সিনিয়র প্রেম ৫

সিনিয়র প্রেম – ডাক্তার মাইয়া যখন বউ – পর্ব ৫ | Senior Bou

সিনিয়র প্রেম – ডাক্তার মাইয়া যখন বউ – পর্ব ৫: এই হিমু মেয়েটা যবে থেকে আমার জীবনে এসেছে তবে থেকে একটার পর একটা ঝামেলা লেগে আছে আমার সাথে। আমার মন নিয়ে কেমন যেন ফুটবল খেলছে এই পাগলি মেয়েটি। বয়সে বড় না হলে যে এর কি করতাম কে জানে?

ঝগড়াটে ভালবাসা

হিমুর তাকানো দেখে মনে হচ্ছে আজকে আমি শেষ। তার দিকে তাকাতে পারছিনা ভয়ে রাগে কটমট করছে হিমু।

হিমুঃ চুরি করে সবার চোখ ফাকি দিয়ে একা একা চলে যাচ্ছো?
আরমানঃ চুরি করে যাব কেন?

হিমুঃ তা নয়তো কি? আমাকে নিয়ে যাবার ভয়ে এত সকাল সকাল সবার চোখ ফাকি দিয়ে যাচ্ছ।
আরমানঃ ফাকি কোথায় দিলাম? এই তো আপনার সামনে দাড়িয়ে আছি।

হিমুঃ আমি যদি তোমার ওপর পানি না দিতাম তাহলে কি হতো?
আরমানঃ আমি চলে যেতাম।

হিমুঃ তাহলে সেটা চুরি করা হতোনা?
আরমানঃ উহু। ওটা কলেজে যাওয়া হতো।

হিমুঃ ফাজিল ছেলে সব সময় ফাজলামু করবেনা?
আরমানঃ তাহলে কি করবো?

হিমুঃ আমার মাথা করবে।
আরমানঃ আপনার মাথা তো আপনার ঘাড়ের ওপর।

হিমুঃ চুপ একদম চুপ ফাজিল ছেলে। একদম কোথাও যাবেনা? আমি রেডি হবো তারপর তুমি ভিজা কাপড় চেন্জ করবে।
আরমানঃ আমার আজকে কলেজে তাড়াতাড়ি যাওয়া লাগবে। দরকার আছে।

হিমুঃ তোমার কলেজে যাওয়া লাগবেনা।

আমি হিমুর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম। বাট মুখের ধরন পালটালো বলে মনে হলোনা। হিমু রেডি হয়ে এসে আমাকে কাপড় চেন্জ করতে যেতে দিছে। তারপর রেডি হয়ে। আমার হেলিকপ্টার নিয়ে কলেজের দিকে যেতে লাগলাম। আমার হেলিকপ্টারটা কিন্তু সাইকেল। অন্য কিছু ভাবেন না আবার।

হিমুর ফাজলামি

হিমুকে নিয়ে সাইকেল চালিয়ে অনেক সুবিধা চিকনি চামেলি। বোঝায় যায়না সাইকেলে আছে না নাই। হিমুর কলেজের সামনে চলে এসেছি।

আরমানঃ নামেন, আপনার কলেজের সামনে চলে এসেছি। ইজ্জত তো পাংচার হয়ে গেছে।
হিমুঃ ইজ্জত আমি ধার দিবনি। আমার অনেক আছে।

আরমানঃ আপনি কিন্তু ফাজলামু করছেন?
হিমুঃ তোমার থেকে শিখেছি।

আরমানঃ আমি শিখিয়েছি? কবে কখন কিভাবে?
হিমুঃ প্রতিদিন তখন সেভাবে।

আরমানঃ ফাজিল মাইয়া কোথাকার?

বলে চলে এসেছি। আমার সাথে মাস্তানি মারে। দেখে নেব একদিন। কলেজে গিয়ে। ব্নধুদের সাথে আড্ডা দিলাম।

আর এদিকে..

আজকের দিনটা হিমুর কাছে স্পেশাল। আজকে আরমানের বার্থ ডে। তার মায়ের কাছ থেকে শুনছে। ছেলেটা আসলেই পাগল। কিছু বুঝেনা। সব সময় উল্টা পাল্টা বুঝে। তাকে আজকে সারপ্রাইজ দিতে হবে। এমন ভাবে দিতে হবে যাতে বুঝতে না পারে।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় হিমুর ফোন।

হিমুঃ ছোট ভাই কোথাই আছো?
আরমানঃ যেখানেই থাকি তাতে আপনার কি? আপনাকে কলেজে পৌছে দেবার কথা দিয়েছি।

হিমুঃ শোন, আমার একটু দরকার আছে। তুমি আমার কলেজের কাছে চলে এসো।
আরমানঃ পারবনা।

হিমুঃ পারবানা? ঠিক আছে তাহলে আমি ঐ রাস্তার মাঝ খানে গিয়ে দাড়িয়ে থাকবো।
আরমানঃ ব্ল্যাকমেইল করছেন?

হিমুঃ ছোট ভাইকে ব্ল্যাকমেইল করা যায়?
আরমানঃ তাহলে কি করছেন এটা?

হিমুঃ একটু ভয় দেখাচ্ছি।
আরমানঃ কোথায় যেতে হবে?

হিমুঃ আমার কলেজের সামনে দাড়িয়ে থাকো।

আমার হিরোগিরি

আমি হিমুর মেডিকেল কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছি। এখানে দাড়িয়ে থাকার আলাদা একটা ফিলিংস আছে। ডাক্তারি পড়া মেয়েরা দেখতে একটু সুন্দর বেশি হয়। আবার সাদা এপ্রোন পড়ে তখন তো হুর পরীর মতো লাগে।

না না আমি ভালো ছেলে এসব ভাবলে চলবেনা। কিন্তু চোখের আজকে কি হলো? খালি সুন্দরী মেয়েদের দিকে চোখ যায়। নির্ঘাত কোন অসুখ হয়েছে। ডাক্তার দেখাতে হবে।

একটু পর দেখি একটা সুইট কিউট বিউটিফুল ওসাম নাইচ ওয়াও হেবি একটা মেয়ে আমার দিকে হাত নাড়িয়ে ডাকছে। তখন বুকের ভিতর ধুকধুক করছে আর তোকে হেব্বি লাগছে গানটা শুনতে পাচ্ছিনা।

তুমি যদি ডাকো হুর পরী। তোমার জন্য আমি কি না করিতে পারী? তুমি চাইলে পাড়ি দেব সাত সমুদ্র তের নদী। এটা তো একটা রাস্তা খানি।

বলেই তার দিকে যাচ্ছি। আর মেয়েটা দুই হাত বাড়িয়ে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। ও নো এতো ফিলিংস আমি কোথায় রাখবো? মনে হচ্ছে আসেপাসে কেউ নেই খালি আমি আর ডাক্তারনিটা। মনের মধ্যে লাড্ডু ফুটতেছে।

আমিও দুই হাত বাড়িয়ে তার কাছে যাচ্ছি। তাকে জোড়িয়ে ধরতে যতটুকু লাগে। তাকে জরিয়ে ধরবো এমন সময় মেয়েটা পাশ কাটিয়ে আরেকটা ছেলেকে জোরিয়ে ধরলো। তখন মনের মধ্যে সুনতে পাচ্ছি সুন্দরী তুমি কার তুমি কার। ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন দেয়ালে সাথে ধাক্কা লেগেছি বুঝতেই পারিনি।

হিমু গাধী দেখি পাশেই দাড়িয়ে। হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পড়েছে।

আরমানঃ এত হাসির কি আছে? একটু একসিডেন্ট হতেই পারে।
হিমুঃ একসিডেন্ট কেমন হয়?

আরমানঃ অজান্তে কিছু হলে তাকে একসিডেন্ট বলে।
হিমুঃ বাট এটা তো ইচ্ছা করে হয়েছে।

আরমানঃ অজান্তে হয়েছে।
হিমুঃ হয়েছে! আর সাক দিয়ে মাছ ঢাকতে হবেনা। আমি সব দেখেছি।

আরমানঃ কি দেখছেন?
হিমুঃ দেখছি একটা লুইচ্চা ছেলে দুই হাত বাড়িয়ে একটা মেয়ের দিকে যাচ্ছিল মেয়েটা তাকে না ধরে অন্য কাউয়ে ধরেছে।

সিনিয়রগিরি

ইজ্জত পাংচার হয়ে গেছে একেবারে। এটাও দেখে নিয়েছে। এখন কি করি?

হিমুঃ কি হলো কথা বলছনা কেন?
আরমানঃ এমনি।

হিমুঃ তোমার এসব পরে দেখছি আগে আমার সাথে চলো দরকার আছে।
আরমানঃ কি দরকার?

হিমুঃ শুনে কি হবে?
আরমানঃ না বললে যাবনা।

হিমুঃ আন্টিকে ফোন দিয়ে বলবো তুমি কি করছো?
আরমানঃ ব্ল্যাকমেইল?

হিমুঃ না না সাদা মেইল।
আরমানঃ ঠিক আছে, চলেন।

তারপর আমরা একটা শপিং মলে পৌছালাম। হিমু হয়তো কিছু কিনবে। তাই আসছে। আমি সেজন্য লেডিস কালেংশনের দিকে যাচ্ছি।

হিমুঃ আরমান ঐ দিকে কোথায় যাচ্ছো?
আরমানঃ কেন, লেডিস কালেকশনে?

হিমুঃ সেটা আমিও জানি ঐ দিকে মেয়েদের জিনিস।
আরমানঃ সেজন্য তো যাচ্ছি?

হিমুঃ তোমাকে যেতে বলেছি?
আরমানঃ না।

হিমুঃ তাহলে যাচ্ছো কেন?
আরমানঃ আপনি জিনিস নিবেন, তাই।

হিমুঃ আমি বলছি, আমি নিব?
আরমানঃ না।

হিমুঃ তাহলে?
আরমানঃ তাহলে কার জন্য নিবেন?

হিমুঃ চুপ থাকো আর পিছে পিছে আসো।

সারপ্রাইজ গিফট

আমি তখন হিমুর পিছে পিছে যাচ্ছি। পরিচিত কেউ আমাকে দেখলে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থাকছে। মনে হচ্ছে, জীবনে আমাকে কখনো দেখেনি।

হিমুঃ এইটা কেমন হবে?

আমি হিমুর কথা শুনে তার দিকে তাকালাম। (একটা শার্ট হাতে নিয়ে আমাকে জিগ্যেস করছে)

কিন্তু শার্টটা বড় মানুষের। তার ভাইটাও ছোট। তাহলে কার জন্য কিনছে?

হিমুঃ কি হলো, বলো?
আরমানঃ কার জন্য?

হিমুঃ এতো প্রশ্ন কেন?
আরমানঃ এমনি।

হিমুঃ শার্টটা কেমন?
আরমানঃ ভালোনা।

হিমুঃ আচ্ছা, তুমি একটা শার্ট পছন্দ করে দাও।
আরমানঃ আচ্ছা।

তারপর একটা নীল রং এর পান্জাবী পছন্দ করে দিলাম।

আরমানঃ শার্টের থেকে পান্জাবী টা ভালো লাগছে।
হিমুঃ তোমার তো অনেক সুন্দর পছন্দ।

আরমানঃ জানি।
হিমুঃ চলো

আরমানঃ আবার কোথায়?
হিমুঃ একটা শাড়ি কিনবো।

একটা নীল রং এর শাড়ী কিন্তে ৩ ঘন্টা লাগিয়েছে। মেয়ে মানুষের সাথে কেউ শপিং এ আসে?মেয়ে মানুষের সাথে শপিং এ আসা মানে নিজের পায় কুড়াল মারা।

আরমানঃ আচ্ছা, পান্জাবীটা কার জন্য?
হিমুঃ তোমার এত আগ্রহ কেন এটা জানার প্রতি?

আরমানঃ আগ্রহ হলে আমি কি করবো?
হিমুঃ আগ্রহ করা করা বন্ধ করে দাও।

আরমানঃ আগ্রহ নিজে থেকেই হয়।
হিমুঃ বেশি জ্ঞ্যন থাকা ভালোনা।

আরমানঃ আপনার থেকে কম আছে।
হিমুঃ ফাজিল ছেলে চুপ থাকতে পারোনা?

আরমানঃ আচ্ছা চুপ থাকবো, বলেন পান্জাবীটা কার জন্য?
হিমুঃ আমার বিএফের জন্য। এবার চুপচাপ চলো বাড়ির দিকে।

কষ্টের ভালবাসা

বুকের বাম পাশটা তখন কেমন জানি চিনচিনে ব্যথা করছিল। মনে হচ্ছিল ভারি কিছু মনের ওপর জমা হচ্ছে। হিমুর বিএফ আছে?

হিমুর পিছুপিছু মার্কেট থেকে বের হলাম। তখন মনের মধ্যে ভারি কিছু বেধে আছে মনে হচ্ছে বুকটা শরীরের চেয়ে ওজন বেশি হয়ে গেছে। মার্কেট থেকে বের হয়ে হিমুকে নিয়ে বাসায় আসলাম। তার সাথে কোন কথা বলিনি। ভালো লাগছিলনা কিছু।

ছেলেটা কত পাগল? শুধু বলেছি এগুলো বিএফের জন্য তখন থেকে মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে রেখেছে। কোন কথাও বলছেনা। না বলুক, আমিও বলবনা। একবারে সারপ্রাইজ দিবো। যাতে চমকে যায়।

বাড়িতে এসে হিমুকে তার বাসায় নামিয়ে আমার বাসায় এসে রুমে ঢুকে শরীর টাকে এলিয়ে দিলাম। মনের পাশাপাশি শরীরের এনার্জি ও কাজ করছেনা। কিছু ভালো লাগছেনা তখন। শরীর টাকে রিফ্রেশ করতে বাথরুমে গোসল করতে গেলাম।

বাথ রুমের শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে তার নিচে বসে পড়লাম। মাথার ওপর পানি পড়ছে আমি নিচে বসে আছি। তখন চিৎকার করতে মন চাচ্ছে। কখন যে মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি। তার বিএফ আছে আগে বললে কি হতো?যাই হোক সবারি একটা আলাদা জীবন আছে তার নিজেরইচ্ছা ভালোলাগাতে চলার অধিকার আছে এসব ভাবা বাদ দিয়ে তাকে মন থেকে ডিলিট করে দিবো।

এদিকে,

আরমান বাসাতে নামিয়ে দিয়েই চলে গেল কোন কথা বললনা। ছেলাটার মাথায় গোবর ছাড়া কিছু নাই। যাই হোক, রাতে তাকে এমন সারপ্রাইজ দিব যে সে নিজেকেই ভুলে যাবে।

হিমুর মনে তখন আলাদা রকম ফিলিংকস কাজ করছে কিভাবে তাকে সারপ্রাইজ দিবে এটা ভাবতে ভাবতে।

মন খারাপের সময়

গোসল শেষ করে। খাবার খেয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে গেলাম। সেখানেও মন বসাতে পারছিনা।

বন্ধুঃ আরমান কি হয়েছে?

বন্ধুর কথাতে চমকে উঠছি অন্যদিকে মন ছিল তাই।

আরমানঃ কই কিছু হয়নি তো।
বন্ধুঃ কিছু তো হয়েছে। মন খারাপ করে আছিস।

আরমানঃ নারে, কিছু হয়নি।
বন্ধুঃ সত্যি করে বল কি হয়েছে?

আরমানঃ হিমুর বিএফ আছে রে।
বন্ধুঃ থাকতেই পারে, তাতো তোর কি?

আরমানঃ কেন থাকবে?
বন্ধুঃ কেন থাকবেনা?

আরমানঃ আমি তাকে ভালোবাসি, তাই।
বন্ধুঃ তুই তাকে বলেছিস?

আরমানঃ না, বলিনি।
বন্ধুঃ তাহলে মন খারাপ করে কি হবে। যদি বলতি তারপর যদি না করতো তাহলে এক কথা ছিল?

আরমানঃ তাহলে কি বলবো?
বন্ধুঃ এখন বলে কি হবে?

আরমানঃ তাও এক কথা। ওর তো বিএফ আছে।
বন্ধুঃ বিএফ থাকুক আর না থাকুক ও তোর বড় বোন লাগে। তোর সিনিয়র।

হিমুর কাছ থেকে ছোট ভাই শুনে বিরক্ত ধরে গেছে। এরা আবার বড় বোন বানাই দিছে।

আরমানঃ সালা তোর একদিন কি আমার একদিন। বড় বোন লাগে আমার?

বলে একটা লাঠি নিয়ে তাড়ানি দিছি।

চিন্তামগ্ন দুঃসময়

আগে তিনজন আমি তাদের পিছে পিছে। এলাকার সবাই হা করে দেখছে কি হচ্ছে এগুলো?

আরমানঃ তোদের আজ ধরতে পারলে খুন করে ফেলবো।
বন্ধুঃ আগে ধরে তো দেখা।

আরমানঃ আমার সাথে টক্কর নিসনা কইলাম। ম্যারাথন স্পেশালিষ্ট আমি।
বন্ধুঃ আমরা উসামা বল্টের কাছ থেকে এসেছি তোর স্পেশালিষ্ট হয়েও কাজ নাই।

আমার থেকে তারা অনেক আগে চলেগেছে। এখন যদি তাদের ধরতে না পারি পরে তাহলে তারা আমাকে ক্ষেপাতেই থাকবে। তখন কি হবে?আর এলাকার মেয়ে গুলাও দেখছে। যদি ধরতে না পারি তাহলেইজ্জত পাংচার হয়ে যাবে। তখন কি করবে?এসব ভাবতেছি ঠিক তখনি মাথার মধ্যে ঝাক্কাস একটা বুদ্ধি চলে এসেছে।

আরমানঃ চোর চোর আমার টাকা চুরি করে পালাচ্ছে কেউ ধরো।

যখনি কথাটা বলেছি এলাকার বুইড়া থেকে শুরু করে সবাই তাদের পিছু নিছে। একজন দেখি চাইনিজ কুড়াল নিয়ে বার হয়েছে। মনে হচ্ছে আজ ধরতে পারলে তাদের কুচিকুচি করে কাটবে।

আমি সবার পিছে পড়ে গেছি। সবাই আগে আগে ছুটতেছে।

এক চাচার কথা।

বেটা দিনের বেলা চুরি করো। ধরতে পারলে হাত কেটে দেব।

আরেকজন বলে আমি ওদের সারাদিন বাজারের মধ্যে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে রাখবো।

আমি ওদের তিনজনের পিছনে দৌড়ানো বাদ দিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছি। এলাকার লোকেরাই তাদের সামলে নিবে। আমার সাথে মসকরা করার মজা এবার হাড়ে হাড়ে টের পাবে।

হতাশা ও কষ্ট

বাসায় এসে দেখি বাড়ি অন্ধকার। কাউকে কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা।

আরমানঃ মা, ও মা। কোথায় তুমি? বাড়িতে আলো নাই কেন?
আম্মুঃ এই তো বাবা আমি রুমে। লাইনের কোথাও সমস্যা হয়েছে। তাই সন্ধা থেকে আলো জ্বলছেনা।

আরমানঃ আচ্ছা, আমি ঠিক করছি।
আম্মুঃ না না তোকে কিছু করতে হবেনা। আমি কারেন্ট লাইন ঠিক করার মানুষের কাছে খবর পাঠিয়েছি ওরা এসে ঠিক করে দিয়ে যাবে।

আরমানঃ ঠিক আছে। কিন্তু খুদা লাগছে খাবো কি করে?
আম্মুঃ একটু দাড়া মোমবাতি আনতেছি।

তারপর খেয়ে দেয়ে রুমে শুতে গেছি। অনেকক্ষণ হলো এখন লোক আসেনি। হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে কাল ঠিক করে দিয়ে যাবে। হিমুর বিএফ আছে ভেবে ঘুম ও আসছেনা। একটা মুভি দেখলাম।

হঠাৎ মনে হলো কিছু হাটার আওয়াজ পাচ্ছি। ঘড়িতে তখন ১১টা ৫৫ বাজে। এত রাতে বাড়িতে কে আসলো? মা বাবা তো ঘুমাচ্ছে। তাহলে কি চোর?

আমি তাড়াতাড়ি শব্দটা অনুসরণ করছি দেখি ছাদের দিকে চলে গেল। আমিও ছাদের দিকে যাচ্ছি। হঠাৎ মনে হলে ছাদের দিক থেকে আবার কেউ আসছে।

কিছু চুরি করে ছাদ দিয়ে পালাচ্ছে না তো?মা কি করে। ছাদের গেটটা লাগাবেনা? কি কি যে চুরি করছে তার ঠিক নাই। আজ চোরের একদিন কি আমার একদিন।

অঘটন ঘটন পটীয়সী

ছাদের সিড়ির ওপর দেখি কেউ আসছে। চোরের আজ শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো। ইয়ালি বলে পিটাতে শুরু করেছি। কোন কথা নাই শুধু কিল ঘুষির শব্দ। দেখি ছাদের দরজা দিয়ে আরো কেউ আসছে। তখন তাকেও শুরু করেছি। চোরের শিক্ষা আজ হবে। মারের শব্দে আর চোরের চিৎকারে মা বাবা চলে এসেছে। হঠাৎ দেখি আলো জ্বলতেছে।

আর নিচে আমার বন্ধুরা পড়ে আছে। তাদের চোর মনে করে পিটিয়েছি।

আরমানঃ তোরা এখানে কি করে?
বন্ধুঃ মারার পর জিগ্যেস করছিস? আগে করতে কি হয়েছিল?

আমি তাদের উঠাতেই ওরা আমাকে ছাদে নিয়ে গেল। আর ছাদে আলোর ঝিকিমিকি ছড়াতে লাগলো। একটা পটকা আকাশের দিকে উঠে ফেটে গেল আর লিখা উঠলো Happy Birth Day।

আমি তো চমকে গেছি। আমার জন্মদিন সেলিব্রেট করিনা তাই মনেও নেই কিন্তু আজ এসব দেখে অনেকটা চমকে গেছি। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমার বন্ধুদেরকে জরিয়ে ধললাম।

আরমানঃ তোরা আমার জন্য এত কিছু করেছিস?
বন্ধুঃ কি দুঃখে তোর জন্য এসব করতে যাবো!

আরমানঃ তাহলে?
বন্ধুঃ পিছনে দেখ, ঐ করছে।

হিমুর সারপ্রাইজ ও উপহার

পিছনে তাকিয়ে দেখি নীল শাড়ি পড়ে হিমু দাড়িয়ে আছে। চোখে কাজল। একদম নীল পরীর মতো লাগছে। মনে হচ্ছে, এভাবেই সব সময় তাকিয়ে থাকি।

হিমুঃ এভাবে তাকিয়ে কি দেখছো, ছোট ভাই?

চুচু করে তখন বেলুনের বাতাস বের হবার মতো আমার বাতাস ও বেরিয়ে যাচ্ছে।

হিমুঃ ছোট ভাই মন খারাপ কেন? তোমার জন্য এতো কিছু প্লানিং করে করেছি। আর মন খারাপ করে আছো।
আরমানঃ সব আপনার প্লানিং?

হিমুঃ হ্যা। আমার ছোট ভাই।
আরমানঃ কয়বার বলছি আমাকে ছোট ভাই বলবেননা।

হিমুঃ বলবো একশবার বলবো। ছোট ভাই।
আরমানঃ হুর থাকেন আপনার ছোট ভাইকে নিয়ে আমি গেলাম।

হিমুঃ আরে আরে কই যাও।
আরমানঃ ঘুমাতে।

হিমুঃ আমরা এত কষ্ট করলাম আর তুমি এখন ঘুমাতে যাবে?
আরমানঃ ছোট ভাই ছোট ভাই না করলে থাকবো।

হিমুঃ ঠিক আছে এমন করবোনা ছোট ভাই।
আরমানঃ আবার?

হিমুঃ সরি সরি। এই নাও তোমার বার্থ ডে গিফট।
আরমানঃ পান্জাবী? এটা আপনার বিএফের জন্য কিনছিলেন যে?

হিমুঃ আরে ধুর বোকা। তোমাকে চুপ করাতে এমনি বলছি।
আরমানঃ তাই?

হিমুঃ হ্যা, এখন পান্জাবীটা জলদি পড়ে চলে এসো।

তারপর আমি পান্জাবী নিয়ে পড়তে আমার রুমের চলে এলাম। চলবে…..

পরের পর্ব- সিনিয়র প্রেম – ডাক্তার মাইয়া যখন বউ – পর্ব ৬

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *