আপু যখন বউ (১ম) – Valobashar Romantic Golpo Bangla

আপু যখন বউ (১ম) – Valobashar romantic golpo bangla: জান্নাত আমার হাতটা ওর হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে! উপায় না পেয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম! অবশেষে জান্নাত আমাকে কিস করে বসলো।


এখানে পড়ুন – “Romantic premer golpo bangla.”

পর্ব ১

আমিঃ আমাকে বিয়ে করেছেন কেনো?
জান্নাতঃ মানুষ বিয়ে করে কেনো? সবাই যে কারণে করে আমি সেই কারণেই করেছি?
আমিঃ আপনি কি মানুষ?

জান্নাতঃ ঐ তুই কি বলতে চাইতেছত?
আমিঃ না মানে আপনাকে দেখলে আমার পেত্নীর কথা মনে পড়ে?
জান্নাতঃ দেখ এখন রাগাবী না! নাহলে মেরে তোর দাত লাল করে দিবো? (রাগে লাল হয়ে)
আমিঃ এহহহ! আমার জীবনটা তেজপাতা বানাতে যে আসছেন সেটা আমি খুব ভালো করে জানি? ভার্সিটির প্রতিশোধ নিতে আমাকে বিয়ে করেছেন তাই না!
জান্নাতঃ হুম তো! এখন বেশি কথা না বলে এদিকে আয় বাসর রাত করতে হবে?
আমিঃ মানে? (অবাক হয়ে বললাম)

জান্নাতঃ মানে বুঝাচ্ছি?
জান্নাত এক পা- এক পা করে আমার দিকে আসতে লাগলো! আমি মতলব ভালো না দেখে পিছাতে লাগলাম! কিন্তু কপালে বেশিক্ষণ সায় না দেওয়াই!
অল্পকিছু যাওয়ার পরেই পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলো! এদিকে জান্নাত আমার একদম কাছাকাছি চলে আসলো! আমি হয়তো জান্নাতের হার্টবিট শুনতে পাচ্ছি! দুজনের মাঝে একফোঁটাও গেপ নেই!

ভাবতেছি জান্নাত কি করতে চাইতেছে? এমন সময় খেয়াল করলাম জান্নাত ওর ঠোট দুটো আমার দিকে এগিয়ে আনতেছে! ” বুঝে গেলাম জান্নাত কিস করবে তাই হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরার জন্য হাতটা উপরের দিকে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারলাম
জান্নাত আমার হাতটা ওর হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে! উপায় না পেয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম! অবশেষে জান্নাত আমাকে কিস করে বসলো!” কিস করলো কম কামড়ে ঠোটের ভিতরের অবস্থা বারোটা বাজিয়ে দিলো!
আমি চিৎকারও দিতে পারতেছি না! অবশেষে ছাড়লো আমাকে? ঠোটগুলো কেটে রক্ত পড়তেছে! তাই চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম!
জান্নাতঃ বাবু আরেকটু আদর করি?

আমি মাথা নেড়ে শুধু না করলাম!
জান্নাতঃ ওকে তাহলে এখন তুমি ঘুমাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসি? (বলেই মারিয়া চলে গেলো ফ্রেশ হতে)
আমি গিয়ে আয়নায় ঠোটগুলো দেখতে লাগলাম!
আপনারা ভাবতেছেন আমি ভালো একটা ছেলে যে বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতেছি! আসলে না শুধু আম্মুর কথায় আজকের রাতটা ওকে মাফ করে দিলাম!
জান্নাতের সাথে আমার সাপ – নেউল এর সম্পর্ক? কারণটা জানতে হলে পিছনে যেতে হবে! চলুন পরিচয়টা দিয়ে নেই তারপর পিছন থেকে শুরু করবো!
আমার আসল পরিচরঃ নাম আনোয়ার হুসাইন, আমার বাসা.. মেহেরপুর জেলা, মুজিব নগর থানা, খুলনা বিভাগ, আমার পরিবারে চার জন সদস্য.. আমি-আপু-আব্বু-আম্মু-.. আমরা আল্লাহর রহমানে খুব হেপি ফ্যামিলি!

এবার গল্পের পরিচয়….

আমার নাম আনোয়ার হুসাইন! পরিবারে সদস্য তিনজন! আমি – বড় ভাইয়া- আম্মু! মানে বুঝতেই পারতেছেন আব্বু ছোট বেলায় মারা গেছেন(শুধু গল্পতে)! আব্বুর ছোট একটা বিজনেস ছিলো যেটা এখন ভাইয়া সামলায়! আর আমি এখনো পড়াশুনা করি!
আমরা সবাই গ্রামে থাকি! কিন্তু এখন সবাইকে ছেড়ে ঢাকায় যেতে হবে! আমি সারাদিন আম্মুর কাছে শুয়ে রইলাম!
কলেজ লাইফ শেষ করে আমি কাল থেকে ভার্সিটিতে যাবো! মনে আনন্দটাই অন্যরকম! কিন্তু ভয় একটাই রেগিং নিয়ে একটু চিন্তা আছে! তাও মনে অনেক আনন্দ!
রাতে চলে আসলাম সপ্নের শহর ঢাকায়! এখানে আমি আর আমারই একটা বন্ধু! দুজনে এসেছি গ্রাম থেকে! তাই দুজনে আলাদা একটা বাসা নিয়ে নিলাম!
পরেরদিন সকালে রেডি হয়ে চলে গেলাম ভার্সিটিতে! গেইটের সামনে দাড়িয়ে ভাবতে লাগলাম কি হবে ভিতরে গেলে! রেগিং এ কি করতে বলবে! এসব ভাবতে-ভাবতে ভিতরে গেলাম!
একটু যেতেই একটা বড় ভাই ডাক দিলো! ভদ্রছেলের মতো ওনার সামনে গেলাম!
বড় ভাইঃ নতুন এসেছিস!
আমিঃ জ্বী ভাইয়া!
বড় ভাইঃ আমার সাথে আয় তো?
আমিঃ কেনো ভাইয়া?

বড় ভাইঃ তোকে মেহেদী ভাইয়া ডেকেছে?
আমিঃ মেহেদী ভাই কে? আর আমাকে চিনে কিভাবে?
বড় ভাইঃ ঐ বেশি কথা বলছ কেনো আসতে বলছি আয়! (রেগে গিয়ে বললো)
কোনো কথা না বলে ওনার সাথে গেলাম কেনটিনে! গিয়ে দেখলাম কিছু বড় ভাইয়া বসে আছে! বুঝতে পারলাম আজকে কপালে খারাপ কিছু আছে!
বড় ভাইটা বললো একজনকেঃ কিরে মেহেদী কই?
একজন উত্তর দিলোঃ ওয়াশরুমে গেছে!
আমি দাড়িয়ে ছিলাম তখনই কেউ একজন আসলো! ওনাকে আমি চিনি এমন লাগতেছে! এমন সময় মেহেদী ভাইয়া বলে উঠে?
মেহেদী ভাইঃ তুমি হুসাইন না?

আমিঃ হুম ভাইয়া?
মেহেদী ভাইঃ আমাকে চিনতে পেরেছিস আমি মেহেদী তুই যখন ক্লাস সেভেনে পড়তি আমি তখন ক্লাস টেনে পড়তাম! তোকে আমার এখনো মনে আছে?
আমিঃ তুমি নীলাকে ভালোবাসতে তাই না?
মেহেদী ভাইঃ তোর নীলাকেও মনে আছে?
আমিঃ হুম! এতক্ষণেও চিনছি তোমাকে?
আরেকজন বড় ভাই বললোঃ কিরে তুই চিনিস ওকে! (মেহেদী ভাইকে বলে উঠলো)
মেহেদী ভাইঃ হুম!

আরেকজন বড় ভাল বললোঃ ওহহ! ওকে হুসাইন তুমি তাহলে যাও!
মেহেদী ভাইঃ ঐ কই যাবে ওও! আরে ওকে আমাদের এখন প্রয়োজন! মেয়েদের সাথে আমাদের এবার শত্রুতামী জমবে মামা! অনেক জ্বালীয়েছে আমাদের! এখন আমরা পেয়ে গেছি আমাদের ডিফেন্ডার!
আমিঃ ভাইয়া আপনি কি বলতেছেন? (কিছু না বুঝতে পেরে জিঙ্গাস করলাম)
মেহেদী ভাইঃ তুই এখানে এসে বস! আমি তোকে সব বুঝিয়ে বলতেছি? আর এত ভালো মানুষ হওয়ার ভাব ধরতে হবে না! আমি জানি তুই কেমন!
তারপর একটা শান্তির নিশ্বাস ফেলে আমি ওনাদের সাথে বসলাম!
তারপর ওনারা ভার্সিটির সব আগের কথা বলতে লাগলো! আর আমি শুনে এতটা বুঝলাম যে ভার্সিটিতে মেয়েদের রাজত্ব চলে! যার কারণে ছেলেদের একটুও দাম নেই! ছেলেদের আর মেয়েদের মাঝে তুমুল ঝগড়া তাই আমাকেও ওনাদের সাথে নিয়ে নিলো!

তারপর মেহেদী ভাই সবার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো! আর বললো আজ থেকে নাকি আমরা সবাই বন্ধু! যাক অবশেষে শান্তি মিললো আমার!
ভার্সিটির প্রথম দিনের এতটা পাওয়ার পেয়ে যাবো সেটা ভাবতেও পারি নি! যাক ক্লাস শেষ করে ঐদিনের মতো বাসায় চলে আসলাম!
পরেরদিন ভার্সিটিতে যেতেই একটা আপু ডাক দিলো! তাকিয়ে টাসকি খেয়ে গেলাম! দেখতে পুরোই পরি! মেয়েটা নীল ড্রেস পড়ে এসেছে মানে আমার প্রিয় রং তাই মেয়েটাকে আরো সুন্দর লাগতেছে! আমি ভাবতে লাগলাম!
তাকে খোদা হয়তো নিজ হাতে বানিয়েছে! আমি তার দিকে টাসকি খেয়ে তাকিয়ে আছি! তখনই ওনি আবার ডাক দিলো!
আপুটাঃ কিরে পিচ্চি এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিস?
আমিঃ না কিছু না! কিছু বলবেন?
আপুঃ হুম এদিকে আয় তো পিচ্চি!

আমিঃ আপনি আমার থেকে মাত্র 3 year এর জুনিয়ার! তাহলে আপনি আমাকে পিচ্চি বলেন কিভাবে?
আপুঃ ওকে! তা কলেজে কি নতুন নাকি?
আমিঃ হুম কেনো?
আপুঃ তুই অনেক কিউট তাই তোকে একটু রেগিং দিবো?
কিছু না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম! তখনই মেহেদী ভাইয়া আসলো!
মেহেদী ভাইঃ জান্নাত তুই ওকে ধরেছিস কেনো?
বুঝতে পারলাম মেয়েটার নাম জান্নাত! তবে মনে পরি নামে সেইভ হয়ে গেলো!

জান্নাতঃ সেটা কি তোকে বলতে হবে?
মেহেদী ভাইঃ হুম! ওও আমার ছোট ভাই! তাই ওকে ধরলে আমি তোকে ছাড়বো না!
আমি ওদেরকে দিকে খেয়াল না করে পাশের একটা আপুকে পটাতে শুরু করলাম! দেখতে যেহেতু একটু কিউট তাই পাশের আপুটাও শরম পেতে লাগলো!
জান্নাত আপুর নজর আমার উপর পড়তেই একটা ধমক দিলো!
জান্নাতঃ ঐ তোর সাহস কি করে হয় আমার বান্ধবীকে পটানোর?

আমি চুপ হয়ে গেলাম! তারপর আপুর দিকে রাগি চোখে তাকালাম!
আমিঃ আপু অনেক তো ভার্সিটিতে রাজত্ব করেছো! এবার থেকে আর পারবে না! সো ভালো হয়ে যাও! বাই?
(বলেই সবাইকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম)
ঐদিন ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম! ” তারপরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে সবাইকে খুজতে লাগলাম!
হঠ্যাৎ……..!

আরো পড়ুন – প্রিয়তম – Romantic premer golpo in bengali


এই পর্বে থাকছে – “Romantic golpo kotha.”

পর্ব ২

হঠ্যাৎ কেউ একজন আমাকে টান দিয়ে একটা ক্লাস রুমে ডুকিয়ে ফেলে তারপর দরজা লাগিয়ে দেয়!
টান সামলে চারদিকে তাকিয়ে হালকা অবাক হয়ে গেলাম! ক্লাসটায় পুরোটায় মেয়ে ভর্তি!
আমিঃ আমাকে এখানে আনা হয়েছে কেনো?
জান্নাতঃ তুই কালকে কি বলেছিলি?
আমিঃ কখন? (ভাব নিয়ে)
জান্নাতঃ যে আমাদের রাজত্ব তুই শেষ করে দিবি! তোর বাসা কোথায় রে?
আমিঃ গ্রামে?

সবাই আমার কথা শুনে হেসে দিলো! আমি কিছু না বলে শুধু সবাইকে দেখতে লাগলাম!
জান্নাতঃ গ্রামের ছেলে হয়ে আমাদের রাজত্ব কেড়ে নিবি?
আমিঃ কিছুদিন যেতে দিন সব টের পেয়ে যাবেন?
জান্নাতঃ গ্রামে থাকতে তো মনে হয় ভদ্র ছিলি এতো কিউট দেখতে! তা শহরে এসে কি রক্ত গরম হয়ে গেছে নাকি?
আমিঃ সিংহ সব জায়গায় সিংহ থাকে! বিড়াল সে কখনোই হয় না!
জান্নাতঃ রাখ আমি তোর গ্রামে খোজ নিয়ে দেখতেছি তুই কেমন সিংহ ছিলি?
আমিঃ গ্রামে খোজ নিতে যাইয়েন না!
জান্নাতঁঃ কেনো? তোর সব কিছু ফাস হয়ে যাবে তাই?

আমিঃ নাহ! খোজ নেওয়ার পর থেকে আমাকে ভয় পাবেন তাই? (ভিলেনের লুক দিয়ে বললাম)
জান্নাতঃ ওহহ তাই নাকি! !
আমিঃ হুম! আরে আপনাদের এতটুকু আক্কেল থাকা তো দরকার যে! ছেলেটা একদিনে যেহেতু ফাষ্ট ইয়ারের হয়ে লাষ্ট ইয়ারের ছেলেদের বস হয়ে গেছে মানে? / কিছু তো আছে আমার ওর মাঝে! বেআক্কেল এর দল সব! সরেন আমি বাহি যাবো!
কথাটা বলার পর সবার মুখে ভয় দেখতে পেলাম আমি! তখন একটু ভাব নিয়ে আমি দরজার কাছে চলে আসলাম! দরজাটা খুলার আগে আবার পিছনে ফিরে বললাম!
আমিঃ বাহিরে এই ঝুলে থাকা মুখ নিয়ে যাবেন না! তাহলে সবাই বুঝে যাবে যে ফাষ্ট ইয়ারের ছেলে আপনাদের গেম বাজিয়ে দিয়েছে সো স্মাইল! (বলেই বাহিরে বেড়িয়ে আসলাম)
বাহিরে বেড়িয়ে দেখি মেহেদী ভাই সহ সবাই দাড়িয়ে আছে! আর আমি বেড়ুতেই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো!
আমিঃ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
মেহেদী ভাইঃ তোকে কি মেরেছে ওরা?

আমিঃ মারবে তাও আমাকে? বেড় হইলে ওদের মুখটা দেইখো শুকাইয়া কাঠ হয়ে থাকবে?
মেহেদী ভাইঃ তুই প্রথম যে কি না টর্চার রুম থেকে মার না খেয়ে বেড়িয়েছিস!
আমিঃ ওহহ! ঐটা টর্চার রুম নাকি? ওদের যা ভয় দেখিয়েছি ওরা সবাই এখন আমার সাথে কথা বললেও হিসাব করে বলবে?
মেহেদী ভাইঃ তাই নাকি?
আমিঃ হুম!
তারপর জান্নাত আপুরা বেড় হলেন! ওনাদের শুকনো মুখটা দেখে মেহেদী ভাই সহ বাকি সবাই হাসতে লাগলো!
মেহেদী ভাইঃ ঐ জান্নাত শুন! এবার সিংহ এনেছি আমাদের দলে দেখবো কিভাবে তুই আর পাওয়ার ঝাড়িস আমাদের সামনে? (মেহেদী ভাইয়া জুড়ে ডাক দিয়ে বললো)
জান্নাত আপু কিছু না বলে চলে গেলো! তারপর ওনাদের নিয়ে বসলাম একটা জায়গায়!
আমিঃ আচ্ছা সারা ভার্সিটির মেয়েদের লিডার কয়জন?
মেহেদী ভাইঃ ৫ জন?
আমিঃ এই পাচজনের লিডার কি জান্নাত নাকি?
আমিঃ হুম!

আমিঃ ওকে! প্রথমে এটা বলো জান্নাতের কোনো ক্রাশ আছে ভার্সিটিতে বা কাউকে ভালোবাসেও?
মেহেদী ভাইঃ না কেনো?
আমিঃ আর বাকি চারজনের কোনো ক্রাশ বা ভালোবাসার মানুষ বা বয়ফ্রেন্ড আছে?
মেহেদী ভাইঃ হুম আছে! কিন্তু কেনো বলতো?
আমিঃ শুনো মেয়েরা পৃথিবীতে কারো কথা না শুনলেও তার ক্রাশ এর কথায় উঠ বস করে! কারণ মেয়েরা যাকে পছন্দ করে তাকে সবসময় মন থেকে পছন্দ করে! আর তাই তাদের সেই কমজুড়ি জায়গাটার ফায়দা তুলতে হবে?
আমার কথা শুনে মেহেদী ভাই সহ সবাই হা করে তাকিয়ে আছে? আমি ওনাদের বললাম!
আমিঃ কি হলো?
মেহেদী ভাইঃ তুই সত্যিই হারামী?
আমিঃ ধন্যবাদ! এখন ওদের ক্রাশগুলোকে আমাদের টিমের একটা ভালো পদ দিয়ে দাও! তাহলে দেখবে জান্নাত ছাড়া বাকি চারজন আমাদের টিমের কথায় চলবে!
মেহেদী ভাইঃ ওকে?
আমিঃ আর জান্নাত কে আমি দেখে নিবো? কিন্তু তার আগে জান্নাত কে বা ওর সম্পর্কে কিছু জানতে হবে আমাকে?
মেহেদী ভাইঃ শুন তাহলে? জান্নাত হলো ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান! অনেক বড়লোক ওর বাবা! আর ভার্সিটির সভাপতি ওর বাবা! আর ওকে দেখতে যতটা সুন্দরি ততটাই অহংকারী আর কোনো ছেলেকেই সে ভাউ দেয় না!

আমিঃ ওকে! বাকিটা আমি দেখে নিবো? এখন যা বললাম তাই করো!
মেহেদী ভাইঃ ওকে! লাষ্ট ইয়ারের নির্বাচন কিন্তু ১২ দিন পরে! সো যা করার তা তাড়াতড়ি কর!
আমিঃ তুমি যাও তো চিন্তা করো না?
তারপর ক্লাস করে বাসায় চলে গেলাম! এসে ফ্রেশ হয়ে বসে বসে পড়তেছিলাম তখনই কলেজের একটা মেয়ের কল আসলো! কিছু না ভেবে কলটা রিসিভ করলাম!
আমিঃ কিরে সুমি তুই এখন কল দিয়েছিস!
সুমিঃ ভাই আপনি যেই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন সেখান থেকে জান্নাত নামের একটা মেয়ে কল দিয়ে প্রিন্সিপাল এর কাছে আপনার খোজ নিতে?
আমিঃ তো স্যার কি বললো,
সুমিঃ কলেজে যা করেছেন তা সব বলে দিয়েছে? আর বলে দিয়েছে আপনার সাথে যেনো না লাগতে যায়!
আমিঃ ওকে! ভালো থাকিস? (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
পরেরদিন কলেজে যেতেই দেখি জান্নাত আপু সহ সবাই বসে আছে? তাই আমি ওনাদের কাছে গেলাম!

আমিঃ কি ম্যাডাম আমার খোজ নেওয়া শেষ! কি বললো প্রিন্সিপাল!
জান্নাতঃ তুই জানলি কিভাবে?
আমিঃ আপু আমি যেই কলেজে পড়ে এসেছি! ঐ কলেজটায় প্রিন্সিপালের রাজত্ব না! চলতো আমার রাজত্ব! সো আমার কলেজে আমার খোজ নিবেন আর আমিই জানবো না এটা কখনো হয়!
জান্নাতঃ তুই হয়তো জানিস না! এটা গ্রাম না শহর আর এই ভার্সিটির সভাপতি আমার বাবা!
আমিঃ ওহ তাই নাকি! আপনি কি ভয় দেখাচ্ছেন!
জান্নাতঃ নাহহ! সাবধান করে দিচ্ছি! বেশি লাফালাফি করলে ভার্সিটিতে থেকে বেড় করে দিবো?

জান্নাতের কথাটা শুনে আমি জুড়ে হেসে দিলাম! ওরা সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো!
জান্নাতঃ কি হলো হাসছিস কেনো?
আমিঃ আপু আমাকে চাইলেই বেড় করে দিতে পারো! কিন্তু পড়ে ভার্সিটিতে মুখ দেখাবে কিভাবে!
জান্নাতঃ মানে?
আমিঃ আমাকে বেড় করে দিলে সবাই বলবে একটা ফাষ্ট ইয়ারের ছেলের ভয়ে,তোমাদের সবার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে! তাই ওকে বেড় করে দিয়েছো! তারপর তোমাদের দেখলে শুধু ছেলেরাই না মেয়েরাও হাসবে! আর থু থু দিবে তোমাদের?
জান্নাতঃ ঐ ঐ ঐ! (রাগে গজগজ করতে লাগলো)
আমিঃ তুমি রাগলে তোমাকে একদম পরির মতো লাগে! তা কি তুমি জানো? (বলেই পিছন ফিরে চলে আসলাম)

তখনই জান্নাত আপু পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো!
জান্নাতঃ তোকে ভার্সিটিতে থেকে বেড় করবো না! তোকে ভার্সিটিতে রেখেই শায়েস্তা করবো?
আমিঃ ওকে? (বলেই চলে আসলাম)
এসেই মেহেদী ভাইয়াদের কাছে গিয়ে বসলাম!

মেহেদী ভাইঃ কিরে এখন কি করবো?
আমিঃ এখন কাজ হলো ওরা কি প্লেন করতেছে তা আমাদের জানতে হবে?
মেহেদী ভাইঃ কিভাবে?
আমিঃ ওদের টিমে বেজাল মিশিয়ে দিতে হবে!
মেহেদীঃ কিভাবে?
আমিঃ আমাদের দলের কয়েকটা মেয়েকে কায়দা করে ওদের টিমে ডুকিয়ে দাও! ব্যস তাহলেই হবে!

মেহেদী ভাইঃ তুই রাজনিতী করলে তো দেশটারে কাপিয়ে রেখে দিবি?
আমিঃ এই জন্যই তো রাজনিতীতে যাই না
মেহেদী ভাইঃ রাজনিতি করবি?
আমিঃ থুর ফাউল কথা বইলো না তো?
মেহেদী ভাইঃ ওকে?
আমিঃ তোমরা থাকো আমি যাই! (বলেই বাসায় চলে আসলাম)
এভাবে ৪-৫ দিন চলে গেলো! জান্নাত আমার পিছনে লেগেই আছে? স্টুডেন্ট লিডার নির্বাচনের আর মাত্র ৪ দিন বাকি?
ওনির্বাচনে ছেলেরা পাশ হবে কানা হয়ে! কারণ জান্নাতের টিম ছাড়া বাকি সবাই এখন আমাদের টিমে চলে আসছে! তাই জান্নাত রেগে আগুন হয়ে আছে!
আমি জানি জান্নাত আমার ক্ষতি করতে চায় কিন্তু সেটা ওরা পারবে না! কারণ আমার কোনো কমজুড় জায়গা নেই!
সকালে আমার একটা ফোন আসলো? ভার্সিটির একটা ছেলে ফোন দিয়েছে? এত সকালে ফোন দিয়েছে কেনো! এটা জানার জন্য ফোনটা রিসিভ করলাম!
আমিঃ কিরে এখন ফোন দিয়েছিস কেনো?
ছেলেটাঃ ভাই আমাদের একটা টিম মেম্বারকে জান্নাত মারতেছে তুমি আসো তাড়াতাড়ি!

আমিঃ কোথায় মারতেছে!
ছেলেটাঃ টর্চার রুমে! তুমি তাড়াতড়ি চলে আসো!
আমিঃ ওকে আমি এখনি আসতেছি? (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
ভাবতে লাগলাম! সমস্যা হলে তো মেহেদী ভাই ফোন দিবে এই ছেলেটা ফোন দিলো কেনো! তাই মেহেদী ভাইকে ফোন দিলাম!
আমিঃ ভাই ভার্সিটিতে কোনো সমস্যা হইছে?
মেহেদী ভাইঃ না কেনো?

আমিঃ আরে একটা ছেলে! (সব খুলে বললাম)
মেহেদী ভাইছ- হুসাইন এটা জান্নাতের চাল তুই ভুলেও ওর কথা শুনিস না! তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে বলে দিলাম!
আমিঃ ভার্সিটিতে তে যাবো! সেটা হাজারো সমস্যা হোক! এখন তুমি একটা কাজ করো!
মেহেদী ভাইঃ কি কাজ?
আমিঃ (****) এটা করতে পারবে?

মেহেদী ভাইঃ পারবো?
আমিঃ তাহলে আমি ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে এটা রেডি করে ফেলো! আমি ডুকার আগে কল দিবো ওকে ভালো থেকো! (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
তারপর চলতে লাগলাম ভার্সিটিতে! ভিতরে যাওয়ার আগে মেহেদী ভাইকে কল দিয়ে জানতে পারলাম সবকিছু ওকে!
তাই কোনোকিছু চিন্তা না করেই ভিতরে গেলাম! গিয়ে দেখি ছেলেটা দাড়িয়ে আছে! তাই ওর কাছে গেলাম!

ছেলেটাঃ ভাই ওরা ভিতরে আছে তুমি যাও?
আমিঃ ওকে? (বলেই ভিতরে গেলাম)
ভিতরে গিয়ে আমি হালকা চমকে উঠলাম……..!
দিন বদলায় রাত ১২ টায় দিকে আর মানুষ বদলায় সুযোগ বুঝে!

আরো পড়ুন – মেঘমুখ – ছোট্ট মেয়ের মোবাইল প্রেম


আপনারা পড়ছেন – “Valobashar romantic premer golpo bangla.”

পর্ব ৩

ভাবতে লাগলাম! সমস্যা হলে তো মেহেদী ভাই ফোন দিবে এই ছেলেটা ফোন দিলো কেনো! তাই মেহেদী ভাইকে ফোন দিলাম!
আমিঃ ভাই ভার্সিটিতে কোনো সমস্যা হইছে?
মেহেদী ভাইঃ না কেনো?
আমিঃ আরে একটা ছেলে (সব খুলে বললাম)!
মেহেদী ভাইছ- হুসাইন এটা জান্নাতের চাল তুই ভুলেও ওর কথা শুনিস না! তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে বলে দিলাম!
আমিঃ ভার্সিটিতে তে যাবো! সেটা হাজারো সমস্যা হোক! এখন তুমি একটা কাজ করো!

মেহেদী ভাইঃ কি কাজ?
আমিঃ (**).এটা করতে পারবে?
মেহেদী ভাইঃ পারবো?
আমিঃ তাহলে আমি ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে এটা রেডি করে ফেলো! আমি ডুকার আগে কল দিবো ওকে ভালো থেকো! (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
তারপর চলতে লাগলাম ভার্সিটিতে! ভিতরে যাওয়ার আগে মেহেদী ভাইকে কল দিয়ে জানতে পারলাম সবকিছু ওকে!

তাই কোনোকিছু চিন্তা না করেই ভিতরে গেলাম! গিয়ে দেখি ছেলেটা দাড়িয়ে আছে! তাই ওর কাছে গেলাম!
ছেলেটাঃ ভাই ওরা ভিতরে আছে তুমি যাও?
আমিঃ ওকে? (বলেই ভিতরে গেলাম)
ভিতরে গিয়ে আমি হালকা চমকে উঠলাম……..!

ভিতরে গিয়ে আমি হালকা চমকে উঠলাম! কারণ ভিতরে জান্নাত ছাড়া আর কেউ নেই! বুঝলাম পরিবেশ গরম হবে!
তাই রুমের উপরের এক কোণায় থাকা ছোট্ট জানালায় তাকিয়ে দেখে নিলাম যে মেহেদী ভাই ক্যামেরাটা নিয়ে পৌছেছে কি না!
মেহেদী ভাইয়া ক্যামেরা নিয়ে বসে আছে চুপ করে তাই চিন্তা ছাড়া বুকটা টান দিয়ে দাড়ালাম!
আমিঃ কি হলো এখানে ডাকলেন কেনো?

জান্নাতঃ তোকে আজকে সবাই মেরে ভার্সিটি থেকে বেড় করবে?
আমিঃ কেনো আমি কি করেছি?
জান্নাতঃ তুই কিছুই করিস নি! করবো আমি আর দোষ দিবো তোর তারপর বাকিটা স্টুডেন্টরা দেখে নিবে?
আমিঃ শুনেন আমারে গর্তে ফেলতে গিয়ে আবার নিজে গর্তে পড়ে যাইয়েন না আবার!
জান্নাতঃ ওকে তুই দেখ কে পড়ে গর্তে?

তারপর জান্নাত আপু নিজের জামার কিছু অংশ ছিড়ে ফেললো! তারপর নিজ থেকেই চিৎকার করে কাদতে লাগলো!
কিছুক্ষণ পর কাদো কাদো চেহারা নিয়ে দরজা খুলে বাহিরে এসে পড়লো! আমি এই চান্সে মেহেদী ভাইয়ের কাছ থেকে ভিডিও করা মেবাইলটা নিয়ে নিলাম!
তারপর বাহিরে এসে দেখি হাজারো ছাত্র-ছাত্রী আমার দিকে রাগি দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে!

তাই চুপচাপ কিছু না বলে প্রিন্সিপাল এর রুমের দিকে চলে গেলাম! বুঝতে পেরেছি মেহেদী বাহিরে এসে বলেছে যে আমি তাকে ধর্ষন করার চেষ্টা করেছি বা নানান কিছু!
একঘন্টার মধ্যে সভাপতি সহ সব স্যারেরা এসে গেলো! সভাপতি সাহেব আমার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে আছে!
প্রিন্সিপাল এর রুমের বাহিরে কিছু ছেলে মেয়ে মিলে আমার শাস্তির দাবিতে মিছিল করতেছে! ভিতরে আমি আর মেহেদী ভাই দাড়িয়ে সেগুলো শুনতেছিলাম! তখনই প্রিন্সিপাল স্যার বলে উঠলো!
প্রিন্সপালঃ তুমি কি সেই হুসাইন যে কিনা ফাষ্ট ইয়ারের হয়ে লাষ্ট ইয়ারের ছেলেদের সাথে ঘুড়াফেরা করো।
আমিঃ জ্বী স্যার?

প্রিন্সপালঃ তা তুমি তো খুব ভালো বলেই জানতাম! ২০ দিনে ভার্সিটির সবার কাছে ফেভারিট একজন নেতা হয়ে উঠেছো! তা হঠ্যাৎ করে এমন কাজ করতে গেলো কেনো? তাও আবার আমাদের সভাপতির মেয়ের সাথে?
আমিঃ স্যার মিটিং কি আরো করবেন! নাকি এটা এখানেই শেষ করে দিবো?
জান্নাতের বাবার – মানে!
আমিঃ মানেটা বলতেছি! স্যার আপনার রুমের প্রজেক্টরটা একটু চালু করতে পারি?
প্রিন্সপালঃ কেনো?
আমিঃ আমি কিছু সবাইকে দেখা চাই?
স্যার সবার দিকে তাকিয়ে হ্যা বললো!

তারপর মেহেদী ভাই সব রেডি করলো! তারপর আমি গিয়ে ভিডিওটা প্লে করে দিলাম! সবাই হা করে দেখতে লাগলো!
জান্নাত ভিডিওটা দেখে চোখ কপালে উঠে গেলো! একবার ভিডিওটার দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার আমার দিকে তাকাচ্ছে!
ভিডিওটা শেষ হওয়ার পর আমি মোবাইলটা নিয়ে নিলাম!
আমিঃ স্যার আমি জানি না জান্নাত আপুর কি বিচার হবে! তবে এরকম অপবাদ যেনো অন্য কাউকে না দেয়! ভালো থাকবেন! “(বলেই মেহেদী ভাই সহ আমি বেড়িয়ে আসলাম)
বাহিরের সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে! সবাইকে ভার্সিটির সকল স্টুডেন্টদের একটা গ্রুপ আছে! সেটাতে ভিডিওটা শেয়ার করে দিয়ে সবাইকে চেক করতে বললাম!
কিছুক্ষণের মাঝেই সবাই চুপ হয়ে গেলো!

আমিঃখারাপ আমাদের টিম না! খারাপ হলো জান্নাতের টিম! সো ভালো কিছু করতে চাইলে আমাদের টিমে চলে আসেন! ভালো থাকবেন সবাই! (বলে কেনটিনে চলে আসলাম)
ঐদিন আর ক্লাস করা হয় নি! তাই দুপুরে বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে দিলাম এক ঘুম! বিকেলে মোবাইল এর চিল্লানীতে ঘুম ভাঙ্গলো!
তাকিয়ে দেখি মেহেদী ভাইয়ের ফোন তাই উঠে রিসিভ করলাম!
আমিঃ হুম ভাই বলো?
মেহেদী ভাইঃ একটা গুড নিউজ আছে?
আমিঃ কি গুড নিউজ?
মেহেদী ভাইঃ আরে ভার্সিটির সব ছেলে মেয়ে আমাদের টিমে জয়েন করতে চাইতেছে! সবাইকে দলে নিয়ে নিবো?

আমিঃ দল তোমাদের তোমরা ভালো জানো!
মেহেদী ভাইঃ তুই এটা কি বললি হুসাইন?
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে সবাইকে নিয়ে নাও! আর জান্নাতের কি খবর?
মেহেদী ভাইঃ ওর বাবা ওকে বাসায় নিয়ে যেতে দেখলাম! মনে হয় তোর উপর প্রতিশোধ নিবে?
আমিঃ কিভাবে বুঝলে?
মেহেদী ভাইঃ ওর চোখ দিয়ে মনে হচ্ছিল আগুন ঝড়তেছে! তুই একটু সাবধানে থাকিস!
আমিঃ ওকে তুমি চিন্তা করো না! ভালো থেকো আমি এখন ঘুমাবো!

মেহেদী ভাইঃ ওকে বাই! (বলেই ফোনটা রেখে দিলাম)
পরেরদিন কলেজে গিয়ে দেখি জান্নাত আর ওর দুইটা বান্ধবী বসে আছে! তাই ওদের কাছে গেলাম!
আমিঃ আপু মন খারাপ?
জান্নাত আমার গলাটা শুনেই চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো! আমি হালকা ভয় পেলাম মনে মনে! তাও বাহিরে সেটা বুঝতে দিলাম না!
জান্নাতঃ তোকে বলতে হবে আমার মন খারাপ না কি?
আমিঃ না এভাবে বসে আছো তাই জিঙ্গাস করলাম!
জান্নাতঃ অনেক মজা নিচ্ছিস তাই না! আমিও তোকে দেখে নিবো?

আমিঃ আরে আপুওওও একবার বেইজ্জতি হয়ে আক্কেল ঠিকানায় আসে নি নাকি আবার বেইজ্জত হতে চাও?
জান্নাতঃ দুই দেখ আমি তোর কি অবস্থা করি!
আমিঃ আমার সাথে লাগতে এসো না! তাহলে নিজের পায়ে কোড়াল মারবে বলে দিলাম।
জান্নাতঃ সেটা সময়ই বলে দিবে!
আমিঃ ওকে! তা ক্ষমতা তো ছেলেদের হাতে চলে আসতেছে কিছু করবে না!
জান্নাতঃ আমি দেখবো তোরা কিভাবে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিস?
আমিঃ তুমি দেখতে থাকো আর আমি খেলতে থাকি! ভালো থেকো, বাই? (বলেই চলে আসলাম)

আপুর হয়তো রাগে চুল ছিড়তে মন চাইতেছে! আর আমার মন চাইতেছে হাসতে!
নির্বাচনের আগের দিন সবাইকে নিয়ে মিটিং শেষ করে বাসায় চলে গেলাম! নির্বাচন এর দিন সব কিছু ঠিকঠাক ভাবেই হলো! কিন্তু ভোটের রেজাল্ট শুনে মাথা উল্টা চক্কর খেয়ে গেলো!
নির্বাচনে নাকি জান্নাত পাশ করেছে! এটা কিভাবে হয়! না এটা মানা যায় না! তাই সবাই মিলে আন্দোলন ডাকলাম!
প্রিন্সিপাল স্যার এসে সবাইকে বুঝাতে চাইলো যে এটা সভাপতির ডিসিশান! তাই জান্নাত নির্বাচনে পাশ করানো হয়েছে!
আমি মেহেদী ভাইয়াকে হালকা একটু উস্কে দিলাম! উনি তো রেগে ফারায় হয়ে বললেন!

মেহেদী ভাইঃ স্যার কথা একটাই যে যতদিন পর্যন্ত নির্বাচনের আসল রেজাল্ট না দেওয়া হবে ততদিন ভার্সিটি বন্ধ! সবাই যার-যার বাসায় যাও!
সবাই চলে যাওয়ার পর স্যার আমাদেরকে ওনার রুমে ডাকেন! ওখানে গিয়ে দেখি জান্নাত সহ আরো কিছু মেয়ে বসে আছে!
ওদের দেখেই সারাশরীর জ্বলে উঠলো আমার! মনে হচ্ছিল ওদের মেরে নাক মুখ ফাটিয়ে দেই কিন্তু মেয়ে তাই মারা যাবে না!
প্রিন্সপালঃ দেখো এবারের মতো ব্যপারটা এখানেই থামিয়ে দাও! পরের বার থেকে সুষ্ঠ নির্বাচন হবে!
মেহেদী ভাইঃ স্যার আমাদের হাজার বললেও লাভ হবে না! বাহিরে যেটা বলে এসেছি ভিতরেও এটা থাকবে! সো সভাপতির সাথে কথা বলেন আপনি! আর রেজাল্ট এর আগে ভার্সিটি খুলবে না!
প্রিন্সপালঃ দেখো তোমরা বুঝার চেষ্টা করো!

আমিঃ যা বলে গেলাম তাই করেন স্যার! এছাড়া যদি অন্য কোনো চাল চালতে চান তাহলে পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে দিয়ে গেলাম! (বলেই আমি আর মেহেদী ভাই চলে আসলাম)
তিন-চার দিন পর পরিবেশটা বদলালো! ক্ষমতা আমাদের হাতে দিয়ে দেওয়ার সিন্ধান্তে পৌছেছে! সবাই খুশিতে নাচতেছে!
জান্নাতের দিকে তাকিয়ে দেখি রাগে আর লজ্জায় পুরোই লাল হয়ে আছে! আমাকে হাতের কাছে পেলেই হয়তো চিবিয়ে খাবে! ভাবলাম একটু মজা নেওয়া যাক! তাই জান্নাতের কাছে গেলাম””
আমিঃ বাবাকে বলে ক্ষমতা হাতে নিয়ে নেওয়াটাকে জিত বলে না! জিত বলে ক্ষমতা ছিনিয়ে আনাটাকে!
আমার কথা শুনে জান্নাত আপু হেসে দিলো! আর কেমন জানি একটা লুক নিয়ে আমার দিকে তাকালো!
জান্নাতঃ এবার তোর গলার কাটা হবো আমি?

আমিঃ ছিঃ এরপরেও তোমার লজ্জা হলো না!
জান্নাতঃ তুই আমার মান-সম্মান সব শেষ করে দিয়েছিস! যেটা এই চার বছরের কেউ আমাকে করতে পারে নি! তুই আমাকে হারিয়ে দিয়েছিস!
শার্টের কর্লারটাকে একটু উচু করে ভাব নিলাম!
জান্নাতঃ তবে চিন্তা করিস না! এবার তোর নরম জায়গায় মারবো আমি প্রয়োজনে তোর গলার কাটা হবো! তারপরেও গলার কাটা হবো আমি! না পারবি ফেলতে…না পারি খেতে! মনে রাখিস! (বলেই জ্বলতে-জ্বলতে চলে গেলো)
আমি কথাটা মজা ভেবে উড়িয়ে দিয়ে চলে গেলাম! তারপর ক্ষমতা পাওয়ার আনন্দে হালাক নাচ-গান করে সন্ধ্যায় বাসায় আসলাম!
হাত-মুখ ধোয়ে বইটা নিয়ে বসছিলাম তখনই বাড়ি থেকে ফোন আসলো! তাই রিসিভ করলাম!
আমিঃ হুম আম্মু বলো!
আম্মুঃ একটা খুশির সংবাদ আছে?

আমিঃ কালকে কি ঈদ নাকি?
আম্মুঃ চুপঃ তোর ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হইছে!
আমিঃ তাই নাকি! মেয়েটা কে?
আম্মুঃ কে আর তোর ভাই যাকে পছন্দ করতো তাকেই বউ বানিয়ে আনবো!
আমিঃ ওকে! তুমি ফোন রাখো আমি কালকেই বাসায় আসবো!
আম্মুঃ ওকে! (বলেই আম্মু ফোনটা রেখে দিলো)
সকালে কলেজে ছুটির দরখাস্ত জমা দিয়ে বিকেলের বাসে মেহেরপুর ফিরে আসলাম!
১০ দিন বাসায় কাটিয়ে গেলাম! ভাইয়ার বিয়ের সব ঝামেলা শেষ করে ফেললাম! তারপর আবার গেলাম ভার্সিটিতে!
আমাকে দেখে মেহেদী ভাই সহ সবাই খুশি! কিন্তু এই দশদিন জান্নাত আপুকে সব থেকে বেশি মিস করেছি! ক্রাশ বলে কথা! অনেকবার ঝগড়া করার জন্যও নক দিয়েছি কিন্তু আপু রিপ্লে দেয় নি!
ভার্সিটিতে সবার সাথে দেখা করে গেলাম জান্নাত আপুর কাছে! দূর থেকে দেখলাম হাসতেছে! আমাকে দেখার পরেই সব হাসি উদাও! তারপর আপুর কাছে গেলাম!
জান্নাতঃ কিরে শয়তান এতদিন কোথায় ছিলি?
আমিঃ বাড়িতে গিয়েছিলাম!

জান্নাতঃ কেনো ?
আমিঃ বড় ভাইয়ার বিয়ে করেছে তাই?
জান্নাতঃ ওহহ! তা তোরা কয় ভাই কয় বোন!
আমিঃ মাত্র দুই ভাই!
জান্নাতঃ ওহ! তা বাসায় আর কে কে থাকে?
আমিঃ আম্মু – ভাবি – ভাইয়া! আর আগে আমি থাকতাম এখন ঢাকায় চলে আসছি?
জান্নাতঃ তার মানে তোর আব্বু নেই তাই তো?
আমিঃ হুম!
জান্নাতঃ তোদের গ্রামের নামটা যেনো কি?

আমিঃ মেহেরপুর জেলা আর *** গ্রামে!
জান্নাতঃ ওকে! তুই যা আমাকে এখন অনেক কাজ করতে হবে?
আমিঃ ওকে! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
এভাবে কেটে গেলো তিনমাস! আপু এখনো আমাকে দেখলে জ্বলে! কিন্তু আমার সেদিকে দেখার সময় নেই! এদিকে ভার্সিটিতে গ্রীষ্মকালের ছুটি পড়ে গেছে প্রায় সপ্তাহখানেক হবে!
বাড়িতে যাবো কিন্তু কিছু কাজ আছে তাই সেগুলো শেষ করে আজকে দুপুরের বাসে বাড়ি ফিরবো!

যেই ভাবা সেই কাজ! বাসায় ফিরতে -ফিরতে রাত হয়ে গেলো!
সবার সাথে কথা বলে রুমে গিয়ে আতকে উঠলাম………!

আরো পড়ুন – আপুর বান্ধবী যখন বউ – Heart Touching Bangla Love Story


কেমন লাগছে আমাদের এই “অসাধারণ ভালোবাসার কাহিনী” টি।

পর্ব ৪

সবার সাথে কথা বলা শেষ করে নিজের রুমের দিকে গেলাম! রুমে ডুকতেই আতকে উঠলাম ভূত দেখার মতো চমকে আবার বাহিরে চলে আসলাম!
আম্মুঃ কিরে বাহিরে আসলি কেনো?
আমিঃ নাহ এমনি! আমার হঠ্যাৎ মনে হলো আমার রুমে একটা মেয়ে আছে! তাই চমকে গিয়েছিলাম।
আম্মুঃ মনে হওয়ার কি আছে! মেয়েটা তো সত্যিই আছে তোর রুমের ভিতরে!
আমিঃ কিহহহ!
আম্মুঃ কিহহহ না জ্বী! আর তুই এতো অবাক হলি কেনো?
আমিঃ কিছু না এমনি! তুমি যাও আমি একটু পড়ে আসতেছি!

আম্মুঃ ওকে!
বলেই আম্মু চলে গেলো! তারপর আমি রুমের ভিতরে চলে গেলাম!
জান্নাতঃ কিরে কি খবর তোর?
আমিঃ আপনি এখানে কেনো! আমাদের বাসায় আসলেন কেনো?
জান্নাতঃ সেটা এখন বাহিরে গেলেই তোর আম্মু বলবে তোকে?
আমিঃ মানে? আপনি কি বলেছেন আম্মুকে?
জান্নাতঃ সেটা আম্মুর কাছ থেকে গিয়ে শুনে আয়!
আমিঃ ওকে! আমি একটু পড়েই যাইতেছি! যদি উল্টা-পাল্টা কিছু বলেন তাহলে খবর আছে আপনার!

জান্নাতঃ মারবি নাকি আমাকে?
আমিছ- তার চেয়েও বেশি করবো! (বলেই ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে)
এসেই দেখি জান্নাত রুমে নেই! তাই আমি রেডি হয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে চলে গেলাম!
সবাই একসাথে বসে খেতে লাগলাম! তখনই ভাইয়া বলে উঠলো!
ভাইয়াঃ শুন হুসাইন আমি আর আম্মু মিলে একটা ডিসিশান নিয়েছি?
আমিঃ কি ডিসিশান! (কলিজাটা কাপতেছিলো কি না কি বলে ভেবে)
ভাইয়াঃ আমরা তোর বিয়ে ঠিক করেছি জান্নাতের সাথে!
ভাইয়া কথা শুনে গলায় ভাত আটকে গেলো! তাই কাশতে লাগলাম!
সবাই মিলে পানি খায়িয়ে থামালো!
ভাইয়াঃ কিরে কি হয়েছে তোর!

আমিঃ না কিছু না! তুমি কি যেনো বলছিলে?
ভাইয়াছ- তোর বিয়ে ঠিক করেছি মাহির সাথে?
আমিঃ ভাইয়া উনি আমার ৩ ক্লাস সিনিয়ার!
ভাইয়াঃ তো কি হয়েছে! এখন চুপচাপ খা! খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ছাদে আয় তোর সাথে আমার কথা আছে!
আমিঃ ওকে! (বলেই চুপচাপ খেয়ে রুমে চলে আসলাম)
এখন সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে! জান্নাত আমাকে বিয়ে করতে চাইতেছে কেনো! নিশ্চয় আমার উপরে প্রতিশোধ নিতে!

এসব ভাবতেছিলাম তখনই জান্নাত রুমে আসলো! আর আমাকে দেখে মুচকি হাসি হাসতে লাগলো!
জান্নাতঃ কিরে কেমন চমকে দিলাম না!
আমিঃ হুম!
জান্নাতঃ এটা তো কিছুই না তোর লাইফে এমন চমকে আরো অনেক বাকি?
আমিঃ ঐ ঐ…… (আর কিছু বলার আগেই ভাইয়া ডাক দিলো)
ভাইয়াঃহুসাইন ছাদে আয়!
আমিঃ আসতেছি?
জান্নাতঃ যা ছাদে! যা প্রশ্ন আছে একেবারে করিস নাহলে আবার মনে ডাউট থাকবে পড়ে!
আমিঃ আপনাকে আমি দেখে নিবো? (বলেই ছাদে চলে আসলাম)

আমিঃ ভাইয়া তোমাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে এত বড় মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দিতে চাইতেছো?
ভাইয়াঃ তোর থেকে মাত্র ২ বছরের বড়! আর এটাকে কি কেউ বড় বলে নাকি!
আমিঃ আচ্ছা এটা বাদ দিলাম! তুমি জানো ওও আমার উপর প্রতিশোধ নিতে এখানে এসেছে?
ভাইয়াঃ আমাদের সব বলেছে! তোর যাওয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনের ঘটনা সহ সব বলেছে আামদের!
আমিঃ তারপরেও তোমরা ওকে এই বাড়ির বউ বানাতে চাইতেছো?

ভাইয়াঃ মেয়েটা খুব ভালো! আর আম্মু নিজে কথা দিয়েছে আর তুই ভালো করেই জানিস আম্মু কথা দেওয়াই কতটা পাকা!
আমিঃ ভাইয়া তোমরা বুঝতেছো না!
ভাইয়াঃ আমরা বুঝতেছি তুই বুঝতেছিস না! মেয়েটা তোকে অনেক ভালোবাসে! দেখিস অনেক সুখে থাকবি সারাটা জীবন তুই!
(মনে মনে বলতে লাগলাম) পিছনে বাশ নিয়ে কোন সালায় ভালো থাকে! আর এই মেয়ে তো পুরো একটা বাশের ঝাড়! জীবনে যা শান্তি ছিলো সব মাটি চাপা দিতে হবে! কারণ ওনাদের যাই বলি না কেনো সবকিছু জবাব নেগেটিভই আসবে!

ভাইয়াঃ কিরে কি এতো ভাবছিস!
আমিঃ তোমরা যে ওর আবেগ কে এতো পাত্তা দিতেছো বা নিজের বাড়ির বউ বানাতে চাইতেছো! ওর বাবা যদি জানতে পারে তাহলে আমাদের সবাইকে মাটির নিচে ডুকিয়ে দিবে!
ওর বাবা কখনোই মেনে নিবে না! এত বড়লোকের মেয়েকে এই বাড়িতে বউ করে আনার সপ্ন দেখো কিভাবে তোমরা? বাচতে চাইলে ওকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দাও!
ভাইয়া মোবাইলে কি যেনো খুজে বেড় করে আমার সামনে ধরলো!
ভাইয়াঃ এটা জান্নাতের বাবা না!
আমিঃ হুম!
ভাইয়াঃ তাহলে এটা দেখ! জান্নাতের বাবা নিজে ওনার মেয়েকে আম্মুর হাতে তুলে দিয়ে গেছে!

কপালে হাত দিয়ে ছাদে বসে গেলাম! শেষ আশাটাও ভেঙ্গে গেলো! আমার লাইফটা শেষ! জান্নাত এমন প্লেন করেছে আর এমন জায়গায় জাল বিছিয়েছে যে বলার মতো না!
আমিঃ বিয়ে কবে?
ভাইয়াঃ ২৫ তারিখ?
আমিঃ তারপরেও ভাইয়া আম্মুকে একটু বুঝানোর চেষ্টা করো না প্লিজ! আসলে মেয়েটা একটা গুন্ডি!
ভাইয়াঃ জান্নাত ঠিকই বলেছিলো?
আমিঃ কেনো জান্নাত আবার কি বলেছিলো?
ভাইয়া- জান্নাত বলেছিলো তুই বিয়েটা ভাঙ্গার হাজারো চেষ্টা করবি! তুই এমন কেনো রে হুসাইন!
কি বলবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না! তাই মনে মনে বললাম! ভাইয়া আমার জায়গা তুমি থাকলে বুঝতে কেনো বিয়েটা ভাঙ্গতে চাচ্ছি! তোমরা দেখতেছো ওর উপরটা আর আমি দেখতেছি ওর আসল চেহারাটা!

ভাইয়াঃ শুন মেয়েটা ভালো আর তোকে অনেক ভালোবাসে! তাই ওকে কখনো কষ্ট দিস না!
আমিঃ আচ্ছা ওও এসেছে কবে! আর কি কি বলেছে একটু শর্ট করে বলো তো!
ভাইয়াঃ তোর ভার্সিটি যেদিন বন্ধ দেয় ঐদিন বিকেলে জান্নাত আমাদের বাসায় আসে! তারপর আমাদের সবকিছু আম্মুর কাছে খুলে বলে!
বলেই প্রচুর কান্না করে! ওও নাকি তোকে ভালোবেসে ফেলেছে আর তুই নাকি ওকে দেখতেই পারিস না! তাই ওও বাধ্য হয়ে বাসায় এসেছে!

অসাধারণ এই New Romantic Valobashar golpo bangla টি।

তারপরে ওও আম্মুকে বলে ওও তোকে বিয়ে করতে চায়! তারপর আম্মু জান্নাতকে বলে যে বিয়ের কথা বলতে হলে গুরুজন লাগে! তারপর জান্নাত ওর বাবাকে ফোন দিয়ে আসতে বলে! ওর বাবাও পড়ের দিন এসে বিয়ের কথা বলে জান্নাত নাকি ওদের বাসায় প্রচুর কান্না করেছে তোর জন্য! না খেয়ে থেকেছে কয়েকদিন! তারপর নাকি ওর বাবা না পেরে রাজি হয়ে যায়

তারপর জান্নাতের বাবা -মা জান্নাতকে আম্মুর হাতে তুলে দিয়ে যায়! তারপর থেকে জান্নাত এখানেই আছে!
ভাইয়ার মুখে এগুলো শুনে হা হয়ে গেলাম! এত সবকিছু হয়ে গেলো আর আমি কিছুই জানি না!
আমিঃ তাহলে তোমরা আমাকে এতদিন এসব বলো নি কেনো?
ভাইয়াঃ জান্নাত নাকি তোকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলো তাই আমাদের কিছু বলতে নিষেধ করেছে!
আমিঃ ওহহ?
ভাইয়াঃ কাল বিকেলে আম্মু আমাকে কি বলেছে জানিস?
আমিঃ কিহহ!
ভাইয়াঃ বলেছে এই কয়েকিনে নাকি জান্নাতকে আম্মুর অনেক পছন্দ হয়েছে?

আমিঃ এটা শুনারই বাকি ছিলো! যাও তুমি আর যা ভালো লাগে করো?
ভাইয়াঃ আচ্ছা তুই থাক আমি গেলাম! (বলেই ভাইয়া নিচে চলে গেলো)
পকেট থেকে সিগেরট বেড় করে সমানে টানতে লাগলাম! কি করবো মাথায় কাজ করতেছে না!
আম্মুর সাথে কথা বলতে হবে! দেখি কি করা যায়!
তারপর নিচে গেলাম আম্মুর কাছে! দরজায় নক করলাম!
আমিঃ আম্মু আসবো?
আম্মুঃ হুম আসো?
আমিঃ আম্মু কিছু কথা বলার ছিলো!
আম্মুঃ গোর পেস না করে সোজা বলে ফেলো?
আমিঃ আম্মু আমি চাইছিলাম বিয়েটা ২ বছর পড়ে করতে! জান্নাতকেই বিয়ে করবো কিন্তু দুই বছর পরে! এখন তো পড়ালেখা করতে হবে?
আম্মুঃ পড়ালেখা করতে না করেছে কে? বিয়ের পর বউমাকে নিয়ে তুই ঢাকায় থাকবি? ঐখানে তুই আর বউমা দুজনে পড়ালেখা করবি?
আমিঃ আচ্ছা! (বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম)

আম্মু বিয়ের আগেই বউমা বলতেছে মানে মেয়ে আম্মুর খুব পছন্দ হয়েছে! তাই আর কোনো পথ খোলা নেই বিয়ে করা ছাড়া!
নাহ কিছু ভাবতে পারতেছি না! মাথাটাও ব্যাথা করতেছে! এখন এসব নিয়ে ভাবা যাবে না! তাই ভাবিকে ডাক দিলাম!
আমিঃ ভাবি একটু শুনো?
ভাবিঃ হুম বলো! কিছু লাগবে?
আমিঃ ভাবি একটি কফি বানিয়ে দাও তো!
ভাবিঃ তুমি রুমে যাও আমি বানিয়ে দিতেছি?
আমিঃ ওকে! (বলেই রুমে চলে আসলাম)
রুমে এসে মেডিসিন খেয়ে শুয়ে রইলাম! কতক্ষণ পর হঠ্যাৎ জান্নাত রুমে আসলো কফি নিয়ে!

জান্নাতঃ এই নে তোর কফি?
আমিঃ আপনাকে কফি আনতে কে বলেছে?
জান্নাতঃ ভাবি বললো আমার ভালোবাসার মানুষটার নাকি কফি খাবে বলেছে! তাই বানিয়ে আমাকে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে!
আমিঃ প্লিজ এসব নাটক বন্ধ করেন! আর কফি লাগবে না আমার!
জান্নাতছ- ওকে! তাহলে আমি পান করি!
কিছু না বলে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে গেলাম! কিছুক্ষণ পরেই ঘুমিয়ে গেলাম! কিন্তু ঘুমটা বেশিক্ষণের জন্য হয় নি?
হঠ্যাৎ ঘুমের মধ্যে কেউ আমার পায়ের উপরে কেউ পা রাখলো! তাই ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো!
তাকিয়ে দেখি জান্নাত বই পড়তেছে আমার পাশে বসে! তাই তাড়াতাড়ি করে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলাম!

আমিঃ ঐ আপনি আমার বিছানায় উঠেছেন কেনো?
জান্নাতঃ এটা তোর বিছানা কে বলেছে?
আমিঃ মানে এটা আমার রুম আর বিছানাটাও আমার!
জান্নাতঃ আম্মু আমাকে এটাতে থাকতে বলেছে! তাই এখন থেকে এটা আমার রুম!
আমিঃ এহহহ আসছে এটা নিজের রুম বানাতে! খাট থেকে নেমে কথা বলুন!
জান্নাতঃ মন চাইলে তুই যা আমি যাওয়ার মেয়ে না! সোফায় ঘুমা নাহলে অন্য রুমে গিয়ে ঘুমা! আমি এই রুমে আর এই খাটেই ঘুমাবো?
আমিঃ ওকে আপনিই থাকেন আমি গেলাম! (বলেই রুম থেকে পাশের রুমে চলে আসলাম)
মাথা ব্যাথাটা এখনো শেষ হয়নি তাই আবার শুয়ে গেলাম! কিছুক্ষণের মাঝেই ঘুমিয়ে গেলাম!
সকালে হাতের…………….

আরো পড়ুন – অত্যাচারী বেয়াইন – Dusto misti valobasar golpo


এবার শুনুন প্রেমিকের রোমান্টিক কথাগুলো।

পর্ব ৫

সকালে হাতের আঙ্গুলে গরম কিছু লাগায় লাফিয়ে উঠলাম! তাকিয়ে দেখি জান্নাত কফির মগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে!
আঙ্গুলে তাকিয়ে দেখি কফি লাগানো! বুঝলাম আঙ্গুলটাকে কফিতে গোসল করিয়েছে!
জান্নাতঃ ঐ শেষ নবাব যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় সবাই তোর জন্য বসে আছে!
আমিঃ ভালো ভাবে ডাকলেই তো উঠে যেতাম এভাবে কফিতে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেওয়ার মানে কি?
জান্নাতঃ তোকে মানে বুঝাতে পারবো না! আর তোকে এর আগেও একবার ডেকে গেছি কিন্তু তুই উঠিস নি! তাই এটা করতে হয়েছে! তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে আমাকে নিতে যেতে হবে!
আমিঃ যান আপনাকে আটকে রেখেছে কে?

জান্নাতঃ তোকে নিয়ে যেতে বলেছে আম্মু! তাড়াতাড়ি কর আমার প্রচুর খিদে পেয়েছে!
সালার হাসবো না কাদবো এটা নিয়ে ভাবতে লাগলাম! সবার অভিশাপ হয়তো আজকে এসে আমাকে পেয়েছে! এসব ভাবতে-ভাবতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম!
এসে দেখি বিছানায় বসে-বসে আমার মোবাইল টিপতেছে! মোবাইলটা নিতে চাইলে সেটা সরিয়ে ফেলে!
আমিঃ ঐ আপনি আমার ফোনটা নিয়েছেন কেনো?
জান্নাতঃ চেক করতাছি?
আমিঃ কি চেক করেন আপনি?

জান্নাতঃ কোনো মেয়ের সাথে রিলেশান আছে কি না! থাকলে আম্মুর কাছ থেকে তো তোকে কতগুলো বকা শুনানো যাবে!
কপালে হাত দিয়ে ফ্লোরে বসে গেলাম! প্যরায় আর রাগে শরীরটা ছিড়ে যাচ্ছে! বাসা বলে চুপচাপ হজম করে নিচ্ছি!
জান্নাতঃ কিরে তুই এখনো রেডি হচ্ছিস না কেনো?
আমিঃ হচ্ছি! (বলেই রেডি হতে লাগলাম)
রেডি হয়ে নিচে গেলাম দুজন! গিয়ে দেখি সবাই বসে আছে!
ভাইয়াঃ কিরে তোর আসতে এতো দেরি হলো কেনো?

জান্নাতঃ আসলে ওনার কাপড় বেড় করতে গিয়ে আমি একটু দেড়ি করে ফেলেছি! তাই রেডি হতে দেড়ি হয়ে গেছে ওনার!
জান্নাতেত কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম! যাক দোষটা নিজের উপর নেওয়াই ভালোই হয়েছে!
ভাইয়াঃ জান্নাত আমি জানি ওর উঠতে নিশ্চয় দেরি হয়েছে! তাই তুমি ওর দোষ নিজের কাধে নেওয়ার কোনো দরকার নেই! তুমি খেতে বসো!
ভাইয়ার কথা শুনে আরো বেশি অবাক হলাম! তার মানে জান্নাত বাশ দিয়ে নিজেকে উপরে উঠিয়েছে! আর এই জন্যই দোষটা নিজের কাধে নিয়েছিলো!
এসব ভাবতে-ভাবতে নাস্তা শেষ করে রুমে চলে আসলাম! রুমে বসে-বসে মোবাইল টিপতেছিলাম! হঠ্যাৎ জান্নাত এসে হাজির হলো রুমে!

আমিঃ বাশ কি আরো আছে থাকলে দিয়ে যান!
জান্নাতঃ আরে এইতো মাত্র শুরু তোর জন্য তো বাশের জঙ্গল লাগিয়ে রেখেছি আমি?
আমিঃ একটা রিকোয়েস্ট আছে রাখবেন প্লিজ!
জান্নাতঃ আগে বল পড়ে ভেবে দেখবো!
আমিঃ বিয়ের তো আরো পাচদিন! সো এই কয়েকটা দিন আমাকে জ্বালায়েন না প্লিজ! কারণ বিয়ের পর তো লাইফার তেজপাতা করবেন সেটা আমার জানা হয়ে গেছে! সো এই কয়েকটা দিন জ্বালিয়েন প্লিজ!
জান্নাতঃ ওকে! কিন্তু আমারও একটা শর্ত আছে?
আমিঃ কি শর্ত বলেন!
জান্নাতঃ আমি যেভাবো বলবো সেভাবে বিয়ের আগ পর্যন্ত চলতে হবে?

আমিঃ ওকে! বিয়ের পর যে যার-যার মতো চলবো তাইতো!
জান্নাত কিছু না বলে হালকা হেসে চলে গেলো! মানেটা আর বুঝার বাকি রইলো না!
যাক তারপর আবার একটু ঘুমিয়ে নিলাম! দুপুরে আম্মু এসে ডাক দিলো!
উঠে ফ্রেশ হয়ে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে নিলাম! তারপর রুমে এসে মোবাইল টিপতে লাগলাম!
বিকেলে সব বন্ধুদের সাথে দেখা করবো বলে রেডি হচ্ছিলাম তখনই জান্নাত রুমে আসলো!
জান্নাতঃ কিরে কোথাও যাবি নাকি?
আমিঃ হুম!

জান্নাতঃ পড়ে যাস আপাতত আমাকে তোদের গ্রামটা ঘুড়িয়ে দেখা!
আমিঃ অন্যকাউকে নিয়ে যান!
জান্নাতঃ আম্মুকে বলতে হবে নাকি ভালো – ভালোই রাজি হয়ে যাবি?
আমিঃ আচ্ছা চলেন!
জান্নাতঃ এইতো গুড বয়!
তারপর জান্নাতকে নিয়ে গ্রাম ঘুড়তে বেড় হয়েছি! জান্নাত ঘুড়ে-ঘুড়ে দেখতে লাগলো আর আমি শুধু রাস্তা চিনিয়ে দিতেছি আর পাহারা দিতেছি!
জান্নাত গিয়ে একটা নদীর পাড়ে বসে পড়লো! তাই আমিও কিছুক্ষণ বসে রইলাম! হঠ্যাৎ পিছন থেকে কেউ আমার নাম নিয়ে ডাক দিলো!
তাকিয়ে দেখি তৌফিক (গ্রামের বেষ্টফ্রেন্ড) ডাক দিয়েছে! তারপর আমার কাছে আসলো!
আমিঃ কিরে কি অবস্থা!

তৌফিকঃ এইতো ভালো তা তোর কি খবর?
আমিঃ চলতাছে?
তৌফিকঃ শুন তোকে যেটা বলতে এসেছি! মারিয়া তোকে যেতে বলেছে! তুই নাকি ওর নাম্বার ব্লক করে দিয়েছিস তাই তোকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে পাঠিয়েছে!
তৌফিকের কথাটা শুনেই জান্নাত আমার দিকে রাগি চোখে তাকালো!
আমিঃ কো কো কোন মারিয়া! আমি কোনো মারিয়া টারিয়াকে চিনি না!
তৌফিকঃ শুন ওও বলছে তোকে কোনোকিছুর জন্য প্রেশার দিবে না! যা একবার দেখা করে আয়! আর ওনি কে?
আমি কিছু বলার আগেই জান্নাত বলে উঠলো!
জান্নাতঃ আমি হুসাইনের এর খালাতো বোন?

আমি হা করে ওনার দিকে ফিরে তাকালাম! ওনি কি বললেন!
তৌফিকঃ ওহ! আচ্ছা হুসাইন আমি যাই তুই গিয়ে এখনই দেখা করে আয়! নাহলে পড়ে সময় করে দেখা করে নিস!
আমিঃ ওকে!
তৌফিক উঠে চলে গেলো! আমি জান্নাতের দিকে তাকাতেই দেখি রাগে আগুন হয়ে আছে! কি বলবো কিছুই বুঝতেছি না!
আমিঃ আসলে আপু…..(আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই ঠাসসসস….করে চড় গালে বসিয়ে দিলো)
জান্নাতঃ আগে জানতাম তুই শয়তান এখন তো দেখি তুই লুচ্চামিও করিস!
কিছু না বলে চুপ করে গালে হাত দিয়ে বসে রইলাম!
জান্নাতঃ চল এখনই গিয়ে মারিয়ার সাথে কথা বলবি! আর যা সম্পর্ক ছিলো সব ভেঙ্গে দিয়ে আসবি? আর আমার কথা জিঙ্গেস করলে বলবি আমি তোর কাজিন! ভুলেও বলবি না আমি তোর হবু বউ! (বলে জান্নাত দাড়িয়ে গেলো)

আমিঃ ওকে!
আমিও উঠে উনাকে নিয়ে গেলাম মারিয়ার কাছে! গিয়ে দেখি মারিয়া দাড়িয়ে আছে! তারপর দুজনে মারিয়ার কাছে যেতে লাগলাম!
তখনই মোবাইলে কল আসলো! তাকিয়ে দেখি জান্নাতের কল!
আমিঃ আমি তো আপনার সামনেই তাহলো আমাকে কল দিছেন কেনো? ?
জান্নাতঃ রিসিভ করে চুপচাপ বুক পকেটে রেখে দে?
আমিঃ কেনো?
জান্নাতঃ তোর মারিয়া তোকে কি বলে তা শুনবো! খবরদার ভুলেও ফোনটা কাটবি না! চল!
ওনার এই কথা শুনে রাগে শরীরটা জ্বলে যাচ্ছে তাও কিছুই বললাম না! চুপচাপ গেলাম মারিয়ার কাছে!
মারিয়ার চোখে হালকা পানি! কিন্তু আমি অসহায় তাই কিছুই করতে পারতেছি না! মারিয়া আমাকে দেখেই এগিয়ে আসলো!
মারিয়াঃ কেমন আছো রাজ?
আমিঃ হুম ভালো তুমি?
মারিয়াঃ ভালো! ওনি কে?

আমিঃ আমার কাজিন!
মারিয়াঃ ওহ! হাই আপু?
জান্নাতঃ হ্যালো! “কেমন আছো মারিয়া!
মারিয়াঃ ভালো! “আপনি কেমন আছেন?
জান্নাতঃ ভালো! তোমরা কথা বলো আমি ঐখানে আছি! (বলেই জান্নাত দূরে চলে গেলো)
মারিয়াঃ সরি তোমাকে ডাক দেওয়ার জন্য! আসলে তোমাকে তো আর পাবো না তাই চাইছি শেষবারের মতো একবার জড়িয়ে ধরতে!
আমিঃ শেষবারের মতো মানে? তুমি কি ভাবতেছো?

মারিয়াঃ আরে ভয় পেয়ো না আমি আত্বহত্যা করবো না! তুমি তো বিয়ের পরে অন্যকারোর হয়ে যাবে তখন তো আর জড়িয়ে ধরতে পারবো না! তাই এখন একটু জড়িয়ে ধরবো! প্লিজ না করো না!
কি বলবো কিছুই বুঝতেছি না! জান্নাত যদি দেখে ওকে জড়িয়ে ধরেছি তাহলে তো আমার খবর আছে!
যা হওয়ার পরে দেখা যাবে! টান দিয়ে মারিয়াকে বুকে জড়িয়ে নিলাম! মারিয়া কান্না করে দিলো! আমার চোখের কোণ দিয়ে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো!
কিছুক্ষণ পর মারিয়াকে ছেড়ে দিলাম! আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো নিজেকে সামলাতে পারবো না!
মারিয়াঃ ভালো থেকো! (বলেই মারিয়ার চলে গেলো)
আমি চোখের পানি মুছে জান্নাত আপুর সামলে আসলাম! রাগে আপুর মুখ লাল হয়ে আছে!
জান্নাতঃ এইটার সুদ বিয়ের পর তুলবো! অন্য মেয়েকে জড়িয়ে ধরা তাই না! (রাগে গজ গজ করতে-করতে বললো)

তারপর আর কোনোকিছু না বলে ওনাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম!
বাসায় এসে দেখি বাসা টুক-টাক সাজানো শুরু হয়ে গেছে! যাই হোক রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম! তারপর রাতে খাওয়া-দাওয়া করে দিলাম একটা ঘুম!”
এভাবে কেটে গেলো চারদিন! সন্ধ্যায় বিয়েটাও হয়ে গেলো! কবুল বলার সাথে – সাথে নিজের সব সুখকে মাটি চাপা দিয়ে দিয়েছি!
রাত ১২ টার দিকে পুকুর পাড়ে দাড়িয়ে-দাড়িয়ে মারিয়ার কথা ভাবছিলাম!

মারিয়ার যখন ক্লাস নাইনে তখন আমি ক্লাস টেনে তখন থেকে রিলেশান আমাদের! কখনো মারিয়াকে খারাপ নজরে দেখি নি! পড়ালেখার শেষ করার পর মারিয়াকে বিয়ে করার নিয়ত ছিলো! কিন্তু জান্নাত এসে সবকিছু শেষ করে দিলো!
আম্মুকেও মারিয়ার ব্যপারে বলতে পারি নি! কারণ মারিয়ার পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের শত্রুতা! কিন্তু জান্নাত আমার জীবনে না আসলে আম্মুকে যে কোনো ভাবে মানিয়ে ফেলতাম! কিন্তু এটা কোনোভাবেই সম্ভব না!

মারিয়া মেয়েটা আমাকে খুব ভালোবাসে! কিন্তু একটা ভিলেন এসে সবকিছু শেষ করে দিলো! এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়ে গেলো বুঝতেও পারি নি!
চোখের পানি মুছতেছি তখনই কেউ কাধে হাত রাখলো! তাকিয়ে দেখি ভাইয়া-ভাবি পিছনে দাড়িয়ে!
ভাইয়াঃ কিরে মন খারাপ?
আমিঃ নাহ! এমনিতেই!

ভাবিঃ ওহ! আচ্ছা যা জান্নাত একা রুমে বসে আছে কখন থেকে?
আমিঃ হুম! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
তারপর বাসায় এসে নিজের রুমে গেলাম! এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম!
দরজা লাগিয়ে ফিরতেই………..!

আরো পড়ুন – বেনামি চিঠি (১ম খণ্ড) – রোমান্টিক প্রেমের চিঠি


নিশ্চয়ই আপনার অনুভূতির সাথে মিলে যাচ্ছে “রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প কাহিনী” টি।

পর্ব ৬

দরজা লাগিয়ে পিছনে ফিরতেই দেখি জান্নাত উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! আমি কিছু না বলে সোফায় গিয়ে বসে রইলাম!
কিছুক্ষণ পর জান্নাত রুমে আসলো! এসেই আমার পাশে এসে বসলো!
তারপর কোনো কথা ছাড়াই ঠাসসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো! গালে হাত দিয়ে নির্বাক এর মতো তাকালাম!
জান্নাতঃ এটা দিয়েছিস কেনো জানিস! হবু বউ থাকতে যে অন্য মেয়েকে জড়িয়ে ধরেছিস তাই!
কিছু না বলে হালকা একটু হাসলাম!

জান্নাতঃ আজ থেকে চড় খাওয়ার অভ্যাসটা করে ফেল! কারণ এখন থেকে ভুল হলে রাগ দেখাবো না সোজা থাপ্পড় লাগিয়ে দিবো!
আমি চুপ করে বসে রইলাম!
জান্নাতঃ কিছু বলার আছে নাকি এভাবেই চুপ করে বসে থাকবি!
আমিঃআমাকে বিয়ে করেছেন কেনো?
জান্নাতঃ মানুষ বিয়ে করে কেনো? সবাই যে কারণে করে আমি সেই কারণেই করেছি?
আমিঃ আপনি মানুষ?
জান্নাতঃ ঐ তুই কি বলতে চাইতেছত?

আমিঃ না মানে আপনাকে দেখলে আমার পেত্নীর কথা মনে পড়ে?
জান্নাতঃ দেখ এখন রাগাবী না! নাহলে মেরে তোর দাত লাল করে দিবো? (রাগে লাল হয়ে)
আমিঃ এহহহ! আমার জীবনটা তেজপাতা বানাতে যে আসছেন সেটা আমি খুব ভালো করে জানি? ভার্সিটির সুদ নিতে আমাকে বিয়ে করেছেন তাই না!
জান্নাতঃ হুম তো! এখন বেশি কথা না বলে এদিকে আয় বাসর রাত করতে হবে?
আমিঃ মানে? (অবাক হয়ে বললাম)
জান্নাতঃ মানে বুঝাচ্ছি?

জান্নাত এক পা- এক পা করে আমার দিকে আসতে লাগলো! আমি মতলব ভালো না দেখে পিছাতে লাগলাম! কিন্তু কপালে বেশিক্ষণ সায় না দেওয়াই!
অল্পকিছু যাওয়ার পরেই পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলো! এদিকে জান্নাত আমার একদম কাছাকাছি চলে আসলো! আমি হয়তো জান্নাতের হার্টবিট শুনতে পাচ্ছি! দুজনের মাঝে একফোঁটাও গেপ নেই!
ভাবতেছি জান্নাত কি করতে চাইতেছে? এমন সময় খেয়াল করলাম জান্নাত ওর ঠোট দুটো আমার দিকে এগিয়ে আনতেছে! ” বুঝে গেলাম জান্নাত কিস করবে তাই হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরার জন্য হাতটা উপরের দিকে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারলাম
জান্নাত আমার হাতটা ওর হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে! উপায় না পেয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম! অবশেষে জান্নাত আমাকে কিস করে বসলো!” কিস করলো কম কামড়ে ঠোটের ভিতরের অবস্থা বারোটা বাজিয়ে দিলো!

আমি চিৎকারও দিতে পারতেছি না! অবশেষে ছাড়লো আমাকে? ঠোটগুলো কেটে রক্ত পড়তেছে! তাই চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম!
জান্নাতঃ বাবু আরেকটু আদর করি?
আমি মাথা নেড়ে শুধু না করলাম!
জান্নাতঃ ওকে তাহলে এখন তুমি ঘুমাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসি? (বলেই জান্নাত চলে গেলো ফ্রেশ হতে)
আমি গিয়ে আয়নায় ঠোটগুলো দেখতে লাগলাম! ঠোটের বাহিরের দিকে একটুও কাটে নি! কিন্তু ঠোটের ভিতরের দিকটা কেটে রক্ত পড়তেছে!
মুখ চেপে সোফায় গিয়ে বসে রইলাম! জান্নাত ওয়াশরুম থেকে বেড় হওয়ার পর কোনো কথা না বলে ওয়াশরুমের ভিতরে চলে গেলাম!
ফ্রেশ হয়ে এসে বালিশ আর চাদর নিয়ে সোফায় শুয়ে গেলাম! সারাদিন ক্লান্ত তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম!

সকালে হঠ্যাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়! তাকিয়ে দেখি জান্নাত ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়েছে! তাই আমিও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম! তারপর দুজনে নিচে গেলাম নাস্তা করতে!
নাস্তায় খাওয়ার সময় হালকা একটু ঝাল মুখে দিতেই মুখ জ্বলে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো! তাও হালকা কিছু খেয়ে উঠে রুমে চলে আসলাম!
এসে মোবাইল টিপতেছিলাম তখনই জান্নাত রুমে আসলো! এসেই আমার পাশে বসে পড়লো!
জান্নাতঃ কিরে মুখের ভিতর জ্বলতেছে!
আমি কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম!
জান্নাতঃ কিরে ঢাকায় যাবি না! না এখানে পড়ে থেকে মার খাবি কোনটা!
আমিঃ সময় হলে চলে যাবো আপনাকে বলতে হবে না!

জান্নাতঃ বাহ রাগ করে আছিস নাকি আমার উপরে!
আমিঃ না আপনার উপর তো ক্রাশ খেয়ে আছি!
জান্নাতঃ তাই নাকি! ওকে সবাই ক্রাশ খায় আমার উপর তাদের মধ্যে নাহয় তুইও একজন!
আমিঃ হুম! তাহলে চলেন এখন তো ক্রাশ যেহেতু আমার বউ তাই তাকে একটু আদর করে দেই! (রাগে ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে)
জান্নাতঃ মা মা মানে! কি বলতে চাইতেছিস তুই!
জান্নাতের হাত দুটো শক্ত করে চেপে ধরে টান দিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিলাম! তারপর আমি আমার পা দিয়ে জান্নাতের পা গুলো চেপে ধরলাম!
জান্নাতঃ ঐ তুই কি করতেছিস!
আমিঃ ক্রাশকে আদর করবো!

জান্নাতঃ ছেড়ে দে বলতেছি নাহলে পড়ে তোর অবস্থা খারাপ করে দিবো বলে দিলাম!
খাটের কোণা থেকে ওড়না নিয়ে জান্নাতের হাত গুলো বেধে দিলাম! তারপর গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে আসলাম!
জান্নাতের মুখে ভয়ের ছাপটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি! তারপর বিছানায় উঠে জান্নাতের পেট থেকে শাড়িটা সড়িয়ে দিলাম!
আমিঃ ওয়াও কি সুন্দর পেট আপনার!
জান্নাতঃ ঐ তুই পেটে হাত দিয়েছিস কোন সাহসে?
আমিঃ ওকে হাত দিবো না কিস করবো চলবে! !
জান্নাতঃ ঐ না না না!

কে শুনে কার কথা জান্নাতের পেট চেপে ধরে কয়েকটা কিস করলাম! জান্নাত ভয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে!
আমিঃ এবার আর কোথায় কিস করবো বলেন!
জান্নাতঃ ছাড়া পেলে তোকে মেরেই ফেলবো আমি?
আমিঃ ছাড়ার আগে আমি আপনার যা সম্মান আছে তা সব কেড়ে নিবো!
কথাটা শুনে জান্নাতের চোখ বড়-বড় হয়ে গেলো! এবার আমার দিকে মায়াবী চোখে তাকালো!
আমিঃ এভাবে তাকিয়ে লাভ হবে না কারণ আপনার ডানা না ভাঙ্গলে আপনার ফরফরানি বন্ধ হবে না।
জান্নাতঃ আমি চাই তুই এটা কর! কারণ তুই এটা করলে আমার কাছে হেরে যাবি আর আমি চাই তুই আমার কাছে হেরে যা!

আমিঃ ওকে আজকে মতো ছেড়ে দিলাম! আমিও দেখে নিবো আপনাকে! (বলেই হাত-পায়ের বাধনগুলো খুলে দিলাম)
জান্নাত কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো! তারপর কিছুদিন বাড়ি থেকে জান্নাতকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসলাম!
ঢাকায় একটা বাসা ভাড়া নিয়ে নিলাম! পরের দিন দুজনে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে চলে গেলাম ভার্সিটিতে!
সবার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করার পর মেহেদী ভাইদের সাথে কেন্টিনে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম!
তখনই জান্নাত তার বান্ধবীকে পাঠালো আমাকে ডাকার জন্য!
তারপর উঠে গেলাম জান্নাতের কাছে! গিয়ে দেখি জান্নাতের হাতে একটা পেপার নিয়ে দাড়িয়ে আছে?
আমিঃ কি হলো আমাকে ডেকেছেন কেনো?

জান্নাতঃ এই পেপারে একটা সাইন লাগবে তোর তাই?
আমিঃ কিসের পেপার?
জান্নাতঃ তোর আর আমার ডিভোর্স পেপার? এটাতে সাইন করার ঠিক ৬ মাস পর আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে? (মাহি)
আমিঃ কিহহহহ!
জান্নাতঃ হুম! সাইন কর এটাতে আমিতো তোকে জ্বালাতে বিয়ে করেছি! তোর কি মনে হয় তোর সাথে সংসার করার জন্য?
আমিঃ নাহ! আমি বলছিলাম ছয় মাস বেশি হয়ে যায় না আপু…..(আর কিছু বলার আগেই জান্নাত ধমক মারলো)
জান্নাতঃ ঐ চুপপপ! কে তোর আপু?

আমিঃ ওহহ সরি! আসলে মুখ ফসকে বেড় হয়ে গেছে!
জান্নাতঃ যতদিন আমাদের মাঝে বিয়ের রিলেশানটা আছে ততদিন আপু ডাকবি না বলে দিলাম! নাহলে সবাই সন্দেহ করবে!
আমিঃ ওকে!
জান্নাতঃ কি বলছিলি বল এবার!
আমিঃ আসলে ছয় মাস এটা তো বেশি সময় আমি বলছিলাম কি? আমার একজন চেনা উকিল আছে! আপনি চাইলে তিনমাসে ডিভোর্স করাতে পারবো আমি? (সাইন করতে-করতে বললাম)
জান্নাতঃ তোর মুক্তি পাওয়ার জলদি বেশি তাই না!
আমিঃ হুম! এই নেন পেপার? (পেপারটা ওনার হাতে ধরিয়ে দিলাম)
জান্নাত পেপারটা হাতে নিয়ে ছিড়ে ফেললো! তারপর সেগুলো টুকরো-টুকরো করে আমার উপরে উড়িয়ে দিলো!

আমিঃ আমি কি তিনমাসেরটার জন্য ট্রাই করবো?
জান্নাতঃ চুপ! তোর মুক্তি পাওয়া আমি বেড় করতেছি! তোর কোনোকিছুই করতে হবে না! আমি একবছরের কন্টাক্ট পেপার বানিয়ে আনতেছি!
আমিঃ সরি আর বলবো না তারপরেও এটা কইরেন না।
জান্নাতঃ চুপ আর একটা কথা বললে সময় বাড়বে বলে দিলাম!
চুপ করে গেলাম! কথা বললে সমস্যা বাড়বে তাই!
জান্নাতঃ গুড যা এখন আর আমি যে তোর বউ এটা যেনো কেউ না জানে?
আমিঃ ওকে! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
তারপর আবার সেই কেন্টিনে এসে বসে গেলাম!

রাগে সারাশরীর দিয়ে আগুন বেড় হইতেছে! ওনি কি পাইছে বিয়েটারে যখন খুশি করবে আবার যখন খুশি সেটাকে ভেঙ্গে দিবে!
ওনার কিছু একটা করতেই হবে? নাহলে হবে না! এসব ভেবে ক্লাসে চলে গেলাম!
বিকেলে ক্লাস শেষ করে বাহিরে ঘুড়ে-ফিরে রাতে নিজের খাবার নিয়ে বাসায় এসে গেলাম!
খাওয়া-দাওয়া করে এসে দেখি জান্নাত রুমের দরজা খোলা রেখে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে!
আমি পাশ থেকে চাদর আর বালিশ নিয়ে সোফায় যাওয়ার সময় মনে হলো জান্নাত কাপতেছে! কাছে গিয়ে কপালে হাত দিতেই দেখি জান্নাতের গায়ে প্রচুর জ্বর!
তাড়াতাড়ি গিয়ে বাটিতে একটু পানি আর একটা কাপড় নিয়ে আসলাম!

মাথায় জল পট্টি দিয়ে পাশের ক্লিনিক এর ডাক্তারকে আসতে বললাম! ওনি এসে চেকআপ করে ঔষুধ দিয়ে চলে গেলেন!
তারপর আমি ওনার পাশে বসে হালকা-হালকা জল পট্টি দিতে লাগলাম! আর জান্নাতের ঘুমন্ত চেহারাটা দেখতে লাগলাম!
আজকে আবার নতুন করে ক্রাশ খেলাম জান্নাতের উপরে! মেয়েটা সত্যিই একটা পরি! তার ঘুমন্ত চেহারাটা কেউ একবার দেখলে সে জীবনেও বলবে না জান্নাত যে এতটা বদরাগি!
এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে ওনার পাশেই ঘুমিয়ে গেলাম মনে নেই!
সকালে গালে কারো হাত পড়াতে জেগে উঠলাম! তাকিয়ে দেখি জান্নাত আমার দিকে আগ্নি চোখে তাকিয়ে আছে!
আমিঃ কি হলো মারলেন কেনো?
জান্নাতঃ আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর সাহস পেলি কোথায় থেকে!

আমিঃ আসলে আমি ইচ্ছে করে… (আর বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলো)
জান্নাতঃ চুপ একটা কথাও বলবি না! আর আজ থেকে তুই অন্যরুমে থাকবি! তুই একা পেয়ে সুযোগ নিতে চেয়েছিলি?
কাল রাতের পর থেকে ওনার উপর মায়া জমে গেলো! জবাব দিতে গিয়ে পারছি না! তাকে ভালোবেসে ফেললাম না তো! এসব ভাবতে-ভাবতে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম!
অনলাইনে খাবার অর্ডার করে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম! এসে দেখি খাবার চলে আসছে! তারপর আমি খাওয়া-দাওয়া করে জান্নাতের জন্য খাবারগুলো টেবিলে রেখে চলে গেলাম!
জানি ওর শরীর ভালো না তাই ওর রান্না করতে পারবে না! তাই খাবার রেখে চলে গেলাম ভার্সিটিতে!
দুপুরে কেন্টিনে বসে ছিলাম তখনই মেবাইলটা বেজে উঠলো! পকেট থেকে বেড় করলাম!
তাকিয়ে দেখি…………..!

আরো পড়ুন – নিকাহ – bangla romantic biyer golpo from fb


“রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প” টি সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।

পর্ব ৭

তাকিয়ে দেখি আম্মু কল করেছে! তাই রিসিভ করলাম তাড়াতাড়ি!
আমিঃ হুম আম্মু বলেন!
আম্মুঃ বউমার শরীর ভালো না আর তুই নাকি চলে গেছিস ভার্সিটিতে! ঐ তোর বউয়ের চেয়ে বড় কি ক্লাসটা হয়ে গেছে নাকি?
আমিঃ আম্মু আমিতো…. (ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো)
আম্মুঃ চুপ! আমি কিছু শুনতে চাই না তুই এখনি বাসায় যা! আর বউমার শরীর ভালো হওয়ার আগ পর্যন্ত তুই আর কোনো ক্লাস করবি না।। আর ভার্সিটিতে যাবি না বলে দিলাম!
আমিঃ ওকে?
আম্মুঃ আর এখনই তুই বাসায় যা! আমি বউমাকে ফোন দিবো একটু পড়ে বলে দিলাম।

আমিঃ ওকে! (বলেই ফোন রেখে দিলাম)
তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম! এসে দেখি জান্নাত খাটে শুয়ে আছে আর টিভি দেখতেছে!
আমিঃ আপনি আম্মুকে ফোন দিয়ে কি বলেছেন?
জান্নাতঃ যা শুনিয়েছি তোকে তাই বলেছে! আসলে বাসায় তো কেউ একজন থাকা লাগে আমাকে সেবা করার জন্য! তাই ভাবলাম সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তোকেই রেখে দেই!
কোনোকিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে নিজের সবকিছু নিয়ে পাশের রুমে রেখে দিলাম!
জান্নাতঃ ঐ হুসাইন একটু শুনে যা তো?
আমিঃ কেনো?
জান্নাতঃ কাজ আছে তাড়াতাড়ি আয়!

আমিঃ ওকে! (বলেই ওনার রুমে গিয়ে হাজির হলাম)
জান্নাতঃ আমার পাগুলো ব্যাথা করতেছে একটু টিপে দিয়ে যা প্লিজ?
আমিঃ আমি আপনার পা টিপে দিবো?
জান্নাতঃ হুম! নাকি আম্মুকে ফোন দিয়ে বলবো তুই আমাকে সারাদিন কথা শুনিয়েছিস শরীর খারাপ হওয়ায়!
আমি হালকা একটু হেসে গিয়ে ওর পা গুলো টিপে দিতে লাগলাম!
পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম! অন্যদিনের মতো দিনটা কাটতে লাগলো! দুপুরে জান্নাত হঠ্যাৎ এসে আমার সামনে এসে দাড়ালো!
জান্নাতঃ আমার সাথে আয়!
আমিঃ কেনো?
জান্নাতঃ বেশি বকবক না করে আয়! (রাগি গলায়)
আমিঃ ওকে! (বলেই সবার সামনে থেকে উঠে জান্নাতের সাথে গেলাম)

জান্নাত আমাকে নিয়ে কেন্টিনের টেবিলের উপর উঠে দাড়ালো!
জান্নাতঃ Attention guess!
সবাই জান্নাতের দিকে ঘুড়ে তাকালো!
জান্নাতঃ তোমাদের সবাইকে আজকে একটা কথা বলতে চাই?
পাশ থেকে কয়েকজন বললোঃ “কি!”
জান্নাতঃ আসলে আমি আর হুসাইন স্বামী-স্ত্রী! এই ছুটিতে আমাদের বিয়েটা হয়েছে! সো সবাই এটা মাথায় রাখবে হুসাইন এর স্ত্রী আছে!
জান্নাত মে চলে গেলো! সবাই জান্নাতের কথাটা শুনে হা হয়ে গেলো! বিশেষ করে মেহেদী ভাই! আমার দিকে জিঙ্গেসার দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে রইলো! আমিও নেমে মেহেদী ভাইদের কাছে গেলাম!
মেহেদী ভাইঃ কিরে জান্নাত এটা কি বলে গেলো!
আমিঃ হুম!
মেহেদী ভাইঃ আমি কিছু বুঝতেছি না! তুই জান্নাতকে বিয়ে করতে গেলি কেনো?

আমিঃ ভাইয়া আর আম্মুর কথায়!
মেহেদী ভাইঃ আম্মুর আর ভাইয়ার কথায় বর্তমানে কেউ বিয়ে করে নাকি?
আমিঃ আব্বু মারা যাওয়ার পর আম্মু অনেক কষ্ট করেছে! আমাদেরকে মানুষ করেছে পাশাপাশি কোম্পানির কাজও করতে হয়েছে! তাই আমি চাইনি তাকে কষ্ট দিতে!
আম্মু যা করে আমার জন্য ভালোই করে! আর আম্মু জান্নাত একটু বেশিই পছন্দ করেছে! আর এখানের সবকিছু বলেছি আমি কিন্তু জান্নাত এমন ভাবে সাজিয়ে ছিলো যে আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়েটা করতে হয়েছে!
মেহেদী ভাইঃ ওকে! আচ্ছা প্রথম থেকে আমাকে সব খুলে বল তো!
আমিঃ আর বলো না (সবকিছু খুলে বললাম মেহেদী ভাইকে)
সব শুনে ওনি মাথায় হাত দিলো! এখন ওনার মুখেই কোনো কথা নেই!
মেহেদী ভাইঃ তো এখন কি করবি! ওও তো ১ বছরে তোর জীবনটা শেষ করে দিবে! কি করবি এখন?

আমিঃ ভাইয়া ওনি এই ভার্সিটিতে আছে আর ৫ মাস! তাই এই কয়েকটা দিন সাবধানে থাকতে হবে!
মেহেদী ভাইঃ আচ্ছা তুই বিয়েটা নাহয় করেছিস তোর আম্মুর কথায় তাহলে ওর টর্চারগুলো সহ্য করতেছিস কেনো?
আনিঃ দুইটা কারণে সহ্য করতেছি?
মেহেদী ভাইঃ কারণ গুলো কি কি?
আমিঃ প্রথমত আম্মুকে কিছুদিন বুঝতে দেওয়া যাবে না যে জান্নাতের আর আমার মাঝে কি চলতেছে!
মেহেদী ভাইঃ ওহ! দ্বীতীয় কারণ?
আমিঃ জান্নাত কে উড়ার সময় দিতেছি! যখন সে চিল পাখির এর মতো আকাশের কাছাকাছি চলে যাবে তখনই টান দিয়ে মাটিতে ফেলবো! তখনই বুঝবে হুসাইন কি জিনিস!
মেহেদী ভাইঃ মানে?

আমিঃ মানে হলো চড়ুই পাখি থাকে মাথার উপরে তাকে হাজার বার মাটিতে ফেললেও তার কিছুই হবে না! কিন্তু চিল পাখি থাকে আকাশে! তাকে একবার মাটিতে ফেলতে পারলে তার আর উড়ার ক্ষমতা থাকে না! তাই চড়ুই পাখিটা উড়তে-উড়তে চিল পাখির জায়গায় যাক তারপর নাহয় টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দিবো!
মেহেদী ভাইঃ তুই VILLAIN সারাজীবনই থাকবি!
আমিঃ হুম! জান্নাত ভাবতেছে আমি ওর দাস হয়ে যাচ্ছি! কিন্তু ওও জানে না নিজের বিপদটাকে টানতেছে!
মেহেদী ভাইঃ আগে কি করতে চাইতেছিস!
আমিঃ জান্নাত কে আপাতত আমার মায়ায় ফেলতে হবে যে ভাবেই হোক তারপর ওর তেল বাহির করবো আমি!
মেহেদী ভাইঃ আমাদের কোনোরকম হেল্প লাগলে বলিস! ওকে শায়েস্তা করতে আমরা আছি তোর পাশে?
আমিঃ হুম সেটা তো জানি!

মেহেদী ভাইঃ আচ্ছা আমার জানা মতে তোর লাইফে তো মারিয়া নামের একটা মেয়ে আছে তার কি হলো!
আমিঃ কি আর হবে মারিয়াকে কিছুদিন ভুলে থাকতে হবে! জান্নাত থেকে ডিভোর্স পাওয়ার পর মারিয়াকে বিয়ে করে ফেলবো!
মেহেদী ভাইঃ মারিয়া তখন বিয়ে করতে রাজি হবে তো! তুই বিবাহিতা জেনেও!
আমিঃ মারিয়া আমার আর জান্নাতের ব্যাপারে সব জানে! সো এসব নিয়ে টেনশান করো না! আর জান্নাত ছাড়া কি দুনিয়াতে মেয়ের অভাব আছে নাকি যে বিয়ে করতে পারবো না!
মেহেদী ভাইঃ তাও ঠিক! তুই তো চাইলে কয়েকটা বিয়ে করতে পারবি! কারণ তোর সেই টেলেন্টা আছে!
আমিঃ থুর বাদ দাও এসব কথা!
মেহেদী ভাইঃ ওকে! তা কি করবি এখন!
আমিঃ এখন বাসায় চলে যাবো ভালো লাগতেছে না! থাকো আমি গেলাম! কালকে কাজ আছে! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে দিলাম এক ঘুম! সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙ্গলো! তাকিয়ে দেখি জান্নাত আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
জান্নাতঃ দুপুরে আমাকে না বলে ভার্সিটি থেকে চলে আসলি কেনো?
আমিঃ এমনি! আর আপনাকে কারণ বলতে হবে নাকি?
জান্নাতঃ বলতে হবে! নাকি কোনো মেয়ের সাথে লুচ্চামি করতে এসেছিলি?

আমিঃ হুম ঠিকই বলছেন!
জান্নাতঃ চুপপ! বেশি বকবক করবি না কারণ এই বাসাতে শুধু আমার রাজত্ব চলবে! যা বলবো তার উত্তর দিবি শুধু!
আমিঃ তাহলে আপনার বাসায় আপনিই থাকেন আমি চলে যাই ম্যাচে!
জান্নাতঃ যা আমি বেশি না আম্মুকে বলবো শুধু!
আমিঃ আম্মুকে কষ্ট দিতে চায় না বলে আপনাকে সহ্য করতেছি! নাহলে আপনার অবস্থা আগের মতো করতাম!
জান্নাতঃ কিভাবে করবি এটাতো ভার্সিটি না যে আমাকে হারিয়ে দিবি! এটা সংসার আর সংসারে বড়-বড় ভিলেনরাও রাজত্ব করতে পারে না! কারণ সংসারের রাজত্ব চলে মেয়েদের ।। সো একবছর যা বলি তাই কর নাহলে সারাজীবনের জন্য জ্বালাতে থাকবো বলে দিলাম!
আমিঃ হুম এই জন্যই তো ছাড় পাচ্ছেন! নাহলে এমনিতে তো আমার একটা চুলও ছিড়তে পারবেন না!
জান্নাতঃ কেনো মারিয়ার কাছ থেকে তোকে কেড়ে নিলাম না! এটাতে শিক্ষা হয়নি তোর!
আমিঃ মারিয়া – মারিয়া -মারিয়া! (বলেই হু হু হেসে দিলাম কারণ মারিয়ার কথা বলতেই মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো!)

জান্নাতঃ কি হলো হাসছিস কেনো?
আমিঃ না এমনি!
বলেই মনে মনে ভাবতে লাগলাম! কোথায় থেকে আর কেড়ে নিতে পাড়লেন! আপনি আমাকে ছেড়ে দিলে আমি মারিয়াকে বিয়ে করে ফেলবো! আর মারিয়স এমনিতেও জানে আপনি কেনো আমাকে বিয়ে করেছেন!
“তাই মারিয়াকে বিয়ে করতে আমার কোনো অসুবিধা হবে না! আরেকটা কথা কি জানেন মারিয়া নেক্সট বেইসে ভার্সিটিতে উঠবে! আর আপনি ভার্সিটি থেকে চলে গেলে আমার রাস্তাও ক্লিয়ার হয়ে যাবে! সো যা করার এই কয়েকদিন করে নিন! নাহলে পড়ে আর পাবেন না আমাকে.. মনে মনে ভাবছি
এসব ভাবছিলাম তখন জান্নাত ডাক দিলো!
জান্নাতঃ কিরে ভাবনার সাগরে ডুব দিলি নাকি! যা করবি আজ থেকে সব বলবি! নাহলে তোর খবর করে ছাড়বো বলে দিলাম!
আমিঃ ওকে, তা এখন একটু প্রাস্রাব করতে যেতে পারি!

জান্নাতঃ কিহহ! যা ছ্যাচড়া। (বলেই রুম থেকে চলে গেলো)
বাসায় রান্না করার মতো কেউ নেই। তাই রাতে খাবার অর্ডার করে খাওয়া-দাওয়া করে আরামে একটা ঘুম দিলাম!
আজকে একটু তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে চলে আসলাম। এসে কেন্টিনে বসে ছিলাম। তখনই আমার ক্লাসমেট একটা মেয়ে আসলো। মেয়েটা কিছুদিন ধরে আমাকে ফলো করতেছিলো। মেয়েটা দেখতে একদম পরির মতো। আজকে কি বলতে এসেছে কে জানে?
মেয়েটাঃ আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।
আমিঃ হুম বলেন?
মেয়েটাঃ তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে?

আমিঃ কিহহহ!
মেয়েটাঃ হুম! তোমাকে বলবো-বলবো ভাবছিলাম! আজকে কেউ নেই তাই ভাবলাম আজকে বলে দেই!
আমিঃ আমি যে বিবাহিত সেটা আপনি জানেন না!
মেয়েটাঃ জানি কিন্তু ঐ আপুটা যে আপনার উপর প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছে সেটাও আমি বুঝি!
ওর কথা শুনে আমি হা হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম!
মেয়েটাঃ দেখো আমি তোমাকে ভালোবাসি! তুমি চাইলে আমার সাথে রিলেশানে থাকতে পারেন!

মনে মনে ভাবলাম জান্নাত কে একটু শায়েস্তা করা দরকার তাই আমিও বললাম!
আমিঃ হুম। এমনিতেও জান্নাতের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি!
মেয়েটাঃ তাহলে চলো বিকেলে কোথাও কফি খেয়ে আসি!
আমিঃ হুম অবশ্যই! বলো কোথায় খেতে যাবে!
মেয়েটাঃ “”কফি হাউজে “”” খেলে কেমন হয়!
আমিঃ ওকে, সময় মতো চলে আইসেন! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
কিছুক্ষণ পর মেহেদী ভাই সহ সবাই চলে আসলো! জান্নাতকেও দেখলাম ভিতরে যেতে! দেখে হালকা একটু হাসলাম!
সবাইকে নিয়ে আড্ডা দিতেছিলাম……….

লেখা – মোঃ আনোয়ার হুসাইন

চলবে


(পাঠক আপনাদের ভালোলাগার উদ্দেশ্যেই প্রতিনিয়ত আমাদের লেখা। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের লেখার স্পৃহা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের এই পর্বের “আপু যখন বউ (১ম) – Valobashar romantic golpo bangla” গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

আরো পড়ূন – আপু যখন বউ (২য়) – Romantic Valobashar golpo bangla

বাসর রাতে মেয়েদের ভয়

1 thought on “আপু যখন বউ (১ম) – Valobashar Romantic Golpo Bangla”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *