অবৈধ প্রেম শেষ পর্ব

অবৈধ প্রেম – শেষ পর্ব | নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প | Love Story

অবৈধ প্রেম – শেষ পর্ব: হারানোর ভয় প্রতিটি প্রেমের প্রধান শত্রু। ভালোবাসার মানুষটির উপর আস্থা, ভরসা আর দায়িত্ব নিয়েই শুরু হয় প্রেমের গল্প। তবে নানা ভয় আর পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে অনেকে অনেক কিছু করতে বাধ্য হয়। অনেকে হারায় তার প্রিয় মানুষটিকে।

হারানোর ভয়

রিয়াত লিজার পা‌শে ব‌সে বলল,

রিয়াতঃ তো কি কর‌বো?

এর ম‌ধ্যে খুব জো‌রে একটা বাজ পড়‌লো। লিজা ভ‌য়ে চিৎকার দি‌য়ে রিয়াতকে জ‌ড়ি‌য়ে ধর‌লো।

রিয়াতও যে‌নো আজ তনায়া‌কে নি‌জের থে‌কে দূর কর‌তে পার‌ছে না। খুব শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধর‌লো লিজা‌কে।

চুম‌্ব‌কের দুই মেরু যে ভা‌বে একে অপর‌কে আকর্ষণ ক‌রে ঠিক তেম‌নি আজ ওরা একে অপর‌কে আর্কষণ কর‌ছে।

রিয়াত লিজার কপা‌লে একটা ভা‌লোবাসার চিহ্ন একে দেয়। লিজা‌ কিছু বল‌তে চে‌য়েও যে‌নো বলতে পার‌ছে না। এর ম‌ধ্যে রিয়াতের গরম নিঃশ্বাস লিজার ঠোঁট দু‌টো‌কে দখল ক‌রে নেয়।

দুজ‌নেই বুঝ‌তে পার‌ছে যা হ‌চ্ছে তা ঠিক না কিন্তু তবুও কেউ কাউকে আটকা‌তে পার‌ছে না। ভা‌লোবাসার এক মো‌হীত আবে‌শে হারি‌য়ে যায় দুজন।

সকাল বেলা লিজা নি‌জে‌কে রিয়াতের বু‌কে আবিষ্কার কর‌লো। রিয়াতের দি‌কে কতক্ষন বে‌ঘোর দৃ‌ষ্টি‌তে তা‌কি‌য়ে থাক‌লো। কিন্তু কাল রা‌তের কথা ম‌নে পড়তেই লিজা শিউ‌রে ওঠল।

লিজা খুব কান্না করছি‌লো। রিয়াতের‌ নি‌জেরও খুব খারাপ লাগ‌তে ছি‌লো। রিয়াতই লিজা‌কে ব‌লে‌ছি‌লো পা‌রিবা‌রিক ভা‌বে বি‌য়ের আগে এমন কিছু হ‌বে না। ভরসা রাখ‌তে ব‌লে‌ছি‌লো ওর উপর। আর আজ ওই কিনা লিজার ভরসাটা ভে‌ঙে দি‌লো।

রিয়াত লিজাকে শান্তনা দি‌য়ে বলল,

রিয়াতঃ প্লিজ আমা‌কে মাফ ক‌রে দাও লিজা। আমি জা‌নিনা কাল রা‌তে কেন আমি নিজে‌কে স‌ামলা‌তে পা‌রি‌নি? প্লিজ মাফ ক‌রে দাও।

লিজা কাঁদছে আর ভাবে‌ছে এতে তো রিয়াতের একার দোষ নয়। আমিও তো ওকে বাঁধা দি‌কে পারতাম? কেন করলাম আমি এটা?

রিয়াত আবার বলল,

রিয়াতঃ প্লিজ লিজা, কান্না ক‌রো না। আমার নি‌জে‌কে খুব অপরাধী ম‌নে হ‌চ্ছে।

লিজা রিয়াতের হাতদু‌টো ধ‌রে বল‌ল,

লিজাঃ ভুল তোমার একার না‌ রিয়াত। আমারও তোমা‌কে বাঁধা দেয়া উচিৎ ছি‌লো। তোমার নিজে‌কে অপরাধী ভাবার কোন কারণ নেই। কিন্তু আজ আমরা একে অপর‌কে কথা দেই পারিবা‌রিক ভাবে বি‌য়ে না হওয়া পর্যন্ত আমরা এমন ভুল দ্বিতীয়বার আর কর‌বো না।

রিয়াতঃ হুমমম।

তারপর এ ভুল ওরা আর ক‌রে‌নি। কিন্তু একটা কথা আছে না ভুল সবসময় ভুলই হয়। সেটা একবার হোক আর বহুবার। তার মাসুল‌তো গুন‌তেই হয়।

কষ্টের মনের কথা

‌কিছু‌দিন পর থে‌কে লিজা নি‌জের মা‌ঝে প‌রিবর্তন দেখ‌তে পায়। তার প‌রের ঘটনা‌তো সবাই জা‌নেন। কে রা‌তের ভু‌লের ফল ব‌য়ে বেড়‌া‌তে হ‌বে সারা জীবন।

লিজা ভাব‌ছে সেই রা‌তে য‌দি ঝড়টা না হ‌তো তাহ‌লে হয়‌তো আমার জীব‌নেও আজ এমন ঝড় আস‌তো না। এ এমন ঝড় যা ব‌য়ে বেড়া‌তে হ‌বে সারা জীবন। বুক ভরা দীর্ঘ‌ নিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দি‌বে না এ ঝড়।

এরকম ভা‌বেই দেখ‌তে দেখ‌তে কে‌টে যায় ছয় মাস।

লিজা এখন আট মা‌সের গর্ভবতী। এই আট মা‌সে রিয়াত দুবার ফোন ক‌রে‌ছি‌লো ওর মা‌য়ের কা‌ছে। কিন্তু রিয়াতের মা রিয়াতের সা‌থে তেমন ভা‌লোক‌রে কথা ব‌লে‌নি।

সকাল ১০ টা।

লিজা ঘ‌রে একা। রিপা ক‌লে‌জে, রিয়াতের মা কিছু কেনা কাট‌া কর‌তে গি‌য়েছেন আর রিয়াতের বাবা ব্যবসার কা‌জে শহ‌রের বাই‌রে গি‌য়ে‌ছেন।

তখন লিজার ফো‌নে একটা অচেনা নাম্বার থে‌কে ফোন আস‌লো।

লিজাঃ আসসালামু‌ আলাইকুম, কে?

অচেনা নাম্বারঃ লিজা আমি।

কন্ঠটা শু‌নে লিজা যে‌নো স্তব্ধ হ‌য়ে গেলো। মুখ থেকে যে‌নো কথা বের হ‌চ্ছে না। তবুও খুব কষ্ট ক‌রে বল‌ল,

লিজাঃ ফোন কর‌তে ‌এতটা সময় নি‌লে রিয়াত?

রিয়াত খুব ধী‌রে ধী‌রে বলল,

রিয়াতঃ লিজা আমার সা‌থে একটু দেখা কর‌বে প্লিজ।

লিজাঃ তু‌মি বা‌ড়ি এসো। কেউ তোমাকে কিছু বল‌বে না।

রিয়াতঃ সেটা পার‌ছি না লিজা। তু‌মি প্লিজ এই ঠিকানায় চ‌লে এসো।

লিজাঃ ঠিক আছে?

আট মা‌সের প্রেগ‌নেন্ট একটা মে‌য়ের হাঁট‌তে চল‌তে ঠিক কতটা কষ্ট তা শুধু সেই জা‌নে! তবুও লিজা কাউকে কিছু না ব‌লে রিয়াতের দেয়া ঠিকানায় চ‌লে গে‌লো।

লিজা! ব‌লে কেউ পিছন থে‌কে ডাক দি‌লো।

লিজা পিছ‌নে তা‌কি‌য়ে দে‌খে রিয়াত দা‌ড়ি‌য়ে আছে। কিন্তু একি?

রিয়াতের দি‌কে তাকা‌তেই লিজার হৃদয়টা যে‌নো কেঁ‌পে উঠ‌লো। চোখ দু‌টো দি‌য়ে নি‌জের অজা‌ন্তেই টপ টপ ক‌রে জল পড়তে লাগ‌লো।

‌সেই হার্টথ্রব রিয়াত। যা‌কে প্রথম দেখ‌লে যে কোন মে‌য়ে প্রে‌মে প‌ড়ে যে‌তো। দেখ‌তে সুদর্শন সে রিয়াত আর আগের মত সুন্দর নেই। রিয়াতের ফর্সা মুখটা আগের থে‌কে অনেকটা কা‌লো হ‌য়ে গে‌ছে। চোখ দু‌টো কোট‌রে ঢুকে গে‌ছে। চো‌খের নি‌চে অনেক কালী জ‌মে গে‌ছে। আগের থে‌কে অনেক শু‌কি‌য়ে গে‌ছে। দে‌খে ম‌নে হ‌চ্ছে প্রচন্ড দুর্বল।

লিজা রিয়াতের দি‌কে অপলক দৃ‌ষ্টি‌তে তা‌কি‌য়ে আছে। রিয়াত লিজার কা‌ছে আসল। লিজার দি‌কে তা‌কি‌য়ে বল‌ল,

রিয়াতঃ ক্যান আই হাগ ইউ?

লিজা কিছু বল‌তে পার‌ছে না। চুপ ক‌রে শুধু কান্না কর‌ছে। রিয়াত লিজাকে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বল‌ল,

রিয়াতঃ আই ওলা‌য়েজ লাভ ইউ এভার এন্ড ফরএভার।

ধী‌রে ধী‌রে রিয়াত তার শরী‌রের সব ভার যে‌নো লিজার ওপর ছে‌ড়ে দি‌চ্ছে। কিন্তু লিজা ওকে সামলাতে পা‌রে না। রিয়াতকে কোন ম‌তে নি‌চে বসায়।

রিয়াতের দি‌কে তা‌কি‌য়ে দে‌খে রিয়াতের মুখ নীল বর্ন ধারণ ক‌রে‌ছে। মুখ থে‌কে ফেনা বের হ‌চ্ছে ম‌নে হ‌চ্ছে কোন বিষ‌ক্রিয়ার শিকার হ‌য়ে‌ছে রিয়াত।

লিজা রিয়াত ব‌লে একটা চিৎকার দি‌লো। আশে পা‌শের লোকজ‌নের সাহা‌য্যে রিয়াত‌কে হাসপা‌তা‌লে নি‌য়ে গে‌লো। হাসপাতা‌লে রিয়াতের ডাক্তার বন্ধু ছি‌লো। যার ফ‌লে চি‌কিৎসা কর‌তে বে‌শি সময় নেয়‌নি।

ভালোবাসার মানুষের জন্য কান্না

লিজা বা‌ড়ি‌তে ফোন ক‌রে সব ব‌লল। তারাও শিঘ্রই হাসপাতা‌লে চ‌লে আস‌লো। কিছুক্ষন পর ডাক্তারা অপা‌রেশন থি‌য়েটার থে‌কে বের হ‌লে, লিজা তা‌দের জি‌জ্ঞেস কর‌ল,

লিজাঃ কী অবস্থা রিয়াতের?

রহিম রিয়াতের ডাক্তার বন্ধু। সে লিজা‌কে অভয় দি‌য়ে বললেন,

রহিমঃ ভা‌বি, ম‌নে হ‌চ্ছে আল্লাহ নি‌জে নি‌চে নে‌মে রিয়াত‌কে বাঁ‌চি‌য়ে‌ছে।

লিজাঃ কী হ‌য়ে‌ছি‌লো ওর?

রহিমঃ ভাবি আমি পু‌লিশ‌কে ফোন দি‌য়ে‌ছি।

লিজা কিছুটা অবাক হ‌য়ে বলল,

লিজাঃ পু‌লিশ কেন?

রহিমঃ ভা‌বি কেউ ওকে বিষ দি‌য়ে‌ছি‌লো। আর সব থে‌কে হতভ‌ম্বের বিষয় কি জা‌নেন? রিয়াতের শরী‌রের ভিটা‌মিন ডি এর অভা‌বে ওর স্কি‌নে আজব ধর‌নের রোগ ছ‌ড়ি‌য়ে‌ছি‌লো। এটা সাধারণত তখন হয় যখন একটা মানুষ দীর্ঘ‌দিন যাবত সূ‌র্যের রশ্মি ও বাইরের হাওয়া বাতাস থেকে দূ‌রে থা‌কে।

রিয়াত‌কে দে‌খে ম‌নে হয় অনেক দিন পর্যন্ত ওকে কেউ কোন বদ্ধ রু‌মে আট‌কে রে‌খে‌ছি‌লো। ওর শরী‌রের ভিটা‌মিন ডি এর অভাব, শরী‌রের আয়রন এবং সা‌থে সা‌থে ভিটা‌মিন সি এর ও অনেক ঘাট‌তি হয়ে‌ছে। হাত পা‌য়ে দ‌ড়ি দি‌য়ে অনেক‌দিন বে‌ধেঁ রাখ‌লে যেমন দাগ হ‌য়ে যায়, তেমন দাগ ক‌রে ঘা হ‌য়ে গি‌য়ে‌ছে। ম‌নে হয় অনেক‌দিন যাবত বাঁধা অবস্থায় ছি‌লো।

লিজা রহিমর কথা শু‌নে হতভম্ব হ‌য়ে গে‌লো। এক রাস বিস্ময় নি‌য়ে বলল,

লিজাঃ কী বল‌ছেন এসব?

রহিমঃ আমি যা দে‌খে‌ছি, তাই বলে‌ছি। বাট চিন্তা কর‌বেন না। ক‌য়েক‌দিন রেস্ট নি‌লে, খোলা প‌রি‌বে‌শে থাক‌লে আর ঠিকমত খে‌লে সব ঠিক হ‌য়ে যা‌বে। আর বা‌কিটা আপনা‌কে না দেখা‌লে বুঝ‌তে পার‌বেন না। কিছুক্ষণের ম‌ধ্যে ওর জ্ঞান ফির‌বে।

ডাক্তা‌রের কথা শু‌নে বা‌ড়ির সবাইও হতভম্ব হ‌য়ে গে‌লো। সবার ম‌নে হাজা‌রো প্রশ্ন? কিন্তু যে উত্তর দি‌বে সে এখ‌নো অজ্ঞান।

ডাক্তার এসে বল‌ল,

ডাক্তারঃ রিয়াতের জ্ঞান ফি‌রে‌ছে। আর শুধু লিজার সা‌থে দেখা কর‌তে চায়।

লিজা রিয়াতের কা‌ছে গে‌লো।

রহিমঃ ভা‌বি ব‌ললাম না আপনা‌কে না দেখ‌লে বুঝা‌তে পার‌বেন না।

এই ব‌লে রিয়াতের গা‌য়ের চাদরটা ফে‌লে হস‌পিটা‌লের পরা‌নো‌ এপ্রোনটা খু‌লে লিজা‌কে দেখা‌লো।

রিয়াতের শরী‌রের দি‌কে তা‌কি‌য়ে লিজা ডুক‌রে কেঁ‌দে উঠ‌লো । রিয়াতের শরী‌রে অসংখ্য মারের দাগ। কিছু দাগ কা‌লো হ‌য়ে গে‌ছে। কিছু নীল বর্ণ ধারণ ক‌রে‌ছে।

লিজা কাঁপা কাঁপা হা‌তে রিয়াতের শরী‌রে স্পর্শ কর‌তে গে‌লে, রিয়াত লিজার হাতটা ধ‌রে ব‌লল,

রিয়াতঃ আমি ঠিক আছি, লিজা।

কিন্তু লিজা রিয়াত‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে কান্না কর‌তে থা‌কে। রিয়াত লিজার মাথায় হাত বুলা‌তে বুলা‌তে বলল,

রিয়াতঃ এই পাগ‌লি আমি ঠিক আছি। প্লিজ কান্না ক‌রো না। আমি বেঁ‌চে আছি আর তোমার কা‌ছেই আছি। জা‌নো লিজা,

রিয়াত কিছু বল‌তে যা‌বে এর ম‌ধ্যেই পু‌লিশ রিয়াতের জবানব‌ন্দি নেয়ার জন্য রিয়াতের কা‌ছে এলো।

রিয়াত শুধু লিজার দি‌কে তা‌কি‌য়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ কাউকে দে‌খে রিয়াতের চো‌খে যে‌নো ভয় নে‌মে এলো।

‌রিয়াতের চো‌খের ভাষা হয়‌তো লিজা বুঝ‌তে পে‌রে‌ছে। তাই রিয়াতের পা‌শে গি‌য়ে ব‌সে রিয়াতের হা‌তে হাত রাখ‌লো। তারপর চোখ দি‌য়ে ভরসা দি‌য়ে পরম ভা‌লোবাসায় নি‌জের হা‌তের মু‌ঠোয় রিয়াতের হাত বন্দী ক‌রে রাখ‌লো।

শান্তির পরশ

পু‌লিশ রিয়াত‌কে জি‌জ্ঞেস কর‌ল,

পুলিশঃ বলুন মিঃ রিয়াত। এত দিন কোথায় ছি‌লেন আপ‌নি? আর আপনা‌কে বিষ দি‌য়ে‌ছি‌লো কারা?

রিয়াত লম্বা একটা দম নিয়ে বল‌তে লাগ‌লো,

রিয়াতঃ প্রায় সাত মাস আগে আমি লিজার সা‌থে দেখ‌া কর‌তে লিজা‌দের বাসায় যা‌চ্ছিলাম। প‌থে একটা মে‌য়ে আমার কা‌ছে লিফট চায়। মে‌য়েটা বোরকা পরা ছি‌লো। মুখ বাঁধা ছি‌লো। আমি মে‌য়ে‌টি‌কে লিফট দিলাম। কিন্তু কিছুদূর যে‌তেই মে‌য়ে‌টি আমার মু‌খে কিছু একটা ‌স্প্রে করে। তারপর আমার আর কিছু ম‌নে নেই।

যখন জ্ঞান ফির‌লো তখন নি‌জে‌কে একটা বদ্ধ রু‌মে চেয়া‌রের সা‌থে বাঁধা পেলাম। তারপর কিছু লোক আস‌লো আমার কা‌ছে। তা‌দের কা‌ছে জান‌তে চাইলাম আমা‌কে কেন কিডন্যাপ করা হ‌য়ে‌ছে? কিন্তু তারা কোন জবাব দেয়নি।

তা‌দের মধ্যে একজন লোক বল‌ল,

কিডন্যাপারঃ এখন থে‌কে আমরা যা বল‌বো তাই কর‌বি। না কর‌লে তোর মা বাবা, বোন ,আর তোর প্রে‌মিকা সবাইকে মে‌রে ফেল‌বো।

ওদের কা‌ছে আমার ফ্যা‌মি‌লির পু‌রো ডি‌টেইল’স ছি‌লো। তাই বাধ্য হ‌য়ে ওদের কথা ম‌তো লিজা‌কে ফোন ক‌রে ব‌লি যে আমি অন্য কাউকে ভা‌লোবা‌সি। আর তা‌কে নি‌য়ে শহর ছে‌ড়ে চ‌লে যা‌চ্ছি। আরো অনেক কিছু। এরপর ক‌য়েকবার পালা‌নোর চেষ্টা ক‌রে‌ছিলাম কিন্তু পা‌রি‌নি। ওরা আমা‌কে প্রায় মার‌তো। আর ওদের কথ‌া ম‌তো বা‌ড়িতে দুবার কথা ব‌লে‌ছিলাম।

সাত মাস ধ‌রে ওরা আমা‌কে একটা রু‌মে আট‌কে রে‌খে‌ছি‌লো। এই সাত মাস ঠিক কিভা‌বে কে‌টে‌ছে তা শুধু আমি আর আল্লাহ জা‌নে।

তারপর গতকাল‌ অনেক ক‌ষ্টে পালা‌তে সক্ষম হই। কিন্তু ওরা আমার পিছু নেয়। তা‌দের থে‌কে কোন ম‌তে বেঁ‌চে বা‌ড়ি আসি। কিন্তু আমা‌দের বা‌ড়ির চারপা‌শে ঐ লোকগু‌লো‌কে দেখলাম। তাই লিজা‌কে ফোন ক‌রে দেখা কর‌তে বললাম।

‌কিন্তু কপাল খারাপ থাক‌লে যা হয় আর‌কি। ওরা আমা‌কে আবার ধ‌রে ফেল‌লো। কিন্তু এবার ওরা আমাকে একবা‌রে মে‌রে ফেল‌তে চে‌য়ে‌ছি‌লো। তাই আমার শরী‌রে বিষাক্ত ইন‌জেকসন দি‌য়েছি‌লো।

কিছুটা সময় আমি ওদের সামনে মরার মত প‌রে থা‌কি। তারপর ওরা আমায় মৃত ভে‌বে চ‌লে যায়। তারপর লিজার সা‌থে দেখা হয়। আর আল্লাহর অশেষ রহম‌তে বেঁচে গেলাম।

রিয়াতের কথা শু‌নে সবাই স্ত‌ম্ভিত হ‌য়ে গে‌লো। একটা মানুষ‌কে সাত মাস আট‌কে কেউ কিভা‌বে রাখ‌তে পা‌রে!

রিয়াতের বাবা মা, রিপা, লিজা, ওর বাবা মা সবার চো‌খে জল। আজ‌কের চো‌খের জ‌লে তা‌দের মন থে‌কে মু‌ছে গে‌লো রিয়াতের উপর জ‌মে থাকা সকল রাগ, ঘৃণা আর অভিমান।

লিজা সবাই‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,

লিজাঃ আমি তোমা‌দের ব‌লে‌ছিলাম আমা‌দের রিয়াত এমন কর‌তে পা‌রে না? ওর নিশ্চয় কোন বিপদ হ‌য়ে‌ছে। কিন্তু তোমরা কেউ আমার কথা তখন বিশ্বাস ক‌রো‌নি।

রিয়াতের বাবা লিজার দিকে তা‌কি‌য়ে বলল,

রিয়াতের বাবাঃ হ্যাঁ মা তুই ঠিক ব‌লে‌ছি‌লি। তি‌নি রিয়াতের দি‌কে তা‌কি‌য়ে বল‌লেন, মাফ ক‌রে দে রিয়াত। সে‌দিন লিজার কথা মে‌নে আমা‌দের তো‌কে খোঁজা উচিৎ ছি‌লো। তাহ‌লে তো‌কে এতটা কষ্ট পে‌তে হ‌তো না।

রিয়াতঃ না বাবা এতে তোমা‌দের কোন দোষ নেই। আমি তোমা‌দের যেভা‌বে ব‌লে‌ছি তা‌তে তোমরা‌ কেন সবাই আমার কথা বিশ্বাস কর‌তো।

পু‌লিশ রিয়াত‌কে জি‌জ্ঞেস কর‌ল,

পুলিশঃ আচ্ছা আপ‌নি কী ঐ লোক গু‌লো‌কে চে‌নেন?

রিয়াতঃ একজন‌কে চি‌নি?

পুলিশঃ কে?

রিয়াতঃ বছর খা‌নি‌কের বেশি সময় আগে, লিজা‌কে ওর ক‌লে‌জের কিছু ছে‌লে বিরক্ত কর‌তো ব‌লে সেসব ছে‌লে‌দের আমি পু‌লি‌শে দি‌য়ে‌ছিলাম তা‌দের লিডার।

লিজাঃ কে শিপন?

রিয়াতঃ হুমমম। কিন্তু ও নি‌জেও এসব কর‌তো না। ওদের কেউ ফো‌নে এসব কর‌তে বল‌তো।

পু‌লিশঃ আপ‌নি কী জা‌নেন সে কে?

রিয়াত কিছুক্ষণ চুপ থে‌কে বলল,

রিয়াতঃ নাহ।

পু‌লিশ রিয়াতের কাছ থেকে আরো কিছু বিষয় জি‌জ্ঞেস ক‌রে ক‌রে চ‌লে গে‌লো।

রহিম সবাইকে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,

রহিমঃ সবাই শুনুন রিয়াতের এখন বিশ্রাম করা দরকার। আপনারা যে‌কোন একজন এখা‌নে থাকুন। বা‌কি সবাই বাইরে যান। বেটার হয় বা‌ড়ি চ‌লে যান।

রিপা তখন বলল,

রিপাঃ লিজা থাকুক।

রিপা লিজার দি‌কে তা‌কি‌য়ে দুষ্ট‌মি একটা হা‌সি দি‌য়ে রিপা চ‌লে গে‌লো।

সবাই চ‌লে যাবার পর লিজা রিয়াতের পা‌শে থে‌কে উঠে যে‌তে চাই‌লে রিয়াত লিজার হাত ধ‌রে ফে‌লে।

এত দিন পর দুজনার দেখা হ‌লো। ম‌নের ভিতর জ‌মে আছে হাজা‌রো কথা। কিন্তু কা‌রো মু‌খে কোন কথা নাই। কথা গু‌লো যে‌নো কোথায় হা‌রি‌য়ে গে‌ছে। লজ্জা, ভয় আর ভা‌লোবাসার শিহরণ মি‌লে আজ একাকার।

রিয়াত লিজার হাত ধ‌রে বলল,

রিয়াতঃ লিজা! একটা কথা বল‌বো?

লিজাঃ হ্যাঁ ব‌লো?

রিয়াতঃ can i toch your womb?

লিজা মৃদ্যু হা‌সি দি‌য়ে রিয়াতের হাতটা ধ‌রে নি‌জের পে‌টের উপর রাখ‌লো।

মধুর ভালোবাসা

রিয়াত চোখ বন্ধ ক‌রে লিজার ভিতর বে‌ড়ে উঠ‌তে থাকা ওর অংশটাকে রিপাভব কর‌ছে।

রিয়াতঃ জা‌নো লিজা, আমি ভে‌বেছিলাম লো‌কের কথায় তু‌মি হয়‌তো ওকে পৃ‌থিবী‌তে আস‌তে দি‌বে না। তখন আমি নি‌জেও চাইতাম যে তু‌মি আমা‌কে ভু‌লে নি‌জের জীব‌নে সাম‌নের দি‌ক এগি‌য়ে যাও। কারল আমি যে বেঁ‌চে ফির‌বো তার আশা ছি‌লো না আমার।

আর তাছাড়া যখন একটা মে‌য়ে বি‌য়ের আগে প্রেগ‌নেন্ট হয় তখন আমা‌দের সমাজ তার কি অবস্থা ক‌রে ত‌া ভে‌বেই কষ্ট হ‌চ্ছিল। আর আমা‌দের বি‌য়ের কথা‌তো কেউ জান‌তোই না।
আই এ্যাম সরি।

লিজা রিয়াতের হাতটা ধ‌রে বলল,
লিজাঃ প্লিজ রিয়াত, এভা‌বে ব‌লো না। তু‌মি কী করে ভাব‌লে আমি আমার রিয়াতের ভা‌লোবাসাটা‌কে মেরে ফেল‌বো! আমার ম‌নে দৃঢ় বিশ্বাস ছি‌লো তু‌মি কখ‌নো আমা‌কে ধোকা‌ দি‌তে পারো না। আর সারা পৃ‌থিবীর লোক ওকে অবৈধ ভাব‌লেও আমি জা‌নি তু‌মি জা‌নো ও আমা‌দের ভা‌লোবাসার প‌বিত্র চিহ্ন। সরি ব‌লে তু‌মি আমা‌কে আর দোষী ক‌রো না। এই সাত মাস তু‌মি যে কষ্ট পে‌য়ে‌ছো তার তুলনায় আমার কষ্ট নগণ্য।

রিয়াতঃ হ্যাঁ তু‌মি ঠিক ব‌লে‌ছো ও আমা‌দের ভা‌লোবাসার পবিত্র ‌চিহ্ন। কষ্ট আমরা দুজ‌নেই সমান পে‌য়ে‌ছি।আমরা শরীর দু‌টো হ‌লেও আত্মাতো একটাই, তাই না বিউ‌টিফুল।

লিজা চোখ বন্ধ ক‌রে বলল,

লিজাঃ কত দিন পর তোমার মুখ থে‌কে এই ডাকটা শুনলাম।

রিয়াতঃ জা‌নো লিজা, খুব ইচ্ছা ছি‌লো আমা‌দের বে‌বি তোমার ‌ভিত‌রে ঠিক কিভা‌বে বে‌ড়ে ওঠে তা তোমার পাশে থে‌কে রিপাভব কর‌বো। রিপাভব কর‌বো ওর একটু একটু ক‌রে বে‌ড়ে ওঠা হৃদস্পন্দন। কিন্তু নিয়‌তির সা‌থে কে বা পে‌রে ওঠে ব‌লো? যে সময়টা আমার তোমার কা‌ছে থাকা সব‌চে‌য়ে বে‌শি দরকার ছি‌লো সেই সময়টাই।

লিজাঃ যা হ‌য়ে‌ছে তা ভু‌লে যাও।

রিয়াত আবার লিজার পে‌টে হাত রে‌খে বল‌ল,

রিয়াতঃ কত দিন পর আস‌বে প্রিন্সেস?

লিজাঃ এক মাস নেই।

রিয়াতঃ ওয়ে‌টিং ফর ইউ বে‌বি।

লিজাঃ রিয়াত?

রিয়াতঃ হু?

লিজাঃ একটা কথা বল‌বো? স‌ঠিক উত্তর দিবা?

রিয়াতঃ তোমার সা‌থে কখ‌নো মিথ্যা ব‌লে‌ছি?

লিজাঃ রিয়াত তোমা‌কে কে এত‌দিন আট‌কে রে‌খে‌ছি‌লো? এমন কে যে তোমা‌কে এতটা ঘৃণা ক‌রে? যে তোমা‌কে সাত মাস এভা‌বে আট‌কে রে‌খে‌ছে?

রিয়াত কিছুটা তুত‌লি‌য়ে বলল,

রিয়াতঃ আমি তো বললাম জা‌নি না।

লিজাঃ রিয়াত তোমার মুখ আমার থে‌কে কথা লুকা‌লেও তোমার চোখদু‌টো তা পার‌বে না।

রিয়াত নিশ্চ‌ুপ।

লিজা রিয়াতের হাতটা নি‌জের পে‌টের উপর চে‌পে ধ‌রে বলল,

লিজাঃ এখন ব‌লো তু‌মি তা‌কে চে‌নো না?

রিয়াত ঝট ক‌রে হাতটা সরি‌য়ে নি‌য়ে বলল,

রিয়াতঃ সে আমার নয় তোমার শত্রু। তার উদ্দেশ্য আমা‌কে নয় তোমা‌কে কষ্ট দেয়া ছি‌লো। আর সে তা‌তে সফল হ‌য়ে‌ছে।

লিজা উৎসুক চো‌খে তা‌কি‌য়ে বলল,

লিজাঃ কে? ক‌লে‌জের ছে‌লেগু‌লো।

রিয়াতঃ না, বাইরের কেউ নয়। আমা‌দের ঘ‌রেরও কেউ নয়। তোমার খুব কা‌ছের সে।

লিজাঃ কে সে?

এরপর রিয়াত কিছুক্ষণ চ‌ুপ থাকে।

থ্রিলার গল্প

তার কিছুক্ষণ পর রিয়াত, লিজার হাত ধরে বলল,

রিয়াতঃ সে আর কেউ নয়। তোমার নি‌জের “মা”।

লিজা “মা” কথাটি শু‌নে ঠিক বিশ্বাস কর‌তে পার‌লো না। তাই আবার জি‌জ্ঞেস করল,

লিজাঃ কার নাম বললা রিয়াত?

রিয়াতঃ জা‌নি আমার কথাটা তু‌মি ঠিক বিশ্বাস কর‌তে পার‌ছো না। কিন্তু এটা স‌ত্যি যে আমা‌কে কিডন্যাপ তোমার মা ই ক‌রি‌য়ে‌ছেন।

লিজাঃ রিয়াত! তু‌মি কী বল‌ছো এসব? তোমার মাথা ঠিক আছে তো?

রিয়াতঃ লিজা, আমি জা‌নতাম আমার কথা তোমার বিশ্বাস হবে না। হবার কথাও না। কারণ পৃ‌থিবী‌তে তু‌মি তোমার মা‌কে সব থে‌কে বে‌শি ভরসা ক‌রো। কিন্তু আমি যেটা বল‌ছি সেটা স‌ত্যি। আমা‌দের অনাগত সন্তান‌কে ছু‌ঁয়ে বল‌ছি (লিজার পে‌টে হাত রে‌খে) আমি স‌ত্যি বল‌ছি।

লিজাঃ দে‌খো রিয়াত, আমি জা‌নি তু‌মি স‌ত্যি বল‌ছো। কিন্তু আমার ম‌নে হয় তু‌মি হয়‌তো ভুল দে‌খে‌ছো বা জে‌নে‌ছো? মা তোমার সা‌থে এমনটা কেন কর‌বে?

রিয়াতঃ সে প্রশ্ন‌তো আমার ম‌নেও?

লিজাঃ কিন্তু তু‌মি কী করে বুঝলে, যে তোমা‌কে মা কিডনাপ ক‌রে‌ছে?

রিয়াতঃ লিজা এর আগেও মা‌নে তিন চার মাস আগে আমি একবার পালা‌তে সক্ষম হ‌য়ে‌ছিলাম। পা‌লি‌য়ে সোজা মেইন রো‌ডে আসলাম। ভাবলাম, কোন গা‌ড়ি‌তে লিফট নি‌য়ে শহ‌রে চ‌লে আস‌বো।

আমা‌কে দেখে একটা গা‌ড়ি থাম‌লো। গা‌ড়ি‌ থে‌কে তোমার মা বে‌র হলেন। আমি ভাবলাম হয়‌তো আল্লাহ আমার উপর রহমত ক‌রে‌ছেন।

‌তি‌নি আমার সা‌থে খুব ভা‌লো ক‌রে কথা বল‌ছি‌লেন। গা‌ড়ি‌তে উঠে কিছু দূর যাবার পর আমার মাথায় কেউ ভারী জি‌নিস দি‌য়ে আঘাত কর‌লো। আমি আবার বেহুশ হ‌য়ে গেলাম।

জ্ঞান ফি‌রে নি‌জে‌কে আবার বন্ধ ঘ‌রে বাঁধা অবস্থায় আবিষ্কার করলাম। কিন্তু সাম‌নে তা‌কি‌য়ে দেখলাম আন্টি আমার সাম‌নে একটা চেয়া‌রে বসা। আর আমার দি‌কে তা‌কি‌য়ে হাস‌ছে। আমি আন্টির এমন রূপ দে‌খে হতভম্ব হ‌য়ে গি‌য়ে‌ছিলাম। তারপর ব‌লে‌ছিলাম,

রিয়াতঃ আন্টি আপ‌নি এমন কর‌ছেন কেন? আর আমাকে কে এখা‌নে বেঁ‌ধে রে‌খে‌ছে?

আন্টি খা‌নিক সময় হে‌সে বল‌লেন,

আন্টিঃ রিয়াত তু‌মি‌ তো খ‌ুব বোকা? এখ‌নো বুঝ‌তে পা‌রো‌নি?

রিয়াতঃ কিন্তু আন্টি আপ‌নি আমার সা‌থে এমন কেন কর‌ছেন? কী ক্ষ‌তি ক‌রে‌ছি আমি আপনার?

আন্টিঃ তু‌মি আমার কোন ক্ষ‌তি ক‌রো নি? কিন্তু তোমার লিজা ক‌রে‌ছে।

রিয়াতঃ মা‌নে? ও তো আপনার মে‌য়ে!

আন্টিঃ মা‌নেটা না হয় প‌রে এক‌দিন জান‌লে?

রিয়াতঃ প্লিজ আমা‌কে ছে‌ড়ে দিন আন্টি। এখন আমার লিজার পা‌শে থাকা জরু‌রি।

আন্টিঃ সেজন্যই তো তোমাকে কিডন্যাপ করলাম! দে‌খো রিয়াত, তোমার সা‌থে আমার কোন শত্রুতা নাই। কিন্তু লিজা‌কে আমি ঘৃণা ক‌রি! প্রচন্ড ঘৃণা! লিজা‌কে কষ্ট দেবার জন্যই তোমা‌কে আট‌কে রে‌খে‌ছি। কাজ শেষ হ‌লে তোমা‌কে ছে‌ড়ে দি‌বো। তার আগে চালা‌কি কর‌লে বেঁ‌চে ফির‌তে পার‌বে না।

রিয়াতের কথ‌া শু‌নে লিজা যে‌নো নি‌জে‌কে সামলা‌তে পার‌লো। মাথাটা ঘুর‌ছে। রিয়াত লিজার হাত ধ‌রে। নি‌জে‌কে প্লিজ সামলাও লিজা। এই জন্যই তোমা‌কে আমি বল‌তে চাইনি।
লিজা কান্না করতে কর‌তে বলল,

লিজাঃ কিন্তু রিয়াত মা কেন আমাকে ঘৃণা ক‌রে? আর তু‌মি কেন পু‌লিশ‌কে এ ব্যাপা‌রে বল‌লে না?

রিয়াতঃ আমি চাইনি আমাদের প‌রিবা‌রের ম‌ধ্যে পু‌লিশ আসুক।

লিজাঃ কিন্তু মা এমনটা কেন কর‌ল? লিজা খুব কান্না কর‌তে ছি‌লো। লিজা শত চেষ্টা ক‌রেও নি‌জে‌কে যে‌নো সামলা‌তে পার‌ছে না।

রিয়াত লিজা‌কে ঠিক কী দি‌য়ে শান্তনা দি‌বে তা ভে‌বে পা‌চ্ছে না। লিজা খা‌নিকটা ক্ষোপ প্রকাশ ক‌রে বলল,

লিজাঃ আমি এখনই মা‌কে সবটা জি‌জ্ঞেস কর‌বো? কেন সে এমন কর‌ল?

রিয়াতঃ প্লিজ লিজা এমনটা ক‌রো না। আর হাসপাতা‌লে ব‌সে নি‌জে‌দের ঘ‌রের কথা বলা ঠিক না। হ্যাঁ জি‌জ্ঞেস ক‌রবে, অবশ্যই তার কা‌ছে জান‌তে চাই‌বে আমা‌দের দোষ কী যে, সে এমন করল! কিন্তু প্র‌তিটা কাজ করার নির্দিষ্ট সময় আছে।

রিয়াতঃ কিন্তু রিয়াত যতক্ষণ না জান‌তে পার‌ছি আমি শা‌ন্তি পা‌বো না।

লিজাঃ তোমাকে শা‌ন্তি দেয়ার উপায় আমার কা‌ছে আছে!

রিয়াতঃ কী উপায়?

রিয়াত মৃদু হে‌সে বলল,

রিয়াতঃ আমার কা‌ছে আসো!

লিজাঃ আসলাম তো?

লিজা কা‌ছে আস‌তেই, রিয়াত লিজাকে নি‌জের বু‌কের মা‌ঝে চে‌পে ধর‌লো। খুব শক্ত ক‌রে।

তারপর রিয়াত বলল,

রিয়াতঃ এখন শা‌ন্তি খুজে পে‌য়ে‌ছো?

লিজাঃ পৃ‌থিবীর সব থে‌কে বে‌শি সুখ তো এখা‌নেই লু‌কি‌য়ে থা‌কে। জা‌নো একটার মে‌য়ের জন্য পৃ‌থিবী‌তে সব থে‌কে শা‌ন্তির এবং সুর‌ক্ষিত জায়গা হ‌চ্ছে তার স্বামীর বুক।
দুজনার মৃদ‌ু হা‌সি, পরম শা‌ন্তিময় গভীর প্রন‌য়ে ছেয়ে গে‌লো দুজনার পু‌রো সত্ত্বায়। এটা কী ভা‌লোবাসা! নাহ ভা‌লোবাসা না, গভীর প্রন‌য়ে গড়া হৃদস্প‌র্শী ভা‌লোবাসা।

সত্যি ঘটনা খুলে বলা

পাঁচদিন হ‌য়ে গে‌লো।

রিয়াত এখন একটু সুস্থ। কিন্তু শরীর খুব ক্লান্ত। পু‌রো পু‌রী সুস্থ হ‌তে বেশ কিছু দিন সময় লাগ‌বে।

এই ক’‌দি‌নে লিজা ওর মা‌য়ের সা‌থে একটা কথাও ব‌লে‌নি। তা‌কে রিয়াতের কা‌ছে যে‌তে দেয়‌নি। লিজা সবসময় রিয়াতের পা‌শে থে‌কে‌ছে।

আজ রিয়াত‌কে বা‌ড়ি নি‌য়ে যা‌চ্ছে। লিজা রিয়াত‌কে ব‌লে‌ছে বা‌ড়ি যাবার সা‌থে সা‌থে সব কিছু ফয়সালা কর‌বে।

রিয়াত‌কে নি‌য়ে সবাই রিয়াত‌দের বা‌ড়ি গে‌লো। লিজার বাবা মা ও ওদের সা‌থে গি‌য়ে‌ছে।

বা‌ড়ি গি‌য়ে বসার সা‌থে সাথে রিয়াত‌দের বাসায় পু‌লিশ আসলো। তা দে‌খে রিয়াতের বাবা বলল,

রিয়াতের বাবাঃ কী খবর অফিসার?

অফিসারঃ মিঃ রিয়াত যে ছে‌লেটার কথা ব‌লে‌ছি‌লো তা‌কে খুঁজে পে‌য়ে‌ছি। আর সে সেই লো‌কের নাম ব‌লে‌ছে যে রিয়াত‌কে এত‌দিন আটকে রে‌খে‌ছি‌লো।

রিয়াতের মা প্রচন্ড রাগী গলায় বলল,

রিয়াতের মাঃ কে সেই পা‌পি শয়তান?

অফিসারঃ মি‌সেস লিজার মা!

পু‌লি‌শের মুখ থে‌কে এমন কা‌রো নাম শোনার জন্য কেউই মান‌সিক ভা‌বে প্রস্তুত ছি‌লো না। সবাই যে‌নো খুব বে‌শি অবাক হ‌লো।

রিয়াতের বাবাঃ কী বল‌ছেন এসব? বেয়ান এসব কাজ কেন কর‌বে? আপনা‌দের কোথাও ভুল হ‌চ্ছে।

অফিসারঃ জি না। আমরা সব কিছু জে‌নে শু‌নে, তদন্ত করে ত‌বেই এসে‌ছি। আর আমরা শিপন‌কে এ্যারেস্ট ক‌রে‌ছি। সেই আমা‌দের সব কথা ব‌লে‌ছে।

রিয়াতের বাবাঃ কিন্তু….

তখন লিজা বলল,

লিজাঃ বাবা ওনারা স‌ত্যি কথা বলেছেন! এসব কিছু আমার মা ই ক‌রে‌ছে।

রিয়াতের বাবাঃ তার মা‌নে তু‌মি সব জান‌তে লিজা?

লিজাঃ হ্যাঁ বাবা জানতাম। রিয়াত হাসপাতা‌লে থাকা কালীন আমা‌কে সব ব‌লে‌ছে। কিন্তু রিয়াতের রিপা‌রো‌ধে আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু আর না।

এবার লিজার মা মুখ খুল‌লেন?

লিজার মাঃ কী বল‌ছিস লিজা? আমি কেন এমনটা কর‌বো?

লিজাঃ সে প্রশ্ন‌তো আমার ম‌নেও মা? কেন?

লিজার মাঃ রিয়াত মিথ্যা বল‌ছে।

লিজাঃ আর লু‌কি‌য়ে লাভ নেই মা। আমি সব জে‌নে গি‌য়ে‌ছি। তোমা‌কে মা বল‌তেও নি‌জের লজ্জা হয়। মা সে তো সন্তা‌নের জন্য নি‌জের জীবন পর্যন্ত দি‌য়ে দেয়। কিন্তু তু‌মি মা হ‌য়ে নি‌জের সন্তা‌নের জীবন নষ্ট কর‌তে চাইছো? কেন? ব‌লো মা?

লিজার বাবা এতক্ষণ চুপ ছি‌লো। কিন্তু এখন আর চুপ থাক‌তে পার‌লে না। তি‌নি বল‌লেন,

লিজার বাব‌াঃ ও তোর নি‌জের মা না!

কথাটা শু‌নে সবাই অনেক অবাক হ‌লো।

লিজাঃ কী? (অনেক অবাক হ‌য়ে)

লিজার বাবাঃ হ্যাঁ। তোর জ‌ন্মের পর তোর মা মারা যায়। আর তারপর আমি ওকে বি‌য়ে ক‌রি। আমি তো‌কে তোর মা‌য়ের কথা জানাই নি কারণ আমি চাইনি তুই ওকে সৎ মা ভা‌বিস। আর ও যে এমন কর‌বে তা আমিও ভাব‌তে পার‌ছি না। আমা‌কে ক্ষমা ক‌রে দে মা!

লিজাঃ না বাবা তু‌মি কোন ভুল ক‌রো‌নি। কিন্তু মা তোমা‌কে তো আমি ছোট বেলা থে‌কে মা জে‌নে‌ছি মে‌নে‌ছি তোমার ভা‌লোবাসা পে‌য়ে‌ছি। কিন্তু কী এমন হ‌লো যে তু‌মি আমা‌র সা‌থে এমনটা কর‌লে?

লিজার মাঃ কারণ আমি তো‌কে ঘৃণা ক‌রি প্রচন্ড ঘৃণা।

লিজাঃ কেন মা?

লিজার মাঃ খবরদার আমা‌কে একদম মা ডাক‌বি না। তোর কার‌ণে আমি আজ মা হওয়ার সুখ থে‌কে ব‌ঞ্চিত।

লিজাঃ কী বল‌ছো এসব মা? আমি কী ক‌রে‌ছি?

লিজার মাঃ বি‌য়ের পর তো‌কে আমি নি‌জের মেয়ের মতই দেখতাম, ভা‌লোবাসতাম। কিন্তু তোর যখন তিন বছর বয়স তখন আমি পাঁচ মা‌সের প্রেগ‌নেন্ট। তখন তুই খেল‌তে গি‌য়ে ম্যান হো‌লের পা‌শে চ‌লে যাস।

তখন দৌ‌ড়ে তো‌কে বাঁচা‌তে গি‌য়ে আমি প‌ড়ে যাই। আমার বাচ্চাটও নষ্ট হ‌য়ে যায়। আর সা‌থে সা‌থে আমি মা হবার ক্ষমতাও হারাই।

তখন থে‌কেই ভে‌বে নি‌য়ে‌ছি তুই আমাকে ঠিক যে প‌রিমাণ কষ্ট দি‌য়ে‌ছিস, তার তিনগুন তো‌কে আমি ফি‌রি‌য়ে দি‌বো। তো‌কে আমি একবা‌রে মার‌তে পারতাম। কিন্তু তো‌কে আমি রোজ রোজ কষ্ট পে‌য়ে তি‌লে তি‌লে মারতে চে‌য়ে‌ছিলাম।

আর তার সু‌যোগটা তুই রিয়াত সামান্য একটা ভুল ক‌রে দি‌য়ে দি‌লি। ভে‌বে‌ছিলাম রিয়াত হয়‌তো তো‌কে কা‌ছে পাবার পর ছে‌ড়ে দিবে কিন্তু ও তো তো‌কে পাগ‌লের মত ভা‌লোবা‌সে। তাই আমি রিয়াত‌কে অপহরণ করাই।

এলাকায় তোর প্রেগ‌নেন্সির খবর আমিই র‌টি‌য়ে‌ছিলাম। যা‌তে সবাই তো‌কে নষ্টা ব‌লে।

আমি তোর বাচ্চাটা‌কে কখ‌নো মার‌তে চাইনি। সবসময় চে‌য়ে‌ছি বাচ্চাটা পৃ‌থিবী‌তে আসুক আর সবাই তা‌কে অবৈধ বলুক। অবৈধ!

যখন লোকজন তো‌কে নষ্টা আর তোর বাচ্চা‌কে অবৈধ ব‌লে তখন আমার খুব শা‌ন্তি লা‌গে। বিশ্বাস কর ম‌নে হয় ২২ বছর অপেক্ষার ফল পা‌চ্ছি।

প্রথ‌মে রিয়াত‌কে মার‌তে চাই‌নি প‌রে ভাবলাম ওকে মে‌রে ফেল‌লে সারা জীবন তো‌কে অবৈধ নামক বোঝা ব‌য়ে বেড়া‌তে হবে। আর আমি এটাই চে‌য়ে ছিলাম।

ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ

লিজা ওর মা‌য়ের কথা শু‌নে যে‌নো স্তব্ধ হ‌য়ে রইল। বলার মত শব্দ পা‌চ্ছে না। ‌কী বা বলার থা‌কে তখন, যখন সব থে‌কে কা‌ছের মানুষ, নি‌জের মা ধোকা দেয়। তখন কথা বলার রিপাভু‌তি গু‌লো ভোতা হ‌য়ে যায়।

অফিসার লিজার মা‌কে এ্যারেস্ট কর‌তে চাইলে রিয়াত বাঁধা দেয়।

রিয়াতঃ অফিসার ওনার প্র‌তি আমার কোন অভি‌যোগ নেই।

সবাই অবাক দৃ‌ষ্টি‌তে রিয়াতের দি‌কে তাকা‌লো।

রিয়াত সবাইকে বলল,

রিয়াতঃ হ্যাঁ আমি জা‌নি ওনি অন্যায়‌ করে‌ছে। কিন্তু তবুও ওনি লিজার মা। তাই ওনার উপর আমার কোন রাগ নাই।

লিজার বাবাঃ কিন্তু আমার আছে! তু‌মি হয়‌তো ওকে মাফ কর‌তে পা‌রো কিন্তু আমি না। কারণ আমি আমার মে‌য়ে‌কে এতগু‌লো দিন অসহ্য যন্ত্রনার মধ্য দি‌য়ে কাটা‌তে দে‌খে‌ছি। তা তোমরা ভুল‌লেও আমি ভুল‌বো না।

লিজাঃ কিন্ত‌ু বাবা?

লিজার বাবাঃ কোন কিন্তু নাই। আজ আমি তোর কোন কথা শুন‌বো না। ওকে আমি তোর জীব‌নে ভা‌লোবাসার পরশ দিতে এনে‌ছিলাম। কিন্তু ও তো তোর জীবনটা‌কে বি‌ষের থে‌কে বিষময় ক‌রে দি‌য়ে‌ছে।

অফিসার ওকে নি‌য়ে যে‌তে পা‌রেন।

পু‌লিশ লিজার মা‌কে নি‌য়ে চ‌লে গে‌লেন। সারা দিন সব‌াই প্রচন্ড অস্ব‌স্তির ম‌ধ্যে ছি‌লো। সবাই ভাব‌ছে এটা হয়‌তো কোন দুঃস্বপ্ন। যেটা ঘুম ভাঙার সা‌থে সা‌থে কেটে যা‌বে। কিন্তু আফসুস তা হবার নয়!

রা‌তে লিজা জানালা দি‌য়ে বাই‌রের দি‌কে তা‌কি‌য়ে ছি‌লো। রিয়াত রু‌মে ঢুকে লিজাকে পিছন থে‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,

রিয়াতঃ হেই বিউ‌টিফুল। সব ভু‌লে যাও। চ‌লো নতুন ক‌রে শুরু ক‌রি আবার!

লিজাঃ সব পিছ‌নে ফে‌লে নতুন ক‌রে শুরু কর‌তে পার‌বো কী?

রিয়াতঃ পার‌বে না কেন? আমি আছি না তোমার কা‌ছে, তোমার পা‌শে, তোমার হৃদ‌য়ে, তোমার রিপাভু‌তি‌তে, তোমার সারাটা জু‌ড়ে। যেমনটা তু‌মি আছো আমার সারাটা জু‌ড়ে! তাহ‌লে কে‌নো পার‌বো না?

লিজাঃ হুম ঠিক বল‌ছো। তু‌মি থাক‌লে সব পার‌বো।

রিয়াতঃ লিজা!

লিজাঃ হুমমম

রিয়াতঃ আই লাভ ইউ লাইক এ ম্যাড।

লিজাঃ আই নো। এখন ভা‌লোবাসা অনেক হই‌ছে যাও ঘুমাও। রাত কম হয়‌নি। আমি রিপার কা‌ছে যা‌চ্ছি।

রিয়াতঃ রিপার কা‌ছে কেন?

লিজাঃ ঘুমা‌তে!

রিয়াতঃ কেন? আমার খ‌া‌টে কি জায়গা নাই?

লিজাঃ বেহায়া! বেশরম!

রিয়াতঃ যাহ এমন কী বললাম?

লিজাঃ কী ব‌লে‌ছি‌লে ম‌নে নাই? যত‌দিন না পা‌রিবা‌রিক ভা‌বে বি‌য়ে হ‌বে তত‌দিন একদম ভুল কর‌বে না।

রিয়াতঃ তো আমি কি ভুল কর‌তে ব‌লে‌ছি না‌কি? (দুষ্ট‌মি ক‌রে)

লিজাঃ একদম অসভ্যর মত তাকা‌বে না। যাও ঘুমাও।

রিয়াতঃ উত্তরটা‌ তো দি‌য়ে যাও।

লিজাঃ আই ডোন্ট লাভ ইউ।

রিয়াতঃ বাট আই লাভ ইউ টু বিউটিফুল।

প‌রের দিন সকা‌লে লিজার বাবা বল‌ছে আজ লিজা‌কে তার বা‌ড়ি নি‌য়ে যা‌বে! তা শুনে রিয়াত বলল,

রিয়াতঃ কেন, আমা‌দের বা‌ড়ি‌তে কী জায়গা নেই?

একথা শুনে রিয়াতের বাবাও বলে উঠল,

রিয়াতের বাবাঃ ওরে গাঁধা। বা‌ড়ি না নি‌লে বৌমাকে একবা‌রে ঘ‌রে নি‌য়ে আস‌বি কী ক‌রে?

রিয়াতঃ ওওহহ হ্যাঁ। তা ক‌বে নি‌য়ে আস‌বো?

রিয়াতের বাবাঃ বেহায়া! বাবা শ্বশুর বসা তা‌দের সাম‌নে তো একট‌ু লজ্জা পা। আগামী পরশু শুক্রবার। আমি চাই আমার না‌তি পৃ‌থিবী‌তে আসার আগে ওর মাথা থে‌কে অবৈধ নামক কলঙ্কটা মু‌ছে যাক। ধর্ম ম‌তে তোদের বি‌য়ে হ‌য়েই গি‌য়ে‌ছে আমরা শুধু একটু দোয়া কালাম প‌ড়ে লিজাকে বরাব‌রের মত নি‌য়ে আসবো।

রিয়াতঃ হ্যাঁ বাবা। একদম ঠিক বল‌ছো। তাড়াতা‌ড়ি ক‌রো।

অবৈধ প্রেমের বৈধতা

তারপর মোটামু‌টি ঘ‌রোয়া আনুষ্ঠা‌নিকভা‌বে লিজা‌কে রিয়াতের বা‌ড়ি আনা হ‌লো। লিজা অসুস্থ ব‌লে বে‌শি জাকজমক করে‌ননি তারা।

রিপা লিজা‌কে রিয়াতের রু‌মে দি‌য়ে আস‌লো। রুমটা খুব সুন্দর ভা‌বে সাজা‌নো। রিয়াত লিজাকে দে‌খে বলল,

রিয়াতঃ তোমা‌কে খুব সুন্দর লাগ‌ছে বিউ‌টিফুল!

লিজা লজ্জা পে‌য়ে মাথা নিচু ক‌রে ফেল‌লো। তা দে‌খে রিয়াত বলল,

রিয়াতঃ লজ্জা পে‌লে কাজ হ‌বে না। আমার উত্তরটা চাই।

লিজাঃ দি‌বো না!

রিয়াতঃ তাহ‌লে কিন্তু আবার চ‌লে যা‌বো।

লিজা রিয়াতের মুখটা চে‌পে ধ‌রে বলল,

লিজাঃ ঠ্যাং ভে‌ঙে খোড়া ক‌রে ঘরে কাছে রে‌খে দি‌বো। তারপর রিয়াত‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল, আই লাভ ইউ টু।

সারারাত গল্প কথায়, খুনসু‌টি অভিমা‌নে কে‌টে গে‌লো দুজনার। এত দিন পর দুজন‌ার ভা‌লোবাসা স‌ত্যিকা‌রের পূর্ণতা পে‌লো। সমা‌জের কা‌ছে বৈধতা পে‌লো।

পর‌শিষ্ট্যঃ তার বেশ ক‌য়েক‌দিন পর ওদের কোল জু‌ড়ে আস‌লো ছোট্ট‌ একটা পরী আস‌লো। পরীটার নাম দি‌লো জ্যোৎস্না। কারণ পরীটা যে দুজনার জীব‌নের অন্ধকার কা‌টি‌য়ে জ্যোৎস্নার সকাল নি‌য়ে এসে। ত‌বে পরীটা‌কে এখন কেউ অবৈধ বল‌তে পার‌বে না। কারণ পরীটা রিয়াত আর লিজার ভা‌লোবাসাকে বৈধতার ঢো‌রে বেঁ‌ধে ভা‌লোবাসায় মু‌ড়ি‌য়ে দি‌য়ে‌ছে।

~সমাপ্ত~

আরো পড়ুন – মিষ্টি প্রেমের গল্প – পর্ব ১

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *