা মিললো।
রাফি গিয়ে পেছন থেকে আনহার চোখ চেপে ধরলো।
আনহাঃকে আমার?
রাফি কিছু বলছে না।

আনহাঃকে এই রকম অসভ্যতামি করছে চোখ ছাড় বলছি।
রাফি এইবারো চোখ ছাড়লো না।
আনহাঃদেখ তোকে আমি শেষ বারের মত বলছি আমার চোখ ছেড়ে দে নয়তো খারাপ কিছু হয়ে যাবে।
রাফি ভয় পেয়ে আনহার চোখ ছেড়ে দেয় আনহা রাফির দিকে ঘুরেই একটা চড় বসিয়ে দেয়।
তারপর দুজনি খুব অবাক।

রাফি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর আনহা রাফির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আর আমরা দুজন পাশ থেকে দেখে যাচ্ছি।
আনহা’সরি সরি আমি বুঝতে পারিনি তুমি আমার সাথে এমন করছ। আর তুমি এখানে কবে আসলে?
রাফি কোনো উত্তর দিচ্ছে না মনে হয় রেগে আছে।

আনহাঃকি হলো আমি তো বুঝতে পারিনি বললাম তো, তাও এতো রেগে কেনো আছ?
রাফিঃ তুমি এইভাবে আমাকে মারবে আমি ভাবতেও পারিনি খুব তো বলতে আমি তোমার ১০০মিটারের মধ্যে থাকলেও আমাকে নাকি খুঁজে নিবে আর আমি আজ এতো পাশে ছিলাম তবুও তুমি বুঝতে পারলে না।

আনহাঃআরব বাবা সরি বলছি তো। আর আমার কি দোষ বলো? আচ্ছা ধরো তুমি আজ এইভাবে না এসে অন্য কেও আমার চোখ ধরলো আরর আমি যদি তাকে কিছু না বলি সে তো রায় পেয়ে যাবে পরে আবার সে একই কাজ করবে তাই না। তাই যাতে পরে আর এইকাজ করার সাহস না দেখায় তার জন্য এইভাবে মারতে বাধ্য হয়েছি। /
রাফিঃ একদম ঠিক করছ বাবু মারো আরো একটা মারো।
মেয়ে কি আবোল তাবোল বুঝালো আর মাথা মোটা।

সেটা খেয়ে নিয়ে বলছে আবারো মারার জন্য।
আনহাঃনা আর মারবো না, এখনন বলো তোমরা কখন আসলে?
রাফিঃ কাল এসেছি।
আনহাঃআমাকে জানাওনি কেনো?
রাফিঃ তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো বলেই তো জানায়নি।
রাফিঃ আজকে বিকালে কিন্ত্ আমাদের সাথে বের হতে হবে।
আনহাঃহ্যা হবো আচ্ছা তুমি একটু দাড়াও আমি এখুনি আসছি।
এইকথা বলেই আনহা দৌড়ে চলে গেলো।

একটু পরর ব্যাগ কাধে নিয়ে আবার ফিরে আসলো।
আনহাঃচলো এখনু তোমার সাথে ঘুরতে বের হবো।
রাফিঃ কিন্তু তোমার ক্লাস?
আনহাঃদু একদিন ক্লাস না করলে কোনো সমস্যা হবে না চলো তো।
রাফির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেলো।
আমি আর নাজমুল এতিমের মতো স্কুলের ঘুরতে লাগলাম
কতক্ষণ ঘুরে আমরা বাসায় চলে আসলাম।

রাফি তখনো আসেনি।
ওর নানু জিজ্ঞাস করেছিলো রাফি কোথায় ভুলভাল বুঝিয়েছিলাম।
দুপুর ১টায় রাফি বাসায় আসলো।
আমিঃ কিরে এতোক্ষন কই ছিলি।
রাফিঃ আরে মামা হয়ে গেছে।

আমিঃ কি হয়ে গেছে?
রাফিঃ আরে আমাদের হয়ে গেছে ওইটা হয়ে গেছে।
কি হয়েছে
রাফিঃ সেটা জানার দরকার নেই।
শালাকে দেখে ফুরফুরা মনে হচ্ছে।
বিকেলবেলা আবারো আমরা ঘুরতে বের হয়েছি
রাফির ফোনে কে জেনো কল করেছে।
হ্যালো।

হ্যা বলো।
মামুন? হ্যা ও আমার সাথেই আছে।
কেনো ওর সাথে কিসের কথা?
রাফির কাছে কল করে হঠাৎ আমার কথা কে জিজ্ঞাস করছে সেটাই মাথায় আসছে না আমার।
রাফিঃ দোস্ত দেখতো কে জেনো তোর সাথে কথা বলতে চাচ্ছে?
হ্যালো কে?

মামুন তুমি প্লিজ ফোন কেটো না তোমার সাথে আমার কথা আছে।
কথা শুনে ঠিক বুঝতে পারলাম নিলা ফোন করেছে।
আমিঃ দেখুন আপনি কেনো বুঝতে পাড়ছেন না আমি আপনার সাথে কোনো প্রকার কথা বলতে চাই না,
শুনতে চাই না আর আপনার মিথ্যা কোনো গল্প বা নাটক বা কোনো কথা।
নিলাঃ মামুন আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না, এই কয়েকমাসে তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার খুব কষ্ট হয়েছে প্লিজ মামুন তুমি সেই আগের মতে হয়ে যাও না, চলো না আমরা আবার আগের মত রিলেশন শুরু করি।

আমিঃ হ্যা যাতে করে নতুন করে আবার আমাকে অপমান করা যায় আবার মাইর খাওয়ানো যায় তাই না।
নিলাঃ তোমাকে কেনো আমি মাইর খাওয়াবো?
আমিঃ ওমা কিছুই মনে নাই দেখছি ভুলে গেলেন নাকি?
সেদিন আপনি ডেকে নিয়ে বায়েজিদকে দিয়ে আমাকে মাইর খাইয়েছিলেন।

মামুন তুমি উল্টা পাল্টা কি বলছ আমি কবে তোমাকে ডাকলাম আর দেখো মামুন তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে।
আমিঃ সেদিন মনে হয় মাইর খাইয়ে আপনার শান্তি হয়নি আবার মাইর খাওয়ানোর ধান্দা করছেন।
তবে আপনার সে আশা কোনো দিন মিটবে না এই কথা বলেই কল কেটে দিলাম।


পর্ব ১৩

সেদিন কি কল করে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাইর খাইয়ে আপনার শান্তি হয়নি। নাকি নতুন করে আবার মাইর খাওয়ানোর পরিকল্পনা করছেন?
দয়া করে আর ফোন দিয়ে বিরক্ত কইরেন না।
এই কথা বলেই কল কেটে দিলান।
রাফি শোন যদি আবারো কল দিয়ে আমার কথা জিজ্ঞাস করে বলে দিবি আমি এখানে নেই।
রাফিঃ কিন্তু তুই নিলার সাথে কেনো এমন করছিস মেয়েটা তোকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।

আমিঃ কেনো শুরু করছি মানে তোরা কি ভুলে গেলি সেই সময়ের কথা আমার সাথে কি রকম আচরণ করতো আমাকে বাদ দিয়ে বায়েজিদের সাথে আমি আর ভাবতে পাড়ছি না।
আমি বাসায় চলে গেলাম তোরা ঘুরে আয়।
নাজমুলঃ তুই না গেলে তো মজাই হবে না।
মাথা ঠাণ্ডা কর দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমিঃ মাথা ঠান্ডাই তো করতে পাড়ছি না নিলার কোনো কথা মনে হলেই আমার রাগ উঠে যায়।

রাফিঃ আচ্ছা আর কখনো নিলার ফোন আসলে তোকে দিবো না এইবার তো চল আমাদের সাথে।
একটু ওয়েট কর কিছুক্ষণ বসে নেই।
আমি মাটিতে বসে পড়লাম আমাদের স্যার বলেছিলো যখন খুব রাগ হবে তখন চুপচাপ বসে থাকতে তাহলে নাকি রাগ একাই অনেক কমে যায়।
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আমি আগের মত হলাম।
ওদের সাথে ঘুরতে লাগলাম।

আনহা ওর বান্ধবীদের নিয়ে চলে এসেছে গ্রামের সুরু পথ দেখেই মন জুড়িয়ে যায়।
আমরা হাটছি।
আনহাঃআচ্ছা মামুন ভাইয়া আপনি প্রেম করেন না?
আমিঃ হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো?
আনহাঃদরকার আছে বলুন
আমিঃ নাহ করি না।

আনহাঃকাওকে ভালোবাসেন?
এই কথা শুনেই আমার রাগ হতে লাগলো।
কেনো রাগ হচ্ছে তা আমি জানিনা তবে প্রচুর রাগ হচ্ছে
রাফি হয়তো ব্যাপার টা বুঝতে পেড়েছে যে আমি রেগে গেছি তাই বললো
আনহা চুপ করো তো।

রাফি আনহাকে নিয়ে আমাদের আগে আগে হাটতে লাগলো।
আমি নাজমুল আর মারিয়া ও মিতু পেছনে হাটছি।
মারিয়াঃমামুন ভাইয়া যদি প্রেম করতে চান আমাদের বলবেন আমরা ব্যাবস্থা করে দিবো।
আমিঃ সেই সবের কোনো দরকার হবে না,

মিতুঃকেনো দরকার হবে না, কোনো দিন কি বিয়ে করবেন না?
আমিঃ এতো অল্প বয়সে কিসের বিয়ে?
মিতুঃকিসের বিয়ে মানে বিয়ে তো বিয়েই হয় সেটার আবার মানে আছে নাকি?
আমিঃ হ্যা তা নেই কিন্তু আপনি এতো রেগে কথা বলছেন কেনো?
মিতুঃকি করবো বিয়ের কথা বলতে আপনি এমন ভাব ধরলেন যেনো বিয়ের কথা জীবনে এই প্রথম শুনলেন।
আমিঃ হুম শুনলাম।

মিতুঃএকদম ফাজলামি করবেন না বলে দিলাম।
আমিঃ আর যদি করি তাহলে কি হবে?
মিতুঃঘুষি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দিবো আপনার।
ওদের সাথে বিকেলটা অনেক ভালো কাটলো।
রাতে আমরা তিনজন একরুমে বসে আড্ডা দিচ্ছি
রাফিঃ দোস্ত নিলা আবার ফোন করেছে।

আমিঃ তো আমি কি করবো, দেখ যাই করিস না কেনো ভুলেও এটা বলবি না আমি এখানে আছি।
অন্য যা ইচ্ছা তাই বলবি কিন্তু এইটা কখনো বলবি না আমি এখানে বসে আছি।
রাফিঃ আচ্ছা বলবো না।
রাফি ফোন ধরেই লাউড স্পিকারে দিলো।
হ্যালো(নিলা)

হ্যা বলেন(রাফি)
মামুন কোথায়? (নিলা)
রাফিঃ এখানেই তো ছিলো কিন্তু একটু আগে কোন মেয়ে জেনো কল করলো কথা বলতে বাইরে চলে গেলো।
কিহ মামুন অন্য কোনো মেয়ের সাথে কথা বলে? কবে থেকে মেয়ের নাম কি মেয়ের বাসা কোথায়।
কথা গুলো যখন বলছিলো আমি স্পষ্ট বুঝতে পাড়ছিলাম কণ্ঠ ভারি হয়ে আসছিলো।

রাফিঃ আমি এতো কিছু জানিনা তো তবে বেশিরভাগ সময় ও মেয়ের সাথে কথা বলে।
নিলাঃ ভাইয়া সত্যি কি ও মেয়ের সাথে কথা বলে নাকি আপনি আমার সাথে মজা করছেন।
নিলার ন্যাকামি কথা শুনে আমার কেনো জানি হাসি পাচ্ছিলো কোনো রকম সেটা চেপে রাখছিলাম।
কি হলো ভাইয়া বলো না ও কোন মেয়ের সাথে কথা বলে।

রাফিঃ আচ্ছা আমি তো জানিনা তবে জেনে তোমাকে জানিয়ে দিবো কেমন।
নিলাঃ আপনারা এখনো কোথায় আছেন?
রাফিঃ আছি কোনো এক যায়গায় বলা যাবে না এখন রাখি।
রাফি ফোন রেখে দিলো।
আমিঃ অই তুই মিথ্যা কেনো বলতে গেলি?

রাফিঃ তুই তো বললি তুই এখানে আছিস এটা জেনো নিলাকে না বলি।
আমিঃ তার মানে তোকে এটা বলতে বলেনি আমি অন্য একটা মেয়ের সাথে প্রেম করি বা কথা বলি।
রাফিঃ আরে মামা বুঝোস না কেনো? ও তো এমনিতেই জ্বলছে আরো একটু জ্বালিয়ে দিলাম।
আমিঃ ভালো করেছিস চল এখন খেয়ে আসি।

রাফিঃ আমার খেতে ইচ্ছা করছে নারে আনহা যা খাইয়েছে মুখের রুচি একদম চলে গেছে।
আমিঃ কি এমন খাওয়ালো যার কারণে মুখের রুচি চলে যাবে?
রাফিঃ সেটা আমার আর আনহার ব্যাপার তোদের শুনে কাজ নেই।
দেখলাম নাজমুল মন খারাপ করে বসে আছে।
আমিঃ কিরে নাজমুল তোর আবার কি হলো?

নাজমুলঃ মিম এসএমএস দিয়েছে।
আমিঃ সেটা তো ভালো কথা এতে মন খারাপ করে বসে থাকার কি আছে?
নাজমুলঃ ও বলেছে আজকে রাতে যদি ওর সাথে দেখা না করি ও নাকি অন্য একটা প্রেম করবে বল ভাই আমি সেটা কিভাবে মেনে নিবো?
আমিঃ ও অন্য প্রেম করবে তো তুই চুপ করে বসে থাকবি নাকি তুইও নতুন একটা প্রেম করবি।
নাজমুলঃ কিন্তু আমার অন্য কাওকে ভালো লাগে নাতো?

আমিঃ ভালো লাগে না তো ভালো লাগাতে হবে শোন মিম বুঝতে পেড়েছে মিমকে ছাড়া তুই অন্য কাওকে ভালোবাসতে পাড়বি না তাই তোর সাথে এমন করছে কিন্তু তুই এইবার দেখিয়ে দিবি তুই ও পাড়িস।
নাজমুলঃ কিন্তু ওকে দেখানোর জন্য অন্য একটা মেয়ের লাইফ কেনো নষ্ট করবো বল তুই?
আমিঃ দেখানোর জন্য হবে কেনো যাকে ভালোবাসবি তাকে তুই মন থেকেই মেনে নিবি।
আর মিমকে ভুলে যাবি সিম্পল।

নাজমুলঃ হ্যা ভাবতে হবে আমার।
আচ্ছা পড়ে ভাবা যাবে চল খেয়ে আসি।
সবাইই মিলে খেতে গেলাম
৭দিন পর।
আচ্ছা অনেক তো হলো এইবার যাবার পালা।

রাফিঃ দোস্ত আর কয়েকটা দিনন থেকে যাই না।
আমিঃ থাকলাম তো ৭ দিন আর কত থাকবো এইদিকে আব্বু আম্মু রাগ করছে বাসায় ফিরছি না তাই।
রাফিঃ কিন্তু আমার তো মন চাচ্ছে না ফিরে যেতে।
আমিঃ তাহলে এক কাজ কর আনহার আচলের নিচে বসে থাক গিয়ে।
রাফিঃ ধুর শালা কিন্তু ভাবছি বিয়ে করে ফেলবো।
আমিঃ তো করে নে সমস্যা কি?

রাফিঃ হুম এরপর যখন আসবো বিয়ে করেই নিয়ে যাবো ভাবছি।
অনেক ভাবাভাবি হয়েছে এইবার যে যারযার জিনিস গুছিয়ে নাও আমারা আজকেই ফিরে যাবো
বিকেলবেলা বেলা আমরা বাসে উঠলাম।
আসতে আসতে রাত ১১টা বেজে গেছে।
আমরা নেমে যে যারযার বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।
আমি হেটে যাচ্ছি রাতে হাটতে ভালো লাগে।

তবে সামনে যেটা দেখলাম নিলা আর বায়েজিদ একসাথে কোথা থেকে যেনো আসছে।
এই রাতের আধারে নিরিবিলি একটা রাস্তায় দুজন ছেলে মেয়ে নাহ আর ভাবতে পাড়ছি না নিলা এতো নিচে নামতে পাড়বে এটা কখনো ভাবিনি আমি ওদের পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম।
পরদিন কলেজে গেছি কিন্তু অই ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পাড়ছি না।
চুপচাপ বসে ছিলাম রাফি আসলো।

কিরে মামুন আজ আমাদের ডাকলি না একাই এসে বসে আছিস কোনো সমস্যা?
আমিঃ না তেমনন কিছু না।
রাফিঃ তোকে দেখে তো মনে হয় কিছু হয়েছে?
ওর কথা শেষ হবার আগেই নিলা আমাদের সামনে।
এই তুমি কাল অতরাতে কই থেকে আসলে?

আমিঃ দেখুন আপনাকে আমি জবাবদিহিতা করবো না, আর আপনি আমার সামনে থেকে চলে গেলেই ভালো হয়।
নিলাঃ না আমি যাবো না আমি আজ আমার ভালোবাসা আদায় করেই তারপর এখান থেকে যাবো।
বসা থেকে উঠে।
এই তোর লজ্জা করে না তোর অই নষ্টা মুখে ভালোবাসার কথা বলিস?

আর তুই কেমন মেয়েরে একসাথে দুই রিলেশন করতে চাচ্ছিস? নাকি বায়েজিদ তোর চাহিদা পূরণ করতে পাড়ছে না তাই আমাকে লাগবে তোর।
আর তুই কি ভেবেছিসস আমি তোর মত নষ্টা মেয়েকে ভালোবাসতে যাবো? কোনো দিনো না হ্যা এর আগে তাও তোর জন্য একটু অনুভূতি ছিলো কিন্তু কাল রাতে যেটা দেখেছি তারপর তোর জন্য এখন শুধু ঘৃন্যা আছে তুই আমার সামনে থেকে চলে যা বলছি।
নিলাঃ মামুন তোমার কিছু ভুল হচ্ছে।
আমিঃ ভুল নিজের চোখে যা।

দেখেছি সেটা কিভাবে ভুল হবে।
তুই তো একটা নষ্টা মেয়ে তোর দেহ নষ্ট হয়ে গেছে।
নিলাঃ দেখো মামুন বেশি হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ আবার বড় বড় কথা বলছিস তুই আমি কি কিছু ভুল বলছি তুই তো নষ্ট হয়ে গেছিস।
নিলাঃ মামুন থামো তুমি না জেনে ভুল ভাল বলছ।

ভুল কিসের ভুল তুই না করতে পারবি কাল রাতে তুই বায়েজিদের সাথে শুয়েছিলি না।
মামুনননননন।
ঠাস ঠাসসসস।
এতোক্ষণ ধরে বলে যাচ্ছি চুপ করতে কথা কানে যাচ্ছে না(নিলা)।
তুই আমাকে মারলি অই।
তুই আমাকে মারলি কেনো।
এই বলে আমিও ওর দুই গালে দুইটা বসিয়ে দিলাম।


পর্ব ১৪

তুই আমাকে মারলি কেনো? অই তুই আমাকে মারলি কেনো? এই কথা বলে আমিও নিলার দুই গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিলাম।
সত্যি কথা বলেছি তো গায়ে লেগে গেছে তাই না?
তুই আর কখনো আমার সামনে আসবি না এটা আমি বলে দিলাম।
চড় খেয়ে নিলা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।

আমিঃ কিরে কথা কান দিয়ে যাচ্ছে না? তোকে বলছি না আমার সামনে থেকে চলে যেতে তবুও যাচ্ছিস না কেনো?
নিলাঃ কিন্তু আমার কথা তো শুনো? তুমি কিছু না শুনে না জেনে আমার সাথে এমন করতে পারো না,
আমাকে এইভাবে দূরে ঠেলে দিতে পারো না তুমি।
আমি তোকে দূরে ঠেলে দেইনি তুই আমাকে দিয়েছিলি আবার আসছিস নতুন কোনো পরিকল্পনা নিয়ে।
আর অই একদম কাঁদবি না বলে দিলাম।!
কি ভাবছিস তুই কাঁদবি আর আমি পটে যাবো

ভুল ভেবেছিস তোর এই চোখের পানির কোনো মূল্য এখন আমার কাছে নেই যা এখন
দেখ সবাই আমাদের দেখছে তুই এখন যা বলছি।
নিলা আর দাঁড়িয়ে না থেকে কান্না করতে করতেই চলে গেলো।
তাতে আমার কি ও যা করেছে তাতে করে ওকে আমি মাফ করতে পারবো না।

রাফিঃ মামুন তুই রাগ করবি ঠিকক আছে। ওর সাথে তুই রিলেশন করবি না সেটাও ঠিক আছে কিন্তু আজেবাজে কথা না বললে হয় না
আমিঃ না হয় না আর আমি কোনো মিথ্যা কথা বলেনি তো যা দেখেছি যা সত্যি আমি শুধু সেটাই বলেছি এর বেশি কিছু না। /
চল ক্লাসের সময় হয়ে গেছে ক্লাসে যাই।
আমি আর রাফি ক্লাসে চলে গেলাম।
নাজমুল আজ আসেনি।
পেছনের সিটে গিয়ে বসে পড়লাম।

নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি তখনো কেঁদেই চলেছে।
আমি অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম।
স্যারের ক্লাস শেষ তারপর ম্যামের ক্লাস শুরু।
ম্যাম এসেই খেয়াল করলো নিলা কাঁদছে।
কি হয়েছে এমনভাবে কাঁদছিস কেনো?

নিলা কিছু বলছে না শুধু বারবার চোখ মুছছে আর বৃথা হাসি দেওয়ার চেষ্টা করছে
কিন্তু হাসির পরেই আবার চোখ বেয়ে জল পড়ছে।
ম্যামঃ আচ্ছা কাঁদতে হবে না আমি দেখছি কি করা যায়
ম্যাম ক্লাস করতে শুরু করলো এক পর্যায়ে আমার কাছে আসলো।
ম্যামঃ মামুন সামনে তো তোমার পরীক্ষা?
আমিঃ হ্যা ম্যাম।

ম্যামঃ পস্তুতি কেমন নিয়েছ পরীক্ষার
আমিঃ নিয়েছে ম্যাম
ম্যামঃ তুমি আজ থেকে প্রাইভেট যেও।
আমিঃ আচ্ছা ম্যাম দেখা যাবে।

ম্যাম আর কিছু বললো না সেদিন অমনভাবে না করেছিল আবার আজ বলছে আরর আমি যাবো সেটা হতে পারে না। ক্লাস শেষ করে আমি আর রাফি বাইক নিয়ে চলে আসলাম।
বিকেলবেলা আম্মুর কাছে ম্যাম ফোন করলো।
আম্মুঃ কিরে মামুন তুই প্রাইভেট যাচ্ছিস না কেনো?
আমিঃ আম্মু আমি আর অই প্রাইভেট যাবো না।
আম্মুঃ কেনো কি হয়েছে?

আমিঃ আম্মু আমি কিছুই বুঝি না ম্যাম কি বুঝাই।
আম্মুঃ তাহলে তোর আব্বুকে বল নতুন একটা প্রাইভেটে তোকে ভর্তি করে দিতে।
আমিঃ এখন আর নতুন করে প্রাইভেট পড়বো না আম্মু পরীক্ষা শেষ হোক আগে।
পরদিন সকাল সকাল নাজমুলের ফোন।
আমিঃ হ্যালো বল এতো সকালে কেনো ফোন করেছিস?

নাজমুলঃ দোস্ত আমি নতুন একটা মেয়ে পছন্দ করেছি আজ তোদের আমার সাথে যেতে হবে।
আমিঃ মেয়েটার বাসা কোথায়?
নাজমুলঃ আমাদের পাশের পাড়াতেই তবে মেয়েটা অন্য কলেজে পড়ে তাই আজ আমরা অই কলেজে যাবো কিছুদিন দেখবো মেয়েটার মতিগতি কেমন তারপর যদি দেখি সব ঠিক আছে তাহলে প্রপোজ করে দিবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে কখন যেতে হবে বল।

নাজমুল;৮টায় বের হয়ে মেয়েটার পেছন পেছন আরা কলেজে চলে যাবো তারপর দেখবো
নাজমুলের কথামত আমরা ৩জন বের হলাম উদেশ্যে মেয়ের পিছু নেওয়া।
তবে লুচ্চামি করতে না ঘটকালি করতে।
মেয়েটার পিছু পিছু যাচ্ছি।

মেয়েটা হয়তো খেয়াল করেছে কিন্তু একা থাকার ফলে মেয়েটা কিছু বলতে সাহস পাচ্ছিলো না মেয়েটা হেটেই কলেজে যাচ্ছিলো।
নাজমুলঃ ভাই দেখ তোর ভাবি।
আমিঃ ধুর শালা ভাবি হলো কিভাবে?
নাজমুলঃ দেখছিস না কিছুক্ষণ পর পর আমার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে।
আমিঃ তোর দিকে কখন।

ফিরে তাকালো ও তো আমার দিকে বারবার দেখছে।
নাজমুলঃ দেখ ভাই এমন কথা বলিস না হার্ট এর্টাক করবো।
আমিঃ মজা করলাম তবে হয়ে যাবে চিন্তা করিস না
সেদিন যা যা পর্যবেক্ষন করলাম।

মেয়েটা বাসা থেকে বের হয়ে একা একা কিছুদূর যাবার পর ওর বান্ধবীদের সাথে মিলে যায় তারপর কলেজে যায় তারপর সোজা ক্লাসে চলে যায় বের হবার কোনো নাম গন্ধ নেই।
৩দিন গেলাম একটানা নিজেদের কলেজ বাদ দিয়ে এখন অন্যের কলেজে ছুটাছুটি করছি তবুও যদি বন্ধুর একটা গার্লফ্রেন্ড জুটে যায়।
৪র্থ দিন আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়েটাকে প্রপোজ করেই দিবো তারপর যা হবার হবে।
মেয়েটা কলেজে যাচ্ছিলো তখন গিয়ে মেয়েটার সামনে দাঁড়ালাম।

মেয়েঃ কিছু বলবেন?
আমি কিছু বলবো না আসলে
অই নাজমুল বল কি বলবি?
নাজমুলঃ না মানে কিভাবে যে বলি।
আমিঃ আরে শালা এতো আমতা আমতা করলে মেয়ে ভাববে তুই ভিতু তখন আর রাজি হবে না একটু সাহস রাখ ব্যাটা
নাজমুলঃ আপু আমি আপানাকে ভালোবাসি।

নাজমুলের প্রপোজ শুনে আমি রাফি আর মেয়েটা সমানে হেসে দিলাম।
মেয়েঃ ভাইয়া আমিও আপনাকে ভালোবাসি।
নাজমুলঃ ভাইয়া বললেন কেনো?

মেয়েঃ আপনি তো আগে আমাকে আপু বলছেন আর এমনভাবেওও যে প্রপোজ করে?
নাজমুলঃ তাহলে কিভাবে করে আমি তো জানিনা।
মেয়েঃ আচ্ছা আমি করে দেখাচ্ছি কিন্তু ফুল পাবো কোথায়? আচ্ছা আমার কাছে একটা চকলেট আছে আমি সেটা দিয়েই করছি।
মেয়েটা চকলেট বের করলো তারপর হাটু গেড়ে বসে চকলেট টা সামনে তুলে ধরে।
তোমাকে চাই আমি আধার রাতের একা রাস্তায় সঙ্গী হিসেবে।

সকালবেলার কুয়াশা হিসেবে চাই তোমাকে।
প্রতিটি মূহুর্তে বলো হবে আমার?
নাজমুল মেয়েটাকে টেনে তুলে নিয়েই জড়িয়ে ধরলো।
আমিঃ আরে করছিস কি মানুষ দেখছে।
মেয়েঃ দেখুক তাতে কি হয়েছে।

মেয়েটা এমন কথা বলবে সেটা ভাবতেও পারিনি তবে মেয়েটার নামটাও জানা হয়নি।
আচ্ছা আপনার নাম কি?
মেয়েঃ জি আমার নাম কলি।
কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলো।

প্রথম দিনেই প্রেম এতো আঠালো হবে জানা ছিলো না।
যেখানেই যাই শুধু চিপকাচিপকি আর আমার বেলায় চুম্বকের বিপরীত প্রতিক্রিয়া।
৫দিন পর আজ কলেজে যাচ্ছি। নাজমুল আজো যাবে না তবে আমি আর রাফি যাচ্ছি।
কলেজে ঢুকতেই নিলাকে দেখলাম

আমরা বাইক পার্ক করে ক্লাসে ব্যাগ রেখে আবার ক্যাম্পাসে চলে গেলাম
এইবার দেখি নিলার হাতে গাছেল একটা মোটা ডাল।
নিলা এই ডাল দিয়ে কি করবে।

আমরা যখন নিলাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলাম
নিলা হঠাৎ করেই আমার হাত ধরলো।
কি হলো আমার হাত এইভাবে ধরলেন কেনো?

নিলাঃ তুই এই ৪দিন কলেজে আছিস নাই ঠিক আছে তবে অই কলেজেরর মেয়ের পেছনে ঘুরছিলি কেনো সেটা বল।
আমি কি করবো না করবো সেটা আমার ব্যাপার
সেটা আপনাকে বলতে হবে নাকি?
নিলাঃ হ্যা হবে মেয়ের পেছনে কেনো তুই ঘুরবি?
তোর আমি আছি সেটা তুই জানিস না।

আচ্ছা আমাকে ছাড়ুন।
নিলাঃ তোকে তো ছাড়ার জন্য আজ ধরেনি এইটা দেখেছিস কি আমার হাতে এইটা আজ আমি তোর পিঠে ভাঙবো তারপর তোকে ছাড়বো। আমাকে রেখে অন্য মেয়ের পেছনে তুই ঘুরবি সেটা আমি চুপ করে মেনে নিবো সেটা তো হতে পারে না, যেদিন থেকে শুনেছি তুই মেয়ের পেছনে ঘুরছিস সেদিন থেকে এই ডালটাকে যত্ন করছি আজ এর সৎ ব্যাবহার করার সময় হয়ে গেছে্‌।
আপনি আমাকে মারবেন কোন অধিকারে?

নিলাঃ তোকে ভালোবাসি তুই শুধু আমার সেই অধিকারেই।
আমিঃ কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না তাই আমি মনে করছি না আমার উপর আপনার কোনো অধিকারবোধ আছে বা থাকার কথা।
নিলাঃ চুপ বেশি কথা বলবি না এখন বল অই মেয়ের পেছনে তুই কেনো ঘুরেছিস।
আমিঃ প্রেম করবো তাই ঘুরেছি।

আমার কথা শুনে নিলা আরো শক্ত করে আমাকে চেপে ধরলো।
নিলাঃ দেখ একদম অন্য কারো কথা মাথায় আনবি না এটা বলে দিলাম।
আমিঃ যাকে দেখতে গেছি এই কইদিন আপনার থেকে অনেক বেটার নিলাঃ দেখ অই মেয়ের কোনো কথা আমি শুনতে চাচ্ছি না তুই শুধু আমাকে ভালোবাসবি এটাই আমার শেষ কথা।

আমিঃ মেয়েটা আমার মত ছেলেকেই নাকি পছন্দ করে ওভারস্মার্ট রোমান্টিক ছেলে নাকি তার পছন্দ না।
নিলাঃ দেখ আগে যা হয়ে গেছে তার জন্য আমি সরি মাফ চাই তোর কাছে তবুও প্লিজজ তুই আমাকে এইভাবে ছেড়ে যাস না থাকতে পারবো না আমি তোকে ছাড়া।
আমিঃ মেয়েটা আমাকে অনেক সুখে রাখবে আমার সব কথা শুনে চলবে।
নিলাঃ আমিও তোর সবব কথা মেনে চলবো।

আমিঃ মেয়েটা বলছে শুধু আমি হলেই তার চলবে।
কোনো ছেলে বন্ধু তার দরকার নেই।
আমি তার বয়ফ্রেন্ড আমি তার বেষ্টফ্রেন্ড।
আমি তার বর্তমান আমি তার ভবিষ্যৎ।

নিলাঃ প্লিজ মামুন আর বলিস না আমার কষ্ট হচ্ছে।
আমি তোকে অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারবো না।
তোকে অন্য কারো হতেও দেখতে পারবো না।
আমিঃ সেটা তোমারর ব্যাপার আমি কি করবো।

ছাড়ো আমাকে ও রাগ করবে কোনো মেয়ে আমাকে এমনভাবে ধরেছে সেটা শুনলে।
নিলাঃ না ছাড়বো না আর মেয়েটার নাম ঠিকানা সব আমাকে দে।
মেয়েটারর এমন হাল করবো যে আর তোর ধারের কাছেও আসতে চাইবে না।
আমিঃ নিলা তোমার মনে আছে? আমি যেদিন বায়েজদিকে মেরেছিলাম তুমি আমাকে কি বলেছিলে?

বলেছিলে আমি বায়েজিদকে মেরে নাকি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি এর মাশুল আমালে দিতে হবে আরর তা হবে ভয়ানক।
তো তুমি এখন এইসব কেনো বলছ তুমি কেনো অই মেয়েটাকে মারবে?
আমার কথা শুনে নিলা আমাকে ছেড়ে দিলো।
কিছুক্ষণ পর বলল সরি সেদিন আমি বুঝতে পারিনি।

তুমি কেন ওকে মেরেছিলে সত্যি ভালোবাসার মানুষ অন্য কারো হলে মেনে নেওয়া অনেক কষ্টের
আমিঃ এইতো বুঝেছ তবে একটু দেড়ি করে ফেলছে যে।


পর্ব ১৫

তুমি তো দেখছি সব বুঝে গেছ কিন্তু একটু দেড়ি করে ফেলছে বুঝতে।
নিলাঃ হ্যা দেড়ি করে ফেলছি কিন্তু আমাকে কি মাফ করা যায় না?
আমিঃ বিশ্বাসঘাতকের কোনো ক্ষমা হয় না।
নিলাঃ এমন কেনো করছ? প্লিজ তুমি অন্য কোনো রিলেশনে যেও না।

আমিঃ তুমি বলার কে? আর আমি যার সাথে ইচ্ছা কথা বলবো যার সাথে ইচ্ছা মিশবো তুমি না বলার কে?
নিলাঃ আমি তো একসময় তোমার সব কিছু ছিলাম।
আমিঃ হ্যা একসময় ছিলে কিন্তু এখন তো আর নেই।
যাও সামনে থেকে চলে যাও ক্লাসে যেতে দাও আমাকে।
নিলাঃ অই তুই কই যাবি তোকে বলেছি না অন্য মেয়ের সাথে মিশবি না কথা কান দিয়ে যাচ্ছে না?
আমিঃ এইভাবে আমাকে সবার সামনে তুই তুকারি করবে না।
নিলাঃ তো কি আদর করে ডাকবো এতোক্ষণ তো।

বুঝিয়েছি কিন্তু এখন আর বুঝাতে চাচ্ছি না।
এখন এটা তোর পিঠে ভেঙে নেই।
এই বলেই আমার দিকে অগ্রসর হতে লাগলো। নিলা যত আমার দিকে অগ্রসর হচ্ছে আমার কেনো জানি ভয় হচ্ছে এক সময় যখন নিলা আমার একদম কাছে এসে যায় তখন দিশা না পেয়ে দিলাম এক দৌড়।

নিলা আমার সাথে দৌড়ে পারবে না এটা খুব ভালো করেই জানা আছে
পেছনন থেকে অই দাড়া এখন পালাচ্ছিস কেনো?
দাড়া বলছি অই দাঁড়াতে বলছি না,
কে দাঁড়াবে মাইর খাওয়ার জন্য।

দৌড় দিয়ে একদম ক্লাসে চলে আসছি।
কিছুক্ষণ পর দেখি নিলা নাজমুল আর রাফি একসাথে ক্লাসে ঢুকল।
আমাকে কষ্ট দিয়ে খুব মজা পেয়েছিস তাই না?
আমি আপনাকে কিভাবে কষ্ট দিয়েছি?
নিলাঃ তুই মিথ্যা বললি কেনো? তুই নাকি অই কলেজের মেয়ের সাথে প্রেম করিস।
আমিঃ হ্যা করি তো।

নিলাঃ একদম মিথ্যা বলবি না অই মেয়ের সাথে নাজমুল রিলেশন করে। কি ভেবেছিলি আমি সত্যি টা জানতে পারবো না?
তারমানে ওরা সব সত্যি নিলাকে বলে দিয়েছে নাহ মানসম্মান সব শেষ হয়ে গেলো।
আচ্ছা এখন এখান থেকে যান।

নিলাঃ হুম যাচ্ছি তবে শুনে রাখ যদি অন্য কোনো মেয়ের সাথে তুই রিলেশন
করিস তাহলে তোর খবর আছে।
দেখা যাবে কি খবর হয় আমার।
নিলাঃ তারমানে তুই প্রেম করবি?
আমিঃ সিঙ্গেল যেহেতু প্রেম তো করতেই হবে।
নিলাঃ আমি থাকতে তুই সিঙ্গেল থাকতে পারিস না।
ঘন্টা পড়ে গেলো।

নিলা রাগি মুড নিয়েই চলে গেলো।
অই কে বলেছেরে আমি প্রেম করিনা নাজমুল প্রেম করে।
রাফিঃ কি করবো বল মেয়েটা এতো কান্নাকাটি করেছিলো আমার ভালো লাগছিলো না সেটা।
আমিঃ তোর আনহাকে কি বলে দিতে হবে অন্য মেয়ের জন্য তোর দরদ দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে?
রাফিঃ প্লিজ ভাই এমন করিস না আনহা আমাকে একদম মেরে ফেলবে।

আমিঃ তো আমি কি করবো। আর কোনো দিন যদি আমার ব্যাপারে নিলাকে কিছু বলেছিস আমি সিউর আনহাকে বলে দিবো।
রাফিঃ এইযে কানে ধরেছি আর কোনো দিন শুধু তোর ব্যাপারে কেনো আমার ব্যাপারেও কিছু বলবো না।
আমিঃ এই তো গুডবয় কথাটা যেনো মনে থাকে।
রাফিঃ হ্যা থাকবে।

পরেরদিন আমরা ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছি।
হাই আমি অনিকা আপনাদের সাথে পরিচিত হতে আসছি।
রাফিঃ কিন্তু আপনাকে তো চিনলাম না।
মেয়েঃ চিনেন না বলেই তো পরিচিত হতে আসলাম।
নাজমুলঃ হ্যা আমি নাজমুল।
আমি রাফি।

আর আপনি(অনিকা)
জি হ্যা আমি মামুন।
হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো ভদ্রতার খাতিরে হাত মিলাইলাম।
যখনন আমরা একে অপরের হাত ধরে ছিলাম নিলা সেটা দেখছিলো।
এমন একটা সুযোগ পেয়েছি এটা কিভাবে হাত ছাড়া করবো।
হাত ধরেই রাখলাম আর হেসে দিলাম।

নিলাকে দূর থেকেই বুঝতে পাড়ছি নিলা খুব রেগে যাচ্ছে।
অনিকাঃআরে এইভাবে হাত ধরে রাখবেন নাকি?
আমিঃ অহহ সরি।
অনিকাঃঠিক আছে সমস্যা নেই।
এখানে কি বসে পারি?
আমিঃ হ্যা বসে পড়ুন।

অনিকা আমার পাশেই বসে পড়লো।
নিলা এইবার আরো রেগে গেলো।
কিন্তু এখানে আসার কোনো সাহস পাচ্ছে না।
অনিকাঃআচ্ছা আমরা তো ফ্রেন্ড তাই না?
আমিঃ ফ্রেন্ড হলাম কিভাবে?
অনিকাঃঅমনভাবেই ফ্রেন্ড।

আর আমরা যেহেতু ফ্রেন্ড সেহেতু আপনি করে বলা চলবে না তুমি করে বলতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা বলবো।

আমিঃ আচ্ছা আপনি কি নতুন?
অনিকাঃনা নতুন না আমরা তো সেইম ইয়ারেই
তবে নিয়মিত কলেজে আসা হয় না।
অনিকাঃআচ্ছা মামুন নিলার সাথে তোমার কিসের সম্পর্ক,
নিলা তোমার ব্যাপারে এতো পজেটিভ কেনো?
আমিঃ সেটা নিলা জানে, কিন্ত তুমি জেনে কি করবে?
অনিকাঃআচ্ছা বাদ দাও।

হুম সেটাই ভালো ওর ব্যাপারে কথা বলার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
অনিকাঃমামুন তোমার একটা জিনিসস আমার খুব ভালো লাগে জানো?
আমিঃ কি ভালো লাগে?!
অনিকাঃযখন তুমি রেগে যাও না তোমাকে অনেক কিউট লাগে।
আমিঃ তুমি কি আমার দিকে খেয়াল করো নাকি?
অনিকাঃহ্যা কিছুদিন ধরে করে আসছি।

নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি আহত দৃষ্টিতে আমাদের দিকে চেয়ে আছে।
আমিঃ আচ্ছা অনিকা তোমার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো পরে কথা হবে এখন যাই আমরা।
অনিকাঃআমিও তোমাদের সাথে যাবো এতে সমস্যা আছে নাকি?
আমিঃ না সমস্যা কেনো থাকবে।
অনিকাঃআচ্ছা চলো ক্লাসে যাই।

তবে মামুন একটা বিষয় লক্ষ্য করেছ নিলা কেমন করে আমাদের দিকে সেই তখন থেকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃ আরে ধুর ও কেনো আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে ও অন্য কিছু দেখছে।
অনিকাঃনা ও আমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে ডেখ ভালো করে।
আমিঃ থাক আমার দরকার নেই চলো ক্লাসে যাই।
অনিকাঃহুম চলো।

অনিকার সাথে এতো ভালোভাবে কথা বলছি শুধুমাত্র নিলাকে এটা বোঝাতে ভালবাসার মানুষটা যখন অন্যের সাথে কথা বলে বা মিশে তখন কতটা ক্ষত হয় সেইটা বোঝাতে।
আমি অনিকা উঠে দাঁড়ালাম।
আমিঃ কিরে রাফি তোরা বসে আছিস কেনো?
রাফিঃ তোরা যা আমরা একটু পরে যাচ্ছি।
আচ্ছা তোরা থাক তাহলে আমি ক্লাসে গেলাম।
আমি আর অনিকা একসাথে হাটতে লাগলাম।

যত সামনে যাচ্ছিলাম নিলার অবস্থা ততবেশি খারাপ হচ্ছিলো।
আমরা যখন নিলার কাছে পৌছালাম
নিলা অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো।
দুজন ক্লাসে চলে গেলাম।

তারপর যে যারযার যায়গাতে বসে পড়লাম ক্লাস চলাকালীন সময়ে নিলা আমার দিকে তাকাচ্ছিলো আমিও দেখছিলাম।
অন্যদিনের মত আর আর ওর চোখে ভালোবাসা দেখলাম না, তবে যেটা বুঝতে পাড়ছিলাম সেটা হলো হারানোর ভয় স্পষ্ট বুঝতে পাড়ছিলাম, আমি যখন নিলার দিকে তাকাচ্ছিলাম নিলা অন্যদিকে ঘুরে যাচ্ছিলো আজকে নিলাকে একটু বেশি অস্থির অস্থির লাগছে। খারাপ লাগার চাইতে ভালো লাগা বেশি কাজ করছিলো কারণ একসময় আমিও এইরকম অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলাম।

ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসলাম।
অনেকদিন কোনো প্রাইভেট যাওয়া হয় না।
ম্যামের কাছে পড়বো না কিন্তু প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষাতে কিছু দিতেও পাড়বো না।
বাইক নিয়ে একটু বের হলাম।
দেখি অনিকা খাতা কলম নিয়ে কই যেনো যাচ্ছে।

আমিঃ এই অনিকা কই যাচ্ছ।
আরে ধুর এইভাবে কেও বলে ভয় পেয়ে গেছিলাম তো।
আমিঃ বলো কই যাচ্ছ?
অনিকাঃপ্রাইভেট পড়তে।

আমিঃ কার কাছে প্রাইভেট পড়ো তুমি?
অনিকাঃআজিজ স্যারের কাছে।
আমিঃ কেমন বোঝান উনি?
অনিকাঃঅনেক ভালোই তো। আমার তো উনার কাছে পড়তে অনেক ভালো লাগে।
আমিঃ আচ্ছা আমাকে পড়াবে উনি।

অনিকাঃকেনো তুমি পড়তে চাচ্ছ?
আমিঃ হ্যা আগে যার কাছে পড়তাম কিছু সমস্যার কারণে এখন আর সেখানে যেতে পারি না,
আর প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেইল নিশ্চিত।

অনিকাঃআচ্ছা আমি স্যারকে বলে দেখবো।
না না তুমি কাল থেকে প্রাইভেট যাবে।
আমিঃ কিন্তু স্যার যদি আমাকে না পড়ায়?
অনিকাঃস্যারকে ম্যানেজ করানোর দায়িত্ব আমার।
আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে।

অনিকাঃআচ্ছা আমি যাই তাহলে আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ আচ্ছা যাও সাবধানে যাবে।
অনিকাকে বিদায় দিয়ে আমি আরো একটু ঘুরে বাসায় চলে আসলাম।
পরদিন কলেজে।

আমরা ক্লাসে বসে আছি নিলা আজ কলেজে আসেনি
অনিকা আসলো আমাদের কাছে।
মামুন স্যার তোমাকে যেতে বলেছে। আজ থেকে
তুমি প্রাইভেট যাচ্ছ।

আমিঃ ধন্যাবাদ, কিন্তু আমি তো স্যারের বাসা চিনি না।
অনিকাঃআরে সেটা নিয়ে তুমি এতো ভাবছ কেনো?
আমি আছি না আমি তোমাকে নিয়ে যাবো। শোন কাল যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে ছিলো তার আগে যে গলিটা সেখানে আমি দাঁড়িয়ে থাকবো ঠিক ৪টায় তুমি আসলে তোমাকে সাথে নিয়ে যাবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

অনিকাঃআজকে ক্লাসে বসে আছ কেনো?
আমিঃ এমনি ভালো লাগছে না আজ বের হতে তাই ক্লাসেই বসে আছি।
অনিকাঃহুম বিকালে দেখা হচ্ছে কিন্তু
বিকেলবেলা আমি প্রাইভেটে যাবার উদেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম।
অনিকাকে দেখি দাঁড়িয়ে আছে।

আমিঃ উঠো।
অনিকাঃআমি?
আমিঃ হ্যা তোমাকেই তো বলছি।
অনিকাঃতোমার বাইকে একটা মেয়ে উঠেছে এইই কথা শুনলে তোমার গার্লফ্রেন্ড রাগ করবে না?
আমিঃ আরে গার্লফ্রেন্ড থাকলে তো রাগ করবে?
অনিকাঃতার মানে তোমার গার্লফ্রেন্ড নেই?

আমিঃ না নেই এখন উঠ দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।
অনিকা উঠে বসলো।


পর্ব ১৬

এই তাড়াতাড়ি উঠ প্রাইভেটে দেড়ি হয়ে যাচ্ছে তো।
অনিকা উঠে বসলো আমি চালাতে শুরু করলাম।
অনিকা আমাকে রাস্তা বলে দিচ্ছে আর আমি সেই মতন চালাচ্ছি।
এই থামো আমরা চলে এসেছি।

তারপর আমরা স্যারের বাসার ভেতরে চলে গেলাম।
অনিকাঃআসবো স্যার?
স্যারঃ হ্যা আসো। তোমারর সাথে কে এ।
অনিকাঃস্যার কাল বলেছিলাম না একটা ছেলে পড়বে আপনার কাছে এই সেই ছেলে।
স্যারঃ ও আচ্ছা ঠিক আছে যাও গিয়ে বসে পড়ো।

যেহেতু প্রথম দিন সেহেতু একটু লজ্জা করছিলো।
অনিকাঃকি হলো মামুন দাঁড়িয়ে কেনো আছ আস আমার সাথে। অনিকাই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে
গেলো।

ওর পাশে আমাকে বসালো।!
এমনভাব করছে যেনো আমি পিচ্চি একটা ছেলে আমি নিজে থেকে কিছু করতে পারি না।
স্যার বোর্ডে লিখতে শুরু করলো।
তারপর বোঝানো শুরু করলো।
অনিকাঃকি মামুন কেমন লাগছে? বুঝতে পাড়ছ তো?
আমিঃ হ্যা বুঝতেছি।

অনিকাঃনা বুঝলে স্যারকে বলবে স্যার একবারে যায়গায় বারবার বুঝিয়ে দিবে বুঝেছ?
আমিঃ হুম্মম।
প্রাইভেট শেষ করে অনিকাকে নিয়ে আবার চলে আসলাম খুব ভালোই লাগলো স্যারের পড়া।
আর স্যার অনেক ভালো একটা মানুষ।
অনিকাকে ওদের গলির সামনে নামিয়ে দিয়ে আমি আমার বাসায় চলে গেলাম।
রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।

পরদিন সকালে রাফিকে ফোন দিলাম।
কিন্তু ফোন বারবার বন্ধ পাচ্ছি।
তারপর নাজমুলকে ফোন দিলাম।
হ্যালো;(নাজমুল)
আমিঃ কলেজে যাবি না?
নাজমুলঃ যাবো তবে আমার একটু দেড়ি হবে যে।
আমিঃ কেনো কিসের দেড়ি হবে?

নাজমুলঃ ওর কলেজে একটু যেতে হবে তাই একটু দেড়ি হয়ে যাবে।
আমিঃ কেনো কিসের জন্য?
নাজমুলঃ আর বলিস না ভাই ও বায়না ধরেছে আজকে ওর সাথে ওর কলেজ পর্যন্ত যেতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে যা আমি একাই চলে যেতে পাড়বো।
আমি কলেজে যাচ্ছিলাম।

একটা রিক্সাকে পেছনে ফেলতেই পেছন থেকে ডাক আসলো। মামুন এই মামুন দাড়াও।
আমি বাইক থামিয়ে।
পেছনে তাকিয়ে দেখি অনিকা আমাকে ডাকছে ও রিক্সা থেকে নেমে ভাড়াটা দিয়ে আমার দিকে আসতে লাগলো কিন্তু অনিকা এখানে নামলো কেনো?
আমার কাছে এসেই অনিকা কোনো কথা না বলে টুপ করে আমার বাইকে চড়ে বসলো।
নাও এখন চলো(অনিকা)
আমিঃ কই যাবো?
অনিকাঃকেনো কলেজে যাবে।

আমিঃ তুমি তো রিক্সায় যাচ্ছিলে?
অনিকাঃহ্যা যাচ্ছিলাম কিন্তু তোমার সাথে যেতে ভালো লাগবে তাই রিক্সা থেকে নেমে গেলাম।
আমিঃ সবাই কি ভাববে বলো তো? তুমি আমার বাইকে আমার সাথে কলেজে গেলে?
অনিকাঃকে কি ভাববে সেটা নিয়ে আমাদের কেনো মাথা ব্যাথা হবে যারা ভাববে তাদের ব্যাপার সেটা
অনিকাকে যে বলবো নামো আমি তোমাকে সাথে নিতে পারবো না সেটাও বলতে পাড়িতেছিলাম না,
কেমন জানি লাগছিলো ওটা বলতে একটু বিরক্ত নিয়েই আবার বাইক স্টার্ট করে চালাতে শুরু করলাম।
আমিঃ এই তুমি এতো গা ঘেঁষে বসেছ কেন?

পেছনে তো অনেক যায়গা আছে?
অনিকাঃআমার ভয় লাগে যদি পড়ে যাই তার জন্য তুমি কিছু মনে করো না।
আমিঃ তুমি অল্প একটু পেছনে সরে বসো তাহলেই হবে
অনিকাঃনা আমি পেছনে যেতে পারবো না আমি পড়ে যাবো।
আমিঃ ভয় কেনো পাচ্ছ তুমি পড়বে না আমি বলছি তো।
অনিকাঃনা আমি পেছনে যাবো না তুমি চালাতে থাকো।

কলেজে চলে আসছি এইবার তো নামবে নাকি?
অনিকাঃনা আমি এইভাবেই বসে থাকবো।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে তুমি এইভাবেই বসে থাকো আমি নেমে চলে যাচ্ছি।
অনিকাঃআরে তুমি রাগ করছ কেনো?
আমি তো একটু মজা করছিলাম।

অনিকা নামলো তারপর আমি নামলাম ক্লাসে চলে গেলাম।
নিলা ক্লাসের বাইরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো
নিলার দিকে লক্ষ্য করে দেখি চোখে পানি তবে আজ কিছু বললো না
আমিও ক্লাসে চলে গেলাম।
রাফি আসলো কিছুক্ষণ পর।

আমিঃ অই শালা তোর ফোন বন্ধ কেনো?
রাফিঃ আর বলিস না আনহার সাথে রাগ করে ফোন বন্ধ করে রেখে দিছি।
আমিঃ কেনো কি নিয়ে রাগারাগি হয়েছে।
আমাকে এখন আবার কুমিল্লা যেতে বলে, কিন্তু তুই বল আমার পক্ষে কি দুইদিন পরপর কুমিল্লা যাওয়া সম্ভব? বলেছি আমি এখন কুমিল্লা যেতে পাড়বো না
আর উনি ধরে নিয়েছেন আমি এখানে নতুন করে গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে নিয়েছি তাই ওর সাথে দেখা করতে চাই না ওকে নাকি ভালোবাসি না,
এমন কথা শুনে কার না রাগ হয় বল?

আমিঃ মুখ এতো শুকনো লাগছে কেনো? কিছু খেয়ে আসিস নি?
রাফিঃ খেতে ভালো লাগেনি তাই খাইনি।
আমিঃ চলল আমার সাথে কিছু খেয়ে আসি।
রাফিঃ আমি খাবো না।

আমিঃ আরে সমস্যা নেই বাসায় গিয়ে ফোন অন কর কথা বলে ঝামেলা মিটিয়ে নে।
রাফিঃ আমি তো মিটাতেই চাই কিন্তু উনি মিটাতে দিলে তো। এটা ওটা বলে আমাকে আরো বেশি রাগিয়ে দিবে।
আমিঃ আরে বলবে না, আর বললে নাহয় একটু শুনবি যে কথা শুনাবে পরে তো সেই আবার ভালোবাসবে।
হ্যা তাই তো আমি বারবার তোমার কাছে ফিরে আসি।
হঠা এই কথাটা কে যেনো বলে উঠলো।

পাশে তাকিয়ে দেখি নিলা দাঁড়িয়ে আছে।
আমিঃ আপনি এখানে কি করছেন?
নিলাঃ তোমার জ্ঞান দেওয়া দেখছিলাম,
নিজে তো অন্যদের জ্ঞান দাও নিজের বেলায় তাহলে খালি কেনো?
আমি নিজেকে তো জ্ঞান দিয়েছি অনেক দিয়েছি।

নিলাঃ নিজেকে জ্ঞান দিলে এখনো আমার থেকে দূরে দূরে কেনো থাকছ আর আমাকেই কেনো কাছে টেনে নিচ্ছ না?
এই এখান থেকে যানন তো ভালো লাগছে না আমার।
নিলাঃ এতোক্ষন তো বেশ ভালোই ছিলে এখন হঠাৎ করে কি হলো তোমার?
আমিঃ কিছুনা আমাদেএ ফ্রেন্ডদেরর মাঝে কথা হচ্ছে সেখানে আপনি ঢুকবেন কেনো?
রাফিঃ আহা মামুন নিলার সাথে এমন ব্যবহার কেনো করছিস।

আমিঃ রাফি তুই কি ভুলে গেছিলি আমি তোকে কি বলেছিলাম?
রাফিঃ সরি দোস্ত ভুল হয়ে গেছে।
নিলাঃ রাফি ভাইয়া তোমাকে আমার হয়ে কথা বলতে হবে না, মামুন এখন ভুল করছে তবে একদিন ও ওর ভুল ঠিক বুঝতে পাড়বে আমার কথা তুমি মিলিয়ে নিও। আর সেদিন মামুন নিজে থেকেই আমার কাছে ফিরে আসবে। আমি সেই।
দিনের অপেক্ষাতেই আছি।

আমিঃ কোনো দিন সেই দিনটা আসবে না।
নিলাঃ আসবে তুমি মিলিয়ে নিও। হ্যা হয়তো এমন হতে পারে আমি বেচে থাকতে তুমি তোমার ভুল বুঝতে পাড়বে না, কিন্তু যখন আর থাকবো না আমি চলে যাবো অনেক দূরে সেদিন ঠিক ভুলটা বুঝতে পারবে আর আফসোস করবে কেনো সময় থাকতে
সব কিছু ঠিক করে নাও নি? ।
আমিঃ আপনার ডাইলগ শেষ হলে আপনি আসতে পারেন।

নিলা চলে গেলো।
কয়েকদিন পর
আমি আর অনিকা প্রতিদিন একসাথে প্রাইভটে যাই কলেজে এসে আড্ডা দেই আবার মাঝেমধ্যে একটু ঘুরতে বের হই।
কলেজের ক্যম্পাসে বসে আছি দুজন।
রাফি আর নাজমুল কেনো জানি আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে আমি যতবেশি অনিকার সাথে ফ্রি হচ্ছি ওরা দুজন তত দূরে চলে যাচ্ছে।
অনিকাঃএই চলো আজ দুজন ফুসকা খাবো।

আমিঃ তুমি খাও গিয়ে আমি খাবো না।
অনিকাঃনা তোমাকেও খেতে হবে আমার এই কথাটা তোমাকে রাখতেই হবে।
আমিঃ আচ্ছা চলো খাবো।
ফুসকা খাচ্ছি আর নানানরকম কথা বলছি।
ফুসকা খাওয়া শেষ করে যখন ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলাম তখন নিলা আমাকে ডেকে নিয়ে গেলো,
এই মামুন তোমার সাথে আমার কথা আছে।

আমিঃ কিন্তু আপনার সাথে তো আমার কোনো কথা নেই।
নিলাঃ আর কখনো বিরক্ত করবো না তোমাকে প্লিজ আমার কথাগুলো শুনে যাও।
আমিঃ পাক্কা তো আজকে আপনার কথা শুনলে আরর কখনো আমাকে বিরক্ত করবেন না?
নিলাঃ হ্যা করবো না।

এমনভাবে বলার কারণে আমি নিলার পেছনে পেছনে গেলাম। একটু আড়ালে নিয়ে গিয়ে।
মামুন তোমারর কি মনে হয়না তুমি অনিকার সাথে একটু বেশি ক্লোজ হয়ে যাচ্ছ?
আমিঃ ক্লোজ হলে হয়েছি তাতে কি হয়েছে?
নিলাঃ না আমি আর এইসব মেনে নিতে পাড়ছি না।

আমিঃ আপনাকে কি আমি মেনে নিতে বলেছি।
নিলাঃ আপু আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
আমিঃ তো বিয়ে করে নিন আমাকে কেনো বলতে এসেছেন।
নিলাঃ আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলো তো মামুন তুমি কি অনিকাকে ভালোবাস?
আমিঃ না বাসি না।

তাহলে অনিকার সাথে এতো ক্লোজ হয়ে যাচ্ছ কেনো।
একসাথে ঘুরতে বের হও একসাথে প্রাইভেটে যাও কলেজে আস,
আমিঃ আমার ভালো লাগে তাই আমি করি।
নিলাঃ অন্য কারো সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেলে তুমি ভালো থাকতে পাড়বে তো?
আমিঃ কেনো পাড়বো না অবশ্যই পাড়বো।

তা কারর সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে অই বায়েজিদেরর সাথে?
নিলাঃ না ছেলের নাম আরিফ কিসের জেনো ব্যাবসা করে।
আমিঃ আপনি আর কতজনকে ঠকাবেন বলুন তো?

প্রথমে আমার সাথে রিলেশন করলেন কিছুদিন যাবার পর আমাকে বাদ দিয়ে বায়েজিদকে ধরলেন এখন।
বায়েজিদের সাথে রাত কাটিয়ে বিছানা শেয়ার করে এখন আবার বিয়ে করবেন অন্য কাওকে আপনার স্বামীকে এখন কি দিবেন? কিছু আছে দেওয়ার মত সব তো বায়েজিদকেই দিয়ে দিয়েছেন।
ব্যাস মামুন অনেক বলে ফেলেছ তোমারর অনেক অপমান আমি সহ্য করে ফেলেছি আর না।
আমি যতবার তোমার কাছে ফিরে যেতে চেয়েছি ততবার তুমি আমাকে অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছ আর না চলে যাচ্ছি আমি ভালো থেকো।


পর্ব ১৭

নিলা আর দাঁড়িয়ে না থেকে চলে গেলো। আমিও আমার ক্লাসে চলে আসছি।
নিলার কোনো ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।
ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসলাম আজ অনিকাকে সাথে আনিনি
কেনো জানি মন ভালো করতে পাড়িতেছিলাম না।
এসে শুয়ে পড়ছি।

আম্মুঃ কিরে মামুন এসে শুয়ে পড়লি যে, শরীর খারাপ নাকি তোর?
আমিঃ না আম্মু আমি ঠিক আছি আমাকে একটু ঘুমাতে দাও এখন।
আম্মুঃ না খেয়েই ঘুমাবি নাকি। আর ড্রেসটাও তো খুলিসনি।

আমিঃ পরে খুলে নিবো আম্মু এখন ভালো লাগছে না প্রচুর ঘুম পাচ্ছে আমার
আম্মুঃ আচ্ছা তাহলে ঘুমিয়ে নে একটু আমি কিছুক্ষণ পর তোকে ডেকে দিবো।
আম্মু রুম থেকে চলে গেলো।
আমিও একটু চোখ বুঝলাম কিন্তু চোখে ঘুম নেই আমার।

কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করে উঠে বসলাম।
ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসলাম আজ কেনো জানিনা নিলার কথা একটু বেশি মনে পড়ছিলো।
তবে নিজের মনকে শক্ত করলাম যত যাই হোক না কেনো নিলাকে ক্ষমা করবো না, বিশ্বাসঘাতকের কোনো ক্ষমা নেই।
আমি নিচে চলে গেলাম, ।
আম্মু আগে থেকেই আমার জন্য খাবার বেড়ে রাখছিলো।
খেতে বসেছি তখন রাফির ফোন।

আমিঃ হ্যালো কি হয়েছে?
রাফিঃ এইদিকের খবর শুনেছিস?
আমিঃ কোন দিকের খবর?
রাফি;আরে নিলা তো সুইসাইড করতে গেছিলো।
আমিঃ তো আমার কি হয়েছে ও সুইসাইড করলো নাকি মারা গেলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না
ফোন রাখ।

আমি ফোন কেটে দিলাম।
একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।
খাবার টেবিল থেকে উঠে আমি বাসার বাইরে চলে এলাম।
দেখি রাফি দৌড়ে আমাদের বাসার দিকে আসছে।
আমিঃ কিরে অমনভাবে দৌড়াচ্ছিস কেনো?

রাফিঃ দেখ মামুন ম্যাম আমাকে ফোন করে বললো নিলা অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে সুইসাইড করতে গেছিলো
কিন্তু ভাগ্য ভালো ম্যাম যথাসময়ে নিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তবে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খাবার ফলে নিলার অবস্থা খুবই খারাপ।
আমিঃ তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
রাফিঃ মামুন তুই কি এখনো রাগ নিয়েই থাকবি?

আমি কার উপর কিসের রাগ নিয়ে থাকবো?
রাফিঃ আমি জানি তুই নিলার উপর রাগ করে আছিস না হলে নিলার এমন অবস্থায় তুই চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে পাড়তি না। অনেক হয়েছে আর না এইবার সব সত্যি কথা বলার সময় হয়ে গেছে।
আমিঃ কিসের সত্যি কথা বলার সময় হয়েছে।!
রাফিঃ শোন তাহলে।

আসলে মাঝখানে যা হয়েছে তুই যা দেখেছিস সেই সব কিছুই ছিলো মিথ্যা একটা নাটক।
আমিঃ মানে কিছু বুঝলাম না।
রাফিঃ ম্যাম যেদিন তোদের দুজনকে একসাথে দেখে ফেলেছি সেদিন তোকে তো কিছু বলেনি কিন্তু তুই বাসা থেকে চলে আসার পর নিলাকে অনেক মেরেছিলো কিন্তু নিলা সেটা তোর থেকে গোপন করে গেছে। ম্যাম এটাও বলে দিয়েছিলো তোর সাথে যেনো আর রিলেশন না রাখে। কিন্তু নিলা তোকে ভালোবাসে বলেই তোর সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা। বলতো। ম্যাডাম সেটা জানার পর নিলাকে আবার মেরেছিলো। তোর সাথে যে লুকিয়ে নিলা কথা বলে।
সেটাও ম্যাম জানতে পেরে নিলাকে শাসিয়েছিলো।

যদি তোর সাথে আবার কথা বলে তোকে একটা মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে পুলিশে দিয়ে দিবে।
নিলা তোর খারাপ কখনো চাইনি।
তাই সেদিন ওর আপুর কথা অনিচ্ছা সত্যেও মেনে নিয়েছিলো কেনো জানিস তোর ভালো চাই বলে আরর সেদিন থেকেই নিলা সিদ্ধান্ত নেই তোর সাথে খারাপ ব্যাবহার করবে, যাতে করে তুই নিলাকে ভুলে যেতে পারিস। কিন্তু সেটাও কাজ হলো না তাই সাহায্য নিলো ওর খালাতো ভাই বায়েজিদের।
তোকে দেখিয়ে বায়েজিদের সাথে মিশতো হাত ধরে চলাফেরা করতো আর ওর কাছে যে ফোন দেখেছিলি না সেটাও বায়েজিদেরই ছিলো। শুধু তোকে ভুল বোঝানোর জন্য ও মিথ্যা বলছিলো।

মনে আছে মামুন সেদিন যখন তুই মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলি এক বড় ভাই তোর ব্যাগ নিতে এসেছিলো ক্লাসে। তার আগে নিলা তোকে যা না তাই বলে চলে আসছিলো যখন ভাই এসে বললো তুই নাকি অসুস্থ হয়ে গেছিস নিলা কিন্তু চুপ করে
বসে থাকতে পারেনি দৌড়ে চলে গিয়েছিলো তোর কাছে। তোকে একনজর দেখেই আবার চলে আসছিলো সেদিন তুই দেখিস নি কিছু তবে আমরা দেখেছি নিলার কান্না এক মুহূর্তের জন্যে নিলা কান্না থামায়নি। তারপর তুই যখন এখানে আসা বন্ধ করে দিলি নিলা প্রায় পাগল হয়ে গেছিলো জানিস।

প্রতিদিন আসতো আমাদের কাছে তোর কোনো খবর আমারা জানি কিনা তুই কোথায় আছিস কেমন আছিস্। কিন্তু আমরা কোনো উত্তর নিলাকে দিতে পারিনি।
তুই ফিরে এলি। তারপর তুই সব নিজেই দেখেছিস।
আর সেদিন তুই বায়েজিদের সাথে রাতের বেলায় নিলাকে দেখেছিলি না।
ওর খালা অসুস্থ হয়েছিলো তাই নিলা দেখতে গেছিলো, পরেরদিন কলেজে কি জেনো একটা কাজ ছিলো তাই দেখেই আবার চলে আসছিলো আর সেটা দেখে তুই নিলাকে যা না তাই বলেছিস তবুও নিলা চুপ করে সেইসব কিছু শুনে গেছে কেনো জানিস? তোকে পাগলের মত ভালোবাসে তাই।

রাফির কথা শুনে আমার মাথা ভোঁ ভোঁ করে ঘুরাচ্ছে।
আমিঃ রাফি তুই যা বললি সব কি সত্যি?
রাফিঃ হ্যা সব সত্যি।
অই কু**র বাচ্চা তুই সব আগে থেকে জানতিস তবুও আমাকে কেনো তুই বলিস নি কিছু?

রাফিঃ কিভাবে বলবো নিলা যখন আমাদের কাছে সব বলছিলো সেটা ওর আপু শুনে নিয়েছিলো পরে আমাদের ও শাসিয়েছে যদি সত্যি কথাটাটা তোকে বলে দেই তাহলে কলেজ থেকে বের করে দিবে আরো নানানভাবে আমাদের ভয় দেখেয়েছিল।
তাই সব জেনেও চুপ থাকতে হয়েছে।
আমিঃ তো চুপ থাকতি আজকে কেনো বলতে এসেছিস।
রাফিঃ পাড়লাম না চুপ থাকতে।

কিছু ভুল বুঝাবুঝির কারণে এইভাবে তোদের সম্পর্ক জীবন টা নষ্ট হয়ে যাবে সেটা আমি আর মেনে নিতে পাড়ছিলাম না নিজেকে খুব সার্থপর লাগছিলো তাই।
আমিঃ নিলা এখন কোন হাপতালে আছে?
রাফিঃ কেনো তুই জেনে কি করবি তুই তো আর যাবি না।
আমিঃ তোকে বলতে বলেছি তুই বল।
রাফিঃ সিটি হাসপাতালে।

আমি বাইকের চাবি নিয়েই বের হয়েছিলাম বাইকটা নিয়েই চলে আসলাম রাফি আসতে
চেয়েছিলো আমি আনিনি।
খুব কান্না পাচ্ছে আমার যে আমার জন্য এতো কিছু করলো তাকে কিনা এতোদিন ভরে আমি কষ্ট দিয়ে এসেছি। আমাকে যে পাগলের মত ভালোবাসে তাকে আমি এতোদিন দূরে সরিয়ে রেখেছি। না আর ভাবতে পাড়ছি না।
নিলার কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে কোনো দিন ক্ষমা করতে পারবো না, আর নিলাই বা কেনো সুইসাইড করতে গেলো। সকালে এতো কথা বলছিলো।
আমি হাসপাতালে চলে আসছি।

কেবিনের বাইরে দেখি ম্যাম দাঁড়িয়ে কান্না করছে।
নিলার উপর আমার রাগ না থাকলেও ম্যামের উপর আমার প্রচণ্ড রাগ। তাই ম্যামকে কিছু বললাম না।
আমি গিয়ে দাঁড়ালাম কাওকে যে কিছু জিজ্ঞাস করবো সেটাও পাচ্ছি না। পাগলের মত ছটফট করতে লাগলাম।
নিলা এখন ভালো আছে ডাক্তার বলেছে ভয়ের কোনো কারণ নেই। হঠাৎ ম্যাম এই কথা বললো।

শুনে আমি একটু নিশ্চিন্ত হলেও ম্যামের কথার কোনো উত্তর দিলাম না।!
কিছুক্ষণ পর ম্যাম আমার কাছে এসে বললো এই নাও এটা নিলা তোমার জন্য লিখেছিলোলো
একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে।

আমি খুলে সেটা পড়তে লাগলাম।
মামুন তোমাকে প্রিয় বলার অধিকার অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছি।
মামুন বিশ্বাস করো তুমি যা দেখেছিলো তার কিছুই সত্যি ছিলো না। আপুর জন্যই আর তোমার ভালোই জন্যই আমি সব করেছি, আমি জানি তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে।
কিন্তু কি মামুন জানো তার থেকে বেশি কষ্ট এখন আমার হচ্ছে। তুমি যখন আমাকে অপমান করো আমার কোনো রকম লাগতো না।

কিন্তু অন্য কারো সাথে মিশবে কথা বলবে সেটা আমি মেনে নিতে পাড়ছিলাম না, অন্য কারো বউ হতেও আমি চাই না চলে যাচ্ছি ভালো থেকো। পারলে মাফ করে দিও।
আবার কান্না চলে আসছে।
কিছুতেই থামাতে পাড়ছি না।
এইবার কেঁদেই দিলাম।

ম্যামঃ মামুন কেঁদো না এইসব আমার জন্যই হয়েছে প্লিজ আমাকে মাফ করে দিও।
আমিঃ ম্যাম এমন কথা বলবেন না, আপনি আপনার বোনের ভালো চেয়েছিলেন তাই অমনটা করেছেন।
ম্যামঃ কিন্তু এটা বুঝতে পারিনি আমার বোন তোমার কাছেই ভালো থাকবে।
সেদিন আমি হাসপাতেই রাত কাটিয়ে দিলাম।

নিলার জ্ঞান ফিরেনি
ইতিমধ্যে নিলার আব্বু আম্মু চলে এসেছে।
সকাল পেড়িয়ে দুপুর।
দুপুর পেড়িয়ে বিকেল বিকেল পেড়িয়ে রাত হয়ে গেছে।
কিন্তু নিলার জ্ঞান ফিরে আসছে না।
ম্যামঃ মামুন তুমি না খেয়ে কেনো আছ যাও কিছু খেয়ে নাও।
আমিঃ আমার ভালো লাগছে না খাবো না আমি।!
ম্যামঃ পাগলামো করছ কেনো?

নিলা ঠিক আছে তো।
খাবো না আমি বলছি তো।
রাত ১;৫৩ মিনিট ডাক্তার এসে বললো নিলার জ্ঞান ফিরে এসেছে।
আমিঃ ডাক্তার আমি নিলার সাথে দেখা করতে চাই।
ডাক্তারঃইনি কে?

ম্যামঃ ও আমাদেরর রিলেটিভ।
ডাক্তারঃআচ্ছা ঠিক আছে যান তাহলে।
আমি গিয়েই ওর বেডের পাশে বসে।
নিলারর হাত ধরেই কান্না করতে শুরু করলাম।
নিলাঃ এই তুমি কান্না করছ কেনো? (আস্তে করে)

কিছু বলতে পাড়ছি না তবের নিলার হাত ধরে কান্না করছিলাম আর হালকা লাগছিলো।
নিলাঃ এইই পিচ্চিদের মত কাঁদছ কেনো?
আমিঃ নিলা আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে মাফ করে দাও আমি আর কখনো তোমাকে কষ্ট দিবো না
নিলাঃ আমিও তোমাকে কষ্ট দিবো না।
ম্যামঃ কিন্তু তোমার রোমিও সেই কাল থেকে না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছে
নিলাঃ কিহ তুমি না খেয়ে আছ এই তুমি এমন কেনো?

আর আপু তুই ওকে খেতে বলবি না?
ম্যামঃ বলেছি অনেকবার কিন্তু রোমিও কান্নাই থামাতে পারেনি আর খাবার কথা বলেলেই রেগে গেছে।
নিলাঃ আপু খাবার মত কিছু আছে?
ম্যামঃ হ্যা আছে এই রুটি আছে।
নিলাঃ দাও তো আমাকে দাও।

ম্যাম নিলাকে রুটিটা দিলো।
নিলাঃ এই নাও হা করো এইবার।
আমিঃ খাবো না আমি।
নিলাঃ হা করতে বলেছি না।

নিলার ঝাড়ি খেয়ে হা করলাম।
খেয়ে নিলাম।
যা দেখছি খুব তাড়াতাড়ি আমি অনুর আব্বু হতে যাচ্ছি।

সবাই দোয়া কইরেন।

লেখক – মোঃ আল মামুন

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “ম্যামের বোনের সাথে প্রেম – দুষ্টু প্রেমের মিষ্টি গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – সেই মেয়েটি – রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প

1 thought on “ম্যামের বোনের সাথে প্রেম – দুষ্টু প্রেমের মিষ্টি গল্প”

  1. আপনার লেখার মধ্যে কি আছে জানিনা। কিন্তু পড়তে পড়তে কখন যে ৪টি ঘন্টা কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *