খালাতো বোনের সাথে বিয়ে – ভালবাসার গল্প

খালাতো বোনের সাথে বিয়ে – ভালবাসার গল্প: ঘোমটা দিয়ে থাকে যারা নতুন বউ হয়ে আসে। তারা একে অপরকে চেনে না। তাই লজ্জায় ঘোমটা দিয়ে বসে থাকে। আর আমি তো তোমাকে ছোট বেলা থেকেই চিনি।


পর্ব ১

আজ অনেকদিন পর খালার বাসায় যাচ্চি। হবে তাও দেড় বছর পর। পড়ার চাপে তেমন যাওয়া হয় না। আর খালাদের বাসায় এমনিতেও যাওয়া ভালো লাগে না। খালাদের বাসায় আছে এক পেত্নী আমার খালাতো বোন আনিসা খুব বিরক্ত করে তাই যাওয়া বাদ দিয়ে দিছি। আমি তন্ময় কিছুদিন হলো পড়ালেখা শেষ হয়েছে এখন বেকার। আম্মু সকালে বললো যে খালাদের বাসায় ঘুরে আসতে ভালো লাগবে।

আম্মুর উপর না করতে পারি না তাই এক জোরপূর্বক ভাবেই যাচ্চি খালদের বাসায়। ট্রেনে করে যেতে হবে কুমিল্লা। ট্রেন থেকে নেমে আম্মুকে কল দিলাম।
আমিঃ আম্মু আমি তো পৌছে গেছি, কে নিতে আসবে।

আম্মুঃ আনিসা তোকে নিতে গেছে দেখ।
আমিঃ কি বলো ওই পেত্নীটা, তাহলে কিন্তু আমি এখনি ঢাকা চলে যাবো।
আম্মুঃ আরে রাগ করিস কেন। তোর খালাই তোকে আনতে যেতো। তোর খালার এতো সময় ছিলো না তাই যেতে পারে নি। তুই যাবি বলে তোর খালা কতো খুশি তুই জানিস!
আমিঃ আচ্চা, আমি আনিসা কোথায় দেখতে পারছি না তো্।

আম্মুঃআনিসাকে ফোন দে তাহলে।
আমিঃ নামবার নাই তুমি ফোন দিয়ে আমার নামবার দিয়ে ফোন দিতে বলো।
আম্মুঃ আচ্চা।
(আম্মু কল কেটে দিলো। কিছুক্ষণ পর একটা অচেনা নামবার থেকে কল এলো আমি রিসিব করলাম)
আমিঃ হেলো কে।

আনিসাঃআমি আনিসা।
আমিঃ ওও তুই, শুন আমি একাও যেতে পারতাম, তোর যেহেতু দেরি হচ্চে তাই একাই যাই।
আনিসাঃ আমি তো সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। কোথায় তুমি বলো।
আমিঃ আমি তো স্টান্ডে দাড়িয়ে আছি, আচ্চা তুই কি কালার ড্রেস পরছিছ।
আনিসাঃ গোলাপি।
আমিঃ তোর হাতে কি পানির বোতল।
আনিসাঃ তুমি কিভাবে জানলা।

আমিঃ আমি তোকে দেখতে পেয়েছি তুই দারা আমি আসছি।
(এই বলে আমি ওর সামনে গেলাম, গিয়ে তো আমি এক প্রকার ক্রাস খাইলাম ওকে দেখে, মাএ দেড় বছরে এতোটা আধুনিক। ওর কথা শুনে বাস্তবে ফিরে এলাম)
আমিঃ তুই আনিসা নাকি অন্য কেউ?

আনিসাঃ কেনো চিনতে অসুবিধা হচ্ছে নাকি?
আমিঃ দেড় বছর আগে তো আমি অন্য এক আনিসাকে দেখেছি।
আনিসাঃ শুনো সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয় যেমনটা ধরো আমিও। আচ্চা এভাবে আর কতখন দাড়িয়ে থাকবো চলো।
আমিঃ ওহ্ হে চলো।

(আনিসা আমার আগে আগে হাটছে আমি আমি পিছনে, তারপর রিক্শা নিলাম, কিন্তু আগে যেমন রিক্শায় উঠে কথা বলে এখন তা আর বলে না। রিক্শা থেকে নেমে বাসায় আসার পর খালা আমাকে দেখে অভিমানি কন্ঠে বললো আমাদের তো একে বারেই ভুলে গেছিছ। এতোদিন পর আমাদের কথা মনে পড়লো তখনি তিথি বললো আম্মু অনেক দুড় থেকে এসেছে আগে রেস্ট নিক তারপর কথা বলো। তারপর খালাও বললো রুমে দিয়ে আসতে আমাকে। তারপর আনিসা আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেলো। আনিসা আসার সময়ও কিছু বলেনি তাই আমি বললাম)
আমিঃ কেমন আছো আনিসা। (যদি এর আগে ওকে কোনোদিন তুমি করে বলিনি। এই কেনো জানি এইবার বেড়িয়ে গেলো। আনিসা বললো)
আনিসাঃ ভালো আছি।

(কি মেয়েরে বাবা একবারো বললো না যে আমি কেমন আছি। এর আগে যতোবার এসেছি কথা বলে বলে কানের জ্বালা পালা করে দিয়েছিলো কিন্তু এবার কোনো কথাই বলছে না। আর বলবেই বা কি করে এর আগেরবার কম অপমান করেছিলাম নাকি। বুঝলেন না তো চলুন অতিত থেকে একটু ঘুড়ে আসি, খালাদের বাসায় শুয়ে আছি তখন আনিসা এসে বললো বাইরে যাবে ঘুরতে তখন আমি বললাম আমি পারবোনা তুই একাই যা, ওর জোরাজুরিতে যেতে রাজি হলাম, আমারো খুব ইচ্চাছিলো গ্রাম ঘুরে দেখার তাই গেলাম। আমরা দুইজনেই হাটছি তখন হঠাত আনিসা আমার সামনে দাড়িয়ে বললো)
আনিসাঃ তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।

আমিঃ হ্যা বল।
আনিসাঃ আমি জানিনা তুমি কিভাবে নেবে তবুও আমাকে বলতেই হবে, তন্ময় আমি তোমাকে ভালোবাসি, নিজের থেকেও বেশি।


পর্ব ২

আনিসাঃ জানিনা তুমি কিভাবে নেবে তবুও আমাকে বলতেই হবে, মামুন আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আমিঃ কিন্তু আমি তোকে ভালোবাসতে পারবো না।

(নিজের খালাতো বোনের মুখে ভালোবাসার কথা শুনে আমি তো অবাক। আমি বললাম)

আমিঃ আরে তুই পাগল হইছিছ আরে কাকে তুই কি বলছিছ আমি তোর নিজের খালাতো ভাই। আর তুই আমাকে ভালোবাসিস
আনিসাঃ খালাতো ভাই হয়েছে তো কি আমি তোমাকে ভালোবাসি। এটাই বড় কথা। প্লিজ ফিরিয়ে দিওনা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি
(আপনারা ভাবছেন আনিসা হয়তো দেখতে খারাপ নাহ্ ও দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু গ্রাম্য মেয়েদের মতো থাকে যা আমার পছন্দ না। আমি যাকে ভালোবাসবো যে আধুনিক হবে, আমার মনের মতো চলবে। আনিসা আমার কথা শুনে কান্না করতে করতে বললো)

আনিসাঃ তুমি যেভাবেই বলবে আমি সে ভাবেই চলবো তবুও আমাকে ফিরিয়ে দিও না।
আমিঃ আমার পক্ষে সম্ভব না তুই এইসব মাথা থেকে ঝেরে ফেলে দে।

(এরপর থেকে কেনো জানি ওকে দেখে আমার সহ্য হয় না। তারপর থেকেই খালাদের বাসায় আর বেশি যেতাম না। গেলেই খালি ভালোবাসি ভালোবাসি বলে কান ঝালা পালা করে দিতো। লাস্ট আমি বলেছিলাম তুই যদি পরিবর্তন হতে পারিস তাহলে আমি তোকে ভালোবাসবো। এই বলে খালাদের বাসা থেকে চলে আসছিলাম। আর তারপর কতদিন পর এলাম তা তো আপনারা যানেনি। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছিলাম মনে নেই। ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিলাম। দেখলাম খুব সুন্দর করে সেজেছে আনিসা। মেয়েটা একদম পাল্টে গেছে। আগে তো সারাদিন আমার সাথে লেগেই থাকতো কিন্তু খোজ খবরই পাওয়া যায় না। আমি আনিাাকে বললাম)
আমিঃ আনিসা চলো বাইরে থেকে ঘুড়ে আসি।

আনিসাঃ আমার কাজ আছে আমি পারবো না যেতে।
(আমিও আর কিছু বললাম না। আমিও আনিসাকে ভালোবাসতাম কিন্তু ওর চলাফেরা আমার পছন্দ হয়নি তাই গ্রহন করি নি। কিন্তু এখন তো ওকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে, শুধু ভালোবাসতে না খালাতো বউ বানাতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু কিভাবে যে বলি। আমি শুয়ে আছি আনিসা আমায় দরজায় এডে বললো)
আনিসাঃ কি করো?

আমিঃ দেখতেই তো পাচ্চো শুয়ে আছি। আনিসা আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি কি আনার বউ হবে।
আনিসাঃ ছরি অনেক দেরি হয়ে গেছে। তুমি আমার বড় ভাইয়ের মতো। আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না।
(মেয়েটার লথা শুনে কি যে কস্ট হয়েছিল সেটি শুধু আমি জানি। কিন্তু আমি হাল ছারার পাএ নই যে করেই হোক আনিাাকে আমার বউ করেই ছাড়বো, খালাতো বউ। সেদিন খাওয়ার সময় আমি বললাম)

আমিঃ খালা আমাকে তোমার কেমন লাগে। মানে আনি যদি তোমার মেয়েকে বউ বানাই তাহলে আমাদের দুজনকে কেমন দেখতে লাগবে।
( হায় হায় আমিতো আনিসাকে রাগাতে চাইছিলাম কিন্তু একি ও রাগ না করে হাসছে কেনো। আমি আনিসাকে রাগানোর জন্য খালার সামনেই আনিসাকে জিঙাসা করলাম)
আমিঃ ওই আনিসা আমি তোমার মেয়ের আব্বু হতে চাই তুমি কি রাজি হবে।
(হায় হায় আমি কি এমন বললাম যে সবাই পাগলের মতো হাসছে। আনিসাও কিছু বললো না শুধু হাসছে। আমি তো ওকে রাগানোর জন্য বললাম। আমি আর কিছু বললাম না সবাই আমাকে নিয়ে হাসি তামাসা করে। তারপরের দিন আবার আমি আনিসাকে বললাম চলো বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
আনিসাঃ আজ না অন্যদিন।

(আমি আর কিছু বললাম না একাই ঘুরতে বের হলাম। ঘুড়ে বাসায় আসবো ঠিক সেই সময়ে দেখলাম আনিসা একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে গল্প করছে। আমি তো অবাক। আমি কিছু না ভেবেই আনিসার পেছন দিক থেকে গিয়ে ওর চুল টান দিলাম। আনিসা কিছু না ভেবেই ঘুরেই আমাকে একটা কষে থাপ্পর দিলো। আমি জিঙাস করলাম)
আমিঃ ছেলেটা কে। আর এখানে কি করছিছ।
আনিসাঃ ওর আমার বি এফ। আর আমরা এখানে প্রেম করছি।

(কথাটা শুনেই আমার মাথা ঘুরে গেলো। চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলাম। তারপর আমি আর কিছু না বলেই চলে আসতে লাগলাম। আনিসা আনিসা আমাকে পিছন থেকে অনেকবার ডাক দিয়েছিলো কিনতু আমি শুনিনি। তারপর খালার বাসায় আসার সময় হঠাত..


পর্ব ৩

প্রথমেই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্চি আপনাদের কাছে, তার কারন হলো এর আগের পর্বে আমি নায়কের নাম তন্ময় নাম পরিবর্তন করে মামুন নাম দিয়েছিলাম কিন্তু আপনাদের সেটা বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম তাই এখন বললাম। আর আপনারা হয়তো ভাবছেন যে আমি এতো নাম পরিবর্তন করতেছি কেন আর শুধু মামুন আর তন্ময় এই দুইটাই নাম দিতেছি কেনো অন্য নামোও তো দেওয়া যায় কিন্তু আমি দিতাছিনা কেন তার কারন জানতে চাইলে মেসেজে বা কমেন্ট করে বলিয়েন আমি বলে দিবো এর কারন কি এখানে বলতে চাচ্চি না, যাই হোক এখন গল্পে ফেরা যাক……..)

(খালার বাসায় আসতেছি, গ্রামের রাস্তা তেমন কোনো গাড়ি নেই। তাই হেটেই যাচ্চি। কিছুদূর আসার পর আমার জুতা ছিড়ে যায়, কি জ্বালা। তাই জুতা ফেলে দিয়ে আমি খালি পায়ে আবার হাটা ধরলাম। হাটতে হাটতে হঠাত আমার পা কিছুদিয়ে কেটে যায়। খুব রক্ত পড়ছে, ব্যাথ্যাও পাচ্চে। কিন্তু ওই ব্যাথ্যর কাছে এই ব্যাথা কিছুই না। আমি সেইদিকে খেয়াল না করে আবার হাটা ধরলাম। বাসায় এসে দেখি আনিসা আমার আগেই এসে গেছে। ও বললো এতক্ষণ লাগে আসতে। আমি কিছু না বলেই চলে যাচ্ছিলাম তখন খালা বললো)

খালাঃ কি রে এতো রক্ত এলো কি করে।
(আমি কিছু বললাম না চলে যাচ্চিলাম তখন আনিসা বললো)
আনিসাঃ কি হলো বললে না তো যে পায়ে কি হয়েছে।
আমিঃ তেমন কিছু না সামান্য কেটে গেছে।
আনিসাঃকি করে কাটলো?

আমিঃ তোমাদের গ্রামের যে রাস্তা কোথায় কি পড়ে থাকে কে জানে। আর আমার জুতা ছিরে গিয়েছিলো তাই খালি পায়ে হাটতে গিয়ে ছিরে গেছে।
আনিসাঃ একটু দেখে চলতে পারো না, কিভাবে রক্ত পড়ছে এখনো।
(আনিসার আদিখ্যেতা কেমন জানি আমার সহ্য হচ্চে না। তাই কিছু না বলে রুমে এসে ওয়াসরুমে গেলাম। গিয়ে কাটা স্থান ভালোভাবে ধুলাম। অনেক ব্যাথ্যা করছে। ফ্রেস হয়ে এসে বিছানায় বসে আছি তখন আনিসা হাতে স্যাভলন, তুলা আরো অনেক কিছু আনলো।

আনিসাঃ দেখি পা টা দাও তোমার, অনেকটাই তো কেটে গেছে। কেয়ারলেস ছেলে একটা।
(কত ভালো লাগছিলো আমার বলে বুঝাতে পারবো না। আমি ভাবলাম ও হয়তো আমাকে ভালোবাসে তাই আমিও একটু ভাব নিয়ে বললাম)
আমিঃ যাও তোমার কেয়ার লাগবে না তুমি তোমার বি এফ কে গিয়ে কেয়ার করো।

আনিসাঃ ওকে তো সারাজীবন কেয়ার করতে পারবো, সেটা পড়ের বিষয় এখন যদি তোমার এটা না পরিষ্কার করি তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে।
(আনিসার কথা শুনে আমি আবার অনেক বড় কস্ট পেলাম, ও ওর বি এফ কে সারাজীবনের জন্য পেতে চায়। আমি ভাবছিলাম ও হয়তো আমাকে ভালোবাসে। তাই এসব করছে। ওর কথায় আমার আরো রাগ উঠলো আর ও যখন আমার পা ধরতে যাবে তখন আমি বললাম)

আমিঃ থাক তুমি তোমার বি এফ গিয়েই সেবা করো আমার লাগবে না। আমি একাই সব পারবো।
আনিসাঃ এই কথা বললে কি করে হয়, দেখছো না কতটা কেটে গেছে।
আমিঃ কাটেছে তো আমারটা কেটেছে তোর সমস্যা কোথায়, যা হবার আমার হইছে, তোর বা তোর বি এফ এর তো কিছু হয় নাই।
আনিসাঃ রাগ করছো কেন?

আমিঃ আমার কিসের রাগ, আমার কোনো রাগ নেই। তুই তোর বি এফ কে নিয়েই থাক। আমাকে নিয়ে না ভাবলেও চলবে তোর। আর একটা হেল্প কর, আমি কালকে চলে যাবো তুই আমার ব্যাগটা একটু গুছিয়ে দিস।

আনিসাঃ তুমি না কয়েকটাদিন থাকবা বলে আসছো। এতো তারাতারি আবার চলে যাবে। আর কিছুদিন থাকো।
আমিঃ এখানে থাকতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আর কিছুদিন থাকলে আমি মানসিক রুগি হয়ে যাবো। তুই পারলে বল তা না হলে আমি একাই করতে পারবো।
আনিসাঃ আচ্চা ঠিক আছে গুছিয়ে দিবো।

(আমি আবার অবাক হলাম যে মেয়ে কিনা আমায় থাকার জন্য কত আবদার করতো এখন সেই মেয়ে বলে কিনা। অবাকের পর অবাক হচ্চি একি সেই আনিসা নাকি অন্য কেউ। নাকি আধুনিকতার জন্য মনে অহংকার জন্ম নিয়েছে? আমি বললাম)
আমিঃ তুই এখন আমার সামনে থেকে যা, আমার ভালো লাগছে না।

আনিসাঃ কিন্তু তোমার পায়ের অবস্থা তো খারাপ। আমিঃ ওই আমার কি হলো না হলো সেইটা তোকে না ভাবলেও চলবে তুই তোরটা নিয়ে ভাবেক। তুই যা এবার।
(আনিসা চলে গেলো। আমি মনে মনে বললাম আমার পায়ের অবস্থাই দেখলি মনের অবস্থা বুঝলি না। আর বুঝবেই বা কেমন করে ওর জীবনে তো অন্য কেউ আছে। তাকে বুঝবে আমাকে কেন বুঝবে। আমি তো শুধু ভাই মাএ। এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আনিসা আমার মাথায় পানি ঢালছে। হ্যা ব্যাথ্যার কারনে জ্বর চলে আসছে। আমি আনিসাকে বললাম)

আমিঃ তুই এখানে কেনো আর আমার মাথায় পানি ঢালছিছ কেনো? তুই তোর বি এফ এর মাথায় পানি ঢাল গিয়ে যা।
আনিসাঃ ওর মাথায় সারাজীবন পানি ঢালতে পারবো এখন তুমি অসুস্থ তাই তোমার সেবা করছি।
আমিঃ চাইনা তোর সেবা আমি চলে যাবো।
আনিসাঃ যাবা যাও কিন্তু সুস্থ হয়ে যাও। এখন গেলো খালা কি না কি ভাববে? বলবে আমার পিচ্চি ছেলেটা অসুস্থ আর তাও তোমাকে আমরা যেতে দিয়েছি।
আমিঃ না আম্মু কি বললো না বললো আমি সেটা ভাবছি না আমি কালকেই চলেযাবো। এখানে থাকলে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যাবো।

(আমি দেখলাম আমার পায়ে ব্যান্ডেস করা। আমি আনিসাকে জিঙাসা করলাম)
আমিঃ আমাকে কে ব্যান্ডেজ করেছে।
আনিসাঃ আমি করে দিয়েছি।
আমিঃ তুই কেন করলি তুই তোর বি এফ কে কর গিয়ে।

আনিসাঃ ওকে করবো বলেই তো তোমাকে দিয়ে শিখে নিচ্চি। আর তেমার পা দিয়ে হালকা রক্ত বের হচ্চিলো তাই। তোমার তো খিদে পেয়েছে তুমি দারাও আমি খাবার আনছি।
(আনিসা চলে গেলো আমি বসে রইলাম। মনে হলো আমি আমার বউয়ের সেবা পাচ্ছি। কিন্তু তখনেই মনে হলো ও তো অন্য কাউকে ভালোবাসে। আমি শুয়ে আছি আনিসা খাবার নিয়ে এলো আর আমাকে খাইয়ে দিতে যাবে। ঠিক তখনি আমি খাবার প্লেটটা ফেলে দিলাম। ঠিক তখনি খালা এলো আর বললো)
খালাঃ কি রে কি হলো?
আনিসাঃ আর বলোনা আম্মু আমি মামুনের জন্য খাবার তারাতারি আনতে গিয়ে হাত থেকে খাবার পড়ে গেলো।
খালাঃ একটু দেখে চলতে পারিস না। আচ্ছা দারা আমি আরো খাবার নিয়ে আসছি।

(খালা চলে গেলো আমি আনিসাকে বললাম)
আমিঃ মিথ্যা বললি কেন?
আনিসাঃ ভাবছিলাম স্বামীর জন্য পড়ে তো একটু মিথ্য কথা বলতেই হবে। তাই এখন থেকে শিখে নিচ্চি।

(এই বলে সে হাসতে হাসতে চলে গেলো। আমি ভাবতে লাগলাম। আনিসা কেনো এমন করলো আমি তো ওকে ভালোবাসি। এইসব ভাবতে অনেক কস্ট হচ্চে আর কান্নাও করতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু ছেলেদের নাকি কান্না করা যায় না। পরেরদিন কাউকে কিছু না বলেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি আমার বাসায় যাওয়ার জন্য স্টেশনে গেলাম। এসে দেখি সেইদিনের সেই ছেলেটি মানে আনিসার বি এফ। তারপর আমি তার সাথে কথা বলে যা শুনলাম তাতে তো আমার হুস উড়ে গেলো। নিজেকে বিশ্বাস করতে পাচ্চি না। আর কিছু না ভেবেই সোজা আমার বাসায় চলে এলাম। তারপর…?


পর্ব ৪ (শেষ পর্ব)

(স্টেশনে এসে দেখি সেই দিনের সেই ছেলেটি মানে আনিসার বি এফ। আমি ওর সাথে কথা বললাম। ওর সাথে কথা বলে আমি জানতে পারলাম আনিসাও আমাকে অনেক ভালোবাসে। সেই দিন ওর নোট হাড়িয়ে গিয়েছিলো তাই আনিসা অনেক টেনশনে ছিলো, কিন্তু সে জানতো না আমি ওর পিছনে দারিয়ে ছিলাম। আমাকে মারার পর সে নিজেও কেদেছিলো আমি চলে যাওয়ার পরে। ও আমাকে অনেক ভালোবাসে যা আমি বলে বুঝাতে পারবো না। আমি ছেলেটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় আসলাম। তারপর বন্ধুদের কাছে গেলাম গিয়ে সব খুলে বললাম ওরা শুনে হাসতে লাগলো।

তারপর আমরা একটা দারুন প্লান করি। প্লানটা ছিলো আমাকে নাকি বিয়ের নাটক করতে হবে। আমি বললাম, এটা কিভাবে সম্ভব, আম্মু আব্বু কি রাজি হবে। ওরা বললো আমরা যা যা বলবো তুই শুধু হ্যা হ্যা করে যাবি। তারপরের দিন সব বন্ধুরা আমার বাসায় আসে, আসার পর আব্বুকে বলে আমি নাকি রিয়াকে ভালোবাসি আর ওর পেটে নাকি আমার বাচ্চা। {রিয়া হচ্ছে সাগরের জি এফ} আব্বু শুনে অনেক রেগে যায় আর আমাকে বললো)

আব্বুঃ এসব সত্যিকি না
আমিঃ হ্যা(তখন আব্বু আমাকে অনেক বকা দেয় আর বলে)
আব্বুঃ যা হবার তা তো হইছে এবার মেয়ের বাসার ঠিকানা দাও।

আমিঃ না (তখন হারামি বন্ধুরা রিয়ার বাসার ঠিকানা দেয়। আব্বু চলে গেলো। আর আমি ওদেরকে বললাম, এইছিলো তোদের মনে সাগরের বাচ্চার বাবা আমি কেন হবো? তখন ওরা বললো এটাও নাকি ওদের প্লানের মধ্যে। ওদের প্লান অনুযায়ী সব চলতে থাকে। আব্বু এসে আমাকে ডাক দিলো। আর বললো আর ৬দিন পর নাকি আমার বিয়ে। আহ্ কি আনন্দ! তবে আমার না সাগরের কারন বিয়েটা আমি করবো না। করবে সাগর। হারামি বিয়ে করবে বলে অনেক খুশি।

ওরা বলে আমার বিয়ের কথা শুনে নাকি আনিসা নিজে এসেই আমাকে বলবে ভালোবাসি। ওরাও বলেছিলো আনিসা নাকি আমাকে খুব ভালোবাসে। আমার ভয় হচ্চে যদি আনিসা আমার মিথ্যা বিয়ের কথা শুনে আমাকে ছেড়ে দূড়ে চলে যায় তখন তো এ পাড়ো গেলো ও পাড়ো গেলো। ওরা বললো আনওসা নাকি আমার বিয়ের কথা শুনে আমার কাছে আসতে চাইবে, মিশতে চাই, একটু সময় চাইবে কিন্তু আমি যেনো তখন ওর সাথে না মিশি। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আনিসা আমার পাশে বসে আছে। আমার জানা মতে তো ওদের আরো ২দিন পর আসার কথা তাহলে এতো তারাতারি কেনো, আমি আনিসাকে বললাম )

আমিঃ এতো তারাতারি এলে যে তোমর? (ও কিছু বলছে না শুধু মখের দিকে চেয়ে আছে…….কিচ্ছুক্ষণ পর ও বললো)
আনিসাঃ তুমি কি সত্যি অন্য কাউকে ভালোবাসতে।
আমিঃ হুম, কেনো বলতো?

আনিসাঃ না এমনি জিঙাস করলাম
(এরপর থেকে আনিসা আমার কাছে আসতে চায়, একটু সময় পেতে চায়। কিন্তু আমি পাত্তা দিই না। ওদের কথা মতো আনিসাকে এড়িয়ে চলি। এভাবে বিয়ের দিন চলে এলো। আমার বন্ধরা, আত্নীয় স্বজনরা সবাই একে একে চলে এলো। আসবারি কথা ছোট ছেলের বিয়ে বলে কথা।

আমি বিয়ের দিন সকালে রুমে বসেছিলাম। তবে আমার বিয়ে না সাগরের, হারামিটা খুব খুশি। আমার বাপের টাকায় বিয়ে করছে। আমি বসেছিলাম তখন হঠাত করে আনিসা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমারো খুব ইচ্চা করছিলো ওকে জড়িয়ে ধরে বলি পাগলি আমি কাউকে বিয়ে করছি না আমি শুধু তোমার। কিন্তু এটা করলে পড়ে সাগরের বিয়ে হবে না তাই আমি ওকে ছাড়িয়ে চলে এলাম বাইরে। তারপর আমি জামাই সেজে বিয়ের জন্য বেড়িয়ে পড়বো তখন দেখি হারামি রাফি নাই। ওর নাকি সকাল থেকেই পেট খারাপ, ১০-১২বার গিয়েছিলো এতক্ষণে। আমরা রওনা দিলাম…….কিছুদুর আসার পর হঠাত আম্মুর কল আসলো আমার ফোনে আমি রিসিফ করলাম আর বললাম)
আমিঃ হেলো আম্মু

আম্মুঃ বাবা আনিসা আত্নহত্যা করতে গিয়েছিলো। আমরা ওকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। তুই বাবা তারাতারি চলে আয়। আমরা সব জানি তুই। আজ তোর বিয়ে না আজ সাগরের বিয়ে তুই আনিসাকে ভালোবাসিস। তোর বাবা ওই বাড়িতে সব বলে দিয়েছে সাগরের বাবা মা কথা বলতেছে তুই বাবা তারাতারি হাসপাতালে চলে আয়।
(আম্মুর কথা শুনে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। সাগর আমাকে দেখে বললো কি হয়েছে। আমি ওকে সব বললাম। সাগর বললো আমরা কি একটু বেশিই করে ফেললাম। আচ্ছা চল এখন আমরা হাসপাতালে যাই।

তারপর আমরা গাড়ি ঘুড়িয়ে হাসপাতালে আসলাম। এসে জানতে পারি আনিসা নাকি আর নেই, সামান্য একটু মজা করতে গিয়ে আনিসাকে আমি হারাইলাম। কিছুক্ষণ আগেই নাকি আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমি অনেক কান্না করতে লাগলামসাগর এসে আমাকে দাড় করালো। আমি দৌড়ে গিয়ে আনিসাকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলামঃআনিসা এই আনিসা দেখ আমি এসে গেছি তুই উঠ। আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি তুই আমাকে ছেড়ে যেতে পারিস না। তুইও তো আমাকে ভালোবাসিস। উঠ আনিসা উঠ.. কিছুক্ষণ পর দেখলাম আনিসা নড়ে চলে উঠলো। আর বললো আমিও তোমাকে অনেক ভালো। আমি তো অবাক কি হচ্চে এসব! পরে জানতে পারলাম সবাই নাকি আমার সাথে একটা গেম খেলেছে। আমি বললাম,
আমিঃ কেনো এসব করলে?

আনিসাঃ করবো হাজার বার করবো।
আমিঃ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো আমি কি নিয়ে বেচে থাকতাম।
আনিসাঃ আমাকে বিয়ে করবে।
আমিঃ নাহ্।

আনিসাঃ কেনো?
আমিঃ কারন তুমি আমাকে অনেক কস্ট দাও।
আনিসাঃ এখন থেকে আর কস্ট দিবো না অনেক ভালোবাসবো তোমাকে।
আমিঃ সত্যি তো।
আনিসাঃ হুম, আমি আজকে বিয়ে করবো।

আমিঃ কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
আনিসাঃ আমি কিচ্ছু জানিসা আমি আজকেই বিয়ে করবো। (তখন সাগর বললো আনিসাকে রিয়ার বাড়িতে নিয়ে যেতে আর দুইজনেই ওদের ওখানে একা সাথে বিয়ে করবো। সবাই তাই করতে বললো। তারপর আর কি আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো। এখন আনিসাকে বাসায় নিয়ে আসলাম। রুমে এসে দেখি আনিসা বিছানা সাজাচ্ছে। আমি বললাম,
আমিঃ কি করছো, আজকের দিনে নতুন বউদের ঘোমটা দিয়ে বিছানায় বসে থাকতে হয়। আর তুমি খাট সাজাচ্ছো।

আনিসাঃ ঘোমটা দিয়ে থাকে যারা নতুন বউ হয়ে আসে। তারা একে অপরকে চেনে না। তাই লজ্জায় ঘোমটা দিয়ে বসে থাকে। আর আমি তো তোমাকে ছোট বেলা থেকেই চিনি।
আমিঃ ও আচ্চা, এখন এগুলো বাদ দাও। আমার না খুব ইয়ে পাচ্চে।
আনিসাঃ কি পাচ্ছে? (আমি আর কিছু না বলেই ওকে বুকে জড়িয়ে নিলাম। বাকিটা ইতিহাসের শেষ পাতা)

লেখাঃ অমি

সমাপ্ত

(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “খালাতো বোনের সাথে বিয়ে – ভালবাসার গল্প” টি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ। )

আরো পড়ুন – ভাইয়ার হবু শালিকা – প্রেম ভালোবাসা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *