ভয়ানক ভৌতিক গল্প ৮

ভয়ানক ভৌতিক গল্প – অশুভ আত্মার প্রতিশোধ – পর্ব ৮

ভয়ানক ভৌতিক গল্প – অশুভ আত্মার প্রতিশোধ – পর্ব ৮: আমি শেষ পর্যন্ত ভুতের সাথে লড়াই করলাম, জানি না কি আছে কপালে। যে কষ্ট আমি তাকে দিছি এতে তো মনে হয় সে আমার উপর আরো কঠোর হবে! দেখি কি হয়?

প্রেত আত্মা কাবু করার প্ল্যান

হুজুরঃ এখানে ১০ মিনিটের বেশি থাকা যাবে না। এক্ষুনি বাসায় চল। নাহলে সবাই মারা যাব।

শাফিনঃ আমি বুঝতে পেরেছি কি করতে হবে।

হুজুরঃ যা হবে সব গুলো কালকে সকালে হবে। তাড়াতাড়ি দৌড় শুরু কর, শাফিন।

হুজুর সহ আমরা তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে এলাম।

রনি এখনো অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে, হুজুর কি একটা সূরা পড়ে ফু দিতে লাগল। আস্তে আস্তে করে রনি চোখ দুটো খুললো।

শাফিনঃ যাক, আল্লাহ ভালোর ভালো রনিকে ঠিক করে ফেলেছে। তো হুজুর, এখন আমরা কি করবো?

হুজুরঃ এখন তোমরা কি করবে সেটা আমি নিজেও জানি না। এ আত্মা অনেক খারাপ। সে আমাদের দেখায় এক রকম ভাব কিন্তু তার মনের মধ্যে অন্যরকম ভাব। আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না।

শাফিনঃ হুজুর, আমার মনে হয় অন্য কিছু।

হুজুরঃ কোনটা?

শাফিনঃ আমরা নিজেরা নিজেরাই এইটার একটা সল্যুশন করতে পারি।

হুজুরঃ কিভাবে?

শাফিনঃ আমার মনে হচ্ছে, আমরা একটা কাজ করলে সে আত্মার থেকে বাঁচতে পারব।

হুজুরঃ সেই আত্মার থেকে রেহাই পাওয়া এত সহজ না। সে অনেক খারাপ, আমরা তার কাছ থেকে বাঁচার জন্য কি করতে হবে? সেটা আমার জানা নেই, তুমি কি করে জানবে?

শাফিনঃ হুজুর, আপনি তো কোন মুভি দেখেন না। আমি অনেক মুভিতে দেখেছি। আপনার কথায় বলেছিলেন, তার লাশ সে তেঁতুল গাছের নিচে পুঁতে রাখা হয়েছে। তার জানাজা হয়নি। সেজন্য হয়তো সে মুক্তি পায়নি। আমরা যদি সেই লাশটিকে সেখান থেকে তুলে এনে কবরস্থানে কবর দিয়ে ফেলি। মানে জানাজা পড়ে পবিত্রভাবে কবরস্থানে কবর দিয়ে ফেলি। তাহলে হয়তো সে আত্মাটা আমাদের পিছু ছেড়ে দিবে। এরকমটা হলে হয়তো সে আমাদের পিছনে আর আসবেনা।

ভূতের সিনেমা কাহিনী

হুজুর একটু চুপ থেকে বলল- এই রকমটা কেন মনে হল?

শাফিনঃ তাকে কবর দেওয়ার পর হয়তো সে মুক্তি পেয়ে গেছে। এরকমটা তো হতে পারে। আমি মুভিতে দেখেছি এরকমগুলো হয়। তবে সত্য নাকি মিথ্যা এইটা জানিনা। সব মুভিতে একই রকম কাহিনী।

হুজুরঃ হতে পারে এইটা সত্য। যদি এটা সত্য না হতো তাহলে সবাই একরকম কাহিনী কেনইবা দিবে!

শাফিনঃ হয়তো যে কোনো একভাবে এই ঘটনাটা ঘটেছিল। সেটা অনুযায়ী এরকম ঘটনা মুভির মধ্যে দেওয়া হয়। আমরা যদি চেষ্টা করি, তাহলে হয়তো সফল হব।

হুজুরঃ কিন্তু সেই লাশ আজ থেকে আরো ৭৫ বছর আগে সেখানে পুঁতে রাখা হয়েছে। এখন আমরা সেটাকে কোথায় খুঁজব? এতদিনে হয়তো সেটা পচে গলে গেছে। অন্যথায় সে লাশটি কোন জায়গার মধ্যে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেটা তো আমরা জানি না। এতোটুকু জানি যে তেতুল গাছের গোড়ার মধ্যে। কিন্তু কোথায় পড়েছে স্থানটা সেটা তো আমাদের জানা নেই।

শাফিনঃ আমরা দেখতে পারি, চেষ্টা করতে পারি, তবে হয়তো পারবো।

হুজুরঃ তাহলে এখন তোমার ডিসিশন কি?

শাফিনঃ আমার ডিসিশন হচ্ছে, আমরা সেই লাশটিকে তেতুল গাছের গোড়া থেকে এনে, কবরস্থানে জানাজা পড়ে কবর দিব। তাহলে হয়তো সে আত্মাটা মুক্তি পেয়ে যাবে।

হুজুরঃ ঠিক আছে, সেটাই করো তাহলে।

এভাবে কথা বলতে বলতে আমাদের রাত পার হয়ে যায়। অন্যদিকে ফজরের আজান দিয়ে ফেলে। হুজুর চলে গেছে মসজিদে। আমি কিছুক্ষণ রনির পাশে বসে নিজেও চলে গেলাম মসজিদে। নামাজ শেষ করে বাহির হলাম।

হাড় হিম করা কাণ্ড

তারপর দিনের বেলায় আমি, রনি এবং হুজুর।

আমরা তিনজন মিলে তেঁতুল গাছের গোড়ায় চলে গেছি। সাথে করে কোদালও নিয়ে নিয়েছি। কোদাল দিয়ে একটি জায়গা থেকে খুড়তে লাগলাম। আমি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মাটি খুড়তে লাগলাম। কিন্তু লাশের কোন হদিস পাচ্ছিনা।

আমার পরে রনিকে দিলাম, রনির পর আবার হুজুর শুরু করল। হুজুরের পর আবার আমি।

কিন্তু না, লাশের কোন সন্ধান পাচ্ছি না আমরা।

এরপর খুড়তে খুড়তে এক পর্যায়ে দেখা যায় সাদা কাপড়ে মোড়া কি একটা যেন ভিতরে পড়ে আছে। আমি দৌড়ে গিয়ে কোদাল নিয়ে আশেপাশের মাটি সরিয়ে নিলাম এবং দেখলাম যে ভিতর থেকে একটা সাদা কাপড় বেরিয়ে আসলো। কাপড়ের ভিতরে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভিতরে কিছু হাড় আছে।

হয়তো সেই এতদিন হওয়ার কারণে মাংসগুলি পচে গেছে, কিন্তু হাড়গুলো এখনো তরতাজা।

আমরা সেগুলো হাতে নিয়ে চলে এলাম। তারপর কবরস্থানের সামনে সেগুলোকে রাখলাম।

হুজুরকে সামনে দাঁড় করিয়ে জানাযাটা পড়ে নিলাম। জানাযা পড়ার পরে যখন কবর দিতে যাব, তখনই একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেলো।

রনি আগে কবরের ভিতরে প্রবেশ করেছিল, আমরা রনির হাতে সেই কাপড় মোড়ানো হাড়গুলো দিলাম। রনি সেগুলোকে কবরস্থানে রেখে উঠে আসতে পারতেছে না। যেন কেউ হাত দিয়ে ধরে রেখেছে রনিকে।

আমরা অনেক টানাটানি করেও তুলতে পারতেছি না। এই কি বিপদ? এদিকে কবরস্থানের মাটিগুলো ধীরে ধীরে কবরস্থানের পড়ে যাচ্ছে। রনির হাঁটু পর্যন্ত পড়ে গেছে মাটি। ধীরে ধীরে রনি কবরস্থানের নিচে যেতে যেতে লাগল। আমার ভয়ে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, এইটা কি হচ্ছে? আমি রনির হাত ধরে জোরে জোরে টানতে লাগলাম।

কিন্তু কোন মতে কোন কাজ হচ্ছে না, এদিকে মাটির পড়তে পড়তে রনির কোমর পর্যন্ত চলে এসেছে। চলবে….

পরের পর্ব- ভয়ানক ভৌতিক গল্প – অশুভ আত্মার প্রতিশোধ – পর্ব ৯

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *